চালের ঘাটতি ও দাম বাড়ার কারণ নিয়ে কৃষক, চালকল মালিক, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখি বক্তব্য দিচ্ছেন।
কৃষকরা বলছেন, ধানের বাম্পার ফলন হলেও সরকার দেরিতে কেনা শুরু করে। মিলাররা (চালকল মালিক) আগেই কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে চাল কিনে নেন।
মিলাররা বলছেন, বাজারে চালের ঘাটতি আছে। সময়মতো শুল্ক কমোনার সিদ্ধান্ত না নেয়ায় চাল আমদানি করা যায়নি।
গবেষকদের মত, সঠিক পদ্ধতিতে ধান উৎপাদনের প্রাক্কলন না করায় সরকারের জন্য বাজার তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে।
নীতি নির্ধারকরা বলছেন, উৎপাদনের প্রাক্কলন সঠিক ছিল। বাজারে চালের ঘাটতি নেই।
রোববার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘চালের দাম বাড়ছে কেন? কার লাভ, কার ক্ষতি’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে বক্তাদের মধ্যে থেকে এমন ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়।
সম্প্রতি প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বেড়েছে। চালের সংকট মেটাতে সরকার চাল আমদানির শুল্কও কমিয়েছে। এতে দেশে উৎপাদিত চালের যথাযথ দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কার কথা বলছেন কৃষকরা।
এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও হাওর অঞ্চলের নয়টি জেলা (গাইবান্ধা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ, মেহেরপুর, নীলফামারী, রংপুর, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম) থেকে ৪০ জন কৃষক, কৃষাণি এবং কৃষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এই সংলাপে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
তারা বলেন, মিল মালিকরা আগেই ধান কিনে মজুত করে রাখেন। ফলে চালের দাম বাড়লেও কৃষক তার সুফল পায় না। উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করতে হয়। এ কারণে কৃষক ধানচাষ থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। তা ছাড়া সরকারের ধান সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় ছোট কৃষকরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। কম দামে মিল মালিকের কাছে ধান বিক্রি করতে হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক কৃষি খাতে সরকারের বিভিন্ন ভর্তুকি ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, এই সব সুবিধা কৃষকপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকারের বিশেষ মনোযোগ রয়েছে।
চ্যানেল আই পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, সরকারি গুদামে ছোট কৃষকদের ফসল সংরক্ষণ করার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে কৃষককে আর অল্প দামে ফসল বিক্রি করতে হবে না।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইস্টিটিউটের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. কাজী শাহাবুদ্দিন বলেন, সরকারের বর্তমান খাদ্যশস্য মজুত পর্যাপ্ত নয়। এটি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
বিআইডিএস সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষক অনেক আগেই কম দামে ধান বিক্রি করে দেয়। ফলে বাজারে চালের দাম বাড়লেও, কৃষক লাভবান হয় না।
বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, সরকার প্রকৃত কৃষকের থেকে চাল না কিনে মিলারদের থেকে কিনছে। কৃষক উপকৃত হচ্ছে না। মিলারদের ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মজুতদারির কারণে বাজারে চালের অপর্যাপ্ততা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, প্রতিবছর বাম্পার ফলনের পরেও চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। সরকারকে স্থানীয় পর্যায়ে ক্রয় কেন্দ্র করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে চাল কিনতে হবে।
বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম খোরশেদ আলম খান বলেন, মিলাররা মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় ধান কিনেছেন।
ধানের বাম্পার ফলনের কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, এই মৌসুমের শুরু থেকেই সরবরাহ কম ছিল।
বাংলাদেশ রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম বাবু বলেন, সঠিক সময়ে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত না নেয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি করা যায়নি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির চাল উৎপাদনের ভুল প্রাক্কলন নিয়ে অন্য বক্তাদের মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। বলেন, উৎপাদনের প্রাক্কলন সঠিক ছিল। খাদ্য সংকটের আশঙ্কাও নেই।
তবে আলোচকরা আগামী বোরো ধানচাষের পরবর্তী সময়ে খাদ্য পরিস্থিতিকে নজরদারির মধ্যে রাখার পরামর্শ দেন। তা ছাড়া বর্তমানে চালের বাড়তি দাম যেন উৎপাদকের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করার কথা বলেন।
