করোনাকালে ব্যাংকের আমানত বাড়লেও ব্যাংক-বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কমেছে। গত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানত কমেছে প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে দেশে কার্যরত ৩৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংগৃহীত মোট আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। জুনে আমানত কমে ৪৩ হাজার ২৬৪ কোটি টাকায় নেমে আসে।
তবে একই সময়ে (এপ্রিল-জুন) ব্যাংক খাতের আমানত বেড়েছে ৪৪ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। জুন শেষে ৫৯টি ব্যাংকের সংগৃহিত মোট আমানতের পরিমাণ (স্থিতি) ছিল ১১ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা।
এপ্রিল-জুন সময়ে আমানত কমার বড় কারণ হতে পারে করোনা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর গ্রাহকদের অনাস্থা।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসেএ) চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস বন্ধ হওয়ার পর থেকে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অনাস্থা দেখাতে শুরু করে বড় আমানতকারীরা। বিশেষ করে ব্যাংকগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা আমানত তুলে নিতে তৎপর হয়। এটাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমে যাওয়ার একটা বড় কারন।
আলোচ্য সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণও কমেছে। তবে আমানতের তুলনায় ঋণ কমার হার অনেক কম।
গত এপ্রিল-জুন সময়ে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ৬১ কোটি টাকা কমে ৬৯ হাজার ৫১১ কোটি টাকায় নেমে আসে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এপিল-জুন সময়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা তাদের ৩২ কোটি টাকার আমানত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। অন্যদিকে বেসরকারি খাতের আমানতকারীরা তুলে নেন ৩৪৮ কোটি টাকা।
মূলত ঢাকা বিভাগের গ্রাহকরা আমানত তুলে নেওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এপ্রিল-জুন সময়ে নারী গ্রাহকদের প্রাতিষ্ঠানিক আমানত কমেছে ৮১ শতাংশ, যেখানে পুরুষ গ্রাহকদের প্রাতিষ্ঠানিক আমানত কমেছে ৩৩ শতাংশ।
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১৯৯৩ সালের আইন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মূল কার্যক্রম ঋণ ও লিজ সুবিধা দেওয়া। তবে বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংক-বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেয়াদী আমানত সংগ্রহ করছে।
ব্যাংকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়া সুদে আমানত নিলেও বেশ কিছুকাল ধরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এরকম একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে অবসায়নের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই সময় পর্যন্ত পিপলস লিজিংয়ে গ্রাহকদের ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকার আমানত জমা ছিল, যা এখনও ফেরত পাননি আমানতকারীরা। আমানত ফেরতের দাবিতে সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করে পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারী পরিচয়দানকারী এক দল লোক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন আছে। এ নিয়ে বলার কিছু নেই।
দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশজুড়ে কমতে পারে তাপমাত্রা।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনা বিটার বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোববার হওয়া এ বৈঠকে আলম বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করে এমন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের ভিসা পেতে বিলম্বের বিষয়টি উত্থাপন করেন। খবর বাসসের
বৈঠকের পর ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ প্রক্রিয়াটি আরও ত্বরান্বিত করার বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলম বলেন, সম্প্রতি ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
নতুন ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার তা জানার কোনো আগ্রহ দেখায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে আপনাদের বলতে পারি যে, তারা ভিসা নীতি নিয়ে কোনো আলোচনার সূচনা করেনি।’
আলম বলেন, সফরটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনার জন্য আসেননি।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের আলোচনার কয়েকটি বিষয় ছিল স্টুডেন্ট ভিসা, আমেরিকান নাগরিকদের কনস্যুলার সহায়তা এবং ভিসা ইন্টারভিউ-এর জন্য অপেক্ষার সময় কমানো।
বৈঠকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার রাতে ঢাকায় আসার আগে এই মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইসলামাবাদ ও করাচি সফর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘তার সফর বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণ ও অভিবাসনের সুবিধার প্রতি আমাদের গভীর এবং টেকসই প্রতিশ্রুতির গুরুত্বকে তুলে ধরে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনা বিটার দুদিনের সরকারি সফরে ঢাকায় এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তিনি দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং কনস্যুলার কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন। খবর বাসসের
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘তার সফর বিদেশি আমেরিকান নাগরিকদের সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণ ও অভিবাসনের সুবিধার প্রতি আমাদের গভীর এবং টেকসই প্রতিশ্রুতির গুরুত্বকে তুলে ধরে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার কনস্যুলার বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে।
