কমিশনের কিছু সিদ্ধান্তের ফলে পুঁজিবাজারে সুশাসন ফিরেছে বলে মনে করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলছেন, একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে হলে বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত হতে হবে।
দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্রোকার হাউজ ফের চালু করায় শেয়ারবাজার আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
বর্তমান বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেন ডিবিএ সভাপতি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন সুমন।
বর্তমান পুঁজিবাজার কতটা বিনিয়োগ উপযোগী বলে আপনি মনে করেন?
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বর্তমান সরকারও পুঁজিবাজারের প্রতি আন্তরিক। ফলে সুশাসন ফিরে এসেছে পুঁজিবাজারে।
দীর্ঘ সময় ধরে আস্থার ঘাটতি ছিল। এটি দূর করে বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করেছে বর্তমান কমিশন। বিনিয়াগকারীরা যখন দেখল, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালকেরা শেয়ার ধারণ না করলে স্বপদে থাকতে পারবেন না এবং প্রতিষ্ঠানের বোর্ড ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিএসইসি, মূলত তখন থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে।
নতুন কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ডিএসইর মতামত গ্রহণ না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে ডিএসইর মতামত অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আগে ডিএসইর বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সঙ্গে কমিশনের অনেক বিষয়ে দ্বিমত ছিল। ডিএসই কোনো কোম্পানির বিভিন্ন অসঙ্গতি উল্লেখ করে তালিকাভুক্ত না করার পরামর্শ দিলেও তা আমলে নিত না বিএসইসি।
এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। সবগুলো কোম্পানি পুঁজিবাজারে ভালো করছে। ফলে বিএসইসি যে কোম্পানিগুলোকে বাছাই করছে সেগুলো অবশ্যই মৌলভিত্তিক বা ফান্ডামেন্টাল কোম্পানি। এ বিষয়ে ডিএসইর সঙ্গে মতের পার্থক্য নেই।
আমরা চাই ডিএসইর মতামতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা হোক। নতুন কমিশন আসার পর আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে না। বাজার চাঙা করতে এটি ইতিবাচক দিক।
দেশের যেকোনো স্থানে ব্রোকার হাউজের শাখা ফের চালুর সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের জন্য কতটা উপযোগী?
এটি ব্রোকার হাউজগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর প্রত্যন্ত এলাকায় ব্রোকার হাউজগুলোর শাখা খোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। তখন অনেক বড় বড় ব্রোকার হাউজ দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা খুলে বসে ছিল। লাইসেন্স না পাওয়ায় সেসব ব্রোকার হাউজ কার্যক্রম চালাতে পারেনি। কিন্তু ব্যয়ভার বহন করতে হয়েছে। এখন আর সেই বাধা নেই।
শাখা সম্প্রসারণের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আসবে। তবে ব্রোকার হাউজগুলোকে বাছাই করতে হবে কোন ধরনের বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে আসবে। অনেক অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী আছেন যারা হাতের কাছে ব্রোকার হাউজ না পাওয়ায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন না। বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের ফলে আশা করা যাচ্ছে, পুঁজিবাজার আরও সম্প্রসারণ হবে।
ব্রোকার হাউজগুলো কীভাবে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে পারে?
বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে প্রতি বছরই বিনিয়োগ সপ্তাহ পালন করা হয়। এতে বিএসইসি, ডিএসইসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
গুজব থেকে পুঁজিবাজারকে রক্ষা করতে হলে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে হবে। কারো কথায় কান না দিয়ে বরং নিজে কোম্পানি যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করতে হবে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে একটি কোম্পানির কমপক্ষে পাঁচ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যদি কোম্পানিগুলো সম্পর্কে জেনেশুনে বিনিয়োগ করে তাহলে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা কম।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও নির্দেশ আছে যেন বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হয়। আমরা সবাই জানি, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বিনা মূল্যে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। করোনার সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য দরকার সচেতন ও শিক্ষিত বিনিয়োগকারী।
করোনার সময়ে ব্রোকার হাউজগুলো কেমন চলছে?
করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে পুঁজিবাজারে নিয়মিত ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা লেনদেন হতো। ফলে ব্রোকার হাউজগুলোর আয়ও কম ছিল। করোনার কারণে সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও সে সময় অফিস ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয়েছে। দেড় মাসের মতো বন্ধ ছিল পুঁজিবাজার। এতে আয় যেমন কম হয়েছে, তেমনি পুঁজিবাজার থেকে কমেছে সরকারের রাজস্ব। করোনা-পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো থাকায় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমান অবস্থায় পুঁজিবাজারের জন্য আলাদা প্রণোদনার প্রয়োজন আছে কী?
আছে। প্রণোদনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। বলা হলো, আমরা গুরুত্বপূর্ণ খাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নই। অথচ দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তির বড় একটি খাত হচ্ছে পুঁজিবাজার।
করোনার সময় সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্রোকার হাউজগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি ব্রোকার হাউজের আয়-ব্যয়ের হিসাব আছে।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ব্রোকার হাউজগুলোর নিয়মিত খরচ প্রণোদনা বাবদ দেয়া হোক। ছয় মাসের জন্য প্রণোদনা দেয়া হলে দুই বছরের মধ্যে সরকারকে ফেরত দেয়ার শর্তে এ সুবিধা চাওয়া হয়। আশা করছি সরকার তা বিবেচনা করবে।
মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজার উন্নয়নে কতটা প্রয়োজন?
