‘দ্যাখো সারেং ছাড়া জাহাজ চলে, কার ইশারায় কিসের বলে/ মন্দ হাওয়ার খবর দিছে আগাম...’; লোককথার গাথা গভীরতম ভাবদর্শনের গানটির কথার মতোই মন্দ হাওয়া লেগেছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনির সংসার জীবনে।
তবে সেসবের মাঝেই এমন ভাবদর্শনের গানটি দিয়েই কিছুটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন পরী। কারণ, গানটি তার আসন্ন সিনেমা অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন-এর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিনেমাটির ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে ‘সারেং ছাড়া জাহাজ চলে’ শিরোনামের গানটি। সেটি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করে পরীমনি লেখেন, ‘এনজয়'।
প্রয়াত গীতিকার দেওয়ান লালন আহমেদের কথায় গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন স্বনামধন্য বাউলশিল্পী শফি মণ্ডল। গত বছরের শুরুর দিকে গানটি রেকর্ডিং করা হয়। এর সুর সংযোজন ও মিউজিক কম্পোজিশন করেছেন খ্যাতনামা সংগীত পরিচালক ইমন চৌধুরী।
গত বছর ১৪ জুলাই মারা গেছেন গীতিকার দেওয়ান লালন। ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে গানটি নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।
সে সময় দেওয়ান লালন বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন সিনেমার কাহিনির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই গানটি লেখা। লোককথার দ্বারা সহজভাবে গভীরতম ভাব ও দর্শন তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানটিতে। আমি খুব আশাবাদী যে গানটি দর্শক-শ্রোতাদের ভালো লাগবে।’
মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস ‘রাতুলের রাত রাতুলের দিন’ অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত সিনেমাটি পরিচালনা করেন রায়হান জুয়েল।
সিনেমাটিতে পরীমনির বিপরীতে রয়েছেন চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, আজাদ আবুল কালাম, আশীষ খন্দকারসহ অনেকে। ২০ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।
মৌমিতা তাশরিন নদী; এ প্রজন্মের অন্যতম আলোচিত সংগীতশিল্পী। গ্ল্যামারাস ও মিষ্টি গায়কীর এই শিল্পী এরইমধ্যে বেশ কিছু মৌলিক গান উপহার দিয়েছেন, যেগুলো শ্রোতাপ্রিয়তাও পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মুক্তি পেলো নদীর আরও একটি নতুন গান।
‘মন মানে না’ শিরোনামের এই গানটি প্রকাশ হয়েছে আরটিভি মিউজিকের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।
গানটির কথা লিখেছেন আজমল কবির ও সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন হৃদয় হাসিন। আর রিদম প্রোগ্রামিং করেছেন সায়েম রহমান।
নতুন গান নিয়ে নদী বলেন, “মৌলিক গানের ক্ষেত্রে আমি একটু সময় নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। ‘মন মানে না’ গানটি বেশ মিষ্টি একটা রোমান্টিক গান। গানটির কথা যেমন সুন্দর, তেমনি এর মিউজিকটাও দারুণ।
“যারা ফোক ও মেলোডির মেলবন্ধন পছন্দ করেন, তাদের গানটি ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, গানটি পছন্দের তালিকায় রয়ে যাওয়ার মতো।”
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি দর্শক- শ্রোতাদের মিষ্টি একটা গান উপহার দেয়ার। তাদের কাছে গানটি ভালো লাগলে, গ্রহণযোগ্যতা পেলে আমাদের কষ্ট স্বার্থক হবে।’
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে নদীর গাওয়া ‘জলছায়া’, আসিফ আকবরের সঙ্গে ‘আজ হারাই’, একক কণ্ঠে ‘ডুবসাতার’, ‘দেশি গার্ল’সহ আরও বেশ কিছু গান বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।
যুগ যুগ ধরে অনেক প্রতিভাবান শিল্পীর অবদানে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন। মূলধারার গণমাধ্যম ও দর্শকদের কাছে এ শিল্পীদের অনেকেই অচেনা, তবে নিজস্ব পরিসরে তাদের রয়েছে বেশ পরিচিতি।
কয়েক বছর ধরে কিছু জনপ্রিয় সংগীত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন এমন অনেক শিল্পী। গত বছরও এমন দুজন শিল্পীকে পেয়েছে দেশ, যারা আলো ছড়িয়েছেন সংগীতাঙ্গনে।
