ভারতীয় দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অভূতপূর্ব সাফল্য ও জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী। অনেক ক্ষেত্রেই বলিউডকেও ছাপিয়ে গেছে। তেলেগু, তামিল, কন্নড় ও মালয়ালম-এই চার ভাষার সিনেমা কেবল ঘরোয়া দর্শক নয়, বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে। চিত্রনাট্যের বৈচিত্র্য, দুর্দান্ত সিনেমাটোগ্রাফি আর শক্তিশালী অভিনয়- সব মিলিয়েই এ সাফল্য। আর সেই সাফল্যের ভাগীদার দক্ষিণের অভিনেতারা, যাদের পারিশ্রমিক আজ বলিউড সুপারস্টারদেরও ছাড়িয়ে গেছে।
দক্ষিণীদের পারিশ্রমিকের দিক থেকে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান, ভাইজানখ্যাত অভিনেতা সালমান খান, মিস্টার পারফেকশনিস্টখ্যাত অভিনেতা আমির খান, বিগবি অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকাদের ছাড়িয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের একেকটি ছবি রেকর্ড ভেঙেছে- ‘বাহুবলী’, ‘কেজিএফ’, ‘আরআরআর’, ‘পুষ্পা’ থেকে ‘কান্তারা’।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির তারকা কারা-
১. আল্লু অর্জুন
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্টির (তেলেগু) সুপারস্টার আল্লু অর্জুন ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ দিয়ে ঘরে ঘরে পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন। এর সিক্যুয়েল ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ গত বছর মাত্র ১৩ দিনে বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ৪০০ কোটির বেশি আয় করেছে, যা শুধু ভারতে ৯৫৩ কোটি রুপি। বর্তমানে তার পারিশ্রমিক প্রায় ৩০০ কোটি রুপি, যা কেবল দক্ষিণী নয়, পুরো ভারতে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে ‘গঙ্গোত্রি’ দিয়ে যাত্রা শুরু করা আল্লু অর্জুনের ঝুলিতে আছে ছয়টি ফিল্মফেয়ার, তিনটি নান্দী আর একটি জাতীয় পুরস্কার।
২. বিজয় থালাপতি
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় থালাপতি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। একেকটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ২৭৫ কোটি রুপি। বর্তমানে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত বিজয়।
প্রসঙ্গত বিজয়ের প্রথম তামিল সিনেমা ছিল ‘ঘিল্লি’ (২০০৪), যা ৫০ কোটির ঘর পেরোয়। ‘থিরুপাচ্চি’, ‘পোক্কিরি’ তাকে শীর্ষনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। সাম্প্রতিক ব্লকবাস্টার ‘লিও’ ও ‘গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ তার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য।
৩. রজনীকান্ত
দক্ষিণী সিনেমার সর্বকালের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার রজনীকান্ত। সত্তরোর্ধ্ব বয়সেও তিনি মহানায়ক। পারিশ্রমিকের দিক থেকে তিনি তৃতীয়। প্রতিটি সিনেমায় তার পারিশ্রমিক ১২৫ থেকে ২৭০ কোটি রুপি। ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে ১৭০টির বেশি সিনেমা অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত। তার সাম্প্রতিক সিনেমা ‘কুলি’ আয় করেছে ৫০০ কোটির বেশি রুপি। প্রসঙ্গত দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, পদ্ম বিভূষণসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন রজনীকান্ত।
৪. প্রভাস
