দেশে মাঝে মধ্যেই উত্তাপ ছড়ায় পণ্যমূল্য। প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দামে ভোক্তাকে কিনতে হয় পণ্য। স্বস্তি দিতে কম দামে পণ্য নিয়ে মাঠে নামে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবি।
তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে এই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা খুবই কম। সক্রিয় করতে ২০১৪ সালের ২৮ জুন নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ছয় বছরে বাজারে এই প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ তেমন বাড়েনি।
মূলত অর্থ এবং জনবল সংকটের কারণে সক্রিয় হয়নি টিসিবি।
প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হুমায়ন কবীর নিউজবাংলাকে জানান, পণ্য কেনার জন্য কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থ বরাদ্দ মেলে না। প্রতি বছরই ‘লোন অ্যাগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিপ্ট’ বা এলটিআরের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে অর্থ এনে পণ্য কেনা হয়। তবে বারবার চাহিদা দেয়া হলেও এই প্রতিষ্ঠানে কোনো এককালীন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। জনবল চেয়ে বারবার চাহিদা দেয়া হলেও পূরণ হয় না শূন্য পদ।
হুমায়ন কবীর জানান, সর্বশেষ ১৩০ জনের জনবল ছিল। সেখান থেকে কমতে কমতে এখন ১০৯ জনে এসে স্থির হয়েছে। বাজারের মোট চাহিদার মাত্র ৪-৬ শতাংশ পূরণ করতে পারে টিসিবি। ফলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়ে দামের লাগাম টেনে ধরা অনেক কঠিন কাজ।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘টিসিবি যদি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি প্রক্রিয়া, নিয়মনীতির আওতায় থাকে তাহলে টিসিবিকে গতিশীল করা কঠিন। নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সেটা মেটানোর জন্য সরকার টিসিবিকে ব্যবহার করছে। প্রতিনিয়ত ব্যবসা করার জন্য টিসিবিকে ব্যবহার করা হচ্ছে না।
‘কোনো পণ্যের দাম বেড়ে গেলে সেটা টিসিবির আওতায় দেয়া হয়। লাভ-লোকসান যাই হোক না কেন, টিসিবিকে স্বাধীনভাবে পণ্য কেনাবেচা করতে দিতে হবে। সরকারি সংস্থা হিসেবে নয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে দিতে হবে। টিসিবির সাংগঠনিক কাঠামো ব্যবসায়িক কাঠামোর মতো করতে হবে, যা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল।’
গোলাম রহমান আরও বলেন, ‘টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গুদামের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, আধুনিক মানসম্মত গুদাম নির্মাণ, উৎপাদন মৌসুমে বিদেশ থেকে পণ্য সরবরাহ, সংরক্ষণ এবং যথাসময়ে বাজারজাত করে পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার ভারসাম্য রক্ষার প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হবে।’
নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে অগ্রগতি
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে টিসিবির নেয়া পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চট্রগ্রামে প্রতিষ্ঠানটি ৪০,০০০ বর্গফুটের ৮০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি গুদামের নির্মাণকাজ মাত্র শেষ করেছে।
এ ছাড়া সিলেট (মৌলভীবাজার) ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে সরকারি অর্থায়নে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গুদাম নির্মাণের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। গত বছরের ১২ জুলাই প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাজার থেকে কিনে বা আমদানি করে চিনি, ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল সংরক্ষণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া রোজা উপলক্ষে ছোলা ও খেঁজুর সংরক্ষণ করে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় যেকোনো পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে দেখা গেলে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক সেই পণ্য টিসিবি সংগ্রহ করে। পরে সাশ্রয়ী দামে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে। এসব পণ্য কিনতে প্রতিবছর প্রয়োজন হয় এক হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ ব্যাংক থেকে এলটিআরের মাধ্যমে নেয়া হয়।
টিসিবির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উৎপাদন মৌসুমে পণ্য সংগ্রহের জন্য টিসিবি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর ৩০০০ মেট্রিক টন মশুর ডাল ও ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। মশুর ডাল কেনার জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিটি অটো রাইস মিলসকে নির্বাচন করা হয়।
বছর বছর পণ্য কেনার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। তবে সেই ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেলের দুইটি শিডিউল বিক্রি হওয়ার দর সম্পর্কে সঠিক ধারণা না পাওয়ায় পুনঃদর প্রকাশের আহ্বান করা হয়।
চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি এডিবল অয়েলের সঙ্গে ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল, সিটি সুপার মিলের সঙ্গে ৭০০০ মেট্রিক টন চিনি এবং সিটি অটো রাইস মিলের সঙ্গে ৩০০০ মেট্রিক টন মশুর ডাল কেনার চুক্তি করা হয়।
১৮ জানুয়ারি সয়াবিন তেল কেনার জন্য পুনঃ দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। ২০ জানুয়ারি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় সর্বনিম্ন দরদাতা মেঘনা এডিবল অয়েল মিলকে তেল সরবরাহের জন্য মনোনীত করা হয়।
২৮ জানুয়ারি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল, ১৫০০ মেট্রিক টন চিনি ও ৬০০০ মেট্রিক টন মশুর ডালের দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। সংরক্ষণের স্থান সংকুলান না থাকায় পণ্যের বড় মজুদ করতে পারে না টিসিবি।
টিসিবির জনবল
১৯৭২ সালে ১ হাজার ৪০৬টি পদ নিয়ে যাত্রা শুরু করা টিসিবির কর্মীসংখ্যা এখন ১০৯ ।
টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯০ সালেও টিসিবির পদসংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩শর বেশি। ১৯৯৩ সালে এক দফা গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে পদসংখ্যা ৭১৪-তে নামিয়ে আনা হয়। এরপর ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে আবার ৩৪০ কর্মীকে অবসরে পাঠানো হয়।
২০১০ সালের পর এক দফায় কয়েকজনকে নিয়োগ দিয়ে ১৩০ জনের জনবল কাঠামো তৈরি হয়। এখন অবসরে গিয়ে মোট জনবল ১০৯ জন। কেবল জনবল সংকটই নয়, টিসিবি কর্মীদের দক্ষতারও অভাব রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে তরুণ কর্মীর অভাব।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য