১৮০৫ সাল। ভারতে তখনও কোম্পানি শাসন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গুটিবসন্তের বিস্তার।
এর মাত্র পাঁচ বছর আগে এ রোগে আক্রান্ত হয় এক কোটি ৮৫ লাখ মানুষ। এমন বাস্তবতায় দেশটিতে টিকা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। সেটারই সুযোগ নেয় উপনিবেশ স্থাপনকারী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তাদের মাধ্যমে ভারতে আসে বসন্তের টিকা।
অবশ্য ছয় বছর আগেই টিকাটি আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার।
টিকা আসার সময়ে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কর্ণাটক রাজ্যের মহীশূরের রাজত্ব ছিল ওয়েদিয়ার রাজবংশের হাতে। নতুন রাজা তৃতীয় কৃষ্ণরাজা ওয়েদিয়ার। তার রাজপ্রাসাদে রানি হয়ে আসেন দেবযামিনী। নতুন রাজা-রানি দুজনের বয়সই ছিল ১২ বছর।
রাজপ্রাসাদে আসার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজে যুক্ত হন দেবযামিনী। গুটিবসন্তের টিকা আসার বিষয়টি সাধারণ জনগণের কাছে প্রচার ও টিকা নিতে তাদের উৎসাহ জোগাতে এক তৈলচিত্রের মডেল হন তিনি।
ভারতে গুটি বসন্তের টিকার এ প্রচার ছিল দেশটিতে ব্রিটিশ শাসন পোক্ত করার একটি চেষ্টা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই সুযোগটিকে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগায়।
প্রচারকাজে কোম্পানি কাজে লাগায় ব্রিটিশ সার্জন, ভারতীয় টিকাদানকারী, কিছু কর্মকর্তা ও রাজপরিবারের বন্ধুত্বকে।
রাজপরিবার হিসেবে তখন ব্রিটিশদের অনুগত ছিল ওয়েদিয়ার বংশ। ব্রিটিশরা তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু টিপু সুলতানকে সরিয়ে ৩০ বছর পর ওয়েদিয়ার রাজপরিবারকে ক্ষমতায় আনে।
রাজবংশের রাজা-রানিদের চিত্রকর্ম কোনো নতুন বিষয় ছিল না। তবে ১৮০৫ সালে ভারতের ১২ বছর বয়সী কোনো রানিকে জনসাধারণের প্রচারকাজে বিলাতি শিল্পীর চিত্রকর্মের মডেল হিসেবে দেখতে পাওয়াটা ছিল নতুন বিষয়।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ডা. নাইজেল চ্যান্সেলর ভারতের মহীশূরের রাজবংশ নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, তার ধারণা, রানিকে চিত্রকর্মের মডেল বানানো সম্ভব হয়েছিল রাজা তৃতীয় কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ারের দাদি লক্ষ্মী আম্মানির কারণে।
লক্ষ্মী আম্মানির স্বামী গুটিবসন্তে মারা গিয়েছিলেন। তিনি চাইছিলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মিলে এই রোগ রোধে জনগণের পাশে দাঁড়াতে।
রাজা ও রানি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় টিকার বিষয়ে সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছিল আম্মানিকে।
ইতিহাসবিদ চ্যান্সেলরের ধারণা, তেলচিত্রে তিনজনের মধ্যে মাঝখানের নারীটিই লক্ষ্মী আম্মানি।
চ্যান্সেলর প্রথমবার যখন ছবিটি দেখেন, তখন সেটি শিরোনামহীন অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, ছবিটির বিষয়বস্তু নৃত্যরত তিন নারী। কিন্তু চ্যান্সেলর ছবিটি দেখার সাথে সাথেই বুঝতে পারেন, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে।
ছবিতে ডানদিকে থাকা নারীকে দেবযামিনী হিসেবে চিহ্নিত করেন চ্যান্সেলর।
তিনি জানান, ভারতীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী, দেবযামিনীর বাম হাতটি স্বভাবতই শাড়িতে ঢেকে রাখার কথা। কিন্তু টিকা দেওয়ার জায়গাটি চিহ্নিত করতে হাত থেকে আঁচল সরিয়ে রাখেন এ নারী।
