লেনদেন শুরুর দ্বিতীয় দিনেও পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার শেয়ার কিনতে পারেননি আগ্রহী ক্রেতারা। লেনদেনের এক ঘণ্টায় ছয় কোটির বেশি শেয়ার কেনার প্রস্তাব থাকলেও ছিল না বিক্রেতা।
রোববার সকাল ১০টায় শুরু হয় পুঁজিবাজারের দিনের কার্যক্রম। লেনদেন শুরুর পাঁচ মিনিটেই ৫০ শতাংশ দাম বেড়ে সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করে রবি। আগের দিনের প্রতি শেয়ারে দাম ১৫ টাকা থেকে বেড়ে হয় সাড়ে ২২ টাকা।
পুঁজিবাজারের প্রতিটি কোম্পানির সার্কিট ব্রেকার আছে। মূলত এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ শতাংশ বাড়তে পারবে তা নির্দেশ করে এই সার্কিট ব্রেকার।
পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির লেনদেনে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে। তৃতীয় দিন থেকে এর সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ।
ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেনের এক ঘণ্টায় রবির ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসইতে) লেনদেনের শুরুতেই দিনের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায় রবির শেয়ার। এক ঘণ্টায় সিএসইতে ২৯ লাখ ১৬ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়। সাড়ে ২২ টাকায় শেয়ার কেনার প্রস্তাব জমা পড়ে সাড়ে ৬৬ লাখের বেশি।
রবি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। প্রথমদিন ১০ টাকার শেয়ার ১৫ টাকায় লেনদেন হয়েছিল মাত্র এক লাখ ১৭ হাজার ১৬২টি শেয়ার।
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী নাজমুল আহসান নিউজবাংলাকে বলেন, রবির আর্থিক অবস্থা কিছুটা দুর্বল হলেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আছে। কিন্তু কেউ শেয়ার বিক্রি করছেন না। আশা করছি, সোমবার থেকে দাম বৃদ্ধির সীমা কমলে কিছু মানুষ শেয়ার বিক্রি করবেন।
রবি ১০ টাকা মূল্যের ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার বাজারে ছেড়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তুলেছে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এর মাধ্যমে টানা তিন মেয়াদে এ পদে বসছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রোববার দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হয়। ভোটের ফল গণনা শেষে এরদোয়ানকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বলে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুর বরাতে জানিয়েছে আল জাজিরা।
৯৭ শতাংশ গণণা শেষে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, এরদোয়ানের পক্ষে ভোট পড়েছে ৫২ দশমিক ১ শতাংশ আর তার প্রধান বিরোধী কেমাল কিলিচদারওলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।
গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফা নির্বাচনে একে পার্টির প্রধান রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান কিংবা তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সিএইচপির নেতা কেমাল কিলিচদারওলুর কেউই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ভোট গড়ায় দ্বিতীয় দফায়।
রোববারের ভোটের ফলের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর ক্ষমতায় থাকা মূলত জাতীয়তাবাদী, রক্ষণশীলদের প্রিয় পাত্র ৬৯ বছর বয়সী এরদোয়ান আরও ৫ বছরের জন্য ক্ষমতা পেলেন।
প্রথম দফা নির্বাচনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান পান ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারওলু পান ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। ওই দফায় ৫ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পাওয়া সিনান ওগান সমর্থন দিয়েছেন এরদোয়ানকে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রথম দফায় নির্বাচন নিয়ে যে উত্তাপ ছিল, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সেটি অনেক কমে আসে। ভোটারদের অনেকে শুরুর দফার মতো আগ্রহ পাননি বলে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন।
সবমিলিয়ে দ্বিতীয় দফায় তুরস্কে ভোট দিয়েছেন ৬ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ। ভোট পড়েছে ৮৫ শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন:গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান। সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত এই মেয়র প্রার্থীর পরাজয় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা বেরিয়ে এসেছে মোদ্দা কথায় তা হলো- আওয়ামী লীগের একাংশের অসহযোগিতা আর প্রতারণার বলি হয়েছেন নৌকার এই প্রার্থী।
দলীয় কোন্দল, দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র (বরখাস্ত) জাহাঙ্গীর আলমের বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক, গাজীপুর মহানগরে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকা, কেন্দ্রীয় প্রচার প্রতিনিধি দলের কার্যকর ভূমিকা না থাকা, নৌকার এজেন্ট সেজে প্রতারণা- এসব কারণে আজমত হেরে গেছেন বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
আজমত উল্লা খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, মূলত নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরের অবৈধ টাকা এবং এর সুবিধাভোগীদের দলীয় প্রার্থীকে অসহযোগিতার কারণে ভোটে ইতিবাচক ফল আসেনি।
তিনি বলেন, গাছা ও টঙ্গী এলাকাকে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথচ গাছাতেই হেরে গেছেন আজমত। পাশাপাশি গাজীপুর মহিলা লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকীর এলাকা কালীগঞ্জেও হেরেছেন দলীয় প্রার্থী।
