পুঁজিবাজারের জন্য এক গুচ্ছ সুসংবাদ এসেছে সোমবার। গত সাত বছর ধরে দাবির প্রেক্ষিতে এক্সপোজার লিমিট সংশোধনের পথে, ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তার জন্য বেধে দেয়া লভ্যাংশের হার বাড়ানো, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার সুযোগ কোন কিছুই প্রভাব ফেলেনি মঙ্গলবারের পুঁজিবাজারে।
যে দুই খাতের জন্য এমন সব সংবাদ সেই দুই খাতের মধ্যে আর্থিক খাতের পতন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া পুঁজিবাজারের সবচেয়ে ভালো মানের কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক তালিকাভুক্ত ৩০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৯টির। দুটি কোম্পানির দর পাল্টায়নি। বাকি ১৯টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ফলে লেনদেন গতি না থাকায় কমেছে সূচক।
কেমন ছিল ব্যাংক ও আর্থিক খাত
সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে বৈঠকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেয়া হয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোকে।
দীর্ঘ সাত বছর ধরে আলোচনায় থাকা এক্সপোজার লিমিট গণনা পদ্ধতি পরিবর্তনের আভাস দেয়া হয়েছে। বাজার মূল্য থেকে বের হয়ে এখন থেকে গণনা করা হবে ক্রয় মূল্যের ভিত্তিতে। ফলে এতদিন ব্যাংক ও আর্থিক খাতের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের যে বাধা ছিল তা কেটে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে জানান, এ সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারবান্ধব।
এছাড়া ব্যাংকের লভ্যাংশ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যে সীমা বেধে দিয়েছিল তা থেকে সরে এসে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর্থিক খাতের জন্য লভ্যাংশের পাশাপাশি বোনাস দেয়ারও সুযোগ দেয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজারের ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়তে গঠন করা ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই তহবিলের কিছু নীতিমালা সংশোধন করে কিভাবে পুঁজিবাজারে আরও কার্যকর করা যায় সেটি নিয়েও ইতিবাচক মন্তব্য এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে।
পুঁজিবাজারে অন্যান্য খাতের তুলনায় ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য এত ভালো খবরেও প্রভাব নেই। আলোচনায় আসার মতো দর বাড়েনি কোনো ব্যাংকের।
মঙ্গলবার ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির, কমেছে ১০টির। বাকি পাঁচটির দর পাল্টায়নি।
আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বেহাল অবস্থা ছিল মঙ্গলবার। ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টির দর কমেছে। বাকিগুলোর দর পাল্টায়নি। অর্থাৎ এদিন আর্থিক খাতের একটি প্রতিষ্ঠানের দরও বাড়েনি।
কেন এমন অবস্থা
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে যে বৈঠক ছিল সেখান থেকে যেসব সিদ্ধান্ত এসেছে সবগুলোই ভালো। বিশেষ করে এক্সপোজার লিমিট নিয়ে যে আলোচনা সেটি পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে আলোচিত। কিন্ত কেন এর প্রভাব পুঁজিবাজারে নেই এমন প্রশ্নে, আলোচনা হয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা না আসায় হয়তো এর কোনো প্রভাব আসেনি।
তিনি বলেন, ‘বিএসইসির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলো দ্রুততার সময়ে নির্দেশনা আকারে জারি করা হলেও হয়তো এর ভালো প্রভাব পড়বে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাল সন্ধ্যায় সিদ্ধান্তগুলো এসেছে। এখনও সেভাবে বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছেনি। এছাড়া এসব সিদ্ধান্তের উপকারভোগী হবে মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী পত্র পেলেই কেবল তারা তা বাস্তবায়নের দিকে যাবে।’
আলোচনা হলেই কার্যক্রম শুরু করে দেয়া যায় না জানিয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত সম্পর্কে শরীফ আনোয়ার বলেন, ‘সবগুলোই বাজারের জন্য ভালো। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক মাঝ পথে এসে লভ্যাংশ নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত দেয়া উচিত হয়নি। এটি বছরের শুরুতেই তারা দিতে পারতো। তাহলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্ষেত্রে এত জটিলতা হতো না।’
সূচক ও লেনদেন
মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫১৬ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬১ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১১১ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১৪৩টির ও পাল্টায়নি ১১৪টির। মোট লেনদেন হয়েছে ৬৯৮ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬২৩ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে -সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৮৬ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৭ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ১০৩টির ও পাল্টায়নি ৭৫টির। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি টাকা।
লেনদেনে পুরনোগুলোই নতুন দাপটে
মাঝে কয়েক কার্যদিবস পুঁজিবাজারে লেনদেনে থেকে ছিটকে পড়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, রবি আজিয়াটা, লংকাবাংলা ফিন্যান্স। এই স্থান দখলে নিয়েছিল ব্রিটিশ আমিরিকান টোব্যাকো-বিএসটিবিসি, বার্জার পেইন্ট, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারের মতো বহুজাতিক ও দামি কোম্পানিগুলো।
কিন্ত এখন আবারও পুরোনা কোম্পানিগুলো নতুন করে ফিরে এসেছে লেনদেনে। মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, যার ৮৯ লাখ ১৩ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি টাকায়।
রবি আজিয়াটার শেয়ার বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৮ টাকা ২০ পয়সায়। এদিন ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকায়।
লংকাবাংলা ফিন্যান্সের ৭৭ লাখ ৮২ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৯১ লাখ টাকায়। এছাড়া জিবিবি পাওয়ার লিমিটেডের ৭৯ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকায়।
লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডসহ এ তালিকায় ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি, সামিট পাওয়ার, বিএটিবিসি, লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
আগ্রহ ও অনাগ্রহের কোম্পানি
সোমবার লেনদেনে দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল আজিজ পাইপ লিমিটেড। কেন হঠাৎ করে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে তার কোনো কারণ পাওয়া যায়নি ডিএসইর ওয়েবসাইটে।
কোম্পানিটি গত ২৮ জানুয়ারি অনিরীক্ষিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০) সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে কোম্পানিটির আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শেয়ার প্রতি লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে।
বলা হয়েছে অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০ সময়ের কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ পয়সা।
এছাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল হাওয়েল টেক্সটাইল (বিডি) লিমিটেড। এদিন কেম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। সিলকো ফার্মাসিউটিকেল লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
এছাড়া এসিআই ফরমুলেশনের ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, রহিমাফুডের ৫ দশমিক ১২ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
দর পতনের দিক দিয়ে সোমবার শীর্ষে ছিল লুব রেড (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির লেনদেন হয়েছে সাত দিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দুদিন শেয়ারের দর ৫০ শতাংশ করে বাড়তে পারবে। সে অনুযায়ী দিনের সর্বোচ্চ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৭ টাকা থেকে উঠেছিল ৬০ টাকা ৭০ পয়সা। তারপরের পাঁচদিনের লেনদেন টানা কমেছে দর। এই সময়ে তিনদিনই ছিল দর পতন হওয়া কোম্পানির শীর্ষে।
আইডিএলসির শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। অগ্রনী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ডের দর কমেছে ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এছাড়া এ তালিকায় ছিল ইজেনারেশন লিমিটেড, নর্দান ইন্স্যুরেন্স, এডিএন টেলিকম।
আরও পড়ুন:বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন প্রধান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‘বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় বসতে হবে।’
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।’
কীটনাশক ও বিষমুক্ত ফল, সবজি ও ফসল আবাদের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) এর আওতায় পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৬ জুন) উপজেলা কৃষি বিভাগের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক ড. মোছাঃ নাছরিন আক্তার বানু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শরীরে পিপিই ও মাস্ক পড়ে কীটনাশক স্প্রে করার বিষয়ে গুরুত্বরোপ ও নির্দেশনা প্রদান করেন।
