প্রাচীন মিসরের ২২ জন রাজা-রানীর মমিযাত্রা দেখতে যাচ্ছে কায়রোবাসী। মনোমুগ্ধকর রাজকীয় আয়োজনে নতুন ঠিকানায় আশ্রয় নেবে মমিগুলো।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘ফারাও’স গোল্ডেন প্যারেড’ শিরোনামে মমি নিয়ে কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। এটি অনুষ্ঠিত হবে শনিবার।
জাঁকজমকপূর্ণ যাত্রার পুরোটাই সাজানো হয়েছে প্রাচীন মিসরীয় কায়দায়। ১৮ জন রাজা এবং চারজন রানীর শাসনকালের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী মমিগুলোকে সোনালী কফিনে করে পরপর সারি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হবে নতুন গন্তব্যে।
কায়রোর তাহরির এলাকায় অবস্থিত ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়ামে গত কয়েক দশক ধরে ছিল মমিগুলো। সেখান থেকে তাদের নেয়া হবে রাজধানীর দক্ষিণে ২০১৭ সালে চালু হওয়া ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ইজিপ্শিয়ান সিভিলাইজেশনে।
এই মমিযাত্রার প্রথমেই থাকবেন যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও ১৬শ’ বছর আগে রাজত্ব করা সম্রাট দ্বিতীয় সেকেনেনরে তাও। আর একদম শেষে থাকবেন খ্রিস্টপূর্ব ১২ শতকের সম্রাট নবম রামেসিস।
সবচেয়ে প্রভাবশালী ফারাও সম্রাট দ্বিতীয় রামেসিস ও সম্রাজ্ঞী হাৎশেপসুতের মমিও থাকবে এ শবযাত্রায়।
৪০ মিনিটের যাত্রায় মমিগুলো যেন কোনোরকম আঘাত না পায়, তা নিশ্চিতে আঘাত প্রতিরোধক থাকবে সব কফিনবাহী গাড়িতে।
১৮৮১ সালে লুক্সরের কাছে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় আবিষ্কৃত মমিগুলো ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই তাহরিরের ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ছিল।
৫০’র দশকের শুরুতে জাদুঘরের ছোট একটি কক্ষে মমিগুলোকে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির মিসরতত্ত্বের গবেষক অধ্যাপক সেলিমা ইকরাম জানান, নতুন জাদুঘরে আরও উন্নতমানের বাক্সে রাখা হবে মমিগুলোকে। থাকবে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত আরও ভালো পরিবেশে।
মূলত মমিগুলোকে আরও দীর্ঘদিন সুরক্ষিত রাখতে এবং দর্শনার্থীদের জন্য সুন্দর পরিবেশে মমি দেখার ব্যবস্থা নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।
নতুন জাদুঘরে স্থানান্তরের ১৫ দিন পর আবারও প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে মমিগুলো।
কয়েক মাসের মধ্যে গিজার পিরামিডের কাছে গ্র্যান্ড ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়াম নামে একটি বিশালাকৃতির জাদুঘর চালু করবে মিসর সরকার। সেখানে থাকবে কিশোর সম্রাট তুতেনখামেনসহ ফারাও সাম্রাজ্যের অনেক উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।
সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের পশ্চিমেই অবস্থিত আফিফ মরুভূমি। শুক্রবার ওই এলাকায় বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পর আফিফ মরুভূমি সাক্ষী হয় বিরল এক ঘটনার। মরুভূমিতে পড়তে থাকে তুষার। দেখে মনে হবে মরুভূমির বালুতে বিছানো আছে সাদা কম্বল।
সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ বলছে, শুক্রবার বিকেলের এই দৃশ্য অনেকেই ক্যামেরাবন্দি করেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করেন ভিডিও। তাতে দেখা যায়, রাস্তা ও এর পাশে তুষার পড়ে আছে। মুহূর্তেই এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও। সৌদি আরব সাধারণত গরমপ্রধান দেশ। তবে ইদানিং বৃষ্টি বেড়েছে। মরুভূমিতে দেখা যাচ্ছে সবুজ ঘাস। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবারের এই আবহাওয়া নিয়ে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল দেশটি। এতে বলা হয়, রোববার থেকে সৌদিতে নতুন আবহাওয়া বিরাজ করবে। এতে বাড়তে পারে বৃষ্টি। এ ছাড়া ঝড়ও আসতে পারে।
মৃত্যুর আগেই ঘরের ভেতর কবর তৈরি করে পাকা করেছেন পঞ্চগড়ের ভাজন আলী ও অবিরন নেছা দম্পতি। মৃত্যুর পর সেখানেই তাদের দাফন করার জন্য বলেছেন পরিবারের সদস্যদের।
দম্পতি জানান, পীরের নির্দেশে কবর তৈরির পাশাপাশি সেখানে সুসজ্জিত পাকা মাজার তৈরি করে রেখেছেন তারা। তাদের বসবাস কবর সংলগ্ন ঘরে। ১২ বছর ধরে তারা কবরের পাশের ঘরে বসবাস করছেন। এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।
ভাজন আলী পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভাটিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ১০১ হলেও ভাজন আলীর দাবি, তার বয়স আরও বেশি। এবং তার স্ত্রী অবিরনের বয়স ৮০ বছর। শতবর্ষী বৃদ্ধ ভাজন আলীর তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে।
ভাজন আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার শম্ভুগঞ্জের ছাইফুদ্দীন এনায়েতপুরীর কাছে তিনি বাইয়াত (শপথ পাঠ বা আনুগত্যের চুক্তি) নিয়েছিলেন। পীরের আদেশেই তিনি মৃত্যুর আগে কবর নির্মাণ করেছেন।
ভাজন আলীর দাবি, তার বাবা ইমান আলী ফকির মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, বাবার কবরের সঙ্গেই যেন তার ও তার স্ত্রীর কবর হয়। সে হিসেবে তারা জায়গা নির্ধারণ করে রেখেছেন আগে থেকেই। পরে শম্ভুগঞ্জের পীর সাহেবের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই মাটি খনন করে কবর তৈরি করে রেখেছেন তারা।
ভাজন আলীর ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার দাদার একমাত্র সন্তান ছিল আমার বাবা। তিনি আমার মা-বাবাকে বলে গেছেন যে, মৃত্যুর পরও তোমরা আমার সঙ্গে থাকিও। এজন্য আমার বাবা কবর দুইটা করে রাখছে। যাতে তাদের মৃত্যুর পর আমরা অন্যখানে কবর না দেই।’
ভাজন আলীর স্ত্রী অবিরন নেছা বলেন, ‘‘‘আমার শ্বশুর একদিন বললেন, ‘তুমিতো আমার মা হও, আমাকে বুকে নিয়ে থাকবা তুমি।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম কেমনে বাবা? এরপর তিনি বললেন, ‘আমার কবরের পাশে তোমার কবর হবে। আর তোমার কবরের পাশে আমার ছেলের কবর হবে।’ পরে আমরা শ্বশুরের কবরের পাশে আমাদের কবরও তৈরি করে রাখি।’’’
ভাজন আলী বলেন, ‘আমার বাবা মৃত্যুর আগে তার কবরের জায়গা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছিলেন, আমরা সেখানেই তাকে কবরস্থ করেছি।’
আরও পড়ুন:এটি এমন এক জায়গা যেখানে মানুষ থাকলেও কোনো পুরুষের পদচারণা নেই। আক্ষরিক অর্থেই, ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’। আর এ ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এর ঠিকানা হলো ফিনল্যান্ডে।
আসলে এটি একটি দ্বীপ, তবে আপনি যদি পুরুষ হন, তাহলে অবশ্য এ দ্বীপে আপনার প্রবেশ মানা। কারণ কেবল নারীরাই এ দ্বীপে যেতে পারেন।
ক্রিস্টিনা রথ নামে এক নারী এ দ্বীপের মালিক। শুধু নারীদের ছুটি কাটানোর জন্যই তিনি এ দ্বীপটিকে সাজিয়ে তুলেছেন। ক্রিস্টিনা একজন বিজনেস কনসালট্যান্ট। ফোর্বসের দ্রুত উন্নতি করা নারীচালিত সংস্থাগুলোর তালিকায় রয়েছে তার কোম্পানিও।
কেন হঠাৎ এমন পরিকল্পনা?
