বিরোধী দলের বর্জনের মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে মোট তিনটি। এর মধ্যে সবচেয়ে কম টিকেছে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটে ক্ষমতায় আসা বিএনপি সরকার।
ভোট শেষে সংসদ বসে ১৯ মার্চ। সংসদ স্থায়ী ছিল মাত্র চার কার্যদিবস। সে সময়ের বিরোধী দল আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চ সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সংসদ স্থায়ী ছিল মাত্র ১২ দিন।
বিএনপি সরকারের পতনের পর ওই বছরের ১২ জুন আরও একটি নির্বাচন হয়। আর তাতে জিতে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
ওই নির্বাচনের ২৫ বছর পূর্তির দিন নানা কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি সেই নির্বাচনকে স্মরণ করেনি। নির্বাচন নিয়ে জানতে চাওয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নাখোশ হয়েছেন।
সে সময় বিরোধী দল আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী দলগুলোর বর্জন, আন্দোলন, প্রতিরোধের মুখে এই নির্বাচন ঠেকানো নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। ২২টি নির্বাচনি এলাকায় ভোটও করা যায়নি। বাকিগুলোতেও হাজার হাজার কেন্দ্রে ব্যালট পাঠালেও তা ছিনিয়ে নেয়া হয়। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় বহু মানুষ।
এর আগে ১৯৮৮ সালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জন আর ২০১৪ সালে বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা আরও বেশ কিছু দলের বর্জনের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে।
তবে এই তিন নির্বাচনের মধ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের কোনো তথ্য পাওয়া কঠিন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সমমনারা যেমন অনেক কথা বলেন, তেমনি আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে অনেক আক্রমণাত্মক কথা বলেন। কিন্তু নিজেদের আমলের একতরফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দুই দলের যুক্তি একই, সংবিধান রক্ষা।
১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে নামে আওয়ামী লীগ। আন্দোলনে যোগ দেয় জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামীও।
কিন্তু দাবি না মেনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। বিএনপি ছাড়া মূলধারার আর কোনো দল ভোটে অংশ না নিলেও নতুন, অপরিচিত বহু দল নেই ভোটে আসে। এর একটির নাম ছিল ‘জাতীয়তাবাদী আওয়ামী লীগ’।
বিএনপির কর্মী-সমর্থকরাই সে সময় এই দলটি গড়ে তুলেছিলেন বলে প্রচার আছে। এখন আর সেই দলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
সে সময় অবশ্য সব আসনে ভোট করা যায়নি। বেশ কিছু আসন ফাঁকা রেখেই গঠন করা হয় সংসদ। বাকি আসনগুলোর মধ্যে বিএনপি পায় ২৭৮টি।
ওই নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দল ফ্রিডম পার্টি। সে সময়ের কুমিল্লা-৬ আসন থেকে জিতিয়ে আনা হয় বঙ্গবন্ধুর খুনি শাহরিয়ার রশিদকে। বিএনপির ইচ্ছা ছাড়া এটা অসম্ভব ছিল তখন।
যা হয়েছিল তৃণমূলে
১৯৯৬ সালের ওই নির্বাচনের আগের ও নির্বাচনের দিনের স্মৃতিচারণ করে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু বলেন, ‘তখন আমি ছাত্রলীগ করি। আমরা নেতা-কর্মীরা এমন নির্বাচন মেনে না নিয়ে আন্দোলন শুরু করি। ভোটের আগের দিন রাত অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কুমিল্লা মর্ডান স্কুল সংলগ্ন নির্বাচন অফিসে হামলার প্রস্তুতি নেই। তবে সে সময় পুলিশি বাধার মুখে আর পারিনি।
‘১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ভোট বন্ধ করতে আমরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে হাজির হই। আমি আমার নেতা-কর্মীদের নিয়ে নগরীর অন্তত ১৫টি কেন্দ্র থেকে ৪০ টি ব্যালেট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে যাই।’
তিনি বলেন, ‘সে সময় কোনো ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। তারা দূর থেকে আমাদের কাজকর্ম দেখছিল। আমরা যখন কেন্দ্র ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে চলে আসি, তখন তারা হাততালি দিয়ে আমাদের কার্যক্রমকে স্বাগত জানায়।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই বাবলুও তখন ছিলেন ছাত্রনেতা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন পুরো কুমিল্লা নগরী তখন থমথমে অবস্থা ছিল। আমরা সকল উপজেলার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম যে কোন মূল্যে এই নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা এক হই।’