এ দুজন হলেন আলেয়া বেগম এবং হামিদা বানু। তাদের মধ্যে ‘বাউল মাতা’ হিসেবে পরিচিত লোকসংগীত শিল্পী আলেয়া বেগমের রয়েছে দীর্ঘ ৫০ বছরের ক্যারিয়ার। বিচ্ছেদ, পালাগান, জারিগান ও আধ্যাত্মিক গানের জন্য বিখ্যাত এ শিল্পী লিখেছেন হাজারের বেশি গান। ‘গুণিন’-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রেও তিনি গেয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি মূলত তার আশেপাশের মানুষজন ও এলাকাবাসীর মধ্যেই পরিচিত ছিলেন।
গত বছর কোক স্টুডিও বাংলার ‘কথা কইয়ো না’ গানে আলেয়ার হৃদয়স্পর্শী পারফরম্যান্স তাকে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের নজরে নিয়ে আসে। হঠাৎই সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয় এ শিল্পী রাতারাতি হয়ে ওঠেন দেশের সবার প্রিয়।
গানটির সাফল্য শুধু আলেয়া বেগমকেই নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করিয়ে দেয়নি, বরং বাংলাদেশি লোকসংগীতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকেও তুলে ধরেছে।
একই ঘটনা ঘটেছে সিলেটের লোকসংগীত শিল্পী হামিদা বানুর ক্ষেত্রে। দীর্ঘদিন ধরে হাসন রাজার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হামিদা বানুর পেশাদার হিসেবে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না।
কোক স্টুডিও বাংলার দ্বিতীয় সিজনে ‘দিলারাম’ গান দিয়ে তিনি মঞ্চে ওঠেন। তার শ্রুতিমধুর কণ্ঠের গান সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আলেয়া বেগমের মতোই হামিদা বানুও তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
আলেয়া বেগম ও হামিদা বানুর মতোই দর্শক-শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন আরেক গ্রামীণ প্রতিভা জহুরা বাউল। ‘বনবিবি’ গানে তার শক্তিশালী ও সুরেলা কণ্ঠে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। তিনি এখন নারী শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা। গ্রামের নারীদের ওপর তার প্রভাবের বিষয়টি ‘বনবিবি’ গানে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।
এ গানে তার নেতৃত্বে বাউল নারীদের দল মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। ‘মেঘদল’-এর মতো জনপ্রিয় ব্যান্ডের সঙ্গে একই মঞ্চে গান করলেও তার শক্তিশালী পরিবেশনা বিশেষভাবে দর্শক-শ্রোতার মন জয় করে নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কোক স্টুডিও বাংলা আলেয়া, হামিদা ও জহুরার মতো নারীদের প্রতিভা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এর লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অনুপ্রেরণা সৃষ্টি।
বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক ও র্যাপার বাদশা বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়। ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত এই গায়ক বাংলাদেশে এসে নাচে-গানে মাতিয়েছেন ঢাকাবাসীকে।
শুক্রবার রাতে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেকনোর নামে ‘টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্ট’-এ পারফর্ম করেন তিনি।
ঢাকার বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির (আইসিসিবি) এক্সপো জোনে ছিল দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। জনপ্রিয় সব গান গেয়ে দর্শকদের বুদ করে রাখেন বাদশাহ।
বিপণন প্রতিষ্ঠান ওয়েবএবলের আয়োজনে এই কনসার্ট শুধু ঢাকাই নয় বরং অনলাইনে সরাসারি লাইভ হওয়ায় দেশের সীমনা পেরিয়ে সারা বিশ্বের সঙ্গীতপ্রেমীদের উপহার দিয়েছে জমজমাট একটি আনন্দময় সন্ধ্যা।
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতাও পালন করা হয় কনসার্টে। মিউজিক ফেস্ট-টি উপভোগ করতে নেপাল, ভারত এবং শ্রীলঙ্কা থেকেও অনেকে টিকিট কেটে এসেছেন।
ওয়েবএবলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্টে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক ও র্যাপার ‘বাদশাহ’। আনুষ্ঠানিভাবে বাংলাদেশে বাদশাহ'র এটি প্রথম পারফরমেন্স। প্রথম আয়োজনেই দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি। ঢাকায় তিনি, ‘জুগ্নু’, ‘পানি পানি’, ‘গরমি’, ‘ডিজে ওয়ালা বাবু’, ‘লেটস নাচো’, ‘কালা চশমা’, ‘কর গাই চুল’, ‘গেন্দা ফুল’, ‘আভি তো পার্টি শুরু হুই হ্যায়’ এবং পাগাল’ সহ তার জনপ্রিয় গানগুলো দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন ।