চ্যান্সেলর মনে করেন, ছবিতে বাম দিকে থাকা নারীটি রাজার প্রথম স্ত্রী। তার নামও দেবযামিনী।
ছবিতে প্রথম স্ত্রীর নাকের নিচে ও মুখের চারপাশের ফ্যাকাশে রং গুটিবসন্তের প্রতীক বলে মনে করেন চ্যান্সেলর।
সে সময়ে রোগের সংক্রমণ কমাতে আক্রান্ত কেউ সুস্থ হলে তার শরীর থেকে ফুসকুড়ির গুঁড়ো নেওয়া হতো। পরে সেই গুঁড়ো সুস্থ মানুষের নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করানো হতো।
চ্যান্সেলর তার বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে ২০০১ সালে একটি নিবন্ধ লেখেন। এতে বলেন, চিত্রকর্মটির সময়ের সাথে মহীশূরের রাজার বিয়ের তারিখের মিল আছে।
এ ছাড়াও ১৮০৬ সালের আদালত রেকর্ডে টিকা প্রচার কাজে দেবযামিনীর সমর্থনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।
মহীশূরের ইতিহাস নিয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান থেকে চ্যান্সেলর বলেন, স্বর্ণের ভারী বালা ও মাথার বিভিন্ন অলংকার মহীশূর রানিদের বৈশিষ্ট্য ছিল। তা ছাড়া ছবিটির শিল্পী টমাস হিকি ওয়েদিয়ার বংশের আরও কিছু সদস্যের ছবি এঁকেছিলেন।
ভারতে গুটিবসন্ত সাধারণ মানুষের কাছে ছিল আতঙ্কের বিষয়। প্রচণ্ড জ্বর, শরীর ব্যাথাসহ মুখে ও শরীরে গুটি বের হওয়া এই রোগের লক্ষণ।
টিকা প্রচারের আগে রোগমুক্তির জন্য মারিয়াম্মা (শীতলা) নামের দেবীর পূজা করত সাধারণ মানুষ। এমন বাস্তবতায় রোগের সংক্রমণ থেকে তাদের বাঁচাতে টিকার প্রচার জরুরি হয়ে পড়ে।
ভারতে আনা টিকার উপাদানটি নেওয়া হয়েছিল অ্যানা ডাস্টহল নামের তিন বছর বয়সী এক ব্রিটিশ শিশুর শরীর থেকে। সেই সময়ে রোগে আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়া মানুষের শরীর থেকে প্রতিষেধক উপাদান সংগ্রহ করা হতো।
অ্যানা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক কর্মীর মেয়ে। সে ভারতের প্রথম শিশু, যে গুটিবসন্ত থেকে আরোগ্য লাভ করে।
প্রচারের মাধ্যমে দশ লাখেরও বেশি টিকা সাধারণ মানুষকে দেয়া হয়। টিকাদান শেষে রানির তেলচিত্রটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরিয়ে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এভাবেই বিশ্বের প্রথম টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আঁকা চিত্রকর্মটি ব্যাপক মানুষের কাছে পরিচিতি পায়।
ছবিটি বর্তমানে ব্রিটিশ নিলাম কোম্পানি সথবি’স-এর সংগ্রহে আছে। এর বর্তমান মূল্য চার থেকে ছয় লাখ পাউন্ড।
সাধারণত মাথা কেটে ফেলার পরও মুরগি কিছুক্ষণ নড়াচড়া করতে থাকে। তবে ইতিহাসে একবার ঘটেছিল বিরল ঘটনা। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ফ্রুইটাতে মাথা ছাড়া ১৮ মাস বেঁচে ছিল একটি মুরগি।
এ ঘটনা সে সময় তোলপাড় তুলেছিল। অনেকে এটিকে অলৌকিক ঘটনা বলেই বিশ্বাস করতেন। তবে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?
লয়েড ওলসেন নামে এক ব্যক্তি তার পারিবারিক খামারে কাজ করছিলেন। বাজারে নেয়ার জন্য মুরগিটি জবাই করছিলেন তিনি। এর মধ্যে একটি মুরগি আশ্চর্যজনকভাবে মাথা কাটার পরও দৌড়াচ্ছিল।
ওলসেন মুরগিটিকে ধরে একটি বাক্সের মধ্যে রাখেন। তিনি নিজেই এই ঘটনায় কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। বাক্সে রাখা মুরগীটির নাম দেন তিনি ‘মাইক’। আশ্চর্যজনকভাবে পরের দিন সকালেও ওলসেন দেখলেন মুরগিটি বেঁচে আছে।
কীভাবে বেঁচে ছিল?
