চার কার্যদিবস দর বাড়ার পর থামল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দৌরাত্ম্য।
বড় মূলধনী কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতে বেশির ভাগের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে সূচকেও যোগ হয়েছে পয়েন্ট। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনও বাজার পর্যবেক্ষণে। এ কারণে কমেছে লেনদেন।
বুধবার দ্বিতীয় ব্যাংক হিসাবে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আর চতুর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লংকাবাংলা ফিন্যান্স।
এই দুটি প্রতিষ্ঠানই আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করেছে মহামারিকালে। লংকা বাংলার লভ্যাংশ আগের বছরের সমান আর শাহজালাল সামান্য বেশি দিয়েছে।
লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বিমা খাতের রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সও। মহামারিকালে এই কোম্পানিও মুনাফা করেছে আকর্ষণীয়।
‘মুনাফা নিতে’ পতন বহুজাতিক ও দামি শেয়ারের
সপ্তাহের শুরু থেকে আলোচনায় থাকা বহুজাতিক ও দামি শেয়ারগুলোর দর বৃহস্পতিবার কমেছে।
রেকিটবেনকিউজার লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৫০ টাকা ৭০ পয়সা। গত ৩ মার্চ থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ হাজার ৫৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪ হাজার ৭৫০ টাকায় উঠে। বৃহস্পতিবার দর কমে হয়েছে ৪ হাজার ৭০০ টাকা।
ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৩৪ টাকা ১০ পয়সা। ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে দর বেড়ে উঠেছিল ২ হাজার ৯৬৩ টাকায়। বৃহস্পতিবার দরপতন হয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯২৯ টাকায়।
ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদরও গত চার কার্যদিবস বেড়েছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে দশমিক ১৮ শতাংশ। লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৫ টাকায়। তবে এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২ হাজার ১৪৬ টাকায় উঠেছিল।
বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ১২০ টাকা। আগের দিন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১ হাজার ৯৩০ টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে হয়েছে ১ হাজার ৮০৫ টাকা।
লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডে শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বা ১৯ টাকা ৩০ পয়সা। দর বাড়তে থাকা ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের শেয়ারদর ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ বা ২৫ টাকা ৫০ পয়সা কমেছে।
রেনেটা লিমিটেডের শেয়ারদরও কমেছে বৃহস্পতিবার। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর দশমিক ৬৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৭ টাকা ৮০ পয়সা করে কমেছে।
বাজার বিশ্লেষকের বক্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো নিয়ে পুঁজিবাজারে গুজব আছে। এগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। কিন্তু যে হারে শেয়ারের দর বেড়েছে তারপর আর বাড়া উচিত না। এখন মূলত এসব কোম্পানি থেকে মুনাফা উত্তোলনের কারণেই দর কমেছে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো। সূচক ও লেনদেনে যে স্থিতাবস্থা আছে তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিনিয়োগকারীরা চাইবেই শেয়ারের দর বাড়লে তা বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার। এর জন্যই লেনদেন মাঝে মাঝে কমে আসে।’
একই বক্তব্য দিলেন পুঁজিবাজারের বিশ্লেষক আবু আহমেদও। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিমা কোম্পানিগুলোর অর্থবছর শেষ হচ্ছে ডিসেম্বরে। ফলে বলা চলে এটা লভ্যাংশ ঘোষণার মাস। আগামী আরও দুই মাস এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ফলে যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করেছে তারা এখন অপেক্ষা করবেন কোম্পানির লভ্যাংশের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বাজার ভালো যাচ্ছে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা আছে সেটি অনেকটাই লভ্যাংশ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করছে বিনিয়োগকারীদের। সেটি দ্রুতই সমাধান করা উচিত।’
লেনদেনে এগিয়ে থাকা কোম্পানি
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন কোম্পানিটির ১ কোটি ১৫ লাখ ১৭ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকায়।
দ্বিতীয় স্থানে ছিল লংকাবাংলা, যার ২ কোটি ২৮ লাখ ৪ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকায়।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার, যার বাজারমূল্য ছিল ৬৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৬ লাখ ৯৮ হাজার, যার বাজারমূল্য ছিল ৪৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১০টির, কমেছে ১২২ টির ও পাল্টায়নি ১১৫টির।
লেনদেন হয়েছে ৮০৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৭৯ কোটি টাকা। এ হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৭০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া ২১৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ৮৭টির ও পাল্টায়নি ৬৫টির।
লেনদেন হয়েছে মোট ৩৯ কোটি টাকা।
আগ্রহ ও অনাগ্রহের কোম্পানি
