করোনার কারণে অর্থনীতিতে তৈরি হওয়া ক্ষত কাটাতে আরও এক বছর লাগবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি মনে করেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প-এমএমই, গ্রামীণ অর্থনীতিসহ ‘লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা, অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিই আগামীতে অর্থনীতির মূল চ্যালেঞ্জ হবে।
সরকারি ব্যয় ও ভোট বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে এই অর্থনীতিদিব বলেন, যত বেশি ব্যয় হবে, তত বেশি ভোগ সৃষ্টি হবে। চাঙ্গা হবে অর্থনীতি।
অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি, আগামী বাজেট ভাবনাসহ নানা বিষয় নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন এই অর্থনীতিবিদ।
করোনা পরবর্তী অর্থনীতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী ?
করোনার প্রথম দিকে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। কঠিন সময় পার হয়ে ধীর ধীরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে সম্প্রতি গতি আগের চেয়ে শ্লথ হয়েছে।
এই বার্তা আমাদের মতো দেশে খুবই গুরুত্ব বহন করে। কারণ, অনেকেই এখনও কর্মহীন। তাদের পক্ষে টিকে থাকাইটাই কঠিন। অর্থনীতি গতিশীল থাকলে মানুষের আয় রোজগারের সুযোগ তৈরি হয়।
সংক্রমণের শুরুর দিকে ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতি খুলে দেয় সরকার। এর সুফলও মিলেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি এবং সেবা খাতে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। ফলে কম সময়ে ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতি। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো আর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এক নয়।
ঘুরে দাঁড়ানোর চালেঞ্জ কাটিয়ে উঠা গেছে। এখন পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তবে এটা ঠিক, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এ অর্জনকে কীভাবে দেখছেন ?
দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও বিশ্বব্যাপী হুন্ডি বন্ধের ফলে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার অন্যতম কারণ রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবাহ।
প্রবাসীরা বেশি টাকা পাঠানোর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ স্ফীত হয়েছে। এটি চার হাজার ৩০০ কোটি ডলার (৪৩ বিলিয়ন) ছাড়িয়ে গেছে। আবার আমদানি কম হওয়ায় রির্জাভ বেড়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ছবি: সাইফুল ইসলাম
এর একটি ইতিবাচক দিক আছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়কালে বেশি রিজার্ভ থাকার কারণে সহজেই অর্থ পাওয়া গেছে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। কারণ, তারা মনে করে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে বাংলাদেশের।
চলতি অর্থবছরে আট মাস চলছে। সামনে অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী ?
এ মুহূর্তে অর্থনীতির দুটি চ্যালেঞ্জ। একটি হলো ভোগ ব্যয় চাঙ্গা করা। অন্যটি রাজস্ব আদায় বাড়ানো।
মানুষ কাজ হারিয়েছে, কাজ কম পাচ্ছে, কম আয় করছে। ফলে যে মাত্রায় গতিশীল হওয়ার দারকার অর্থনীতি, সেটি হচ্ছে না।
অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় না বাড়লে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে না। এ জন্য বেসরকারি বিনিয়োগের দিকে না থাকিয়ে কর্মসৃজনমূলক প্রকল্প নিতে হবে সরকারকে।
দ্ধিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা। আমদানি–রপ্তানি কামার কারণে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কম রাজস্ব আহরণ সরকারের জন্য বড় দুর্ভাবনা।
ব্যয় কমার কারণ কী ?
সম্পদের সীমাবদ্ধতা তেমন নেই। কারণ, রাজস্ব আহরণ কম হলেও ব্যাংক এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থকে প্রচুর ঋণ নিচ্ছে সরকার। বিদেশি ঋণও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সরকারের সম্পদের ঘাটতি আছে,- এমনটি বলার সুযোগ নেই।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। যেসব প্রকল্পে কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, সেগুলো প্রাধিকার দিয়ে যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।
কিন্তু এখানে বড় দুর্বলতা আছে। দেখা যায়, অনেক বড় প্রকল্পে বেশি বরাদ্দ দেয়া হলেও তা ঠিকমতো খরচ করতে পারে না। টাকা ফেরত যাচ্ছে। অর্থবছরের শুরুতে ব্যয়ের দিকে বেশি নজর দিলে এ অবস্থা হতো না।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ কি যথেষ্ট বলে আপনি মনে করেন ?
প্রণোদনা ঘোষণার ফলে স্বস্তি দেখা দেয় অর্থনীতিতে। কিন্তু দুর্বল দিক হচ্ছে পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়ন না হওয়া। বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য দেয়া ঋণের শতভাগ ব্যয় হলেও পিছিয়ে ক্ষুদ্র,অতিক্ষুদ্র,মাঝারি ও কৃষিখাত। অথচ এসব খাতই অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি।
পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হলে লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা সুবিধা দিতে হবে। ক্ষুদ্র,অতিক্ষুদ্রসহ এসএমই, সেবা ,অ-প্রাতিষ্ঠানিক, গ্রামীণ অর্থনীতিকে এ সুবিধা দিতে হবে।
ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে ক্ষুদ্রঋণ দানকারি সংস্থার, এনিজও এবং স্থানীয় পর্যায়ে সমিতির মাধ্যমে ঋণসহায়তা দিতে হবে। ঋণসুবিধার পাশাপাশি কর সুবিধা দেয়া যেতে পারে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত?
