কটেজ, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (সিএমএসএমই) প্রণোদনার ঋণের প্রবাহ বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ খাতের প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণের বরাদ্দ ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফলে এখন থেকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই প্যাকেজের মোট বিতরণ করা ঋণের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ সিএমএসএমই খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিতে পারবে। বাকি ৭০ শতাংশ ঋণ যাবে উৎপাদন ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানে।
আগে উৎপাদন খাতে ৫০ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৩০ শতাংশ (মোট ৮০ শতাংশ) ঋণ দেওয়ার সুযোগ ছিল। এখন থেকে উৎপাদন ও সেবা খাতের বরাদ্দ আনুপাতিক হারে কমে আসবে বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
সিএমএসএমই খাতের সহায়তার জন্য গঠিত প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণে অগ্রগতি নেই– এমন অনুযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ নীতিমালায় এই পরিবর্তন এনে বুধবার সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সিএমএসএমই খাতের মধ্যে অন্য দুটি উপখাত উৎপাদন ও সেবা উপখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ঋণের বেশিরভাগ অংশ বরাদ্দ রাখা হলেও এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো তা নিতে সক্ষম হচ্ছিল না।
তবে ব্যবসা উপ-খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ আছে ঋণ নেওয়ার। মোট ঋণের মধ্যে এ উপ-খাতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ঋণ দেওয়ার নির্দেশনা থাকায় অনেক ব্যাংক এ উপ-খাতে ঋণ বাড়াতে পারছিল না। এ কারণে সিএমএসএমই খাতের প্রণোদনার ঋণ বিতরণও বাড়ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সিএমএসএমই-এর প্যাকেজ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। ব্যবসা খাতের প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ বরাদ্দের সীমা বাড়ানোর ফলে খুব দ্রুতই এ খাতের মোট ঋণ বিতরণ ৫ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করছি।’
করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্রশিল্পকে বাঁচাতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক ২০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ গঠন করে।
এছাড়া বড় শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ গঠন করা হয়। পরে ওই প্যাকেজে যোগ হয় আরো ৩ হাজার কোটি টাকা। তবে বড়শিল্পের ঋণের প্যাকেজ প্রায় শেষ। এ কারণে কিছুদিন ধরে দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের ছোট শিল্পের ঋণ বিতরণে গতি আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তাগাদা দিতে দেখা যায়।
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) বাংলাদেশের ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষয়ক্ষতির একটি জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে। সেখানে বলা হয়, করোনায় ৬৪ শতাংশ ক্ষদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান আংশিক বন্ধ হয়েছে বা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়েছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে আইএফসির কর্মকর্তারা ক্ষুদ্রশিল্পের ঋণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক আবু ফরাহ মো. নাসের জানান পরবর্তী সপ্তাহেই তারা ঋণের গতি বাড়াতে উদ্যোগ নেবেন। এর ফলে ঋণ বিতরণে বড় ধরনের অগ্রগতিও দেখা যাবে।
১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জনতা ব্যাংক পিএলসি’র রাজশাহী বিভাগীয় অর্ধবার্ষিক ব্যবসায়িক শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন রাজশাহীর একটি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক-ইনচার্জ মোঃ জাহাংগীর হোসেন জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিভাগীয় অফিসের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট নির্বাহী এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান ঋণ দেওয়ার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের মানসিকতা আছে কি-না, তা দেখে ভাল গ্রাহকদের মাঝে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেন। এছাড়া সংগ্রহকৃত এলাকার আমানত সেখানেই তা বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাস মুখস্থ করে ভালো ফলাফল অর্জন নয়—বরং সৃজনশীল শিক্ষাচর্চায় মেধার বিকাশ ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী, আদর্শ মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে পরিচালিত হচ্ছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সম্প্রতি প্রকাশিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে সাউথ পয়েন্ট, বারিধারা। এ বিষয়ে কথা হয় অধ্যক্ষ এয়ার কমডোর (অব.) কাজী আব্দুল মঈনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শী না করে চিন্তাশীল ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছি। বিশেষ করে শিক্ষানুশীলনটাকে যতটা সম্ভব বাস্তবতার নিরিখে চাপমুক্ত ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করছি, যাতে তারা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনসহ সার্বিকভাবেই ভালো করতে পারে।”
গত ১০ জুলাই প্রকাশিত মাধ্যমিক পরীক্ষা–২০২৫ এর ফলাফল পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বারিধারা ক্যাম্পাসের ১৯৯ জন পরীক্ষার্থীর সকলেই উত্তীর্ণ হয়। তন্মধ্যে ১৪০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ অর্জনসহ ‘এ’ পেয়েছে ৫৭ জন এবং এ-মাইনাস ২ জন। শুধু ২০২৫-ই নয়, পূর্ববর্তী বছরগুলোতেও বারিধারা ক্যাম্পাসের ফলাফল ছিল ঈর্ষণীয়।
যেমন, গত উচ্চমাধ্যমিকে বারিধারার ১৩৪ জনের মধ্যে ১০০ জন জিপিএ–৫ পায়, বাকিরা সবাই ‘এ’ গ্রেডসহ ৪.৫০-এর ওপরে। অন্যদিকে বিজ্ঞান বিভাগের ৩৬ জন শিক্ষার্থীর সবাই জিপিএ–৫ অর্জন করে। ইংরেজি ভার্সনের বিজ্ঞান বিভাগে ১০৬ জনের মধ্যে ৯৫ জনই জিপিএ–৫ অর্জন করে।
২০০২ সালে রাজধানীর গুলশানে মাত্র ২০০ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১৮,০০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্সের কর্ণধার, বিশিষ্ট শিল্পপতি প্রকৌশলী এম. এ. রশিদের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ভিকারুননিসা নূন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হামিদা আলীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানে বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি ভার্সন ও ইংরেজি মাধ্যম—এই তিন মাধ্যমে প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। রাজধানীর মালিবাগ, বারিধারা, বনানী, মিরপুর, উত্তরা ও শ্যামপুরে মোট ছয়টি ক্যাম্পাসে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। বারিধারায় রয়েছে ৪টি সুরম্য ভবন এবং মালিবাগে ৬ বিঘা জমিতে নির্মিত হচ্ছে ১০-তলা আধুনিক ভবন, আর উত্তরায় অধিগৃহীত হয়েছে ৭ বিঘা জমি।
বর্ণাঢ্য ক্যাম্পাস বারিধারায় প্রবেশমুখেই চোখে পড়ে চলন্ত সিঁড়ি ও একাধিক লিফট। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়ও সচল রাখতে রয়েছে শক্তিশালী জেনারেটর। এ ছাড়াও রয়েছে অত্যাধুনিক ল্যাংগুয়েজ ল্যাব ও আইসিটি ল্যাব, হাই-স্পিড ইন্টারনেট, আধুনিক লাইব্রেরি, বিজ্ঞানাগার, স্বাস্থ্যসম্মত ক্যান্টিন এবং সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট ক্লাসরুম। পাঠ্যবইয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির কাজও চলমান। শিক্ষার্থীদের চিন্তাশীল করে তুলতে ‘ব্রেইনস্টর্মিং’ প্রশ্নের মাধ্যমে পাঠদান ও মূল্যায়ন করা হয়।
বারিধারায় আন্তর্জাতিক ইংরেজি মাধ্যমও চালু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হওয়া এই মাধ্যম ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্লে গ্রুপ থেকে স্ট্যান্ডার্ড ফাইভ পর্যন্ত ক্লাস চালু করে প্রথম কোয়ার্টারেই শিক্ষার্থী সংখ্যা হয়েছে ১২০ জন। ক্যামব্রিজ কারিকুলাম অনুসরণে পরিচালিত এই মাধ্যমে অভিজ্ঞ শিক্ষক কর্তৃক পাঠদান করা হয়। পর্যায়ক্রমে এখানে ‘O and A’ Level চালু করা হবে এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যামব্রিজ চেকপয়েন্ট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
শুধু পড়ালেখা নয়, সহশিক্ষা কার্যক্রমেও এগিয়ে তারা। এই ক্যাম্পাসের এক শিক্ষার্থী Aloha ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ব্রেন ডেভেলপমেন্ট প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফলে এই শাখা ইতোমধ্যেই অভিভাবকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
ধারাবাহিক সম্মিলিত সাফল্য: প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রায় প্রতি বছরই সম্মিলিত পাশের হার শতভাগ এবং প্রতি বছরই জিপিএ–৫ অর্জনের হার ৮০–৯০ শতাংশের মধ্যে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতিসহ উচ্চমাধ্যমিকে ৯ম স্থান অর্জনসহ জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায়ও গুলশান থানায় শীর্ষস্থান অর্জন করে সাউথ পয়েন্ট। তন্মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ১৮ জন শিক্ষার্থী। এবং এসএসসি বৃত্তি ২০২৫ এ ও সাউথ পয়েন্ট, বারিধারার ০৫ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়।
শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, বিতর্ক, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিকসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতায়ও ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। রয়েছে স্পোর্টস ক্লাব, সায়েন্স ক্লাব, ডিবেট ক্লাব ও কালচারাল ফোরাম। তাই অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি যে সৃজনশীল শিক্ষার আলোকবর্তিকা হয়ে এগিয়ে চলেছে—এটা নির্দ্বিধায় বলা চলে
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এ ‘ন্যাশনাল ল ফেস্ট ২০২৫ (চ্যাপ্টার- ওও)’ এর সমাপনী অনুষ্ঠান ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে স্বাধীনতা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল বিইউপি ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমে পারদর্শিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনচর্চা, নীতিনির্ধারণ, পাবলিক স্পিকিং এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্ক উন্নয়ন করা।
উৎসবে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী ও ৫০ জন বিশিষ্ট বিচারক অংশগ্রহণ করেন। এ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা বিতর্ক, অ্যাডভোকেসি প্রেজেন্টেশন এবং প্যানেল আলোচনা সহ ২৪টিরও বেশি সেশনে যোগদান করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব মোঃ আসাদুজ্জামান। তিনি তরুণদের মেধা বিকাশ এবং ব্যবহারিক আইনজ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা জোরদারে এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি তাঁর বক্তব্যে জাতীয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভবিষ্যৎ আইনজীবীদের প্রস্তুত করতে এ ধরনের প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাগে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয় এবং তাদের বিশ্লেষণী দক্ষতা ও আইনগত যুক্তিবোধকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিইউপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ২৫ থেকে ২৭ আগস্ট ২০২৫ নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই তিন দিনব্যাপী চলা কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩৫ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দানের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারীদের ‘উদ্যোক্তা স্বপ্ন’ পূরণেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত ব্র্যাক ব্যাংকের সিগনেচার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারীদের জন্য অর্থায়ন, পরামর্শ ও দক্ষতা উন্নয়ন সুবিধা সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা শক্তিশালী করার পাশাপাশি তাঁদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।
প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক টিমের পরিচালনায় অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স, এফ-কমার্স ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম-বিষয়ক প্রয়োজনীয় ডিজিটাল জ্ঞানসংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সভাপতি মুনীর হাসান, ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব স্মল বিজনেস (সেন্ট্রাল) অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর ফাইন্যান্স আলমগীর হোসেন এবং হেড অব উইমেন অন্ট্রাপ্রেনর সেল খাদিজা মরিয়ম।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে দেশের নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ব্র্যাক ব্যাংকের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
দেশের এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক অংশীদার হিসেবে সহজ অর্থায়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল টুলসের মাধ্যমে সফল ব্যবসা গড়ে তোলা ও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক
এসিআই-এর হাইজিন প্রোডাক্টস্ ফ্যাক্টরি সম্প্রতি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (BSTI) কর্তৃক মর্যাদাপূর্ণ ISO 9001:2015 কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে। পণ্যের মান, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর, স্বাস্থ্যবিধি, উৎপাদন ক্ষমতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এটি একটি আস্থার প্রতীক, যা প্রমাণ করে কোনো প্রতিষ্ঠান তার শিল্পক্ষেত্রে কঠোর মানদণ্ড পূরণ করছে এবং উপযুক্ত মান বজায় রাখছে। ISO সনদপ্রাপ্ত এই ফ্যাক্টরিতেই তৈরি হচ্ছে Twinkle Baby Diaper এবং Freedom Sanitary Napkin.
