যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে রেকর্ড লেনদেনের পর মঙ্গলবার তেজিভাব দেখা গেছে এশিয়ার পুঁজিবাজারগুলোতেও। বেড়েছে জ্বালানি তেল, ডিজিটাল কারেন্সি বিটকয়েন ও স্বর্ণের দামও।
বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারের সূচক তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের এমএসসিআইয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পুঁজিবাজারগুলোতে সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। জাপানে সূচক দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে সূচক দাঁড়িয়েছে ৭২২.৯৫ পয়েন্টে।
চীনে সূচক বেড়েছে ১.৬৭ শতাংশ। হংকংয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে সবশেষ লেনদেনে সূচক পৌঁছায় সর্বকারের সেরা অবস্থায়। ন্যাসড্যাক স্টক মার্কেটে লেনদেন বৃদ্ধি পায় ১ শতাংশ। আর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও ডো জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়ালে এভারেজে লেনদেন বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।
ডিজিটাল মুদ্রার অস্থির বাজারে বিটকয়েনের মূল্য ২০ শতাংশ বেড়েছে। প্রথমবারের মতো প্রতিটি বিটকয়েনের মূল্য ছাড়িয়েছে ৪৭ হাজার ডলার। এই দামের আশেপাশেই বেশ কিছু দিন ধরে মুদ্রাটি ঘুরাফেরা করছিল।
ডিজিটাল এই মুদ্রার দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে টেসলার বিনিয়োগ। গত কয়েকদিনের মধ্যে ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানটি। তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে তাদের পরিবেশবান্ধব গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে বিটকয়েনে মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে।
জ্বালানি তেলের দামও বাড়ছে লাফিয়ে। ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছে দাম। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট জানিয়েছে, প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট তেলের দাম শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ তথা ৪৫ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৩৯ ডলারে। আর প্রতি ব্যারেল ক্রুড তেলের দাম ৪৩ সেন্ট বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫৮ দশমিক ৩৯ ডলারে।
সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসে সূচকে রেকর্ড ধসের পর মঙ্গলবার উত্থানে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের লেনদেন। বাড়তে শুরু করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর।
লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টায় সূচক বেড়েছে প্রায় ৮৫ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ২০৭ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৬টির, কমেছে ২২টির; পাল্টায়নি ৭১টির।
বেড়েছে স্বর্ণের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৮৩৭ ডলারে। স্বর্ণের বিপরীতে ডলারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ।
তবে ইউরোপের পুঁজিবাজারে কিছুটা ভাটার টান। ইউরোস স্টক্সের সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ। লন্ডনের এফটিএসই সূচক কমেছে দশমিক ১২ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক আছে গতানুগতিক।
আরও পড়ুন:বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও জেলা তাঁতীদলের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ ও বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। দৈনিক বাংলার জেলা ও উপজেরা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মাগুরায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাগুরা সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার মাগুরা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মাগুরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ মনোয়ার হোসেন খান। এ সময় আরও ছিলেন মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রেজভী জামান, মাগুরা জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল ও ছাত্রদলের নেত-ওকর্মীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ মনোয়ার হোসেন খান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গাছ লাগানো পছন্দ করতেন। তার স্মরণে আমরা যদি কিছু গাছ লাগায় ও কিছু গাছ মানুষকে বিতরণ করি এই গাছের ফল হলে, গাছের যত্ন নিলে ছাদগায় জারিয়া হবে। আমাদের নেতার রুহের প্রতি ছোয়াবটুকু পৌঁছে যাবে। সেই জন্য আমাদের উদ্দেশ্য লোক দেখানো নয় সত্যিকার অর্থে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের কল্যাণে গাছ লাগানো।
এছাড়া গত সোমবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহরে র্যালি ও সমাবেশ শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা তাঁতীদলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শহরের রেলওয়ে ঈদগাহ মাঠে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃক্ষরোপণ করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রেজাউল করিম বাদশা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক এমপি কাশেম ইসরাইল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শহর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সাইফুল ইসলাম হিরু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আল-হেলাল, জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মো. শাহনেওয়াজ হোসেন প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা তাঁতীদলের সভাপতি সানাউল হক সানা, সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ ইসলাম মিলন, সহসভাপতি মাসুদ রানা, জেলা তাঁতীদলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান আজাদ, উপদেষ্টা আলমগীর কবির সুমনসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