ক্রিস্টিনা রথের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার কালাবাসাসে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি লক্ষ্য করেন, পুরুষদের উপস্থিতি নারীদের নিজেদের নিয়ে অনেক বেশি সতর্ক করে তুলছিল।
সেই চিন্তা থেকেই তিনি প্রকৃতির মধ্যে শুধু নারীদের ছুটি কাটানোর সমস্ত আয়োজন করেন। পাশাপাশি নারীরা এখানে রান্নাও শিখে নিতে পারেন।
দ্বীপটির নাম ‘সুপারশি’ আইল্যান্ড। ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে চালু হয় এটি। এখানে যেতে ইচ্ছুক পর্যটকদের অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আবেদনকারীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন স্ক্রিস্টিনা।
দ্বীপে যেতে ইচ্ছুক নারী পর্যটকদের একটা ছোটখাটো ইন্টারভিউ নেন মালিক নিজেই। এরপর সিদ্ধান্ত নেন ওই নারীর আবেদন গ্রহণ করা হবে কি না। পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান স্ক্রিস্টিনা।
একসঙ্গে আট থেকে ১০ জন নারী থাকতে পারবেন এ সুপারশি দ্বীপে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া অধ্যুষিত চলনবিল থেকে তিন ফুট উচ্চতার একটি বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির মদনটাক পাখি উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার একদিলতোলা গ্রাম থেকে পাখিটিকে উদ্ধার করা হয়।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, চলনবিলের দুর্গম এলাকা একদিলতোলা গ্রামে ধানখেতে এসে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে পাখিটি। বিষয়টি বুঝতে পেরে পাখিটিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান স্থানীয় কৃষক শান্তি ইসলাম। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা খাতুন ও চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা পাখিটিকে কৃষকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন।
এ সময় পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয়। পরে পাখিটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা। বিপন্ন প্রজাতির পাখিটিকে রাজশাহী বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
সিংড়ার ইউএনও মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘চলনবিল জীববৈচিত্র্যের অফুরন্ত এক ভান্ডার। এই বিলে শীতকালে পাখ-পাখালির মেলা বসে। এটি খুবই নান্দনিক। এই বিলে জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির যে সংগঠন রয়েছে তাদের নিয়ে প্রশাসন সবসময় পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা কাজ করছে; পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
বিরল প্রজাতির মদনটাক পাখিটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় কৃষকদের তিনি ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি পাখি রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় পরিবেশকর্মী শারফুল ইসলাম খোকন, আবু বকর সিদ্দিক ও জুয়েল রানাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চপস্টিক দিয়ে একটি একটি করে মিনিটে ২৭টি ভাত খেয়ে গত বছর রেকর্ড গড়েছিলেন বরিশালের নুসরাত জাহান নিপা। তার এ কীর্তি জায়গা করে নেয় গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।
ওই রেকর্ডের পর গত বছরের ডিসেম্বরে সনদ হাতে পান এ তরুণী। বিষয়টি জানাজানি হয় সম্প্রতি।
দুটি রেকর্ড করে গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন নিপা। প্রথমবার এক মিনিটে ৭১টি কয়েন দিয়ে টাওয়ার তৈরি করার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। পরে চপস্টিক দিয়ে ভাত খেয়ে গড়েন রেকর্ড।
নিপার রেকর্ডগুলো সংরক্ষিত আছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সাইটে।
এ বিষয়ে নিপা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২২ সালে এক মিনিটে ৭১টি কয়েন দিয়ে টাওয়ার তৈরি করে বিশ্বরেকর্ড করেছিলাম। তখনও ইতালিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এবং এবারও ইতালির রেকর্ড ভাঙা হয়েছে।
‘এক মিনিটে ২৫টি ভাত খেয়ে ইতালির এক নাগরিক গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে রেকর্ড করেছিলেন। আর সেই রেকর্ডটি ভেঙেছি আমি। কয়েন দিয়ে বিশ্বরেকর্ডের থেকে চপস্টিক দিয়ে বিশ্বরেকর্ড করাটা বেশ কঠিন ছিল।
‘অনেক প্র্যাকটিসও করতে হয়েছে, তবে এবার যাচাই-বাছাই শেষে সার্টিফিকেট পেতে অনেকটা সময় লেগেছে।’
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত নিপা বলেন, ‘প্রথম রেকর্ড করার পর মানুষ নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাজে মন্তব্য করত, তবে সেসব কিছু পাত্তা না দিয়ে আমি আমার কাজ চালিয়ে গেছি।
‘মূলত ইউটিউব দেখেই এসব ধারণা পেয়েছি। সামনে নতুন কিছু করার চেষ্টা করব। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলে সব হয়। যেমন: আমার খেলাধুলার বেশ শখ, তবে বরিশালে মেয়েদের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ঘরে বসেই বিশ্বে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করেছি। আমার শহরকে আমি রিপ্রেজেন্টে করার চেষ্টা করেছি।
