পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে যে তিনটি প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, করোনা মহামারির বছরে তার কোনোটির আয় গত বছরের চেয়ে কমেনি।
একটির আয় হয়েছে গত বছরের সমান। একটির আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশের মতো। আর একটির আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশের বেশি।
ডাচবাংলা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণার সময় কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণ পরবর্তী যে হিসাব দিয়েছে তাতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
তবে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছর শেষে ব্যাংক তিনটির পরিচালন মুনাফার যে তথ্য গণমাধ্যমে আসে, তাতে দেখা যায় সর্বনিম্ন ৯০ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ৩০৩ কোটি টাকা কম হয়েছিল পরিচালন মুনাফা।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরে ডাচবাংলা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয় এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা। গত ৩১ ডিসেম্বর সামপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির আয় হয় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা।
৯০ কোটি টাকা আয় কম হলেও চূড়ান্ত লভ্যাংশে দেখা যায়, কোম্পানিটির এবার শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা। যা গত বছর ছিল ৭ টাকা ৮৯ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে ২ টাকা ১১ পয়সা। আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬.৭৪ শতাংশ।
মুনাফা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লভ্যাংশও বাড়নোর প্রস্তাব করেছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ ও ১৫ শতাংশ (১০০ শেয়ারে ১৫টি) বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী এর চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণার সুযোগ নেই আর লভ্যাংশের ব্যাখ্যায় এই বিষয়টি উল্লেখ করেছে ব্যাংকটি।
গত বছর ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ (১০০ শেয়ারে ১০টি) বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
২০১৯ সালে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৬১৫ কোটি টাকা। গত বছর তা কমে হয় ৪১৫ কোটি টাকা।
পরিচালন মুনাফা ৩৩ শতাংশ কমে গেলেও চূড়ান্ত মুনাফা বেড়েছে এই প্রতিষ্ঠানেরও। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এবার তাদের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ৯৫ পয়সা, যা গত বছর ছিল এক টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে ২৫ পয়সা বা ১৪.৭০ শতাংশ।
এই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা নগদ ও প্রতি ১০০ শেয়ারে ছয়টি বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লভ্যাংশ ঘোষণার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত বছর শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা নগদ আর প্রতি ১০০ শেয়ারে ৫টি বোনাস শেয়ার দেয়া হয়েছিল।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চূড়ান্ত মুনাফা আগের বছরের সমান হলেও পরিচালক মুনাফায় ছিল বিরাট ব্যবধান।
২০১৯ সালে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয় ৭৫৩ কোটি টাকা। পরের বছর তা কমে হয় ৪৫০ কোটি টাকা। মুনাফা কমে ৩০৩ কোটি টাকা, যা শতকরা হিসাবে ৪০ শতাংশেরও বেশি।
তবে লভ্যাংশ ঘোষণার সভা শেষে জানানো হয়, এবার কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২৬ পয়সা, যা গত বছর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর ছিল একই পরিমাণ।
এবার প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার প্রতি এক টাকা নগদে ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছরও পাঁচ শতাংশ বোনাসের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা এক টাকা ১০ পয়সা লভ্যাংশ পেয়েছিল।
মহামারিকালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কমে যাওয়ার খবরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দর পড়তে শুরু করে জানুয়ারির শুরুতে।
বিনিয়োগকারীরা ধারণা করেছিল, মুনাফা কমায় এবার প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশও আসবে। তবে এখন পর্যন্ত যে প্রবণতা, তাতে ব্যাংকের শেয়ারধারীরা বেশ ভালো পরিমাণ মুনাফা পেতে পারেন।
৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ১১টি ব্যাংকের শেয়ার মূল্য অভিহিত মূল্য ১০ টাকার কাছাকাছি। এর মধ্যে ১০টি ‘এ’ ক্যাটাগরির। অর্থাৎ কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। বাকি একটি ব্যাংক গত বছর ১০ শতাংশের চেয়ে কম লভ্যাংশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: এফডিআরের চেয়ে ব্যাংকের শেয়ারে মুনাফা বেশি
তিনটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম আছে ১০ টাকার নিচে যার মধ্যে একটি কখনও ১০ শতাংশের নিচে লভ্যাংশ দেয়নি, একটি একবার কেবল ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দিয়েছে। আর একটি লোকসানি ব্যাংক।
চারটি ব্যাংকের শেয়ার মূল্য ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। আটটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। ৩০ থেকে ৪০ টাকার ভেতরে আছে দুটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম। একটির দাম ৪০ টাকার বেশি আর একটির দাম ৬০ টাকার বেশি।
ব্যাংকগুলো গত কয়েক বছরে নগদ লভ্যাংশে মন দিয়েছে। আর এগুলোর শেয়ার মূল্য বেশ কম হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ভালো পরিমাণে অর্থ পেয়ে থাকে।
গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ব্যাংকের লভ্যাংশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে এসব ব্যাংকের শেয়ার কিনে রাখলেই বেশি লাভবান হওয়া যায়। চলতি বছর মার্কেন্টাইল ব্যাংকও যে লভ্যাংশের প্রস্তাব করেছে, সেটি এফডিআরের চেয়ে বেশি হতে পারে।
ব্যাংকটির শেয়ার মূল্য এখনও ১৩ টাকার কিছুটা বেশি। শেয়ার প্রতি এক টাকা লভ্যাংশ পেলে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার মূল্যের অনুপাতে লাভ হয় ৭.৫ শতাংশের মতো। অথচ ব্যাংকে টাকা রাখলে এখন সর্বোচ্চ মুনাফা পাওয়া যায় ৬ শতাংশ।
যে কারণে বেড়েছে চূড়ান্ত মুনাফা
ডাচ বাংলা ব্যাংকের একজন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নিউজবাংলাকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধার কারণে তাদের মুনাফা বেশি হয়েছে।
এই কর্মকর্তা জানান, অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় ২০২০ সালে ঋণ পরিশোধ না করেও খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পেয়েছেন ঋণগ্রহীতারা। আর এ কারণে খেলাপি ঋণের বিপরীতে তাদেরকে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী খেলাপি ঋণের মানভেদে নিরাপত্তা সঞ্চিতির হার ৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। যেহেতু খেলাপি ঘোষণা করা যায়নি, তাই এই সঞ্চিতি সংরক্ষণের দরকার পড়েনি। ফলে ব্যাংকের ব্যালান্স শিট মহামারিকালে আগের বছরের চেয়ে ভালো দেখাচ্ছে।
গত বছরের মার্চ মাসে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কেউ কিস্তি না দিলেও খেলাপি করা যাবে না। পরে দুই দফায় এই নির্দেশনার কার্যকারিতা বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ফলে অপরিশোধিত ঋণের মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যায়।
মেয়াদি ঋণের পাশাপাশি চলতি মূলধন ঋণেও গত বছর এই সুবিধা দেয়া হয়েছিল। এখন চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ সুবিধা আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কোম্পানি সচিব আবুল বাশার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা সংকটের মধ্যেও ব্যাংকের কোনো কাজই থেমে থাকেনি। আমরা নিয়মিত কাজ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক করোনাকালীন যেসব সুবিধা দিয়েছে, তাও গ্রাহকদের দেয়া হয়েছে। এ জন্য মহামারির বছরেও আমাদের ব্যাংকের মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।’
তিনি বলেন, ‘মুনাফা বৃদ্ধি অস্বাভাবিক না। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট করেছে। এখানে তথ্যের হেরফের হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদও একই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর যে প্রভিশন সংরক্ষণ করে সেটি যদি না করতে না হয় বা আগের বছরের প্রভিশন যুক্ত হয় তাহলে নিট মুনাফা বাড়তে পারে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ব্যাংকগুলোকে প্রভিশনের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। সেটি সুবিধার আওতায় নিট মুনাফা বাড়তে পারে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে সুবিধা দেয়ার ফলে তাদের মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এটাকে খারাপ চোখে দেখার কিছু নেই।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও চিত্র একই
কেবল ব্যাংক নয়, ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি, লংকাবাংলা, আইপিডিসি ও বিডিফিনান্সের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই মহামারির বছরে আগের বছরের চেয়ে বেশি মুনাফা করেছে।
২০২০ সালে সমাপ্ত অর্থবছরে আইডিএলসি ফিনান্সের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৪ টাকা ৫১ পয়সা।