নওগাঁ প্রতিনিধি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) গৌরবময় ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নওগাঁ জেলা বিএনপির উদ্যোগে একটি ব্যতিক্রমী ও পরিবেশবান্ধব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁ শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, যেখানে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতামূলক বার্তা তুলে ধরা হয়। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক সনি, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নূর ই আলম মিঠু, বিএনপি নেতা খায়রুল আলম গোল্ডেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মোস্তাক আহমেদ রাজা, পৌর বিএনপির সভাপতি ডা. মিজানুর রহমান, জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও মহিলা দলের নেতা-কর্মীসহ শতাধিক নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘বিএনপি শুধু রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি জনআন্দোলনের নাম, যা দেশের সার্বিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিবেশ সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমান জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ অত্যন্ত জরুরি, আর বিএনপি সেই দায়িত্ব থেকেই জনসচেতনতা বাড়াতে এই কর্মসূচি পালন করছে। বক্তারা আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু একটি রাজনৈতিক দর্শন নয়, তিনি ছিলেন প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের পক্ষে। তার আদর্শ অনুসরণ করে বিএনপি সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
নেতারা দেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকট থেকে উত্তরণে বিএনপির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, ‘বিএনপি সবসময়ই জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক দায়িত্ববোধের পাশাপাশি সামাজিক ও পরিবেশগত দায়িত্বও পালন করা রাজনৈতিক দলের অন্যতম কর্তব্য।
এ বি চৌধুরী নাদিম, নেত্রকোনা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, জিয়া পরিষদ নেত্রকোনা অঞ্চলের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ উপস্থিত সোনালী ব্যাংক পিএলসি জিয়া পরিষদের শতাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদ নেত্রকোনা অঞ্চলের সম্মানিত সভাপতি জনাব মো. জাহের উদ্দিন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মো. রুবেল মিয়া। এছাড়া ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন শাখা থেকে আগত উপস্থিত নেতারা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
পরিশেষে মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্টাবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
নাসির উদ্দিন শাহ মিলন, নীলফামারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ড. অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নীলফামারী জেলা শাখার উদ্যোগে এবং জেলা বিএনপির সহযোগিতায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ব্লাড গ্রুপিং ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি দিনব্যাপী হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন নীলফামারী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জিম্মা হোসেন। এ সময় জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. মো. সোহেলুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য আনিসুর রহমান কোকো, শেফাউল জাহাঙ্গির সেপু, হারুন অর রশিদ খোকন, আকবর আলি, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুল আলম চৌধুরী শুভ, কৃষক দলের আহ্বায়ক মগনী মাসুদুল আলম দুলাল, সদস্য সচিব ওয়ালিউর রহমান হেলাল, জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল নোমান কল্লোল, সাবেক ছাত্রনেতা সানাউল হক তনি, ডা. রেদোয়ান জুবায়ের রিয়াদ, সদস্য সচিব ড্যাব নীলফামারী জেলা এবং জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে ৩০০ জনেরও বেশি রোগীকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ব্লাড গ্রুপিং কার্যক্রম ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতেও স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মেহেরপুর প্রতিনিধি মেহেরপুর জেলা বিএনপির কমিটিকে ছোট দল আখ্যা দিয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন বলেছেন, মেহেরপুর জেলায় যে কমিটি হয়েছে সেটি বিএনপির ছোট দল। কমিটি ছোট হোক তারপরেও ওই বিএনপিকেও আমাদের রক্ষা করতে হবে। এই কমিটিতে যারা আছেন তারাও আমাদের ভাই। মঙ্গলবার বিকালে মেহেরপুর শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মেহেরপুরের নবাগত এসপি ও ডিসিকে উদ্দেশ্য করে মাসুদ অরুন আরও বলেন, নতুন কমিটির ফোনে কাজ করার আগে জনগণের ভাষা বোঝবেন। জনগণের ভাষা বোঝে যদি কাজ না করেন, আগামীতে পার্কে সমাবেশ হবে না, সমাবেশ হবে ডিসি অফিসের সামনে, হবে এসপি অফিসের সামনে। আগামীতে কাউকে জনগণের স্বার্থের বাইরে এক পা ফেলতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ কেউ চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করছেন। এখন তাদের নাম প্রকাশ করছি না। তবে, আগামীতে চাঁদাবাজি করতেও দেওয়া হবে না।
মেহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মারুফ আহমেদ বিজন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কৃষক দলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাহবুব, যুবদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, শ্রমিক দলের সভাপতি আহসান হাবীব সোনা, বিএনপির মহিলা দলের সভাপতি সৈয়দা নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাভেদ সেনজির প্রমুখ। সমাবেশে মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে এসে জড়ো হয়।
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি জানান কুমিল্লাতে নতুন উদ্যোগে মাঠে নেমেছে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, কুমিল্লায় ব্যাপক শোডাউন, বর্ণাঢ্য র্যালি ও আনন্দঘন পরিবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দল বিএনপি র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও কুমিল্লা দ. জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল হক সাক্কু ও তার অনুসারী বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড় এলাকায় মনিরুল হক সাক্কুর বাসভবনের সামনে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ড ৬টি ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার নারীপুরুষ মিছিল করে সমবেত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এরপর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রঙিন বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মনিরুল হক সাক্কু।এ সময় তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেযারপারসন তারেক রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপস্থিত হাজার হাজার নেতা-কর্মীর সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন বিএনপি হলো সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের রাজনৈতিক দল।
শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের দুঃসময়ে দেশের দ্বায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন। শহীদ জিয়া দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে খাল খনন কর্মসূচি চালু করেছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কখনো কোনো অন্যায় বা প্রলোভনের কাছে আপস করেননি।
তাই তিনি আপসহীন নেত্রী। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতির লক্ষ্যে আজ বুধবার থেকে সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডগুলোর গণসংযোগ করে তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করবেন এবং সমাবেশ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে প্রায় ২০ হজার নারী পুরুষের একটি আনন্দ র্যালী বের করে নগরীর ছাতিপট্টি, রাজগঞ্জ, মনোহরপুর, কান্দিরপাড়, জিলা স্কুল রোড, সার্কিট হাউসরোড মোগলটুলি, রাজগঞ্জ বজ্রপুর, নানুয়ার দিঘীরপাড় হয়ে পুনরায় মেয়র সাক্কুর বাড়ির সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়।
এদিকে কুমিল্লা নগরীর ২নং ওয়ার্ডের বিএনপির নব কার্যালয়ে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ১ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় ২নং ওয়ার্ডের ছোটরা বিএনপির নব কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে ছোটরা, বাটপাড়া, বৃঞ্চপুর, আদালতপাড়া, কোলনি এলাকা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে হোন্ডা মিছিলটি শেষ হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়, বিশাল কেক কেটে অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ২নং ওয়ার্ড সভাপতি মিসেস নাহিদা আক্তার মুন্নীর সভাপতিত্বে খলিলুর রহমান বিপ্লবের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন মহানগর বিএনপির সভাপতি উৎবাতুল বারি আবু,
বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা দ. জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান ওয়াসিম ভিপি, মেয়র প্রার্থী নিজামউদ্দীন কায়ছার, সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন,
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারী পুরুষসহ প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী। প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন বিল্লাল ভাই একজন ভালো মনের মানুষ, স্বৈরাচার হাসিনার আমলে বাহারের ইন্দনে মিথ্যা মামলায় বারবার জেল খেঠেছেন, আমি, ওয়াসিম ভাইও জেলে ছিলাম, আমরা প্রতিপক্ষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করব না, তাদের বিচার আল্লাহ করবে। পরে কেক কেটে সবার মধ্যে বিতরণ করা হয়।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। গত সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আয়োজনে তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
