২০১০ সালের আগস্ট ১৯ আগস্ট চয়নিকা চৌধুরীর ‘পালিয়ে বিয়ে’ নাটকের শুটিং শেষে পর দিন অভিনেতা অপূর্বর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। তবে তার আগেই তরুণ ব্যবসায়ী রাজিব হাসানের সঙ্গে তার বাগদান হয়। বিয়ের পর এই রাজিবের সঙ্গেই প্রভার কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে।
রাজিবের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এক পর্যায়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রভা-অপূর্বর। এর পর পর্দার আড়ালে চলে যান প্রভা। রাজিবের সঙ্গে আসলে তার কী ঘটেছিল, এতদিন তা নিয়ে তেমন একটা কথা বলেননি অভিনেত্রী। এবার ফেসবুকে ওই বিষয়ে কিছু তথ্য দিলেন তিনি। ভক্তদের জানালেন অনেক অজানা কথাও।
প্রভা লিখেছেন, ‘আমি কোনো প্রতারণা করি নাই! আমি চুপ করে থাকি বলে এই না যে, আপনারা আমাকে নিয়ে যা খুশি তাই বানিয়ে বলবেন। আমার শুধু মনে হচ্ছিল আপনাদের কাছে প্রমাণ করে কি লাভ; উপরে যিনি আছেন, যার কাছে যাব, যিনি বিচারকারী তিনি জানলেই তো হয়।
‘বিয়ের আগেই সম্পর্ক করে যে গুনাহ আমি করেছি সেই গুনাহর জন্য জনতার কাছে আমি প্রতিনিয়ত মাফ চাচ্ছি মাফ চাইবো! কিন্তু যতদিন বেঁচে থাকব আপনাদের কাছ থেকে অনেক সোয়াব কামাবো! কারণ আপনারা না জেনে আমাকে গালি দেন। না বুঝে আমাকে একতরফা প্রতারক বানিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি লিখেছেন, ‘শোনেন….. প্রথমত আমি রাজিবকে সব জানিয়ে বিয়ের কথা শুরু হয়। কারণ বিয়ের নয়-দশ মাস আমার সাথে রাজিবের ব্রেকআপ থাকে, আমাদের সেই আট বছরের সম্পর্কের অলমোস্ট ৫-৬ বছরই ব্রেকআপ থাকতো। রাজিব আমাকে কখনই সম্পর্ক থেকে বের হতে দিত না। এটা ওর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা ছিল।
‘ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলে ও! কারণ ওর বাবা ওর মাকে ছেড়ে খুব ছোটবেলায় অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছিল। তাই হয়তো ওর মনের মধ্যে ওই জেদ ছিল যে, ওকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না! আর তাই এই আমাকে বিভিন্নভাবে কনভেন্স করে পার্সোনাল কিছু মুহূর্তের চিত্র ধারণ করে রাখে। যাই হোক, সেটা যদি আপনারা সাইবার ক্রাইমের বিভিন্ন গল্প পড়ে থাকেন যে, কেমন করে ছেলেরা মেয়েদেরকে কনভেন্স করে, তাহলে আরো ক্লিয়ারলি জানতে পারবেন।’
প্রভা বলেন, ‘আমি রাজিবকে অনেকবার ছেড়ে যেতে চেয়েছি। আমাদের ব্রেকআপ হয়েছে, ব্রেকআপের পরে আমার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়েছে, সেই বিয়ে আমি করিনি। রাজিব পড়াশোনা করত না। আমি তাকে চিনি যখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। কিন্তু আমি যখন অনার্স থার্ড সেমিস্টার, তখন পর্যন্ত সে অনার্স ফার্স্ট সেমিস্টার। কেন জানেন, কারণ সে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতো কিন্তু বারবার রেজাল্ট খারাপ করতো, ইউনিভার্সিটি তাকে বের করে দিত আবার অন্য ইউনিভার্সিটিতে টাকা দিয়ে ভর্তি হতো।
‘ও আরেকটা কথা রাজিব কিন্তু কোনো ইনকাম করত না। রাজিবের বাবার টাকা ছিল। কিন্তু রাজিবের সঙ্গে আমার আরেকটা সমস্যা ছিল সেটা হলো, রাজিব কোনো কিছু ইনকাম করতে চাইত না! ওর কথা, আমার বাবার এত আছে, আমার কেন ইনকাম করতে হবে। এই জিনিস নিয়ে আমাদের প্রচণ্ড দ্বন্দ্ব হতো। সবচেয়ে বেশি হতো পড়াশোনা নিয়ে। এই সমস্ত জিনিস নিয়ে আমাদের প্রচুর ব্রেকআপ হয়েছে!’
