করোনার কারণে অর্থনীতিতে তৈরি হওয়া ক্ষত কাটাতে আরও এক বছর লাগবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি মনে করেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প-এমএমই, গ্রামীণ অর্থনীতিসহ ‘লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা, অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিই আগামীতে অর্থনীতির মূল চ্যালেঞ্জ হবে।
সরকারি ব্যয় ও ভোট বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে এই অর্থনীতিদিব বলেন, যত বেশি ব্যয় হবে, তত বেশি ভোগ সৃষ্টি হবে। চাঙ্গা হবে অর্থনীতি।
অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি, আগামী বাজেট ভাবনাসহ নানা বিষয় নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন এই অর্থনীতিবিদ।
করোনা পরবর্তী অর্থনীতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী ?
করোনার প্রথম দিকে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। কঠিন সময় পার হয়ে ধীর ধীরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে সম্প্রতি গতি আগের চেয়ে শ্লথ হয়েছে।
এই বার্তা আমাদের মতো দেশে খুবই গুরুত্ব বহন করে। কারণ, অনেকেই এখনও কর্মহীন। তাদের পক্ষে টিকে থাকাইটাই কঠিন। অর্থনীতি গতিশীল থাকলে মানুষের আয় রোজগারের সুযোগ তৈরি হয়।
সংক্রমণের শুরুর দিকে ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতি খুলে দেয় সরকার। এর সুফলও মিলেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি এবং সেবা খাতে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। ফলে কম সময়ে ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতি। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো আর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এক নয়।
ঘুরে দাঁড়ানোর চালেঞ্জ কাটিয়ে উঠা গেছে। এখন পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তবে এটা ঠিক, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এ অর্জনকে কীভাবে দেখছেন ?
দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও বিশ্বব্যাপী হুন্ডি বন্ধের ফলে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার অন্যতম কারণ রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবাহ।
প্রবাসীরা বেশি টাকা পাঠানোর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ স্ফীত হয়েছে। এটি চার হাজার ৩০০ কোটি ডলার (৪৩ বিলিয়ন) ছাড়িয়ে গেছে। আবার আমদানি কম হওয়ায় রির্জাভ বেড়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ছবি: সাইফুল ইসলাম
এর একটি ইতিবাচক দিক আছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়কালে বেশি রিজার্ভ থাকার কারণে সহজেই অর্থ পাওয়া গেছে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। কারণ, তারা মনে করে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে বাংলাদেশের।
চলতি অর্থবছরে আট মাস চলছে। সামনে অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী ?
এ মুহূর্তে অর্থনীতির দুটি চ্যালেঞ্জ। একটি হলো ভোগ ব্যয় চাঙ্গা করা। অন্যটি রাজস্ব আদায় বাড়ানো।
মানুষ কাজ হারিয়েছে, কাজ কম পাচ্ছে, কম আয় করছে। ফলে যে মাত্রায় গতিশীল হওয়ার দারকার অর্থনীতি, সেটি হচ্ছে না।
অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় না বাড়লে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে না। এ জন্য বেসরকারি বিনিয়োগের দিকে না থাকিয়ে কর্মসৃজনমূলক প্রকল্প নিতে হবে সরকারকে।
দ্ধিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা। আমদানি–রপ্তানি কামার কারণে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কম রাজস্ব আহরণ সরকারের জন্য বড় দুর্ভাবনা।
ব্যয় কমার কারণ কী ?
সম্পদের সীমাবদ্ধতা তেমন নেই। কারণ, রাজস্ব আহরণ কম হলেও ব্যাংক এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থকে প্রচুর ঋণ নিচ্ছে সরকার। বিদেশি ঋণও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সরকারের সম্পদের ঘাটতি আছে,- এমনটি বলার সুযোগ নেই।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। যেসব প্রকল্পে কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, সেগুলো প্রাধিকার দিয়ে যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।
কিন্তু এখানে বড় দুর্বলতা আছে। দেখা যায়, অনেক বড় প্রকল্পে বেশি বরাদ্দ দেয়া হলেও তা ঠিকমতো খরচ করতে পারে না। টাকা ফেরত যাচ্ছে। অর্থবছরের শুরুতে ব্যয়ের দিকে বেশি নজর দিলে এ অবস্থা হতো না।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ কি যথেষ্ট বলে আপনি মনে করেন ?
