বুকবিল্ডিং প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রানার অটোমোবাইলের দর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ঠিক করেন ৭৫ টাকায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ ছাড়ে এই শেয়ারটি পেয়েছেন ৬৭ টাকায়।
দুই বছর যেতে না যেতেই পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর কমে হয়েছে ৪৯ টাকা ৩০ পয়সা।
প্রশ্ন উঠেছে, বাজারে দর ৫০ টাকার নিচে হলেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোন হিসাবে এর দর ৭৫ টাকা যৌক্তিক মনে করেছেন।
২০১৯ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম বছরে ১০ শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি এক টাকা) আর ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। পরের বছর আবার শেয়ার প্রতি এক টাকা করে পেয়েছেন তারা।
কেবল এই শেয়ারটি নয়, গত কয়েক বছরে বুকবিল্ডিং প্রক্রিয়ায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার দর নির্ধারণে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যে দর ঠিক করে, তালিকাভুক্ত হওয়ার পর দাম তার চেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে।
দর নির্ধারণ হওয়ার পর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ কমে শেয়ার পান। কিন্তু উচ্চমূল্যে দাম নির্ধারণ হওয়ায় আইপিওধারীদের মধ্যে যারা শেয়ার ধরে রেখেছেন, তারা আর লেনদেন শুরুর পর যারা কিনেছেন, তারা সবাই লোকসানে আছেন।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সম্প্রতি কারসাজি ঠেকাতে বুকবিল্ডিং এ দর নির্ধারণে নিলাম প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনেছে এ কারণেই। কিন্তু এতদিন যেসব কোম্পানির শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তাদের কী হবে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিমের কথাতেই স্পষ্ট যে, এই পদ্ধতিতে বেশি দামে শেয়ার দর নির্ধারণ হয়েছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে দর নির্ধারনে কিছু নীতিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত দর নির্ধারণের যে প্রবণতা কমবে।’
অর্ধেক দামে বসুন্ধরা পেপার
বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড একই পন্থায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২০১৮ সালে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিলামে কোম্পানির শেয়ারের দর নির্ধারণ করেন ৮০ টাকা। আর তা থেকে বিএসইসির নির্ধারিত ছাড়কৃত দরে বিনিয়োগকারীরা আইপিওতে এই কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন ৭২ টাকায়।
যারা এই কোম্পানির শেয়ারের দর নির্ধারণ করে দিয়েছেন তারাই শেয়ার ধরে রাখছেন না।
সেই শেয়ারের দর এখন কমতে কমতে প্রায় অর্ধেক হয়ে ৪০ টাকা ১০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
এই কোম্পানির শেয়ার পর ৩৫ টাকাতেও নেমেছিল। তবে বিএসইসির নীতিমালার কারণে এখন ৩৯ টাকা ৯০ পয়সার নিচে নামতে পারবে না। এর ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হয়েছে এই দামে।
আইপিওতে ৭২ টাকায় শেয়ার কিনে লভ্যাংশ হিসাবে বিনিয়োগকারীরা ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ (শেয়ারপ্রতি দুই টাকা), ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ (শেয়ার প্রতি দেড় টাকা) আর ২০২০ সালে ১০ শতাংশ (শেয়ার প্রতি এক টাকা) নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
আমান-এসকোয়ারেও লোকসান
আমান কটনের শেয়ার দর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নির্ধারণ করে দিয়েছিলে ৪০ টাকা। তা থেকে ছাড়কৃত দর ৩৬ টাকায় আইপিওতে শেয়ার পেয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারে এখন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ২৯ টাকা ৮০ পয়সায়।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ করে অর্থাৎ এক টাকা করে নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে এসকোয়ার নিট কম্পোজিটের শেয়ার বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৪০ টাকায়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৪৫ টাকায়।
দেড় বছরের মাথায় শেয়ার প্রতি ৫৯ শতাংশ দর হারিয়ে লেনদেন হচ্ছে ২৩ টাকা ৬০ পয়সায়।
এই কোম্পানিটি দুই বছরে দেড় টাকা করে মোট তিন টাকা নগদ মুনাফা দিয়েছে।
দুটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিপুল পরিমাণে লোকসানে বিনিয়োগকারীরা
গত এক বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির শেয়ার দর অবশ্য কাট অফ প্রাইসের চেয়ে বেশি আছে। তবে এর মধ্যে দুটি তালিকাভুক্ত হয়েছে একেবারে সম্প্রতি। দাম উঠানামার মধ্যে আছে। এখনও স্থিতিশীল হয়নি দাম।
তবে তালিকাভুক্তির পর দুটি কোম্পানির শেয়ার উচ্চমূল্যে কিনে এখন লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ৩১ টাকায় আইপিও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৯ টাকা ২০ পয়সায়।
তবে লেনদেন শুরুর পর কোম্পানিটির শেয়ার পর বাড়তে বাড়তে ১০১ টাকায়ও চলে গিয়েছিল। আর বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীদের পাঁচশ কোটি টাকারও বেশি আটকে গেছে বা তারা এই পরিমাণ লোকসানে আছেন।
আরেক কোম্পানি মীর আকতার হোসেনের শেয়ার পর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নির্ধারণ করেছে ৬০ টাকায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা পেয়েছেন ৫৪ টাকায়। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৮১ টাকা ৭০ পয়সায়।