তিনি লিখেছেন, ‘যাইহোক ওই ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা হয়েছিল, আংটি বদল হয়েছিল কিন্তু সে আংটি বদল আর এর আট মাস আগে ছেলের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। ওই যে বললাম, আমাদের আট বছরের সম্পর্কের ব্রেকআপই থাকতো অনেক। তো বিয়ের কথা শুরু হওয়ার সময় আমি রাজিবকে জানিয়ে দেই বিগত এতগুলো মাস আমার কার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, আমি সেই ছেলে; তার সঙ্গে আমার ভাললাগা আছে; কিন্তু এটা হবার না, হবে না বুঝেই গেছি- এরকম কথাগুলো আমি তার সাথে ক্লিয়ার করে নিয়েছিলাম। আমার তখন বয়স ছিল ২২, মাথায় বুদ্ধি ছিল না। থাকলে তো সবার আগে রাজিবের সঙ্গে প্রেম করতাম না।’
প্রভা লিখেছেন, ‘বুদ্ধি যদিও আমার এখনও হয় নাই। যাই হোক আমার কাছে মনে হয়েছে, বিয়ে করার আগে তাকে সব কিছু জানিয়ে দেই যে, কার সাথে মাঝখানে সম্পর্কে হতে গিয়েও হয় নাই! (যার কথা বলছি ওনার সাথে আমার পরবর্তীতে বিয়ে হয়েছিল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলাম তাকে) এতে হিতে বিপরীত হয়েছে।
‘আমাদের এঙ্গেজমেন্টের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই রাজিবের সাথে আমার কথা বলা বন্ধ থাকত। ঝগড়া হতো বিভিন্ন কারণে। প্রচণ্ড মিথ্যা কথা বলতো। সব কিছু মিলায়া আমার মন যখন কোনোভাবেই মান ছিল না ওকে বিয়ে করতে, আমি বারবার ওকে অনুরোধ করছিলাম যে, চলো বিয়েটা না করি। আমাদের এই বিয়ে ছয় মাসও টিকবে না! এ কথা আমি আমার বাসায়ও বলেছিলাম। কিন্তু আমার তো অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল। ২২/২৩ বছরের একটা মেয়ে বিয়ে তো করতেই হবে বলেন! যাই হোক এ সমস্ত কথা আর নাই বলি!’
তিনি লিখেছেন, ‘পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটা খুব না জানা আপনাদের। যেদিন এই ঘটনাটা ঘটে তার বেশ কিছুদিন ধরে আমার আর রাজিবের খুব ঝগড়া, খুব বিশাল ঝগড়া হতো। রাজিব বুঝে গেছিল যে, আমার মনটা নাই। বুঝে কেন যাবে, আমি তাকে ভেঙে নিজেই বলছি যে, শুধু আংটি পরানো হয়েছে, কিন্তু আর কিছু হয় নাই। চলো এটা এখানেই শেষ করি। কিন্তু সে তো নাছোড়বান্দা, তার ওপর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা ছিল তার। মাথায় ছিল তার বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে গেছিলো, তাকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না, তার কাছে তো প্রমাণ আছে!
‘প্রমাণের কথায় মনে পড়ল, একবার খুব কায়দা করে তার কাছে জানতে চাইছিলাম যে, কই আছে ওগুলা, চলো তুমি আর আমি মিলে একটু দেখি। তখন সে আমাকে বলছিল, তুমি কি পাগল; তুমি আমার বউ হবা এইজন্য আমি সব কিছু ডিলিট করে দিছি। আসলে তো ডিলিট করে নাই। এখন বুঝতে চান, মানসিকভাবে মানুষটা কি পরিমাণ ক্রিমিনাল মাইন্ডেড?’
