চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিনে সূচকের বড় পতনে অস্থির হয়ে ওঠা পুঁজিবাজারে স্বস্তি ফিরেছে। আতঙ্কগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে যখন বিনিয়োগ সুরক্ষার পরিকল্পনায় ব্যস্ত, তখন উত্থানে ফেরত এলো এক দিনের সূচক।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার পুঁজিবাজারে ১৪২ পয়েন্ট আর সোমবার ১২৮ পয়েন্ট সূচক পতন হয়। বিপরীতে মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে ১২৪ পয়েন্ট।
এতে বাজারে আস্থা ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের। তারা বলছেন, গত দুদিন যেভাবে সূচকের পতন হচ্ছিল তা মঙ্গলবার অব্যাহত থাকলেও তা হতো পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে আতঙ্কের।
বিএসইসি যেভাবে পুঁজিবাজারে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল তার মধ্যে গত দুদিনের পতন অনেক বড় ক্ষত তৈরি করেছিল। মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ানোয় যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে সূচক কিছুটা নিম্নমুখী থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে এক ঘণ্টায় সূচক ওঠে ৮৫ পয়েন্টে, আর লেনদেন হয় ২৫৩ কোটি টাকা। এ উত্থান লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সূচকের উত্থান থাকলেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে।
মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৬৮৩ কোটি টাকা, যা গত দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগের গত বছরের ১ ডিসেম্বর লেনদেন হয়েছিল ৬৬৩ কোটি টাকা। সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৭৮৯ কোটি টাকা। ফলে এক দিনের ব্যবধানে ডিএসইর লেনদেন কমেছে ১০৬ কোটি টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদের মতে, মঙ্গলবার পুঁজিবাজার ইতিবাচক হওয়াটা জরুরি ছিল। যদিও যেভাবে সূচক ও লেনদেনের পতন হচ্ছিল, তা স্পষ্ট ছিল না কত দিন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে এখন বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আস্থা ফিরে পাবে। এখন আবার যদি বুধবার বড় পতন হয় তাহলে সে আস্থা ধরে রাখা কঠিন হবে। একই সঙ্গে বিএসইসি যে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে বাজার উত্থান রাখার চেষ্টা করছে সেটিও অনেকটা প্রশ্নের মুখে পড়বে।’
এদিকে গত দুই দিনের সূচকের পতনের সার্ভিল্যান্সে কারসাজি চিহ্নিত করাসহ বাজার সংশ্লিষ্ট ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। যেখানে বাজার পতনের মৌলিক কোনো বিষয় নেই বলে জানানো হয়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের শেয়ারের নিম্নমুখী অবস্থায় গত রোববার ব্যাংকের লভ্যাংশ প্রদান সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে সবচেয়ে ভালো মানের ব্যাংক ২০২০ সালের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বোনাস শেয়ার ঘোষণা করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়।
এমন ঘোষণার এক দিন পর সোমবার আরও পতনের মুখে পড়ে ব্যাংক খাতের শেয়ার। যেখানে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে দর বাড়ে মাত্র চারটি ব্যাংকের।
এমন অবস্থায় পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি খুবই ভালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানে ব্যাংকের শেয়ারের দর এখনও অনেক কম, সেখানে ব্যাংক যদি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে পারে তাহলে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পাবে।
তার মতে, প্রজ্ঞাপনটি বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। এর ফলে ব্যাংকগুলো কী করতে পারবে তাও স্পষ্ট ছিল না। ফলে সোমবার ব্যাংকের শেয়ারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
মঙ্গলবার অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারের দর বেড়েছে। ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারের দর কমেছে, পাঁচটির দর পাল্টায়নি। বাকি ২০টি ব্যাংকের শেয়ারের দর বেড়েছে।
বিমা খাতের ৪৯টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র একটি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। দর পাল্টায়নি চারটির। বাকি ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে।
একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২১টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি কোম্পানির শেয়ারের দর পাল্টায়নি। বাকি ১৮টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে।
সূচক ও লেনদেন
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে-ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২২ দশমিক ০৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২৪ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩৯ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৬২ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৬ পয়েন্টে।
এদিন লেনদেন হওয়া ৩৪৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৪০টির, কমেছে ১৭টির, পাল্টায়নি ৯২টির।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে- সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৯৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে। এদিন লেনদেন হওয়া ২৩৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬০টির, কমেছে ২৮টির, পাল্টায়নি ৪৯টির। মোট লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি টাকার।
আগ্রহ ও অনাগ্রহ কোম্পানি
মঙ্গলবার লেনদেনের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, যার এক কোটি ১৯ লাখ ২৩ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি টাকায়। বেক্সিমকো ফার্মার ২৮ লাখ ৫২ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৫ কোটি টাকায়। রবির ৯৬ কোটি ২১ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি টাকায়।
এ তালিকায় আরও ছিল বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড-বিএটিবিসি, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, সামিট পাওয়ার।
