করোনা পরিস্থিতিতে কেমন আছে দেশের অর্থনীতি, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ দেশের সামনে- এসব নিয়ে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা–পিআরআই ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা এবং ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন করোনাকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ২০২২ সালের মধ্যে আগের চেহারায় ফিরবে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, খেলাপিঋণ, ব্যাংক খাত, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবু কাওসার।
করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
করোনার প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারলেও আগের অবস্থায় এখনও ফেরেনি। এত দ্রুত সম্ভব নয়। কারণ, করোনা সংক্রমণ দেশে ও বহির্বিশ্বে ফের বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা গেছে। করোনা স্থায়ী হলে এর প্রভাব আরও বেশি সময় চলবে। আমি মনে করি, ২০২২ সালের প্রথম দিকে দেশের অর্থনীতি আগের চেহারায় ফিরবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর গতি ফের শ্লথ হয়ে গেছে। আপনি কী মনে করেন?
বিশ্বব্যাপী যে চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে বাংলাদেশ তার বাইরে নয়। দুইভাবে দেশকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রভাবিত করবে, প্রথমত: আমাদের প্রধান রফতানি বাজার ইউরোপ এবং আমেরিকায় ফের লকডাউন শুরু হয়েছে। ফলে মানুষের মনে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
করোনার ব্যাপকতা ওই সব দেশে বেড়ে গেছে। মৃত্যু হারও বাড়ছে। ফলে বহির্বিশ্ব থেকে দেশের রফতানি খাতে আরেকটা ধাক্কা আসবে। দ্বিতীয়ত: দেশের অভ্যন্তরেও করোনার বিস্তার বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতি দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে একটা ধাক্কা দিচ্ছে।
লকডাউন না থাকায় প্রভাব কম হচ্ছে। আগে একটা ধারণা ছিল, আগামী মার্চ থেকে জুনের মধ্যে করোনার প্রভাব থেকে বের হতে পারব, কিন্তু তা থেকে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে। দ্বিতীয় ঢেউ না এলে হয়তে কিছু ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হতো পারত। এখন দেখা যাচ্ছে, করোনার পুরোপুরি প্রভাব থেকে বের হয়ে আসা ২০২২ সালের আগে সম্ভব নয়।
ভ্যাকসিন বিতরণে এখনও কার্যকর পরিকল্পনা দেখছি না। ভ্যাকসিন আসার পর ফ্রেব্রুয়ারি–মার্চের দিকে বিতরণ শুরু হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এটা চলবে এক থেকে দেড় বছর। সে ক্ষেত্র আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমেরিকা হয়ত ছয় মাসের মধ্যে তাদের ভ্যাকসিন বিতরণ কার্যক্রম শেষ করে ফেলবে। আমরা সেটা পারব না। আমাদের সময় লাগবে।
দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারের বাড়তি প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আরও প্রণোদনা দেয়ার দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
ছোট পরিসরে আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ নেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে রফতানি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের জন্য। জিডিপির বিবেচনায় কৃষির পরেই এসএমই হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় খাত। কাজেই, এ খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য বাড়াতে হবে ঋণ।
অভিযোগ উঠেছে প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বড় ব্যবসায়ীরা তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। ক্ষুদ্র উদ্যেক্তারা তেমন পচ্ছেন না। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নেয়া ঋণের প্রায় পুরোটাই ব্যবহার করেছে। এ খাতে ব্যবহার খুব দ্রুত হয়েছে এবং ফলও পাওয়া গেছে। এর ফলে রফতানি খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজ ভালোভাবে কাজ করায় ইতিবাচক ফল এসেছে।
বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া সহজ। তাদের ঋণের পরিমাণ গড়ে ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার বেশি। বড় ঋণ অনুমোদন দেয়া ব্যাংকের জন্য সহজ। সমস্যা হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এসএমই প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে। ঋণ বিতরণে কিছু ব্যাংক এগিয়ে থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা পারছে না।
ওইসব ব্যাংকের হয়ত এসএমই কার্যক্রম সেভাবে নেই। সব ব্যাংকই এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে পারবে তা ভাবা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংককে বলব, যারা সফলভাবে পারছে, তাদের মাধ্যমে আরও বেশি ঋণ দেয়া হোক। তা হলে এসএমইতে ঋণের প্রবাহ বাড়বে।
করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এ অর্জনকে কীভাবে দেখছেন?