প্রভা লিখেছেন, ‘তারপর সে আমার বাসায় এ ব্যাপারে বিচার বসায়। আমার বাবা-মা আমাকে বকাঝকা করে; সত্যি কথা বলি। আমি বাবা-মাকে কষ্ট দিয়েছি, আমি আমার বাবা-মাকে না বলে বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে আরেকজনের হাত ধরছিলাম। কিন্তু যার হাত ধরতে বলছিল ওই সময়ে সেই মানুষটাও তো ভুলই ছিল। যদিও সেই মানুষটার আমাকে পছন্দ ছিল, আসলে আমি নিরুপায় পছন্দ করেছিলাম। বাসায় এত বিয়ের চাপ দেয়া হয়েছিল যে, আমি নিরুপায় হয়ে ওকে বলেছিলাম ঠিক আছে তুমি আমাকে বিয়ে করো। কিন্তু আমি তো সব জানিয়ে বিয়েটা করতে গিয়েছিলাম।
‘সেদিন বাসায় এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, আমার কাছে মনে হয়েছিল, এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার এই একটাই উপায় আর তা ছাড়া আমাকে ফোন করে বলা হয়েছিল- তুমি বাসা থেকে বের হও,আব্বু-আম্মুর সঙ্গে আমার কথা বলা। তুমি বের হলে আমাদের বিয়ে। ভরসাই লাগছিল। ভেবেছিলাম বিয়ের কয়মাস পর বাবা-মা মেনে নেবে। তখন তো আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে!’
তিনি লিখেছেন, ‘যাই হোক বের হয়ে গেলাম, বিয়ে হলো। সকাল সকাল ফোন দিয়ে রাজিবকে জানিয়ে দিলাম আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে ও যেন আনন্দ থাকে। কিন্তু দুই দিনের মধ্যে সেই ডিলিট করা (আসলে তো মিথ্যা) ডকুমেন্টগুলো সে পাবলিক করে।’
প্রভা লিখেছেন, ‘আর যেহেতু ধর্মীয়ভাবে অন্যায় করেছি, সোশ্যালি কোনো অন্যায় করিনি তাই ধর্মের নিয়মে বলছি, আমার এই ঘটনার পর আমার প্রাক্তন স্বামীর উচিত ছিল আমাকে আরও বেশি সাপোর্ট করা। মারাও যেতে পারতাম। শুধু আত্মহত্যা করলে কোনভাবেই সৃষ্টিকর্তার কাছে যেতে পারবো না, সেই ভয়ে আর আল্লাহর সাথে দেখা করার লোভে আত্মহত্যা করি নাই। তার জীবন সুন্দর হয়েছে।’
অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘রাজিবের সাথে আমার সম্পর্ক থাকাকালীন অবস্থায় যতবার ঝগড়া লেগেছে ততবারই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতো এবং আমাকে নিয়ে অনেক মিথ্যা বানিয়ে বানিয়ে বলতো। পরবর্তীতে আবার আমার সাথে সে ঠিক করতে চাইত। ও ক্রিমিনাল কিন্তু আমি অনেক বড় ছাগল ছিলাম।
‘একটা মানুষ যখন সম্পর্ক টেকে না, সম্পর্ক টানাপোড়েন শুরু হয় তখন আমার ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলে, তাহলে সেই মানুষটার কাছে কেন বারবার আমি ছুটে যাই। ভয় ছিল। বিশ্বাস করেন ভালোবাসা অনেক আগেই মরে গিয়েছিল। ভয় ছিল ক্ষতির ভয়, যেটা সত্যিতে পরিণত হয়।’
প্রভা লিখেছেন, ‘একটা কথা, বেঁচে যেহেতু আছি, জীবনে চলার পথে ভালোবাসা আসতে পারে। হয়তো আমার তরফ থেকে সেরা প্রেম ছিল, তাদের তরফ থেকে ছিল না। থাকলে তো ছেড়ে যেত না! আপনাদের চোখে তো আবার আমি বাজে মেয়ে, বাজে মেয়েটা বহুবার ফিজিক্যালি অ্যাবিউজড হয়েছে। কিন্তু কিছু বলতে পারি নাই। চাইছি সম্পর্ক টিকুক। আমি আবার কিছু বললে আপনারা তো বিশ্বাস করবেন না।’
গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা দয়া করে পত্রিকার কথা বিশ্বাস করবেন না। পত্রিকার লোকেদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো না। তাদের সঙ্গে এক জায়গায় বসলে বা খেলে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকে। তারা খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। তাদের পত্রিকা বিক্রির জন্য তাদেরনানান কথা বানিয়ে বানিয়ে লিখতে হয়। স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে।
‘যাই হোক, তবে আমি এতটুকু বলতে পারি আমি কোনদিন লিভ টুগেদারে ছিলাম না। যে বাসায় আমি থাকি মানে আমার বাবা-মার বাসা, সেখানে আমাকে শুটিং ব্যতীত রাত দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে ঢুকতে হয়।’
এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় প্রভা শেষে লিখেছেন, ‘আত্মহত্যা করিনি বলে আপনারা আমাকে প্রতিনিয়ত ইন্সপায়ার করেন, মেরে ফেলতে চান, না জেনে না বুঝে আমাকে বিভিন্নভাবে খারাপ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।’
২০০৫ সালের দিকে মেরিল সোপের একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাতারাতি তারকা বনে যান সাদিয়া জাহান প্রভা। বিজ্ঞাপনের পর নাটকেও সফল হন তিনি। মাঝে বেশ কয়েকবার তার সিনেমায় অভিনয়ের কথাও শোনা যায়। নিয়মিত না হলেও এখনও মাঝেমধ্যে টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায় তাকে।
