পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করতে পারে- এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের।
কিন্তু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে, এ সংক্রান্ত আদেশ জারির আগে বা পরে বিএসইসির সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অথচ এই দুটি সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।
এই সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল প্রায় ছয় বছর আগে ২০১৫ সালে। কিন্তু সেটিতে পাত্তাই দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এবার লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুমে কমছে ব্যাংকের শেয়ার দর। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর গত কয়েক মাস ধরে বাড়লেও এক দিনে ২২ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর হারিয়েছে ১৬টি, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়েছে যে কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সেটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিএসইসি যে খুশি নয়, সেটি সংস্থাটির কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের স্পষ্ট।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার সংবেদনশীল জায়গা। এখানে যে কোনো সিদ্ধান্ত দ্রুত বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করে। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএসইসি এককভাবে কিছু করতে পারবে না। প্রয়োজন বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরের সহযোগিতা। ভালো পুঁজিবাজার সবার সমন্বয় ছাড়া সম্ভব নয়।’
আরও একজন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে পুরো বিষয়টি নিয়েই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে তিনটি সংস্থার ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর আর বিএসইসি একসঙ্গে কাজ না করলে বাজার স্থিতিশীল হবে না। কিন্তু আমাদেরকে গুরুত্বই দেয়া হয় না।
‘মনে করা হয় আমরা ছোট। এমনও হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আমাদেরকে বসে থাকতে হয় দীর্ঘক্ষণ। আমাদেরকে প্রয়োজনীয় সময়ই দেয়া হয় না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, তারা এই দুটি আদেশ জারির আগে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করেনি।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও বিরক্ত হয়েছেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের প্রভিশন বা তারল্য কী পরিমাণ হতে পারে, সেটা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেবে-সেটা নির্ধারণ করে দিতে পারে না।’
লভ্যাংশের মৌসুমে ব্যাংকের শেয়ারের পতন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আদেশের পর থেকে
পুঁজিবাজারে গত ডিসেম্বর থেকে টানা দুই মাস যে উত্থান হয়, তাতে খুব একটা বাড়েনি ব্যাংকের শেয়ারের দর। যখন এই খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছিলেন, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লভ্যাংশ বিতরণ বিষয়ক এক নীতিমালা সে আগ্রহে পানি ঢেলে দেয়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ বিতরণ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানানো হয়, ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদে আর সমপরিমাণ বোনাস লভ্যাংশ হিসেবে দিতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ৩০ শতাংশের বেশি হবে না লভ্যাংশ।
শর্তভেদে কোনো কোনো ব্যাংক সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে। আর কোনোটি পাঁচ শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা) ও সম পরিমাণ বোনাস, কোনোটি সাড়ে সাত শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা) ও সমপরিমাণ বোনাস, কোনোটি ছয় শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা) ও সমপরিমাণ বোসান, কোনোটি পাঁচ শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা) ও সম পরিমাণ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করতে পারবে।
এই নীতিমালা জারির পর থেকে ব্যাংকের শেয়ারের দর কমেছে টানা দুই সপ্তাহ।
নীতিমালা জারির দিন এ বি ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১১ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার বাড়ার পরেও তা দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা।
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দাম এই সময়ের মধ্যে ২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২০ টাকা ৫০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের দাম ৪৯ থেকে কমে হয়েছে ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা।