এফএমসিজি হাইজিন প্রোডাক্টস ক্যাটাগরিতে ইতোমধ্যেই সুপরিচিত এসিআই লিমিটেড। টুইংকেল, ফ্রিডম, রেসপেক্টসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মাধ্যমে এসিআই বেবিকেয়ার, অ্যাডাল্ট কেয়ার এবং ফেমিনিন হাইজিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্য সরবরাহ করছে। দেশের কোটি কোটি পরিবারের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত এসব পণ্য জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ফ্রিডম স্যানিটারি ন্যাপকিন যা নারীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসুরক্ষায় এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের আত্মবিশ্বাস ও অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
আইএসও সার্টিফিকেশন প্রাপ্তির এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন এসিআই হাইজিন প্রোডাক্টস্-এর বিজনেস ডিরেক্টর খন্দকার ইশতিয়াক আহমদ, জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মিজানুর রহমান, জেনারেল ম্যানেজার (ফ্যাক্টরি অপারেশনস) দীপঙ্কর বিশ্বাস, ডিরেক্টর (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনস) মো: নাহিদ নেওয়াজ, ম্যানেজার (রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) মো: পলাশ হোসাইন সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
আইএসও (ISO) সার্টিফিকেশন বিশ্বব্যাপী উৎকর্ষতার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। এটি প্রমাণ করে কোনো প্রতিষ্ঠান দক্ষ ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ উৎপাদন প্রক্রিয়া, উচ্চমানের পণ্য এবং গ্রাহক সন্তুষ্টির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এসিআই হাইজিন বিজনেসের জন্য এই স্বীকৃতি কেবল বিশ্বমান বজায় রাখার অঙ্গীকারই পুনর্ব্যক্ত করেনি, বরং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বাজারে ব্র্যান্ডটির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও জাতীয় নিয়ন্ত্রক নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে এসিআই হাইজিন বিজনেস ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন ও মান উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। নির্ভরযোগ্য হাইজিন সমাধান প্রদান করে প্রতিষ্ঠানটি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। বিএসটিআই অনুমোদিত এই আইএসও সার্টিফিকেশন এসিআই হাইজিন বিজনেসের উৎকর্ষতার প্রতি প্রতিশ্রুতিকে আবারও সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করল।
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) আজ (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সহযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে 'এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইএস)' এর আওতায় ক্ষতিপূরণের নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বা স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতার শিকার ইপিজেডের পোশাক খাতের শ্রমিকগণ আর্থিক সুবিধা পাবেন।
আজকের অনুষ্ঠানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের দুইজন মৃত শ্রমিকের পরিবার এবং কুমিল্লা ইপিজেডের একজন স্থায়ীভাবে অক্ষম শ্রমিককে তাদের ক্ষতিপূরণের নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে তারা পেনশন-এর মতো মাসিক আর্থিক সহায়তা পাবেন, যা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য টেকসই সহায়তা নিশ্চিত করবে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অর্থায়নে পরিচালিত এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে আইএলও এবং জার্মান উন্নয়ন সংস্থা (জিআইজেড)। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে বেপজা, আইএলও ও জিআইজেড-এর মধ্যে লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। পরবর্তীতে বেপজা, বিনিয়োগকারী, শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, আইএলও ও জিআইজেড প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি এন্ডোর্সমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়। আজ কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে প্রথম তিনজন সুবিধাভোগীর জন্য ক্ষতিপূরণের নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড অনুমোদন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি বলেন, “আজকের দিনটি বাংলাদেশের শ্রমিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে একটি টেকসই, মানবিক ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কাঠামোতে রূপান্তরের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই নোটিস অফ অ্যাওয়ার্ড কেবল একটি কাগজ নয় - এটি আমাদের শ্রমিকদের প্রতি সংকটকালে পাশে দাঁড়ানোর দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “ইপিজেড শ্রমিকদের নিষ্ঠা, সততা ও পরিশ্রমই বেপজার সাফল্যের মূল ভিত্তি। তাই তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। এ কারণেই আমরা ইআইএস পাইলট প্রকল্প চালু করেছি এবং ইপিজেড শ্রম আইনকে অধিকতর শ্রমিকবান্ধব করার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া, আমরা একটি বিশেষ তহবিল গঠনের চেষ্টা করছি যেন হঠাৎ কোনো কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে সেই ফান্ড থেকে শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত ও ন্যায্যভাবে পরিশোধ করা যায়।” এটা আমাদের অঙ্গীকার যে বেপজা সবসময় শ্রমিকদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করবে, কারণ তারাই আমাদের সাফল্যের মূল ভিত্তি, তিনি যোগ করেন।
আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর (নিযুক্ত) ম্যাক্স টুনন বলেন, “কোনো আর্থিক সহায়তাই একটি জীবনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। তবে সময়োপযোগী ক্ষতিপূরণ পরিবারগুলোকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি প্রদান করে। আমরা বেপজা ও অংশীদারদের সঙ্গে এ প্রকল্পকে বিস্তৃত ও শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