তবে লেনদেন শুরুর দ্বিতীয় দিনে এই কোম্পানির শেয়ার দরও ১১৭ টাকায় উঠে গিয়েছিল। পরে কমতে কমতে এই পর্যায়ে এসে নেমেছে। দাম এখনও স্থিতিশীল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা বলার সময় আসেনি।
তবে এখন পর্যন্ত এই দুটি কোম্পানির কাট অফ প্রাইস নিয়ে প্রশ্ন উঠেনি।
কোম্পানির শেয়ার সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে কিনে দেড়শ কোটি টাকারও বেশি লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা।
ভালো মুনাফা দিয়েছে ওয়ালটন
বুকবিল্ডিং প্রক্রিয়ায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করে সবচেয়ে লাভবান হওয়া গেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডে। কোম্পানিটি ২৫২ টাকায় আইপিও আবেদনের বিপরীতে বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে এক হাজার ১৭৮ টাকায়।
এডিএন টেলিকমের ২৭ টাকায় আইপিও আবেদন করা হলেও বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৪ টাকা ৬০ পয়সায়।
কী বলেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা
বিনিয়োগকারী আজমল হোসেন স্বপন বলেন, ‘এখানে প্রধান কাজ করেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে কোম্পানির শেয়ারের দর নির্ধারণ করে। এটি অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘নিলামে যে কোম্পানির শেয়ারের দর ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয় সে কোম্পানির বছর শেষে ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে লভ্যাংশও দিতে পারে না। ফলে সহজেই বোঝা যায় কোম্পানির শেয়ার দর নির্ধারণে কারসাজি হয়েছে।’
বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আনম আতাউল্লাহ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খায়রুল কমিশনের সময়ও বুক বিল্ডিং নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় এ পদ্ধতিতে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত বন্ধ ছিল। বেশি দামে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার পর কয়েকদিন দর বাড়লেও বেশিরভাগ সময় কমছে।’
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের এই লোকসানের দায় সম্পূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের, যারা কোম্পানির শেয়ার দর নির্ধারণ করেছেন। তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। কমিশন সম্প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছু নীতিমালা করেছে। এখন দেখার বিষয় সেটি কতটা কার্যকর হয়।’
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘যে পদ্ধতিতে বুকবিল্ডিং এ কোম্পানির দর নির্ধারণ করা হচ্ছে সেটিতে ওভার প্রাইসিং হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘দর নির্ধারণের পর বিএসইসিকে সেটি যাচাই করা উচিত। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও পুঁজিবাজারের স্বার্থে সচেতন হওয়া উচিত।’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে অতিমূল্যায়িত করে নির্ধারণ করা হয়। ফলে পুঁজিবাজারে আসার পর যে দর ধরে রাখতে পারে না।
‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সংঘবদ্ধভাবে এ দর নির্ধারণ করে। এর পেছনে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে।’
সমাধান হিসেবে তিনি বলেন, ‘কোনো কোম্পানিকে বিডিংয়ে দেয়ার আগেই সে কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দর কত হবে সেটি নির্ধারণ করতে হবে। তারপর বিডিংয়ে যে দরটি আসবে সেটা যাচাই করা সম্ভব হবে বেশি হয়েছে, না কম হয়েছে।’
বুক বিল্ডিং পদ্ধতি কী
পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে দুটি পদ্ধতি চালু আছে। এর মধ্যে একটি ফিক্সড প্রাইস বা স্থির মূল্য, অপরটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতি।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা দরপ্রস্তাবের মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন। এই দরেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানিকে শেয়ার ছাড়ার অনুমতি প্রদান করেন।
তবে তার আগে কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রোড শো বা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
এসবের ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শেয়ারের প্রস্তাবিত দর সংগ্রহ করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দরের ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হয় শেয়ারের মূল্য।
এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনুষ্ঠানিক দরপ্রস্তাবের আয়োজন করেন। যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের নির্ধারীত দরে শেয়ার কেনার পরিমাণ ও দর প্রস্তাব করেন।
সেখানে নির্ধারিত দরে কাট-অফ বা ছাড়কৃত দরেই নির্ধারণ করা হয় আইপিও বা সাধারণ বিনিয়োগাকারীরা কী দরে শেয়ার পাবেন।
শাস্তির আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, নীতিমালায় পরিবর্তন
গত দুই বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া ওয়ালটন, এনার্জিপ্যাক, মীর আকতার, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) ও ইনডেক্স এগ্রোর বিডিংয়ে কাট অফ প্রাইসের তুলনায় দ্বিগুণ দর প্রস্তাব করার ঘটনাও আছে।