এ্যাপোলো ইস্পাতের শেয়ার দর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ। একই হারে দর বেড়েছে ডোমিনস, ফুয়াং সিরামিক, মাইডাস ফিন্যান্স, মীর আক্তার হোসাইনের। এ ছাড়া লংকাবাংলা ফিন্যান্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ।
দর পতনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ফার্স্ট ফাইন্যান্স, যার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। প্রাইম ব্যাংকের শেয়ারের দর কমেছে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া এ তালিকায় ছিল এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান, দেশ গার্মেন্টস, যমুনা ব্যাংক।
আরও পড়ুন:বিদেশে আয় করে সেদেশের মুদ্রা দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানত হিসেবে রাখা যাবে। শুধু তাই নয়, ওই আমানত থেকে মিলবে মোটা অংকের সুদও। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সেচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট-এফইপিডি থেকে জারি করা এক সার্কুলারে এমনটি জানানো হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই আলোচনায় রয়েছে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার বিষয়টি। হিসাবে দেখা যাচ্ছে রেকর্ড পরিমাণ কর্মী বিদেশে গেলেও সে তুলনায় রেমিট্যান্স আসছে না। শোনা যায়, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে অবৈধ হুন্ডিতে পাঠাতে উৎসাহ বাড়ছে প্রবাসীদের। আবার অনেক প্রবাসীর অভিযোগ, তাদের আমানত বিনিয়োগের কোনো ভালো পরিবেশ নেই দেশে। তাই অনেকে বিদেশেই তাদের অর্জিত অর্থ জমা রাখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ইতোপূর্বে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানেও রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগের কথা বলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদের জন্য এমন সুযোগ দেয়া হলো। আশা করা হচ্ছে, এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়মে রেমিট্যান্স খরা কাটবে।
নতুন নিয়মে প্রবাসী, দেশি-বিদেশি এমনকি বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানও ডলার কিংবা পাউন্ডসহ অন্য বিদেশি মুদ্রায় আমানত জমা করতে পারবেন দেশের ব্যাংকে। জমার বিপরীতে মেয়াদ অনুযায়ী সর্বোচ্চ প্রায় ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদও পাওয়া যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের ফরেন কারেন্সি (এফসি) একাউন্টের মাধ্যমে এসব ডিপোজিট সংগ্রহ করতে পারবে দেশের ব্যাংকগুলো। সেক্ষেত্রে মুদ্রাভিত্তিক রেফারেন্স রেটের সঙ্গে মার্কআপ যোগ করে সুদের হার নির্ধারণ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মো. সারওয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এই উদ্যোগের ফলে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে। গ্রাহকরা দেশের ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা রাখলে বিদেশের চেয়েও বেশি সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আমানত ও মুনাফা বিদেশেও পাঠাতে পারবেন। তবে এফসি হিসেবে আমানত করা অর্থ অবশ্যই বৈধভাবে বিদেশে অর্জিত অর্থ হতে হবে।
হিসাবে দেখা গেছে, কোনো গ্রাহক তিন বছর মেয়াদে ডিপোজিট করলে সুদ পাবেন প্রায় ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট কারেন্সিতে সুদ পেমেন্ট করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নতুন সুবিধা অনুযায়ী কোনো প্রবাসী চাইলে তার নিজের অথবা পরিবারের অন্য কারও নামে এফসি একাউন্ট খুলে ফরেন কারেন্সি জমা করতে পারবেন। মেয়াদ শেষে সুদসহ জমা থাকা ফরেন কারেন্সি দেশে ব্যবহার করা যাবে। চাইলে বিদেশেও নিয়ে যাওয়া যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৩৩ কোটি ডলার; এটা সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। অবশ্য পরের মাস অক্টোবরেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা দেখা গেছে। এই মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ১৯৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।
সব মিলে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর এই চার মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৬৮৮ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, যা তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-এ ‘এক্সিলেন্স ইন মাস্টারকার্ড প্রিপেইড বিজনেস (ডমেস্টিক) ২০২২-২০২৩’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। সম্প্রতি
রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আবুল ফায়েজ মুহাম্মদ কামালউদ্দীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নিকট থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেইভ, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মো. শরাফত উল্লাহ্ খান, ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজিম উদ্দীন তালুকদার ও মোহাম্মদ মানজুরুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ওসমান গণি ও আ ন ম তাওহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনায় ডলারের দাম পড়বে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। আর আমদানিতে পড়বে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) বুধবার অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী রোববার থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন দুটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগে ছিল ১১০ টাকা। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেয়া যাবে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা, আগে যা ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৫ টাকার কিছু বেশি পাবেন উপকারভোগীরা।
ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময় সময় বাফেদা ও এবিবি বিদেশি মুদ্রাটির বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকসংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময় সময় ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরেক দফা বাড়ল। টানা ষষ্ঠ দফা বৃদ্ধির তিন দিনের ব্যবধানে এবার সপ্তম দফায় ভরিতে বাড়ানো হয়েছে এক হাজার ৭৫০ টাকা। সে হিসাবে সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এনামুল হক ভুইয়া লিটনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের বাজারে আর কখনোই স্বর্ণের দাম এমন উচ্চতায় ওঠেনি। এ নিয়ে টানা সপ্তমবারের মতো দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো।
