পুঁজিবাজারে ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে বাধা হিসেবে গত সাত বছর ধরেই আলোচনায় আসছে বিনিয়োগের সীমার হিসাব বা এক্সপোজার লিমিটের হিসাব নিয়ে বিরোধ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেয়ারের বাজারমূল্যের হিসাবে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করে। তবে সাত বছর ধরেই ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে হিসাব করার দাবি আছে।
১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক বিজ্ঞপ্তিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি জানায়, ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
সেদিন আরও কিছু সিদ্ধান্ত হয় যার দুটি ছিল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে।
বৈঠকের দুই দিন পর ১৭ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে। এর মধ্যে নগদে বিতরণ করা যাবে ১৭.৫ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১ টাাক ৭৫ পয়সা, আর বোনাস হিসেবে দেয়া যাবে আরও ১৭.৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রতি ৪০টির বিপরীতে ৭টি শেয়ার।
আরও ৫ দিন পর আরেক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১৫ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি নগদ দেড় টাকার পাশাপাশি আরও ১৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ার দিতে পারবে।
কিন্তু এক্সপোজার লিমিট নিয়ে কিছুই বলা হয়নি কোনো প্রজ্ঞাপনে।
এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, এ নিয়ে তাদের আগের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসছে না।
পরস্পরবিরোধী বক্তব্য
এক্সপোজার লিমিট গণনার নীতিমালায় পরিবর্তনের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাসুদ বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক্সপোজার লিমিট নিয়ে আলাদা করে প্রজ্ঞাপন জারির কোনো প্রয়োজন নেই। আগে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা আছে, যে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করবে।’
কিন্তু বিএসইসিতে আলোচনায় বলা হয়েছিল এখন থেকে এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে গণনা করা হবে, আগে যা ছিল বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। আলোচনায় এ বিষয়টি এসেছিল। এ ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন জারির গুরুত্ব আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে এত কথা বলার কী আছে? এটা নিয়ে আগে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা আছে, সে অনুযায়ী হবে।’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের যে যে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে আমরা সেসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলছি। আর আলোচনা হয়ে যাওয়ার পরই সব হয়ে যাবে সেটা ভাবা ঠিক হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পুঁজিবাজারের স্বার্থেই আলোচনা করেছি। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হয় সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হবে।’
বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে যা বলা হয়েছিল
সেদিনের বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক শেষে বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাংকের বিনিয়োগ-সংক্রান্ত এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোজার গণনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকৃত সিকিউরিটিজের বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে গণনা করা হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা বিএসইসিকে আশ্বস্ত করেছেন।’
বাজারমূল্যের ভিত্তিতে এক্সপোজার লিমিট গণনার কী প্রভাব?
একটি ব্যাংক তার মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। তবে ২০১৪ সালে করা নীতিমালায় বাজারমূল্যে বিনিয়োগসীমা গণনা হওয়ায় ব্যাংকগুলো দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে না।
এই এক্সপোজারের হিসাব গণনার নীতি পালটাতে গত কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক রাজি হচ্ছিল না।
বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কম এবং এটাকে বাজারের স্থিতিশীলতার একটি অন্তরায় হিসেবে দেখা হয়।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ারদর হঠাৎ পড়ে গেলেই বিক্রি করে দেন বা তহবিলের অভাবে মূল্য সমন্বয় করতে পারেন না। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তহবিল বড় থাকায় এই মূল্য সমন্বয় খুব একটা সমস্যা হয় না।
তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংকের বিনিয়োগ বেঁধে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে শেয়ারের দাম বাড়লে বাজারমূল্যের হিসাবে নির্ধারিত হয় এক্সপোজার লিমিট। ফলে তখন ব্যাংকগুলোতে শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়।
আবার কেনার পর শেয়ারের দাম কমে গেলে তখন আবার হিসাব হয় ক্রয়মূল্যে। ফলে বাড়তি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয় না।
ধরা যাক, কোনো ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা ১০০ টাকা। ব্যাংক ৮০ টাকায় শেয়ার কিনেছে। কিন্তু দাম বেড়ে সে শেয়ারের দাম হয়ে গেল ১১০ টাকা। তখন ব্যাংককে ১০ টাকার শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়।