এ জন্য বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকি শাস্তির আওতায় এনেছে বিএসইসি।
এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবতর্ন এসেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিলামে অংশ নিতে আগ্রহী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান একটি কমিটি গঠন করবে। এদের মধ্যে দুইজনের নিলাম সম্পর্কে জ্ঞান, দক্ষতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একই সঙ্গে ঐ কমিটির সংশ্লিষ্ট কোম্পানি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।
গঠিত কমিটির সুপারিশ করবে কারা নিলামে অংশগ্রহণ করবে। তাদের যোগ্যতা যাচাইয়ের ক্ষমতা থাকবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রস্তাবিত কমিটির কোম্পানির সম্পদ মূল্যায়ন, ইল্ড বিশ্লেষণ করে যথাযথ শেয়ারের দর নির্ধারণ করতে হবে।
নির্বাচিত প্রতিনিধিরা স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে মূল্য নির্ধারণ করবেন। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, কারিগরি, পারিচালকদের অবস্থা, বাণিজ্যিক, মালিকানাসহ সমস্ত বিষয় পর্যালোচনা করেই এই মূল্য ঠিক করবেন তারা।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব মুক্তভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তারা কোম্পানির ইস্যুকারী, ইস্যু ম্যানেজারসহ অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে মূল্যায়ন সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করতে পারবে না। নিলাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের বিশ্লেষণ, সুপারিশ ও সিদ্ধান্ত গোপন রাখতে হবে।
নিলাম শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে যথাযথভাবে স্বাক্ষর করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। তবে সাত দিনের মধ্যে তা কমিশনে জমা দেবেন, যাতে রিপোর্টে কোনো অসঙ্গতি আছে কি না তা যাচাই করা সম্ভব হয়। প্রতিবেদনে কোনো ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেলে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯ (অডিনেন্স নং ১৭) অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো ২০২৫-এ যোগদানের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ৯ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে।
এই এক্সপো ১ ও ২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মেসোনিক সেন্টারে (এসএমসি) অনুষ্ঠিত হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসিসিআই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতার সুযোগ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে পণ্য প্রদর্শনী, নেটওয়ার্কিং সেশন, বিটুবি মিটিং এবং বিষয়ভিত্তিক সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। যেখানে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবার প্রসার, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।
এক্সপোতে তৈরি পোশাক, জুতা, পাটজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, মেডিকেল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, খাদ্য ও ফলমূল, পর্যটন, কৃষি, ফার্নিচার, হস্তশিল্প এবং রিয়েল এস্টেট প্রভৃতি বিষয়র ওপর প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ডিসিসিআই থেকে অংশগ্রহণকারী ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: টেক্সট্রেড করপোরেশন, ফিঙ্গারটাচ সার্ভিসেস, ফারইস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, চৌধুরী শাজ্জাদ মনোয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, নায়িশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, টোরি ক্রেডিট রিপোর্টস অ্যান্ড কালেকশনস লিমিটেড, টেকফিনা বিপিও অ্যান্ড করপোরেট অ্যাডভাইজারি লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
কমিটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষে ডিএপি ও টিএসপি সার আমদানির পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ৩৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৩য় লট) আমদানি করা হবে। যার প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৭২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৬ষ্ঠ লট), ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৭ম লট), ৩৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৫ম লট) এবং ৩৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৬ষ্ঠ-ঐচ্ছিক ১ম লট) আমদানি করা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকদের জন্য সারের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে চীন ও মরক্কোর সঙ্গে সরকারের নিয়মিত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অংশ হিসেবে এই আমদানি করা হবে।
এছাড়াও আজকের ক্রয় কমিটি সভা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে ৪-লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১ (পার্র্ট-১) এর আওতায় আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর থেকে সরাইল গোলচত্ত্বর পর্যন্ত (১১.৫৬ কিলোমিটার) সড়ক নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন অর্ডার-১ (ভিও-১) এর প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৫৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা যেখানে ভেরিয়েশন অর্ডারে ১৬৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা যোগ করা হয়েছে এবং সংশোধিত মোট চুক্তি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