সিটি ব্যাংকের দাম ২৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে কমে ২৫ টাকা ২০ পয়সা, এক্সিম ব্যংকের দাম ১১ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে ১০ টাকা ২০ পয়সা, ন্যাশনাল ব্যাংকের দাম ৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ৫০ পয়সা।
একই রকম আদেশে কমল আর্থিক খাতের শেয়ার দর
ব্যাংক নিয়ে এই দশার মধ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি জারি করা হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা বিষয়ক নির্দেশনা।
এতে বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠান যতই মুনাফা করুন, শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেড় টাকার বেশি লভ্যাংশ দেয়া যাবে না। আর যাদের খেলাপিঋণ ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি তারা কোনো লভ্যাংশই দিতে পারবে না।
এই সিদ্ধান্ত আসার আগেই লভ্যাংশ ঘোষণা করে তিনটি প্রতিষ্ঠান যার মধ্যে আইডিএলসি ফিনান্স ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি সাড়ে তিন টাকা, আইপিডিসি ফিনান্স শেয়ার প্রতি এক টাকা ২০ পয়সা আর বিডি ফিনান্স শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা নগদ ও প্রতি ১০০ শেয়ারে ছয়টি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে।
কিন্তু নীতিমালা জারির কারণে এই লভ্যাংশ বিতরণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
তিনটি প্রতিষ্ঠানই করোনাকালে গত বছরের চেয়ে বেশি মুনাফা করেছে। তার পরেও বাংলাদেশ ব্যাংক কেন মুনাফায় লাগাম দিল, তা নিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট নানা ফেসবুক পেজে প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা।
এই নির্দেশনা জারির পর আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের মূল্য পতন হয়েছে ব্যাপকভাবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে আইডিএলসির শেয়ার, যেটির লভ্যাংশ শেয়ার প্রতি দুই টাকা কমে যাবে।
সমন্বয়হীনতা নিয়ে আক্ষেপ আগেও করেছে বিএসইসি
২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলালউদ্দিন নিজামী ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে তাদের সমন্বয়হীনতা নিয়ে আক্ষেপ করেন।
সেদিন তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার সম্পৃক্ত কোনো কিছু জারি করতে গেলে বিএসইসির সঙ্গে আলাপ করে নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে সরকারের। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক, আইডিআরএ এবং এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
‘আগেও সমন্বয়ের বিষয়ে বলা হয়েছিল, কিন্ত নানা কারণে সেটি হচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি সমন্বিত প্রয়াশে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে।’
যা বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সার্কুলার দেয়ার আগে বিএসইসি সঙ্গে আলোচনা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তবে তিনি বলেন, তাদের সিদ্ধান্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই ব্যাপারে আলটিমেটলি পুঁজিবাজারকেই সহযোগিতা করা হয়েছে। কারণ, যখন একটা প্রতিষ্ঠানের মূলধন বৃদ্ধি করার জন্য যদি পদক্ষেপ নেয় এটা পুঁজিবাজারকে আরও সংহত করে।’
কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ডিভিডেন্ট (লভ্যাংশ) কেউ ডিক্লেয়ার করল ৩০ শতাংশ। কিন্তু এই ৩০ শতাংশ তো পরিচালক নিয়ে চলে গেল।ৃকিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি, সঞ্চিতি বৃদ্ধি করার জন্য যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা নির্দেশনা থাকে যে এর বেশি ডিভিডেন্ট দেয়া যাবে না, এতে আলটিমেটলি একটা প্রতিষ্ঠানের আরো মেরুদণ্ড শক্ত হয়। এটাকে তো আমি খারাপ ভাবে দেখি না।’
সিদ্ধান্তের কারণে শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন- এই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘যে যে প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে তাদের অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। …সবগুলো যে কমছে তা তো নয়, বাড়ছেও। কী কী কারণে বাড়ছে সেটাও তো দেখার দরকার আছে।’
আরও পড়ুন:বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেছেন, সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে হজ ও ওমরাহ পালনকে সহজ এবং সুন্দর করতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ মেলা ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, গত বছরের হজ ব্যবস্থাপনা চমৎকার ছিল। হজের ব্যয় কমিয়ে আনতে ত্রিশ হাজার টাকা বিমান ভাড়া কমানো হয়েছিল। এবছর হজ যাত্রী পরিবহনে যুক্ত থাকা অন্যান্য এয়ার লাইন্সের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আরো সাশ্রয়ী ভাড়া নির্ধারণের চেষ্টা করবো।
