জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সামনে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ শুরু হয়ে গেছে। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে পাওয়া সুবিধা হারানোর পাশাপাশি বাংলাদেশকে সংরক্ষণমুলক বাণিজ্যের পরিবর্তে বিশ্বের উদার বাণিজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে।
এ উদার বাণিজ্যে ঝুঁকি ও সম্ভাবনা দুটোই রয়েছে। তবে বিভিন্ন দেশ, অঞ্চল বা জোটের সঙ্গে পরিকল্পিত বাণিজ্য চুক্তি করেই সম্ভাব্য এই ঝুঁকিকে সম্ভাবনায় রূপান্তরের পথ তৈরি হবে।
সব চুক্তির ধরন ও শর্ত এক রকম নয়। এই আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোয় দেশ বা অঞ্চল, দ্বিপক্ষীয় বা বহুপাক্ষিক জাতিগোষ্ঠী বিবেচনায় অনেক ভিন্নতাও রয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশ সব সময় এগুলো বহন করার সক্ষমতা রাখে না।
এ পরিস্থিতিতে কোন পথে পা বাড়াবে বাংলাদেশ? হাতে প্রস্তুতির সময় মাত্র পাঁচ বছর।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তরণের এই ঝুঁকি কমাতে পূর্বসূরীদের মতো বাংলাদেশও বাণিজ্য চুক্তি করার পদক্ষেপেই হাঁটছে। তবে কোন চুক্তিতে অগ্রসর হলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বাধিক কার্যকর হবে, তা নিয়ে সরকার এবং বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, উত্তরণজনিত ঝুঁকি হ্রাস এবং সক্ষমতার উন্নয়নে উত্তরণকারী দেশগুলো মোটা দাগে চারটি চুক্তিতে নিজেকে যুক্ত করতে পারে।
এগুলো হলো ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি, রিজিওনাল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (আরটিএ) বা আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি এবং বিশেষ কোনো একটি দেশের সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) বা বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব চুক্তি।
এর বাইরেও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারে রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ বা বৃহত্তর অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (আরসিইপি) অথবা ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপের (টিপিপি) মতো কোনো জোটেও। তবে এর সঙ্গে দেশের ভৌগলিক সীমারেখা ও দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের মানদণ্ড ও বাণিজ্যিক লাভালাভের অংকটি যুক্ত।
এই এতোসব চুক্তির মধ্যে বাংলাদেশের জন্য কোন চুক্তি উত্তরণের জন্য সর্বাধিক কার্যকর হবে? সরকারই বা কোন দিকে বেশি অগ্রসর হচ্ছে?
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশ বুঝে চুক্তি করতে হবে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা, চীন এবং ভারতের মতো দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার মতো সক্ষমতায় বাংলাদেশ নেই। কারণ এফটিএ মানে হচ্ছে, এসব দেশের সব পণ্যের অবাধ রপ্তানির জন্য আমাদের বাজার পুরোপুরি খুলে দেয়া। এর চাপ দেশের শিল্পগুলো সামলাতে পারবে না। ভৌগলিক সীমারেখার প্রেক্ষাপটে আমাদের আরটিএগুলো সেভাবে সক্রিয় নয়। খুব বেশি আরটিএ আমরা করতেও পারিনি।
‘বাকি থাকল অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে এই চুক্তিই সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে। কারণ এতে সব পণ্য আসবেও না, বাংলাদেশ থেকেও সব কিছু তারা নেবে না। যার যার দেশের চাহিদা অনুযায়ী চুক্তিতে উল্লেখ করা পণ্যগুলোর আমদানি-রপ্তানি হবে। তবে তালিকাভূক্ত পণ্য নির্ধারণে ভীষণ দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। আবার শুল্কহারের দরকষাকষির দূরদর্শিতাও দেখাতে হবে।’
আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, আপাতত পিটিএর মাধ্যমে অগ্রসর হলে সব কূলই রক্ষা হবে।
অন্যদিকে, বেসরকারি আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, উত্তরণ পর্যায়ের এই প্রস্তুতিতে সময় বিবেচনায় এফটিএ-এর তুলনায় পিটিএর গুরুত্ব বেশি। আবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতার প্রেক্ষাপটে বড় অর্থনৈতিক শক্তির দেশগুলোর সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব চুক্তিই (সেপা) বেশি গুরুত্ব রাখে। এই চুক্তি ভারত এবং চীনসহ অনেক দেশের সঙ্গেই হতে পারে। আরটিএ বিবেচনায় তিনি আসিয়ান জোটে ভেড়ার পরামর্শ দেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়ার মতো বাণিজ্য জোটের সঙ্গেও পিটিএকে তিনি সমর্থন করেন।