মুরগির মস্তিষ্কের বেশির ভাগ অংশ মাথা ও চোখের পেছনে থাকে। যখন ওলসেন মাথা কাটার জন্য কোপ দেন তখন মাইকের মাথার সামনের বেশির ভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শ্বাস-প্রশ্বাস, হজম ও অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের অংশটি অক্ষত রয়ে যায়।
পরবর্তীতে তিনি মুরগিটিকে খাওয়ানোর কৌশল আবিষ্কার করেন। সেটির খাদ্যনালীতে ড্রপার দিয়ে পানি ও তরল খাবার দিতেন। পাশাপাশি সিরিঞ্জ দিয়ে গলা থেকে শ্লেষ্মা অপসারণ করতেন। এভাবে বেশ সুস্থ সবল শরীর নিয়েই বেঁচে ছিল মাইক।
সে সময় মাইক এতটাই বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল যে, টাইম ম্যাগাজিনও এটিকে নিয়ে প্রতিবেদন ছেপেছিল।
এ ঘটনায় ওলসেন বুঝতে পারেন, মাইক বিখ্যাত হতে যাচ্ছে! মানুষ এটিকে টাকা দিয়ে দেখতে আসবে। ঘটনার পরের ১৮ মাস বিভিন্ন মেলা, কার্নিভ্যাল ও অন্যান্য পাবলিক ইভেন্টে এই মস্তকবিহীন মুরগিটি প্রদর্শন করেন ওলসেন। এগুলো করে বেশ অর্থও কামান তিনি।
১৯৪৭ সালের ১৭ মার্চ অ্যারিজোনার ফিনিক্সে প্রদর্শনীর জন্য সফরকালে মাইক মারা যায়। ওলসেন ও তার স্ত্রী ক্লারা তাদের হোটেলের ঘরে মাইকের শ্বাসনালির গড়গড় শব্দে জেগে ওঠেন। মাইককে বাঁচানোর জন্য তারা সিরিঞ্জ খুঁজছিলেন, কিন্তু সিরিঞ্জটি ভুলবশত এটি সাইড শো-তে রেখে এসেছিলেন। ফলে মাইকের গলা থেকে শ্লেষ্মা টেনে বের করা যায়নি। এতে একসময় দম বন্ধ হয়ে মারা যায় মুরগিটি।
এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি বহু দশক আগে ঘটলেও, ফ্রুইটারের নাগরিকরা মুরগিটিকে ভুলে যায়নি। এটিকে সেখানকার জনগণ ‘মাইক দ্য হেডলেস চিকেন’ নামে চেনে।
প্রতি বছর ওই শহরে মাইকের স্মরণে একটি উৎসব আয়োজন করা হয়। এ উৎসবে শত শত মানুষ জমায়েত হয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সম্ররা মুন্ডা নামের এক জেলের পেট থেকে অস্ত্রোপচার করে একটি কুঁচিয়া বের করা হয়েছে। মাছ ধরার সময় পায়ুপথ দিয়ে কুঁচিয়াটি পেটের ভেতর ঢুকে যায়।
শনিবার দিনের বেলা এ ঘটনা ঘটলেও সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা কুচিয়াটি এক দিন পর জীবিত অবস্থায় ওই জেলের পেট থেকে অস্ত্রোপচার করে বের করেন।
জানা যায়, উপজেলার মিতিঙ্গগা চা বাগানের উপজাতি জেলে সম্ররা মুন্ডা কুচিয়া মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের মতো শনিবারও (২৩ মার্চ) তিনি মাছ ধরতে যান। এ সময় হঠাৎ কাদায় আটকে গেলে তার দুই হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া কাদায় পড়ে যায়। তখন তিনি অনুভব করেন তার পায়ুপথে কী যেন ঢুকছে। তবে তখন বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দেননি। তিনি বাড়ি ফেরার পর পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন।
রোববার স্থানীয় হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তার কথা শুনে এক্স-রের মাধ্যমে পেটের ভিতর লম্বা আকৃতির একটি বস্তু দেখতে পান। পরবর্তীতে সম্ররা মুন্ডাকে ওইদিন সন্ধ্যায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার চালিয়ে তার পেটের ভেতর থেকে জীবন্ত অবস্থায় কুঁচিয়া মাছটি বের করেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় ডাক্তাররাও বিস্মিত।
ওসমানী মেডিক্যালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পেট থেকে জীবিত ২৫ ইঞ্চি লম্বা একটি কুঁচিয়া মাছ বের করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ওসমানী মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড়ে এক মাস বয়সী শিশু কন্যাকে বিক্রির জন্য বাজারে তুলে এলাকায় চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছেন এক নার।