‘দুইবার বিশ্বরেকর্ড গড়েছি। এতে করে বাংলাদেশ ও বরিশালের নাম উজ্জ্বল করেছি। অনেক ধরনের বাধা আসবে, তবে সেসব দিকে খেয়াল না দেয়াই ভালো। নারীরা কাজ করতে গেলে সমস্যাটা বেশিই থাকে।’
নিপা জানান, একটি রেকর্ড ২০২২ এবং অপরটি ২০২৩ সালের মার্চের দিকে করলেও সনদ পান গত বছরের ডিসেম্বরে।
বরিশাল নগরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা নুসরাত জাহান নিপা বরিশালের এআরএস স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স ও মাস্টার্স করেন।
আরও পড়ুন:‘৫ টাহা দিয়া এডা কম্বল পাইয়া খুব উপকার হইল। শেরেপুরে মেলা শীত পড়ছে কয়দিন থাইক্কা। এহন আরামে থাকতে পারমু।’
কথাগুলো বলছিলেন শেরপুর জেলা শহরের বাগরাকশার মোছা. রহিমা। অর্থাভাবে শীতের কষ্ট করছিলেন তিনি। তবে জেলার আজকের তারুণ্য নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগে শীত নিবারণের সুযোগ হয়েছে তার।
শুধু রহিমা নন, সদর উপজেলার দেড় শতাধিক মানুষ এ সুবিধা নিয়েছেন। আজকের তারুণ্য ‘পাঁচ টাকার শীতবস্ত্রের বাজার’ চালু করার কারণে উপকৃত হয়েছেন তারা। হতদরিদ্ররা যাতে নামমাত্র মূল্যে শীতবস্ত্র কিনতে পারেন, সে লক্ষ্যে এ বাজার চালুর উদ্যোগ নেন সংগঠনটির কর্মীরা।
শুক্রবার বিকেলে শেরপুর সরকারি কলেজ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বাজার চালু হয়।
বাজারের আয়োজক আজকের তারুণ্যের সভাপতি রবিউল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ এই বাজারের উদ্বোধন করেন শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেজাবে রহমত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেরপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক আলী, শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিন, উত্তরা হাসপাতালের পরিচালক জাকির হোসেন, সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হীরাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী দিনে ৫ টাকা করে জমা দিয়ে দেড় শতাধিক পঙ্গু, ভিক্ষুক ও হতদরিদ্র মানুষ একটি করে কম্বল সংগ্রহ করেন। ৫ টাকার বিনিময়ে অন্তত দুই শ’ টাকার কম্বল পেয়ে সবাই খুশি।
গৌরীপুরের হাফিজ মিয়া বলেন, ‘সারাদিন হাত পেতে যা পাই, তা-ই খাই। মানুষের কাছে হুনলাম ৫ টাহা দিয়া কম্বল দিতাছে; পরে নিবার আইলাম। ৫ টাহা দিয়া ২ শ’ টাহার কম্বল পাইলাম। খুব বালাভাবে রাইত কাটবো এহন।’
খাইরন বলেন, ‘আমি খুব খুশি অইছি। এ বাজার গরীব মাইনসের জন্যে আশীর্বাদ। শীতে কয়দিন মেলা কষ্ট করলাম।’
আজকের তারুণ্যের সভাপতি রবিউল ইসলাম রতন বলেন, ‘হতদরিদ্ররা যেন আমাদের কাছ থেকে কিছু নিয়ে লজ্জিত না হন, এজন্য আমরা ৫টি করে টাকা নিয়েছি। শীতের সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান এ বাজার চালু থাকবে। শীতবস্ত্রের বাজারের পরে আমরা আসন্ন রমজান মাসে দুই টাকার পণ্যের বাজার চালু করব। এ ধরনের উদ্যোগ বিভিন্ন সময়ে অব্যহত রাখব।’
ইউএনও মেজাবে রহমত বলেন, ‘আজকের তারুণ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এ মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের উদ্যোগে সব ধরনের সহায়তা থাকবে। আমি শুনলাম, তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। যুবকদের পাশাপাশি যাদের অর্থ সম্পদ আছে তারাও যেন এসব উদ্যোগ হাতে নেন।’
আরও পড়ুন:ভোলার মনপুরায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আটকে থাকা অবস্থায় ৪০ কেজি ওজনের একটি জীবন্ত অলিভ রেডলে প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের পঁচা কোড়ালিয়া বিটের আওতায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল চরপাতালিয়া থেকে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কচ্ছপটি উদ্ধার করা হয়।
পরে বিকাল ৪টায় মনপুরা দখিনা হাওয়া সৈকতসংলগ্ন মেঘনা নদীতে কচ্ছপটিকে অবমুক্ত করা হয়।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ নিয়ে ১৮ দিনের ব্যবধানে একই প্রজাতির ৪০ কেজি ওজনের দুটি সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করে মেঘনায় অবমুক্ত করে বন বিভাগ।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির মনপুরা পঁচা কোড়ালিয়া বিট কর্মকর্তা আব্বাস আলী ইউএনবিকে জানান, মেঘনায় মাছ শিকারের সময় জেলেরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কচ্ছপটি আটকে থাকতে দেখে বন বিভাগকে জানান। তখন মেঘনায় টহলে থাকা বন বিভাগের টিম নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আটকে থাকা কচ্ছপটি উদ্ধার করে পঁচা কোড়ালিয়া বন বিভাগের বিট কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরে দখিনা হাওয়া সৈকতসংলগ্ন মেঘনায় অবমুক্ত করা হয় প্রাণীটিকে।
এ বিষয়ে মনপুরা বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, মনপুরায় ১৮ দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি ৪০ কেজি ওজনের অলিভ রেডলে প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত কচ্ছপটি মেঘনায় অবমুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য