দুর্বল অর্থনীতিতে রিজার্ভ বাড়ে। এটা অনেক দেশেই পরীক্ষিত। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনার কারণে জিডিপি ১০ শতাংশ কমে গেছে।
ফলে তাদের রিজার্ভ দ্রুত বাড়ছে। কারণ হচ্ছে, যখন একটা দেশের অর্থনীতি দুবর্ল হয় তখন তাদের আমদানিও কম থাকে। আমদানি ব্যয় কম হলে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট বা লেনদেনের ভারসাম্য শক্তিশালী হয়।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। করোনাকালে কমে গেছে আমদানি। একইসঙ্গে আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী হওয়ায় বর্তমানে লেনদেনের ভারসাম্য একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছে। এসব কারণে বেড়েছে রিজার্ভ। রিজার্ভ বৃদ্ধি সামগ্রিক অর্থনীতির দুর্বলতারই লক্ষণ। এটা শক্তিশালী অর্থনীতির কারণ হয় না।
যদি আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি, আমদানি ও রফতানি আরও ভালো হতো এবং এসবের মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ত তাহলে সেটা হতো ভিন্ন চিত্র। সেই চিত্র পাচ্ছি না। দুর্বল অর্থনীতির অংশ হিসেবে রির্জাভের উল্লম্ফন দেখতে পারছি।
রেমিট্যান্সে যে পরিবর্তনটা দেখতে পারছি তা পরিষ্কার নয়। এই সময়ে পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে রেমিট্যান্স বাড়ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের কেন বাড়ছে?
অনেক কারণ হতে পারে। একটা কারণ হতে পারে প্রবাসীরা তাদের সঞ্চয় পাঠাচ্ছেন। অন্য কারণ হতে পারে, যারা স্থায়ীভাবে প্রবাসে বাস করছেন, দেশে তাদের আত্মীয়দের জন্য বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
তৃতীয়ত, দেশে সঞ্চয়পত্রসহ অন্যখাতে বিনিয়োগের জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন। চতুর্থত, এখন মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তড়িৎগতিতে রেমিট্যান্স পাঠানো যায়।
সবশেষ, দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা। সবমিলে রেমিট্যান্সে ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।
আইএমএফের সাম্প্রতিক ওয়ার্ল্ড আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর জিডিপি অর্জনে বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি। মাথাপিছু জাতীয় আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। এ সাফল্য সম্পর্কে কিছু বলুন।
ভারতে গত কয়েক বছর ধরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ভালো হয়নি। নোট বাতিল (ডিমনিটালাইজেশন), ভ্যাট প্রবর্তন, বিভিন্ন প্রদেশে দাঙ্গাহাঙ্গামাসহ নানা কারণে ভারতের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেই সঙ্গে আছে করোনার বিশাল ধাক্কা। করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পারেনি ভারত সরকার। এসব কারণে সমাজে অস্থিরতার পাশাপাশি ভারতে অর্থনীতি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমি মনে করি, নিজেদের আয়নাতে আমাদেরকেই দেখতে হবে। ভারতের সঙ্গে তুলনা করে লাভ নেই। ভারত যখন আবার, নিজেদের ঘুড়িয়ে নিতে পারবে, তখন হয়ত বাংলাদেশেকে পেছনে ফেলে সামনে চলে যেতে পারবে। ভারতের দিকে না তাকিয়ে আমাদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে না, সেটা আমরা জানি। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তা অর্জন করতে পারলে সেটি হবে দেশের জন্য বড় পাওনা।
তবে চলতি অর্থবছরের জন্য সরকারের প্রাক্কলিত ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কোনোমতেই সম্ভব নয়। চীনের অর্থনীতি পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও চীনের প্রবৃদ্ধি হবে এবার ২ শতাংশ।
কাজেই বাংলাদেশে এবার ২ থেকে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলে সেটিই বড় অর্জন বলে আমি মনে করি। তবে আপেক্ষিকভাবে ভারতের চাইতে ভালো আছে বাংলাদেশ। তারই প্রতিফলন ঘটেছে মাথাপিছু জাতীয় আয়ের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা ভালো। ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল আছে। এটা একটা ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে। পক্ষান্তরে ভারতের মুদ্রার মান আমাদের চেয় কমে গেছে। যে কারণে বাংলাদেশের তুলনায় পিছিয়ে ভারত।
করোনাকালে নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশাধ না করলেও খলাপি বলা যাবে না। ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনেকই সমালোচনা করে বলেছেন, খেলাপিদের আরও ছাড় দিয়েছে সরকার। অর্থমন্ত্রী বলেছেন ব্যবসার স্বার্থে এ ছাড় দেয়া হয়েছে। আপনি কি মনে করেন?
করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের আরও সহায়তা দরকার। এই সময়ে ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশ এ ধরনের সুবিধা দিয়েছে। বাংলাদেশ একই নীতি অনুসরণ করছে।
আমি মনে করি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ সুবিধা ডিসেম্বর পর্যন্ত আছে। এটাকে বাড়িয়ে আগামী মার্চ-জুন পর্যন্ত করা যেতে পারে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলায় এর প্রয়োজন রয়েছে।
ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি বহু পুরনো। সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে সরকার। ব্যাংক কমিশন গঠন করা উচিত বলে কি আপনি মনে করেন?
কমিশন সরকার করুক আর না করুক, সমস্যা আছে এবং তা সমাধান করতে হবে। দুই-তিন বছর আগে সরকার কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। পরে এর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আমরা দেখেছি, ভারতে তিনটি ব্যাংক বসে গেছে গত কয়েক মাসে। এ পরিপ্রেক্ষিতে, ওই সব খারাপ ব্যাংককে একীভূত (মার্জার) করা হয়েছে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে।
বাংলাদেশেও একীভূত করতে হবে। ছোট ও দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে দিতে হবে বড় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে। দুর্বল ব্যাংকগুলো থাকার কোনো মানে হয় না। সরকারের উচিত হবে কোন ব্যাংক টেকসই হবে আর কোনটি হবে না- তা শনাক্ত করে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা।
রাজস্ব আদায়ে ধীর গতি কীভাবে বাড়ানো যায়?
আপৎকালীন সময়ে হঠাৎ করে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো যাবে না এবং এর জন্য অতিরিক্ত উদ্যোগ নেয়া ঠিক হবে না। সরকারকে বুঝতে হবে রাজস্ব আয়ে পতন একদিকে হয়নি। গত সাত-আট বছর ধরে চলছে। গত অর্থবছর নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ বছর সামান্য প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
এ বছর সরকারের প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৪০ শতাংশের বেশি। অবাস্তব এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব নয়। বর্তমানে রাজস্ব আয়ের যে প্রবণতা দেখা যায়, তা চলতে থাকলে অর্থবছর শেষে কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঘাটতি হবে। এই ঘাটতি কীভাবে কমানো যায় সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। সরকারের উচিত হবে বিশাল ঘাটতিকে সামনে রেখে কীভাবে ব্যয়কে পুনর্বিন্যাস করা যায় তার কর্মকৌশল ঠিক করা।
তবে এ বছর বাজেট ঘাটতি বাড়বে, তাতে উদ্বেগের কিছু নেই। ব্যয় বেশি সংকোচনের দরকার নেই। ঘাটতি বাড়িয়ে আপৎকালীন সময়ে পাড়ি দিতে হবে।
তবে এটাই শেষ নয়, আমাদের অবশ্যই রাজস্ব বাড়াতে হবে। রাজস্ব না বাড়ালে অচল হয়ে যাবে বাংলাদেশ। সরকারও অচল হয়ে যেতে পারে। সে জন্য রাজস্ব খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। আইন পরিবর্তন করতে হবে। প্রশাসনিক কাঠামো আধুনিক করতে হবে। এনবিআরসহ গোটা রাজস্ব বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন করতে হবে।
চাল, পেঁয়াজ, আলুসহ অনেক পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ছে। সরকার কি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না? বাজার স্থিতিশীল করতে কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
সরকারকে বুঝতে হবে চালের বাজারে ঘাটতি আছে। চালের বাজারে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। সে জন্য আমদানিকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমন ধান নেমে গেছে, তবু চালের দাম কমছে না। ব্যবসায়ীরা জানে এ বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল। সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুত নেই। এসব কারণে দাম বাড়ছে।
চালের দাম সহনশীল রাখতে হবে। এ জন্য আমদানি শুল্ক আরও কমানো বা প্রত্যাহার করতে হবে। তা হলে চাল আমদানি সহজ হবে।
শাক সবজির দাম নিয়ে চিন্তিত নই। আগামী ১৫ দিনে ২০ দিনে শাকসবজির সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম কমে যাবে। আলুর মৌসুমে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আলুর ফলন তেমন হবে না। পেঁয়াজের ফলনও ভালো হবে না। ভারত হয়ত পেঁয়াজ রফতানি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। সরবরাহ বাড়াতে পারলে দাম কমবে। এখানে মুদ্রা নীতি প্রয়োগ করে সরকারের কিছু করার নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আমার মনে হয় না। বাজারের ক্ষেত্রে সরকার হচ্ছে ঠুঁটো জগন্নাথ।
চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাস চলছে। সামনে অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ কী?