‘বাহুবলী’ ফ্র্যাঞ্চাইজি দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত প্রভাস পারিশ্রমিকপ্রাপ্তদের চতুর্থ। প্রতিটি ছবির জন্য ১০০ থেকে ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন। তার হিট সিনেমার তালিকায় আছে ‘ডার্লিং’, ‘মিস্টার পারফেক্ট’, ‘সালার’ ও ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’। প্রভাসই একমাত্র ভারতীয় অভিনেতা, যার ছয়টি সিনেমা মুক্তির শুরুতেই বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটির বেশি আয় করেছে।
৫. অজিত কুমার
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) অন্যতম সুপারস্টার অজিত কুমার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬১টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। একেকটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ১০৫ থেকে ১৬৫ কোটি রুপি।
প্রসঙ্গত ‘ভারালারু’, ‘বিলা’, ‘কিরিদম’, ‘মঙ্কথা’ তার জনপ্রিয় সিনেমা। তিনবার ফিল্মফেয়ার সাউথ ও তিনবার তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন অজিত কুমার।
৬. কমল হাসান
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসান একাধারে হিন্দি, বাংলা, তেলেগু, কন্নড় ও মালয়ালম- সব ভাষাতেই কাজ করেছেন। প্রতি সিনেমায় তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ কোটি রুপি। ২২০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত ‘মুন্দ্রাম পিরাই, ‘সাগর সঙ্গম’, ‘নায়কন’, ‘পুষ্পক বিমানা’, ‘দশাবতারম’, ‘বিশ্বরূপম’, ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’ তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা।
৭. রাম চরণ
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ‘আরআরআর’ দিয়ে বিশ্বজুড়ে পরিচিত রাম চরণ বর্তমানে নিচ্ছেন ১০০ থেকে ১৩০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক। তার ঝুলিতে আছে চারটি ফিল্মফেয়ার ও দুটি নান্দী পুরস্কার।
৮. মহেশ বাবু
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তেলেগু) ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা মহেশ বাবু। এ অভিনেতা এখন পর্যন্ত ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৮০ থেকে ১০০ কোটি রুপি।
প্রসঙ্গত ওক্কাডু’, ‘অথাডু’, ‘বিজনেসম্যান’, ‘ভরৎ আনে নেনু’ ও ‘সরকারু ভারি পাটা’ তার সুপারহিট সিনেমা। পাঁচবার ফিল্মফেয়ার, ৯ বার নান্দী ও চারবার সাইমা পুরস্কার পেয়েছেন মহেশ বাবু।
৯. সুরিয়া
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) জনপ্রিয় নায়ক সুরিয়া। তিনি একেকটি সিনেমার জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৩৯ কোটি রুপি। প্রসঙ্গত ‘খাখা খাখা’, ‘গজনি’, ‘আয়ান’—সবই তার সাফল্যের প্রমাণ। দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ছয়টি ফিল্মফেয়ার সাউথ জিতেছেন তিনি।
১০. ধানুশ
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) আয়ের বিবেচনায় ধানুশ ১০ নম্বর স্থানে আছেন। তামিলের বহুমুখী অভিনেতা ধানুশ প্রতিটি সিনেমায় পাচ্ছেন ৩৫ কোটি রুপি। ৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
প্রসঙ্গত বলিউডে ‘রানাঝানা’ দিয়েও সাড়া ফেলেছেন। তার গাওয়া গান ‘হোয়াই দিস কোলাভেরি ডি’ ইউটিউবে প্রথম ভারতীয় ভিডিও হিসেবে ১০ কোটির বেশি ভিউ পায়। চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটবার ফিল্মফেয়ার সাউথসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এখন তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণ ও প্রযোজনা নিয়েও ব্যস্ত।
মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২৫-এর মুকুট জিতেছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আলোকি গ্রিন হাউসে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এ সময় মঞ্চে মিথিলার মাথায় বিজয়ীর মুকুট পরিয়ে দেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তমা মির্জা এবং মডেল-অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল। বিজয়ী হবার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মিথিলা এই জয় উৎসর্গ করেন তার মাকে। তিনি বলেন, ‘আজ আমি যা কিছু, তা আমার মায়ের জন্যই সম্ভব হয়েছে। তিনি সবসময় আমার শক্তি ও অনুপ্রেরণা ছিলেন। এই অর্জন যেমন আমার, তেমনি তারও।’
এর আগে, ২০২০ সালে ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এ অংশ নিয়ে খেতাব জিতেছিলেন মিথিলা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে সে বছর আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশ নিতে পারেননি তিনি। তবে এবার তিনি প্রতিনিধিত্ব করবেন৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায়, যা আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে।
এ নিয়ে মিথিলা আরও বলেন, ‘আমি গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। মর্যাদা, সাহস ও সম্মানের সঙ্গে দেশের সুনাম রক্ষার চেষ্টা করব আমি। আপনারা সবাই আমার পাশে থাকবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।’
মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের জাতীয় পরিচালক মুস্তাফা রফিকুল ইসলাম ডিউক বলেন, ‘মিথিলা শুধু একজন সফল মডেল ও অভিনেত্রীই নন, তিনি বাল্যবিবাহবিরোধী প্রচারণা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে কাজের জন্যও পরিচিত। ২০২০ সালে তিনি জাতীয় পর্যায়ে এই খেতাব জিতেছিলেন, তবে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি। এবার ২০২৫ সালে পুনরায় মুকুট জিতে তিনি ইতিহাস গড়লেন তিনি।’
সাদিয়া জাহান প্রভা অনেক আগেই নিজেকে একজন সুঅভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করেছেন। যদিও ব্যক্তিগত নানা কারণে অভিনয় থেকে দীর্ঘ সময় দূরে ছিলেন তিনি। তবে, গত কয়েক বছর ধরেই তিনি অভিনয় করছেন। খুব বেছে বেছে কম নাটকেই কাজ করা হচ্ছে তার। কারণ চাকরি নিয়েও তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। পাশাপাশি ভ্রমণ করতেও খুব ভালোবাসেন এ অভিনেত্রী। তাই মাঝে-মধ্যেই দেশ-বিদেশে ঘুরতে দেখা যায় তাকে। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সরব প্রভা। নিজের ভ্রমণের বিভিন্ন ছবি-ভিডিও তিনি শেয়ার করেন এ মাধ্যমে। সম্প্রতি একটি বিদেশ ভ্রমণের ছবি শেয়ার করেন এ তারকা। আর তাতে একটি নেতিবাচক মন্তব্য চোখ এড়ায়নি প্রভার। মন্তব্যটি হলো, দেশ-বিদেশ ঘোরাঘুরি করার এত টাকা কোথা থেকে পায়? কী ব্যবসা করেন উনি? এখন তো নাটকেও দেখা যায় না। এই মন্তব্যের বিপরীতে বেশ কড়া জবাবই দিয়েছেন অভিনেত্রী। প্রভা উত্তরে বলেন, চাকরি করি ভাই। ঠিক মতোন পড়াশোনা করেছি তো, ভালো চাকরিই পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ্। আবার, বাবা-মায়ের অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো আমার। তাই বাড়িভাড়া, বাজার, বিল- এসব দিতে হয় না আমাকে। নাটক দুটি করলেও অনেক টাকা পাই, আলহামদুলিল্লাহ্। প্রভা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আর কোনো তথ্য লাগবে আমার আয়ের উৎসের? এদিকে, প্রভার এই মন্তব্যের প্রশংসা করেছেন অনেক নেটিজেন। অনেকে সেখানে মন্তব্য করেও প্রভার কড়া জবাবকে বাহ্বা দেন।