মিছিলে জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলাদল, শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়।
পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ দলটির নেতারা এ সময় বক্তব্য দেন। এ সময় বক্তরা আগামী নির্বাচনের জন্য দলের সকল স্থরের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও করেন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের জাল নাগরিক সনদপত্র তৈরির অপরাধে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেউথা এলাকায় অবস্থিত পাসর্পোট অফিসের সামনে থেকে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন তাদেরকে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের ঘোস্তা জাহাঙ্গীরনগর এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে সোহানুর রহমান (২২) এবং পৌরসভার বেউথা এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে আরিফ হোসেন (৩৬) ও পৌরসভার পশ্চিম উড়িয়াজানি এলাকার মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে মনির হোসেন (৪৫)। এদের মধ্যে আরিফ হোসেন ও মনির হোসেন (দালাল)।
জানা যায়, আসল কাগজপত্রে ঝামেলা থাকায় ১৬ হাজার টাকার শর্তে পাসর্পোট তৈরি করতে পৌরসভার বেউথা এলাকার আরিফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের ঘোস্তা জাহাঙ্গীরনগর এলাকার সোহানুর রহমান। এরপর আরিফ হোসেনের পরামর্শে জাল নাগরিক সনদপত্র তৈরি করে মনির হোসেন। কিন্তু সহকারী কমিশনার প্রশিক্ষণে থাকার পরও ভুলক্রমে জাল নাগরিক সনদপত্রে সহকারী কমিশনার ভূমির সই ও নাম-পদবী ব্যবহার করে আরিফ হোসেন ও মনির হোসেন। এরপর নতুন করে আরেকটি জাল নাগরিক সনদপত্র তৈরি করে এবং সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিনের সই ও নাম-পদবী ব্যবহার। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসের নজরে আসলে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুটাইল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিনকে অবগত করা হয়। পরে ইউএনও শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন।
ইউএনও শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জাল নগরিক সনদপত্র তৈরি করে ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সই ও নাম পদবী কথার স্বীকার করেছে। পরে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জাল নগরিক সনদপত্র তৈরি করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সুবিধা নিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
মনিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এস.এম.আমান উল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলার পর আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রনীত গবেষণা নীতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে উপাচার্যের কার্যালয়ে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রণীত গবেষণা নীতি অবিলম্বে বাতিল করা, ঢাবি প্রণীত নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় করে ইবির নতুন গবেষণা নীতি প্রণয়ন করা, বিদ্যমান ভর্তি পরীক্ষা নীতি বাতিল করে নতুন নীতি প্রনয়ন এবং পুনরায় এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ভর্তির সুযোগ দেওয়া।
সে সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সভাপতি নূর আলম ও সাধারণ সম্পাদক আহমাদ গালিব, সহসভাপতি মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহমিদ হাসানসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গালিব বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এম. ফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় সিজিপিএ রাখা হয় ৩.৫০ পয়েন্ট। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্ত আরোপ থাকে ৩.০০ পয়েন্ট এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ২.৫০ ও দেখেছি। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পতিত স্বৈরাচার প্রশাসনের প্রণীত নীতিমালার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশকে গবেষণার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার এক সুস্পষ্ট নীল নকশা। এই নীল নকশা প্রত্যাখ্যান করে নতুন নীতি প্রনয়ন করতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমরা রিসার্চটাকে কোনভাবে নষ্ট করতে চাইনা। যেহেতু এটা এমফিল পিএইচডি সেহেতু কিভাবে মানসম্মত রিসার্চ ডিগ্রি দেওয়া যায় সেই পথ তৈরির চেষ্টা করতেছি।
থাকার কষ্ট, খাবারের কষ্ট, বর্ষা কিংবা বৃষ্টি এলেই ভাঙা চালে বৃষ্টির পানি। ৬০ বছরের বৃদ্ধা ফজিলা বেগমের জীবনের প্রতিদিনই যেন একেকটি সংগ্রাম। খাবার জোটে অন্যের দান-খয়রাতে, আর বৃষ্টি এলে ভাঙা ঘরে শোয়ার জায়গাটুকুও থাকে না।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মৃত ওমর ফারুকের স্ত্রী ফজিলা বেগম এক যুগ আগে স্বামীহারা হন। দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইফতিখার ও মেঝো ছেলে সোহেল মারা গেছেন। একমাত্র জীবিত ছেলে জুয়েলও প্রতিবন্ধী। নাতনি জান্নাতকে (১০) নিয়ে জরাজীর্ণ একটি ঘরেই চলছে ফজিলার জীবন। ফজিলা বেগম জানান, গত ২২ বছর ধরে স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র ঘরে বসবাস করছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরের টিনের চাল মরিচা ধরে ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি ঠেকাতে ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে পলিথিন ও পুরোনো কম্বল। ভাঙাচোরা দরজা-জানালা ও বেড়ায় পানি ঢুকে ঘরটিকে করে তুলেছে আরও অস্বাস্থ্যকর। একই অবস্থা শৌচাগারেরও।