কর্মসংস্থানের জন্য রপ্তানিমুখী খাতের অবশ্যই গুরুত্ব রয়েছে। এর বাইরে কৃষিভিত্তিক, এসএমই, পরিবহন, পর্যটন খাতে বেশি সুবিধা দিতে হবে। সহজ শর্ত ও কম সুদে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি এসব খাতের কর সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি খাতে আরও বিনিযোগ বাড়াতে হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য। এখন থেকে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় থেকে বলে দিতে হবে, তারা যাতে এমন প্রকল্প প্রস্তাব রাখে যেখানে বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হয়।
চলতি অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন -জিডিপি কত হতে পারে বলে আপনি মনে করেন ?
বিগত অর্থবছরের উপর ভিত্তি করে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রাক্কলণ করা হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এটি অর্জন সম্ভব নয়।
পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপাত্ত নেই। ফলে এ বছর জিডিপি কত হবে তা হিসাব করা কঠিন।
গত অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থনীতি স্বাভাবিক ছিল। এর পর থেকে কয়েক মাস স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনীতি। ফলে প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়।
সেই অবস্থান থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখনও আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারেনি। আশা করা যাচ্ছে, গত অর্থবছরের মতো বা তার কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি হতে পারে এবছর।
অর্থনীতি আগের চেহারায় ফিরে পেতে আর কত সময় অপেক্ষা করতে হবে ?
বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এটি বড় সাফল্য আমাদের জন্য। মানুষ পুরো আয় করতে না পারলেও রোজগার বন্ধ হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজের সুযোগ সীমিত এখনও। যারা চাকরি হারিয়েছে কাজ পায়নি তারা।
যারা এখনও বেকার বা অর্ধ বেকার বা পূর্ণ আয় করতে পারছেন না, এদের স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে যেতে সময় লাগবে।
কিন্তু আশার দিক হলো, স্বল্প আয় ও খেটেখাওয়া মানুষ আয়- রোজগার করছে। এদের সংখ্যাই বেশি। অর্থনীতি পুরোপুরি সচল হতে ২০২১ সাল লাগবে।
এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আন্তর্জাতিক বাজারে নানা সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি প্রস্তুত?
২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক শুল্ক দিয়ে ওই দেশের বাজারে প্রবেশ করছে। এ সুবিধা না থাকায় পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি খুবে বেশি না হলেও খারাপ করছে না বাংলাদেশ।
শুল্কসুবিধা না থাকলে আমরা পারব না, এ ধারণা ঠিক না। দেশের উদ্যোক্তরা এখন যথেষ্ঠ সামর্থ্য অর্জন করেছেন। খরচ কীভাবে কমানো যায় সেই দিকে নজর দিচ্ছেন তারা। উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরি করছে, যাতে আরও বেশি মুনাফা করা যায়।
শুল্ক সুবিধা উঠে গেলে অবশ্যই বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়বে। কিন্তু কিন্তু এটি না হলে যে সক্ষমতা হারিয়ে যাবে তা ভাবার কারণ নেই। অতীতে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ।
এ জন্য উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে।
এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতার বড় একটা হাতিয়ার হতে পারে এফডিআই। এ সুযোগটি যেন কোনোভাবেই অবহেলা না করা হয়।
এলডিসি থেকে উত্তরণে দুই বছর সময় চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রস্ততি পর্বে এ সময় কি পর্যাপ্ত ?