বাদশাহ তার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে বলেন, পরম ভালোবাসা ও অভ্যর্থনার জন্য বাংলাদেশের দর্শকদের ধন্যবাদ। বাংলাদেশ পারফর্ম করে খুবই ভালো লেগেছে এবং আমি আবার এই দেশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। অসাধারণ এই আয়োজনের জন্য আয়োজকদের কাছেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্টে বাদশাহ ছাড়াও দেশি ও বিদেশি শিল্পীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই ফেস্টে ‘ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস’, ‘প্রিতম হাসান’, ‘জেফার’, ‘সঞ্জয়’ এবং ‘ব্ল্যাক জ্যাং’ সহ প্রশংসিত আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশি শিল্পীরা পারফর্ম করেন।
সঙ্গীত প্রযোজক এবং কম্পোজার ফুয়াদ বলেন, অসাধারণ আয়োজন ছিল। ঠিক সময়ে শুরু হয়েছে এবং সময়সূচি অনুযায়ী ঠিক সময়েই শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা এবং শিল্পীদের আতিথেয়তা সবকিছুই গোছানো ছিল।
এই মিউজিক ফেস্টটি শুধুমাত্র নাচ-গানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। অনুষ্ঠানে আগত দর্শক তাহসিন মাহমুদ বলেন, আমি শো'তে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছি। লাইনআপ এবং ভিজ্যুয়াল ছিল ভিন্ন মাত্রার। এছাড়া আতশবাজির ঝলক ছিল অসাধারণ। এমন বড় মাপের আন্তর্জাতিক শিল্পীর উপস্থিতিতে পুরো আয়োজনটি জাকজমক পার্টির মতো মনে হয়েছিল। এত বড় আয়োজনের সব কিছুই টাইম-শিডিউল মেনে সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে।
টেকনো মোবাইলের প্রধান নির্বাহী রেজওয়ানুল হক বলেন, এই আয়োজনটি প্রতিটি অর্থেই ছিল একটি গেম চেঞ্জার। আমরা এতো বড় অনুষ্ঠানের বাস্তবায়ন এবং দর্শকদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় জমজমাট সঙ্গীত আয়োজন উপহার দিতে পেরে গর্বিত।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান ওয়েবএবলের কর্নধার আনিস হান্নান চৌধুরী বলেন, দর্শকদের অগণিত সাড়া পেয়ে আমরা অভিভূত। আমরা এমন একটি কনসার্টের আয়োজন করতে চেয়েছিলাম যা বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে। আশা করি আমরা তেমনি একটি আয়োজন উপহার দিতে পেরেছে। এই আয়োজন দর্শকরা অনেকদিন মনে রাখবে। বাংলাদেশের মঞ্চে আরও বড়মাপের আন্তর্জাতিক শিল্পীদের উপস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশীয় প্রতিভা উপস্থাপনের জন্য আমরা সামনে আরও কাজ করবো।
ওয়েবএবল-এর চেয়ারম্যান সৈয়দ শাদাব মাহাবুব বলেন, আমাদের টিমের সবার অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্ট দারুণ সফলতা পেয়েছে। দর্শকদের মনে দাগ কেটে যাওয়ার মতো এমন আয়োজন আরও করতে চাই। আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে দেশে এবং বিদেশে আরও অনেক লাইভ অনুষ্ঠান করা এবং বিশ্বমঞ্চে আমাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করা।
লাইভ শো-এর মাঝে তাল কাটল। দর্শকের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ নচিকেতা মেজাজ হারালেন মঞ্চে। পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে যায়, প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন গায়ক, মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে গালিও।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চব্বিশ পরগনা খড়দার একটি ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শীতের সন্ধ্যায় জমে উঠেছিল নচিকেতার গানের আসর। মঞ্চে উঠে জনপ্রিয় ‘বৃদ্ধাশ্রম’ গানটি গাইছিলেন তিনি। কিন্তু দর্শক আসনে প্রথম সারিতে বসা এক তরুণের কীর্তিতে রেগে যান গায়ক।
প্রথম সারিতে বসা ওই তরুণ ক্রমাগত নচিকেতার ভিডিও রেকর্ড করছিলেন। সেই কারণেই বিগড়ে যায় শিল্পীর মেজাজ। সামনে উপস্থিত কয়েক শো মানুষের সামনে মোবাইল ফোনকে একটি অশ্লীল শব্দের ডেকে বসেন! গায়ককে বলতে শোনা গেল, ‘ছবি-টবি তুলো না। গান শুনতে এসেছ, গান শোনো, ফটোগ্রাফার তুমি? এখন কার বাচ্চাদের কোনো কাজ নেই। সারাক্ষণ হাতে…নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। না করে পড়াশোনা, না শোনে কথা, কিছুই করে না।’
নচিকেতার সাফ কথা, তিনি এখানে গান গাইতে এসেছেন। কাউকে ছবি তোলার অনুমতি দেননি। নচিকেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি পার্সোনাল কিসের ছবি তুলছো? আমি কি অনুমতি দিয়েছি? ….আমার অসুবিধা হচ্ছে। বসো না। উঠে দাঁড়িয়ে সবার সামনে কেন ছবি তুলছো? এটা গানকে অবমাননা করা হচ্ছে, কেন বোঝেন না?’