আইপিডিসি ফিনান্স এবার শেয়ার প্রতি আয় করেছে এক টাকা ৯০ পয়সা। গত বছর আয় ছিল এক টাকা ৭২ পয়সা।
এবার বিডি ফিনান্সের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা।
লংকাবাংলা ফিনান্স এবার শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল প্রায় অর্ধেক, ২০১৯ সালে পুনর্মূল্যায়িত ইপিএস ছিল ৯৪ পয়সা।
আরও পড়ুন:দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোর প্রতিকূলতা কাটিয়ে রেকর্ড ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। চলতি বছর ওয়ালটন পণ্যের বিক্রয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটন হাই-টেকের মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা বা ২০৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ব্যাপক বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই উন্নতি হয়েছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাব বছরের জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৮তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ হিসাব বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬২.৩৪ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৪৯.৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০৫ শতাংশ।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২০২৪) ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৪২১.৯৮ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৩৫.৫৫ কোটি টাকা।
বিক্রয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কস্ট অব গুড্স সোল্ড উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির মোট মুনাফার শতকরা হার পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেকের। তাছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.১৭ টাকা; যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ৮.২৫ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির এনএভিপিএস পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৫৮.২২ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৫৯.৬৮ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২২.৮৮ টাকা।
চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রথম নয় মাসে বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৬.১৪ শতাংশ। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ১৪.৭৯ শতাংশ।
এ ছাড়াও মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি ৩৯২.৭৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলো। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে মাত্র ৪১.৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬৩.০৭ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল ৬০৪.৭৯ কোটি টাকা।
এছাড়া, শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২০২৪) কোম্পানির মুনাফা আরো দৃঢ় অবস্থানে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওয়ালটন ম্যানেজমেন্ট। প্রেস রিলিজ
শীর্ষস্থানীয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স-এর অষ্টম সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে রোববার।
উবার ব্যবহারকারীরা কোন জিনিসগুলো গাড়িতে সবচেয়ে বেশি ফেলে রেখে গেছেন এবং দিনের কোন সময়ে, সপ্তাহের কোন দিনে ও বছরের কোন সময়ে হারানো জিনিস রিপোর্ট করেছেন, এসব তথ্যের একটি স্ন্যাপশট হলো এ ইনডেক্স।
গত এক বছরের মে ও জুন মাসে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি জিনিসপত্র ভুলে ফেলে রেখে গেছেন। বেশির ভাগ জিনিসপত্র ফেলে রেখে আসার ঘটনাটি ঘটেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে।
গত বছর বাংলাদেশজুড়ে যাত্রীদের ভুলে যাওয়া জিনিসের তালিকায় প্রথম দুটি স্থানে ছিল পোশাক ও ছাতা। তালিকায় এর পরেই ছিল ওয়ালেট, বালিশ ও হেডফোন।
বাংলাদেশিরা উবারে এ রকম সাধারণ জিনিসপত্র যেমন ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, স্পিকারের মতো অপ্রত্যাশিত জিনিসও তেমনি ভুলে রেখে গেছেন।
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স সম্পর্কে বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য উবারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিপের সময় যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিস নিরাপদে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত। হারানো জিনিস খুঁজে পেতে উবারের কিছু ইন-অ্যাপ অপশন আছে।
‘এ ব্যাপারে যাত্রীদের জানানোর জন্য লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স একটি চমৎকার শিক্ষণীয় উপায়। যাত্রীদের আমরা জানাতে চাই যে, রাইডের সময় তারা কিছু ভুলে ফেলে গেলে তাদের সাহায্য করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
