একদিকে মুক্তি পেয়েছে আমির খানের ‘সিতারে জমিন পর’ ছবি। অপর দিকে ধানুশ, নাগার্জুন আর রাশমিকা মান্দানার প্যান ইন্ডিয়া ছবি ‘কুবের’। এই দুই ছবির মুখোমুখি ‘সংঘাত’ হয়েছে। এদিকে কিছুদিন আগে মুক্তি পাওয়া অক্ষয় কুমারের ‘হাউসফুল ৫’ এখনো চলেছে। বক্স অফিসের দৌড়ে কোন ছবি এগিয়ে আর কোন ছবি পিছিয়ে, তা দেখে নেওয়া যাক।
গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে আমির খান প্রযোজিত এবং অভিনীত ছবি ‘সিতারে জমিন পর’। আমির কোমর বেঁধে এই ছবির প্রচারণা করেছেন। ২০০৭ সালে আমিরের ব্লক বাস্টার ছবি ‘তারে জমিন পর’-এর সিকুয়েল এটি। ‘সিতারে জমিন পর’ ছবিটি স্প্যানিশ ছবি ‘চ্যাম্পিয়নস’-এর অফিশিয়াল রিমেক। এই ছবির মূল আকর্ষণ আমির ছাড়া ১০ জন নিউরোডাইভারজেন্ট ব্যক্তি। ‘সিতারে জমিন পর’ ছবিতে আমিরের সঙ্গে তারা পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। আমিরের ছবিটি চিত্রসমালোচকদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকের মন জয় করেছে।
আর এস প্রসন্না পরিচালিত এই ছবির শুরুটা একটু ধীরগতিতে হয়েছিল। তবে গত শনি আর গত রোববার বক্স অফিসে বেশ ভালোই দাপট দেখিয়েছে আমিরের এই ছবি। ‘সিতারে জমিন পর’ বক্স অফিসের খাতা খুলেছিল ১০ কোটি দশমিক ৭ লাখ রুপি দিয়ে। ছবিটি মুক্তির দ্বিতীয় দিন; অর্থাৎ গত শনিবার ২০ কোটি ২ লাখ রুপি ব্যবসা করেছে। আর গত রোববার, মানে মুক্তির তৃতীয় দিনে ‘সিতারে জমিন পর’-এর আয়ের অঙ্ক ২৯ কোটি ২২ লাখ। স্পোর্টস কমেডি–ধর্মীর ছবিটির তিন দিনে মোট আয় ৬০ কোটি ১২ লাখ।
‘কুবের’
আমির খানের ‘সিতারে জমিন পর’ ছবির মুক্তির দিনেই ধানুশের ‘কুবের’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। ‘কুবের’ মুক্তির প্রথম দিন বক্স অফিসের দৌড়ে আমিরের ছবিকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল। এই ছবি ওপেনিং ডে-তে আয় করেছিল ১৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপি। কিন্তু সপ্তাহান্তে বাজিমাত করেছে ‘সিতারে জমিন পর’। গত শনিবার ‘কুবের’ আয় করেছে ১৬ কোটি ৫ লাখ। আর রোববার ‘কুবের’ ব্যবসা করেছে ১৭ কোটি ৬২ লাখ। এখনো পর্যন্ত ধানুশ আর নাগার্জুন অভিনীত ছবিটি আয় করেছে প্রায় ৪৮ কোটি ৮৮ লাখ রুপি।
‘হাউসফুল ৫’
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বক্স অফিস ধরে আছে অক্ষয় কুমার অভিনীত ছবি ‘হাউসফুল ৫’। তরুণ মনসুখানি পরিচালিত এই কমেডি ঘরানার ছবিতে অক্ষয় ছাড়া আছেন নানা পাটেকর, জ্যাকি শ্রফ, অভিষেক বচ্চন, সঞ্জয় দত্ত, রিতেশ দেশমুখ, শ্রেয়স তলপড়ে, চাঙ্কি পান্ডে, চিত্রাঙ্গদা সিং, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ, নারগিস ফাখরিসহ আরও অনেকে। ‘হাউসফুল ৫’ ছবিটি মুক্তির তৃতীয় সপ্তাহান্তে কোটির বেশি আয় করেছে। গত শনিবার অক্ষয়ের ছবিটি ব্যবসা করেছিল ২ কোটি ৫ লাখ রুপি। মুক্তির তৃতীয় রোববার ছবিটি আয় করেছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ রুপি। সব মিলিয়ে ‘হাউসফুল ৫’ পঞ্চম সিকুয়েলটি মুক্তির ১৭ দিন পর্যন্ত আয় করেছে ১৭৫ কোটি ৯৫ লাখ রুপি।
অভিনেতা রণবীর কাপুরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ভেঙে পড়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীপিকা পাডুকোন। এর পর রণবীর সিংয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় অভিনেত্রীর। ‘রামলীলা’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে দুজনের সম্পর্কের সেতু তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর ২০১৮ সালে বিয়ে করেন এ তারকা জুটি। বর্তমানে অভিনেত্রী রণবীর সিংয়ের ঘরনি। এক সন্তানের মা।