উদাহরণ তুলে ধরে তিনি জানান, গাছায় মোট প্রদত্ত ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ২২ হাজার ৭৮৩। সেখানে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৫৫। একইভাবে সদরে নৌকা ২১ হাজার ৫৪৭ ভোট পেয়েছে। এর বিপরীতে টেবিল ঘড়িতে গেছে ৪১ হাজার ৯৭৭ ভোট। এই দুই এলাকার সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ দলীয় এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। কালীগঞ্জে নৌকা পেয়েছে ১৫ হাজার ৫০৪ ভোট। আর টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ২০ হাজার ১৪৩ ভোট।
গাজীপুরের সন্তান প্রভাবশালী ওই নেতা বলেন, ‘এই জেলায় আওয়ামী লীগে চারটি ভাগ। একটি স্বয়ং আজমত উল্লা খান। আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের। অপরটি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের এবং একটি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের।
‘এ নির্বাচনে আজমত উল্লা ও মোজাম্মেল হকের অংশ কাজ করলেও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অংশ যে সঠিকভাবে কাজ করেনি তা ভোটের অংকেই প্রমাণিত। আর জাহাঙ্গীরের কথা বলাই বাহুল্য।’
প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পান ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। সে হিসাবে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হন।
জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তবে তিনি এখন দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আজমত উল্লা খানের নির্বাচনী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ওসমান আলী বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের তেমন এজেন্ট ছিল না। জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী-সমর্থকরা নৌকার ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে টেবিল ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছেন।
‘দৃশ্যত তারা ছিলেন নৌকার কর্মী। কিন্ত কাজ করেছেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে। আর এটা হয়েছে এ কারণে যে তারা জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে সুবিধাভোগী। সেটা মেয়র থাকাকালীন এবং ব্যবসাগত কারণে। অনেকে নৌকার ব্যাজ পরে কেন্দ্রে গোপনে জাহাঙ্গীরের এজেন্টের কাজ করেছেন। আসলে সমস্যা শুধু নেতাকর্মীরাই নয়, সমস্যা জাহাঙ্গীরের অনেক টাকাও। টাকায় ভোট কিনে নিয়েছেন তিনি।’
ওসমান আলীর এ বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা টিমের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘বড় কারণ দলের বিরাট অংশ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেয়নি। আর একটি কারণ হলো বিএনপির পুরো ভোটই বিজয়ী প্রার্থী পেয়েছেন।’
সাবেক কাউন্সিলর ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা নিউজবাংলাকে জানান, বাহ্যিকভাবে অনেক কেন্দ্রে টেবিল ঘড়ির এজেন্ট ছিলো না। তবে বাস্তবে ওইসব কেন্দ্রে নৌকারই এজেন্ট ছিলো না। কেননা নৌকার এজেন্ট সেজে অনেকেই টেবিল ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল এক নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা সর্বজনবিদিত যে জাহাঙ্গীর যতটা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন তার চেয়েও বেশি সম্পর্ক রাখতে জামায়াত ও হেফাজতের সঙ্গে। এবার সেসব ভোট তার মা পেয়েছেন। সেসঙ্গে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় তাদের ভোটও সব পেয়েছেন তিনি।
‘গাজীপুরে কাজ করতে গিয়ে মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমন্বয়ের অভাব শেষ পর্যন্ত দূর করা সম্ভব হয়নি।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক উপপরিচালককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনসী আবদুল মজিদ শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম–২ এর উপপরিচালকের (প্রশাসন ও অর্থ) হিসেবে দায়িত্বরত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শাহাদাত হোসেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালী চট্টগ্রামের আউটার লিংক রোড প্রকল্পে ভুয়া জমির মালিক সাজিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের নামে ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শাহাদাত হোসেনসহ ১৫ জন সার্ভেয়ার ও কানুনগোকে আসামি করে মামলা দায়ের করে দুদক।
তদন্ত শেষে আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় দুদক। কিন্তু আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে আসামিদের অপরাধ আমলে নেয়। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই রোববার শাহাদাত হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খান।
রোববার বিকেলে গণভবনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব হাসান জাহিদ তুষার বাসসকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এ সময় আজমত উল্লা তার লেখা দুটি বই প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। বই দুটি হচ্ছে-‘রাজনীতির মহাকবি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ আদর্শ ব্যক্তি ও জাতি গঠনে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত’।