করোনাকে প্রতিরোধ করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। করোনা এখনও আমাদের সঙ্গে আছে এবং এর প্রভাবে আমাদের অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছে।
দ্বিতীয় ঢেউ আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনাকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ২০২২ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতি আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারবে বলে আমি আশাবাদী। এটা কিন্তু খারাপ নয়। যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে। ইউরোপ যাবে ২০২৩ এর শেষে। কাজেই আমরা ওই সব দেশের চেয়ে আগে স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে পারব। বিশ্বপ্রেক্ষাপটে সেটা হবে আমাদের বড় অর্জন। এজন্য ভ্যাকসিন বিতরণ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
আরও পড়ুন:২০২৫-২৬ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকায় সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ৪২টি ভাতা বা আয়ের উৎস করমুক্ত ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস করযোগ্য আয়ের আওতায় থাকবে।
এনবিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক হলেও, নির্দিষ্ট কিছু আয়ের ওপর তাদের কর দিতে হবে না। এসব করমুক্ত আয় মূলত কর্ম-সম্পর্কিত বিভিন্ন ভাতা ও ভ্রমণ সুবিধা।
করমুক্ত ঘোষিত ৪২টি আয়ের ধরন হলো- চিকিৎসা ভাতা, নববর্ষ ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, শিক্ষাসহায়ক ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, পোশাক ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, ধোলাই ভাতা, বিশেষ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, প্রশিক্ষণ প্রেষণ ভাতা, জুডিশিয়াল ভাতা, চৌকি ভাতা, ডোমেস্টিক এইড অ্যালাউয়েন্স, ঝুঁকি ভাতা, অ্যাকটিং অ্যালাউয়েন্স, মোটরসাইকেল ভাতা, আর্মরার অ্যালাউয়েন্স, নিঃশর্ত যাতায়াত ভাতা, টেলিকম অ্যালাউয়েন্স, ক্লিনার ও ড্রাইভার অ্যালাউয়েন্স, মাউন্টেড পুলিশ, পিবিএক্স, সশস্ত্র শাখা, বিউগলার ও নার্সিং ভাতা, দৈনিক/খোরাকি ভাতা, ট্রাফিক অ্যালাউয়েন্স, রেশন মানি, সীমান্ত ভাতা, ব্যাটম্যান ভাতা, ইন্সট্রাকশনাল অ্যালাউয়েন্স, নিযুক্তি ও আউটফিট ভাতা এবং গার্ড পুলিশ ভাতা।
করযোগ্য আয়, মূল বেতন, উৎসব ভাতা, বোনাস এসব আয়ের ওপর আয়কর আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হারে কর দিতে হবে।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে ৬৩.৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা রফতানি হবে বাংলাদেশ থেকে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এ ঘোষণা দেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লিখিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সমাপ্ত অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ বাংলাদেশ পণ্য খাতে ৫০.০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪৮.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৭% এবং পূর্ববর্তী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ৮.৫৮% বেশী।
সেবা খাতের লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫০ বিলিয়নের বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৫.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.১৩% বেশী।
অর্থবছরে রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণ, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, অংশীজনদের মতামত, বিগত অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এবং লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জনের হার ও পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ইত্যাদি পর্যালোচনাপূর্বক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে বস্ত্র ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘সরকার বিভিন্ন স্থলবন্দর প্রাইভেট সেক্টরের কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করছে। একই সঙ্গে, যেসব স্থলবন্দর থেকে সরকার কোনো রাজস্ব আহরণ করতে পারছে না, সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
শনিবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দর পরিদর্শনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ২৪টি স্থলবন্দর রয়েছে, যার মধ্যে ইতোমধ্যে চারটি স্থলবন্দর বন্ধ করা হয়েছে। আরো চারটি অলাভজনক স্থলবন্দর বন্ধের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘উন্নয়নশীল স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং ধাপে ধাপে এসব বন্দরের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
হিলি স্থলবন্দর সভাকক্ষে কাস্টমস, বন্দরের কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্যবসায়ীরা রাস্তা-ঘাট সংস্কার, ওয়্যারহাউজ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে দ্রুত সেসব সমাধানের অনুরোধ করেন।
উপদেষ্টা হিলি স্থলবন্দর ও কাস্টমস বিভাগের বিভিন্ন অবকাঠামো ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, রংপুর কাস্টমসের বিভাগীয় কমিশনার অরুন কুমার বিশ্বাস, হিলি কাস্টমসের সহকারী কমিশনার এ এস এম আকরামসহ আরো অনেকেই।