তবে একটা সময়ে দীপিকার প্রেমিকের তালিকাটা ছিল বেশ লম্বা। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রেমিকদের প্রসঙ্গে কথা বলেন অভিনেত্রী।
দীপিকা পাডুকোনকে নিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটে গেছে অনেক কাহিনি। বিজয় মালিয়ার ছেলে সিদ্ধার্থ মালিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিন সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী। পরে সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই সময় সিদ্ধার্থ মালিয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন— সম্পর্ক ভাঙার পরও দীপিকার সঙ্গে তার সৌজন্যমূলক যোগাযোগ ছিল।
বলিপাড়ার ডিভা তিনি। কারণ ব্যক্তিগত জীবনের জন্য বারবার খবরের শিরোনামে উঠে আসেন অভিনেত্রী। ২০০৮ সালে ‘বাচনা অ্যায় হাসিনো’ সিনেমার সেটে রণবীর কাপুরের সঙ্গে প্রথম দেখা দীপিকার। সেই সিনেমার সেট থেকেই প্রেম শুরু অভিনেত্রীর। তবে সেই সম্পর্কও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তার। শোনা যায়, রণবীরই তার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন।
এর আগে সিদ্ধার্থ মালিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রণবীরের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীনও দীপিকাকে তার প্রেমজীবন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে অভিনেত্রী বলেছিলেন— আমি লক্ষ করেছি, আমার সাক্ষাৎকারে অন্য বিষয় নিয়েই আলোচনা বেশি হয়।
দীপিকা আরও বলেছিলেন— আমার বড় হয়ে ওঠার ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেঙ্গালুরুর খুবই সাধারণ ও সুরক্ষিত পরিবার থেকে এসেছি আমি। আমার বাবা-মা এবং অন্য যে কোনো সম্পর্কই খুব মজবুত। তাই বড় হওয়ার সময়ে বেশ ভালোবাসা পেয়েই বড় হয়েছি আমি। ভেতর থেকে নিজে খুবই সংবেদনশীল মানুষ বলেও দাবি করেন দীপিকা।
গত রোববার সন্ধ্যা। ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে সাতটা ছুঁইছুঁই। ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, সনি স্কয়ার-চলচ্চিত্রের আলো ঝলমলে এক সন্ধ্যা। ‘তাণ্ডব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী ঘিরে জমেছে তারকামুখর আসর। অতিথিরা আসছেন একে একে। নির্ধারিত সময়ের আগেই সিনেমার কলাকুশলীরা হয়ে উঠেছেন উৎসবের অংশ। লাল টুকটুকে পোশাকে অপার সৌন্দর্যে হাজির সাবিলা নূর-এই ছবির কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে তার আবির্ভাব যেন এক নতুন সূর্যোদয়।
নির্মাতা রায়হান রাফি তখন সিনেমা হলে প্রবেশ করে অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত। ঠিক এমন এক মুহূর্তে শাকিব খানকে ঘিরে দর্শকের কৌতূহল যখন তুঙ্গে, নির্মাতা রাফি সাবিলা নূরকে সঙ্গে নিয়ে প্রেস টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ান। উপস্থিত সংবাদকর্মীদের দিকে এক হৃদয়গ্রাহী দৃষ্টিতে তাকিয়ে সাবিলা শুরু করেন তার অনুভবের গল্প।
‘এই সিনেমা আমার প্রথম বাণিজ্যিক ছবি। সেখানে নির্মাতা হিসেবে পেয়েছি রায়হান রাফিকে, আর সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছি আমাদের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় তারকা, শাকিব খানকে। এটা আমার অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি। শুটিংয়ের সময় এক মুহূর্তের জন্যও তিনি বুঝতে দেননি আমি নতুন, আমার প্রথম। বরং যে আন্তরিকতা, সহযোগিতা আর সম্মান পেয়েছি, তা আজীবন স্মৃতিতে থাকবার মতো।’