শুধু বিমান ভাড়া কমানো হলে হজের খরচ খুব কমে যাবে বিষয়টি এমন নয় উল্লেখ করে বিমান সচিব বলেন, হজের যে আরো চার পাঁচটি খরচের খাত রয়েছে সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। এসময় তিনি হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সর্বোত্তম সেবাদানের জন্য হজ এজেন্সিগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) তিন দিন ব্যাপী এই হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ) ড. মো: মঞ্জুরুল হক,বিমান বাংলাদেশ এর পরিচালক (বিপনন) আশরাফুল আলম, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এবং শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
পরে প্রধান অতিথি হজ ও ওমরাহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হচ্ছে, তা জানার জন্য ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয় বাসিন্দা পাভলো নেব্রোয়েভ।
খারকিভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় বৈঠকে বসেন।
তবে, বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো এই সময়ে ইউক্রেনের খারকিভে শক্তিশালী আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য বৈঠকের আগে থেকেই এই আয়োজনকে পুতিনের জন্য চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে বিবেচনা করছিলেন অনেকে।
৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ম্যানেজার পাভলো বলেন, ‘আমি দেখলাম, প্রত্যাশা অনুযায়ীই (বৈঠকের) ফলাফল এসেছে। আমি মনে করি, এটা পুতিনের জন্য কূটনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিজয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিজের বৈধতা সম্পূর্ণরূপে আদায় করেছেন।’
২০২২ সালে হামলা চালানো শুরুর পর থেকে রুশ নেতাকে পশ্চিমা বিশ্বে এড়িয়ে চলার যে প্রবণতা ছিল, ট্রাম্প এবার পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সেটির অবসান হলো।
শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটাকে পুতিনের একার বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনকে না রাখায় নেব্রোয়েভ শুধু ক্ষুব্ধই হননি, বরং এই বৈঠককে সময়ের অপচয় মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা অর্থহীন একটি বৈঠক ছিল। ইউক্রেন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে, ইউক্রেনীয়দের অংশগ্রহণে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে সমাধান করা উচিত।’
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নে গোয়ালখালি এলাকায় বিসিকের অধিগ্রহণকৃত ৪০ একর জমির উপর নির্মিত হবে 'ভ্যাকসিন প্লান্ট'। যেখানে ঔষধের পাশাপাশি তৈরি হবে অ্যান্টিভেনম।
প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
শনিবার সকালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
এসময় তিনি জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জে ভ্যাকসিন প্লান্ট একদম একপাশে হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনটা যখন তৈরি হবে তখন এটা ফ্রিজিং করে সারা বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সেজন্য আমার এমন একটা জায়গা দরকার যেখান থেকে সহজে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে আমরা পাঠাতে পারবো। সেক্ষেত্রে গোপালগঞ্জটা সেজন্য আমাদের জন্য উপযুক্ত হয় না।
আর এখানে যে সমস্ত টেকনোলজিস্ট, বিশেষজ্ঞ লাগবে এটা সবসময় সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই এটা আমরা এখানে করার চেষ্টা করছি। এবং এখানে ৪০ একর জমি বিসিকের কাছ থেকে নিয়েছি। সে অনুযায়ী আমাদের একটা প্ল্যান্ট- এটা এখানেই হবে যাতে করে আমাদের সমস্ত ঔষধ তৈরি করতে পারি, ভ্যাকসিন আমরা এখানে তৈরি করতে পারি এবং একইসাথে আমরা চিন্তা করছি- অ্যান্টিভেনম যেটা হয়, যেটা আমাদেরকে পাশের দেশগুলো থেকে আনতে হয়। অনেক সময় সাপের ভ্যারাইটি একরকম না, কোন কোন সময় সাপের কারণে যে ভ্যাকসিনটা দেয়া হয় ওটা কখনো কাজ করে, কখনো করে না। কাজেই আমরা এখন চেষ্টা করছি- আমাদের যেহেতু অনেক সাপ আছে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপের বিষ এনে এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এন্টিভেনম তৈরি করা হবে। আমাদের দেশের সাপ দিয়ে দেশেই ভ্যাকসিন-অ্যান্টিভেনম তৈরি হবে।