ড. মোছাঃ নাছরিন আক্তার বানু বলেন, ফুলবাড়িয়া উপজেলার মাটি অনেক ভালো। ফসলি জমিতে আগাছা সরাতে হবে, তাহলে আবাদ আরও বেশি ভালো হবে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে মানবদেহে মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
এসময় তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কীটনাশক ও বিষমুক্ত ফল, সবজি ও ফসল উৎপাদনে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মাঠপর্যায়ে এ কার্যক্রম ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া ফেলেছে।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আ র ম আতিকুর রহমান, বাকতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাখন, কালাদহ ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম মাস্টার, কৃষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষানী আকলিমা আক্তার প্রমুখ।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে (Central African Republic) নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে (MINUSCA), Bangladesh Armed Military Utility Helicopter Unit-5 (BANAMUHU-5) কন্টিনজেন্ট এর মোট ১২৫ জন সদস্য প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি সোমবার (১৬-৬-২০২৫) বিমান বাহিনী সদর দপ্তর-এ মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রগামী কন্টিনজেন্ট (BANAMUHU-6) এর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
এসময় তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সততা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তথা দেশের সুনাম বয়ে আনার জন্য কন্টিনজেন্ট সদস্যদের প্রতি আহবান জানান। পরিশেষে তিনি মিশনের সাফল্য কামনায় আয়োজিত এক বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বিমান বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, ঢাকাস্থ বিমান ঘাঁটি দ্বয়ের এয়ার অধিনায়ক এবং বিমান সদর ও ঘাঁটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সমরাস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম এবং নাইটভিশন প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ০৩ টি এমআই-১৭১ হেলিকপ্টার ও বিভিন্ন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে MINUSCA জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিযুক্ত রয়েছে। BANAMUHU-6 কন্টিনজেন্টের নেতৃত্বে থাকবেন এয়ার কমডোর ইমরানুর রহমান, বিইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি)। আগামী ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে কন্টিনজেন্ট এর সদস্যগণ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকা হতে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে গত জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ‘সব যুদ্ধ বন্ধের’ পক্ষে থাকবেন এবং একজন ‘শান্তির দূত ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাকারী’ হিসেবে নিজের উত্তরাধিকার রেখে যাবেন।
কিন্তু মাত্র ছয় মাসের মাথায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছোড়া শুরু হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। গত শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে—এমন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আর শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকেও এটি সংঘাতে টেনে নিতে পারে।
ইসরায়েলের ওই হামলাকে ট্রাম্প প্রায় প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন। ফলে নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার তার প্রতিশ্রুতিই এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সম্মুখীন।
ট্রাম্পের এ সমর্থন তার অনুগত রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে, যাদের অনেকে ডানপিন্থি রাজনীতিক ও ভাষ্যকার, বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা মনে করছেন, ইসরায়েলকে বিনা প্রশ্নে সমর্থন দেওয়া প্রকৃতপক্ষে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পরিপন্থি। অথচ ট্রাম্পের মূল নির্বাচনী স্লোগান ছিল এটি।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিষয়ক মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহসভাপতি ত্রিতা পারসি বলেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট ঘাঁটির (এ নীতির সমর্থক গোষ্ঠী) অনেক অংশে এখন প্রবল ক্ষোভ ও বিশ্বাসঘাতকতার অনুভূতি বিরাজ করছে। কারণ, তারা সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রকে আর কোনো যুদ্ধে জড়িয় পড়া বা তাতে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি দেখতে চায় না।’