আবার উল্টোটা হলে অর্থাৎ ৮০ টাকার শেয়ারের দাম কমে ৬০ টাকা হয়ে গেলে তখন ৪০ কিন্তু ৪০ টাকায় আরও বেশি শেয়ার কিনে সমন্বয়ের সুযোগ থাকে না। তখন কেনা যাবে ২০ টাকার শেয়ার।
বিশ্লেষক বক্তব্য
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমন্টে লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক্সপোজার লিমিটের কারণে পুঁজিবাজার ব্যাংক ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সেটি অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আলোচনায় যেহেতু বিষয়টি উঠে এসেছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকও বিষয়টিতে একমত হয়েছে, তাই কীভাবে সেটি হবে তারও একটি গাইডলাইন দেয়া উচিত। এটি প্রজ্ঞাপন আকারে হবে নাকি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবগত করা হবে তা নির্ধারণ করা উচিত।’
আরও পড়ুন:রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেছে পুলিশ। রাতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গাজীউর রহমান জানান, এ মামলায় গ্রেপ্তার প্রত্যেকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন প্রস্তুত করছে পুলিশ। রিমান্ড আবেদন প্রস্তুতের পর তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
শনিবার রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য, তার দুই সহযোগী মো. রবিন ও মো. ফয়সালকে আটক করে যৌথবাহিনী। বিকেলে তাদের নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
অনিন্দ্য ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন। এ মামলায় ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
রূপগঞ্জে গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবাসন চাহিদা পুরনের জন্য কৃষি জমিতে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর বালি ভরাটের কারনে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছ্। গৃহপালিত পশু পালনে কৃষকদের এখন ভরসা নেপিয়ার জাতের ঘাস। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে গোখাদ্যর সংকটের বিষয়টি কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। গোখাদ্য সংকটে অনেকই কম দামে পশুগুলোকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার কাঞ্চন, ভোলাব,দাউদপুর, মুড়াপাড়া, মাঝিনা নদীর পাড়, দেইলপাড়া, নদ্দাসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামে এখন নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। বেসরকারি দুগ্ধ খামারিরা তাদের বাড়িতে খরচ কমানোর জন্য নেপিয়ার ঘাস চাষের দিকে ঝুকছে। আঁশযুক্ত,পুষ্টিকর, সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে চাহিদা ব্যাপক। একবার কেটে নিলে ঘাস মরে যায়না বরং কাটা অংশ থেকে পুনরায় কুঁড়ি জন্মে আবার তা পূর্নাঙ্গ ঘাসে পরিণত হয়।
সরজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে গোখাদ্য সংকট এবং নেপিয়ার জাতের ঘাসে কৃষকের ভরসার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। বারৈ গ্রামের কদম আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, অন্যের জমি চাষ করি। বাড়তি আয়ের জন্যে গরু-ছাগল পালি। কৃষক টিপু হায়দার বলেন, গরুর খাদ্য সমস্যার জন্যে আমাদের গরু কম দামে বিক্রি করে দিছি। নেপিয়ার জাতীয় ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল, ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কেটে নেয়া ঘাসগুলো বড় হয়ে যায়।
উপজেলা পশু পালন কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস গোখাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পশু খাদ্যের আরেক নাম নেপিয়ার ঘাস। দ্রুত বর্ধনশীল, উৎপাদন খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় এলাকার চাষিরা দিনদিন নেপিয়ার জাতীয় ঘাস চাষে ঝুঁকছেন। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অপরদিকে গোখাদ্য সংকট নিরসনেও ভূমিকা রাখছেন। প্রতি মাসে খামারিদেরকে বিনামূল্যে নেপিয়ার ঘাসের বীজ কাটিং দেয়া হয়। নেপিয়ার ঘাস ১০/১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চাষের পদ্ধতিও সহজ।
কক্সবাজারে সরকারি সফরে এসে অসুস্থ হয়ে জরুরিভাবে ঢাকায় ফেরা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
তিশা লিখেছেন, “মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কক্সবাজারে মন্ত্রণালয়ের একটি ওয়ার্কশপে উপস্থিত থাকাকালীন সময়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বর্তমানে হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অতিরিক্ত কাজের প্রেশারের কারণে তিনি (উপদেষ্টা) অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আপাতত তিনি আশঙ্কামুক্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে চারদিনের সফরে কক্সবাজারে আসেন সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। পরদিন শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে অসুস্থতা অনুভব করলে সফর মুলতবি করে জরুরিভাবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘কক্সবাজারে সংস্কৃতি হাব-বিষয়ক এবং জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন সংক্রান্ত কয়েকটি কর্মসূচিতে উপদেষ্টার উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অবশিষ্ট কর্মসূচিগুলো বাতিল করা হয়েছে।’
সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে কক্সবাজারে থাকাকালীন স্থানীয় চিকিৎসকরা উপদেষ্টাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় দশ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এর ৪০ ভাগ কোনো না কোনো কাজে যুক্ত হতে পারছে, ২০ ভাগ স্ব-উদ্ভাবিত কর্মসংস্থান করেছে। আর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ বেকার থাকছে।