ভ্যাকসিন প্লান্ট নির্মাণে সময় প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এটা সিস্টেমের ব্যাপার। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে দেশের মধ্যে উৎপাদিত প্রায় ৭০ শতাংশ ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কোয়ালিটিতে দেশের বাইরের তুলনায় এটি কোন অংশেই কম না। এটাকে ১০০ শতাংশে উন্নিত করতে হলে আমাদের আরও কিছু মেশিনারিজ আনতে হবে। মেশিনারিজগুলো আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত আনা যায়। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আনতে প্রায় ৬ মাসের মত লেগে যাবে।
তিনি বলেন, জমি আমাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হবে, পাশের নদী শাসন করতে হবে। এরপরে মেশিনারিজ, প্ল্যান এগুলো পাশ করাতে হবে। ধরে নেন আগামী আড়াই থেকে তিন বছর লাগতে পারে। পরে উপদেষ্টা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইডিসিল এর গোপালগঞ্জ প্লান্টের ভ্যাকসিন ইউনিট এবং মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থানান্তর করে এখানে আনা হবে। এজন্য ৪০ একর জায়গার সংস্থান করা হয়েছে। এসময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রামে প্রক্রিয়াধীন এন্টি ভেনম প্ল্যান্টও এখানে স্থানান্তরের নির্দেশনা প্রদান করেন। এটি সামগ্রিক বিবেচনায় লাভজনক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এসময় ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামাদ মৃধাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন প্লান্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় ১৫ ধরনের টিকা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ছয় ধরনের ও ২০২৯ সালে আরও ৯ ধরনের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০৩০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমীতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেছেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা-অর্চনা, ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেটসংলগ্ন স্থানে পূজা ও প্রার্থনা সম্পন্ন হয়।
আলোচনা সভায় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা’র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রসাশক এ্যাড. সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এবং উপসচিব রথীন্দ্রনাথ রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহা. শাহীনুজ্জামান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে বরাবরই স্পেশাল। পবিত্র কুরআনেই বলা হয়েছে কেউ অন্য ধর্মের অবতারকে গালি দিবে না তাহলে তোমার ধর্মকে গালি দিবে না। মদিনা সনদেও রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য ধর্ম পালনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে আপনাদের মধ্যে যেন কোনো সংকীর্ণতা না আসে। সমান মর্যাদা সহকারে আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি। সকল ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবিকতা। আমি এখানে আসার পর ইসলামিক এন্ড কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন নামে একটি নতুন ফ্যাকাল্টি চালু করেছি। এই ফ্যাকাল্টি চালু হলে হিন্দুধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের গবেষণা চালু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্ম মতে, যখন পৃথিবীতে অধর্মের চর্চা বেড়ে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন যখন দূর্বিষহ হয়ে যায় তখন দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের জন্য শ্রী কৃষ্ণ অবতার হিসেবে আগমন করেন। কুরআন ব্যক্তিমানুষ এবং সমাজকে এড্রেস করেছে। উপমহাদেশের ভক্তিবাদের জন্য বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সাজশ আছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ধর্মীয় পরিচয় ভুলে মানুষ পরিচয় নিয়ে তারা পাশাপাশি থাকবে এই চেতনা লালন করতে হবে। সনাতন ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত করলে মানববন্ধন না করে আমার কাছে আসলে আমি সমাধান করে দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি এথিজম চর্চা করে এবং কোনো ধর্মকে স্ট্রাইক করে তাহলে তাকে যুক্তি দিয়ে দমন করতে হবে কারণ বর্তমান পৃথিবী হলো যুক্তিতর্কের পৃথিবী। আধুনিক পৃথিবী শক্তির পৃথিবী না বরং যুক্তির পৃথিবী।”
উল্লেখ্য, ধর্মালোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের নিকট একটি স্থায়ী মন্দিরের দাবি জানান অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন থামছে না। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন রনি এই ঘোষণা দেন।
রনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ বারবার হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালকসহ প্রশাসন-সমর্থিত একটি চক্র জড়িত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই ন্যাক্কারজনক এই হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, হামলার পর সংশ্লিষ্টরা উল্লাস করে খিচুড়ি পার্টি” এবং ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কাঙালীর ভোজের আয়োজন করেছে যা দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে।
রনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই আন্দোলন থামবে না। যতদিন না দালালচক্র ভেঙে প্রকৃত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ছাত্র আন্দোলন বন্ধ হয়ে গেছে এমন অপপ্রচার চালানো হলেও বাস্তবে আন্দোলন চলছে এবং চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামীকাল (রোববার) সকাল ১১টায় বরিশাল সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল টাউন হল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। এ কর্মসূচিতে বরিশালবাসীসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেট ও দালালচক্র ভেঙে সাধারণ মানুষের জন্য দালালমুক্ত ও মানসম্মত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তবে আন্দোলনকারীরা প্রায়ই হামলা ও বাধার মুখে পড়ছেন।
বৃষ্টি আর প্রচণ্ড রোদ হলেই প্রয়োজন হয় ছাতার। ঝমঝম আর টিপটিপ বৃষ্টি যেটাই বলেন, বৃষ্টিতে ছাতার কোনো জুড়ি নাই।
একসময় দেখা যেতো গ্রামে গ্রামে ফেরী করে ছাতা মেরামত করতে আসতো কারিগররা। আর মুহূর্তেই অস্থায়ী এই দোকানগুলোতে থাকতো উপচে পড়া ভিড়। এই পেশাতে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্ত সভ্যতার বিকাশের মাধ্যমে আজ আর চোখেই পরে না ছাতা মেরামত কারিগরদের। যেন পেশাটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।
সরেজমিনে দেখা যায় পঞ্চগড় জগদল বাজার এলাকায় ছাতা মেরামত করছিলেন এনামুল। তিনি একটি দোকানের সামনে অস্থায়ী বসেছেন। হরেকরকমের ভাঙ্গা ছাতা মেরামত করছেন। আর কাজ বুঝে বেশ দামও নিচ্ছেন।
ছাতা মেরামত করতে আসা দুলাল বলেন, আমার বয়স ৪০বছর। ছোটবেলায় দেখতাম মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামতের মিস্ত্রি পাওয়া যেতো। কিন্ত এখন আর ছাতা মিস্ত্রিদের চোখেই পড়ে না। তাছাড়া, ছাতা মেরামত করতে যে টাকা লাগে, তার সাথে কিছু টাকা দিয়ে নতুন ছাতা কেনা যায়।
ছাতা মিস্ত্রি এনামুল বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের কাজের হিড়িক পরে যেতো। আর এক মৌসুমে কাজ করেই চলতাম সারাবছর। কিন্ত আজকাল মানুষের রুচি বিদেশীদের মতো হয়ে গেছে।
ছাতার কোনো অংশ নষ্ট বা ছিঁড়ে গেলে এখন আর মেরামত করতে চান না। আগে মানুষ এতটা সৌখিন ছিল না। একটা ছাতা দিয়ে যুগ পার করে ফেলত। আর এখন মানুষ একটা ছাতা বেশী দিন ব্যবহার করে না। একটু থেকে একটু সমস্যা হলেই নতুন ছাতা কিনে নেয়।
যেখানে আগে মোরে মোরে ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৪ থেকে ৫ টা বাজার বা এলাকা ঘুরলে একজন ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যায়। দিন যত যাচ্ছে ততই বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে এই পেশা।
নওগাঁর রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবু প্রামানিক (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত বাবু প্রামানিক নওগাঁ সদর উপজেলার শিমুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শমসের প্রামানিকের ছেলে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে বাবু প্রামানিক স্ত্রীর ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গ্রাম থেকে কিছু দুরে রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন। তাই অভিমানে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যেতে পারে। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসে।
রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল খালেক বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে চিলাহাটি যাচ্ছিল। এসময় সকালে বাবু প্রামানিক রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেন দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রানীনগর রেলওয়ে স্টেশনে উত্তরপাশে আসলে বাবু প্রামানিক নামে ওই ব্যক্তি অসাবধানতাবসত রেললাইন পার হচ্ছিলেন। ট্রেন আসলেও স্থানীয়রা তাকে অনেকবার ডাকলেও তিনি কোন কর্নপাত করেননি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনে কাটা পড়ে মারা যান তিনি। মরদহে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে নিহতের স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেছে।
মন্তব্য