ষষ্ঠবারের মতো বিক্রি হতে যাচ্ছে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী মোহিনী মিল। পাঁচবার হাতবদল হয়ে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বস্ত্রকলটি এখন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের লিকুইডেশন বা অবসায়ন শাখার অধীনে রয়েছে। এখন চলছে এর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্যায়ন।
এ খবর নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের পাট শাখার যুগ্ম সচিব মো. খুরশীদ ইকবাল রেজভী।
কলকাতার সুতা ব্যবসায়ী মোহিনী মোহন চক্রবর্তী ১৯০৮ সালে কুষ্টিয়া শহরে ৯৯ বিঘা জমির ওপর মিলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পাকিস্তান সরকার মিলটিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনকে (ইপিআইডিসি) পরিচালনার দায়িত্ব দেয়।
১৯৭২ সালে মোহিনী মিলকে জাতীয়করণ করে সরকার। এরপরই কারখানাটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
লোকসানে চলতে শুরু করলে ১৯৮৪ সালে শিল্পপতি নজরুল ইসলামের কাছে ২৫ কোটি ২৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয় মিলটি। মোহিনী মিলের নাম বদলে রাখা হয় ‘শাহ মখদুম টেক্সটাইল মিল’।
ব্যাংক থেকে আট কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরের বছর মিলটি চালু করা হয়। কিন্তু নতুন মালিক সরকারের চুক্তি ভঙ্গ করায় এবং শ্রমিকদের ১০ মাসের বেতন বাকি পড়ায় ১৯৮৭ সালে মিলটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়।
১৯৯০ সালে মিলটি দখলে নিয়ে বিক্রির উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু ব্যাংক ও আগের ক্রেতা নজরুল ইসলাম মামলা করলে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বিক্রি কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। মামলা এবং বকেয়া পাওনা নিয়ে জটিলতা থাকায় মিলটি আরেক দফা হাতবদল হলেও চালু করা যায়নি।
২০০৯ সালে আবার মিলটি চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। তখন দি পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস করপোরেশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সরকার, মিল মালিক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার দায়িত্ব দেয়া হয়।
সরকার ও ব্যাংকের কাছে থাকা বকেয়া পরিশোধের শর্তে আবার আগের মালিক শাহ মখদুম গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর যন্ত্রপাতি পুনঃস্থাপন করে মিলের একটি ভবনে সুতা তৈরির একটি ইউনিট চালু করা হয়। কিছুদিন পর এটিও বন্ধ হয়ে যায়।
এরপরও হাতবদল হয়েছে মিলটি। আব্দুল মতিন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিক্রির চুক্তি করে সরকার। তারা কিছু টাকা পরিশোধ করে ২০১১ সাল পর্যন্ত।
২০১২ সালে মিল দেয়া হয় মেসার্স দিনার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এম আসলামকে। টাকা পরিশোধের জন্য তাকে সময় দেয়া হয় ২৮ দিন। তিনি টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মন্ত্রণালয় ইনারগোটেক লিমিটেডকে মিল দিয়ে দেয়।
জমিসহ মিলটির দাম ৪৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ধরে ইনারগোটেক লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারাও সময়মতো টাকা না দেওয়ায় মিলটি এখন পাট মন্ত্রণালয়ের অবসায়ন শাখার তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পাট শাখার যুগ্ম সচিব মো. খুরশীদ ইকবাল রেজভী বলেন, মিলটির বর্তমান দামের মূল্যায়ন চলছে। এর স্থাবর সম্পত্তির মূল্যায়ন করছেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আর অস্থাবর সম্পত্তির দাম নির্ধারণের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নবাবগঞ্জবাসীর আর্থিক লেনদেন সহজ এবং দ্রুত করতে প্রযুক্তিনির্ভর উপ-শাখার কার্যক্রম শুরু করেছে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড।
নবাবগঞ্জ উপ-শাখা সাদেক আলী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত। এর কার্যক্রম জয়পাড়া শাখার অধীনে পরিচালিত হবে। এ নিয়ে পদ্মা ব্যাংকের নবম উপ-শাখার উদ্বোধন করা হলো।
এই উপ-শাখায় সব ধরনের ব্যাংক হিসাব খোলা, নগদ টাকা জমা ও উত্তোলন, চেক বই ও পে অর্ডার ইস্যু, ক্লিয়ারিং চেক ও পে-অর্ডার জমা, আমানত ও ঋণ সুবিধা, রিয়েল টাইম অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা, ইউটিলিটি বিল জমাসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যাবে।