সোমবার বিকেলে পঞ্চগড় শহরের মেডিসিন রোড এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
তবে ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মানসিক ভারসাম্য না থাকায় জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াতেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন নারী তার কোলে থাকা ১ মাস বয়সের একটি কন্যা শিশুকে আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন। দর কষাকষির মাধ্যমে ওই শিশুকে ক্রয় করছেন এক বৃদ্ধ। এক পর্যায়ে টাকা দিয়ে শিশুটিকে নিজ কোলে নেন ওই বৃদ্ধ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার নিজের সন্তানকে বিক্রির জন্য দাম হাঁকান ওই নারী। এরপর শহরের ট্রাক টার্মিনাল এলাকার বৃদ্ধ মেকানিক ইসমাইল হোসেন শিশুটিকে ২৫ শ’ টাকার বিনিময়ে কিনে নেন। বিক্রির বেশ কিছু সময় পর শিশুটিকে আবারও অবশ্য ফেরত নিয়ে নেন ওই নারী।
এ বিষয়ে ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সোমবারে বাজার করার সময় দেখি, ওই মেয়েটি তার সন্তাকে বিক্রি করবে বলছে। আমার এক ভাগনির সন্তান নেই। বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভাগনির জন্য বাচ্চাটি কিনতে চাই। পরে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে বাচ্চাটিকে নিজের কোলে নেই। এরপর বাড়ি ফেরার পথে সে আবার দৌড়ে এসে টাকা ফেরত দিয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে নেয়।’
বিষয়টি জানতে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তারপরও বিষয়টি দেখতে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।’
আরও পড়ুন:নিরাপত্তার ইস্যুতে বন্ধ রাখা হয়েছে সারা বিশ্বে শিশুদের কাছে জনপ্রিয় সিরিজ হ্যারি পটারের বিভিন্ন পর্বে প্রদর্শিত বাষ্পচালিত ট্রেন পরিষেবা ‘দ্য হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস’।
স্থানীয়ভাবে ‘দ্য জ্যাকোবাইট সার্ভিস’ নামে পরিচিত এ সেবাটি যুক্তরাজ্যে দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। ট্রেনটি বন্ধ থাকার ফলে প্রায় ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত লোকসান হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন এর অপারেটর।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হ্যারি পটার সিনেমাখ্যাত এই হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্যটকদের সেবা দিয়ে আসছে। বাষ্প ইঞ্জিনের এই ট্রেন এতদিন যাবত বিশেষ ছাড়ের অধীনে পর্যটকদের মনোরঞ্জন করে আসছিল। তবে এখন বাঁধ সেধেছে ট্রেনটির পুরোনো ধাঁচের দরজা।
বর্তমানে এই দরজার অনুমোদন নেই দেশটিতে। তাই ওয়েস্ট কোস্ট রেলওয়ের (ডব্লিউসিআর) এই পরিষেবাটি আবারও চালু করতে অনুমোদন লাগবে ইংল্যান্ডের অফিস অফ রেল অ্যান্ড রোডের (ওআরআর)। এই সংস্থা অনুমোদ দিলেই পুনরায় চলতে পারবে দ্য হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস।
২০০২ সালে জে কে রাউলিংয়ের বিখ্যাত শিশুতোষ সিরিজ হ্যারি পটারের দ্বিতীয় খণ্ড ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’-এ প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল এই বাষ্পচালিত ট্রেন। এরপর এটি আরও কয়েকটি খণ্ডে প্রদর্শিত হয়। মূলত সেখান থেকেই দর্শকদের আকর্ষণের জায়গা হয়ে ওঠে হাইল্যান্ডসের গ্লেনফিনান ভায়াডাক্টের ওপর দিয়ে মালাইগ থেকে ফোর্ট উইলিয়াম পর্যন্ত পাড়ি দেওয়া এই হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস।
পরিষেবাটি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চালু থাকে। এ বছরও দর্শনার্থীদের পরিষেবা দিতে ট্রেনটি বিশেষ ছাড়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দ্য জ্যাকোবাইট সার্ভিসটি বন্ধ থাকবে। তবে যারা এতে চড়তে আগেই টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন, তারা পুরো টাকা ফেরত পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