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নে অবস্থান নেই। সেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য রাস্তা কেটে দেই।
‘আমাদের ভূমিকা দেখে অনেক প্রিসাইডিং অফিসার ব্যালট পেপার ফেলে পালিয়ে যায়। নির্বাচনের আগে থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিন এবং তার পরবর্তী দিনগুলোতেও পাতানো নির্বাচন বন্ধে আমাদের ছাত্রলীগের সক্রিয় অবস্থান ছিল।’
কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সেদিন ভোটের চিত্র কেমন ছিল, তা জানিয়েছেন সে সময়ের বিরোধী দলে থাকা বর্তমানে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ সাদী।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করতে আমরা কিশোরগঞ্জে লাগাতার হরতাল, অবরোধসহ আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকি। সে সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছিলেন অফিস ও ঘরমুখী।’
সদর আসনে সে সময়ে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মাসুদ হিলালী। বিএনপিরই নেতা অসীম সরকার বাঁধন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান ঘুড়ি প্রতীকে। হাতি প্রতীকে ছিলেন দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত সরকারি কর্মকর্তা মো. ইউসুফ।
শরীফ সাদী বলেন, ‘ভোটের আগের রাতে আওয়ামী লীগ নেতা দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামাল ও সাব্বির আহমেদ মানিকের বাসা থেকে কর্মীদেরকে নির্বাচন বানচালের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়।
‘আগের রাতে প্রতিটি কেন্দ্রের পাশে নেতাকর্মীদেরকে বাউল গানসহ নানা সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে সজাগ থাকা এবং পরদিন সকাল থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেয়া হয়।
‘ভোটের দিন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনি সরঞ্জাম ছিনিয়ে নিয়ে আসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সেদিন কোনো ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায়নি। সদর উপজেলার বিন্নাটি ও মারিয়া এলাকায় দুটি কেন্দ্রে ব্যাপক গোলযোগ হয়।
‘মারিয়ার কামালিয়ারচর কেন্দ্রে নির্বাচন বানচাল করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান আওয়ামী লীগ কর্মী সোহরাব। গুলিবিদ্ধ হ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মঞ্জু মিয়া ও মাদ্রাসার ছাত্র আসাদ।’
সে সময়ের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নেতৃত্বে শহরের খড়মপট্টি এলাকায় জেলা নির্বাচন অফিসে হামলা হয।
নেতা-কর্মীরা নির্বাচনি সরঞ্জামে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সদর আসনের পাশাপাশি পাকুন্দিয়ায়ও তুমুল আন্দোলন হয়। সে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সে সময়ের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক গোলাপ মিয়া ও সে সময়ের তরুণ নেতা রফিকুল ইসলাম রেণু। তাদের নেতৃত্বে পাকুন্দিয়ায় নির্বাচনি অফিসে আগুন দেয়া হয়।
নির্বাচনে যাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, তারা সংসদে গিয়েছিলেন অ্যাম্বুলেন্সে করে।
তথ্য নেই নির্বাচন কমিশনের কাছেই
বাংলাদশে সব জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকলেও এই একটি নির্বাচন নিয়ে কোনো তথ্য নেই সেখানে।
কেন নেই তার কোনো ব্যাখ্যাও নেই নির্বাচন কমিশনের কাছে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশ করে কোনো কথাও বলতে চান না নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
কমিশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটার কোনো প্রতিবেদন নেই। এটার তথ্য সেভাবে পাবেন না।’
ওই কর্মকর্তার মতে, সে সময়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সে কারণেই নির্বাচনের তথ্য সংরক্ষণ করা যায়নি।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় অনেক কিছু ভাঙচুর, কমিশনে পরিবর্তন- তখন আর ওই নির্বাচন প্রতিবেদন করা হয়ে উঠেনি। মূল কথা, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে রিপোর্টটি করা হয়নি।'