স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যাদি (ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল) বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ (১০ আগস্ট) হতে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
শনিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে টিসিবি।
টিসিবির উপপরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ছয়টি, কুমিল্লা মহানগরীতে তিনটি এবং ঢাকা জেলায় আটটি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় চারটি, পটুয়াখালী জেলায় পাঁচটি ও বাগেরহাট জেলায় পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ১০ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে। দৈনিক ট্রাক প্রতি ৫০০ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি (ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল) বিক্রয় কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
ভোক্তা প্রতি ভোজ্যতেল দুই লিটার ২৩০ টাকা, চিনি এক কেজি ৮০ টাকা এবং মসর ডাল দুই কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারীর কাছে বিক্রয় মূল্য আগের ন্যায় বহাল থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত বাংলাদেশি পণ্যে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর থেকে কার্যকর হয়েছে। ফলে এই সময়ের আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে তোলা পণ্য নতুন শুল্ক এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এ সুবিধা কাজে লাগাতে আগাম পণ্য পাঠিয়ে রফতানিকারকরা জোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, এই রফতানিতে জোয়ারের প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রফতানিকারকদের বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ৮০০ কনটেইনার রফতানি হচ্ছে। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের ১৯টি ডিপোতে জমা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০টি ২০ ফুট এককের রফতানি কনটেইনার। যার বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রমুখী।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ৭ আগস্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য পাঠাতে অনেকেই চেষ্টা করেছেন। তবে যারা আগাম উৎপাদন সম্পন্ন করেছিলেন, তারা ১ আগস্টের আগেই রফতানি নিশ্চিত করেছেন। ফলে জুলাই মাসে রফতানিতে ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের এশিয়ান-ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম জানান, জুলাই মাসে বাংলাদেশ থেকে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে, যার মধ্যে ৮২ কোটি ডলারের পোশাক গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর ৬০ শতাংশ রফতানি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনেন। পরবর্তীতে ৩১ জুলাই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের তৃতীয় দফা আলোচনার পর চুক্তির ভিত্তিতে পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামানো হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকেই গড়ে ১৫ শতাংশের বেশি শুল্ক কার্যকর ছিল, ফলে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ৩৫ শতাংশের বেশি। তৈরি পোশাকে আগে শুল্ক ছিল প্রায় ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষক এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, শুল্ক কার্যকরের ক্ষেত্রে বন্দর থেকে পণ্য ছাড়কাল থেকেই সময় গণনা করা হয়। এপ্রিলেও একই পদ্ধতিতে ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর হয়।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারে পাল্টা শুল্ক ছাড় থাকায় বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। কারণ পোশাক খাত তুলানির্ভর এবং বাংলাদেশের আমদানিকৃত তুলার বড় অংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এড়াতে রফতানিকারকরা আগেভাগেই কনটেইনার পাঠিয়েছেন ডিপোতে। এর প্রভাবে আগস্টেও ডিপো থেকে আমেরিকামুখী রফতানি বেশি হবে।
তিনি জানান, প্রতি মাসে গড়ে ৬০-৬৫ হাজার কনটেইনার রফতানি হলেও জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজারে; যার মধ্যে ৮১ হাজার কনটেইনার ইতোমধ্যে রফতানি হয়েছে।
গত বছরের রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অভ্যন্তরীণ নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহে বড় ধরনের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এই ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বাংলাদেশে নিট এফডিআই প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৮৬৪.৬৩ মিলিয়ন ডলার। যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১১৪.৩১ শতাংশ বেশি। ওই সময়ে বিনিয়োগ ছিল ৪০৩.৪৪ মিলিয়ন ডলার।
এই বিনিয়োগ প্রবাহ ২০২৪ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের তুলনায়ও ৭৬.৩১ শতাংশ বেশি। তখন নিট এফডিআই ছিল ৪৯০.৪০ মিলিয়ন ডলার।
ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট বা মূলধনী বিনিয়োগেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এটি দাঁড়ায় ৩০৪.৩৮ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৮৮.৪৩ মিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের ‘আস্থার প্রতীক’। যদিও দেশ এখনো মুদ্রা অস্থিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক ঋণের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বাসসকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ এখনো প্রত্যাশার তুলনায় কম। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো, এই সমস্যা দ্রুত সমাধান খুবই কঠিন।
বাসসর সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের সমস্যার সমাধান এবং বড় বিনিয়োগের একটি শক্তিশালী পাইপলাইন তৈরি করা এই চারটি প্রধান অগ্রাধিকারের ওপর জোর দিচ্ছে বিডা ও বেজা।
বিডা প্রধান সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট -২০২৫’ এর সাফল্য তুলে ধরে বলেন, ৭ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ৫০টি দেশের ৪১৫ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন এবং এতে প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পান এবং বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত এবং লাভজনক হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, বেজা নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, যাতে বিনিয়োগ প্রক্রিয়াগুলোর বাস্তব অগ্রগতি নিশ্চিত করা যায়।
ভারসাম্যপূর্ণ শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) একটি ‘জাতীয় মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো তিন ধাপে বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।
জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে ২০৪৬ সালের মধ্যে ২০টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে । যা সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কৌশলগতভাবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রস্তুত হওয়া এই মাস্টার প্ল্যানটি ভূমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো প্রস্তুতি এবং বিনিয়োগকারীর আস্থার মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথম পর্যায়ে, অর্থবছর ২৫ থেকে অর্থবছর ৩০ পর্যন্ত যেগুলোর উন্নয়ন কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বা পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এমন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এদিকে, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) তাদের নতুনভাবে ডিজাইন করা ওয়েবসাইট চালু করেছে। যা বিনিয়োগ অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
নতুন এই প্ল্যাটফর্মে বিডার এফডিআই হিটম্যাপ অনুযায়ী সম্ভাবনাময় খাতগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নীতিমালা, এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ফোকাল পয়েন্ট সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিডার লোগোও নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।
বিডা তাদের ওয়ান-স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) পোর্টালেরও হালনাগাদ সংস্করণ চালু করেছে, যার উদ্দেশ্য হলো দেশি ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের জন্য সেবার গুণগতমান বৃদ্ধি।
এই ওএসএস পোর্টালটি ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চালু করা হয় এবং বর্তমানে ৩৫টি সরকারি সংস্থা, ১২টি ব্যাংক ও ৫টি চেম্বার সংস্থার ১৩৩টি সেবা একত্রে প্রদান করে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. মনজুর হোসেন বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় থাকলে বিনিয়োগ প্রবাহ আরও বাড়বে।’
এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণের পথে বাধাগুলি মোকাবেলা করতে বিডা এবং বেজা কয়েক মাস ধরে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য কিছু সফল ইভেন্টের আয়োজন করেছে। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর ব্যবস্থা আরও সহজ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক আবু সাইয়েদ মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেপজার ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিচালিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো মেশিনারি, নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য মূলধনী খাতে (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ছাড়া) ২৯২.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
আনোয়ার পারভেজ বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩৩টি নতুন বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা বেপজার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
তিনি বলেন, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশ থেকে আগত বিনিয়োগকারীরা শিল্প কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে এসব চুক্তিতে সই করেছেন।
পারভেজ বলেন, ‘এই চুক্তির আওতায় মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৯৭.৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সম্ভাব্য ৫৯ হাজার ৪০৮ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন করবে, যার মধ্যে রয়েছে: তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, কৃষিভিত্তিক পণ্য, জুতা ও চামড়াজাত পণ্য, প্যাকেজিং সামগ্রী, তাঁবু, কৃত্রিম চুল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, খেলনা এবং কম্পোজিট আইটেম।