ডব্লিউসিআরের বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক জেমস শাটলওয়ার্থ বলেন, ‘পরিষেবাটি স্থগিত হওয়ায় আমরা হতাশ; আমাদের ট্রিপ বুক করা গ্রাহকদের অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
তিনি বলেন, ‘জ্যাকোবাইট পরিষেবাটি হাজার হাজার পর্যটকের আকর্ষণের জায়গা। এটি মালাইগ এবং ফোর্ট উইলিয়ামের স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশপাশি যুক্তরাজ্যের পর্যটন খাতে প্রতি বছর অন্তত ২০ মিলিয়ন পাউন্ড যোগ করে। ওআরআর যদি আমাদের আবারও ছাড় না দেয়, তাহলে এতে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অন্তত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড লোকসান হতে পারে।’
ছোট ছোট বাচ্চারা ঘিরে ধরেছে, আছে নানা বয়সের মানুষও। দূর থেকে মনে হবে হয়ত টিসিবির পণ্য সংগ্রহের লাইন। তবে কাছে গিয়ে দেখা গেল ভিন্নচিত্র। ১০ টাকার বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে বসেছে এ আয়োজন। প্যাকেট খুলে দেখা যায়, দামে ১০ টাকার হলেও সেখানে অন্তত ৭০ টাকা মূল্যমানের ইফতার সামগ্রী রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভার অটো পার্টস ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান তিন বছর ধরে এই আয়োজন চালিয়ে আসছেন।
ফ্রিতে কেন দিচ্ছেন না?- জবাবে আনিসুর রহমান বলেন, ‘সারা দিন রোজা রেখে মানুষ ইফতার করবে নিজের টাকায়- এই অনুভূতিটুকু তাদের হোক। এই ভাবনা থেকেই আমি এইটুকু মূল্য যোগ করেছি। আমার এটা করতে ভাল লাগছে এবং বাকিটা তো উপরে একজন আছেন। তিনি সব জানেন এবং দেখেন।’
আনিসুর রহমানের দুই সন্তান শাহাদাত হোসাইন ও সাজ্জাদ হোসাইন বাবাকে সহয়তা করছিলেন।
তারা জানান, বাবুর্চি দিয়ে তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষে এসব খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। বাবুর্চিও অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজটি করেন।
বাবার এই কাজ দুই ছেলেরই খুব ভাল লাগে জানিয়ে তারা বলেন, তাই প্রতি বছর এই সময়টার জন্য আমরা অপেক্ষা করি। এটাকে রোজাদারদের সেবা করার একটা সুযোগ হিসেবে দেখছি।
আনিস সাহেব জানান, সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে এটার পরিসর বড় করা যাবে। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া যাবে।
ইফতার সামগ্রী সংগ্রহ করতে আসা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী জানায়, সে ১০ টাকা দিয়ে পরিপূর্ণ ইফতার সামগ্রী পাচ্ছে। এজন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এখানে চলে আসে।
পাশের গ্রাম বাইঙ্গাপাড়া থেকে বয়ঃজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তিও এখান থেকে ইফতার সংগ্রহ করার কথা জানান।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির সময়ে আনিস সাহেবের এমন কাজকে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন:কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জন্মসূত্রে পাবনা জেলার নাগরিক! অন্তত কাগজে-কলমে এমনটিই ঘটেছে। জেলার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে তার নামে ইস্যু করা হয়েছে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ। এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর তৈরি হয়েছে এলাকায়।
ইউনিয়ন পরিষদের দেয়া জন্ম নিবন্ধন সনদে দেখা গেছে, জাস্টিন ট্রুডোর পিতা পিয়েরে ট্রুডো, মাতা মার্গারেট ট্রুডো, যা সত্যি সত্যি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে মিলে যায়।