কোনো সঠিক হিসাব না থাকলেও ধারণা করা হয় নির্বাচনে ভোট পড়েছিলো ২০ থেকে ২১ ভাগ। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এ কে এম সাদেক।
কী বলছে আওয়ামী লীগ
ওই নির্বাচনের ২৫ বছর পূর্তির দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। সেদিন আন্দোলনে অনেক নেতা-কর্মীকেও জীবন দিতে হয়েছে।’
তিনি বলেন ‘কোনো রাজনৈতিক দল এতে অংশগ্রহণ করেনি, সে কয়েকটি দল গঠন করে করেছিল, দুই পারসেন্ট ভোটও পড়েনি।
‘সারা বাংলাদেশে সেনাবাহিনী ডিপ্লয় করে দিয়ে জনগণের ভোট চুরি করে। ভোট চুরি করে আবার তিনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তা মেনে নেয়নি। তীব্র আন্দোলন হয়। সে আন্দোলনের মধ্যে মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হন।’
১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে প্রহসনমুলক আখ্যা দিয়ে সোমবার রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন।
ওই নির্বাচনের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদকে বসিয়ে সংসদকে কলঙ্কিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র বিএনপির হাতে বিকৃত হয়। শিক্ষা-দিক্ষা সহকিছুই তাদের হাতে বিকৃত রুপ লাভ করে। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভ হবে না।‘
স্মৃতিচারণ করতে বলায় ক্ষেপলেন বিএনপির নজরুল ইসলাম খান
এ নির্বাচনকে কোনো ভাবেই কলঙ্কিত মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচন দিয়েছিলাম সেটা যেমনই হোক৷ আওয়ামী সরকার কী করছে? এক যুগ ধরে তো বসেই আছে। জনগণ কী চায় তা মাথাতেই নিচ্ছে না।’
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিরক্তি প্রকাশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি উল্টো নিউজবাংলার কাছে জানতে চান, ‘এতদিন পরে কেন এ প্রসঙ্গ?’
তিনি বলেন, ‘এত বছর এসে আপনাদের এখনও কমেন্টের কী দরকার আমি আসলে বুঝি না। আমি ঐ ইলেকশন করিনি। যারা করছেন তাদের জিজ্ঞাসা করেন।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিউজবাংলার কুমিল্লা প্রতিনিধি মাহফুজ নাণ্টু ও কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান রোকেল।
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ব্যাংকের সম্মানিত স্পনসর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ০১ আগস্ট ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে সাউথইস্ট ব্যাংক পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।
জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৪০ সালের ৩০ জুন এক সম্মানিত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একজন সম্মানিত সদস্য এবং পর্ষদের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জগতে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি মিউচুয়াল গ্রুপ এবং এডি হোল্ডিংস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি আর্লা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি এই বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশনেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন।
শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নিজ জিলা ফেনীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন মসজিদ,মাদ্রাসা | এছাড়াও বিভিন্ন সমাজ হিতৈষী কাজে জড়িত ছিলেন তার উদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে |
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. পরিবার জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
তুরস্কের কোচ হোল্ডিং -এর ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠান বেকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড গর্বের সঙ্গে তাদের অত্যাধুনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্ল্যান্ট (যা বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনোমিক জোন - BSEZ-এ অবস্থিত) থেকে প্রথম ওয়্যার হারনেস কম্পোনেন্ট রপ্তানি চালান উদ্বোধন করেছে, যা দেশের উৎপাদন ও রপ্তানি সক্ষমতার এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি নির্দেশ করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও বেজার নির্বাহী সদস্য (বিনিয়োগ প্রচার) জনাব সালেহ আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব মোস্তাফিজুর রহমান, সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব এমএইচএম ফাইরোজ, ফ্যাক্টরি ডিরেক্টর জনাব হাকান আলতিনিশিক এবং সিঙ্গার বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ।