স্বাভাবিক সময়ে ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ। করোনার কারণে অর্থনীতি দুর্বল হওয়ায় তা থেকে পিছিয়েছে। এ জন্য সরকার দুই বছর সময় চেয়েছে এবং বাড়তি সময় চাওয়াটা যুক্তিসঙ্গত।
আরও সময় নিলে ভালো হতো। তবে সরকার মনে করছে, কাজটি দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবে এবং অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সেই বিবেচনায় দুই বছর সময় যুক্তিসঙ্গত।
আরও পড়ুন:
হিন্দুত্ববাদী চক্র কর্তৃক মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট, গাজীপুরে আশামনি ধর্ষণ, খতিব মুহিবুল্লাহকে অপহরণ, চট্টগ্রামের আলিফ হত্যা সহ ইসকনের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ‘মুসলিম শিক্ষার্থী’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে একই স্থানে সমবেত হন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এসময় বক্তারা বলেন, ' পাঁচ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকন নামক এই বিষফোঁড়া, ভারতের দালাল বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। অতিসত্বর এই বাংলাদেশ থেকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা দেখেছি, ফ্যাসিস্ট আমলে ইসকন এদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে তারা ইসকনদের জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় থেকে একদম রুট-লেভেল পর্যন্ত ইসকন পরিকল্পিতভবে তাদের লোকদের ঢুকিয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে এই বাংলাদেশ থেকে ইসকন'কে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকনকে যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, এদেশের তাওহীদি জনতা এবং ছাত্র সমাজ কখনো মেনে নিবে না। 'জেন-জি' যদি একবার ইসকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেঁটে-পড়ে তাহলে এই বাংলায় ইসকনের কবর রচিত হতে বাধ্য।'
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ‘ইসকন এই বিশ্বে ধর্ম প্রচার করছে না বরং তারা ধর্মের ছদ্মবেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রচার এবং প্রসার করার জন্য মাঠে নেমেছে। মুসলিম মা বোনদের নিয়ে তামাশা করছে। ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সিঙ্গাপুর আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে বলা হয়েছে ইসকন তাদের ধর্ম প্রচারের কোন সংগঠন না। তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচার-প্রসারের জন্য এখানে আদা জল খেয়ে নেমেছে।’
আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সরকারের উপর দেশি-বিদেশি কোন চাপ নেই। তারা গণহত্যার জন্য এখনো ভুল স্বীকার করেনি।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ফ্রী ফেয়ার একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে সব দল একসাথে অংশগ্রহণ করবে।
বিগত শেখ হাসিনার সময়ের প্রতিটি নির্বাচনে তাদের পছন্দমত প্রার্থী কেনাবেচা হয়েছে। তাতে জনগণের কোন অংশগ্রহণ ছিল না।
শুক্রবার সকালে মাগুরা শহরের নবগঙ্গা পার্কে জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মৃতি স্তম্ভে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ পারভেজ।
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদ বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ঐক্যমত পোষণ করেছে। যে কয়েকটি দল এখনো স্বাক্ষর করেনি, তাদেরও সম্মতি রয়েছে।
জাতীয় ঐক্যমতের কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে বা পরে অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এ বিষয়ে সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, “জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারিতে। আরপিওতে ‘না ভোট’ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে একক প্রার্থী থাকলেও জনগণ প্রয়োজনে তাকে প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ পায়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ১৫% বাড়ী ভাড়া প্রজ্ঞাপণ জারী হওয়ায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ র্যালী করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশীজোট পটুয়াখালী জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকগণ।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শহরের পৌরসভা চত্বর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট পটুয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক আয়োজনে র্যালীটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পটুয়াখালী সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পটুয়াখালী সদর উপজেলা এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট আহবায়ক মো. অহিদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশীজোট পটুয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক এবং আনুষ্ঠানের সভাপতি সাইফুল মজিদ মোঃ বাহাউদ্দিন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছোটবিঘাই মোক্তার ডিগ্রি কলেজ এর অধ্যক্ষ মোঃ কামরূল আহসান, ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান, হাজীখালী আলিম মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মোঃ ফারুকুজ্জামান, খাসেরহাট স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ মোঃ রশির উদ্দিন,জেলা শাখার সমন্বয়ক মোঃ সাজেদুল ইসলাম বাহাদুর, আবদুল কাউয়ুম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,আলহামদুলিল্লাহ মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট শতকোটি শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই প্রিয় অধ্যক্ষ আজিজুল হক স্যারকে এবং পটুয়াখালী জেলার শিক্ষক ভাইদের যারা কষ্ট করে আমাদের আন্দোলন কে সফল করেছেন।যাদের নাম না বললেই নয়। সৈয়দ কাইয়ুম ভাই, বশির স্যার,শফিক স্যার,মুস্তাফিজ স্যার,অহিদ সারওয়ার স্যার,মাসুম ছোট ভাই সাখাওয়াত, মাসুদ, জলিল স্যার সহ অনেক অনেক স্যারদের।সবাই দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষকের যে কোন নায্য দাবি আদায় করতে সবাই একসাথে কাজ করতে পারি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনার ইমরান হায়দার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পাকিস্তানি হাইকমিশন
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সাক্ষাৎকালে দু’দেশের সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও মন্ত্রী পর্যায়ের সফরের প্রশংসা করেন উভয়পক্ষ। এর মধ্যে গত আগস্টে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
গত এপ্রিলে রাজধানীতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সভা সফলভাবে হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়। এছাড়া দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠককেও স্বাগত জানান উভয় পক্ষ।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উভয় দেশ অগ্রগতি লাভ করেছে।
এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি একাধিক খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।বাসস
চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রমনা থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি আদালতের নির্দেশে পুনরায় তদন্তাধীন থাকায় আসামিরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য রমনা থানা থেকে সংশ্লিষ্ট সব বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে।
তাই কোনো আসামি যেন দেশ ছাড়তে না পারেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন অভিনেতার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। তবে এতে দ্বিমত পোষণ করে সালমান শাহর পরিবার।
তাদের দাবি, সালমান শাহকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
দীর্ঘ ২৯ বছর পর অভিনেতা সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। গত ২০ অক্টোবর সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের নির্দেশ দেন আদালত। মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম।
সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামিরা হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রিজভী আহমেদ ফরহাদ।
মন্তব্য