মার্জিন ঋণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ব্যক্তিগতভাবে মার্জিন ঋণকে নিরুৎসাহিত করি। এই ঋণের সুদ হার বাড়ানো উচিত। আপনার কাছে টাকা আছে, সেই টাকা বিনিয়োগ করে শেয়ার কিনবেন। কিন্তু মার্জিন ঋণে জড়িয়ে পড়লে আপনার ক্রয়ক্ষমতার চেয়ে বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন। এতে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
যদি শেয়ারের দাম কমে যায় তাহলে আপনি হাউজে আসা বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু যে হাউজ থেকে ঋণ নিয়েছেন তার টিকে থাকার জন্য ফোর্স সেল বা বিনিয়োগকারীকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে হয়। এতে প্রকৃতপক্ষে বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। কোন কোন কোম্পানিতে মার্জিন ঋণ দেয়া উচিত তা ব্রোকার হাউজগুলোকে বাছাই করে দিতে হবে। ব্রোকার হাউজ থেকে ঋণ দিয়ে খারাপ কোম্পানির শেয়ার কেনার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
ফোর্স সেল নিয়ে ব্রোকার হাউজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এটি বন্ধ করার উপায় কী?
ফোর্স সেল বন্ধ করতে হলে মার্জিন ঋণ পরিহার করতে হবে। ব্রোকার হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। পুঁজিবাজার যখন মন্দা থাকে তখনই ফোর্স সেল বেশি হয়।
এখন পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো। ফলে ফোর্স সেল খুবই কম। মার্জিন ঋণে যেসব হিসাব পরিচালনা হয়, সেগুলোতে ফোর্স সেল বেশি হয়।
বিও হিসাব খোলার সময় আবেদনকারীদের কাছ থেকে শেয়ার বিক্রির অনুমতি নেয়া হয়। মার্জিন ঋণে শেয়ার কেনার পর শেয়ারের দাম কমে গেলে ঋণের সুদ প্রদান করতেই হয়।
এখন যদি বিনিয়োগকারী সেই সুদ প্রদান না করে তাহলে শেয়ার বিক্রি করতেই হবে। শেয়ারের দর কমে গেছে। তাই বলে ব্রোকার হাউজে আসা বন্ধ করা চলবে না। বিনিয়োগকারীর সঙ্গে অবশ্যই যোগাযোগ করে শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করবে ব্রোকার হাউজগুলো।
আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের কতটুকু উন্নতি হয়েছে বলে মনে করেন?
চেষ্টা করেছি ডিবিএকে আরও আধুনিকায়ন করতে। কতটুকু পেরেছি তা সদস্যরা বলতে পারবেন। একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার তৈরি করতে হলে বিনিয়োগাকারীদের এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে। সেটিকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা অনেকগুলো ওয়েবিনার করেছি। বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে করোনার সময় অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আমি মনে করি, বিনিয়োগকারীরা সচেতন হলে পুঁজিবাজারের আরও সম্প্রসারণ হবে।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে (থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হবে। সেখানে দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পাথরবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৪ আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌরীনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটগামী পাথরবাহী একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে ৬ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার লুবিয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী নয়ন মিয়া।
এ ঘটনায় নয়ন মিয়ার ভাই ৪০ বছর বয়সী হারুন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শাহ আলম, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রঞ্জিত সাহার ছেলে ২৩ বছর বয়সী পার্থ সাহাসহ অজ্ঞাতনামা আরও একজন আহত হয়েছেন।
মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরের পশ্চিমে মেঘনা নদীতে এমভি মৌমনি নামে একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাসানচরের পশ্চিমে ইসলাম চরের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল।
সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলেদের সহযোগিতায় জাহাজের ১১ নাবিককে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। তবে জাহাজের মাস্টার নিখোঁজ রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই নাবিকরা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চান। পরে ৯৯৯-থেকে হাতিয়া নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে সহযোগিতার জন্য বলা হয়।
বেলা ২টার দিকে হাতিয়া কোস্টগার্ড ও নলচিরা নৌ-পুলিশের দুটি টিম উদ্ধার করার জন্য হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে রওনা হয়।
হাতিয়া কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট হারুনর রশিদ বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে ভাসানচরের পশ্চিমে ইসলাম চরের কাছে সাগর মোহনায়। খবর পেয়ে কোস্টগার্ডের একটি দল ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলেদের সহযোগিতায় ১১ নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে জাহাজের মাস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
মোহাম্মদ ওহায়েদুল ইসলাম নামে জাহাজের মালিক পক্ষের একজন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে ডুবে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। জাহাজে থাকা লোকজনের সঙ্গে প্রথমে কথা বলা গেলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় পরে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। জাহাজে ১২ জন নাবিক ছিল।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য