প্রথম রপ্তানি চালানটি একটি বৃহৎ পরিসরের কৌশলগত সাপ্লাই উদ্যোগের সূচনা, যা হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্পে বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণকে আরও সুদৃঢ় করে। সরকারী কর্মকর্তারা এই উদ্যোগকে কৌশলগত শিল্প বিনিয়োগের একটি সফল উদাহরণ হিসেবে প্রশংসা করেছেন এবং বৈশ্বিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্ট সাপ্লাই নেটওয়ার্কে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচনের জন্য বেকোকে সাধুবাদ জানান।
“আমাদের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উৎপাদন মানচিত্রে একটি নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা,” বলেছেন সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব এমএইচএম ফাইরোজ। “এই প্রকল্প আমাদের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও শিল্প উৎকর্ষতায় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।”
“এই অর্জন বৈশ্বিক মানের সুনির্দিষ্ট উৎপাদন সক্ষমতায় আমাদের দক্ষতাকে তুলে ধরে,” বলেন ফ্যাক্টরি ডিরেক্টর জনাব হাকান আলতিনিশিক। “উৎপাদন শুরু করার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ওয়্যার হারনেস কম্পোনেন্ট রপ্তানি করতে পারা আমাদের টিমের জন্য যেমন গর্বের, তেমনি এটি বাংলাদেশের উচ্চ-মূল্যের উৎপাদন সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
ওয়্যার হারনেস রপ্তানি প্রকল্পের আওতায়, এই প্ল্যান্ট বেকোর নেটওয়ার্কভুক্ত ১৪টি বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্রকে সাপোর্ট প্রদান করবে, ৫টি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ১,০০০ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। মাত্র ১৮ মাসে নির্মিত এবং গ্রাউন্ড ব্রেকিংয়ের ৮ মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড-এর হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্ল্যান্টটি LEED Gold স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নির্মিত, যেখানে সৌরশক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি এবং জিরো-ওয়েস্ট দর্শন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি বেকোর টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি এবং ২০৫০ সালের মধ্যে নিট-জিরো নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যের প্রতিফলন। ওয়্যার হারনেস প্রকল্প ব্যতীত মোট ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগে স্থাপিত এই প্ল্যান্টটি ১,৩৫,০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং বর্তমানে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার ও ওয়াশিং মেশিন উৎপাদন করছে—এবং এবার যুক্ত হলো ওয়্যার হারনেস সিস্টেমও। দেশীয়ভাবে ৯০% এর বেশি পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে এটি একদিকে বাংলাদেশের বাজারে সেবা দিচ্ছে, অন্যদিকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশকে কনজ্যুমার ডিউরেবলস পণ্যের একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলছে। এছাড়াও এটি একটি শক্তিশালী স্থানীয় সাপ্লায়ার ইকোসিস্টেম তৈরি করবে, যা এই খাতে আমদানি নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে।
সিঙ্গার বাংলাদেশ সম্পর্কে
সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ কনজ্যুমার ডিউরেবলস রিটেলার্স, যার রয়েছে সারাদেশে ৪৬৩টি রিটেইল স্টোর এবং ১,০০০-এর বেশি ডিলার স্টোর । সিঙ্গার এই অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম শুরু করে ১৯০৫ সালে। বর্তমানে সিঙ্গার, বেকো এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের অধীনে সিঙ্গার বাংলাদেশ ঘরোয়া ব্যবহারের সব ধরনের কনজ্যুমার ডিউরেবলস পণ্য বিক্রি করে থাকে। সিঙ্গার বাংলাদেশের ৫৭% মালিকানায় রয়েছে বেকো, আর বাকি শেয়ারগুলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (CSE) পাবলিকলি লেনদেনযোগ্য।
বেকো সম্পর্কে
