× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
ইউনূসহীন গ্রামীণ ব্যাংক কেমন করছে
google_news print-icon

ইউনূসহীন গ্রামীণ ব্যাংক কেমন করছে

ইউনূসহীন-গ্রামীণ-ব্যাংক-কেমন-করছে
ড. ইউনূস এমডি থাকাকালে ২৮ বছরে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৭০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার। ২০২০ সালের জুনে এসে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকায়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ঋণ আদায়ের হার ৯৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০১১ সালে আদায়ের হার ছিল ৯৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

গ্রামীণ ব্যাংকের গোড়াপত্তন ১৯৮৩ সালে। তখন থেকে ২০১১ সালের ১২ মে পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানটির কলকাঠি ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে। এই ২৮ বছরে প্রতিষ্ঠানটি সদস্যদের মধ্যে ৭০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে বিতরণ করে।

ইউনূস অধ্যায়ের পরিসমাপ্তির পর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে আট বছরে নতুন নেতৃত্বে পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে এক লাখ ৫২ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা বিতরণ করে।

সেই হিসেবে ইউনূস আমলে ঋণ বিতরণের তুলনায় নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ কার্যক্রম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

সব মিলিয়ে ২০২০ সালের জুনে এসে গ্রামীণ ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকায়।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন ঘেঁটে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ঋণ আদায়ের হার ৯৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০১১ সালে আদায়ের হার ছিল ৯৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে গ্রামীণ ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল ১৫ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। ২০১১ সালের শেষে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল সাত হাজার ৫৩২ কোটি টাকা।

ইউনূসহীন গ্রামীণ ব্যাংক কেমন করছে

বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের মৌলিক ঋণের স্থিতি ১৫ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। সহনশীল (ফেক্সিবল) ঋণের স্থিতি ৪৩৮ কোটি টাকা। গৃহঋণ ৯৬ কোটি টাকা।

১৯৯৭ সালে গ্রামীণ ব্যাংক উচ্চশিক্ষা ঋণ প্রকল্প চালু করে। ২০১১ সালে শিক্ষাঋণ বিতরণ ছিল ২৩৮ কোটি টাকা। গত জুনে শিক্ষাঋণের স্থিতি ছিল ১৮৫ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ক্ষুদ্রপ্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা ঋণ পায়। অন্যদিকে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত এক কোটি ১৪ লাখ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানকে ৪২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকটি। অর্থাৎ নতুন ব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে ঋণ বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

প্রতিষ্ঠানটিতে আমানত আছে ২৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকার। ২০১১ সাল শেষে আমানত ছিল ১১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার।

২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ঋণ নিয়ে বানানো বাড়ির সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৯১ হাজার। ২০২০ সালের জুনে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত লাখ ৬২ হাজার।

ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের বাইরে গরিব মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে অনেক ধরনের চাহিদা পূরণেও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

২০০২ সালের জুলাই মাসে গ্রামীণ ব্যাংক ভিক্ষুকদের বিনা সুদে ঋণ দেয়ার জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়। এই ঋণ দিয়ে ভিক্ষুকরা কম্বল বা মশারি কিনতে পারে। প্রতি সপ্তাহে দুই টাকা করে ঋণ পরিশোধ করতে হয়।

২০১১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের ভিক্ষুক সদস্য ছিল প্রায় এক লাখ ১১ হাজার। ২০২০ সালের জুনে ভিক্ষুক সদস্য কমে ৮৩ হাজার ২৯৫ জনে নেমে আসে।

২০১১ সাল পর্যন্ত ভিক্ষুকদের বিনা সুদে ঋণ ছিল প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ফেরতও দিয়েছিল ভিক্ষুকরা। ২০২০ সালের জুনে মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয় ১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফেরত আসে প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

২০১১ সালের শেষে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৫৬৫টি। তখন তিনটি শাখায় একটি কম্পিউটার ছিল। বর্তমানে শাখা দুই হাজার ৫৬৮টি। এর সবগুলোতেই কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে।

২০১১ সালে ব্যাংকটির সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৩ লাখ ৭১ হাজার। বর্তমানে সদস্য ৯৩ লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে নারী সদস্যের হার ৯৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০১১ সালে এই হার ছিল ৯৬.১২ শতাংশ। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত ছিল ৮১ হাজার ৩৮০টি গ্রামে। ৪০টি অঞ্চলে কার্যক্রম ছিল।

২০১১ সালে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানটি ৪ হাজার আবেদনকারীকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা গৃহঋণ দিয়েছে। তখন পর্যন্ত মোট গৃহঋণ বিতরণ ছিল ৯০২ কোটি টাকা। বর্তমানে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯৬ কোটি টাকায়।

সার্বিক বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. এ কে এম সাইফুল মজিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো ব্যাংকটির দায়িত্ব পেয়েছি। এই সময়ের মধ্যে দেখেছি ব্যাংকটি ভালোই চলছে; বরং আগের থেকে ব্যাংকটির কার্যক্রম অনেক সম্প্রাসারিত হয়েছে।’

ড. ইউনূসের অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হয়নি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) পরিচালক সাইফুল মজিদ।

আরও পড়ুন:
শিক্ষানবিশ অফিসার নেবে গ্রামীণ ব্যাংক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
Three books did not arrive in three and a half months Class IX students in Sylhet have not yet received Bengali maths and religion books

এখনও তিন বই পায়নি সিলেটের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা

এখনও তিন বই পায়নি সিলেটের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ফাইল ছবি
সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘কিছু বই এখনও আমরা পাইনি। বিশেষত নবম শ্রেণির তিনটি বই। এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে।’

নতুন বছরের সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও সিলেটের শিক্ষার্থীদের হাতে এসে পৌঁছায়নি সবগুলো বই। বিশেষত নবম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও ধর্ম শিক্ষা বিষয়ের একটি বইও এখন পর্যন্ত সিলেট আসেনি। এতে বিপাকে পড়েছে ওই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। বই না থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।

আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে রমজান। রমজানে একমাসের বেশি সময় বন্ধ থাকবে বিদ্যালয়। ফলে রমজানে আগে বই না পৌঁছলে বছরের প্রায় পাঁচ মাসই বইহীন থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের।

তবে শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, রমজানের আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে সব পৌঁছে দেয়া হবে।

নবম শ্রেণির তিনটি বই এখনও না আসার কথা জানিয়ে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির উদ্দিন খান বলেন, ‘এখনও বেশিরভাগ ক্লাসেরই শতভাগ বই মিলেনি। তবে নবম শ্রেণির তিনটি বই সিলেটে এককপিও আসেনি। গণিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বইও এখন পর্যন্ত আসেনি। এতে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে দীর্ঘসময় বইহীন থাকলে এর প্রভাব তাদের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলেও পড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে পুরনো বইয়ের দু-এক কপি ছিল। এগুলো দিয়ে এখন শিক্ষকরা কোনোমতে ক্লাস নিচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাছে বই না থাকায় তাদের বাড়ির কাজ দেয়া যাচ্ছে না। তবে শহরের চাইতে গ্রামের শিক্ষার্থীরা আরও বিপাকে পড়েছে।’

গত সপ্তাহে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের সঙ্গে বৈঠকেও বই না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্কুল, মাদ্রাসা, ভোকেশনাল, ইংরেজি ভার্সন মিলিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে সিলেট জেলায় পাঠ্যবইয়ের মোট চাহিদা ছিল ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ১৪৪ সেট। এরমধ্যে পাওয়া গেছে ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৮ সেট। ফলে এখনও দুই লাখ দুই হাজার ৬০৬ সেট বইয়ের ঘাটতি রয়েছে। জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলগুলোর চাহিদা ছিল ৪০ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৮ সেট। এরমধ্যে পাওয়া গেছে ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ৪২ সেট।

বই না পাওয়ায় ক্লাসেও তেমন পড়ানো হয় না জানিয়ে সিলেটের গোটাটিকর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আবু তাহের বলেন, ‘বই না থাকায় গণিত, বাংলা ও ধর্ম ক্লাসে তেমন পড়ানো হয় না। কিছু কিছু পড়ালেও আমরা তা বুঝতে পারি না। বিশেষত গণিতের একটি অধ্যায়ও এখন পর্যন্ত শেষ করা যায়নি।’

সাড়ে তিন মাসেও বই না আসায় সিলেট অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ঝর্ণা দেব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এক বছর পর এসএসসি দেবে। তাদের বই সবার আগে আসা উচিত ছিল। অথচ এখন পর্যন্ত গণিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বইও আসেনি। এই ক্ষতি কীভাবে পোষানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রমজানের ছুটির পরই তো পরীক্ষা শুরু হবে। বই না পেলে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে কীভাবে।’

আব্দুর রশিদ নামের আরেক অভিভাবক বলেন, ‘পুরনো বই থেকে ফটোকপি করে মেয়েকে পড়তে দিয়েছি। কিন্তু নতুন বইয়ে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না তা তো জানি না। ফলে এ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি।’