দেশে এর আগে ২৭ অক্টোবর এবং ৬, ১৯ ও ২৬ নভেম্বর টানা চার দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে সবশেষ ২৬ নভেম্বর ২২ ক্যারেটের স্বর্ণে ভরিতে বাড়ানো হয় এক হাজার ৭৪৯ টাকা। সে হিসাবে ওই পর্যায়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় এক লাখ আট হাজার ১২৫ টাকা।
এছাড়া ১৯ নভেম্বর ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দামে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এতে এই মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৬ হাজার ৩৭৬ টাকা। সেটিও ছিল দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে সর্বোচ্চ।
ব্যক্তি করদাতাদের ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত ৩০ নভেম্বর থেকে বাড়িয়ে রিটার্ন জমার শেষ সময় ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এছাড়া কোম্পানি করদাতাদের রিটার্ন জমার মেয়াদ ১৫ জানুয়ারি থেকে দেড় মাস বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে।
বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে এই ঘোষণা দেয় এনবিআর।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ লাখ ব্যক্তির আয়কর রিটার্ন জমার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এনবিআর। তবে এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক রিটার্নও জমা পড়েনি।
এনবিআরে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯ লাখের মতো নাগরিকের রিটার্ন জমা পড়েছে। সারা বছরের যেকোনো সময় রিটার্ন জমা দেয়া যায়। তবে নির্দিষ্ট সময়ের পর সংশ্লিষ্ট আয় বছরের রিটার্ন দাখিল করতে গেলে ৪ শতাংশ জরিমানা দিতে হয়।
এ বছর কোনো আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়নি। এর পরিবর্তে এনবিআর করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে সহায়তা করার জন্য দেশব্যাপী কর অঞ্চল অফিস চত্বরে বিশেষ সহায়তা পরিষেবার আয়োজন করেছে।
এক্ষেত্রে করদাতাদের যে বিনিয়োগ রেয়াত পাওয়ার কথা ছিল, সেটিও তারা পাবেন না। ফলে তাদের আরও বেশি কর দিতে হবে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকারের বিষয়ে সবশেষ যে নীতি প্রকাশ করেছে তা নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস উল্লেখ করেছে। বলা হয়েছে, বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ দূতাবাসের মন্ত্রী (বাণিজ্য) মো. সেলিম রেজা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘শ্রম অধিকার সংক্রান্ত যে স্মারকলিপি যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি প্রকাশ করেছে, তাতে বাংলাদেশকে টার্গেট করা হতে পারে।’
চিঠির অনুলিপি অনুযায়ী, শ্রম অধিকার বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতি আরেকটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মেমোরেন্ডামটি সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একটি বৈশ্বিক নীতি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবু বাংলাদেশ যে তাদের করা টার্গেটগুলোর একটি হতে পারে- এটি মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
‘মেমোরেন্ডামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শ্রম বিষয়ক ইস্যুগুলো বিশেষভাবে উদ্ধৃত করেছেন সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং অ্যাক্টিং সেক্রেটারি অফ লেবার।’
বিশ্বব্যাপী কর্মীদের ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ড উন্নয়ন ইস্যুতে ১৬ নভেম্বর একটি প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যারা ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক অধিকার রক্ষাকারী ও শ্রমিক সংগঠনকে আক্রমণ করে, হুমকি দেয়, ভয় দেখায়, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। যারা এ ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য বিষয়ক জরিমানা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরেন্ডামটি এমন এক সময় ঘোষণা করা হয় যখন ন্যূনতম মজুরি ইস্যুতে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছিল।
বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়, ‘মেমোরেন্ডাম অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ফরেইন মিশন সরাসরি শ্রম বিষয়ক ইস্যু নিয়ে কাজ করবে। এ নীতিটি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহী কূটনীতিক বা মিশনকে অনেক অভ্যন্তরীণ/বাহ্যিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে উৎসাহিত করতে পারে।
‘ধারণা করা হচ্ছে, এ নীতি কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রয়োগ করার সুযোগ আছে; যদি তারা মনে করে যে সেখানে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মেমোরেন্ডাম নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। মেমোরেন্ডামে শ্রম অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার পেছনে রাজনীতি রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন উপায়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা ব্যবহারের চেষ্টা করবে।’
মেমোরেন্ডামটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি সংকেত উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘শ্রম ইস্যুর অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র এ নীতির অধীনে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করতে পারে।
‘মেমোরেন্ডাম বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।’
আরও পড়ুন:সোনালী ব্যাংক পিএলসির সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের (এসএমটি) ২৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমটির চেয়ারম্যান এবং ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্চিয়া বিনতে আলী, মীর মোফাজ্জল হোসেন, সুভাষ চন্দ্র দাস, কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এবং পারসুমা আলমসহ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, স্থানীয় কার্যালয় ও মাঠ পর্যায়ের সকল জেনারেল ম্যানেজারসহ এসএমটি কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায়িক পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
মন্তব্য