সোমবার উপ-শাখাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পদ্মা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বদলে যাও বদলে দাও, বদলে যাবে পদ্মা ব্যাংক- স্লোগানে এগিয়ে চলেছে পদ্মা ব্যাংক। অভিজ্ঞ ও দক্ষ এক পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কর্মঠ ও একনিষ্ঠ কর্মীরা। গ্রাহকদের আধুনিক ও মানসম্পন্ন সেবা দিতেই উপশাখার সংখ্যা আমরা বৃদ্ধি করে চলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নবাবগঞ্জ উপশাখার মাধ্যমে ওই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং উন্নয়নে যথাযথ আর্থিক ও প্রতিষ্ঠানিক সেবা দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স হেড সায়ন্তনী ত্বিষাসহ বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি, সমাজকর্মী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
সরকারী সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবির মূল মালিকানায় পরিচালিত চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড দেশজুড়ে ৬০টি শাখা, উপ-শাখা এবং এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছে।
এ ছাড়া পদ্মা ব্যাংকের সব শাখা থেকে রেমিট্যান্স সেবা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে সোমবার থেকে পণ্যটি আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। আমদানির খবরেই পাইকারি বাজারে ৩০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী মজুতদাররা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সোমবার ৬০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রোববার আমদানির ঘোষণার আগপর্যন্ত এ বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ৯০ টাকা। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববারই কেজিতে ২০ টাকা কমে যায়। একদিন পেরোতেই তা আরও ১০ টাকা কমে গিয়েছে।
চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, ‘আমদানির অনুমতির খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই পাইকারি ক্রেতারা পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করে দেন। বিপাকে পড়ে পাইকাররা রোববার ২০ টাকা ও সোমবার আরও ১০ টাকা দাম কমায়।
‘এখন ৬০ টাকা দরে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও ক্রেতা নেই।’
সবাই আমদানির অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন সমিতির সভাপতি।
পেঁয়াজসহ ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য আমদানিকারকদের দুষলেন এ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ, আদাসহ সব পণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য আমদানিকারকরাই দায়ী। তারা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।’
আমদানির অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইপি (অনুমতিপত্র) চট্টগ্রামে আসতে সময় লেগেছে। আমদানিকারকরা আইপি পেয়েছেন তিনটায়। আজ কিছু পেঁয়াজ ঢুকতে পারে। কাল থেকে পুরোদমে ঢুকবে।’
আমদানির পর পেঁয়াজের দাম আরও কমলে দেশের পেঁয়াজ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘যারা অতিরিক্ত পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে, তারাও বিপদে পড়বে।’
এদিকে আমদানির খবরে খুচরা বাজারেও ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
সোমবার নগরীর ২ নম্বর গেইট এলাকার কর্ণফুলী মার্কেটে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আহমদীয়া ট্রেডার্সে ৮০ টাকা, এসএস মার্টে ৮৫ টাকা, কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে ৯৫ টাকা ও কর্ণফুলী ট্রেডার্সে ৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর অক্সিজেন এলাকার আনয়ার স্টোর ও পাঁচলাইশ এলাকার উৎসব সুপারশপে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।
রমজানের পর থেকে দেশের বাজারে হুঁ হুঁ করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। কয়েক দফা বেড়ে ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হতে থাকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ। ওই সময় পাইকারি বাজারে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে।
এর মধ্যে সম্প্রতি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর প্রেক্ষিতে রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার থেকেই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার কথা জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের-শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২০২২ সালে চাহিদার চেয়ে অধিক আমদানির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হন দেশের পেঁয়াজ চাষীরা। তাই চাষীদের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত করতে এবার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে সরকার।