কাজটি ভারতের মুম্বাই-ভিত্তিক আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃক সম্পন্ন হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নকশা ও কাজের পরিধি পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় যোগ হয়েছে, যা প্রকল্পের মান উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।
এর পাশাপাশি, আজ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ধারা ৬৮ (১) ও পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসারে জিটুজি ভিত্তিতে চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
বিশ্ব রেটিনা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ) এবং রোশ বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ‘ব্রিজিং পলিসি, টাস্ক শিফটিং অ্যান্ড ইনোভেশন: ট্যাকলিং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে। খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে এ আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
অংশীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীতি-নির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক এনজিও ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিগণ। এ সময় তারা বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (ডিআর) মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ডায়াবেটিস রোগের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগটি বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। রোগটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এটি বর্তমান সময়ে একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ রোগ নিয়ে জনসচেতনতা, রোগ নির্ণয় কর্মসূচি, স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সেবার পরিসর সীমিত রয়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে, গোলটেবিল বৈঠকে স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিদ্যমান যে দূর্বলতাগুলো রয়েছে, তা চিহ্নিত করা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকগণ; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সদস্যবৃন্দ, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, জ্যেষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞবৃন্দ, রেটিনা বিশেষজ্ঞ, অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি, বারডেম ও বিএডিএস -এর প্রতিনিধিগণ এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জানে আলম মৃধা তার উপস্থাপনায় বলেন, “ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সফল ও কার্যকর স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের জন্য বিভিন্ন খাতের অংশগ্রহণে একটি কার্যকর ওয়ার্কিং কমিটি গঠন অত্যন্ত জরুরি।”
বেসরকারি খাত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং এনজিও: অর্বিস ইন্টারন্যাশনাল, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ, গুড পিপল ইন্টারন্যাশনাল এবং রোশ বাংলাদেশের নিজস্ব বাণিজ্যিক, মার্কেট অ্যাকসেস ও নীতিনির্ধারণী দলও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বাজারে নিজেদের নতুন স্মার্টফোন অনার এক্স৭ডি উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে গ্লোবাল এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠান অনার। জনপ্রিয় এক্স সিরিজের সর্বশেষ সংযোজন এ ফোনটি শক্তিশালী বাজেট স্মার্টফোন হিসেবে স্মার্টফোন বাজারে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। আগামী অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে বাজারে আসবে নতুন এ স্মার্টফোন।
আগ্রহী ক্রেতারা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে অনারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে স্মার্টফোনটি অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। অগ্রিম বুকিং দেয়া যাবে আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। যারা শুরুতেই অগ্রিম বুকিং করবেন, তারা উপহার হিসেবে পাবেন অনারের ইয়ারবাডস।
দামের ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মত অনার এক্স৭ডি -তে বিশেষ ‘ইনস্ট্যান্ট এআই বাটন।’ ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে তৈরি এই বাটন দু’টি মোডে কাজ করবে। এ বাটনে একবার ক্লিক করেই নির্দিষ্ট অ্যাপ চালু করা যাবে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড ক্লিনিং মত কাজও সহজে করা যাবে। আবার একটু বেশিক্ষণ ধরে এ বাটনে ক্লিক করে রিয়েল-টাইম অনুবাদ ও কনটেন্ট তৈরির মত অত্যাধুনিক এআই ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
দীর্ঘস্থায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশাল ৬৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ব্যাটারি। টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত সুপার-ডিউরেবল পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে এ স্মার্টফোন। ডাবল-সেল ব্যাটারি কাঠামো থাকায় ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনটি দ্রুত চার্জ করতে পারবেন; পাশাপাশি, উপভোগ করবেন ফোন ব্যবহারে অধিক সুরক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব।