২০১৭ সালে চোখ ধাঁধানো আয়োজনে বিয়ে সারেন দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় তারকা জুটি সামান্থা রুথ প্রভু ও অভিনেতা নাগা চৈতন্য। যদিও ২০২১ সালে সেই সম্পর্ক তাদের ভেঙে যায়। প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ। বিগত কয়েক বছর ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে তাদের ব্যক্তিগত জীবন। এরপরও প্রায়ই তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে আলোচনার ঝড় ওঠে।
সামান্থার সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর অভিনেত্রী শোভিতা ধূলিপালাকে নিয়ে নতুন করে সংসার পেতেছেন নাগা চৈতন্য। এবার শোনা যাচ্ছে, নাগার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙতেই নাকি দক্ষিণী সিনেমায় খুব একটা কাজ পাচ্ছেন না অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী ও প্রযোজক লক্ষ্মী মানচু মন্তব্য করে বলেন, তেলেগু ইন্ডাস্ট্রির এক তারকার সাবেক স্ত্রী বিয়ে ভাঙার পর থেকে কাজ পাচ্ছেন না। যদিও সরাসরি কোনো নাম নেননি লক্ষ্মী মানচু।
কিন্তু অনুরাগীদের দাবি, তিনি প্রিয় বন্ধু সামান্থার কথাই বুঝিয়েছেন। ‘দক্ষ: এ ডেডলি কন্সপিরেসি’ সিনেমার প্রচারে এসে লক্ষ্মী বলেন, পুরুষের থেকে এই সমাজে নারীর অনেক বেশি সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, এক মহাতারকার সাবেক স্ত্রী আছেন, যিনি এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন। বিবাহবিচ্ছেদের পর এমনকি সিনেমাও ওই অভিনেত্রীর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে, যেগুলোর প্রস্তাব একসময় তাকেই দেওয়া হয়েছিল।
লক্ষ্মীর দাবি- ওই তারকা রাগ করতে পারেন, সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েই তার সাবেক স্ত্রীকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভালো কাজ করার অপেক্ষায় এখন সেই অভিনেত্রী এবং আমার তার নাম আলাদা করে উল্লেখের প্রয়োজন নেই বলে জানান লক্ষ্মী মানচু।
সামান্থার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক লক্ষ্মীর। তাহলে কি বন্ধুর কথাই বললেন মানচু? সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকরা। উত্তরে লক্ষ্মী বলেন, আপনাদের মনে হচ্ছে সামান্থার কথা বলছি। যদিও একজন নয়, পাঁচ-ছয়জন তারকার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে এবং আমি ওদের সবারই ঘনিষ্ঠ। কিন্তু আমার বক্তব্য- কোনো পুরুষকে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে না। অথচ একজন নারীর ওপর বিয়ের পর সন্তান-শ্বশুরবাড়ি- অজস্র দায়িত্ব এসে পড়ে। আমাদের কেউ স্বাধীনতা দেয় না, আমাদের আদায় করে নিতে হয়।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর প্রেমে থাকার পর ২০১৭ সালে সামান্থা ও নাগা চৈতন্যের বিয়ে হয়। মাত্র চার বছরের মাথায় সেই সংসার ভেঙে যায়। গত বছর শোভিতা ধূলিপালার সঙ্গে বিয়ে হয় নাগা চৈতন্যর। অন্যদিকে দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি জনপ্রিয় পরিচালক রাজ নিদিমোরুর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন সামান্থা রুথ প্রভু।
আরবাজ খানের সঙ্গে প্রায় দুই দশকের দাম্পত্য ভেঙেছে, এরপর অর্জুন কাপুরের সঙ্গে ছয় বছরের ‘পোক্ত’ প্রেমেও ভাঙন। শুধু সম্পর্কই নয়, তার ক্যারিয়ার নিয়েও সমালোচনা করতে ছাড়েন না অনেকে। যার জেরে একাধিকবার ‘বদনামের ভাগী’ হতে হয়েছে অভিনেত্রীকে! কিন্তু সব ঝড়ঝাঁপটা পেরিয়ে আপন প্রেমে মজেছেন মালাইকা আরোরা। এবার তাকে ঘিরে সব সমালোচনার কড়া জবাব দিলেন বলিউডের ‘মুন্নি’। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে গিয়ে মালাইকা আরোরা বলেন, ‘আমার কী করা উচিত, কী উচিত নয়, মানুষ উপদেশ দিতে ভালোবাসে। আমার ক্যারিয়ার, সাজপোশাক থেকে সম্পর্ক- সবকিছু নিয়েই আমাকে বিচার করা হয়। তবে যেদিন থেকে এগুলোর ব্যাখ্য দেওয়া নিজে থেকে বন্ধ করে দিয়েছি, সেদিন থেকেই নিজেকে হালকা বলে মনে হয়।’ নিজের প্রাপ্তি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘নিজের জন্য আমি যেটা সিদ্ধান্ত নিই, সেটাই। ’
