পুঁজিবাজারে আগ্রহ হারানোর তালিকায় এবার যোগ হলো বেক্সিমকো লিমিটেড।
গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে এককভাবে লেনদেনে রাজত্ব করেছে এই কেম্পানি। এমনও লেনদেন হয়েছে, যখন মোট লেনদেনে শুধু বেক্সিমকোর অংশগ্রহণ ছিল ৩০ শতাংশের বেশি। এই সময়ে এককভাবে তিনশ কোটি টাকার বেশির লেনদেনের ইতিহাসও আছে কোম্পানিটির।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেক্সিমকো লিমিটেডের রাজস্ব কমলেও উল্লম্ফন ঘটেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দর।
ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেডের রেকর্ড ডেটের পর ফ্লোর প্রাইস সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ৫১৮ টাকা। এতে গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধিসহ লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে। রোববারও তাই হয়েছে। এককভাবে এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি টাকার।
এছাড়া এ তালিকায় ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, ম্যারিকো, বার্জার প্রেইন্ট, রেকিডবেনকিউসার।
কেমন ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড
২০২০ সালের জুলাই মাসে ১৩ টাকা দরের বেক্সিমকো লিমিটেড যারা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লেনদেন করেছেন তারাও প্রত্যেকেই শেয়ার প্রতি ৫০ শতাংশের বেশি লাভ করেছেন। এই সময়ে ক্রমাগত দর বেড়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার দর হয়েছে ৯১ টাকা। লেনদেনে উত্থান পতন থাকলেও বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৮১ টাকায়।
সর্বশেষ সুদবিহীন সুকুক বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তুলে বেশির ভাগ অংশই নিজেদের মালিকানাধীন দুটি সৌরচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করার উদ্যোগ নিয়েছে বেক্সিমকো।
উত্তলন করা টাকা বিনিয়োগ হবে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা ও লাঠশালার চরে ১ হাজার একর জমির উপর নির্মাণ হচ্ছে ২০০ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিনিয়োগ করা হবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নির্মিতব্য ৩০ মেগাওয়াটের করতোয়া সোলার লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রেও।
এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭৫ শতাংশের মালিক বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিপাওয়ার। আর এই প্রতিষ্ঠানের ৭৫ শতাংশের মালিক বেক্সিমকো লিমিটেড। তবে সব অর্থই এই দুই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ হবে না। বেক্সিমকোর টেক্সটাইলের ব্যবসা সম্প্রসারণেও ব্যয় হবে একটি অংশ।
পিপিই শিল্প পার্ক স্থাপনে ৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বেক্সিমকো। এখান থেকে বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করার আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র কোম্পানিটি থেকে পণ্য কেনার চুক্তি করেছে।
তিন মাসের বেশি সময় ধরে এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন রোববার কমে এসেছে। এদিন কোম্পানিটির মাত্র ৫৩ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ৪৩ কোটি টাকায়।
এগিয়ে দামি শেয়ার
রোববার সবচেয়ে বেশি বিএটিবিসি’র ১৯ লাখ ৪৬ লাখ ২৭৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি টাকায়, যা মোট লেনদেনের ১৪ শতাংশ। দর বেড়েছে ৫৫৬ টাকা থেকে ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৯৮ দশমিক ৫০ টাকা।
এছাড়া এগিয়ে ছিল রেকিড বেনকিউজার, যার শেয়ার দর বেড়েছে ১৬৬ টাকা। দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা। ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার দর দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১৪৭ টাকায়। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১১ টাকা।
বার্জার প্রেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ১ হাজার ৫৫৭ টাকা থেকে ৯৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬৫২ টাকা।
লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার দর ১ হাজার ৩০৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩৩৫ টাকা। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
ওয়ালটন হাইটেড ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের দিনের ১ হাজার ১৯০ টাকা থেকে দর বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২২৩ টাকা।
হঠাৎ দামিসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরের এমন উত্থান বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখা গেছে দেশীয় অনেক ভালো কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের বোনাস বা ভালো লভ্যাংশ দেয়ার পর সেই দর আর থাকেনি। বরং ক্রমেই কমেছে।’
তিনি জানান, সম্প্রতি বিএটিবিসি ২০০ শতাংশ বোনাসসহ ৬০০ শতাংশ নগদ দেয়ার পর শেয়ার দরে খুব বেশি পতন হয়নি। বরং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। এমন ধারণা থেকেও বহুজাতিক ও দামি শেয়ারগুলোর দর বাড়তে পারে।
খাতভিত্তিক দিনের লেনদেন
রোববার ডিএসইর লেনদেনে ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির। আর দর কমেছে দুটির, পাল্টায়নি ৫টির।
প্রকৌশল খাতেও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর পাল্টায়নি। তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর পাল্টায়নি ১৮টির, দর বেড়েছে ১৩টির। বাকি ১১টির দর কমেছে।
ব্যাংক বহির্ভূত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির। পাল্টায়নি চারটির, দর কমেছে চারটির।
বিমা খাতেও লেনদেন কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে বৃহস্পতিবার। তালিকাভুক্ত ৪৯টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির। দর পাল্টায়নি পাঁচটির। আর দর কমেছে ২৭টির।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের ২১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির, দর কমেছে তিনটির, দর পাল্টায়নি তিনটির।
সূচক ও লেনদেন
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের-ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৮ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৭ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৬ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৪৩ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া ৩৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ১৩৩টির ও পাল্টায়নি ১০০টির দর। ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৮৭৬ কোটি টাকা। আগের দিন ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল ৭০৭ কোটি টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৬৯ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে- সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২২৪ দশমিক ০৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২০০ পয়েন্টে। লেনদনে হওয়া ২৩৩টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৫টির, কমেছে ৮৩টির ও পাল্টায়নি ৫৫টির। এ সময় সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি টাকা।
আগ্রহ ও অনাগ্রহের কোম্পানি
রোববার ডিএসইতে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ দর বেড়ে শীর্ষে ছিল লাফার্জহোলসিম লিমিটেডের। এছাড়া বিএটিবিসি শেয়ার দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সামিট পাওয়ারের শেয়ার দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এ তালিকায় ছিল বার্জারপ্রেইন্ট বাংলাদেশ, বিএসআরএম লিমিটেড, সিটি ব্যাংক, বিডি ফিন্যান্স।
দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে সদ্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ড। ফান্ডটি ২০২০ সালে ইউনিটি প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা। নিয়ম অনুযায়ী আয়ের ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ আকারে ঘোষণা করার শর্ত থাকলেও ফান্ড ঘোষণা করেছে মাত্র ১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
এতে নিয়ম অনুযায়ী যেখানে বিনিয়োগকারীরা ফান্ডের আয়ের বিপরীতে ১ টাকা ১৭ পয়সা লভ্যাংশ পাওয়ার কথা সেখানে দেয়া হয়েছে মাত্র ১৬ পয়সা।
এমন অবস্থায় রোববার ফান্ডটির ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। এবং দিনের শীর্ষ দর পতন হওয়া কোম্পানির ছিল এটি। এছাড়া এ তালিকায় ছিল সিএনএটেক্স, বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স লিমিটেড, প্রাইম লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স লিমিটেড, ডিফোডেল কম্পিউটার।
আরও পড়ুন:শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য