রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ভারতে সহস্রাধিক আইটেমের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এসবের মধ্যে আছে তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, মাছ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফুটওয়্যার, কাঁচা পাট, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও বাইসাইকেল।
লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, এসব পণ্য ভারত নিজেই উৎপাদন করে এবং অন্য দেশে রপ্তানিও করে।
এই অভিন্ন পণ্যের উৎপাদন বা সমজাতীয় পণ্যের রপ্তানির কারণে ভারতের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা কম। এ সুযোগে সে দেশের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি পণ্যের মূল্য নিয়ে দরকষাকষি করতে পারেন। এতে রপ্তানিকারকের নিট লাভ খুব বেশি থাকে না।
অন্যদিকে প্রতিবেশি দেশের ভোক্তারাও বাংলাদেশের পণ্যকে ততটা কদর করতে চান না। কারণ ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি হওয়ায় সংস্কৃতি ও আচারের মিলের কারণে বাংলাদেশি পণ্যে তারা নতুনত্ব খুঁজে পান না। এসব বিবেচনায় আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ব্যবসায়ীরা এবং ভোগ-ক্রয়ে দেশটির বেশির ভাগ ভোক্তা এড়িয়ে চলেন বাংলাদেশি পণ্য। উদ্ভাবন, রুচিবোধ, টেকসই, সুদৃশ্য মোড়ক বা আভিজাত্যের প্রতিফলনে তারা প্রাধান্য দিচ্ছেন অন্য দেশের পণ্যকে।
এর প্রমাণ মেলে ভারতের বৈশ্বিক আমদানি পর্যালোচনা থেকে।
২০১৮-১৯ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতের মোট আমদানি পরিমাণ ছিল ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০১৯-২০ সালে শুধু শীর্ষ দশ দেশ থেকেই এই আমদনির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
অর্থাৎ ভারত বিশ্ববাজার থেকে অনেক পণ্য কিনছে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নয়। আবার একই ধরনের পণ্য বিশ্ববাজারে পাঠালেও বাংলাদেশ তা ভারতে পাঠাচ্ছে না। যদিও একক দেশ হিসেবে শুধু ভারতের সঙ্গেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ১০ শতাংশ লেনদেন সারছে। এতে আট গুণ বেশি পণ্য বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করলেও সে তুলনায় ভারত বাংলাদেশ থেকে আমদানি করছে তার মাত্র এক শতাংশ।
এর কারণ, ভারত সরকার সেদেশের পরিস্থিতি ও প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেয়। প্রাধান্য দেয় সেখানকার ব্যবসায়ীদের দাবিকে। ফলে স্থানীয় শিল্প-ব্যবসাকে সুরক্ষা দিতে কখনও বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কাউন্টার ভেইলিং ডিউটি (সিভিডি) আরোপ করছে, কখনও বা বিশেষ কোনো পণ্যে বসাচ্ছে আ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি।
এক সময় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর ভারত কাউন্টার ভেইলিং ডিউটি (সিভিডি) আরোপ করেছিল। ২০১৪ সালে তা প্রত্যাহার করা হয়। এখন পাটজাত পণ্যে ধার্য করা হয়েছে অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি। ফলে ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে ইন্দোবাংলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা নেই। সেখানে বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য পাঠানো সত্ত্বেও প্রতিবছর আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। অথচ ভারতের বাজারে আমরা প্রায় শতভাগ শুল্ক সুবিধা পেয়েও পোশাক রপ্তানি একটা কাউন্টেবল জায়গায় নিতে পারছি না। উল্টো কমানো হচ্ছে পোশাকের দাম। বুঝতে হবে সেখানে চাহিদা সৃষ্টিতে কোথায় আমাদের দুর্বলতা। শুধু পোশাক নয়, সব রপ্তানি পণ্যেরই একই অবস্থা। আর অশুল্ক বাধার কথা নাই-ই বললাম।’
বর্তমানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পুরোপুরি ভারতের অনুকূলে। তবে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩৭ গুণ। কিন্তু তাতেও ঘাটতি কমেনি।
ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন অফিসের দেয়া তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে মোট ১০৯ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য। একই সময়ে ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে ৫৭৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ৫৪৫ কোটি ২৯ হাজার ডলারের এবং বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছিল ৬৮ লাখ ৯৬ হাজার ২০০ ডলারের।
২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দক্ষিণ এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ভারতের স্পর্শকাতর পণ্যতালিকা ৪৮০টি থেকে কমিয়ে মাত্র ২৫টিতে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়েই কার্যত বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে প্রায় শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা প্রদান করা হয়। প্রতিবেশি হওয়ায় বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় এখানে কম খরচে পণ্য রপ্তানি হওয়ার কথা। স্বাভাবিক নিয়মেই এই বিপুল পরিমাণ শুল্ক সুবিধায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ার কথা।
এই সম্ভাবনা দেখে ২০১৮ সালের এক প্রাক্কলনে বিশ্বব্যাংকও দাবি করেছে, বাণিজ্য সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো গেলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সীমা ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে।