ত্রিতা পারসি আরও বলেন, ‘তারা (এ গোষ্ঠী) এখন ইসরায়েল নিয়ে ব্যাপক সংশয়ের মধ্যে পড়েছে। তারা মনে করে, এ ধরনের যুদ্ধই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের ব্যর্থ ও তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারগুলো ক্ষুণ্ন করেছে।’
ইরানে গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন রক্ষণশীল নেতাও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যেন এমন কোনো যুদ্ধে না জড়ায়, যা তার স্বার্থ রক্ষা করবে না।
ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (এমএজিএ) আন্দোলনের বড় মুখ ও প্রভাবশালী রক্ষণশীল ভাষ্যকার টাকার কার্লসন বলেন, ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘যুদ্ধপিপাসু সরকার’কে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত নয়।
‘ইসরায়েল চাইলে যুদ্ধ করতেই পারে। ওটা স্বাধীন রাষ্ট্র। তারা যা খুশি করতে পারে। কিন্তু সেটা যেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে না হয়,’ গত শুক্রবার ‘টাকার কার্লসন নেটওয়ার্ক’–এর সকালের নিউজলেটারে লেখা হয়।
নিউজলেটারে আরও বলা হয়, ইরানের সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্রের) যুদ্ধ হলে তা ‘পরবর্তী প্রজন্মের সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিতে পারে’ কিংবা একটি বিদেশি এজেন্ডার নামে হাজার হাজার মার্কিনের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
‘এ কথা বলাই বাহুল্য যে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে না। কিন্তু অন্য একটি পথও আছে: ইসরায়েলকে বাদ দাও। ওরা নিজেরা যুদ্ধ করুক,’ লেখা হয় নিউজলেটারে।
রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পলও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সতর্ক করেছেন এবং ওয়াশিংটনের যুদ্ধ–সমর্থক রক্ষণশীলদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে র্যান্ড পল লিখেছেন, ‘মার্কিন জনগণ যে যুদ্ধের শেষ নেই, তার ঘোরবিরোধী এবং ২০২৪ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে তাঁরা সেটাই দেখিয়েছেন।’
‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অনুরোধ করব যেন তিনি তার অবস্থানে অটল থাকেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেন এবং অন্য দেশের মধ্যে চলা কোনো যুদ্ধে জড়িত না হন,’ বলেন র্যান্ড পল।
ডানপন্থী কংগ্রেস সদস্য মারজোরি টেলর গ্রিনও একটি বার্তায় ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি হামলার পক্ষে নন। এর আগেও তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করেছিলেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে—এমন ইসরায়েলি অভিযোগের ভিত্তিতে যেন ইরানে হামলা চালানো না হয়।
মারজোরি টেলর এক্সে লেখেন, ‘আমি শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি। শান্তি। এটাই আমার আনুষ্ঠানিক অবস্থান।’
যদিও ইসরায়েলের সমর্থকেরা ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকির কথা উল্লেখ করে দেশটিতে হামলাকে যৌক্তিক বলে দাবি করছেন; তেহরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি ট্রাম্পের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডও গত মার্চে এক সাক্ষ্যে বলেছেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না।’
ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্কও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
নিজ পডকাস্টে কার্ক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ ঘাঁটি কোনো যুদ্ধই চায় না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা চায় না (ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে)। তারা চায় না যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িয়ে পড়ুক।’
গত শুক্রবার ইসরায়েল যখন ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাতে তিনি আগ্রহী।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘বিষয়টা খুবই সহজ। জটিল কিছু না। ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারে না—এই একটাই কথা। তার বাইরে আমি চাই, তারা সফল হোক। আমরা সাহায্য করব।’
গতকাল রোববার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
তবে শুক্রবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আগেই ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে জানতেন। অবশ্য তিনি হামলা চালাতে ইসরায়েলকে নিষেধ করেছিলেন কি না, তা বলেননি। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েলের হামলাকে ‘একতরফা’ বলেই উল্লেখ করেছেন।