তবে এই আনন্দের ভেতরেও রয়েছে একটা ক্ষতের দাগ। মুক্তির এক সপ্তাহের মাথায় ‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি পাইরেসির শিকার হয়। ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবিলা বলেন, ‘এই সময়টা আমাদের সিনেমার নবজাগরণের সময়। দেশের ভেতরে তো বটেই, বিদেশেও প্রশংসা কুড়োচ্ছে আমাদের ছবি। এমন একটা মুহূর্তে একটি মানসম্পন্ন চলচ্চিত্র যদি পাইরেসির শিকার হয়, তাহলে সেটা শুধু দুঃখজনক নয়, সাংস্কৃতিক অপরাধ। এই কাজ যারা করে, তারা শিল্পের শত্রু।’
কিছুটা আবেগের সঙ্গে যোগ করেন, ‘এই সিনেমা থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি-ভালোবাসা, শিক্ষা, আত্মবিশ্বাস। ভবিষ্যতে কী হবে, জানি না। তবে চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না। ভালো গল্পের সঙ্গে থাকব, সৎ কাজ করে যেতে চাই। আর বাকিটা নির্ভর করছে দর্শকের ভালোবাসার ওপর। কারণ, ‘তাণ্ডব’-এ তারা আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছেন, সেটা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।’
শাকিব খানও পরে বক্তব্যে বিস্ময় ও ক্ষোভ মিলিয়ে বলেন, ‘সেই জাতি সবচেয়ে উন্নত, যারা সাংস্কৃতিক দিক থেকে এগিয়ে থাকে। আমাদের সিনেমা এগিয়ে যাচ্ছে, আর ঠিক তখনই এর পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে পাইরেসির মাধ্যমে। ‘বরবাদ’-এর ক্ষেত্রেও আমরা সেটা দেখেছি। ‘তাণ্ডব’-এর ক্ষেত্রে তো আরও আগেই ঘটেছে। তবু আমি কৃতজ্ঞ দর্শকদের কাছে- পাইরেসির পরেও তারা হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছেন, দেখাচ্ছেন। এটা এক প্রকার সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। সিনেমাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।’
প্রদর্শনীর আসরটি রূপ নেয় এক শিল্পী-সমাবেশে। উপস্থিত ছিলেন অভিনয়শিল্পী গাজী রাকায়েত, ফজলুর রহমান বাবু, এ কে আজাদ সেতু, সালাহউদ্দিন লাভলু, সুমন আনোয়ার, মুকিত জাকারিয়া ও সদ্য অভিষিক্ত নায়িকা সাবিলা নূর।
এ ছাড়া সন্ধ্যাকে সৌন্দর্যময় করে তুলতে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, দীপা খন্দকার, তমা মির্জা, মন্দিরা চক্রবর্তী, সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা, জেফার রহমান এবং নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
কর ফাঁকি দেওয়ার কারণে বেশ কয়েকজন তারকা শিল্পীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেই তালিকায় আছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী, চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ, চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর।
মোট ২৫ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে- এই মর্মে একটি নোটিশও প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তারকাদের ঠিকানায় চিঠিও প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘সময়মতো কর পরিশোধ না করায় বেশ কয়েকজন তারকার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন তাদের কর পরিশোধ করেছেন। কয়েকজন সময় নিয়েছেন। কর পরিশোধ হলেই ব্যাংক হিসাবে সব ঝামেলা মিটে যাবে।’ কর অঞ্চল-১২’র সহকারী কর কমিশনার কাজী রেহমান সাজিদ মন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ২৫ জনের তালিকায় উপরোল্লেখিত নাম ছাড়াও রয়েছেন অভিনেতা আহমেদ শরীফ, শবনম পারভীন, নুসরাত ইয়াসমিন তিশাও।