এ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাণিজ্যকারী দেশগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আমাদের আন্তর্জাতিক চুক্তির পথে যেতেই হবে। সেক্ষেত্রে কার সঙ্গে আমরা কোন চুক্তি স্বাক্ষর করব, তা নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট দেশের আগ্রহ এবং বাংলাদেশের লাভক্ষতির গ্রহণযোগ্য এবং প্রামাণ্য পর্যালোচনার ওপর। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ধরন ও সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সরকার সব ধরনের সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়েই চুক্তির পথে এগোচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে দেশে প্রধান এই বাণিজ্য কর্মকর্তা জানান, এলডিসি থেকে উত্তরণের ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকার বিশ্বের প্রায় অর্ধশত দেশ, অঞ্চল ও বাণিজ্য জোটের সঙ্গে চুক্তি করার লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে বিশ্বের ১১টি দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং পিটিএ করার জোর প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে সেপা চুক্তি করারও উদ্যোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এমন চুক্তিতেই যাবো, যেখানে আমাদের ঝুঁকিকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে পারব। তবে শুধু চুক্তি করলেই হবে না। এর পাশাপাশি নিজেদের আন্তর্জাতিক বাজার বিনা শুল্কে প্রতিযোগিতা করার মতো এবং মুক্ত বাণিজ্যের ধাক্কা সামলানোর মতো সক্ষমতাও অর্জন করতে হবে। সরকার সব দিক সামলানোরই জোরদার প্রস্তুতিতে রয়েছে।’
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে চূড়ান্ত উত্তরণ বা পদোন্নতির সুপারিশ দেয় জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএনসিডিপি)। এই উত্তরণ প্রক্রিয়ার কারণে ২০২৬ সালের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে বাজার সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রবিধান অনুযায়ী, স্বল্পোন্নত সুবিধায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টিসহ বিশ্বের ৫৫টি দেশে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা (জিএসপি) পেয়ে আসছে, যা আর থাকবে না। এতে দেশের উদ্যোক্তা-রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা দারুণভাবে কমে আসবে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে হবে বাংলাদেশকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করেছে। বিশ্বের কোনো দেশের সঙ্গে এটিই বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ। এখন নেপালের সঙ্গেও একই চুক্তি হতে যাচ্ছে। আগামী জুনের মধ্যেই তা স্বাক্ষর হতে পারে। পিটিএ করা হবে ইন্দোনেশিয়া এবং মালদ্বীপের সঙ্গেও। এছাড়া পর্যায়ক্রমে পিটিএর তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হলো মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, মেক্সিকো, মরক্কো, কানাডা, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, মিশর এবং একটি আঞ্চলিক গ্রুপ ‘গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল’ (জিসিসি)।
অন্যদিকে এফটিএ স্বাক্ষরের তালিকায় রয়েছে ভিয়েতনাম, চীন, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে।
ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাতাসের নিম্ন মানে প্রথম সারিতে রয়েছে ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ১৮০ স্কোর নিয়ে ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে দ্বিতীয় ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ও ভারতের দিল্লি।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২২ দশমিক ৩ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৮০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য