অথচ ট্রাম্প ইরানের ওপর হামলার দায় চাপিয়ে বলেন, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য তার আহ্বানে ইরানের কর্মকর্তাদের সাড়া দেওয়া উচিত ছিল।
ট্রাম্প পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, তাদের জন্য এটা হবে এমন কিছু, যা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও জীবনঘাতী সামরিক সরঞ্জাম—অনেক অনেক বেশি। আর ইসরায়েলের কাছে এর অনেক কিছুই আছে, আরও আসছে।’
ত্রিতা পারসি বলেন, শুরুতে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সমঝোতা চেয়েছিলেন, কিন্তু তার চরম শর্ত—ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে—আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি করে।
‘এটা অনুমেয় ছিল যে এ চূড়ান্ত দাবির ফলে আলোচনা ব্যর্থ হবে। ইসরায়েল সেই ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্পকে সামরিক পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে,’ বলেন ত্রিতা পারসি।
পারসি আরও বলেন, ‘গত সপ্তাহজুড়ে ট্রাম্প কূটনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে কথা বললেও, তিনি জানতেন ইসরায়েলের হামলা আসন্ন। এভাবে তিনি সবাইকে ভুল বার্তা দিয়েছেন যে হামলা হবে আলোচনার পরে। অথচ সেটা আগেই হয়েছে।’
ইসরায়েলের হামলার পর কংগ্রেসে কিছুটা সমালোচনা হলেও বহু রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এই হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের ঘাঁটির একটি বড় অংশ, বিশেষ করে তরুণ ডানপনন্থিরা, ইসরায়েলকে অন্ধ সমর্থনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাটো ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক জন হফম্যান বলেন, ‘তারা (ডানপন্থিরা) রিপাবলিকান পার্টির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, বিশেষত তরুণদের মধ্যে।’
হফম্যান আরও বলেন, ‘পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপ বলছে, ৫০ বছরের নিচের অর্ধেক রিপাবলিকানই এখন ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এই নিরন্তর যুদ্ধক্লান্তির মধ্যে হাঁপিয়ে উঠেছেন।’
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থান তাঁকে আবারও এমন একটি সংকটের মুখে ফেলেছে, যেটা একসময় বুশ প্রশাসনকে ফেলেছিল।
হফম্যান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কামনা করা প্রভাবশালীদের উপস্থিতি, যেমন লিন্ডসে গ্রাহাম—এসবই বড় ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।’
‘এ পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার আশঙ্কা অনেক বেশি,’ বলেন হফম্যান।
সূত্র: আল জাজিরা
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চারটি গ্রামের পাঁচ যুবকের অপহরণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের সন্ধান মেলেনি। অপহৃতদের কেউ বেঁচে আছেন কিনা, নাকি তাঁরা চিরতরে হারিয়ে গেছেন—সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি পরিবার, প্রশাসন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও।
২০১৩ সালের ১৯ মে রাতে বড়াইগ্রামের গুরুমশৈল গ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অস্ত্রধারী ১০-১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে এসে কৃষক কামাল হোসেনকে বাড়ির পাশ থেকে তুলে নেয়। একই রাতে একই কায়দায় অপহরণ করা হয় ওই গ্রামের দিনমজুর ইব্রাহিম তালুকদার এবং পার্শ্ববর্তী মহিষভাঙ্গা গ্রামের ভুটভুটি চালক তৈয়ব আলীকে।
অপহরণের সময় অস্ত্রধারীরা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং অপহৃতদের মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। এর ঠিক দুদিন আগে একই উপজেলার কালিকাপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন বিজিবি সদস্য রাসেল গাজী ও তার বন্ধু কাটাশকুল গ্রামের সেন্টু হোসেন। ছুটিতে বাড়ি এসে রাসেল তার বন্ধুর ফোন পেয়ে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ হন দুজনই।
স্বজনরা জানান, অপহরণের পরপরই তারা থানায় জিডি ও মামলার পাশাপাশি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। গুরুমশৈল গ্রামের কামালের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এক যুগ হয়ে গেল, আমার ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদি। কে নিল, কেন নিল, কোনো উত্তর নেই।’
নিখোঁজ ইব্রাহিম তালুকদারের মা বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়ে আমরা পথে বসেছি। কোনো দিন কেউ খোঁজও নেয়নি।’ রাসেল গাজীর বাবা বলেন, ‘বিজিবির মতো চাকরিতে থেকেও যদি অপহৃত হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?’
