চার বছর ধরেই ডুবছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিত খাতের জেমিনি সি ফুড। এর মধ্যে গত দুই বছরে বিপুল পরিমাণ লোকসানে ধুঁকছে কোম্পানিটি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে কোম্পানিটি ১০ টাকার শেয়ারে লোকসান দিয়েছে নয় টাকা ৮৩ পয়সা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে যে হিসাব প্রতিষ্ঠানটি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে, তাতে এবার লোকসান আরও বাড়তে পারে। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসেই লোকসান হয়েছে ৭ টাকা ৯২ পয়সা।
বিপুল পরিমাণ লোকসানের কারণে গত বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ২১ পয়সা মাত্র। ৪৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩১২টি শেয়ারে বিভক্ত কোম্পানির রিজার্ভেও কোনো অর্থ নেই, উল্টো দায় বা ঋণ আছে চার কোটি ৬০ লাখ টাকা।
অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সিদ্ধান্তের কারণে এই ডুবন্ত কোম্পানির শেয়ার তার অভিহিত মূল্যের ১৪ গুণেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।
ফ্লোর প্রাইস নামে গত বছরের ২২ মার্চ বিএসইসি যে তালিকা দিয়েছে, সে তালিকা অনুযায়ী জেমিনি সি ফুডের ১০ টাকার শেয়ার ১৪৪ টাকা ৩০ পয়সার নিচে বিক্রি হবে না।
বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শু চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৯০ টাকা লোকসান দিয়েছে। অথচ বিএসইসির নীতির কারণে বিপুল লোকসানি এই কোম্পানির শেয়ারও ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়।
একইভাবে বছরের ছয় মাসে ৮ টাকা ৭০ পয়সা লোকসান দেওয়া রেনউইক যগেশ্বরের শেয়ারের দাম ৯০০ টাকার নিচে নামতে পারবে না।
মুন্নু অ্যাগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারিজ লিমিডেট লোকসানি কোম্পানি না হলেও মুনাফার পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। মাঝে এক বছর বাদ দিলে লভ্যাংশ ঘোষণার ইতিহাসও ভালো নয়। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য মাত্র ১৪ টাকা ২৮। কিন্তু ১০ টাকার শেয়ার ৭৯৪ টাকার কমে বিক্রি করা যাবে না।
গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে এই ফ্লোর প্রাইস ঘোষণা করা হয়। এতে সাময়িকভাবে পতন থামলেও এখন এই ফ্লোর প্রাইস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো কোম্পানির মৌল ভিত্তি বিবেচনায় না নিয়ে বাজার মূল্যকেই বিবেচনা করা হয়। গত ২২ মার্চের আগের পাঁচ দিনের গড় মূল্য ফ্লোর প্রাইস হিসেবে ধরা হয়।
প্রায়ই পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ ওঠে। কম অভিহিত মূল্যের শেয়ার নিয়েই এই অভিযোগ বেশি এবং মাত্রাতিরিক্ত দাম ওঠার পর এক অর্থে কারসাজিকারকদের সুবিধা হয়েছে যে, দাম একটি পর্যায়ের নিচে আর নামবে না।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি ব্যবসা ভালো করলে যেমন সেই শেয়ারে আগ্রহ বাড়ায় দরও বাড়ে, তেমনি কোনো কোম্পানি খারাপ করলে সেগুলোর দর কমে। কিন্তু বিএসইসির এই সিদ্ধান্তে সেটা হচ্ছে না।
আবার কোনো কোম্পানির দাম বেশি কমে গেলে বিনিয়োগকারীরা একই শেয়ার আরও বেশি কিনে দাম সমন্বয় করেন। পরে কোম্পানি আবার মুনাফায় ফিরলে দাম কিছুটা বাড়লে সমন্বয়করা শেয়ার বিক্রি করে লোকসান থেকে বের হওয়ার সুযোগ পায়।
কিন্তু ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারমূল্য কমতে না পারায় উচ্চমূল্যে কেনা শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করা যাচ্ছে না।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এক হাজার ৩০০ টাকায় যারা বাটার একটি শেয়ার কিনেছেন, সেই কোম্পানির শেয়ার দর ৪০০ টাকায় নামলে এই দরে কেউ যদি আরও দুটি শেয়ার কিনেন, তাহলে গড় দাম দাঁড়ায় ৭০০ টাকা।
কিন্তু এখন ৭০৯ টাকায় কিনতে বাধ্য করায় এই দামে কখনো সমন্বয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি উচ্চমূল্যে শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে।
ফ্লোর প্রাইসে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৪টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে বেশির ভাগই লোকসানি, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই। ফলে লেনদেন খুবই কম।
বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, হয় ফ্লোর প্রােইসের বিষয়টি আবার পুনর্বিবেচনা করা দরকার। নয়তো কোনো কোম্পানির বাজারদর ছাড়াও মৌলভিত্তি বিবেচনায় আনা দরকার। বা কোনো কোম্পানি খারাপ করতে থাকলে ফ্লোর প্রাইসও কমিয়ে দেওয়া উচিত।
এসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস যে বিনিয়োগকারীরা যৌক্তিক মনে করছেন না, তার প্রমাণ লেনদেনেই। সর্বনিম্ন দামেও শেয়ার কেনার অর্ডার আসে না বললেই চলে।
রোববার জিমিনি সিফুডের শেয়ারের মাত্র পাঁচটি লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের সংখ্যা ৮৩৫টি। এদিন মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ২২টি। বহুজাতিক কোম্পানি বাটার শেয়ারের লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৭৯৮টি।
গত কয়েক কার্যদিবসে রেনউইক যগেশ্বরের কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমানও মনে করেন ফ্লোর প্রাইসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। যেসব কোম্পানি দীর্ঘ সময় ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে, সেগুলোকে কয়েক দিনের জন্য ফ্রি করে দেওয়া উচিত। পরে না হয় নতুন ফ্লোর প্রাইস ঘোষণা করা যাবে।’