২০২৪ সালে বলিউডে মুক্তি পাওয়া ‘ক্রু’ সিনেমায় একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল তিন জনপ্রিয় অভিনেত্রী টাবু, কারিনা কাপুর ও কৃতি শ্যাননকে। বিমানবালাদের জীবনের কঠিন সংগ্রামের কাহিনী নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি সেসময় বেশ আলোচিত হয়েছিল। পর্দায় তিন অভিনেত্রীর উপস্থিতি ভালোই প্রশংসা কুড়িয়েছিল সিনেবোদ্ধাদের। বাংলাদেশে এমন গল্প পেলে সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয়ের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন সম্প্রতি রুপালি পর্দায় পা রাখা ছোটপর্দার জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী সাবিলা নূর ও তাসনিয়া ফারিণ। সঙ্গে যুক্ত করতে চান আরেক বন্ধু অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে।
মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর ও তাসনিয়া ফারিণ- তিনজনেরই ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে টিভি নাটক দিয়ে। ভিন্ন সময়ে নাটকে কাজ শুরু করলেও বড় পর্দায় তাদের অভিষেক কাছাকাছি সময়ে। বাস্তব জীবনেও তিনজনের মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। অবসরে প্রায়ই একসঙ্গে সময় কাটাতেও দেখা যায় তাদের। দেশের বাইরেও একসঙ্গে ঘুরতে যান। তাদের বন্ধুত্বের এই রসায়ন পর্দায়ও ভালো লাগবে বলে বিশ্বাস সাবিলা ও ফারিণের।
এ প্রসঙ্গে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ‘বলিউডের ‘ক্রু’ সিনেমাটি দেখে মনে হয়েছিল, আমরা যদি এ রকম একটা প্রজেক্ট করতে পারি, তাহলে খুব ভালো হয়। খুব মজা করে কাজ করতে পারব।’ ফারিণের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে সাবিলা নূর বলেন, ‘আমাদের খুব বেশি দেখা হয়, তা নয়। কিন্তু যখনই দেখা হয়, আড্ডা দিতে দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যায়। সে সময় আমরা কাজ নিয়ে ভাবিও না। আমরা নায়িকা- এই জিনিসটা আমাদের মাথায় থাকেই না।’
এই ঈদে প্রথমবার সাবিলা ও ফারিণকে পাওয়া গেছে বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমায়। রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় শাকিব খানের সঙ্গে ছিলেন সাবিলা, অন্যদিকে সঞ্জয় সমদ্দারের ‘ইনসাফ’ সিনেমায় ফারিণকে দেখা গেছে শরিফুল রাজের সঙ্গে। সিনেমার প্রমোশনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। একসঙ্গে টিভি অনুষ্ঠানে গেছেন নিজেদের সিনেমা নিয়ে কথা বলতে। সেখানেই একসঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছার কথা জানালেন তারা।
বলিউডের ‘অক্টোবর’ ছবিতে বরুণ ধাওয়ানের সঙ্গে অসাধারণ অভিনয় করে লাইমলাইটে এসেছিলেন অভিনেত্রী বনিতা সান্ধু। এবার বলিউডের আরেক অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের হয়ে কথা বলে আরও একবার খবরের শিরোনামে এলেন বনিতা।
মূলত, দীপিকার ৮ ঘণ্টা শিফটের কাজ নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী বনিতা সান্ধু। এর আগে সন্দ্বীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ছবি ‘স্পিরিট’ থেকে দীপিকার বেরিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল- মাতৃত্বকালীন সময়ে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না দীপিকা। অন্যদিকে দীপিকার এই কথা মেনে নিতে রাজি ছিলেন না পরিচালক, ফলে তৈরি হয় মতবিরোধ এবং ফলস্বরূপ ছবি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী। তবে ব্যাপারটা এখানেই থেমে যায়নি। দীপিকার চাহিদার কথা শুনে দীপিকার পাশে এসে দাঁড়ান একাধিক পরিচালক, প্রযোজক এবং অভিনেতা অভিনেত্রী। কাজল থেকে অজয় দেবগন, রাধিকা আপ্তে থেকে দক্ষিণ সুপারস্টার রানা, সকলেই