বক্তারা কৃষক, কৃষি খাতের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ‘কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন’ গঠনের পরামর্শ দেন। এই কমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রক্ষেপণ ও স্বল্প-মধ্য মেয়াদে দাম নির্ধারণ করা সহজ হবে, বাজার সংকেত পাবে, নীতি নির্ধারকরা পদক্ষেপ নিতে পারবেন এবং গবেষণাকে কার্যকরভাবে উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে।
এসডিজি প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ধান উৎপাদনের সঠিক প্রাক্কলন অত্যন্ত জরুরি। এই প্রাক্কলনের ওপর ভিত্তি করেই নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন কখন চাল আমদানি করতে হবে, আর কখন হবে না।
তিনি আরও বলেন, ধান-চাল মজুত করার সক্ষমতা কম হওয়ায় কারণে বেশির ভাগ সময়ই সরকারের পক্ষে বাজার প্রভাবিত করার সুযোগ থাকে না।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কনগ্লোমারেট ডিবিএল গ্রুপকে উন্নত ডিজিটাল ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সল্যুশন সেবা দিতে প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ সেবা ডিবিএল গ্রুপের পেমেন্ট কার্যক্রমকে করবে আরো গতিশীল ও ঝামেলাহীন।
এই চুক্তির আওতায় ব্র্যাক ব্যাংক ডিবিএল গ্রুপের ইআরপি সিস্টেমের সঙ্গে হোস্ট-টু-হোস্ট (H2H) সংযোগ স্থাপন করেছে। এই ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ব্যাংকটির কর্পোরেট ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘কর্পনেট মেকার মডিউল’ ম্যানুয়াল কাজের প্রয়োজনীয়তা দূর করে কার্যক্রমে গতিশীলতা নিশ্চিত করবে। এই ডিজিটাল সিস্টেমের ফলে ট্রানজ্যাকশনের তাৎক্ষণিক আপডেট পাওয়া যাবে, দ্রুত পেমেন্ট সম্পন্ন হবে এবং নিরাপদ ও সুরক্ষিত চ্যানেলে ডেটা আদান-প্রদান নিশ্চিত হবে।
৫ অক্টোবর ২০২৫ ডিবিএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ট্রেজারি, এফআই অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং মো. শাহীন ইকবাল, সিএফএ। ডিবিএল গ্রুপের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এম. এ. রহিম এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড গ্রুপ সিইও এম. এ. কাদের (অনু)।
এই চুক্তিটি কর্পোরেট গ্রাহকদের আধুনিক, কার্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সল্যুশন প্রদানে ব্র্যাক ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ডিবিএল গ্রুপের অন্যতম প্রধান পেমেন্ট ব্যাংক হিসেবে উদ্ভাবনী ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা আরো উন্নত করতে ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯৪টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য পুরোপুরি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) কর্মসূচির আওতায় এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক, এলডিসি গ্রাজুয়েশন ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু করার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে চলেছে বাংলাদেশ। এটি আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে এবং এ পরিবর্তন বিপুল পরিমাণ সুযোগ তৈরির পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দ্রুততম সময়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্জক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত বলেন, বাণিজ্য সুবিধা কর্মসূচির আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা তার সফরের লক্ষ্য। নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির সুযোগ বাড়াতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রপ্তানি মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ কোটি ডলার (প্রায় এক হাজার কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত গ্রামীণ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ঋণ দেবে সংস্থাটি, যা একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ইআরডি কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এডিবির বাংলাদেশ অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেকেন্ড স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম-সাইজড এন্টারপ্রাইজেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফেজ-২)’ নামের এ প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এডিবির এই প্রকল্প ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা করবে এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ দেবে, যার মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত উদ্যোক্তারা ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত—এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ও আকার বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের কারিগরি সহায়তাও দেওয়া হবে, যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অংশগ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক সেবায় প্রবেশাধিকার বাড়াতে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, ওয়ার্কশপ আয়োজন, সবুজ অর্থায়ন এবং ভ্যালুচেইন-ভিত্তিক অর্থায়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই রূপান্তরে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতের বিকাশই হবে দারিদ্র্য হ্রাস, আঞ্চলিক বৈষম্য কমানো এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের মালিকানাধীন গ্রামীণ উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের সহজলভ্যতা পাবেন। পাশাপাশি তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সক্ষমতাও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বর্তমানে ৬৯টি দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খাতে সহায়তা দিচ্ছে।
রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫। ‘আমার দেশ, আমার আশা দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে বসছে দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেলা চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফএসএমএস)। এসময় ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিএফএসএমএস’র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা।
এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে জানিয়ে শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে।
অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি।
১৪ তারিখ সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আইসিসিবির গুলনকশা (হল–১), পুষ্পগুচ্ছ (হল–২) এবং রাজদর্শন (হল–৩) হলে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য অনুযায়ী, মোট আরএমজি রপ্তানির ৪৭.৬০ শতাংশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার হিসেবে শীর্ষে রয়েছে। যার পরিমাণ ৪.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২.০১ বিলিয়ন ডলার (২০.১৮ শতাংশ), কানাডায় ৩৩৬.৭০ মিলিয়ন ডলার (৩.৩৮ শতাংশ) এবং যুক্তরাজ্যে ১.২২ বিলিয়ন ডলার (১২.২৩ শতাংশ)।
বছরভিত্তিক তুলনায় ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৬০ শতাংশ, কানাডায় ১৩.৬৩ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৬.৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানি অপ্রচলিত বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৭ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে রপ্তানি বেড়েছে ৪.৩১ শতাংশ এবং ওভেন খাতে বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ।
অপরদিকে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের রপ্তানি আয় ৫.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১২.৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় ছিল ১১.৬৬ বিলিয়ন ডলার।
তবে সামগ্রিক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ৪.৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি আয়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত যথারীতি শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ১ দশমিক ৯৬, ৪ দশমিক ৪৮ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮৭, ৪ দশমিক ৪৭ ও ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। চার প্রান্তিকের গড় হিসেবে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে।
চলতি মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪০১ বিলিয়ন টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ১৭৭ বিলিয়ন টাকা।
খাতভিত্তিক প্রবৃদ্ধি
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে কৃষি খাতের পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ০ দশমিক ৭৬, ১ দশমিক ২৫ ও ২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে শিল্প খাত তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪৪, ৭ দশমিক ১০ ও ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪১, ৩ দশমিক ৭৮ ও ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সামগ্রিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পুরো ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বেশ কম।
তিনি বলেন, ‘বার্ষিক প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক অনুমান ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, কিন্তু সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সেটিতে পৌঁছানো এখন আর সম্ভব নয় বলে মনে হচ্ছে।’
ড. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এটি হবে কোভিড-পরবর্তী সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, যদিও ২০২০ সালের মহামারির সময়কার প্রবৃদ্ধির তুলনায় কিছুটা ভালো।’ তিনি অর্থবছর ২০২৪–২৫-কে অর্থনীতির জন্য ‘বিপর্যয়কর বছর’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ বাংলাদেশ গ্রাহকদের জন্য নিয়ে আসছে কেনাকাটার অন্যতম সেরা সুযোগ— '১০.১০ ব্র্যান্ড রাশ ক্যাম্পেইন'। দেশের সেরা ব্র্যান্ডগুলোর পণ্য অবিশ্বাস্য ছাড়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে এই ক্যাম্পেইনটি ৯ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত। ক্রেতারা এই ক্যাম্পেইনে ফ্ল্যাশ সেল ও মেগা ডিলে ৮০% পর্যন্ত ছাড়, হট ডিলে ৭৫% পর্যন্ত ছাড় এবং বহুল জনপ্রিয় ১০/১০০/১০০০/১০০০০ টাকার বিশেষ ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
বিশেষ করে, ১০ টাকার ডিল ১০ ও ১১ অক্টোবর দুপুর ৩টা ও রাত ৯টা এবং ১২ থেকে ১৬ অক্টোবর প্রতিদিন দুপুর ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও থাকছে ডাবল টাকা ভাউচার, ব্র্যান্ডের ওপর ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট এবং নির্বাচিত পণ্যে ফ্ল্যাট ৫০% ছাড়। কেনাকাটাকে আরও সুবিধাজনক করতে সাইট-ওয়াইড ডেলিভারি ডিসকাউন্ট এবং ৭৯৯ টাকা বা তার বেশি অর্ডারে ফ্রি ডেলিভারির সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
এই ১০.১০ ক্যাম্পেইনে দারাজ মল- যা দারাজের একটি ডেডিকেটেড চ্যানেল, গ্রাহকদের দিচ্ছে ১০০% আসল পণ্য কেনার নিশ্চয়তা। কোনো পণ্য নকল প্রমাণিত হলে, শর্তাবলী সাপেক্ষে, দারাজ মল ক্রেতাকে তিনগুণ অর্থ ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছে। ক্রেতারা দারাজ অ্যাপের হোমপেজ থেকেই সরাসরি দারাজ মলে প্রবেশ করতে পারবেন, যেখানে ডানো, লোটো এবং হায়ার সহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের পণ্যে পাওয়া যাবে এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট।
এই ক্যাম্পেইনের প্রধান আকর্ষণ হলো দুটি মেগা কনটেস্ট। ক্যাম্পেইন চলাকালীন চলবে 'দারাজ জ্যাকপট – বাই মোর অ্যান্ড উইন' প্রতিযোগিতা, যেখানে সর্বোচ্চ সংখ্যক সফল অর্ডার দিয়ে একজন ভাগ্যবান ক্রেতা জিততে পারেন ডেটল ব্র্যান্ডের সৌজন্যে একটি রিভো সি৩২ওয়াই ইলেকট্রিক স্কুটার। অন্যদিকে, ক্যাম্পেইনের আগে আয়োজিত 'অ্যাড টু কার্ট অ্যান্ড উইন' (৫–৯ অক্টোবর) প্রতিযোগিতার বিজয়ী পাবেন শামান ইন্টারন্যাশনালের সৌজন্যে একটি হায়ার ৭ কেজি টপ লোড অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন। ক্যাম্পেইনের শুরুতে, ৯ অক্টোবর থাকছে 'মিডনাইট রাশ আওয়ার', যেখানে রাত ৯টা থেকে ১০টা এবং রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ৮% হাই-ভ্যালু ভাউচার দেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিদিন 'ফ্ল্যাশ ভাউচার' পাওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।
গ্রাহকদের নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি ও ব্র্যান্ডের সেরা ডিল পেতে বিশেষ দিনগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে- ১০ অক্টোবর থাকছে লাইফস্টাইল ডে, ১১ অক্টোবর আইসিই ব্র্যান্ড ডে, ১২ অক্টোবর ফ্যাশন ডে এবং রিয়েলমি ব্র্যান্ড ডে, ১৪ অক্টোবর ইলেকট্রনিক্স ডে এবং বাটা ব্র্যান্ড ডে এবং ১৫ থেকে ১৬ অক্টোবর এফএমসিজি ডে। এর মধ্যে ১৫ অক্টোবর ইউনিলিভার পার্সোনাল কেয়ারের ব্র্যান্ড ডে-ও অন্তর্ভুক্ত। গ্রাহকরা যাতে সর্বোচ্চ সঞ্চয় করতে পারেন, সেজন্য দারাজ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একত্রিত হয়েছে। এর ফলে ক্রেতারা প্রিপেমেন্টের ওপর ১২% পর্যন্ত ছাড়, বিকাশ ব্যবহারকারীদের জন্য এক্সক্লুসিভ ভাউচার এবং ইবিএল ও প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে ইএমআই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। দারাজ চয়েস-এ থাকছে '৪টি কিনলে ফ্রি ডেলিভারি' এবং '৫টি কিনলে ১টি ফ্রি সহ ফ্রি ডেলিভারি'-এর মতো বিশেষ অফার।
এই ‘ব্র্যান্ড রাশ ১০.১০ ক্যাম্পেইন’ শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষকদের সমর্থনে আয়োজিত হচ্ছে। রেকিট এবং ম্যারিকো থাকছে এক্সক্লুসিভ প্ল্যাটিনাম পার্টনার হিসেবে, গোদরেজ এবং ইউনিলিভার গোল্ড স্পন্সর হিসেবে এবং রিয়েলমি ও হিমালয়া সিলভার স্পন্সর হিসেবে। ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশন, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস এবং লাইফস্টাইলসহ সকল প্রধান ক্যাটাগরিতে থাকছে বিশেষ অফার।
দারাজ বাংলাদেশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার কামরুল হাসান বলেন, "'ব্র্যান্ড রাশ' ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা আবারও প্রমাণ করছি যে দারাজ হচ্ছে বাংলাদেশে মানসম্মত ব্র্যান্ডেড পণ্যের কেনাকাটার চূড়ান্ত গন্তব্য। দেশের লক্ষ লক্ষ ক্রেতা এবং স্থানীয়-আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সাথে আমাদের বিশ্বস্ত অংশীদারিত্ব ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই সেরা সুবিধা দিচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনটি শুধুমাত্র ছাড়ের সুযোগ নয়—এটি গ্রাহকদের সেরা মূল্য ও চমৎকার অভিজ্ঞতার সাথে আসল ব্র্যান্ডের পণ্য কেনার নিশ্চয়তা দেয়।"
রিয়েল-টাইম আপডেট, ফ্ল্যাশ ড্রপ ও ভাউচার পেতে গ্রাহকদের দারাজ অ্যাপ এবং দারাজ বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে যুক্ত থাকতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
মন্তব্য