রকিবুর রহমান বলেন, তাহলে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা কোম্পানিগুলো আবার লেনদেন হবে। যারা কিনতে চায় তারা কিনবে, যারা বিক্রি করতে চাচ্ছে, তারাও বিক্রি করতে পারবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা যখন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য হয়। আর ফ্লোর প্রাইস যেহেতু পুঁজিবাজারের সব কোম্পানির জন্য, সেহেতু এখানে ভালো কোম্পানি, খারাপ কোম্পানি বিবেচনা করার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা বিষয় নজরে রেখেছি যেকোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর যখন মূল্য সমন্বয় হয়, তখন ফ্লোর প্রাইস বাধা হচ্ছে কি না। এখনো তা হয়নি। ফ্লোর প্রাইসের সংশোধনের বিষয়ে কমিশনে কোনো আলোচনা হয়নি, সেজন্য এখন যে অবস্থায় আছে এটি সেভাবেই থাকছে।’
ফ্লোর প্রাইসের কারণে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণার পরেও মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ারদরে সমন্বয় হয়নি। স্বাভাবিক নিয়মে রেকর্ড ডেটের পর সেই কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে ঘোষিত লভ্যাংশের সঙ্গে সমন্বয় হয়।
কিন্তু গত ২২ মার্চ মুন্নুর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা নির্ধারণের পর পর কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। স্বাভাবিক নিয়মে কোম্পানিটির সমন্বয় করা দাম হওয়ার কথা ছিল ৭২০ টাকা। কিন্তু ফ্লোর প্রাইস এখনো আগের দরেই আছে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না-ব্যানার ও স্লোগানে এক উম্মুক্ত আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর পৌর কমিনিউটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ ৪ উপজেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে নবগঠিত ফরিদপুর জেলার সাথে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উম্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা থেকে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র একটি আলাদা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল। তখন থেকে মাদারীপুর একটি সম্পূর্ণ আলাদা জেলা। এ জেলার মানুষের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিসিয়াল কাজ-কর্ম, সংস্কৃতি সবই ঢাকার সাথে হয়ে থাকে। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে এ জেলার মানুষের তেমন কোনো চলাচল নেই। পদ্মা ব্রিজ মাদারীপুর অংশ থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ৩৭ কি. মি. এবং মাদারীপুরের শেষাংশ টেকেরহাট বন্দর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৫০ কি.মি.। আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা মাদারীপুরবাসী ফরিদপুর বিভাগে যাব না, আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকব, প্রয়োজনে এ জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত। তারা আরও বলেন, এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, প্রয়োজনে রক্তও যদি দিতে হয় তবে তাই দেব- ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতায় রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাধ্য হয়ে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি আব্দুল্লাহপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দোলোয়ার হোসেন, শুধু দুটি পরিবারের জন্য আমরা প্রায় একশটি পরিবারের ছয় শতাধিক সদস্য অবর্ণীয় দুর্ভোগে রয়েছি। বারবার তাদের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলেও তারা আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন জনগণের রাস্তার জায়গা বন্ধ করে ওই জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র দুটি পরিবারের জন্য একশ পরিবারের মানুষ জিম্মি হয়ে রয়েছে। দুটি পরিবারে আপত্তিতে ১০০০ ফুট রাস্তার ৮২ ফুট বাদে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন। আমাদের অবস্থা এ রকম একজন মানুষ মারা গেলে তার খাটিয়া বের করা যায় না। একজন লোক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
প্রসঙ্গত ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউশিয়া বহুমুখী উন্নয়ন সমিতি মার্কেটের পিছনে যারা বসতি তৈরি করেছেন তারা মূলত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষ। শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে বসতি তৈরি করলেও বর্তমানে এটি একটি গ্রাম যার নাম আব্দুল্লাহপুর। সম্প্রতি ওই দুই পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটির এই অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকলে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শহর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম উদ্দীন (৫৬) মারা গেছেন।
তার অকাল মৃত্যুতে জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপি শোক প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দিন। ভিপি জসীম উদ্দীন তার দেবর।
তিনি জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ব্রেনস্ট্রোক করলে দ্রুত তাকে নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
মৃত্যুকালে ভিপি জসীম উদ্দীন এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন,বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, সাবেক মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল আলম চপল, বিএনপির কুমিল্লা দঃজেলার নব কমিটির সদস্য মোজাহিদ চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