এবার শুরু থেকেই বই নিয়ে সংকট দেখা দেয়। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের হাতেই পাঠ্যবই নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে কয়েক ধাপে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শতভাগ বই হাতে পায় শিক্ষার্থীরা।

তবে এখন ৯৫ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে গেছে জানিয়ে সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘কিছু বই এখনও আমরা পাইনি। বিশেষত নবম শ্রেণির তিনটি বই। এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে।’

দু-একদিনের মধ্যে চাহিদার সব বই পৌঁছে যাবে জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট অঞ্চলের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহমদ বলেন, ‘রমজানের আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
১০ টাকায় বই
বইমেলায় প্রয়াত সাব্বিরের ‘টিপবতীর নীল টিপ’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
দুই মন্ত্রীর বইমেলায় যাওয়া আকস্মিক স্থগিত
হামলার হুমকি, বইমেলার সব প্রবেশপথে নিরাপত্তা জোরদার
পাঠকের পদচারণায় প্রাণবন্ত নরসিংদী বইমেলা

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Farmers are losing market due to contractors abandoning the bridge work

ঠিকাদার সেতুর কাজ ফেলে রাখায় বাজার হারাচ্ছেন কৃষকরা

ঠিকাদার সেতুর কাজ ফেলে রাখায় বাজার হারাচ্ছেন কৃষকরা হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ব্রিজের নির্মাণ কাজ দুই বছর ধরে বন্ধ। কোলাজ: নিউজবাংলা
এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছির বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় করোনার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। পরে অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ হয়। ব্রিজের কাজ মূলত ৮০ শতাংশ শেষ। এখন অর্থছাড় হওয়ায় দ্রুত কাজ শুরু করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এরপরও তিনি শুরু না করায় কার্যাদেশ বাতিলের জন্য নোটিশও দেয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।’

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর-মনতলা সড়কের কৃষ্ণপুর ব্রিজের নির্মাণ কাজ দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হলেও কোনো এক কারণে কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্রিজটি সম্পন্ন না হওয়ায় বিকল্প একটি ছোট কাঠের সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। এতে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা। বিশেষ করে সেখানে উৎপাদিত সবজি পরিবহনের ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও পাইকাররা। নষ্ট হচ্ছে এ অঞ্চলের সবজির বাজার।

হবিগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জানায়, মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর-মনতলা আঞ্চলিক সড়কের কৃষ্ণপুর এলাকায় ছড়ার ওপর পুরোনো ব্রিজটি ২০১৯ সালে পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যায়। এরপর সেখানে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২০ সালের শুরুর দিকে ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫ মিটার দীর্ঘ ব্রিজটির দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। কাজ পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাসান কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কাজ শুরু হলেও করোনা মহামারির কারণে কিছুদিন পরই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২০২১ সালে পুনরায় কাজ শুরু হয়। ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হলেও কোনো এক কারণে কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর দীর্ঘ দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়কে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষ।

সড়কটি দিয়ে চলাচল করেন জগদীশপুর, চৌমুহনী, মনতলা ও বহরা ইউনিয়নের জনসাধারণ। ইউনিয়ন চারটি সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর এখানে অন্তত ৭ থেকে ৮ শো কোটি টাকার সবজি উৎপাদন হয়। অথচ এই ব্রিজটির কারণে এখানে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগের পাশাপাশি বাড়ছে খরচও। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের পাইকাররা এই এলাকা থেকে সবজি কিনতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

এই পথে নিয়মিত চলাচল করেন একটি বেসরকারি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মী মো. সাইফ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে এই ব্রিজটি এভাবে অর্ধেক কাজ করে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে ছোট কাঠের সেতু দিয়ে খাল পার হতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া বৃষ্টি হলে এই পথটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক মিয়া বলেন, ‘এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ব্রিজটি ভাঙ্গা থাকার কারণে তারা অনেক কষ্ট করে চলাচল করেন। রোগী নিয়ে হবিগঞ্জ শহরে যাওয়ার কোনো অবস্থা নেই। রোগীকে নামিয়ে কোলে করে খাল পার হতে হয়। দ্রুত ব্রিজটির কাজ শেষ করার জন্য আমি অনুরোধ জানাই সরকারকে।’

স্থানীয় কৃষক মোতালিক মিয়া বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অনেকগুলো ট্রাক ভরে সবজি যেত হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে। পাইকাররা এসে ট্রাক ভরে ভরে সবজি নিয়ে যেতেন। কিন্তু দুই বছর ধরে ব্রিজ ভাঙ্গা থাকার কারণে সিলেট অঞ্চলের কোনো পাইকার আসেন না। তাদের সবজির ট্রাক আরও অন্তত ৭০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এতে তাদের লোকসান হয়।’

মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার এখানে চারটি ইউনিয়ন মূলত সবজির জন্য বিখ্যাত। বছরে বারো মাসই এখানে নানা ধরনের সবজির চাষ হয়। কিন্তু পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হয়। আমরা বারবার ঠিকাদার ও এলজিইডির সঙ্গে কথা বলেও ব্রিজটি সম্পন্ন করতে পারিনি।’

এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সাড়া মেলেনি।

এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছির বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় করোনার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। পরে অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ হয়। ব্রিজের কাজ মূলত ৮০ শতাংশ শেষ। এখন অর্থছাড় হওয়ায় দ্রুত কাজ শুরু করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এরপরও তিনি শুরু না করায় কার্যাদেশ বাতিলের জন্য নোটিশও দেয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।’

আরও পড়ুন:
আশাশুনির সেই বেইলি ব্রিজে যান চলাচল স্বাভাবিক
আশাশুনিতে বেইলি ব্রিজের পাটাতন ভেঙে যান চলাচল বন্ধ
পয়লা জুলাই থেকে টোল নয় পোস্তগোলা ব্রিজে
ভোলা-চরফ্যাশন সড়ক বিচ্ছিন্ন
ব্রিজ ভেঙে খালে পিকআপ, বন্ধ যান চলাচল

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Fake cervical cancer vaccine in the body of 6 thousand women

৬ হাজার নারীর দেহে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন

৬ হাজার নারীর দেহে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন উদ্ধার হওয়া নকল ভ্যাকসিনের বিভিন্ন উপাদান। ছবি: নিউজবাংলা
গত তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিনের এ্যাম্পল খুলে অন্তত ১০টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন বানিয়ে বিক্রি করছে একটি চক্র।

একটি ভ্যাকসিনের তিন ডোজ নিলে কখনই জরায়ু ক্যানসার হবে না- এই প্রচারণা চালিয়ে গাজীপুরে ছয় হাজারের বেশি নারীর দেহে তিনটি করে নকল ভ্যাকসিনের ডোজ দেয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনটি বানানো হয়েছে আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিন থেকে।

গত তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিনের এ্যাম্পল খুলে অন্তত ১০টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন বানিয়ে বিক্রি করছে একটি চক্র।

হেপাটাইটিস-বি-এর ভ্যাকসিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে দেহে পুশ করার পর তা মানবদেহে ইমিউনিটি তৈরি করে। এক ভ্যাকসিন খুলে ১০টি ভ্যাকসিন বানালে এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। এ ছাড়া ভ্যাকসিনের এ্যাম্পল খুলে অন্য এ্যাম্পলে প্রবেশ করানোর সময় নতুন করে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে চোরাই পথে হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিন জিন ভ্যাক-বি নিয়ে আসে চক্রের সদস্যরা। চোরাইপথে এই ভ্যাকসিনের এক এ্যাম্পল বাংলাদেশে নিয়ে আসতে খরচ হয় ৩৫০ টাকা। একটি এ্যাম্পল খুলে ১০টি এ্যাম্পলে প্রবেশ করানো হয়। নতুন এ্যাম্পলগুলোতে লাগিয়ে দেয়া হয় জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের লেভেল।

লেভেল লাগানোর পর জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের প্রতিটি এ্যাম্পল বিক্রি করা হয় আড়াই হাজার টাকা করে। গাজীপুরে ছয় হাজার নারীর কাছে জনপ্রতি তিনটি করে ১৮ হাজার এ্যাম্পল ভ্যাকসিন বিক্রি করে চক্রের সদস্যরা হাতিয়ে নিয়েছেন সাড়ে চার কোটি টাকা।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ রাজধানীসহ পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে বুধবার এই প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন- সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহম্মেদ, আল আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম।

পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘চক্রটি সুনির্দিষ্ট কিছু ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পেইন চালিয়ে জরায়ু ক্যানসারের নকল এই ভ্যাকসিনগুলো বিক্রি করেছে। নকল ভ্যাকসিন এই নারীদের দেহে পুস করার মাধ্যমে মৃত্যুঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হতে পারে।’

যেভাবে বানানো হয় নকল ভ্যাকসিন

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের মাধ্যমে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পেরেছে, নকল ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ভারত থেকে চোরাইপথে হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিন জিন ভ্যাক-বি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন সাইফুল ইসলাম শিপন। ফজর আলী নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে ভ্যাকসিনগুলো সংগ্রহ করে ঢাকার দক্ষিণখান ও কেরানীগঞ্জে মজুত করা হয়।