আরও পড়ুন:২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রিতে প্রস্তাবিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস। এছাড়া ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে স্বর্ণালঙ্কার আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ৫০ গ্রাম করাসহ ১১টি প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বাজুস কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাজুসের সহ-সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, সহ-সম্পাদক ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সমিত ঘোষ অপু, সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়ালসহ অন্যরা।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুলস-এ সংশোধনী এনেছে সরকার। সংশোধিত ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন যাত্রী ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের বার বাংলাদেশে আনতে পারবেন। আগে ২৩৪ গ্রাম ওজনের দুটি বার আনার সুযোগ ছিল।
সংশোধিত ব্যাগেজ রুলকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ জানিয়ে বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এর মাধ্যমে দেশে স্বর্ণ চোরাচালান ও মুদ্রা পাচার অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। কারণ ব্যাগেজ রুলের সুবিধা নিয়ে এর আগে অবাধে সোনার বার বা পিণ্ড দেশে প্রবেশ করছে। আবার চোরাচালানের মাধ্যমে তা বিদেশে পাচার হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে এই পদক্ষেপ বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানিকে উৎসাহিত করবে।
স্বর্ণের বারের মতো ব্যাগেজ রুলের আওতায় অলংকার-গহনা আনার সীমা ১০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করেছে বাজুস। স্থানীয় স্বর্ণ শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় জুয়েলারি শিল্পের দিকে ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করতে এমন পদক্ষেপ দরকার বলে মনে করছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈধভাবে স্বর্ণের চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চ মূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। বর্তমানে জুয়েলারি শিল্পের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। এটা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জুয়েলারি খাতের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা।
বলা হয়, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ক কর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা দেয়া দরকার। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১টি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি করছে বাজুস।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বর্ণালঙ্কার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা; ইডিএফ মেশিন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বসিয়ে কাউকে হয়রানি না করা; অপরিশোধিত আকরিক স্বর্ণে আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা; আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী ও ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার ৫ শতাংশ করা।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- হীরা কাটিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানি করা রাফ ডায়মন্ডের নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ; স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ।
স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানি করা কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি দেয়াসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
এছাড়া অস্বাভাবিক শুল্ক হার কমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শুল্ক হার সমন্বয়সহ এসআরও সুবিধা দেয়া ও চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধার করা মোট স্বর্ণের ২৫ শতাংশ সংস্থা সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:আধুনিক ব্যাংকিং সেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সোমবার পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নে শিবপুর এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের উদ্বোধন হয়েছে।
ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জেহাদ প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইন মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আউটলেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আউটলেট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বস্ত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক দেশব্যাপী স্বকীয়তা বজায় রেখে দ্রুততার সঙ্গে শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট সম্প্রসারণ করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
