করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশের পোশাক খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। জীবিকা হারিয়ে পোশাক কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে পোশাকশিল্প দীর্ঘকাল ধরে একটি ভূমিকা রেখে এসেছে। কিন্তু করোনা মহামারি আঘাত হানার পর বিশ্বব্যাপী খুচরা বিক্রেতারা তাদের হাত গুটিয়ে নেয়। ফলে শত শত কোটি ডলারের ক্রয় আদেশ বাতিল হয়ে যায়।
২২ বছর বয়সী মৌসুমী বাংলাদেশে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে করোনা মহামারি আঘাত হানার আগে আগে চাকরি নেন একটি পোশাক কারখানায়। এর আগে প্রায় ২ বছর তিনি বেকার ছিলেন।
জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে বেতন পেয়েছেন। মার্চের শেষে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমাতে দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এপ্রিল মাসে সীমিত পরিসরে যখন কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয় তখন তাকে অপেক্ষায় রাখা হয়। এরপর আগস্টের ১ তারিখে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
মৌসুমী জানান, তাকে কারখানা থেকে বলা হয়েছিল, করোনাভাইরাসের কারণে তারা কর্মী ছাঁটাই করছেন।
এই করোনাকালে মৌসুমীর মতো চাকরি হারিয়েছেন দুলালিও। এবিএ ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় মাসিক ১১ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন তিনি।
এপ্রিল মাসে চাকরি যাওয়ার পর থেকে তিনি আরেকটি চাকরি পাওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মৌসুমীর মতো দুলালিকেও বলা হয়েছিল, করোনা মহামারির কারণেই তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
দুলালী বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ বলেছিল, করোনাভাইরাসের কারণে কোনো নতুন অর্ডার আসেনি। তাই কারখানার মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছেন না।’
তিনি জানান, অনেক খুঁজেও তিনি কোনো চাকরি পাননি এবং তার মতো আরও অনেকে কাজ খুঁজছেন।
দুলালী এখন তার আট বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে থাকেন। তিনি সিএনবিসিকে জানান, এখন খুবই কষ্টে তাদের দিন কাটছে। বাড়ি ভাড়া ১৬ হাজার টাকা বাকি পড়েছে। এ জন্য তাকে বাড়িওয়ালার বাসায় রান্না করে দিতে হচ্ছে। তাতে মাসে পাচ্ছেন ৫০০ টাকা।
সিএনবিসি বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ফেডারেশনের মাধ্যমে মৌসুমী ও দুলালীসহ ছয় পোশাক শ্রমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাদের কয়েকজন এখনো কর্মরত।
অন্যরা জানিয়েছেন, তারা এপ্রিল বা মে থেকে কাজ খুঁজছেন। তারা সবাই করোনা মহামারির কারণে আর্থিক সংকটসৃষ্ট দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক শীর্ষ ব্র্যান্ড বাংলাদেশে তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) হিসাব অনুযায়ী, করোনা মহামারি ১ হাজার ১৫০টি কারখানায় তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেছে। এসব কারখানা ৩১৮ কোটি ডলারের অর্ডার বাতিলের কথা জানিয়েছে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৪৯০ কোটি ডলার কম অর্ডার পেয়েছে।
রেটিং এজেন্সি মুডির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক দেশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুধু চীনের পেছনে রয়েছে।
পোশাক শিল্প দেশের রফতানি আয়ের প্রধান উৎস। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৩৩ হাজার কোটি ডলারের রফতানির ৮৩ শতাংশই তৈরি পোশাক।
বাংলাদেশের ৪ হাজার ছয়শর বেশি পোশাক কারখানা শার্ট, টি-শার্ট, জ্যাকেট, সোয়েটার ও ট্রাউজার তৈরি করে। এই পোশাকগুলোর বেশিরভাগই ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রফতানি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রম ও কর্মসংস্থান সম্পর্কবিষয়ক বিভাগের অধ্যাপক মার্ক অ্যানার সিএনবিসিকে বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ শ্রমিকের চাকরি সুরক্ষিত নয়। তরুণ ও নারী শ্রমিকেরা প্রায়ই চাকরি হারান। তাই অনেকে কাজের সন্ধানে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে চলে আসেন।
বিলকিস বেগম (৩০) গত ৪ এপ্রিল একটি পোশাক কারখানা থেকে ছাঁটাই হন এবং এরপর আর কোনো কাজ পাননি। তখন তিনি একজন অসুস্থ প্রতিবেশীর বাড়িতে গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করেন।
তিনি এখন অস্থায়ী ভিত্তিতে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করছেন। তবে বেতন হিসেবে তিনি এখন যা পান, তা যথেষ্ট নয়।
বিলকিস বেগম জানান, তার ভাইয়েরা মাঝে মাঝে তাকে সাহায্য করেন। তবে তাদেরও নিজের পরিবার রয়েছে।