প্রণোদনা ঘোষণার ফলে স্বস্তি দেখা দেয় অর্থনীতিতে। কিন্তু দুর্বল দিক হচ্ছে পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়ন না হওয়া। বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য দেয়া ঋণের শতভাগ ব্যয় হলেও পিছিয়ে ক্ষুদ্র,অতিক্ষুদ্র,মাঝারি ও কৃষিখাত। অথচ এসব খাতই অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি।
পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হলে লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা সুবিধা দিতে হবে। ক্ষুদ্র,অতিক্ষুদ্রসহ এসএমই, সেবা ,অ-প্রাতিষ্ঠানিক, গ্রামীণ অর্থনীতিকে এ সুবিধা দিতে হবে।
ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে ক্ষুদ্রঋণ দানকারি সংস্থার, এনিজও এবং স্থানীয় পর্যায়ে সমিতির মাধ্যমে ঋণসহায়তা দিতে হবে। ঋণসুবিধার পাশাপাশি কর সুবিধা দেয়া যেতে পারে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত?
কর্মসংস্থানের জন্য রপ্তানিমুখী খাতের অবশ্যই গুরুত্ব রয়েছে। এর বাইরে কৃষিভিত্তিক, এসএমই, পরিবহন, পর্যটন খাতে বেশি সুবিধা দিতে হবে। সহজ শর্ত ও কম সুদে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি এসব খাতের কর সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি খাতে আরও বিনিযোগ বাড়াতে হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য। এখন থেকে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় থেকে বলে দিতে হবে, তারা যাতে এমন প্রকল্প প্রস্তাব রাখে যেখানে বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হয়।
চলতি অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন -জিডিপি কত হতে পারে বলে আপনি মনে করেন ?
বিগত অর্থবছরের উপর ভিত্তি করে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রাক্কলণ করা হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এটি অর্জন সম্ভব নয়।
পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপাত্ত নেই। ফলে এ বছর জিডিপি কত হবে তা হিসাব করা কঠিন।
গত অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থনীতি স্বাভাবিক ছিল। এর পর থেকে কয়েক মাস স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনীতি। ফলে প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়।
সেই অবস্থান থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখনও আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারেনি। আশা করা যাচ্ছে, গত অর্থবছরের মতো বা তার কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি হতে পারে এবছর।
অর্থনীতি আগের চেহারায় ফিরে পেতে আর কত সময় অপেক্ষা করতে হবে ?
বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এটি বড় সাফল্য আমাদের জন্য। মানুষ পুরো আয় করতে না পারলেও রোজগার বন্ধ হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজের সুযোগ সীমিত এখনও। যারা চাকরি হারিয়েছে কাজ পায়নি তারা।
যারা এখনও বেকার বা অর্ধ বেকার বা পূর্ণ আয় করতে পারছেন না, এদের স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে যেতে সময় লাগবে।
কিন্তু আশার দিক হলো, স্বল্প আয় ও খেটেখাওয়া মানুষ আয়- রোজগার করছে। এদের সংখ্যাই বেশি। অর্থনীতি পুরোপুরি সচল হতে ২০২১ সাল লাগবে।
এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আন্তর্জাতিক বাজারে নানা সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি প্রস্তুত?
২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক শুল্ক দিয়ে ওই দেশের বাজারে প্রবেশ করছে। এ সুবিধা না থাকায় পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি খুবে বেশি না হলেও খারাপ করছে না বাংলাদেশ।
শুল্কসুবিধা না থাকলে আমরা পারব না, এ ধারণা ঠিক না। দেশের উদ্যোক্তরা এখন যথেষ্ঠ সামর্থ্য অর্জন করেছেন। খরচ কীভাবে কমানো যায় সেই দিকে নজর দিচ্ছেন তারা। উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরি করছে, যাতে আরও বেশি মুনাফা করা যায়।
শুল্ক সুবিধা উঠে গেলে অবশ্যই বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়বে। কিন্তু কিন্তু এটি না হলে যে সক্ষমতা হারিয়ে যাবে তা ভাবার কারণ নেই। অতীতে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ।
এ জন্য উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে।
এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতার বড় একটা হাতিয়ার হতে পারে এফডিআই। এ সুযোগটি যেন কোনোভাবেই অবহেলা না করা হয়।
এলডিসি থেকে উত্তরণে দুই বছর সময় চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রস্ততি পর্বে এ সময় কি পর্যাপ্ত ?