বেকো হলো একটি আন্তর্জাতিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানি, যার শক্তিশালী বৈশ্বিক উপস্থিতি রয়েছে। এটি ৫৫টির বেশি দেশে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করে, যেখানে ৫০,০০০ এর বেশি কর্মী এবং ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদন সুবিধা রয়েছে। বেকোর মালিকানাধীন বা সীমিত লাইসেন্সে ব্যবহৃত ২২টি ব্র্যান্ড রয়েছে, যেমন: Arçelik, Beko, Whirlpool*, Grundig, Hotpoint, Arctic, Ariston*, Leisure, Indesit, Blomberg, Defy, Dawlance, Hitachi*, Voltas Beko, Singer*, ElektraBregenz, Flavel, Bauknecht, Privileg, Altus, Ignis, Polar. ২০২৪ সালে ভলিউম ভিত্তিক বাজার শেয়ারে বেকো ইউরোপের সবচেয়ে বড় হোয়াইট গুডস কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১০.৬ বিলিয়ন ইউরো সংযুক্ত বার্ষিক রাজস্ব অর্জন করে। বেকো বিশ্বব্যাপী ২৯টি গবেষণা ও ডিজাইন সেন্টার ও অফিস রয়েছে, যেখানে ২,৩০০ এর বেশি গবেষক কর্মরত এবং এ পর্যন্ত ৩,৫০০ -এরও বেশি আন্তর্জাতিক নিবন্ধিত পেটেন্ট আবেদন রয়েছে। কোম্পানিটি হাউসহোল্ড ডিউরেবলস শিল্পে S&P Global Corporate Sustainability Assessment (CSA) -তে ২০২৪ সালের ২২ নভেম্বরের ফলাফলের ভিত্তিতে ধারাবাহিক ছয় বছর সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করেছে এবং ধারাবাহিক আট বছর ধরে Dow Jones Sustainability Indices -এ অন্তর্ভুক্ত। TIME ম্যাগাজিন এবং Statista -এর ২০২৫ সালের বিশ্বের সর্বাধিক টেকসই কোম্পানির তালিকায় বেকো ১৭তম স্থান লাভ করেছে।
বেকোর ভিশন হলো: “বিশ্বকে সম্মান করা, বিশ্বজুড়ে সম্মানিত হওয়া।”
বৃহস্পতিবার চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি বিবৃতি (এমপিএস) ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।
এদিন ঢাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আনুষ্ঠানিকভাবে এই এমপিএস ঘোষণা করবেন। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এসময় গভর্নর বর্তমান মুদ্রানীতির আওতায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে গতিশীল করতে বর্তমান এমপিএস এর ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদসহ ব্যাংকের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
আমদানি-রপ্তানিতে ৩০ শতাংশ শুল্ক (ট্যারিফ) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। আন্তঃমন্ত্রণালয় ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই শুল্ক বাড়ানো হয়েছে বলে জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. এম শাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। এ নিয়ে প্রচারণা (প্রোপাগান্ডা) চালানোর কিছু নেই।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল-এনসিটিতে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সালের পর এবারই প্রথম ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে, তবে আমদানি-রপ্তানিতে খরচ বাড়বে ব্যবসায়ীদের।’
নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়াতে চায়। এ বন্দরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে হলে বিদেশি অপারেটরকে পরিচালনার ভার দিতে হবে। এ নিয়ে প্রোপাগান্ডা না ছড়াতে সবাইকে পরামর্শ দেন তিনি।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদেশিদের হাতে বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে, বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ও নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে। গত ৭ জুলাই সাইপ পাওয়ার টেক থেকে নিয়ে বন্দরের এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়।’
এরপর নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ২০০ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ।
১৬ বছর পর চলতি বছরে ৭ জুলাই থেকে এনসিটিতে পরিচালনা করছে নতুন অপারেটর চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড।
মূলত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বন্দরের অত্যাধুনিক নিউমুরিং টার্মিনালটি সুপার স্ট্রাকচার সমৃদ্ধ একটি আন্তর্জাতিকমানের এ টার্মিনালে এসেছে ব্যাপক অগ্রগতি।
তবে আগে যে প্রতিষ্ঠান এনসিটি পরিচালনা করেছে তারাও ভালোভাবে কাজ করেছে বলে জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা।
চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এনসিটিতে জাহাজে কন্টেইনার উঠা নামা কার্যক্রম পরিদর্শন এবং এর অগ্রগতি বিষয়ে অবগত হন।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