তিনি সিএনবিসিকে বলেন, ‘তাও আমি এ-বাড়ি ও-বাড়ি কাজ করি। কিছু টাকা তো রোজগার করতে পারছি।’
মার্ক অ্যানার বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকদের অনেকেরই কোনো সঞ্চয় থাকে না এবং দিন এনে দিন খায়। কাজেই যখন তারা চাকরি হারান, তখন এর প্রভাব হয় তাৎক্ষণিক।
অ্যানার গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের পোশাক খাতে করোনা মহামারির তাৎক্ষণিক প্রভাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, অনেক কোম্পানি প্রাথমিকভাবে কেনা কাঁচামালের দাম সরবরাহকারীদের দিতে অনিচ্ছুক ছিল। এ কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রচুর শ্রমিক ছাঁটাই হয়।
মৌসুমী সিএনবিসিকে বলেন, তিনি এক মাস আগে একটি নতুন কারখানায় যোগ দিয়েছেন। এই কারখানায় টি-শার্ট ও মাস্ক তৈরি করা হয়।
তিনি জানান, কর্মঘণ্টা সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হলেও মাঝে মাঝে তাকে এর চেয়ে বেশি সময় কাজ করতে হয়। অনেক সময় মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়।
মৌসুমী বলেন, ‘আসলে কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। কাজের অনেক চাপ, তাই আমরা বাধ্য হই কাজ করতে। তবে বিকেল ৫টার পর কাজের জন্য ওভারটাইম দেয়া হয়।’
তিনি জানান, আগের কারখানায় তিনি যা বেতন পেতেন তার চেয়ে এখানে বেতন কম। এখান মাসে সাড়ে আট হাজার টাকা বেতন পান। আর পাঁচটার পর কাজ করলে ওভারটাইম পান।
করোনা মহামারি দরিদ্র শ্রমিকদের আরও দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে; তাদের ঋণগ্রস্ত করেছে।
মৌসুমী জানান, তিনি তার মায়ের দেখাশোনা করেন। পাশাপাশি শ্বশুরবাড়িতে তাকে প্রতি মাসে টাকা পাঠাতে হয়।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বেকার থাকাকালীন তার অনেক ঋণ হয়। আগস্টে সর্বশেষ চাকরি হারানোর পর বাড়ি ভাড়াও বাকি পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘আর্থিকভাবে আমি অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম। তাই আমার এখনকার কাজটি নিতে হয়েছে।’
সাহেলি রায় চৌধুরী আমেরিকার সিএনবিসি ডটকমের রিপোর্টার। তিনি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রযুক্তি বিষয়ে রিপোর্ট করেন। তার আগ্রহের বিষয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও সাইবার নিরাপত্তা।
দেশের ক্রমবর্ধমান স্টার্ট-আপ খাতকে অর্থায়ন সুবিধা দিতে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই চুক্তির আওতায় স্টার্ট-আপ খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সৃষ্ট ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ব্যবহারের সুযোগ পাবে ব্র্যাক ব্যাংক, যা ব্যাংকটির এই খাতে অর্থায়ন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদেরকে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে উৎসাহিত করা।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অংশগ্রহণকারী ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সম্ভাবনাময় খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই খাতটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্কও গড়ে তুলছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাটি উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সহায়তা করবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোগগুলোর বিকাশে ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯১টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশে বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার খাতে স্মার্ট ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারির ব্যবহার বাড়াতে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও সোলশেয়ার লিমিটেড কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিমিয়া সাআদত এবং সোলশেয়ার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ড. সেবাস্টিয়ান গ্রোহ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যাংকের, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম; হেড অব এডিসি অ্যান্ড হেড অব এমডি’স কোঅর্ডিনেশন টিম মো. মামুন-উর রহমান; সোলশেয়ার-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর আনিসা আলী, সিএফএ সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই অংশীদারিত্বের ফলে দেশের শত শত বৈদ্যুতিক পরিবহনের গ্যারেজ সহজেই স্মার্ট ব্যাটারি প্রযুক্তি গ্রহণে সক্ষম হবে। এখন পর্যন্ত উচ্চ ব্যয়ের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ব্যাটারি ব্যবহারে আগ্রহী হলেও অর্থায়নের সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। কমিউনিটি ব্যাংকের গ্রিন এসএমই ঋণ সুবিধা ও সোলশেয়ার -এর উদ্ভাবনী পে-অ্যাজ-ইউ-গো (পিএওয়াইজি) প্রযুক্তি একত্রে উদ্যোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী, নমনীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্যারেজ মালিকরা টেকসই অর্থায়ন সুবিধা পাবেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারি ব্যবহার, দেশের বৈদ্যুতিক পরিবহন খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