এছাড়া, স্মার্টফোনটিতে আইপি৬৫ রেটিং পাওয়া, অর্থাৎ পানি ও ধুলো প্রতিরোধী। পাশাপাশি, এসজিএস প্রিমিয়াম পারফরমেন্সও সার্টিফিকেশনও রয়েছে ফোনটির। ফলে, হাত থেকেও পরে গেলেও স্মার্টফোনটি অনার এক্স৯সি -এর মত সুরক্ষিত থাকবে।
উদ্ভাবনের মাধ্যমে ক্রেতাদের স্মার্টফোনে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এআই প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অনার। ক্রেতারা এই ফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আরও বিশেষায়িত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উপভোগ করবেন।
নতুন অনার এক্স৭ডি -এর বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২২,৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে রয়েছে ৮+৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এখন থেকে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় এলপিজি ব্র্যান্ড আইগ্যাস, যার রয়েছে ৬৫ বছরের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা, এবং বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইউনাইটেড গ্রুপ-এর যৌথ উদ্যোগেই গঠিত ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড।
সম্প্রতি রাজধানীর ইউনাইটেড গ্রুপ হেড অফিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক জনাব খন্দকার জায়েদ আহসান, ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জনাব হারুন ওর্তাজসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই চুক্তির অধীনে সিয়াম আহমেদ আইগ্যাস ইউনাইটেড-এর ব্র্যান্ড প্রচারণায় অংশ নেবেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিয়াম আহমেদ বলেন:
“প্রতিটি পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়, আমার পরিবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আইগ্যাস ইউনাইটেড মানে কোয়ালিটিসম্পন্ন একটি এলপিজি কোম্পানি যাদের আছে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের লাখো পরিবারের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে এমন একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেডের সিইও জনাব হারুন ওর্তাজ বলেন:
“আমরা আনন্দিত যে সিয়াম আহমেদকে আইগ্যাস ইউনাইটেড ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে পেরে। তরুণ প্রজন্ম ও পরিবারগুলোর কাছে তার জনপ্রিয়তা ও ইতিবাচক প্রভাব আমাদের ব্র্যান্ডের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সিয়াম আহমেদ-এর সঙ্গে আমাদের ব্র্যান্ডের এই অংশীদারিত্ব ভোক্তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।”
সারাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় নরসিংদীর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদীর কো-অপারেটিভ জোনাল ইনস্টিটিউটে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩০ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দানের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারীদের ‘উদ্যোক্তা স্বপ্ন’ পূরণেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত ব্র্যাক ব্যাংকের সিগনেচার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারীদের জন্য অর্থায়ন, পরামর্শ ও দক্ষতা উন্নয়ন সুবিধা সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা শক্তিশালী করা।
আয়োজনে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক টিমের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক ব্যবসায়ে সফল হওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকর ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিওএসএন-এর সভাপতি মুনীর হাসান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ব্যাংকিংয়ের হেড অব কটেজ অ্যান্ড মাইক্রো বিজনেস কাজী দিলরুবা আক্তার।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যাংকটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, “নারী উদ্যোক্তারা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। ‘আমরাই তারা’ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাঁদের অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল জ্ঞানও সমৃদ্ধ করছি, যাতে তাঁরা এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সেক্টরে সফল হতে পারেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নারী উদ্যোক্তারা সফল হলে সমাজ সমৃদ্ধ হয় এবং জাতীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়।”
এ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক দেশের ২০টি জেলায় ৩,০০০-এরও বেশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি দেশের প্রতিটি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
দেশের এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক অংশীদার হিসেবে তাঁদের জন্য সহজ অর্থায়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের সফল ব্যবসায় গড়ে তুলতে সহায়তা করছে ব্র্যাক ব্যাংক। এভাবে ব্র্যাক ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির ২৫তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নির্বাহী কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর ও ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ইকবাল এবং জনাব মিজানুর রহমান কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন।
মন্তব্য