কিন্তু বাস্তবে তা বাড়ছে না, উল্টো আমদানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রপ্তানির গতি ও চাহিদা প্রত্যাশিত হারে না বাড়াসহ নানারকম অশুল্ক বাধার বেড়াজালে এখনও দুই দেশের বাণিজ্যে যোজন-যোজন দূরত্ব। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও ৯ বিলিয়ন ডলারের বৃত্ত অতিক্রম করতে পারছে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্য, স্থান ও কালভেদে অশুল্ক বাধার ধরন বিশদভাবে পর্যালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের প্রায় অর্ধেকই সম্পন্ন হয় স্থলবন্দরগুলোর মাধ্যমে। এ প্রক্রিয়ায় নো ম্যানস ল্যান্ডে পণ্য খালাস ও উত্তোলন করতে হয়। এতে একদিকে বিলম্ব ঘটে, অন্যদিকে পণ্যের দাম চড়ে। আবার মিউচ্যুয়াল রিকগনিশন অ্যাগ্রিমেন্ট না থাকায় দূরবর্তী টেস্টিং সেন্টার থেকে পরীক্ষণ-সমীক্ষণের ফলাফল না আসা পর্যন্ত পণ্য বন্দরেই পড়ে থাকে। অন্যদিকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা দিলেও বাংলাদেশ তা কাজে লাগাতে পারছে না পরিবহন, বিনিয়োগ ও লজিস্টিকস কানেক্টিভিটির উন্নতি না হওয়ার কারণে। সেখানে অনেক ঘাটতি আছে। ফলে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা সত্বেও ঢাকা-দিল্লি পণ্য পরিবহন খরচ ঢাকা থেকে ইউরোপীয় বা মার্কিন বন্দরে পরিবহন খরচের চেয়ে অনেক বেশি।’
ইন্দোবাংলা চেম্বারের সভাপতি মাতলুব আহমাদ দাবি করেন, ‘ভারতে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়বে না, যদি আমরা ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা তৈরি করতে না পারি। তা করতে হলে সবার আগে দরকার গতানুগতিক বা সমজাতীয় পণ্যের রপ্তানির ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসা এবং নতুন ও বৈচিত্র্যময় পণ্য সেখানে নিয়ে যাওয়া।’
তিনি দাবি করেন, পণ্যভিত্তিক বাজারের সঠিক পর্যালোচনারও দরকার হবে। যার মাধ্যমে চাহিদা আছে এমন পণ্য রপ্তানির জন্য নির্বাচন করা সম্ভব হবে। এতে স্বাভাবিক নিয়মেই বাড়বে বাজার। কিন্তু এর জন্য নিজেদেরও কিছু কাজ করতে হবে। রপ্তানিকারকদের সক্ষমতা, উৎপাদিত পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ ও গুণগত মান বাড়ানোতেও নজর থাকা জরুরি। এতে রপ্তানি পণ্যের ন্যায্য দামও মিলবে।
বিদ্যমান এই বাজার পরিস্থিতিকে অবশ্য সরকার সম্ভানার চোখেই দেখছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রপ্তানি কম হয় বলেই ভারত বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার বাজার। এক সময় ভারতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির সমস্যা ছিল। এখন সেটা নেই। কিছু অশুল্ক বাধা আছে। এগুলো দূর করতে কাজ করছে সরকার। ইতিমধ্যে কতগুলো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর কিছু কাজ শেষ হয়েছে, বাকিগুলোরও চলছে। ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন এবং দুই কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অবকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে। কমানো হচ্ছে নথিকরণের ঝামেলাও।’
অনিষ্পন্ন ইস্যুর সমাধান প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পাটজাত পণ্যের ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারে গভীরভাবে কাজ করছে সরকার। এর বাইরে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যে পরিবহণ খরচ কমিয়ে আনতেও রয়েছে নতুন উদ্যোগ। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মোটর ভেহিকল (বিবিআইএন) চুক্তিকে কার্যকরের চেষ্টা করছে সরকার। এক্ষেত্রে ভুটান না থাকলে বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের সঙ্গে বিআইএন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।’
পণ্যে নতুনত্ব ও সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণে কার্যকর অনেক উদ্যোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তার দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে নীতি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা রয়েছে, তার সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এর সুফল পাবে দেশ, যা ভারতেও বাজার চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমেই আমরা ঘাটতি পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবো।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উক্ত মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির নিকট বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিন আরিফ।
বরাদ্দপ্রাপ্ত মসজিদ ও মন্দিরের মধ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন জোয়ার সাহারা মৌজায় খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য ০.২০১১ একর (৮৭৬০ বর্গফুট), একই মৌজায় আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য ০.০৫৫২ একর (২৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত থানাধীন একই মৌজায় খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের জন্য ০.০৫৬২ একর (২৪৫০ বর্গফুট) জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বরাদ্দপত্র হস্তান্তরের জন্য আয়োজিত এ অনু্ষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো: আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মসজিদ ও মন্দির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, খিলক্ষেত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকল ধর্মেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোন পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোন মামলা-মোকদ্দমা নেই এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বাংলাদেশ রেলওয়ের এই উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করেন। বরাদ্দপত্র হস্তান্তর শেষে একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিং শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব নেপাল কান্তি দেব, সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নরসিংদী -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নরসিংদী, জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন হাজীপুর বউ বাজার ও হাজীপুর পশ্চিমপাড়া, দত্তপাড়া (পূর্ব ও পশ্চিম), নরসিংদী এলাকার ৫টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৩টি বেকারীর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ৩/৪" জি আই পাইপ ৬০ ফুট, ৩/৪'' এম এস পাইপ ৫০ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এ সময়, সর্বমোট ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা অর্থ দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব সিমন সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ, জোবিঅ -মুন্সীগঞ্জ আওতাধীন মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ সদর, মুন্সীগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, মেসার্স তন্মম ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, আলমদিনা বোর্ড মিলস লি., (গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৩৭) মেসার্স বিসমিল্লাহ বোর্ড মিলস লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মিরেশ্বর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, মেঘনা ফেব্রিক্স লি.(গ্রাহক সংকেত ৩৮০/৮৭০-০০৩৫) ঠিকানা: সরকারপাড়া, মুন্সীগঞ্জ -এর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ০১ টি আবাসিক রেগুলেটর, প্লাস্টিক হোজ পাইপ ২৫০ ফুট এবং ৩/৪" এমএস পাইপ ৩ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ৪,৪০,০০০/- টাকার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী বিচ্ছিন্নকৃত শিল্প গ্রাহক মেসার্স তন্ময় ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.; এর গ্রাহক আঙিনা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে, পার্শ্ববর্তী বাড়ির আবাসিক রাইজার হতে হোজ পাইপের মাধ্যমে ০১ টি বয়লারে গ্যাস ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়। ততপ্রেক্ষিতে, প্রায় ২৫০ ফুট হোজ পাইপ জব্দ করা হয়েছে এবং আবাসিক রাইজারটি কিলিং/ক্যাপিং করা হয়েছে। গ্রাহকের পূর্বে বিচ্ছিন্নকৃত ভাল্পপিট এর চাবিতে ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে ট্যাগিং করে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ -এর বিশেষ অভিযানে, জোবিঅ-ভৈরব ও জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন এলাকার ৮টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, বেলাবো ফিলিং স্টেশন, এমডি জব্বার জুট মিলস গ্রাহকের হাউজ লাইন ভূমির নিচে পরিলক্ষিত হয় যা দৃশ্যমান করার জন্য গ্রাহককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। রাজা ফুড প্রোডাক্টস, রাজা সোপ, বাবুল কেমিক্যাল ওয়ার্কস, খাজা বেকারি, ফাইন মুড়ি ফ্যাক্টরি, মেসার্স বাবুল কেমিক্যালস, শিল্পী টেক্সটাইল, সোবহান টেক্সটাইল এন্ড প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি।
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরের সিঁড়ি উন্নয়নের জন্য জেলার এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ বুধবার রেল মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস সচিব বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরের সিঁড়িটি অনেক পুরনো হয়ে গেছে। এখানে সনাতন ধর্মের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। এজন্য সিঁড়িটির উন্নয়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
শফিকুল আলম বলেন, আজ রেল ভবনে তিন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের আগে মন্দিরের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সড়ক উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেছে।
তিন উপদেষ্টার সভা থেকেই এলজিআরডি সচিবকে চন্দ্রনাথ মন্দির উন্নয়নের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরকে ঘিরে যেন কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি না হয় সেজন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সতর্কতার সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যে কোনো পক্ষই কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর হাতে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
রেল ভবনে আজকের বৈঠকে যে তিন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম খালিদ হোসেন।
প্রেস সচিব বলেন, রেল ভবনে আজ তিন উপদেষ্টার উপস্থিতিতে খিলক্ষেতে একটি শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির ও দুটি মসজিদ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে স্থায়ী জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দের দলিল পত্র মন্দির ও মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)-তে আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে।
দিনটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানসহ অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হন। সেখান থেকে কবির সমাধির উদ্দেশে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়, এরপর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হয়।
পরে কবির সমাধির পাশের খোলা মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়া ফজরের নামাজের পর কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ ‘মসজিদুল জামিয়া’-তে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
মন্তব্য