ফজিলা বেগম বলেন, ‘একটা থাকার মতো ঘর পেলে জীবনের শেষ বয়সে শান্তিতে মরতে পারতাম। আশপাশের মানুষ খাবার দিলে খাই, না দিলে না খেয়েই থাকি। প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা বা নাতনিকে ভালো খাবার খাওয়ানো কোনোদিন সম্ভব হয়নি।’
তিনি জানান, মেঝো ছেলে মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা জান্নাতকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু পড়াশোনার খরচ বা খাবারের ব্যবস্থা করতে না পারায় দিন কাটছে কষ্টে। এর মধ্যেই গত ৩১ আগস্ট রাতে তার ভাঙা ঘর থেকে চাল ও একটি মোবাইল চুরি হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন সিকদার বলেন, তার খুব অসহায় অবস্থায় দিন যাচ্ছে। ভাঙা ঘরে বৃষ্টি-বাদল ও শীতকালে ভোগান্তি বাড়ে। তার জন্য দ্রুত একটি ঘরের ব্যবস্থা করা জরুরি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, ‘বৃদ্ধা ফজিলার ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই তার বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি ঘর নির্মাণে অর্থ সহায়তার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হবে।
শিক্ষা হোক আলোর পথ, আগামীর বাংলাদেশ গড়ুক যথোপযুক্ত- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে ১ বছরের পড়ালেখার খরচ বহনে করার জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেছে জসিম উদ্দীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। গত সোমবার নোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ বৃত্তি অনুষ্ঠান হয়। এতে রাউজানের প্রায় ১৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ রফিক। ফরিদুল ইসলাম আনসারী ও সাংবাদিক এস এম ইউসুফ উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ। আর ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়ে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা শিক্ষক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মাস্টার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার অং ছিং মারমা, রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া, একাডেমিক সুপারভাইজার সজল চন্দ্র চন্দ, ফাউন্ডেশনটির পরিচালক মোখতার আহমদ, আবু তাহের, ইয়াসিনুল হক, ফারুকে আজম, সরোয়ার হোসাইন, আহমদুল হক, খসরুল আমিন চৌধুরী, জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া জসিম উদ্দিন স্মৃতি বৃত্তি প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের থেকে এইচএসএসি এবং আলিম পরীক্ষায় সারা রাউজানে সর্বোচ্চ বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষার সহায়তার জন্য ৩ লাখ টাকা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ এবং এসএসসিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ২ লাখ টাকা,দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পওয়া শিক্ষার্থীকে দেড় লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ তৃতীয় নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে ১ লাখ টাকার এক কালীন বৃত্তি প্রদান করা হবে।
নড়াইল সদর উপজেলার সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেই খেলার মাঠ। একটি নালার অভাবে (ড্রেন) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছরই খেলার মাঠটি বর্ষার পানিতে তলিয়ে থাকে। যে কারণে বিদ্যালয়সহ এলাকার কোমলমতি শিশুরা খেলাধূলা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকার মানুষের দাবি মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে শিশুদের খেলাধূলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ। দ্যিালয় সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে ইটের সোলিংয়ের ভাঙ্গাচোরা রাস্তা। পশ্চিম পাশ দিয়ে পিচের রাস্তা। রাস্তা থেকে মাঠটি প্রায় ৬ ফুট নিচে যা পানিতে তলিয়ে আছে। বন্ জঙ্গলে ভরে আছে মাঠটি। যে কারণে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা এই মাঠে খেলাধূলা করার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। বিকেল বেলাতেও এলাকার ছেলে মেয়েরা খেলতে পারছে না।
খেলার সুযোগ না পেয়ে কোমলমতি শিশুরা ফেসবুকে বুদ হয়ে পড়ে থাকছে। মাঠে হাটু সমান পানি থাকার কারণে এলাকার মানুষ সেখানে কৈ ও তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ করেছে। রাস্তা নির্মাণের বেশ কয়েটি পিলার মাঠের পানির মধ্যে দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বিকেল বেলায় বেশ কিছু শিশু বরশি নিয়ে দুজনে কাপড় অথবা গামছা লম্বালম্বি ধরে সেখানে মাছ ধরতে দেখা যাচ্ছে। বর্ষার কারণে গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে আছে। শিশুসহ বয়ষ্ক মানুষদের ঠান্ডা-জ্বরে ভুগতে হচ্ছে।
সীতারামপুর বিদ্যালয় সংলগ্ন দোকানী তুষার রায় জানান,ছেলেমেয়েরা জলাশয়ের পাড়ে খেলতে গিয়ে অনেক সময় পানিতে পড়ে যায়। বাধ্য হয়ে ওই শিশুদের পানি থেকে তুলে আনতে হয়। তিনি বলেন,রাস্তা থেকে মাঠটি অনেক নিচে। চারপাশে রাস্তা থাকার কারণে বর্ষার পানি নিষ্কাশণ না হওয়ায় মাঠটি তলিয়ে থাকে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা খেলাধূলা করতে পারছে না।