আরও পড়ুন:ছোট পর্দার অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন মারা গেছেন। রোববার ভোর ৬টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আফরোজা হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী মনিরা আক্তার মিঠু।
জানা যায়, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন আফরোজা হোসেন। জরায়ুমুখ ক্যানসার ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড থেকে হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে ক্যানসারের কাছে হার মেনে চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আফরোজার সঙ্গে তোলা কিছু ছবি শেয়ার করে মনিরা মিঠু লিখেন, ‘ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন। অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন আর নেই। আজ ভোর ৬টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।’
আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের শো-বিজ ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন আফরোজা হোসেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে টেলিভিশন নাটকে তিনি জনপ্রিয়তা পান। পরে চলচ্চিত্রেও নিয়মিত কাজ করেন এই অভিনেত্রী।
বলিউডের ভাইজানখ্যাত সুপারস্টার সালমান খানের পর এবার বলিউড বাদশা শাহরুখ খানকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
শাহরুখ খানকে মোবাইলে ফোন করে ৫০ লাখ রুপি দাবি করা হয়েছে। তা না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছে এক ব্যক্তি।
মুম্বাই পুলিশ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ভারতের ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে যে ব্যক্তি ফোন করা ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে ‘হিন্দুস্তানি’ বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোনটি করা হয়েছিল সেটির মালিকের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
কল করা ওই ব্যক্তির নাম ফৈজান খান বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তবে তিনি দাবি করেন, ২ নভেম্বর তার ফোনটি চুরি হয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিট নাগাদ ফোনটি আসে, যেখানে মুক্তিপণ না দিলে বলিউড তারকার ক্ষতি করার হুমকি দেয়া হয়।
শাহরুখ খানকে এই প্রথম হুমকি দেয়া হলো বিষয়টি এমন নয়। গত বছরের অক্টোবরে তাকে একইভাবে হুমকি দেয়া হয়েছিল। এরপর কর্তৃপক্ষ তার সুরক্ষা ওয়াই-প্লাস স্তরে উন্নীত করে। এই স্তরের সুরক্ষার আওতায় তাকে ২৪ ঘণ্টা ছয়জন সশস্ত্র কর্মী সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সুরক্ষা সুবিধা পাওয়ার আগে তার দু’জন সশস্ত্র সুরক্ষা প্রহরী ছিল।
সম্প্রতি বলিউডের আরেক তারকা সালমান খানের একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শাহরুখ খানকে এই হুমকি দেয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে সালমানকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাকে পাঁচ কোটি টাকা দিতে হবে। নয়তো কৃষ্ণসার হরিণ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ভিখারাম জালারাম বিষ্ণোই নামে ওই গ্যাংয়ের এক সদস্য এই হুমকি দেন বলে জানা গেছে। এই গ্যাংয়ের নেতা কর্ণাটকে এখনও আটক রয়েছেন।
৩০ অক্টোবর আরেকটি ঘটনায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি সালমান খানের কাছে দুই কোটি রুপি চাঁদা দাবি করে সতর্ক করেছিল। বার বার এমন হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে সালমান খানের সুরক্ষাও জোরদার করা হয়। বিশেষ করে ১২ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের পর আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা নেয়।
আরও পড়ুন:একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন তার আত্মীয় রবিন মণ্ডল।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে রাজধানীর গ্রিন রোডের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন মাসুদ আলী খান। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসাতেই ছিলেন অভিনেতা। চিকিৎসার জন্য কয়েকবার নেয়া হয়েছিল হাসপাতালে। চিকিৎসাও চলছিল। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল।