গতকাল শনিবার এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এই তথ্য দেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাব, ডেমোনেস্ট্রেটর, শিক্ষক, অধ্যক্ষ সবই থাকা সত্ত্বেও ল্যাব প্রাকটিক্যাল হচ্ছে না। এটা শুধু নৈতিক অবক্ষয়ের অবনমন। এর উত্তরণ ঘটাতে হবে।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণ নিরুৎসাহিত করতে হবে, তাদের দক্ষ শ্রমিক করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সেরা শিক্ষক সম্মাননা ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষাকারীকে না দিয়ে প্রকৃতই সেরা শিক্ষককে দেওয়ার সুপারিশ করেন উপাচার্য।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রের কোনো গুণগত উন্নতি হয়নি। আমরা বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতেও ব্যর্থ হয়েছি।
ভিসি বলেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের অবস্থা এক সময় বাংলাদেশের মতোই ছিল। কিন্তু আজ সেই দেশগুলোর মাথাপিছু আয় বহুগুণে বেড়েছে। আর এর জন্য চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার একটি বড় অবদান রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ১১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, গুণগত শিক্ষার অভাবই শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রতি বছর এসএসসিতে ২.৫ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও বাস্তব শিক্ষার উন্নতি হচ্ছে না। প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, কিন্তু যারা জিপিএ-৫ পায় না, তারা কোথায় যাচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ শতাংশ। এর মধ্যে ৪.৫ শতাংশ বেকার। তাই জব মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে।
ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়ক ভূমিকা রাখলেও মূল দায়িত্ব পালন করেছে চীন, রাশিয়া ও জাপানের প্রকৌশলীরা। অথচ স্থানীয় প্রকৌশলীরা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছে। মূল সমস্যা হলো চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাব।
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ গত শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কোরাল মাছ। বিশাল এই মাছ দেখে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে মাছটি সকালেই বাজারে নিয়ে যান।
মাছটি দেখতে বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে ভিড় করেন। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, রাশেদ জীবনে এই প্রথম এত বড় আকারের কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজির কোরাল আসে, কিন্তু এ বছর এত বড় কোরাল প্রথম ধরা পড়ল।
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরালটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
জেলে রাশেদ বলেন, এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের একটি নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে দিতে হবে ১৪ ধরনের তথ্য।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এখন থেকেই বিদেশিরা আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে ১৪ ধরনের তথ্য দিতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই নিজের নাম, জন্ম তারিখ, সংস্থা বা দেশের নাম, পেশা, অভিজ্ঞতা থাকলে দেশ ও বিদেশের অভিজ্ঞতা, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের মেয়াদ, জাতীয়তা, বাংলাদেশে অবস্থানকালীন ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নম্বর, আবেদন তারিখ ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এছাড়া আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা একটি ছবি, মেয়াদ থাকা পাসপোর্টের কপি ও সিভি সংযুক্ত করতে হবে।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আনফ্রেল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোট পর্যবেক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এবারের নীতিমালায় বিদেশিদের অনুমতিদানে পুরো ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নিজের কাছে রাখা হয়েছে। আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হতো। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ইসির সুপারিশের ভিত্তিতে ভিসা ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পাওয়া ৩৩টি ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব ব্যাংক হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন ফির অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম।
যেসব ব্যাংক আগামী হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছে– সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। প্রাক-নিবন্ধনের অর্থ প্রতি ৩০ দিবসের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। হজযাত্রীর বিপরীতে কোনো হজ এজেন্সিকে ঋণ দেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর প্রাথমিক নিবন্ধন বা নিবন্ধনের অর্থ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা থাকবে। এ অর্থ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নির্ধারিত খাত ছাড়া অন্য খাতে ব্যবহার বা স্থানান্তর করা যাবে না। ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ (সংশোধিত)’ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
মন্তব্য