পরবর্তীতে ভ্যাকসিনের এ্যাম্পলগুলো খুলে নতুন এ্যাম্পলে প্রবেশ করানো হয়। হেপাটাইটিস-বি-এর এক এ্যাম্পল খুলে এক মিলিগ্রাম করে প্রবেশ করানো হয় নতুন ১০টি এ্যাম্পলে। নতুন এ্যাম্পলগুলোতে মোড়ক লাগানো হয় জয়ায়ু ক্যান্সারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের নাম করে।

তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. গোলাম সবুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই চক্রের সদস্যরা ভ্যাকসিনগুলো বিক্রি করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এমন তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আমাদের জানিয়েছে।’

গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মিরপুর দারুস সালামের ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন, দক্ষিণখানের আল নূর ফাউন্ডেশন ও চেরাগআলীর পপুলার ভ্যাকসিনেশন সেন্টারের মাধ্যমে নকল জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিনগুলো বিক্রি করে আসছিল চক্রটি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই তথ্যগুলো আরও যাচাই করে এর বাইরেও কারা কারা জড়িত আছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

আরও পড়ুন:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা ভ্যাকসিন বাহকরা
টিকা নিতে বাধ্য করা যাবে না: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
দুই ডোজ টিকা নিলে টেস্ট ছাড়া দেশে প্রবেশ

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Search for 12 cases against Arab who called Shakib to Dubai

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ দুবাইয়ে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খানের জুয়েলারি শপ উদ্বোধনে সাকিব আল হাসান। সাকিবের বাঁ পাশে (দ্বিতীয়) আরাব খান। ছবি: সংগৃহীত
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, রবিউলের বিরুদ্ধে মামলার নথি খুঁজতে গিয়ে মিলেছে ১২ মামলার তথ্য। হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ অন্যান্য ধারায় করা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো জারি হয়। এসব মামলার তথ্য সন্নিবেশিত করে ইন্টারপোলের কাছে একটি আবেদন পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

দুবাইয়ে জুয়েলারি শপ খুলে তা উদ্বোধন করতে বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানসহ বেশকিছু তারকাকে ডাকা আলোচিত আরাব খানের বিরুদ্ধে সবমিলিয়ে ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এই আসামিকে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি রবিউল ইসলাম হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি ওই মামলাগুলোর ব্যাপারেও নিশ্চিত হয়েছে। প্রত্যেকটি মামলাতেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিবি বলছে, গোপালগঞ্জ কোটালিপাড়ার যুবক রবিউল নাম, জাতীয়তা পাল্টিয়ে বাগিয়ে নিয়েছেন ভারতের পাসপোর্ট। আর এই পাসপোর্টেই পাড়ি জমিয়েছেন দুবাইয়ে। তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ পুলিশ।

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ
আরাব খান। ফেসবুক থেকে নেয়া

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, রবিউলের বিরুদ্ধে মামলার নথি খুঁজতে গিয়ে মিলেছে ১২ মামলার তথ্য। হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ অন্যান্য ধারায় করা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো জারি হয়। এসব মামলার তথ্য সন্নিবেশিত করে ইন্টারপোলের কাছে একটি আবেদন পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইয় তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’

রবিউল ওরফে আরাব দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সম্প্রতি আলোচনায় আসেন বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে দিয়ে দুবাইয়ে তার শোরুম উদ্বোধন করা হবে- এই ঘোষণার মাধ্যমে। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকেও সে দেশে নেয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি।

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ
হত্যার শিকার পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণাটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেন গোয়েন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে যাকে খোঁজা হচ্ছিল তিনি দুবাইয়ে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ‘আরাব জুয়েলার্স’ নামে সোনার দোকান দিতে যাচ্ছেন। কিনেছেন বাড়ি-গাড়ি।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রবিউল ২০১৮ সালে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার ফেরারি আসামি। ২০২০ সালে তিনি দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গিয়েজালিয়াতির মাধ্যমে সেখানকার পাসপোর্ট গ্রহণ করেন, যাতে নাম দেন আরাব খান।

একই বছরে রবিউল প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে চাঁদপুরের যুবক আবু ইউসুফকে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। ইউসুফ পরিচয় গোপন করে আদালতে নিজেকে রবিউল ইসলাম বলে পরিচয় দিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।