সীতারামপুর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিপ্লব পোদ্দার বলেন,যেহেতু সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ এটি। মাঠের পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে সরকারিভাবে এগিয়ে আসা উচিৎ। তিনি বলেন,বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে থাকে। এই পানি বের হ্ওয়ার কোন নর্দমা না থাকায় এই অবস্থাতেই সারা বছর পড়ে থাকে। ফলে মাঠের পাশের বাসিন্দাদের জ্বর-সর্দ্দি সব সময় লেগেই থাকে। মাঠের পানি বের করার সুব্যবস্থা করা হলে বিদ্যালয়ের পরিবেশটা ভালোভাবে ফিরে আসবে।
সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাম্মাৎ সবেদা খাতুন বলেন, মাঠটি সরকারি খাস জমির ওপর। বিদ্যালয়ের শিশুরা ছাড়াও সীতারামপুরসহ আশপাশের ছেলেমেয়েরা এই মাঠে খেলাধূলা করে থাকে। তিনি বলেন,পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস একবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দিয়ে মাঠের দক্ষিণ কোনার ঢালু জায়গায় রিংস্লাপ বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পানি বের হবার মত কোন সুযোগ না থাকায় প্রতিবেশিদের বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় এলাকার মানুষ সেই রিংস্লাপের দুই পাশে মাঠি দিয়ে ভরে দেন। ফলে পানি বের হতে না পারায় আজ মাঠের এই অবস্থা। তিনি বলেন,ক্লাস শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের কোন জায়গা না থাকায় শ্রেনীকক্ষেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করানো হয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন,পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মাঠের অবস্থা খুবই করুন। সব সময় পানি জমে থাকে। বনজঙ্গলে ভরে গেছে। তিনি দাবি করেন,মাঠ সংস্কারসহ মাটি ভরাটের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অথবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন পেলে পানি নিষ্কাশনসহ মাঠে বালু দেবার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া যেতে পারে।
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত শতাধিক। এদের মধ্যে ৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পুরো ইপিজেড এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ইপিজেডের এভারগ্রীণ কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত হাবিব উত্তরা ইপিজেডের ইকু প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক ও কাজিরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে বলে জানান শ্রমিকরা।
জানা যায়, এভারগ্রিণ কোম্পানির শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন। মঙ্গলবার এভারগ্রিণ কোম্পানি ঘোষণা করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তারই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ইপিজেডের মূল গেটে অবস্থান নেয় শ্রমিকরা। ইপিজেডের অন্য কোম্পানির শ্রমিকদের কাজে যোগদান বাধা প্রদান করতে থাকে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হাবিব নামে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। পড়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইপিজেডের শ্রমিক মমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা অন্য কারখানার কোনো শ্রমিককেই প্রবেশে বাধা দেইনি। বরং তারাই আমাদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের সঙ্গে অবস্থান নেয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রধান গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অমানবিকভাবে এক নারী শ্রমিককে মারধর করতেছিল। তখন আমরা সব শ্রমিকরা এগিয়ে গেলে তারা আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে তিনি মারা যান।’
আরেক শ্রমিক মো. রায়হান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করছি। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালাল কেন? আমরা তো কোনো রাজনৈতিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামিনি। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছি।’
লিপি আক্তার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা ডিউটি করতে গেছি। যায়া দেখি গেট বন্ধ। হঠাৎ করে সেনাবাহিনী-পুলিশ আমাদের ওপর হামলা ও গুলি চালায়। তারা কার অনুমতি নিয়ে আমাদের ওপর গুলি চালাল। আমাদের এক ভাই নিহত হইল। এর দায়ভার কে নেবে। সরকারকে জবাব দিতে হবে।’
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে মোট ৬ জনকে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে হাবিব নামে একজন ব্যক্তি ছিল তাকে আমরা মৃত অবস্থায় পাই। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
৫৬-বিজিবি নীলফামারীর অধিনায়ক লে. কর্নেল এস.এম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো ধরনের মব সৃষ্টির সুযোগ নেই। প্রশাসনিক পর্যায়ে কাজ চলছে। বর্তমানে ইপিজেডের সকল কোম্পানি বন্ধ রয়েছে।
এই রিপোর্টলেখা পর্যন্ত উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ, এভারগ্রীণ কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক চলমান থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য