মাসুদ আলী খান অভিনয় জগতে ক্যারিয়ার শুরু করেন মঞ্চনাটক দিয়ে। এরপর ১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরপর নূরুল মোমেনের নাটক ‘ভাই ভাই সবাই’ দিয়ে ছোট পর্দায় তার অভিষেক হয়। আর সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’ দিয়ে বড় পর্দায় তার পথচলা শুরু। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় ৫০০ নাটকে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা।
মাসুদ আলী খান অভিনীত কয়েকটি সিনেমা- ‘দুই দুয়ারি’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘মাটির ময়না’। তার অভিনীত আলোচিত কয়েকটি নাটক হচ্ছে- ‘কূল নাই কিনার নাই’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘কোথাও কেউ নেই’।
ঢাবি, চবি ও জবির পর এবার প্রকাশ্যে এসেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারির পরিচয়। সোমবার সংগঠনটির পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে দুজনের পরিচয় প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
ফেসবুক পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, ইবি ছাত্রশিবিরের সভাপতির নাম এইচ এম আবু মুসা ও সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সভাপতি আবু মুসা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি পাবনা জেলার দোগাছী ইউনিয়নের দ্বীপচর গ্রামে। ২০০৭ সালে তিনি পাবনার আওরঙ্গাবাদ আবাসিক হাফিজিয়া মাদরাসা থেকে কোরআনে হাফেজ হন। পরে পাবনার রাধানগর উপজেলার আজিজিয়া নূরানী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শেষ করেন। পরে ২০১৪ সালে পাবনা আলিয়া (কামিল) মাদরাসা থেকে দাখিল ও ২০১৬ সালে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার টঙ্গী শাখা থেকে দাখিল সম্পন্ন করে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
অন্যদিকে সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায়।
ইতোপূর্বে সভাপতি ও সেক্রেটারি দুজনই ইবি শাখার ফাউন্ডেশন সম্পাদক, অর্থ সম্পাদক, এইচআরডি সম্পাদক ও অফিস সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে।
জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘টারজান: দ্য লর্ড অফ দ্য জঙ্গল’-এর নাম ভূমিকায় অভিনয়কারী রন এলির মৃত্যু হয়েছে, যার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায় মেয়ের বাড়িতে ২৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় এ অভিনেতার।
তার পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বুধবার এএফপি এ খবর জানায়।
ষাটের দশকের টেলিভিশন শো ‘টারজান’-এ আমেরিকান অভিনেতাকে জঙ্গলের নায়করূপে দেখানো হয়। পরবর্তী আপডেটে তাকে আধুনিক বিশ্বে শিক্ষিত রূপে যে জঙ্গলে তিনি বড় হয়েছিলেন, সেই জঙ্গলে ফিরে আসা চরিত্রে রূপদান করা হয়।
আধুনিক শহুরে টারজান চিত্রায়নে সুঠাম পেশিধারী, শিম্পাঞ্জির সঙ্গী কটি পরিহিত এলি বিপুল মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছেন।
সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে এলির মেয়ে কার্স্টেন এলি বুধবার বলেন, ‘বিশ্ব একজন অবিস্মরণীয় অন্যতম সেরা মানুষকে হারিয়েছে।’
ক্রিস্টেন এলি তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেন, ‘আমার বাবা এমন একজন মানুষ ছিলেন যাকে লোকে হিরো বলে ডাকত।
‘তার মধ্যে সত্যিই জাদুকরী কিছু গুণাবলী ছিল। বিশ্ব তাকে সেভাবেই জানত।’
‘টারজান’-এর দুটি মৌসুম শেষ হওয়ার পর এলি ১৯৯০-এর দশকে টিভিতে অভিনয় চালিয়ে যান। ২০১৪ সালে ‘এক্সপেক্টিং অ্যামিশ’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
দুটি ডিটেকটিভ উপন্যাসেরও লেখক তিনি, তবে টারজানে অভিনয় তাকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়।
হোটেলের বারান্দা থেকে পড়ে মারা গেছেন ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের সাবেক সদস্য জনপ্রিয় গায়ক লিয়াম পেইন।