নৌবাহিনী চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়াল অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, আগের অপারেটরের তুলনায় ড্রাইডক পরিচালিত এনসিটিতে ৭ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ১৭ দিনে বিশ ফুট সমতুল্য কন্টেইনার দৈনিক গড় হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ টিইইউএস, যা পূর্ববর্তী মাসে একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
একই সময়ে মোট ৩০টি জাহাজের কনটেইনার লোডিং ও আনলোডিং সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ১০ ঘণ্টা জাহাজের সময় কমিয়ে আনা হযেছে। বর্তমানে এনসিটির ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর জেটিতে একযোগে ৪টি জাহাজে পণ্য ওঠানামার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ড্রাই ডকের এ কার্যকর ভূমিকা বন্দরের সার্বিক কর্মকাণ্ডে গতি এনেছে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ীরা।
সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সারাদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৮ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৭ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১১২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮২ কোম্পানির মধ্যে ১০৫ কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৫৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ২০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ) আজ বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) সিস্টেম ব্যবহারের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।
বাণিজ্য সুবিধা আরও সহজ করা এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। এনবিআর-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় বিএসডব্লিউ সিস্টেম ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। বিএসডব্লিউ মূলত একটি অনলাইন প্লাটফর্ম, যা ব্যবহার করে একজন আমদানিকারক-রপ্তানিকারক পণ্য খালাসের জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) এর জন্য অনলাইনে আবেদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিএলপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
সিএলপি গ্রহণের পূর্বে ব্যবহারকারীদের তাদের ব্যবসায়িক শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) ব্যবহার করে বিএসডব্লিউ সিস্টেমে (Website: bswnbr.gov.bd) নিবন্ধন করতে হবে।
এই সিস্টেম ব্যবহারের ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যে সকল সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো: একটি কমন প্ল্যাটফর্মে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সিএলপি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা কর্তৃক যুগপৎভাবে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে, সরকারি কাজে ব্যক্তিগত যোগাযোগ (হিউম্যান ইন্টারেকশন) না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে, দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বিএসডব্লিউ সিস্টেম হতে ইতোমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যুকৃত সিএলপির সংখ্যা আজ ২০ জুলাই পর্যন্ত ৪ লাখ ৩১ হাজার ১৬৯টি।
সিএলপি সমূহের ৮৫.৩০ শতাংশ এক ঘণ্টার কম সময়ে এবং ৯৪.১৪ শতাংশ এক দিনের কম সময়ে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ইস্যু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিএলপি ইস্যুকারী ১৯টি সংস্থার (ডিজিডিএ, ইপিবি, ডিওইএক্স, বিএনএসিডব্লিউসি, বেজা, বেপজা, ডিওই, বিএসটিআই, বিএইআরএ, বিএইসি, সিএএবি, বিটিআরসি, ডিওএফ, ডিএলএস, পিকিউডব্লিউ, বিডা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং সিসিআই এন্ড ই) ক্ষেত্রে ইস্যুকৃত সিএলপি বিএসডব্লিউ সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এই ১৯টি সংস্থা বিএসডব্লিউ পোর্টালে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে ৩৮টি দপ্তর/সংস্থা/মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে যুক্ত সকল অংশীজনকে বিএসডব্লিউ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে এনবিআর।
যেকোনো প্রয়োজনে কল সেন্টার এ (হটলাইন: ১৬১৩৯) ফোন করে এবং ওয়েবসাইট (www.bswnbr.gov.bd) থেকে বিএসডব্লিউ সংক্রান্ত সকল সেবা গ্রহণ করা যাবে।
মন্তব্য