এই উদ্যোগকে দেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থার জন্য এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
যমুনা ব্যাংক পিএলসি. এবং অ্যাপোলো ক্লিনিক লাইসেন্সঃ জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজধানীর যমুনা ব্যাংক টাওয়ারে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। যমুনা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও নূর মোহাম্মদ এবং অ্যাপোলো জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের উপদেষ্টা মসিউর রহমান কামাল উক্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও মো. আব্দুস সালামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে যমুনা ব্যাংক তাদের সম্মানিত গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের পোষ্যদের জন্য বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য ও সুফলদায়ক করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাপোলো ক্লিনিকের লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতালের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালককে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির করপোরেট প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইমতিয়াজ ইউ. আহমেদ হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালক মো. মেহেদী হাসানকে ওই অনুদানের চেক প্রদান করেন।
ওই অনুদানের চেক প্রদানকালে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির এসইভিপি ও কোম্পানি সচিব জনাব মো. আবুল বাশার, ব্যাংকের এসএভিপি মো. জাকির হোসেন, ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ এবং ব্যাংক ফাউন্ডেশন এর এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. কামাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সীমান্ত ব্যাংকের উদ্যোগে শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) এবং টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয় এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করা হয়। শ্যামনগরের ৭টি এবং টেকনাফে ২টি বিদ্যালয়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়।
সীমান্ত ব্যাংকের টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন এবং শ্যামনগর উপশাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম যথাক্রমে টেকনাফ এবং শ্যামনগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী সমন্বয় করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে যক্ষ্মা (টিবি)। কেবল ২০২৩ সালেই ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে- ফলে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন যক্ষ্মায়। এই জাতীয় সংকট মোকাবেলায় সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। জীবনরক্ষাকারী যক্ষ্মা প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে প্রাইম ব্যাংক বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি-এরর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
আজ (০৯ সেপ্টেম্বর) গুলশানে প্রাইম ব্যাংকের করপোরেট অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রাইম ব্যাংক এক বছরের জন্য আইসিডিডিআর,বি-এর সিলেট টিবি স্ক্রিনিং অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (TBSTC)-এর যক্ষ্মা পরীক্ষার ও চিকিৎসা সেবার ধারাবাহিকতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ এবং আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমীদ আহমেদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দেশে যক্ষ্মা প্রতিরোধে দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করেছে। এ সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি টিবি রোগী, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু। পাশাপাশি ৫,৫০০-এরও বেশি ওষুধ-প্রতিরোধী টিবি রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অঙ্গীকার আরও জোরদার করছে। ব্যাংকটি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু হ্রাস এবং একটি সুস্থ, সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
মন্তব্য