ফেলে যাওয়া জিনিস উদ্ধারের উপায়
গাড়িতে ফেলে যাওয়া কোনো জিনিস উদ্ধারের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চালককে কল করা। কীভাবে করবেন জেনে নিন।
১. ‘ইয়োর ট্রিপস’ অপশনে ট্যাপ করুন এবং যে ট্রিপে আপনার জিনিসটি হারিয়ে গেছে, তা সিলেক্ট করুন
২. নিচে স্ক্রল করে ‘ফাইন্ড লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৩. ‘কনটাক্ট ড্রাইভার অ্যাবাউট আ লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৪. স্ক্রল করে নিচে নামুন এবং আপনার সঙ্গে যোগযোগ করা যাবে এমন একটি ফোন নম্বর লিখুন। সাবমিট অপশনে ট্যাপ করুন
৫. যদি নিজের ফোন হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার বন্ধুর ফোন নম্বর ব্যবহার করুন (এর জন্য আপনাকে কম্পিউটার বা বন্ধুর ফোন থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে হবে)
৬. আপনার ফোন বেজে উঠবে এবং আপনার চালকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আপনাকে সরাসরি যুক্ত করে দেয়া হবে
৭. যদি চালক ফোন ধরেন এবং নিশ্চিত করেন যে আপনার জিনিসটি পাওয়া গেছে, সেটি ফিরিয়ে নিতে উভয়ের জন্য সুবিধাজনক একটি সময় ও স্থান নির্বাচন করুন
৮. যদি চালকের সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন, আপনার হারানো জিনিসটির বিস্তারিত বর্ণনা এবং আপনার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় জানিয়ে চালককে একটি ভয়ে সমেইল পাঠিয়ে রাখুন
উবারে কিছু হারিয়ে ফেললে সহজে কীভাবে তা ফিরে পেতে পারেন, এই ভিডিও থেকে তা দেখে নিন।
উবার যাত্রীরা যেসব জিনিস সবচেয়ে বেশি ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পোশাক। এরপরই রয়েছে ছাতা, ওয়ালেট, নেক-পিলো, হেডফোন ও স্পিকার।
যে শহরগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এরপরের স্থানগুলো যথাক্রমে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল।
বছরের যে দিনগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশিসংখ্যক জিনিস ভুলে রেখে গেছেন তার মধ্যে রয়েছে ১৩ মে, ২০২৩। এ ছাড়া ৯ জুন এবং ১৬ জুন, ২০২৩ বেশি ভুল করেছেন যাত্রীরা।
সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রোববার সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছে।
দিনের যে সময়ে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস ফেলে রেখে যান, তার সময় রাত আটটা। এরপরই সন্ধ্যা সাতটা ও রাত ৯টায় বেশি জিনিস ফেলে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন:কমানোর পরের দিনই বাড়ল স্বর্ণের দাম। ভালো মান বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৬২৯ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৭ টাকা।
রোববার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫১৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪২০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল দেশের বাজারে রেকর্ড স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। ওই সময় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল। পরে শনিবার ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমে ৮৪০ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্যমতে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ১২৮ কোটি ১৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে।
এর আগে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
দেশের স্বর্ণের বাজারে চলতি এপ্রিল মাসেই ২২ ক্যারেটের ভরিতে তিন দফায় ৪ হাজার ৫৬০ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রতি ভরিতে দাম কমানো হয়েছে ৮৪০ টাকা। নামমাত্র এই কমানোর পর ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরি স্বর্ণের দাম দাড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) শনিবার এই দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর চলতি মাসে তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা ভরি বিক্রি হবে।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়নো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ২৮৩ টাকা ভরি বিক্রি হচ্ছে।
রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।
এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।
খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।
বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।
‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।
“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”
দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য