জার্মান উন্নয়ন সংস্থা (জিআইজেড)-এর প্রতিনিধি ড. মাইকেল ক্লোড বলেন, “এই প্রকল্পটি শ্রমিক ও মালিক উভয়ের সুরক্ষায় একটি সম্মিলিত দায়িত্বের প্রতিফলন। জিআইজেড বাংলাদেশের শ্রম ব্যবস্থাকে আরও নিরাপদ এবং স্থিতিশীল করতে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত।”
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিল এর মহাপরিচালক জনাব মোঃ মুনির হোসেন খান বলেন, “সরকার, মালিক, শ্রমিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদাররা কীভাবে একটি নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রমবাজার গঠনে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, এ উদ্যোগ তারই প্রমাণ।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মোঃ আশরাফুল কবীর।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বেপজা কেবল বিনিয়োগ বৃদ্ধি নয়, শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বেপজা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটটি ইপিজেড এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনা করছে। পাশাপাশি পটুয়াখালী ও যশোরে দুটি নতুন ইপিজেড উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত বেপজাধীন জোনসমূহে ৪৫৪টি প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে, যেখানে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৭.১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রপ্তানি আয় ১২০.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, দেশের মোট আয়তনের মাত্র ০.০০১% জায়গায় অবস্থিত বেপজার নয়টি জোন গত অর্থবছরে দেশের মোট রপ্তানির ১৭.০৩% অবদান রেখেছে।
বেপজা শ্রমিক কল্যাণে ইতিমধ্যে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ প্রদান, গর্ভবতী শ্রমিকদের পুষ্টি সহায়তা, ডে-কেয়ার সেন্টার, নারী শ্রমিকদের জন্য ডরমিটরি, বেপজা পাবলিক স্কুল ও কলেজের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা, গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স এবং ২৪/৭ হেল্পলাইন চালু করেছে। ইআইএস প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব উদ্যোগ আরও শক্তিশালী হবে এবং সামাজিক সুরক্ষার একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে।
অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণের (Authorized Representative) মাধ্যমে সম্মানিত করদাতাগণের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর কর্মকর্তাগণ এবং আইটি প্রোগ্রামারগণ Tax Representative Management System (TRMS) নামক একটি সফটওয়্যার প্রস্তুত করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ TRMS (https://trms.nbr.gov.bd/) সিস্টেমটি আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাল্টিপারপাস হলে উদ্বোধন করেন।
একটি আধুনিক, স্বচ্ছ এবং করদাতা-বান্ধব রাজস্ব প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে TRMS একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। করদাতার প্রতিনিধিত্ব প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে TRMS প্ল্যাটফর্মটি কর ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
আয়কর আইনে অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণ যেসকল সম্মানিত করদাতাগণের রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত (authorized) তাঁদের সকলের আয়কর রিটার্ন TRMS সফটওয়্যারটিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন। যেকোন করদাতা কর প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য তাঁর নিজ নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে প্রাপ্ত OTP কর প্রতিনিধিকে প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে তাঁর রিটার্ন দাখিলের জন্য ক্ষমতা প্রদান (authorize) করতে পারবেন।
একজন আয়কর প্রতিনিধি যতজন করদাতার আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করবেন তার সবগুলো রিটার্ন সংশ্লিষ্ট কর প্রতিনিধির নামের বিপরিতে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে। কর প্রতিনিধিগন রিটার্নের তথ্যাদি যেকোন সময় সিস্টেম থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
TRMS এর মূল বৈশিষ্ট্য:
• আয়কর আইন অনুযায়ী অনুমোদিত সকল কর প্রতিনিধিদের (Authorized Representative) ডিজিটাল নিবন্ধন;
• করদাতা কর্তৃক তাঁর কর প্রতিনিধিকে অনলাইন সিস্টেমে ক্ষমতা (authority) অর্পণ;
• প্রত্যেক কর প্রতিনিধি কর্তৃক দাখিলকৃত সকল আয়কর রিটার্নের তথ্য আলাদাভাবে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষণ;
• কর প্রতিনিধিগণ কর্তৃক করাদাতাগণের পক্ষে ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ;
• এটি করদাতা এবং কর প্রতিনিধি উভয়ের জন্যই ব্যবহারকারী-বান্ধব সহজ ইন্টারফেস;
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়্যারস এসোসিয়েশনের (BTLA) সভাপতি এডভোকেট রমিজ উদ্দিন আহমেদ, ইন্সটিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICMAB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব মাহতাব উদ্দিন এফসিএমএ, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICAB) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মোঃ রোকনুজ্জামান এফসিএ এবং ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (ICSB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব এম নাসিমূল হাই এফসিএস বক্তব্য রাখেন। তাঁরা এরকম জনমূখী উদ্যোগ নেওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করা হলো তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলস্টোন। তিনি আশা প্রকাশ করেন TRMS সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে, হোক তা ব্যক্তি; কোম্পানি বা কর্মকর্তা পর্যায়ে।
এনবিআর চেয়ারম্যান, তাঁর টিম মেম্বার এবং যারা কঠিন পরিশ্রম করে এটি তৈরী করেছেন তাদেরকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ সারাদেশ থেকে আগত কর আইনজীবী নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
TRMS সিস্টেমটি করদাতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি মসৃণ সেতুবন্ধন তৈরি করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
মন্তব্য