‘রাজনীতির মহাকবি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইটিতে বঙ্গবন্ধুর বংশপরিচয়, কেন তিনি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, বঙ্গবন্ধুর ইসলামি মূল্যবোধ ও চেতনা, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সংগ্রাম, শেখ মুজিব ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে গাজীপুরসহ শিল্পনগরী টঙ্গীবাসীর ভূমিকা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকার ও বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ আদর্শ ব্যক্তি ও জাতি গঠনে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত’ বইটিতে বঙ্গবন্ধু : নেতা ও নেতৃত্বগুণের জীবন্ত কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব, শেখ মুজিবুর রহমানের দায়িত্ববোধ ও সংগ্রাম, সাংগঠনিক দক্ষতা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ থেকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও শিক্ষা, শেখ মুজিবুর রহমানের সহনশীলতা ও দক্ষতা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণের পরিচয় ও জাতি গঠনের প্রেরণা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও জাতীয় নেতৃত্বের প্রতীক, ৭ মার্চের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তুতি, ২৫ মার্চের মধ্যরাতেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, সদ্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কাছে পরাজিত হয়েছেন আজমত উল্লা।
আরও পড়ুন:
সরকার অমানবিকভাবে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের খেলায় মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নিশি রাতের এই সরকার বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই কারাগারে রূপান্তরিত করেছে।
রোববার বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে রোববার তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ বর্তমান আওয়ামী অবৈধ সরকার এখন দিশেহারা। আর তাই বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং হত্যা ও গুম অব্যাহত রেখেছে।’
মির্জা ফখরুল রোববার রাজধানীর একটি হোটেল থেকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এ ধরনের অপকর্ম সরকারের চলমান প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। আব্দুর রহমান চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার সেই চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
সভা-সমাবেশে যারা বাধা দেবে, তাদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, ‘আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য বা আওয়ামী লীগের কেউ যদি গণতান্ত্রিক চর্চায় সভা-সমাবেশে বাধা দেয় বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদের ছবি তুলে নাম লিখে রাখুন। তাদের বিরুদ্ধে দেশেও ব্যবস্থা হবে, বিদেশেও হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এদের (বাধা দানকারীর) ভিসা বাতিল করা হবে। শুধু আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা নয়, আমরাও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেব।’
জনসভায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন ও শরীফুল আলম।
আরও পড়ুন:‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে আওয়ামী লীগকে আক্রমণকারী হিসেবে দেখাতে চায়। আর সেজন্য দলটি আক্রমণের নাটক সাজাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন অভিযোগ করেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার এক যৌথ সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো অবস্থাতেই আক্রমণকারী হবে না। তবে আক্রমণের শিকার হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার পথে অন্তরায় কেউ যেন বাধা দিতে না পারে। এটা প্রমিন্যান্ট দিক। এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।
‘আইন করে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছি। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। তবে তাতে বাধা দেবে বিএনপি। ইতোমধ্যে তারা ঘোষণা দিয়ে বাধা দিচ্ছে। কেরানীগঞ্জ ও খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
‘আমরাও দেখব কী হয়, আর কী না হয়। ভিসা নীতিতে তো তত্ত্বাবধায়ক নেই, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নেই, সংসদের বিলুপ্তি নেই। ওদের বিচার করুক।’
দলীয় কর্মসূচিতে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই অন্যতম নীতিনির্ধারক।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত সারাদেশে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। প্রয়োজনে ওয়ার্ড পর্যন্ত কর্মসূচি দিতে হবে।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রমণ করলে ছেড়ে দেব না। অনেক সহ্য করেছি, অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘নোংরা রাজনীতি তারাই করে যাদের রাজনীতি নোংরা। এই নষ্ট রাজনীতি, অপশক্তির হাতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। এই অপশক্তির হাতে এত রক্তের বিনিময় অর্জিত বাংলাদেশকে তুলে দিতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশে দেশে যাচ্ছেন দেশের প্রয়োজনে, নিজের জন্য নয়। জাপান, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাজেট সহযোগিতা দিচ্ছে। কাতারের আমির জ্বালানি সরবরাহে সহযোগিতা দিতে চেয়েছেন।
‘প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে বাংলাদেশের ঘরে যা আসছে, আজকে বাজেট সহযোগিতার যে আশ্বাস মিলছে সেটা বিএনপি নামক দলটির অন্তর্জ্বালার কারণ। কারণ দলটি বাংলাদেশের ভালো চায় না।’
যৌথ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য