নিজেদের মন্তব্য রেখেছেন এই বিষয়টিতে। এবার প্রসঙ্গে কথা বলতে শোনা গেল বনিতা সান্ধুকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি স্ক্রিনের সঙ্গে একটি আড্ডা চলাকালীন বনিতা বলেন, ‘এটি সত্যি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পশ্চিমের দেশগুলোতে এই বিষয়ে একটি শক্তিশালী ইউনিয়ন থাকে, যারা এইসব বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন। আমি সব সময় প্রত্যেকের জন্যই ১২ ঘণ্টা কাজের পক্ষে। আমরা সিনেমা বানাচ্ছি কোনো যুদ্ধ করছি না, তাই মানসিক স্বাস্থ্যকে বিসর্জন দেওয়া উচিত নয় বলেই আমি মনে করি।’
বনিতা আরও বলেন, ‘আমার যখন ক্যারিয়ার শুরু হয় তখন সত্যি এই ব্যাপারগুলো বুঝতে পারতাম না, আমার মনে হতো এটাই কাজ করার একমাত্র উপায়। ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতাম। প্রযোজকরা যেমন বলতেন তেমনি করতাম। এমনও হয়েছে যখন টানা ২৪ ঘণ্টা ঘুমাইনি আমি। কিন্তু পরবর্তীকালে আমার মনে হয় যেন এটা ঠিক নয়।’
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি যখন প্রযোজকদের বলেছিলাম এই ব্যাপারটি নিয়ে তখন তাদের চোখে আমি খারাপ হয়ে যাই। কিন্তু তাতে আমার কিছু এসে যায় না। যেটা ঠিক বলে মনে করেছি আমি সেটাই বলেছি। প্রত্যেকটি মানুষের বিশ্রাম এবং ঘুমের দরকার আছে। কাজের পাশাপাশি নিজের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে সকলকে।’
অক্টোবর ছবি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘অক্টোবর সিনেমায় যখন অভিনয় করতাম তখন আমি পুরোপুরি ভারতে ছিলাম না। আমি কাজ করতে আসতাম আবার চলে যেতাম। তখন আমি লন্ডনে একটি কলেজে পড়াশোনা করতাম। তবে অনেকেই ভেবেছিলেন আমি হয়তো বিদেশে চলে গিয়েছিলাম কিন্তু আবার দেশে ফিরে এসেছি কাজের জন্য, ব্যাপারটা একেবারে সেটা নয়। আমি কখনওই দূরে যাইনি। আমি সব সময় কাজের মধ্যে ছিলাম, কিন্তু ভিন্ন দেশে।’
সবশেষে অভিনেত্রী বলেন, ‘অক্টোবর ছবির মুক্তির পর আমি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করি এবং হলিউডের এবং সাউথ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অন্তত তিনটি ছবিতে কাজ করেছি। অক্টোবর ছবি সাফল্যের পর অনেকেই আমায় বলেছিলেন, আমরা ভেবেছিলাম তোমাকে ছবিতে নেব কিন্তু তুমি কোথায় ছিলে আমরা জানতাম না। ব্যাপারটা ঠিক এরকমই, আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড।’
বলিউড তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের কৌতূহলের শেষ নেই। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আলোচনায় এসেছেন অভিনেত্রী জেনেলিয়া ডি’সুজা। অভিনেতা রীতেশ দেশমুখের সঙ্গে ১৩ বছরের সংসার সুখের হলেও সম্প্রতি এক বিস্ফোরক গুঞ্জন ছড়িয়েছে। বলিউডপাড়ায় শোনা যাচ্ছে—রীতেশের আগে নাকি জন আব্রাহামের সঙ্গেও বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জেনেলিয়া!
এই গুঞ্জন নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী নিজেই। জানালেন, ‘ফোর্স’ ছবির (২০১১) শুটিংয়ের সময় এমন ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন জন আব্রাহাম। ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী সেখানে বিয়ের দৃশ্য ছিল, যা রীতিমতো প্রকৃত বিয়ের মতোই ধারণ করা হয়েছিল। কারণ, ওই দৃশ্যে সত্যিকারের ব্রাহ্মণ পুরোহিত, মন্ত্রপাঠ, মাল্যদান, মঙ্গলসূত্র পরানো এবং সাতপাক ঘোরার দৃশ্য দেখানো হয়েছিল।
এই কারণেই হয়তো অনেকে ভেবেছেন সেটি বাস্তব বিয়ে ছিল। তবে অভিনেত্রীর দাবি, ‘আমরা মোটেও বিয়ে করিনি। এর কোনো সত্যতা নেই। এটা পুরোপুরি গুজব। আমার মনে হয়, এসব তথ্য যারা ছড়িয়েছে তাদের পিআর টিমকে জিজ্ঞাসা করা উচিত।’