স্বাভাবিক সময়ে ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ। করোনার কারণে অর্থনীতি দুর্বল হওয়ায় তা থেকে পিছিয়েছে। এ জন্য সরকার দুই বছর সময় চেয়েছে এবং বাড়তি সময় চাওয়াটা যুক্তিসঙ্গত।
আরও সময় নিলে ভালো হতো। তবে সরকার মনে করছে, কাজটি দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবে এবং অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সেই বিবেচনায় দুই বছর সময় যুক্তিসঙ্গত।
আরও পড়ুন:সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এই কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল হোসেন।
হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়া এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে সকালেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুইবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদ বুধবার শেষ রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আব্দুল হামিদকেও আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাপ্ত অভিযোগ ও অভিযুক্তের সংখ্যা, দ্রুত বিচার-নিষ্পত্তির প্রয়োজন, কাজের চাপ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালটি গঠন করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের চলমান সংঘাতকে ঘিরে যশোরের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তবে বিজিবি টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোয় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, যশোরে ৭০ কিলোমিটার এই সীমান্ত রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সাতক্ষীরার ৭০ ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নীরব নজরদারির সঙ্গে বিজিবি জোরদার করেছে টহল। এলাকাবাসীও সীমান্তের দিকে নজর রাখছেন।
সীমান্তবাসী আল মামুন জানিয়েছেন, এখনও যশোর সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএসএফের অপতৎপরতায় কোনো প্রকার অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান বিজিবির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিহত করতে প্রস্তুত এলাকাবাসী।
সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের থাকলেও এই সীমান্ত এখন স্বাভাবিক। তবে আগে ৫০০ গজ অন্তর একজন বিএসএফ সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও এখন ৩০০ গজ অন্তর দেখতে পাওয়া গেছে। এটা কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। যদি বিএসএফ কোনোরকম তৎপরতা দেখায়, তাহলে বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।’
৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে বিজিবিকে কঠোর আবস্থানে রাখা হয়েছে।
নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত থেকে যাতে কোনো অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বিজিবিও টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে থেমে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নারীসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। হতাহতের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা ও এ্যাম্বুলেন্স চালক। অপরজনের নাম জানা যায়নি।
আহতরা জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলার মিঠাপুকুর এলাকায়। বিল্লাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা। চলতি মাসের ২৩ তারিখ তার বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ রয়েছে। তবে গতরাত থেকে তার ব্যাথা হচ্ছিল। এজন্য সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তাতে পরিবারটির ১০ জন মিলে ঢাকার পথে আসছিলেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় আসার পর সেটির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়। এরপর রাস্তার ডান পাশে চাপিয়ে সেটির চাকা মেরামত করছিলেন চালক। আর তারা কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে বসে ছিলেন, আর কয়েকজন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। মেরামত প্রায় শেষের দিকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস পিছন থেকে এসে সজোরে অ্যাম্বুলেন্সে ধাক্কা দেয়।
এদিকে, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটির হেল্পার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, তারা কুষ্টিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই বাসটি নিয়ে আসতেছিলেন ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকায়। নীমতলি এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের ডান পাশের লেনে দাঁড় করানো ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন দ্রুতগতির বাসটি চালক ফয়সাল (৪০) ব্রেক করেও থামাতে পারেনি। সজোরে গিয়ে ধাক্কা লাগে থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের পিছনে।
এদিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, মাওয়ার নিমতলা এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আর আহতদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল পাঠান হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে কেউ মারা গিয়েছে কিনা সেটি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে যেই নারী নিহত হয়েছেন তার লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। বাস, অ্যাম্বুলেন্স দুটিই জব্দ করা হয়েছে।
ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় তিন জনকে হত্যার মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—রাকিবুল হাসান সৌরভ ওরফে সৌরভ প্রধান, শিহাব প্রধান এবং রনি বেপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাকিব প্রধান, শামীম প্রধান, অনিক বেপারী, রায়হান এবং জাহাংগীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর।
তাদেরকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।ৎ
এক মেয়েকে ইভটিজিং করা নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ উত্তর ইসলামপুর এলাকায় আওলাদ হোসেন মিন্টুর বাড়ির সামনে অভি, ইমনসহ অন্যদের নিয়ে সালিশ হয়। সেখানে তাদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
