পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হচ্ছে সিলেটের আরও দুটি শুল্ক স্টেশনে। এর মধ্যে সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দিয়ে উন্নয়নকাজ শুরু হয়ে গেছে। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ শুরু হলেও শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুন। এত দিন ঘোষণার মধ্যেই আটকে ছিল স্থলবন্দর। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো, লোকবল নিয়েই চলছিল শেওলার কার্যক্রম। সেবাও ছিল শুল্ক স্টেশনের।
অবশেষে ঘোষণার প্রায় ৬ বছর পর শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেয়ার কাজ শুরু হয়। ওই দিন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শেওলা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরদিন তিনি ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের ঘোষণা দিয়ে জমি অধিগ্রহণকাজের উদ্বোধন করেন।
শেওলা ও ভোলাগঞ্জের আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিলে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে সেখানে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।
শেওলার অবস্থান ভারতের আসাম রাজ্যের বিপরীতে। ব্যবসায়ীরা জানান. ভারতের সাত রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ অপেক্ষাকৃত সহজ হওয়ায় এখানে স্থলবন্দরের কাজ শুরু হলে আমদানি-রপ্তানি আরও বাড়বে। ভোলাগঞ্জ দিয়েও আমদানি-রপ্তানি বাড়বে বলে আশা তাদের।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রায় অচল অবস্থায় রয়েছে শেওলা ও ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন। কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। ভোলাগঞ্জ দিয়ে কেবল পাথর ও শেওলা দিয়ে কিছু ফল আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তারা।
শেওলার ফল আমদানিকারক আবুল কালাম বলেন, ভারত থেকে এই শুল্ক স্টেশন দিয়েই আমদানি অপেক্ষাকৃত সহজ। কারণ, এখানকার যোগাযোগব্যবস্থা ভালো।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শেওলা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১-এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব বলেন, প্রায় ২৫ একর জায়গার ওপর শেওলা স্থলবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় আগের ১৫ একরের বাইরে নতুন করে ৯ একর জমি অধিগ্রহণসহ গোডাউন, ইয়ার্ড, নিরাপত্তাপ্রাচীর, ওয়েব্রিজ স্কেল, ট্রাক পার্কিং, ডমেস্টিক ব্যারাক নির্মাণ করা হবে।
ভোলাগঞ্জের কাজের বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করতে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সরকারি খাসজমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নামে প্রদানের জন্য আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। অচিরেই এই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে।’
সিলেটের দুই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়ের। তিনি বলেন, ‘কেবল স্থলবন্দরে উন্নীত করলেই চলবে না। ব্যবসায়ীরা যাতে স্থলবন্দরের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পান, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নতুবা ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত হবেন।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পুলিশের ওসি সেজে ইলেকট্রনিক্স শো-রুম থেকে পণ্য আত্মসাতের ঘটনায় এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রতারক চক্রটি হোয়াটসঅ্যাপে আনোয়ারা থানার ওসির পোশাক পরা ছবি ব্যবহার করে নিজেকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে উপজেলার বটতলী ও বন্দর সেন্টার মহালখাঁন বাজারের দুটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা দুটি স্মার্ট টিভি, একটি ফ্রিজ ও দুটি ফ্যান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং টাকা বিকাশে পাঠানো হবে অথবা লোক মারফত পরিশোধ করা হবে বলে জানায়।
এরপর গত ২৭ জুন মালামাল পিকআপে তুলে নেওয়ার পর চক্রটি টাকা না দিয়ে গা ঢাকা দেয়। প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ীরা তখন আনোয়ারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে এবং সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানাধীন বলুয়ার দিঘীর পাড় এলাকার একটি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে মো. সুমন (৩৫) নামের একজনকে আটক করে। তিনি মৃত মো. করিমের ছেলে।
আটকের সময় সুমনের বাসা থেকে একটি ফ্রিজ ও একটি ফ্যান উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া পটিয়া এলাকা থেকে একটি স্মার্ট টিভিও উদ্ধার করে পুলিশ।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "ওসি সেজে প্রতারণার ঘটনায় একজনকে আটক এবং তিনটি মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক অন্য প্রতারককে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।"
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৮ হাজার জন নিয়োগের লক্ষ্যে আজ থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রার্থীদের অবশ্যই এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। আগ্রহীরা আগামী ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
গত ২৭ জুন বাংলাদেশ পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদন করতে হবে পুলিশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে https://pcc.police.gov.bd ।
আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
শারীরিক যোগ্যতা: মেধা কোটার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে। নারী প্রার্থীর উচ্চতা মেধা কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে।
মেধা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি। দৃষ্টিশক্তি ৬/৬।
আবেদন ফি: ফরম পূরণ করার পর যোগ্য প্রার্থী একটি ইউজার আইডি পাবেন। সেই আইডিতে আবেদন ফরম পূরণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে ৪০ টাকা জমা করতে হবে।
আবেদন করার সময়কাল ১ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
নিম্নোক্ত সময়সূচি অনুযায়ী জেলাগুলো হতে কনস্টেবল পদে প্রার্থী বাছাই চূড়ান্ত করা হবে।
মাগুরা, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝিনাইদহ, নাটোর, নীলফামারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, নরসিংদী, মেহেরপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও খুলনা জেলায় শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১০, ১১ ও ১২ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় নেওয়া হবে ।
সাচিপুর, নওগাঁ, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, নরসিংদী, নেত্রকোণা, ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৩, ১৪ ও ১৭ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৫ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় হবে।
রাজবাড়ী, কুড়িগ্রাম, মাদারীপুর, মেহেরপুর, মাটিরাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, শেরপুর, ভোলা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি, বান্দরবান, নড়াইল, পাবনা ও বরগুনা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা হবে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায়।
শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, চাঁদপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, পিরোজপুর ও চুয়াডাঙ্গা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ২০, ২১ ও ২২ আগস্ট, সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায়; এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে জবাবদিহিতা, সমন্বয় ও তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ও পানি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিবীক্ষণ ব্যবস্থায় তরুণ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে পয়:নিষ্কাশন ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইনসিনারেশনের বিকল্প হিসেবে উন্নত প্রযুক্তির মতো নিরাপদ ও ব্যবহারিক সমাধান গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
১ জুলাই বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রানা ফ্লাওয়ার্স-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে শিক্ষা, সামাজিক খাত ও তরুণদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যৌথ উদ্যোগ জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে রানা ফ্লাওয়ার্স শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব—যেমন বন্যা, অপুষ্টি ও শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাহত হওয়া—উল্লেখ করে বলেন, ইউনিসেফ তরুণদের জলবায়ু সমাধানের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন জেলায় তরুণদের নিয়ে পরামর্শ সভার পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব দেন এবং নিয়মিতভাবে তরুণদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের জন্য একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
পরিবেশ সচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে ইউনিসেফ একটি যৌথ ডকুমেন্টারি সিরিজ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, যেখানে শিশুদের পরিবেশবান্ধব বার্তা স্থান পাবে। উপদেষ্টা এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
বৈঠকে ইউনিসেফ ও মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পরিবেশ শিক্ষাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু উদ্যোগ পরিচালনার ব্যাপারে একমত পোষণ করে। পরিকল্পনায় পুনর্ব্যবহার, বর্জ্য পৃথকীকরণ এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জরুরি প্রস্তুতির কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব ওয়াশ পিটার জর্জ এল. ম্যাস, চিফ অব ফিল্ড সার্ভিসেস ফ্রাঙ্কো গার্সিয়া এবং প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (জলবায়ু) ভ্যালেন্টিনা স্পিনেডি।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ উভয় পক্ষই জলবায়ুবান্ধব নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ও দেশের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করে।
রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার নয় বছর পূর্ণ হল আজ।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় একদল সশস্ত্র জঙ্গি। সেখানে তারা দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। পরে কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ইতালির নয়, জাপানের সাত, ভারতের এক এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক।
অন্যদিকে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনার সময় বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। তারা হলেন বনানী থানার তৎকালীন ওসি সালাহউদ্দিন খান এবং ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।
ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ‘নব্য জেএমবির’ সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।
নয় বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে কেন আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা হাইকোর্ট গত ১৭ জুন প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ৬ এর ১ উপধারা (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’
এই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যের পর্যালোচনা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে গণ্য করে, বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে দণ্ডিতদের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। তবে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে মনে করি।
এছাড়া হাইকোর্টেন রায়ে বলা হয়, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের প্রত্যেককে (সাত আসামি) আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।’
কি ঘটেছিল সেদিন?
২০১৬ সালের ১ জুলাই, দিনটি ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায়, রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। ‘নব্য জেএমবি’র পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে নির্বিচারে ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করে।
পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। এ ঘটনা দেশ-বিদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। দেশের ইতিহাসে এটি অন্যতম নৃশংস হামলার ঘটনা।
সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ‘নব্য জেএমবি’র আরো আট সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।
জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যানের ত্রিমুখী সংঘর্ষে এক কাভার্ড ভ্যান চালক নিহত হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৪জন।
সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া হাসান রাবার ইন্ডাস্ট্রির উল্টা পাশে ঢাকাগামী লেনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত কাভার্ড ভ্যান চালকের নাম রনি (৩৮)। সে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার আলম মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আব্দুল হাকিমের ছেলে কামাল হোসেন(৫০), একই এলাকার আব্দুর রব মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন(৪৩), বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি(৩০) ও যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কাটাখালী গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে কামরুল (২৭)। আহতদের মধ্যে কামাল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ঢাকামুখী একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোড ডিভাইডারে ধাক্কা দিলে পেছন থেকে দ্রুতগতির দুটি কাভার্ড ভ্যান পরপর পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিছনের কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় কাভার্ড ভ্যানের চালক চাপা পড়েন। খবর পেয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ও গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধা ঘন্টার চেষ্টায় আটকে পড়া কাভার্ড ভ্যান চালককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন জানান, নিহত চালকের মরদেহ পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন'।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী পার্বত্য ফল উৎসব ও মেলা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছে।
আজ বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্সে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড়ি সংস্থা পাহাড়ি ফলমূল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মেলা উপলক্ষে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান- বিজয় সরণি, সার্ক ফোয়ারা, রমনা পার্ক, বেইলি রোডের পশ্চিম পাশে রমনা পার্ক সংলগ্ন ও পূর্ব পাশে অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স-এর সম্মুখে একটি বেলুন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর ৩৩ বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন এই মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মন্তব্য