উল্লেখ্য, রীতেশ দেশমুখ ও জেনেলিয়া ডি’সুজা বলিউডের অন্যতম সুখী দম্পতি। ২০১২ সালে বিয়ের পর থেকেই কাজ ও সংসারের ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে চলেছেন তারা। দুই সন্তানের এই মা-অভিনেত্রী এখনো বি-টাউনের আলোচিত মুখ।
১৯৬৫ সালে আলাউদ্দিন আল আজাদের রচনায় ও মোহাম্মদ জাকারিয়ার পরিচালনায় ‘ত্রিধারা’ দিয়ে শুরু হয় দিলারা জামানের অভিনয়জীবন। আজও অভিনয়ের সঙ্গেই আছেন তিনি। এই বয়সেও শুটিং করেন। ৬০ বছরের অভিনয়জীবনে একটি স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল তার। আজ জন্মদিনে জানালেন, সেই যে একটা ওল্ড হোম করার স্বপ্ন ছিল, তা আজও পূরণ হয়নি। কবে পূরণ হবে তা জানিও না।’
দিলারা জামানের অভিনয়জীবন ৬০ বছরের। গত বৃহস্পতিবার তিনি ৮৩ বছর পার করে ৮৪ শুরু করেছেন। এবারের জন্মদিনে বড় মেয়ে সঙ্গে আছে, তাই মনটা বেশ ভালো আছে বলে জানালেন। সন্ধ্যায় বললেন, ‘দুপুরে চ্যানেল আইয়ের তারকাকথন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। কথা বলেছি। কেক কেটেছি।’
কথা প্রসঙ্গে দিলারা জামান বললেন, ‘জন্মদিন তো পালন করি না। মেয়েরা দেশে থাকলে উৎসাহ নিয়ে করে, আবার আমি তাদের কাছে থাকলেও করে। অভিনয় অঙ্গনে আমার সহকর্মীরাও উৎসাহ দেখায়। চ্যানেল আইয়ের সরাসরি অনুষ্ঠান তারকাকথনে প্রায়ই আসা হয়। এবারও হয়েছে। মেঘে মেঘে তো বেলা কম হলো না। ৮৪ বছরে পা দিলাম। এত দিন সুন্দরভাবে বাঁচতে পেরেছি, এখনো সুস্থ আছি—এটাই কম কী। আলহামদুলিল্লাহ। তবে আফসোস, এখনো তো কিছুই করতে পারিনি। মানুষের মনে জায়গা করে নিতে বা মানুষ যাতে সব সময় মনে রাখে, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। জানি না, কতটুকু মানুষ মনে রাখবে।’
কী করতে চেয়েছিলেন এমন প্রশ্নে জানালেন সেই ওল্ড হোম নিয়ে স্বপ্নের কথা। বললেন, ‘৩০ বছর আগে গাজীপুরের একটি ওল্ড হোমে শুটিং করতে গিয়েছিলাম। নাটকের নামটা এখন মনে করতে পারছি না। আমার সহশিল্পী আনোয়ার হোসেন ভাই। ওই নাটকেরই শুটিং করতে গিয়ে বুড়ো মানুষের অসহায়ত্ব দেখি। এমনিতেও চারপাশে বুড়ো মানুষের কষ্ট দেখি। শেষ বয়সে এসে তো তারা শিশুর মতো হয়ে যান, তখন তাদের আর সেভাবে দেখার মতো কেউ থাকে না। অথচ এই সময়টায় তারা থাকেন খুব অসহায়, কিছু বলতেও পারেন না। মা-বাবারা তখন বিষয়গুলো নিজেই উপলব্ধি করতে পারেন। বৃদ্ধ মানুষের কষ্টটা কেউ বুঝতে পারে না, চায় না। আপন যে সন্তান, সে–ও বুঝতে পারে না।’ বৃদ্ধাশ্রমের স্বপ্নটা এখনো পূরণ হয়নি, তবে রয়েছে। বললেন, ‘আমার মেয়েরা তো এখনো বলে, দেখি আমার মায়ের অপূর্ণ স্বপ্নপূরণে কিছু করতে পারি কি না। এটা যদি করতে পারতাম, তাহলে অনেক মানুষের উপকার হতো। যাদের কেউ নেই, বুড়োকালে যারা একাকী থাকেন—ও রকম মানুষের জন্য কিছু করা আরকি। অবশ্য আমার একার পক্ষে তো এটা এখন আর সম্ভবও না।’
দেশে থাকলে এখনো অভিনয় করেন। বিনোদন অঙ্গনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও থাকে তার সদর্প উপস্থিতি। অভিনয় আমৃত্যু করে যাবেন—এমন প্রশ্নে দিলারা জামানের মত, ‘আমার তেমনই চিন্তা। অভিনয় করতে করতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাই। যে যাই বলুক না কেন, যতই ব্যাকডেটেড বলুক না কেন, আমি আমার অভ্যাস থেকে বের হতে পারব না। যার জন্য আমেরিকা ও কানাডায় থাকা মেয়েরা আমাকে সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রাখার পরও নিজের দেশ, মাটি, অভিনয়ের টানে ফিরে এসেছি।’
মন্তব্য