আদালত জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ইউসুফ তার নিজের পরিচয় ফাঁস করে দেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তদন্তেও বিষয়টি উঠে আসে।

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি মো. রবিউল ইসলাম, যিনি আরাব খান নামে নিয়েছেন ভারতের পাসপোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

পরিচয়ের স্বপক্ষে যথাযথ কাগজ আদালতে উপস্থাপনের মাধ্যমে হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তি পান ইউসুফ, তবে রবিউলের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় তার নামে আরও দুটি মামলা হয়, যা এখন চলমান।

ডিএমপি ডিবি সূত্রে জানা যায়, এক পর্যায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রবিউল নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় আরাব খান, বাগিয়ে নেয় ভারতের পাসপোর্ট। ২০২১ সালে পেয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকার অনুমতি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে বুর্জ খলিফায় ৬৫ তলায় ফাউন্টেইন ভিউ ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান আরাব।

এরই মধ্যে ঘোষণা আসে, উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আরাবের গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি স্বর্ণ দিয়ে।

সাকিবকে দুবাইয়ে ডাকা আরাবের বিরুদ্ধে ১২ মামলার খোঁজ
উদ্বোধন করা হয়েছে জুয়েলারি শপ

বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে সাকিব আল হাসানকে জুয়েলারি শপটি উদ্বোধনের জন্য সেখানে যেতে দেখা গেছে। দেশি-বিদেশি শিল্পীদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন হয় ফেরারি আসামি রবিউল ওরফে আরাবের জুয়েলারি শপ।

আরও পড়ুন:
সাকিবকে দুবাইয়ে নিমন্ত্রণ জানানো আসামিকে নিয়ে কী জানা গেল

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
What is known about the accused who invited Shakib to Dubai?

সাকিবকে দুবাইয়ে নিমন্ত্রণ জানানো আসামিকে নিয়ে কী জানা গেল

সাকিবকে দুবাইয়ে নিমন্ত্রণ জানানো আসামিকে নিয়ে কী জানা গেল পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি মো. রবিউল ইসলাম, যিনি আরাব খান নামে নিয়েছেন ভারতের পাসপোর্ট। ছবি: সংগৃহীত
ডিএমপি ডিবি সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বরিউল নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় আরাব খান, বাগিয়ে নেয় ভারতের পাসপোর্ট। ২০২১ সালে পেয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকার অনুমতি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে বুর্জ খলিফায় ৬৫ তলায় ফাউন্টেইন ভিউ ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান আরাব।

‘আরাব জুয়েলার্স’ নামে একটি শোরুমের উদ্বোধন করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই গেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। একই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুবাই গেছেন দেশের এক ডজনের বেশি অভিনয়শিল্পী, গায়কও।

যার আহ্বানে সাকিবসহ অন্যরা দুবাই হাজির হয়েছেন, পাসপোর্টে তার নাম আরাব খান, কিন্তু ওই ব্যক্তির প্রকৃত নাম মো. রবিউল ইসলাম, যার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

রবিউল ২০১৮ সালে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার ফেরারি আসামি। ২০২০ সালে তিনি দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সেখানকার পাসপোর্ট গ্রহণ করেন, যাতে নাম দেন আরাব খান।

একই বছরে রবিউল প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে চাঁদপুরের যুবক আবু ইউসুফকে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। ইউসুফ পরিচয় গোপন করে আদালতে নিজেকে রবিউল ইসলাম বলে পরিচয় দিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।

আদালত জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ইউসুফ তার নিজের পরিচয় ফাঁস করে দেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তদন্তেও বিষয়টি উঠে আসে। পরিচয়ের স্বপক্ষে যথাযথ কাগজ আদালতে উপস্থাপনের মাধ্যমে হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তি পান ইউসুফ, তবে রবিউলের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় তার নামে আরও দুটি মামলা হয়, যা এখন চলমান রয়েছে।

ডিএমপি ডিবি সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রবিউল নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় আরাব খান, বাগিয়ে নেয় ভারতের পাসপোর্ট। ২০২১ সালে পেয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকার অনুমতি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে বুর্জ খলিফায় ৬৫ তলায় ফাউন্টেইন ভিউ ফ্ল্যাটের মালিক বনে যান আরাব।

এরই মধ্যে ঘোষণা আসে, উদ্বোধন হতে যাচ্ছে তার গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি সোনা দিয়ে।

আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন করবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

উদ্বোধনের ঘোষণা আসার পর বিষয়টি নজরে আসে ডিএমপি ডিবির।

ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’

রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’

ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হবে দুবাই সময় সন্ধ্যা ৭টায়। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি আরাবের।

তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গেছে, সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হযরতউল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, শ্রীলঙ্কার ইসুরু উদানা, বাংলাদেশি লেখক সাদাত হোসাইন, অভিনেত্রী দীঘি, আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম, চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী নোবেল, বেলাল খানসহ অনেকে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন। তাদের একটি বড় অংশ এরই মধ্যে দুবাইতে অবস্থান করছেন।

আরও পড়ুন:
স্থানীয় ব্যাটাররা ভালো ব্যাটিং করছে: সাকিব
দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পত্তি নিয়ে রিট
বিপিএলের যা-তা অবস্থা: সাকিব
গাল্ফ অয়েলের এক দিনের সিইও সাকিব
ব্যাংক হিসাব জব্দের হুমকিতে সাকিবের বন্ধ রেস্তোরাঁর ভ্যাট জমা

মন্তব্য

তোশাখানা কী

তোশাখানা কী চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বঙ্গভবনে তোশাখানা জাদুঘর উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি: রাষ্ট্রপতির কার্যালয়
রাষ্ট্রপতির কার্যালয় জানায়, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিদেশি দূত ও খ্যাতিমান ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ নানা ধরনের শিল্পকর্ম, স্মারক, ক্রেস্ট ইত্যাদি উপহার হিসেবে দেয়ার কারণে তোশাখানার সংগ্রহ দিন দিন বাড়তে থাকে।

তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো তার বাসভবনের সামনে অপেক্ষা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অন্যদিকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যানকে ঘিরে রেখে পুলিশ সদস্যদের প্রতিহত করে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা।

এমন বাস্তবতায় অনেকের মধ্যেই তোশাখানা বিষয়টি কী, তা নিয়ে জানার আগ্রহ জাগতে পারে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে তোশাখানা সম্বন্ধে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়, তোশাখানা অর্থ এমন একটি ভান্ডার যেখানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন রকমের মহামূল্যবান উপহার সামগ্রী সংরক্ষিত থাকে। এসব উপহার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে দেশি বা বিদেশি তৈজসপত্র, স্মারক মুদ্রা, বিভিন্ন ধরনের স্মরণিকা, মহান ব্যক্তির প্রতিকৃতি অথবা আলোকচিত্র, শিল্পকর্ম, লোকশিল্প বা হস্তশিল্পের নমুনা।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় বঙ্গভবনে এমন একটি সমৃদ্ধ তোশাখানা রয়েছে, যেটি বঙ্গভবনের মানুক হাউজে অবস্থিত। এই তোশাখানা সংরক্ষণের জন্য ‘তোশাখানা সংরক্ষণ ও প্রশাসন বিধিমালা ১৯৭৪’ প্রণয়ন করা হয়। পরে এটি সংশোধন করে ‘তোশাখানা সংরক্ষণ ও প্রশাসন বিধিমালা ১৯৯০’ জারি করা হয় এবং ২০১২ সালে বিধিমালাটি ফের সংশোধন করা হয়।

স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রপ্রধানকে উপহার দেয়ার রেওয়াজ চালু হলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান বা খ্যাতিমান ব্যক্তিদের দেয়া উপহারসামগ্রী প্রদর্শনের জন্য এখানে সাজিয়ে রাখা হয়।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয় জানায়, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিদেশি দূত ও খ্যাতিমান ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ নানা ধরনের শিল্পকর্ম, স্মারক, ক্রেস্ট ইত্যাদি উপহার হিসেবে দেয়ার কারণে তোশাখানার সংগ্রহ দিন দিন বাড়তে থাকে। তোশাখানা থেকে আড়াই শ গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য দেয়া হয়। জাদুঘরের আধুনিক শিল্পকলা ও বিশ্বশিল্পকলা বিভাগ এসব সামগ্রী প্রদর্শন করছে।

দেশের সাধারণ মানুষ যাতে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানকে প্রদত্ত উপহারসামগ্রী দেখার সুযোগ পান, সে লক্ষ্যে ২০১৮ সালে বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের পাশে রাষ্ট্রীয় তোশাখানা জাদুঘর ভবন নির্মাণ করা হয়।

২০১৮ সালের ২২ আগস্ট বর্তমান তোশাখানা থেকে ৭২৬টি উপহার সামগ্রী সংরক্ষণ ও সর্বসাধারণের দেখার জন্য জাদুঘরে স্থানান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর নবনির্মিত রাষ্ট্রীয় তোশাখানা ভবনের উদ্বোধন করেন। বঙ্গভবনের মানুক হাউজ থেকে উল্লেখযোগ্য উপহারসামগ্রী সেখানে স্থানান্তর করা হয়।

চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে সংস্কারকৃত এয়ার রেইড শেল্টার ও তোশাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করেন।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Awami League leaders are running at the grassroots level

তৃণমূলে ছুটছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

তৃণমূলে ছুটছেন আওয়ামী লীগ নেতারা পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে দলের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জরিপের ফলের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যার পরই তৃণমূলমুখিতা বেড়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের এক বছরেরও কম সময় আগে তৃণমূলে ছুটতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সাংগঠনিক প্রয়োজনে দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকা সফরের পাশাপাশি নিজ নির্বাচনি এলাকায় যাতায়ত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জরিপের ফলের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যার পরই তৃণমূলমুখিতা বেড়েছে।

স্থানীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ না থাকলে কারও নির্বাচনে জেতার সুযোগ থাকে না বলে উঠে আসে জরিপের ফলে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার নির্বাচনি এলাকায় যাতায়াত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়িতে আয়োজিত মেজবানে প্রায় অর্ধলাখ নেতা-কর্মী নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তিনি। সেখানে মধ্যাহ্নভোজে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অংশ নেয়ার পাশাপাশি তাদের খোঁজখবর নেন কাদের।

ঢাকা থেকে নিজের আসনের মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন ওবায়দুল কাদের। মাসে অন্তত তিন থেকে চারবার নোয়াখালীতে যাচ্ছেন তিনি।

বেশ তৎপর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি নির্বাচনি এলাকাতেই থাকেন। নিয়মিতই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার ভোটাররাও হাজির হচ্ছেন নানকের রাজনৈতিক কার্যালয় ও বাসায়।

প্রতিদিনই ঢাকা-১৩ আসনের কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন নানক। সেখানে মধ্যরাত পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা ও দিকনির্দেশনা দেন তিনি। ভোটারদের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও দিয়ে থাকেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমানও নিয়মিতই যাচ্ছেন ফরিদপুরে নিজ এলকায়। এ ছাড়া স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোনে ইস্যুভিত্তিক যোগাযোগও করেন, যে কারণে নিজ আসনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শক্তিশালী যোগাযোগ রয়েছে তার।

দলের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম তার নির্বাচনি এলাকা কেরানীগঞ্জে সম্ভাব্য সব সামাজিক অনুষ্ঠান যোগ দেন। বিয়ে, জন্মদিন, মিলাদ মাহফিলে ডাক পেলেই যান তিনি।

কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এলাকার মানুষ নিয়েই আমার রাজনীতি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। যে কেউ যেকোনো বিষয়ে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে।

‘আমি এলাকার যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি, সাধ্যমতো মানুষকে সহযোগিতা করি।’

দলের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিয়মিত এলাকায় যান। দেশে থাকলে প্রতি সপ্তাহেই ছুটিতে যান চট্টগ্রাম। রাঙ্গুনিয়ার মানুষের ভালো-মন্দের খোঁজখবর নেন।

সরকারি বাসভবনে রাত ৮টার পর নিয়মিত এলাকার নেতা-কর্মীদের নিয়ে বসেন হাছান মাহমুদ। এর পাশাপাশি ভার্চুয়ালিও নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি।

দলটির আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায় যান নিয়মিত।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমও নির্বাচনি এলাকা মাদারীপুরে সুযোগ পেলেই যান। আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিও সুযোগ পেলে তার নির্বাচনি এলাকা চাঁদপুর-৩ আসনে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ইদানীং আগের তুলনায় অনেক বেশি যাতায়াত বাড়িয়েছেন তিনি।

মাহবুব উল-আলম হানিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতি নির্বাচন বা ইস্যুভিত্তিক করি না। রাজনীতির মূল কথাই হলো জনকল্যাণ। যারা আমাকে প্রতিনিধি নির্বাচন করে সংসদে পাঠিয়েছে, তাদের সুখ-দুঃখ, বিপদ-আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করি।’

গত ১২ জানুয়ারি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সভাপতি শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘এমপিদের আমলনামা দেখেই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হবে। জনগণের সঙ্গে যাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, তাদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ান, তারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন। জনবিচ্ছিন্নদের মনোনয়ন দেয়া হবে না।’

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দলটির সভাপতি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য জরিপ করেছেন। তার কাছে জরিপ প্রতিবেদন আছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রতিটি আসনে জরিপ চলছে। প্রতি ছয় মাস পর পর তা আপডেট করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে