পুঁজিবাজারে বড় ধরনের লোকসানে থাকা দুটি সরকারি চিনি কোম্পানির শেয়ার দর প্রায়শই বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে। কখনও লভ্যাংশ দিতে না পারা কোম্পানিটি অদূর ভবিষ্যতে মুনাফায় ফিরবে, এমন ইঙ্গিতও নেই। তার পরেও আকাশচুম্বি দর নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয়।
কোম্পানি দুটির নাম জিলবাংলা ও শ্যামপুর সুগার। শেয়ার দর এতই বেশি যে বিশ্বাস হচ্ছে না কোম্পানি দুটির সচিবের।
এর মধ্যে জিলবাংলার ১০ টাকার শেয়ার দর এখন ১৪৬ টাকা ৭০ পয়সা। আর শ্যামপুর সুগারের দাম ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা।
কোম্পানি দুটির আর্থিক হিসাব বিবেচনায় আনলে এই দাম অবিশ্বাস্য ঠেকে। কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, এই দাম অতিরিক্ত, পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলছেন, এটা স্পষ্টত কারসাজি।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জিলবাংলা সুগার ১০ টাকার শেয়ারে লোকসান দিয়েছে ১৯ টাকা ৩৬ পয়সা।
১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি কখনও মুনাফা দিতে পারেনি। ধারাবাহিক লোকসানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ তো নেইই, উল্টো দায় আছে ৭০১ টাকা ৪৬ পয়সা।
এখন যে দর সেটিও এর সর্বোচ্চ নয়। গত সেপ্টেম্বর ২২৪ টাকা ৯০ পয়সা দাম উঠেছিল।
কোম্পানি সচিব লাইলা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিল সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। যোগাযোগ করতে হবে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে।’
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের শেয়ারের দাম অনেক বেশি। এ জন্য প্রায় ডিএসই থেকে আমাদের তলব করা হয়। আমরা বলি, এতে আমাদের কোনো হাত নেই। এটা কিছু ব্রোকারের কারসাজি।’
তিনি বলেন, ‘জিল বাংলা সুগার মিলের বর্তমানে ব্যাংক ঋণ ২০২ কোটি টাকা, এর বিপরীতে ৩২ কোটি টাকা সুদ প্রদান করতে হয়। আমাদের যে চিনি তৈরি করা হয় তার প্রতি কেজির উৎপাদন খরচ পরে সুদ সহ ১৭৯ টাকা আর সুদ বাদে ১১৬ টাকা। কিন্ত আমাদের তা বিক্রি করতে হয় ৬০ টাকায়।’
মিলে বর্তমানে ৩৪ কার্যদিবস ধরে আখ মাড়াই চলছে। কিন্তু ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ, পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে চিনি তৈরি করে লাভ হবে কি না সন্দেহ।
তবে এই মিলে প্রচুর চিটাগুড় তৈরি হয়, যা দিয়ে চিনির পাশাপাশি পণ্যের বৈচিত্র্য আনা গেলে হয়তো লোকসান কমানো সম্ভব হবে, তবে লাভে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তায় এই কর্মকর্তার।
অন্যদিকে ১৯৯৬ সালে তালিকাভুক্ত শ্যামপুর সুগারে উৎপাদন বর্তমানে বন্ধ। সরকার এই কারখানাটি আধুনিকায়ন করতে যাচ্ছে।
এই কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিতে লোকসান দিয়েছে ২৫ টাকা ১৫ পয়সা। শেয়ার প্রতি দায় ৯৩৯ টাকা ৩৭ পয়সা।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর এই কোম্পানির শেয়ার দর উঠেছিল ৮১ টাকায়।
খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের এই কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের হাতে। দশমিক ৬৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের ৪৮ দশমিক ৩১ শতাংশ শেয়ার।
কোম্পানির সচিব ফাতেমা আক্তার শেখা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিলের সম্পর্কে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে বর্তমানে মিলে আখ মাড়াই হচ্ছে না, তা অন্য মিলে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোন মিলে স্থানান্তর করা হয়েছে তাও জানি না। সেটা মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলতে পারবেন।’
যোগাযোগ করা হলে শ্যামপুর সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে মিলের উৎপাদন কার্যক্রম চলছে না। আমাদের এখানে যে আখ মাড়াই হতো তা জয়পুরহাট চিনি কলে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মিলের সব কিছুই পুরাতন। বর্তমানে মিলের ব্যাংক ঋণ রয়েছে ৫০২ কোটি টাকা, সুদ দিতে হচ্ছে ২৯ কোটি টাকা। মিলের লোকসানের পরিমাণ ৩৩ কোটি টাকা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের শেয়ার পুঁজিবাজারে লেনদেন হচ্ছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে কিছুই দেয়া হয় না। লোকসানী কোম্পানি কীভাবে লভ্যাংশ দেবে?- উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি।
লোকসানের বোঝা কমাতে গেল ডিসেম্বরে সরকারি ছয় চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। এর একটি শ্যামপুর সুগার মিল।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির মধ্যে জিল বাংলা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কারসাজি হয়ে থাকে। এর শেয়ারের দামও অন্য যে কোনো ভালো কোম্পানির শেয়ারের তুলনায় বেশি। এটা কীভাবে সম্ভব? কোম্পানির কিছু নেই তারপরও শেয়ারের দাম বাড়ে। এখানে আরো নজরদারির প্রয়োজন।’
‘পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ কারখানা, লভ্যাংশ না দেয়া তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো আলাদা মার্কেটে নিয়ে যাওয়া উচিত।’
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এত দাম কেন জানি না। তবে সরকারি কোম্পানি হওয়ায় মূলত জিলবাংলা সুগার মিলের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি। একই সঙ্গে আছে শ্যামপুর সুগার মিল।’
আরও পড়ুন:আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ দুপুরে বাসস’কে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় সংঘটিত দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া, এ ঘটনায় ৪ জন রেল কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
বরখাস্ত হওয়া চার রেলকর্মী হলেন— পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকো মাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকো মাস্টার আমিন উল্লাহ, এবং অস্থায়ী গেট কিপার (টিএলআর) মাহবুব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে ওই দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও পাহাড়তলী, চট্টগ্রামের ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে ঢাকা অভিমুখী একটি ট্রেন সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে একটি শিশুসহ তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুতে প্রবেশ করামাত্র অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এ ছাড়াও মোটরসাইকেলস আরও কয়েকটি ছিল যানবাহনে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।
আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকায় নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীজুড়ে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের নামাজ স্বাভাবিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে এবং সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহে যারা নামাজ আদায় করবেন, তাদের নিজস্ব জায়নামাজ আনতে হবে না, কারণ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছুটির মধ্যেও সারাদেশে দায়িত্বে রয়েছে।’
ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের অলিগলিতে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে—আমরা এমন ঘটনাও রোধে কাজ করছি।’
থানায় মামলা করতে না পারার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,‘যদি কোনো কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রী হয়রানির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, আমরা এটির তদন্ত করছি।’
অপরাধী গ্রেপ্তার করার কয়েকদিন পরে বের হয়ে আরও বেশি অপরাধে জড়িয়ে যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেনন, ‘এটা তো আর পুলিশের হাতে না। এটা আদালতের বিষয়। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, দুজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়া পাওয়ার পর আবারও অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমন যদি কেউ অবৈধকাজে জড়িয়ে যায় তাহলে তাকেও ছাড়া হবে না, পুঁটিমাছ কিংবা রুই কাতলা হোক কাউকে ছাড় নেই। আইন সবার জন্য সমান।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার নিরাপত্তা নিয়ে আমি ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট আছি।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধার উপহারের কোরবানির গরু ‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোহাগকে এলাকায় ফিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি ঈদ উদযাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ‘কালো মানিক’ নামের আদরের ষাঁড়টি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন সোহাগ মৃধা। রাজধানীতে পৌঁছানোর পর বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে গরুটি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও বেগম খালেদা জিয়া তা গ্রহণ না করে সোহাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তার পরিবারের জন্য ঈদের বিশেষ উপহারও পাঠান।
ডা. জাহিদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোরবানির পশু উপহার দেওয়ার জন্য সোহাগ মৃধা ও তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দলীয় চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে তাকে ঈদের উপহারও পাঠানো হয়েছে।
সোহাগ মৃধার পরিবারের সদস্যরা জানান, কালো মানিক নামের ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কুচকুচে কালো রঙের হওয়ায় স্থানীয়রা আদর করে নাম রেখেছেন ‘কালো মানিক’। ষাঁড়টির জন্য ১০ লাখ টাকা দাম উঠলেও সোহাগ তা বিক্রি করেননি।