পরে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস করে দেয়া হয়। তবে, এর কিছু সময় পর অভির নেতৃত্বে কয়েকজন ইমন, শাকিব ও আলফাজের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমন বাঁশ দিয়ে অভিকে আঘাত করতে গেলে তা গিয়ে লাগে সৌরভের গায়ে। সৌরভের সাথে ইমন ও শাকিবের হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা জামাল হোসেন আওলাদ হোসেনের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে। পরে রাত ১১টার দিকে আবার সালিশে বসেন তারা।
এ সময় জামাল হোসেনের লোকজন আওলাদ হোসেন, আফজাল হক, ইমন, শাকিবদের ওপর হামলা করে। অভি ও শিহাব ইমনকে, রনি আওলাদ হোসেনকে এবং শিহাব শাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে লোকজন এলে জামালদের লোকজন পালিয়ে যায়। আহত তিন জনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য অপর দুই জনকে নেওয়ার পথে শাকিব মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন ২৫ মার্চ মারা যান। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় ১২ জনের নামে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে মুন্সীগঞ্জ সিআইডির ইন্সপেক্টর আসলাম আলী অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
লালদিয়ার চরে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনালে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বার্ষিক এফডিআই ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। একটি প্রকল্প থেকেই যদি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসে, তবে তা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বিডা’র পক্ষ থেকে আমরা এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর ও বে টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে তিনি একথা বলেন।
এরপর তিনি চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা রাজনৈতিক রাজধানী আর চট্টগ্রাম হবে আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী। বাংলাদেশের যে সম্পূর্ণ উন্নয়ন লক্ষ্যের দিকে আমরা এগুচ্ছি, তার মূল অংশ চট্টগ্রাম। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য চট্টগ্রাম একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- দেশের মানুষের জন্য, বিশেষ করে চট্টগ্রামের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন সব সরকারের প্রথম এজেন্ডা দেওয়া উচিত আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এসব টার্মিনালকে আমরা যত বেশি বিশ্বমানের করতে পারব, তত বেশি ব্যবসার জন্য কন্ট্রিবিউশন করা যাবে।
লালদিয়ার চরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসবে এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখানে কোনো বিনিয়োগ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস তৈরির সুযোগ আছে। বাংলাদেশকে ম্যানুফেকচারিং হাব করা সরকারের লক্ষ্য। লালদিয়া গ্রিন পোর্ট হবে। ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। বিষয়টি আমরা খুবই সিরিয়াসলি ট্র্যাক করার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। পোর্ট ক্যাপাসিটি এখন লিমিটেড। ছয় গুণ করার পরও আমরা ভিয়েতনামের ধারে কাছেও যাব না। তাই এক্সপার্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিতে হবে, যাতে কম জায়গায় বেশি অপারেশন করা যায়। বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বন্দরসমূহের উন্নয়ন জরুরি। এজন্য বিশ্বসেরা বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।’
বিডা চেয়ারম্যান জানান, দেশে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য স্থান হিসেবে আনোয়ারা পরিদর্শন করা হয়েছে।
২০২৪ সালে লালদিয়া টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করে এপিএম টার্মিনালস। শুরুতে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা থাকলেও আজ বেজা চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮০০ মিলিয়ন ডলার করা হয়েছে।
এপি মোলার মায়ের্স্ক-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ও সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে বিওটি (বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৮১ জন ভারতীয় নাগরিককে ঠেলে দিয়েছে (পুশ-ইন) ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ( বিএসএফ)। বুধবার (৭ মে) জেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার মাটিরাঙ্গার শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, পানছড়ি উপজেলার রুপসেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ৩০ জন, তাইন্দংয়ের আচালং বিটিলা বিওপি সীমান্ত দিয়ে ২৩ জন, রামগড় সীমান্ত দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ১ জনসহ মোট ৮১ জন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।
তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। জানা যায়, খাগড়াছড়ির পানছড়ি সীমান্তে আসা ৩০ জনকে বুধবার রাত ৮টা নাগাদ পানছড়ির লোগাং বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। মাটিরাঙ্গায় অনুপ্রবেশকারীদের বিভিন্ন বিওপিতে বিজিবি নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা, পানছড়িসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ ইনের ঘটনায় সীমান্তজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িতে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছেন। দেশের সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবিকে সর্তক পাহারায় রাখা হয়েছে। টহল জোরদারের পাশাপাশি বিজিবিকে সহায়তা করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিকের অনুপ্রবেশের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা।
তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করা সবাইকে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে বিজিবি। মানবিক সহযোগিতা বিবেচনায় তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তাদের সব ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
বুধবার (৭ মে) ভোর রাতে ভারতীয় এ নাগরিকদের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে বাধ্য করে বিএসএফ। জানা গেছে, ভারতের গুজরাট থেকে প্রায় সাড়ে চার শত জনকে আটক করে দুটি বিমানে তাদের ত্রিপুরায় নিয়ে আসা হয়। পরে বিএসএফের তত্ত্বাবধায়নে গাড়িতে করে পুশ ইনের জন্য বিভিন্ন সীমান্তে জড়ো করা হয় তাদের।
অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্তে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
মন্তব্য