বিশ্বের এই আলোচিত প্রধানমন্ত্রীকে জন্মসূত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়া হয়েছে পাবনার আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরের শেষের দিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিয়ার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে এক ইউপি সদস্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও মূলত দায়িত্ব পালন করে আসছেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আওলাদ হাসান। তার ছত্রছায়ায় পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেন টাকার বিনিময়ে ইচ্ছামতো যে কারও নামে জন্মনিবন্ধন ইস্যু করতেন।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ওই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে অনেক কিছুই পাওয়া সম্ভব বলে জানান তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেনের খোঁজ করা হলে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে ইউপি সচিব আওলাদ হাসান বলেন, ‘আমি এসব ঘটনার কিছুই জানি না। সার্ভারের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড আমার কাছে থাকলেও নিলয় হয়ত কোনোভাবে জেনে গেছে। আমার অগোচরে সে ওটিপি কোড নিয়ে এসব করেছে। এ ঘটনায় আমি দায়ী নই।’
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভার কেউ হ্যাক করেও কাজটি করতে পারে। আবার ইউনিয়ন পরিষদের কেউ-ও কাজটি করে থাকতে পারেন।
‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর ঘটনার আসল রহস্য বোঝা যাবে।’
আরও পড়ুন:স্থূল হওয়ার কারণে নিউজিল্যান্ডের একটি ফ্লাইট থেকে দুই নারী যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এয়ার নিউজিল্যান্ডের এমন আচরণে মর্মাহত এবং অপমানিতবোধ করছেন তারা।
গত শুক্রবার দেশটির নেপিয়ার থেকে অকল্যান্ডে যাওয়ার উদ্দেশে ওঠা ফ্লাইটে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মূখীন হন এঞ্জেলা হার্ডিং ও তার বন্ধু।
নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান নিউজের প্রতিবদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ওঠার পর হঠাৎ বাঁ হাতে ব্যথা অনুভব করেন এঞ্জেলা। এরপর একজন নারী ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্টকে ডেকে হাতের কব্জিটি নীচে নামিয়ে দিতে অনুরোধ করেন তিনি।
তা না করলে তিনি সিটে ঠিক করে বসতে পারছিলেন না। এদিকে তারা না বসা পর্যন্ত পাইলটও বিমান ওড়াতে পারছিলেন না।
এমন সময় বিমানের স্পিকারে ঘোষণা শোনার পর বিভ্রান্তি আরও বেড়ে যায়। ঘোষণায় বলা হয়, সমস্ত যাত্রীদের সুবিধার্থে এঞ্জেল হার্ডিং ও তার বন্ধুকে বিমান থেকে নেমে যেতে হবে।
পরে ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্ট এসে জানান, তাদের স্থূলতার কারণে দুজনের দুটি করে মোট চারটি আসন বুক করা উচিত ছিল।
এঞ্জেলের দাবি, এর আগে আকাশপথে ভ্রমণকালে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের। এমনকি তিনি বা তার বন্ধু কারোরই দুটি আসনের টিকিট কেনার সামর্থ্য নেই বলে অ্যাটেন্ড্যান্টকে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। আমার চেহারার কারণে, আকারের কারণে তারা আমাকে নামিয়ে দিল। খোলসা করে না বললেও আসলে এটাই ছিল তাদের অসুবিধার কারণ।’
এ ঘটনার পর অবশ্য ওই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এয়ার নিউজিল্যান্ড।
এক বিবৃতিতে এয়ার নিউজিল্যান্ডের মহাব্যবস্থাপক অ্যালিশা আর্মস্ট্রং বলেছেন, ‘ওই দুই যাত্রীর সঙ্গে যা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা দুঃখিত। সকল গ্রাহকের সম্মান রক্ষা এবং তাদের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় আচরণ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
মন্তব্য