৫০টি প্রতীক থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিজেদের মার্কা বাছাই করতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে ইসির দেওয়া ৫০টি প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনসিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, যা প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিবেচিত হয়েছে। আবেদনপত্রে প্রতীক হিসেবে পছন্দের ক্রমানুযায়ী শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন উল্লেখ করা হয়; যা পরে পরিবর্তন (শাপলা, লাল শাপলা বা সাদা শাপলা) করা হয়। উল্লেখ্য, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী প্রার্থিত প্রতীক শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধান উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই আদেশ বা বিধিমালার অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনও দল মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দ করা যেকোনও একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং এইভাবে বরাদ্দ করা প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে, যদি না তারা পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকে অন্য কোনও প্রতীক লাভের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১)-এ উল্লিখিত প্রতীকের তালিকা থেকে বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক পছন্দ করে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
যে ৫০টি প্রতীক থেকে এনসিপিকে তাদের মার্কা পছন্দ করতে বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে– আলমারি, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রথমে শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোনের যেকোনও একটি প্রতীক তাদের দেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তার কিছু দিন পর সে আবেদনে সংশোধন এনে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা দেওয়ার আবেদন করে।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইসি সচিব বলেছেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না। আমাদের ১১৫টার যে শিডিউল করা হয়েছে সেখানে শাপলা প্রতীক নেই। নিয়মটা হলো, সংরক্ষিত প্রতীক যেটা আছে সেটার ভেতর থেকে একটা নিতে হবে। সে প্রতীকে যদি শাপলা না থাকে তাহলে দেওয়ার সুযোগটা কোথায়?
গত ২২ সেপ্টেম্বর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, আমরা আজও শাপলা, সাদা শাপলা, লাল শাপলা চেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না। এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এই তিনটি প্রতীকের মাধ্যমেই নিবন্ধন হতে হবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, সারাদেশে ৩৩ হাজারের উপরে পূজামণ্ডপ রয়েছে। আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ না। আপনারা যারা সুধী সমাজের ও রাজনৈতিক নেতারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামোটি ভালোভাবেই পূজা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ ও সকল ধর্মের বাংলাদেশে কোনো নাশকতাকারীকে আমরা কোনোভাবে ছাড় দেব না।
গত বুধবার বিকেলে নারাণগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার পূজামণ্ডপের মধ্যে ৪৯টি মণ্ডপে কিছু নাশকতাকারী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। তবে আমরা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত ১৯ জনের বেশি নাশকতাকারীকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব এখন পর্যন্ত যেভাবে চলেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো যদি এই ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে না থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যেদিন আমরা পালন করতে পারবো, সেদিনই প্রকৃত আনন্দ হবে। এখন আমাদের এভাবেই করতে হচ্ছে। আশা করি, সেদিন আসবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনসহ প্রমুখ।
ফেনী ডায়াবেটিক সমিতির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমিতির সম্মেলন কক্ষে কেক কেটে আলোচনা সভার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। গত বুধবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছের সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই বর্ণীল আয়োজনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সহসভাপতি ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম, এডহক কমিটির সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠাকালীন গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. তবারক উল্ল্যা চৌধুরী বায়েজিদ, আজীবন সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, সাহাব উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন মোর্শেদ ও মো. শাহ আলম বাদল। বক্তব্যে সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদসহ সকল পর্যায়ের সদস্যদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হয়। প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এছাড়া বক্তারা সামাজিক প্রতিষ্ঠানটির সেবামূলক কার্যক্রম যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
এডহক কমিটির কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন খান এবং সদস্য ডা. নুর মোহাম্মদ ও মোহাং নাছির উদ্দিন (তছলিম), নবীন ও প্রবীণ আজীবন সদস্যরা এবং এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য