সোহাগ মৃধা জানান, তিনি গণতন্ত্রের মাকে (বেগম খালেদা জিয়া) এই গরুটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে এক কৃষকের গরু উপহার দেন। ওই ঘটনা দেখে তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তখনই তাঁর মনে ইচ্ছা জাগে, সুযোগ পেলে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিনিও একটি গরু উপহার দেবেন।
২০১৮ সালের শেষ দিকে স্থানীয় চৈতা বাজার থেকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কেনেন সোহাগ। সপ্তাহ না যেতেই গাভিটি একটি বাছুর প্রসব করে। পরে গাভিটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাছুরটি পরিবারের সবাই মিলে ছয় বছর ধরে দেশীয় খাবার আর যত্ন দিয়ে লালন-পালন করেন। এই বাছুরই আজকের বিশালদেহী ‘কালো মানিক’।
বিএনপির আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোহাগ মৃধা একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি কর্মী। পরিবারের সহায়তায় ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিনি দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করেছেন।
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, ‘ওর মন চাইছে, তাই ও উপহার দিতে চায়। আমরা খুশি। ওর বাবা নেই। সামান্য জমি চাষ করেই সংসার চালায়। ছোটবেলা থেকেই ও বিএনপিকে ভালোবাসে।’
সোহাগের স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলি বলেন, ‘কালো মানিক আমার ছোট ছেলের বয়সী। দুজনকেই সমানভাবে স্নেহ-ভালোবাসায় লালন-পালন করেছি। ছেলের বাবার ইচ্ছা ছিল প্রিয় নেত্রীকে এটি উপহার দেবে, তাতে আমরাও খুশি।’
পদ্মা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ টোল আদায়ের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গত বছরের একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ টাকার টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়।
ঈদুল আজহার ১০ দিনের লম্বা ছুটির প্রথম দিনেই এই রেকর্ড হয়েছে। তবে ছুটি ছাড়াই আগের দিন বুধবার (৪ জুন) পদ্মা সেতুতে একদিনে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকারও বেশি টোল আদায় করা হয়েছে। এদিন ৩৭ হাজার ৪৬৫ গাড়ি পারাপার হয়েছে সেতুটি দিয়ে।
বৃহস্পতিবার মাওয়া প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে ৩৫ হাজার ৯৮৫টি যান। এতে মাওয়ায় টোল প্লাজায় টোল আদায় হয় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা।
আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ১৬ হাজার ৫০২টি যান। এসব যানবাহন থেকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানান আলতাফ।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৬ জুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু তিন বছর পূর্তি। এ পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি । এই সময়ে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ২১৮ যান পারাপার হয়েছে।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর সীমান্তে ঈদ-উল আযহাকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তায় পুশ-ইন, গবাদি পশু চোরাচালান ও পশুর চামড়া পাচার রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার প্রাগপুর বিজিবি ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, ৪৭ বিজিবি ব্যাটায়িলনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় খামারিদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিজিবি ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালান রোধে অতিরিক্ত টহল, অস্থায়ী চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও বিশেষ অপারেশন ব্যবস্থা চালু করেছে।
একইভাবে, ঈদের পর কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় স্থানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম মোতায়েন করে চামড়ার পাচার রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে যৌথ অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধেও বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিপক্ষ বিএসএফ’র সাথে পতাকা বৈঠক, লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে ।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের জনগণকে একটি নিরাপদ ও স্বস্থিদায়ক ঈদ উদযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশেরও বেশি।
উপদেষ্টা তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে জানান, ‘মে মাসে বাংলাদেশ থেকে ৪৭৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।’
আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন বা সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ছিলো চার হাজার ৮৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বাড়ার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও তুলে ধরেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
মন্তব্য