তিনি আরও বলেন, এই বিনিয়োগগুলো চালু হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রকৃত বিনিয়োগ প্রবাহ আরও গতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার পতনের পর দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সময়ে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি, রপ্তানি আয়ের উন্নতি এবং অর্থপাচার রোধে দৃশ্যমান উদ্যোগের ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে শক্তিশালী অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার মান ডলারের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে, কারণ নিয়মিতভাবে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে, যার ফলে ডলারের বিনিময় হার কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৯ জুলাই থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচ দিনে আন্তঃব্যাংকে ডলারের বিক্রয়মূল্য ২ টাকা ২০ পয়সা কমে ১২২.৩ টাকা থেকে ১২০.১ টাকায় দাঁড়ায়। ওই দিন ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১১৯.৫ টাকা।
বিনিময় হার বেশি ওঠানামা না করে স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করেছে এবং এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাকার মান বেড়ে গেলে দেশে মূল্যস্ফীতি কমানো সহজ হয়, তবে ডলারের মান খুব দ্রুত পড়ে গেলে রপ্তানিকারক ও প্রবাসী আয়কারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের ফলে ৩ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত ডলারের আন্তঃব্যাংক বিক্রয়মূল্য ১২২.৮৯ টাকায় দাঁড়ায়।
২০২২ সালে কোভিড-পরবর্তী বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে টাকার মান পড়তে শুরু করে। ওই বছরের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত টাকার মান ৩০ শতাংশ কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাকার মান সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বেড়েছে, তা সম্ভব হয়েছে কয়েকটি কারণে: প্রবাসী আয় বেড়ে ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, অবৈধ অর্থ লেনদেন ও মানি লন্ডারিং কমেছে, বহুপাক্ষিক দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তা এসেছে।
২০২৫ সালের মে মাসে আইএমএফ-এর শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিময় হারকে আরও নমনীয় করে। ব্যাংকারদের মধ্যে ভয় ছিল এতে ডলারের দর আরও বাড়বে, তবে বাস্তবে বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যদিও আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, নেট রিজার্ভ ২৪.৯৯ বিলিয়ন ডলার।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রবাসী আয় বাড়ছে, অর্থপ্রবাহে ভারসাম্য এসেছে এবং ডলার বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। এটি উদ্বেগের কারণ হয়নি, বরং টাকার ওপর আস্থা বেড়েছে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, এখন প্রবাসীরা বৈধ পথে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, কারণ ডলারের দামের আকস্মিক পরিবর্তনের গুজব আর নেই।
পরিকল্পনা কমিশনের জিইডি সদস্য ড. মনজুর হোসেন বলেন, জুনের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত ডলারের বিনিময় হার ১২২.৪৫ থেকে ১২২.৭০ টাকার মধ্যে স্থির ছিল। এই স্থিতিশীলতা ব্যবসা ও বাণিজ্য পরিকল্পনায় সহায়ক।
তিনি বলেন, দেশের বহিঃবাণিজ্য খাত এখন ভালো করছে, নীতিগতভাবে ভালো ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এবং রপ্তানি বৈচিত্র্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ডলারের দাম অতিরিক্ত পড়ে যাওয়াও ভালো নয়, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল থাকুক। বেশি বাড়া বা কমা- দুটোই খারাপ।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৮.৫৮ শতাংশ বেড়ে ৪৮.২৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দেয় এবং টাকার মানকে শক্তিশালী করেছে।
শুধু ২০২৫ সালের জুলাই মাসে, বাংলাদেশ ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে, যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে ৩.৯৬ বিলিয়ন ডলার, যা এ খাতে ধারাবাহিক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখায়।
আরিফ হোসেন খান বলেন, এক বছর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে এবং অর্থনীতি, প্রশাসন ও নীতিগত সংস্কারে বড় পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এফবিসিসিআই’র প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আগের সময়ের মতো এলসি খোলার জটিলতা এখন নেই। ডলার ও বিনিময় হার নিয়ে এখন আর কোনো সংকট নেই, যা আমদানিকারকদের জন্য ভালো সংবাদ।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুল কাইউম চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে প্রবাসী আয়ের ধারা অব্যাহতভাবে বেড়েছে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বিশাল অর্থনৈতিক স্বস্তি এনেছে।
মন্তব্য