বৃহস্পতিবার লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছিল তালিকাভুক্ত ‘বি‘ ক্যাটাগরির কোম্পানি। এদিন আনলিমা ইয়ার্ডের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ শতাংশ। আগের দিনের ৩৯ টাকা থেকে দর বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা ৯০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সোনালী আঁশের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪৩৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৭৫ টাকা ৫০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা সালভো কেমিক্যালের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
দরপতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সদ্য তালিকাভুক্ত কোম্পানি লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এক দিনে সর্বোচ্চ যত টাকা দর হারানো সম্ভব ততই কমেছে কোম্পানিটির।
লেনদেন শুরুর তৃতীয় কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০ শতাংশ বাড়া বা কমার কথা। কিন্তু শতাংশের হিসাবে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমার সুযোগ ছিল। কমেছেও তা।
আগের দিনের ৬০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দর কমে হয়েছে ৫৪ টাকা ৭০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেছে পুলিশ। রাতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গাজীউর রহমান জানান, এ মামলায় গ্রেপ্তার প্রত্যেকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন প্রস্তুত করছে পুলিশ। রিমান্ড আবেদন প্রস্তুতের পর তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
শনিবার রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য, তার দুই সহযোগী মো. রবিন ও মো. ফয়সালকে আটক করে যৌথবাহিনী। বিকেলে তাদের নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
অনিন্দ্য ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন। এ মামলায় ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
রূপগঞ্জে গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবাসন চাহিদা পুরনের জন্য কৃষি জমিতে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর বালি ভরাটের কারনে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছ্। গৃহপালিত পশু পালনে কৃষকদের এখন ভরসা নেপিয়ার জাতের ঘাস। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে গোখাদ্যর সংকটের বিষয়টি কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। গোখাদ্য সংকটে অনেকই কম দামে পশুগুলোকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার কাঞ্চন, ভোলাব,দাউদপুর, মুড়াপাড়া, মাঝিনা নদীর পাড়, দেইলপাড়া, নদ্দাসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামে এখন নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। বেসরকারি দুগ্ধ খামারিরা তাদের বাড়িতে খরচ কমানোর জন্য নেপিয়ার ঘাস চাষের দিকে ঝুকছে। আঁশযুক্ত,পুষ্টিকর, সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে চাহিদা ব্যাপক। একবার কেটে নিলে ঘাস মরে যায়না বরং কাটা অংশ থেকে পুনরায় কুঁড়ি জন্মে আবার তা পূর্নাঙ্গ ঘাসে পরিণত হয়।
সরজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে গোখাদ্য সংকট এবং নেপিয়ার জাতের ঘাসে কৃষকের ভরসার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। বারৈ গ্রামের কদম আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, অন্যের জমি চাষ করি। বাড়তি আয়ের জন্যে গরু-ছাগল পালি। কৃষক টিপু হায়দার বলেন, গরুর খাদ্য সমস্যার জন্যে আমাদের গরু কম দামে বিক্রি করে দিছি। নেপিয়ার জাতীয় ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল, ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কেটে নেয়া ঘাসগুলো বড় হয়ে যায়।
উপজেলা পশু পালন কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস গোখাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পশু খাদ্যের আরেক নাম নেপিয়ার ঘাস। দ্রুত বর্ধনশীল, উৎপাদন খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় এলাকার চাষিরা দিনদিন নেপিয়ার জাতীয় ঘাস চাষে ঝুঁকছেন। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অপরদিকে গোখাদ্য সংকট নিরসনেও ভূমিকা রাখছেন। প্রতি মাসে খামারিদেরকে বিনামূল্যে নেপিয়ার ঘাসের বীজ কাটিং দেয়া হয়। নেপিয়ার ঘাস ১০/১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চাষের পদ্ধতিও সহজ।
কক্সবাজারে সরকারি সফরে এসে অসুস্থ হয়ে জরুরিভাবে ঢাকায় ফেরা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
তিশা লিখেছেন, “মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কক্সবাজারে মন্ত্রণালয়ের একটি ওয়ার্কশপে উপস্থিত থাকাকালীন সময়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বর্তমানে হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অতিরিক্ত কাজের প্রেশারের কারণে তিনি (উপদেষ্টা) অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আপাতত তিনি আশঙ্কামুক্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে চারদিনের সফরে কক্সবাজারে আসেন সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। পরদিন শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে অসুস্থতা অনুভব করলে সফর মুলতবি করে জরুরিভাবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘কক্সবাজারে সংস্কৃতি হাব-বিষয়ক এবং জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন সংক্রান্ত কয়েকটি কর্মসূচিতে উপদেষ্টার উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অবশিষ্ট কর্মসূচিগুলো বাতিল করা হয়েছে।’
সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে কক্সবাজারে থাকাকালীন স্থানীয় চিকিৎসকরা উপদেষ্টাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় দশ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এর ৪০ ভাগ কোনো না কোনো কাজে যুক্ত হতে পারছে, ২০ ভাগ স্ব-উদ্ভাবিত কর্মসংস্থান করেছে। আর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ বেকার থাকছে।
গতকাল শনিবার এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এই তথ্য দেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাব, ডেমোনেস্ট্রেটর, শিক্ষক, অধ্যক্ষ সবই থাকা সত্ত্বেও ল্যাব প্রাকটিক্যাল হচ্ছে না। এটা শুধু নৈতিক অবক্ষয়ের অবনমন। এর উত্তরণ ঘটাতে হবে।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণ নিরুৎসাহিত করতে হবে, তাদের দক্ষ শ্রমিক করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সেরা শিক্ষক সম্মাননা ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষাকারীকে না দিয়ে প্রকৃতই সেরা শিক্ষককে দেওয়ার সুপারিশ করেন উপাচার্য।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রের কোনো গুণগত উন্নতি হয়নি। আমরা বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতেও ব্যর্থ হয়েছি।
ভিসি বলেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের অবস্থা এক সময় বাংলাদেশের মতোই ছিল। কিন্তু আজ সেই দেশগুলোর মাথাপিছু আয় বহুগুণে বেড়েছে। আর এর জন্য চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার একটি বড় অবদান রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ১১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, গুণগত শিক্ষার অভাবই শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রতি বছর এসএসসিতে ২.৫ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও বাস্তব শিক্ষার উন্নতি হচ্ছে না। প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, কিন্তু যারা জিপিএ-৫ পায় না, তারা কোথায় যাচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ শতাংশ। এর মধ্যে ৪.৫ শতাংশ বেকার। তাই জব মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে।
ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়ক ভূমিকা রাখলেও মূল দায়িত্ব পালন করেছে চীন, রাশিয়া ও জাপানের প্রকৌশলীরা। অথচ স্থানীয় প্রকৌশলীরা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছে। মূল সমস্যা হলো চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাব।
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ গত শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কোরাল মাছ। বিশাল এই মাছ দেখে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে মাছটি সকালেই বাজারে নিয়ে যান।
মাছটি দেখতে বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে ভিড় করেন। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, রাশেদ জীবনে এই প্রথম এত বড় আকারের কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজির কোরাল আসে, কিন্তু এ বছর এত বড় কোরাল প্রথম ধরা পড়ল।
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরালটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
জেলে রাশেদ বলেন, এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের একটি নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে দিতে হবে ১৪ ধরনের তথ্য।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এখন থেকেই বিদেশিরা আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে ১৪ ধরনের তথ্য দিতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই নিজের নাম, জন্ম তারিখ, সংস্থা বা দেশের নাম, পেশা, অভিজ্ঞতা থাকলে দেশ ও বিদেশের অভিজ্ঞতা, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের মেয়াদ, জাতীয়তা, বাংলাদেশে অবস্থানকালীন ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নম্বর, আবেদন তারিখ ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এছাড়া আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা একটি ছবি, মেয়াদ থাকা পাসপোর্টের কপি ও সিভি সংযুক্ত করতে হবে।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আনফ্রেল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোট পর্যবেক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এবারের নীতিমালায় বিদেশিদের অনুমতিদানে পুরো ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নিজের কাছে রাখা হয়েছে। আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হতো। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ইসির সুপারিশের ভিত্তিতে ভিসা ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পাওয়া ৩৩টি ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব ব্যাংক হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন ফির অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম।
যেসব ব্যাংক আগামী হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছে– সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। প্রাক-নিবন্ধনের অর্থ প্রতি ৩০ দিবসের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। হজযাত্রীর বিপরীতে কোনো হজ এজেন্সিকে ঋণ দেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর প্রাথমিক নিবন্ধন বা নিবন্ধনের অর্থ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা থাকবে। এ অর্থ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নির্ধারিত খাত ছাড়া অন্য খাতে ব্যবহার বা স্থানান্তর করা যাবে না। ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ (সংশোধিত)’ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
মন্তব্য