বন্ধ থাকার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে এসেছে ভারতের পেঁয়াজ।
শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ বোঝাই একটি ট্রাক দেশে আসে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ ভারতীয় পেঁয়াজের প্রথম চালান এসেছে।
ভারত সরকার দীর্ঘদিন বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল। তবে গত ২৮ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। আশা করা হচ্ছে. দুই-এক দিনের মধ্যে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ হলে কেজি প্রতি ২২ থেকে ২৫ টাকা দাম কমবে।’
যে ট্রাকটি দেশে এসেছে তাতে ১৫ টন পেঁয়াজ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এরপর সাড়ে তিন মাস বাংলাদেশে ভারতের পেঁয়াজ আসেনি।
নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের বাজারে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। পরিস্থিতি সামলাতে সরকার খোলাবাজারে পণ্যটি বিক্রি শুরু করে। তবে এতেও চড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
সে সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে আমদানিকারকরা মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক ও চীন থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে। আর তখন মুনাফার আশায় আমদানি করা ব্যবসায়ীরা এখন শঙ্কায় লোকসানের। কারণ, মৌসুমের আগে আগে দাম পড়ে গেছে অনেকটাই।
সম্প্রতি সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত সরকার। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার টন পেয়াজের এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) খুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের মৌসুমে এই আমদানিতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না, নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
এরই মধ্যে বাজারে উঠে গেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। আগামী এক মাসের মধ্যেই পুরোদমে উঠবে রান্নার উপকরণটি। এই সময়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলে কৃষক দাম পাবে কি না, তা নিয়ে উঠেছে কথা।
অবশ্য আমদানি না হলে ভোক্তাদেরকেও তুলনামূলক বেশি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হতে পারে।
সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে পেয়াঁজের চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় দেখা গেছে, উৎপাদন ১৮ থেকে ১৯ লাখ মেট্রিক টনের মধ্যে থাকে।
যদিও বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৯ সালের উৎপাদন মৌসুমে দেশে ২৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। তবে প্রতি মৌসুমেই উৎপাদিত পেঁয়াজের কমপক্ষে ২৫ শতাংশ পচে নষ্ট হয়ে যায়।
চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে এসব কারণে বছরে ৯ থেকে ১১ লাখ টনের ঘাটতি থাকে। এ ঘাটতি পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে, যার ৯৫ শতাংশ আসছে ভারত থেকে।
আরও পড়ুন:জাতীয় স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ব্যর্থ হবে। আল্লাহ তাদেরকে ব্যর্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলানায়তনে বুধবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের পরিচালনায় অধিবেশনে নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করায় দেশের মানুষ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। অসংখ্য যুবক-যুবতীর বয়স হয়েছে ভোট দেয়ার। কিন্তু তারা ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনের প্রতি তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এজন্য আমরা যৌক্তিক সময় দেয়ার পক্ষে।
‘বিলম্বিত বা দীর্ঘায়িত সময় নয়, যৌক্তিক সময় দিতে চাই। পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে প্রবাসী ভাইয়েরা আমাদের সঙ্গে সমান তালে যুদ্ধ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদেরকেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ যখন পরিবর্তনের ইতিবাচক ধারায় রয়েছে তখন লক্ষ্য করছি, দেশকে অশান্ত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা দেশ-বিদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়। বাংলাদেশের বিচক্ষণ দেশপ্রেমিক জনতা তাদের পালস বুঝতে পেরে তাদেরকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
‘তাদের এই অপপ্রয়াস জাতিকে আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হতে সহযোগিতা করেছে। এই দেশের মানুষ আর কারও কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করবে না এবং কোনো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ মানবিক, দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই। সুবিচারপূর্ণ একটি সমাজ চাই। আমরা যুবকদেরকে এদেশের উন্নয়নের কারিগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব ক্রমান্বয়ে তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা আশাবাদী, প্রিয় দেশবাসীর সহযোগিতা পেলে একটা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্রটি হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে দাওয়াতপত্র গ্রহণ করেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
জানতে চাইলে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বুধবার রাতে বার্তা সংস্থা বাসস-কে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ রাত ৮টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব এই আমন্ত্রণপত্র আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারান্তরীণ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি হয়নি। এ সংক্রান্তে ঢাকা থেকে আসা এক আইনজীবীর তিনটি আবেদনই নাকচ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালতে বুধবার উপস্থিত হয়ে চিন্ময়ের জামিন শুনানি এগিয়ে আনাসহ তিনটি আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী। কিন্তু ওকালতনামা না থাকায় আদালত তার তিনটি আবেদনই নামঞ্জুর করে।