বুধবার আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে পালেরমো এলাকার কাসা সুর হোটেলের তৃতীয় তলার এক বারান্দা থেকে পড়ে ৩১ বছর বয়সি এই গায়কের মৃত্যু হয় বলে এপির প্রতিবেদনে জানানা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলেই লিয়াম পেইনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বুয়েন্স আয়ার্সের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ পরিচালক পাবলো পোলিচিও’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, পেইন হোটেলে তার কক্ষ সংলগ্ন বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়েন। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার পর ‘মাদক বা অ্যালকোহলের প্রভাবে আক্রমণাত্মক অবস্থায় থাকা’ এক ব্যক্তির বিষয়ে খবর পেয়ে হোটেলটিতে যায় পুলিশ।
হোটেলের ম্যানেজার ৯১১ নম্বরে কল করে পুলিশকে খবরটি জানিয়েছিলেন।
টোডো নোটিসিয়াস টিভি চ্যানেলকে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রীয় জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রধান আলবার্তো ক্রিসেন্তি জানান, কর্তৃপক্ষ লিয়াম পেইনের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
মদ্যপানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন পেইন। গত বছরের জুলাইয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয় তুলে ধরে একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন তিনি।
এদিকে পেইনের মৃত্যুর বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে কাসা সুর হোটেলের সামনে ওয়ান ডিরেকশন ভক্তদের ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে এক পর্যায়ে পাহারা বসাতে হয়।
হোটেলের বাইরে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে সারি সারি মোমবাতি ও ফুলের তোড়া দিয়ে পেইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভক্তরা।
২০১০ সালে ব্রিটিশ গানের প্রতিযোগিতা সিরিজ ‘দ্য এক্স ফ্যাক্টর’-এ অডিশন দিতে যাওয়া পাঁচজন- লিয়াম পেইন, জেইন মালিক, হ্যারি স্টাইলস, নিয়াল হোরান ও লুই টমলিনসন মিলে গড়ে তুলেছিলেন ওয়ান ডিরেকশন।
পপ গানের বিশেষ ধরন এবং ‘হোয়াট মেকস ইউ বিউটিফুল’, ‘নাইট চেঞ্জেস’ ও ‘স্টোরি অফ মাই লাইফ’-এর মতো রোমান্টিক গানগুলোর জন্য জনপ্রিয়তা পায় ওয়ান ডিরেকশন।
পেইনের ‘স্টোল মাই হার্ট’ ও ‘চেঞ্জ ইওর টিকিট’সহ বেশকিছু গান জনপ্রিয়তা পায়। ২০১৬ সালে ভেঙে যাওয়ার আগে ওয়ান ডিরেকশনের ছয়টি গান বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষ দশে ছিল।
অভিনয়শিল্পী জামালউদ্দিন হোসেনের মৃত্যু হয়েছে, যার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় কানাডার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
অভিনেতার ছেলে তাশফিন হোসেন বলেন, শনিবার বাদ জোহর জামালউদ্দিন হোসেনের মরদেহ দাফন করা হবে।
তিন সপ্তাহ ধরে কানাডার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জামালউদ্দিন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রর আটলান্টায় মেয়ের কাছে ছিলেন। সেখান থেকে কানাডার ক্যালগিরিতে ছেলে তাশফিন হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান প্রবীণ এই অভিনেতা হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে ছেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তার মূত্র সংক্রমণ হয়েছে বলে জানান। একসময় জানা যায়, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন জামালউদ্দিন হোসেন। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের এ সদস্য পরে টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রেও কাজ করেন। যদিও বয়সজনিত জটিলতায় গত ১৫ বছর অভিনয়ে একেবারে অনিয়মিত ছিলেন তিনি।
গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকতেন জামালউদ্দিন। তার ছেলে তাশফিন হোসেন কানাডার মাউন্ট রয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক। মেয়ে তার পরিবার নিয়ে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে।
জামালউদ্দিন হোসেন ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি তার নিজের নাট্যগোষ্ঠী নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল শুরু করেন এবং এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বেতার টেলিভিশন শিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
জামালউদ্দিন হোসেন ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রানী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’সহ কয়েকটি আলোচিত মঞ্চনাটক পরিচালনা করেন। তার স্ত্রী অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য