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘এই ঘটনার বিষয়ে আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও হাতে এসেছে। আশা করছি, দ্রুতই রহস্য উদঘাটন এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’
অপহৃতদের স্বজনরা বলছেন, ‘বর্তমান সরকারের কাছে তারা আকুতি জানাচ্ছেন—তাদের প্রিয়জনেরা জীবিত না থাকলেও অন্তত কী ঘটেছে, কোথায় গেল তারা—সে রহস্য তো উন্মোচিত হোক।’
গৃহস্থদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকায় ৪৫ কেজিতে এক মণ নাক ফজলি আম কিনছেন পাইকারি দোকানিরা। তারা সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে এক মণ বিক্রি করছেন। প্রতি মণ আমে নিচ্ছেন ৫ কেজি ধলতা। এতে গৃহস্থরা ওজনে আর খুচরা আম ক্রেতারা দামে ঠকছেন। পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি মণে অর্ধেকেরও বেশি টাকা লাভ করছেন। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরে রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতারা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় প্রচুর নাক ফজলি আমের উৎপাদন। বদলগাছির এই নাক ফজলি আম অনান্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদুও। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও আমের পাইকারি বাজার বসছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত আম বেচাকেনা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ও পাইকারিরা এসে আম কিনেন।
গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাক ফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাক ফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণে ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারিরা গৃহস্থদের কাছে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। পাইকারিরা দোকানে সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে মণ বিক্রি করছেন।
বদলগাছির ভাণ্ডারপুর গ্রামের গৃহস্থ মনোয়ার হোসেন বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে তিন মণ আম বিক্রি করেছি। তিন মণ আমে আমাকে ১৫ কেজি আম বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে ৪৫ কেজিতে পাইকারিরা আম কিনছেন। এটি চরম অন্যায়। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
খুচরা বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, রেলগেট এলাকার দোকান থেকে এক মণ নাক ফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কিনলাম। দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০-৫০০ টাকা লাভ করছে। আবার গৃহস্থদের কাছে নেওয়া ওজন দিচ্ছেন না। মৌসুমি আম বিক্রেতা হারুন বলেন, ৪৫ কেজিতে আম বিক্রি হয়। আমরা দূরে নিয়ে গিয়ে আম বিক্রি করি। তবে রেলগেট এলাকার দোকানিরা একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মামুন জমাদ্দার (৪০) নামে এক জেলের জালে ২৩ কেজি ওজনের বিশাল একটি সামুদ্রিক কোরাল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছটি ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
গতকাল রোববার সকালে কুয়াকাটা মাছ বাজারের মনি ফিস নামে মৎস্য আড়তে মাছটি বিক্রি করার জন্য আনা হয়। ডাকের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে ২৪ হাজার ১৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের জেলে মামুন জমাদ্দার ১২ জুন রাতে সমুদ্রে জাল ফেলেন এবং ১৪ জুন রাতে জাল তুললে তিনি তার জালে এই বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক কোরাল মাছটি পান।
জেলে মামুন জমাদ্দার বলেন, এত বড় মাছ পাব সেটা ভাবতেও পারিনি। প্রায় দুই মাস মাছ ধরতে পারিনি। কারণ মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই অবরোধের পর মাছটি পেয়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছি। মাছটির ক্রেতা কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের এলাকায় বড় বড় হোটেলগুলোতে সামুদ্রিক বড় কোরাল মাছের চাহিদা রয়েছে। আশা করছি মাছটি বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ করতে পারব। তবে এলাকায় বিক্রি না হলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেব।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা সঠিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে বিধায় সামনের দিনগুলোতে তাদের জালে ভালো সংখ্যক মাছ ধরা পড়বে।
মন্তব্য