এ সময় ওই আদালতে উপস্থিত চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, আসামি পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আদালতে তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন। এর একটি চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ ২ জানুয়ারি থেকে এগিয়ে আনার জন্য, একটি নথি উপস্থাপনের জন্য এবং অপরটি তাকে শুনানি করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য।
আদালত অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চায়, তার কাছে ওকালতনামা আছে কিনা বা মামলা পরিচালনার জন্য আসামি পক্ষের আইনজীবীর অনুমতি আছে কিনা। এ সময় তিনি নেই বলে জানালে আদালত তাকে আইন মেনে আসতে বলেন।’
অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি ওনার এ ধরনের দরখাস্ত দেয়ার আইনি অধিকার নেই। তার কাছে আসামির ওকালতনামা নেই এবং যিনি এই মামলা ফাইল করেছেন তার পক্ষ থেকেও তাকে কোনো পাওয়ার দেয়া হয়নি।
‘শুনানি করা বা নথি উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই ওকালতনামা দিতে হবে অথবা ফাইলিং আইনজীবীকে বলতে হবে- ঢাকা থেকে যিনি এসেছেন তিনি তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই আইনজীবীর কাছে এর কোনোটাই ছিল না। তাই আদালত এটা রিজেক্ট করে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন থাকলেও কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানির দিন আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক- এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে জাপান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে। আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনি ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে টোকিওর দৃঢ় সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সম্পর্ক সবসময় খুব শক্তিশালী ছিল।’
সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে জাপানি কোনো কোম্পানি চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী।’
নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রদূত। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে তাদের বাড়িতে ফেরার আগে সাময়িকভাবে পুনর্বাসিত করা যেতে পারে।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত পুলিশ সুপার নিহার রঞ্জন হাওলাদারকে আগামী এক বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণের দণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে তার এই বেতন সমন্বয় করা হবে না।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
জননিরাপত্তা শাখার সিনিয়র সচিব আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত পুলিশ সুপার নিহার রঞ্জন হাওলাদার ২০১৮ সালে ঢাকায় সিআইডিতে বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- ওই বছরের মার্চ মাসে পটুয়াখালীরর মহিপুর থানার কুয়াকাটায় অবস্থিত বেদখলি জমি দখল করে দেয়ার বিপরীতে তিনি রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার একটি হোটেলে বসে অভিযোগকারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও ১০ শতাংশ জমি তাকে লিখে দেয়ার দাবি করেন।
এ ঘটনার সাক্ষী অভিযোগকারী আব্দুর রহিম গং, তার বাসার গৃহশিক্ষক ও অভিযোগকারীর ছেলে মো. আমিনুল ইসলাম।
পরবর্তী সময় ওই বছর ২১ মার্চ ঢাকায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মালিবাগ শাখায় (হিসাব নম্বর-১৬১৩৯০১০১৪৩৯৩) তার অ্যাকাউন্টে বরগুনায় সোনালী ব্যাংকের কোর্ট বিল্ডিং শাখা থেকে অভিযোগকারীর তিন লাখ টাকা এবং পরবর্তীকালে ৪ এপ্রিল ওই অ্যাকাউন্টে দুই লাখ টাকা প্রতারণামূলকভাবে গ্রহণ করেন।
এ ছাড়া ২২ মার্চ সন্ধ্যার দিকে কুয়াকাটার বনানী প্যালেস নামের একটি হোটেলে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে ডেকে নিয়ে অভিযোগকারীর পক্ষে বেদখলি জমি দখল করে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা ও ৪ এপ্রিল বরগুনায় গিয়ে অভিযোগকারীসহ অন্যদের সঙ্গে এম আলী হোটেলে খাবার খাওয়ার অভিযোগে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর বিভাগীয় মামলা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তাদের আয় ও সম্পদ বিবরণীর তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিলগ্নে জনপ্রত্যাশার কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান দুদকের শীর্ষ অবস্থানের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের স্বার্থে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো স্বপ্রণোদিতভাবে প্রকাশের আহ্বান জানাই।’
ইফতেখারুজ্জামান দুদকের দুই কমিশনার ও চেয়ারম্যানের নিজের এবং নিকট পরিবারের নামে-বেনামে অর্জিত আয় ও সম্পদের তথ্য, আয়ের বৈধ সূত্রের সঙ্গে অর্জিত আয় ও সম্পদের সামঞ্জস্যতার তথ্য, নিরপেক্ষ নিরীক্ষক কর্তৃক আয় ও সম্পদ বিবরণীর যথার্থতা, পর্যাপ্ততা ও সামঞ্জস্যতা যাচাইয়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ, পেশাগত জীবনের কোনো পর্যায়ে কোনো প্রকার ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত তথ্যের বিষয়ে নিজের অবস্থান, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্যের তথ্য চেয়েছেন।
পাশাপাশি উল্লিখিত বিষয়ে কোনো প্রকার অসামঞ্জস্যতার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তদন্তসাপেক্ষে জবাবদিহি করতে প্রস্তুত মর্মে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে দুদকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল চেতনা এবং ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর অভীষ্টের প্রতি অনড় থাকার পাশাপাশি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাবোধের সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকারের আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সদ্য পদত্যাগ করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে। কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গী হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন পদত্যাগ করেন। তারা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য