ঢাকায় আসার আগে তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদ ও করাচি সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা ও বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের যৌথসভা শেষে রোববার তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে সংবেদনশীল। তিনি (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন। তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার বিষয়ে প্রচলিত আইনে সরকারের কিছু করার নেই। আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নির্দেশ মেনে তাকে চিকিৎসা করাতে হবে।’
এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চলতি অক্টোবর মাসে রাজধানী ঢাকায় তিনটি এবং ঢাকার বাইরে দুটিসহ মোট পাঁচটি সমাবেশ করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের জানান, পাঁচটির মধ্যে একটি জনসমাবেশ এবং বাকি চারটি হবে সুধী সমাবেশ। ৩ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারের মহাসমাবেশটি হবে এ মাসের একমাত্র জনসমাবেশ ।
আর বাকি ৪টি সুধী সমাবেশ হবে- ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মাসেতুর রেলসেতুর উদ্বোধন, মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অবৈধ দল হলে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে কথার সীমারেখা মানা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আ স ম আব্দুর রবও একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আ স ম আব্দুর রব উদাহরণ হতে পারে না। হাজী সেলিমও কিন্তু আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আওয়ামী লীগ শূন্যে ভেসে হাওয়ায় উড়ে কিংবা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতায় বসেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনীতিতে কঠিন এক চ্যালেঞ্জে আছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই যৌথ সভার আয়োজন। বিএনপিকে প্রতিপক্ষ নয়, শত্রুপক্ষ মনে করতে হবে।’
রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলটিমেটামেও বিএনপি ব্যর্থ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ১৫ বছরে অনেকবার বিএনপির হাঁকডাক শোনা হয়েছে। বিএনপি বিভিন্ন সময় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসন নিয়ে তিরস্কার করে সমালোচনা করেছিল, যা ছিল বিএনপির অহংকার, দম্ভ। যারা আওয়ামী লীগের পতন দেখছে তাদের নিজেদের পতন হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।’
রাজনীতিবিদদের বেফাঁস কথা বলা থেকে দূরে থাকা উচিত বলেও পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার ফেস্টুন করে প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এক এগারোর মতো অস্বাভাবিক সরকার তৈরি করার সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি, তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো।
আগামী ৪ অক্টোবর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা নিয়ে এসেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের দেয়া সংবর্ধনার প্রস্তাব এ সময় তিনি ফিরিয়ে দেন।
গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
শনিবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। খবর বাসসের
এতে বলা হয়, গণমাধ্যমে ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশের গণমাধ্যম উগ্রবাদী শক্তি, জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধীর দল, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যারা প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা রাখছে। এর ফলে বাংলাদেশ তালেবানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি।
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি নিয়ে হাসের বক্তব্যটিকে কট্টরপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা স্বাগত জানিয়েছে। এই পক্ষটি অন্যান্য নীতিতে পশ্চিমাদের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তকদের শত্রু মনে করে এবং তারা ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির পক্ষে। হাসের বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত ‘বাঁশের কেল্লা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে হাসকে ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে এই পেজে ব্লগার ও মুক্তচিন্তকদের হত্যার পক্ষে নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। ফলে, এই পেজে হাসের বিবৃতি নিয়ে উল্লাস আসলে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের জন্য নিগূঢ় বার্তা দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের কণ্ঠরোধ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে “বাঁশের কেল্লা” পেজে আস্ফালন চলছে।’
এতে বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু হাস তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করায় ধারণা করা যায়, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়তো চূড়ান্ত। এরই মধ্যে সম্পাদক ও সাংবাদিকেরা এটির নিন্দা করেছেন। হাসের এই বক্তব্যের কারণে সংবাদমাধ্যমগুলো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হবে বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।’
হাসের দ্বৈতনীতির বিষয়টি তার বক্তব্যে উঠে এসেছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট নাগরিকরা বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু তার এখনকার অবস্থান গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা ছিল, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে তারাও ভিসা নীতির আওতায় আসবেন। কিন্তু হাসের বিবৃতিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি, আর সেখানে গণমাধ্যমের ভূমিকার যে সুযোগ ছিল, সেটিকে মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রচেষ্টা দেখেছি, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিপন্ন করার সম্ভাবনা রাখে। র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি উত্থাপনে বড় ভূমিকা রেখেছেন দেশটির বিতর্কিত মার্কিন সিনেটর বব মেনেন্ডেজ। এ ছাড়া ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরে একটি বিবৃতি প্রদান করা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে, যা