মালাইকা আরো যোগ করেন, ‘আমার নামের পাশে বরাবর ‘বেশি সাহসী’, ‘বেশি স্পষ্টভাষী’, ‘বেশি মুখর’ এহেন যাবতীয় তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন আমি এই বিশেষণগুলোকে নিজের বর্ম হিসেবে ব্যবহার করি। কারও যদি আমাকে ‘অতিরিক্ত’ বলে মনে হয়, তাহলে তারা আমার জন্য যথেষ্ট নয়।’
বরাবরই নিজের শর্তে চলায় বিশ্বাসী মালাইকা। আরবাজের সঙ্গে দুই দশকের দাম্পত্য ভেঙে বেরিয়ে আসা থেকে ১২ বছরের ছোট অর্জুন কাপুরের সঙ্গে প্রেম, ব্যক্তিগত জীবনেও সাহসিকতার ছাপ রেখেছেন অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে মালাইকার মন্তব্য, ‘ফ্যাশন হোক বা ফিটনেস, যেটাই হোক না কেন, আমি কখনো কোনো ছকবাঁধা ফর্মুলা অনুসরণ করিনি। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যেদিন আপনি গোটা বিশ্বের জন্য বাঁচা ছেড়ে দিয়ে নিজের শর্তে চলবেন, ঠিক সেদিন থেকেই জীবনের আসল মন্ত্র উপভোগ করতে পারবেন।’
দক্ষিণ ভারতের তামিলের জনপ্রিয় অভিনেতা জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। মানুষ তাকে চেনেন থালাপতি বিজয় নামে। তবে কেবল সিনেমাতে নয়, বাস্তব জীবনে বিজয় সত্যিকারের সুপারস্টার।
বিজয় ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন। তাই তার সম্পদের পরিমাণ নিয়ে মানুষের আগ্রহ আছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নানা সময়ে বিজয়ের সম্পদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
বিজয়ের আর্থিক সাফল্য তার সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই চমকপ্রদ। ২০১৯ সাল থেকে তিনি কলিউডের শীর্ষ আয়কারীদের মধ্যে আছেন। তার বার্ষিক আয় ১০০ থেকে ১২০ কোটি রুপির মধ্যে। এটা মূলত সিনেমা ও ব্র্যান্ড প্রমোশন থেকে পাওয়া আয়।
হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, বিজয়ের আয়ের বড় অংশ আসে ধারাবাহিক বক্স অফিস হিট ও হাই-প্রোফাইল ব্র্যান্ড এন্ডোর্সমেন্ট থেকে। বিভিন্ন বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে তার চুক্তি আছে। সেখান থেকে বছরে প্রায় ১০ কোটি রুপ আয় হয়।
জিকিউ ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, চেন্নাইয়ের নীলাঙ্কারাই বিজয়ের সমুদ্রপাড়ে বিজয়ের বিলাসবহুল একটি বাংলো রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৯.৬ মিলিয়ন ডলার (৮০ কোটি রুপি)।
এছাড়া বিজয়ের আরও কয়েকটি সম্পত্তি রয়েছে তিরুভল্লুর, তিরুপোরুর, তিরুমাঝিসাই ও ভান্ডালুর এলাকায়। এসব সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি রুপি)।
বিজয়ের সংগ্রহের বহরে বেশি কিছু বিলাসবহুল গাড়িও আছে। তার গাড়ির সংগ্রহে রয়েছে- রোলস রয়েস গোস্ট, বিএমডাব্লিউ এক্স৫ ও এক্স৬, অডি এ৮ এল, রেঞ্জ রোভার ইভোক, ফোর্ড মাস্ট্যাং, মার্সিডিজ বেঞ্জ জিএলএ, ভলভো এক্সসি৯০।
এর মধ্যে রোলস রয়েস গোস্টের বাজারমূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ রুপি, অডি এ৮ এলের বাজারমূল্য ১ কোটি ১৭ লাখ রুপি, রেঞ্জ রোভার ইভোক ৬৫ লাখ রুপি, ফোর্ড মাস্ট্যাং ৭৪ লাখ রুপি, মার্সিডিজ বেঞ্জ জিএলএ, ৮৭ লাখ রুপি, ভলভো এক্সসি৯০ ৮৭ লাখ রুপি।
জিকিউ ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিজয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫৭ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৭৪ কোটি রুপি)।
অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান ঘিরে নেটদুনিয়ায় চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক ভাইরাল হওয়া একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে একজন নারী মডেল খোলামেলা পোশাক পরে বসে থাকার ভিডিওটি সামনে আসায় পর শুরু হয় ওই তুমুল সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে প্রতিবাদ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি। মুক্তির ফেসবুক স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অসংখ্য শিল্পী, সাংবাদিক ও দর্শক তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন।
এখানেই শেষ নয়, ‘চাঁদের আলো’ সিনেমার নায়িকা মুক্তির পর এবার সিনেমাটির নায়ক ওমর সানীও একই প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নিজ ফেসবুকে ইঙ্গিত দিয়েছেন- অনেক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আসলে ব্যবসায়িক উদ্দেশে আয়োজিত হয়। এসব অনুষ্ঠানে গুণী শিল্পীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিবর্তে অর্থের বিনিময়ে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
নায়কের অভিযোগ-কিছু মানুষ অতিথি সেজে বা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টাকা দিয়ে পুরস্কার সংগ্রহ করেন। ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার কিংবা এক লাখ টাকার বিনিময়ে পুরস্কার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সানীর মতে, এ ধরনের লোভ ও অসৎ কর্মকাণ্ডের কারণেই এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় আর এতে বিনোদন অঙ্গনের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
ওমর সানীর এই বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। তার স্ট্যাটাসের মন্তব্য ঘরে বেশিরভাগ মানুষই তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
শিল্পী ও দর্শকদের একটি বড় অংশ বলছেন, অশ্লীল পোশাক ও টাকার বিনিময়ে পুরস্কার দেওয়ার অভিযোগ সত্য হলে, তা শুধু বিনোদন অঙ্গনের জন্যই নয়, পুরো সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। কম সময়ের মধ্যে অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন এ অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের সংবাদ সম্মেলনে চমক জানিয়েছেন, আমি যেখানে যাই ওটাই চমক।
অভিনেত্রী বলেন, আমার লাইফটাই তো চমক, এভরিডে ইজ চমক। চমক ইজ উইথ মি। আমি যেখানে যাই ওটাই চমক। চমককে এমন কোনো ফিল্ডে দেখা যেতে পারে না যে ফিল্ডে চমক তাকে এক্সপ্লোরই করে নাই।
নিজের কাজের কথা উল্লেখ করে চমক বলেন, আমার জীবনের অনেক অনেক ওয়ে এক্সপ্লোর করছি একচুয়ালি। যেমন- আগে আমি মনে করতাম, আমি দুটো অসাধারণ নাটক বা ওটিটি কিংবা সিনেমা করলে সেটা বোধহয় অনেক বড় একটা অর্জন হবে। কিন্তু আমার কাছে এখন জীবনের অর্জন সংজ্ঞাটা একটু বদলে গেছে।
চমক বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমি দুটো বড় কাজ করলে ওইগুলো আর্টিস্ট হিসেবে আমাকে অনেক বড় জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি সোসাইটিকে কী মেসেজ দিচ্ছি বা মানুষের কী উপকার হচ্ছে?
অভিনেত্রীর মতে, যে কাজ কোনো অর্থ তৈরি করে না, মানুষের জীবনে বড় পরিবর্তন আনে না, সেই কাজে আসলে আমি আর যুক্ত হতে চাই না। আমি বুঝে না বুঝে অনেক কাজ করে ফেলেছি। এখন ওই কাজগুলোই পছন্দ করছি, যেগুলো মানুষের এবং আমাদের সোসাইটিতে একটা ভিন্নতা নিয়ে আসতে পারে।
মন্তব্য