এ সময় ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি করিম, প্রধান কার্যালয়ের ভিপি ও মার্কেটিং ডিভিশনের প্রধান ইমতিয়াজ আহমেদ সিদ্দিকী, এসএভিপি ও এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের বিভাগীয় প্রধান এ কে এম নূরুল আফসার, শিবপুর এজেন্ট আউটলেটের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, শাখা ব্যবস্থাপক, ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথি ও গ্রাহকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
‘সরকার কবে বাজেট দেয় হেইডা জানি না। তয় সিগারেটের দাম বাড়লেই বুঝি বাজেট আইতাছে। গত ১ মাস আগে থাইকাই সিগারেটের দাম বাড়ছে। তহনই বুঝছি সরকার সামনে বাজেট দিবো। শুধু সিগারেটই না, বাজেট অইলেই সব জিনিসের দাম বাড়ে। এহন তো সব জিনিসেরই দাম বাড়ছে।’
জাতীয় বাজেট নিয়ে এভাবেই নিজের ভাবনা নিউজবাংলার কাছে তুলে ধরেছেন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চা-সিগারেট বিক্রেতা সুমন মিয়া।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রস্তাবিত এই বাজেট নিয়ে নিউজবাংলার কাছে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মারিয়া রহমান বলেন, ‘বাজেট হলো ঘোষণা দিয়ে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়ানোর প্রক্রিয়া। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়। সারা বছরই বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ে। কিন্তু বাজেট ঘোষণা হলে সব জিনিসের দাম একসঙ্গে বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরাও একটা অজুহাত পেয়ে যান। আবার যেসব পণ্যের দাম কমার কথা সেগুলোর দামও কমে না।
‘তবে নিউজে দেখলাম এবার সরকার বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়িয়েছে। যেমন প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি। এটা একটা ভালো পদক্ষেপ।’
আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গণমাধ্যমে নিউজ দেখে যতটুকু বুঝলাম তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে এই বাজেটের একটা ইতিবাচক দিক হলো, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমছে। আর বিদেশ থেকে আমাদানি করা পণ্যের দাম বাড়ছে। এটা ভালো দিক। কারণ বিদেশি পণ্যের দাম বাড়লে, দেশি পণ্যের ব্যবহার বাড়বে। তাতে দেশে কলকারখানা প্রতিষ্ঠা হবে। কর্মসংস্থানও বাড়বে।
বেসরকারি চাকরিজীবী আতাউর রহমান বলেন, ‘এবারের বাজেট হলো সরকারের ইনকামের বাজেট। সবকিছু থেকেই সরকার আয় করতে চাচ্ছে।
আরেকটি বিষয় হলো, ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বাজেটের যেটুকু সুফল জনগণ পাওয়ার কথা সেটুকুও পাবে না। কারণ একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে বাজেটে যেগুলোর দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর দাম রাতারাতি বেড়ে গেছে। আবার যেসব পণ্যের দাম কমানোর কথা প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর দাম কবে কমবে বা আদৌ কমবে কিনা আমরা জানি না। এসবই ব্যাবসায়ীদের কারসাজি।’
মোবাইল ফোন সেটের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিউজে দেখলাম মোবাইল ফোন সেটের দাম বাড়ছে। অথচ সরকার ঘোষণা দিচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার, স্মার্ট বাংলাদেশ করার। এই দুটোর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মোবাইল ফোন। সেখানে মোবাইল সেটের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি অন্তত আমি খুঁজে পাই না। এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের বক্তব্যের সঙ্গে যায় না।’
রিটার্ন জমার প্রস্তাব নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই বেশি
বিশেষত নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো এই রিটার্ন জমা দিলেই বাধ্যতামূলকভাবে ২ হাজার টাকা আয়কর দেয়ার বিষয়টি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই বেশি।
চাকুরিজীবী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবরে দেখলাম রিটার্ন জমা দিলেই দুই হাজার টাকা কর দিতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলেও কর দিতে হবে- এটা কোনো কথা হতে পারে না। আমি চাকরি করি, আমার একটা টিআইএন আছে।
‘বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন জমা দেই তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ধরুন কাল আমার চাকরি চলে গেল। পরবর্তী এক বছর আমাকে বেকার থাকতে হলো। এ অবস্থায় উপার্জন না থাকলেও টিআইএন থাকার কারণে আমাকে ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এটা সম্পূর্ণ বাস্তবতাবর্জিত প্রস্তাব।’
জাহাঙ্গীর আলম নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘লেখাপড়া শেষ করে ব্যবসা করার জন্য টিআইএন সার্টিফিকেট খুলেছিলাম। কিন্তু তার কিছুদিন পরই করোনা সংক্রমণ চলে আসায় আমার আর ব্যবসা করা হলো না। এখনও আমি বেকার। অথচ যেহেতু টিআইএন আছে তাই আমাকে বাধ্যতামূলক ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। সরকার এটা কী করলো বুঝলাম না। আমার কোনো আয় নেই অথচ আয়কর দিতে হবে!’
তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন বেসরকারি চাকুরে ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রতিটি সক্ষম ব্যক্তিরই উচিত আয়কর দেয়া। যে ব্যক্তির টিআইএন আছে তার কাছে বছরে ২ হাজার টাকা আয়কর দেয়া বড় কোনো বিষয় নয়।
‘বিষয়টি নিয়ে শুধু শুধুই বিতর্ক করা হচ্ছে। টিআইএন তো রিকশাওয়ালারা করে না, যাদের সামর্থ্য আছে তারাই করে। বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বছরে ২ হাজার টাকা তো আমাদের রিকশাওয়ালারাও দিতে পারে। সেখানে টিআইএনধারীরা দিতে পারবে না কেন?’
আরও পড়ুন:রপ্তানি আয় ফের বাড়ছে। সবশেষ মে মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার (৪.৮৫ বিলিয়ন) ডলার দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। আর গত বছরের মে মাসের চেয়ে বেশি ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ।
তবে মে মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ কম আয় দেশে এসেছে। এই মাসে ৫১২ কোটি (৫.১২ বিলিয়ন) ডলারের লক্ষ্য ধরা ছিল। গত বছরের মে মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৩৮৩ কোটি (৩.৮৩ বিলিয়ন) ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রোববার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৩০ জুন শেষ হওয়া বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে ৫ হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার (৫০.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা। যা গত ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম।
রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর ভর করেই এই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। অন্য সব খাতের চিত্রই হতাশাজনক।
এই ১১ মাসে পোশাক রপ্তানি করে ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।
এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, জুলাই-মে সময়ে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ৩৭ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-মে সময়ে অর্থাৎ বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসেই রপ্তানি আয় গত ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, জুলাই-জুন) কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। প্রবৃদ্ধির এই ধারা বজায় থাকলে জুন শেষে পণ্য রপ্তানি আয়ে রেকর্ড গড়তে চলেছে বাংলাদেশ। যদিও এর আগের দুই মাসে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি দুশ্চিন্তা তৈরি করেছিল।
টানা দুই মাস (মার্চ-এপ্রিল) পিছিয়ে থাকার পর মে মাসের রপ্তানিতে আবার উল্লম্ফন হয়েছে। মার্চ মাসে ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং এপ্রিলে ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ কমে যায় রপ্তানি। গতি ফিরেছে মে মাসে। প্রায় ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই মাসে।
ইপিবি মে মাসের রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, এই মাসে ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানির এই পরিমাণ ২০২২ সালের মে মাসের রপ্তানি আয়ের (৩৮৩ কোটি ২ লাখ ডলার) চেয়ে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
মে মাস মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ ডলার। এই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। তার আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের পণ্য।
২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি আয় প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৩০৪ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু আয় হয় ৫ হাজার ২০৮ বিলিয়ন। সেই রেকর্ডে ভর করে চলতি অর্থবছরে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
বড় প্রবৃদ্ধি হলেও মে মাসের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। এ মাসে ৫১২ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সরকার। পরিকল্পনার চেয়ে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ পিছিয়ে আছে আয়।
গত নভেম্বর থেকে টানা তিন মাস ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে ৫৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় হয় রপ্তানি থেকে, যা একক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এরপর জানুয়ারিতে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। মোট অংক ডিসেম্বরের তুলনায় কমলেও ওই দুই মাসে প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। কিন্তু মার্চ মাসে তাতে ছেদ পড়ে। আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২.৪৯ শতাংশ কম আয় করে বাংলাদেশ। রপ্তানি হয় ৪৬৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
এপ্রিলের ধাক্কা আরও বড় হয়। এই মাসে ৩৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় তা ছিল ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন:বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে সরকার।
রোববার বিকেলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
গত রমজান মাসের আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় কিনতে পেরেছেন ভোক্তারা। এরপর দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে এখন ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য।
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট পেঁয়াজের দাম আরও বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। ক্রেতাসাধারণের কথা চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত সরকার আমদানিরই সিদ্ধান্ত নিল।
মন্তব্য