একেবারে বাস্তবতাবিবর্জিত এবং ন্যায়সংগত নয়। ফলে, এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে বাধ্য করে যে এ ধরনের কার্যক্রমের পেছনে ভিন্ন কোনো ইচ্ছা রয়েছে কি না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতীতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা থেকে শুরু করে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হামলা আমরা দেখেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা ব্যতীত এসব সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অসম্ভব। বিএনপি-জামায়াত সর্বশেষ যেই জোট সরকার গঠন করেছিল, সে সময়ও ২৮ হাজারের বেশি হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘুদের ওপর, যেখানে তাদের সম্পত্তি, বাড়িঘর দখলসহ মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়, জীবন্ত মানুষকে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন সরকারকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়ে আসার পর রাষ্ট্রের সহায়তায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়েছে। আর সাম্প্রদায়িক এই সম্প্রতি বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দেখতে পেলাম, ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটেনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত এবং আত্মস্বীকৃত খুনিদের ক্ষেত্রে, যাদের যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় প্রদান করছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এমন এক জঘন্য হত্যাকান্ড, যা মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটায়। সুতরাং আমরা মনে করি যে ভিসা নীতিটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা যৌক্তিক। কারা এর অনুমোদন দেবে এবং এই ধরনের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে কারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা বোঝাটাও জরুরি। কারণ, আমরা রাষ্ট্রদূতের কার্যকলাপ দেখেছি এবং অন্যান্য কার্যাবলিও দেখেছি, যা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তিগুলোর জন্য বারুদ হিসেবে কাজে এসেছে।’
বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদজায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আইনজীবী ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, নির্মল রোজারিও, সভাপতি বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, সাধারণ সম্পাদক বুড্ডিস্ট ফেডারেশন।
‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগান সঙ্গী করে ২০২০ সালের আজকের দিনটিতে যাত্রা শুরু নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর। নতুন দিনের সাংবাদিকতার আদর্শ ধারণ করে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যে প্রদীপ্ত একদল তথ্যযোদ্ধার মেধা ও শ্রমে আজ তিন বছর পেরিয়ে চতুর্থ বর্ষে পা দিল নিউজ পোর্টালটি।
তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও চতুর্থ বর্ষে পদার্পণের ক্ষণটি কেক কেটে উদযাপন হয়েছে নিউজবাংলা প্রাঙ্গণে। রোববার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর উপস্থিতিতে ঘরোয়া আয়োজনে দিনটি পালন করা হয়।
এসময় নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলেন, ‘নিউজবাংলা হলো আমাদের বিজয় রথের সারথী। দুই বাংলা, অর্থাৎ দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা, দুই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সারথীর ভূমিকা পালন করে চলেছে নিউজবাংলা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিউজবাংলার সংবাদকর্মীরা প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পরিণত করেছেন। দৈনিক বাংলার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের শক্তি আরও বাড়িয়ে নিউজবাংলা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে, আমি সবসময় এই কামনা করি।’
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মান ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া নিউজবাংলার সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে প্রতি মুহূর্তের খবর সবার আগে সংগ্রহ করে তা সরবরাহ করা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদেরও ধন্যবাদ জানান সম্পাদক।
শুধু তিন বা চার বছর পূর্তি নয়, নিউজবাংলা শত-সহস্র বছর ধরে পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করে যাবে; দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবগত করা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে; দেশের শাসন বিভাগ ও জনগণের মধ্যে সমন্বয় করে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত থাকবে- এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এরপর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, বার্তা সম্পাদক কামরুল হাসান খান, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান, সিনিয়র আইটি অফিসার সাইদুল ইসলাম মিঠু, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জাকারিয়া হোসেন জয় এবং প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্টার, সাব-এডিটরসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে নির্মিত বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ আগামী ১৩ অক্টোবর মুক্তি দেয়ার ঘোষণা করে ট্রেলার ও পোস্টার উদ্বোধন করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রটি মুক্তির আগের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন হয়। এ সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রটি নিয়ে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় ‘মুজিব’ চরিত্রের অভিনেতা আরিফিন শুভ এবং চলচ্চিত্রের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, বিএফডিসির অতিরিক্ত সচিব ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনসহ চলচ্চিত্রটির শিল্পী, কলাকুশলী, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এবং সাংবাদিকরা।
মন্তব্য