একটা সময় হাল ছেড়ে গায়ক বলেন, ‘কত অ্যারোগেন্ট! আমাকে এখন ওর সামনে দাঁড়িয়ে গান গাইতে হবে। ও ছবি তুলেই যাবে’।
এরপর প্রতিবাদের সুর ভেসে আসে দর্শক আসন থেকে। বিস্ফোরক নচিকেতা এরপর যোগ করেন, ‘সবাই বলবে আজকাল এটাই স্টাইল। তা ঘুষ খাওয়াটাও এখন স্টাইল, তাহলে সেটাও বলুন সবাইকে’।
শিল্পী ও দর্শকের এই বাদানুবাদের মাঝেই মঞ্চ ছেড়ে চলেও যান নচিকেতা। পরে এক ক্লাবকর্মকর্তা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বড় শিল্পীদের অনুষ্ঠান করাতে আনলে তাদের মর্জিমতো চলতে হয়’। শ্রোতা-দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। পরে অবশ্য নচিকেতা ফের গান শুরু করেছিলেন।
গায়কের এই ভিডিও ভাইরাল হতেই দ্বিধাবিভক্ত নেটপাড়া। অনেকেই নচিকেতাকে সমর্থন জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘সত্যি শিল্পীদের সমস্যা হয় চোখের সামনে অজস্র মোবাইল ক্যামেরা ঘুরতে দেখলে’। অনেকেই আবার নচিকেতার আচরণকে অশোভনীয় বলে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন:সবাই মিলে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যারা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তারা সবাই পেশায় পুলিশ। আচমকা থানায় বসে গান ধরলেন কেন পৌষালী? তার কণ্ঠে শোনা গেল ‘আমার হাত বান্ধিবি পা বান্ধিবি’ গানটি।
এ ঘটনার একটি ভিডিও শনিবার পৌষালী পোস্ট করেছেন নিজেই। পোস্টে তিনি লিখেছেন,থানায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল। গান শোনার পর ছেড়ে দিল।” আসলে ঘটেছেটা কী?
আনন্দবাজার পত্রিকাকে পৌষালী জানিয়েছেন, এটি হল তার জীবনে ঘটে যাওয়া মিষ্টি ঘটনা। কী হয়েছিল আসলে?
পৌষালী বলেন, মালদহের এসআই মেনক আমার গানের অন্ধ ভক্ত। মালদহ শহরের যেখানেই অনুষ্ঠান করতে যাই না কেন, কাজের ফাঁকে ঠিক দেখা করতে আসেন মেনকা। এবারও সেখানকার গাজোল অঞ্চলে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠানটি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মেনকা। তিনিই তখন এসে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। থানার অনেকেই নাকি আমার গান পছন্দ করেন। সেই অপরাধেই আমায় থানায় যেতে হয়। সেখানেই মন খুলে গান গাইছিলাম আমি। সবাই চুপচাপ বসে শুনছিল। এটা একটা অন্য রকমের অভিজ্ঞতা।
পৌষালী এই মুহূর্তে নিজের অ্যালবাম নিয়ে ব্যস্ত। আগামী বছর মুক্তি পাবে তার নতুন গান। পৌষালীর নতুন অ্যালবামের অপেক্ষায় তার অনুরাগীরা।
সংগীত ছাড়াও বাংলাদেশের শিল্প ও সৃজনশীল জগতে প্রভাব রাখার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে কোক স্টুডিও বাংলা (সিএসবি)।
প্ল্যাটফর্মটির ‘কোক স্টুডিও বাংলা বিলবোর্ড ফ্যান আর্ট কনটেস্ট’ নামের প্রতিযোগিতায় দুই মাসেরও কম সময়ে ৬০টির বেশি শিল্পকর্ম জমা পড়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সিএসবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্ল্যাটফর্মটি যাত্রা শুরু করার পর থেকে এই চমৎকার গান ও শিল্পীদের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে হাজারো ভক্ত ও শিল্পীরা তাদের সৃজনশীল চিত্রকর্ম প্রকাশ করেছেন। পেইন্টিং, স্কেচ, ডিজিটাল আর্ট, অ্যানিমেশন, ক্যালিগ্রাফি, এআই-জেনারেটেড ইমেজেস ইত্যাদিসহ হাজারো চিত্রকর্ম ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
“এই উৎসাহ ও সৃজনশীলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্ল্যাটফর্মটি ‘কোক স্টুডিও বাংলা বিলবোর্ড ফ্যান আর্ট কনটেস্ট’ শুরু করে। দুই মাসেরও কম সময়ে তাদের কাছে ৬০টির বেশি শিল্পকর্ম জমা পড়ে, যার মধ্যে নির্বাচিত কিছু শিল্পকর্ম ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের ১১টি বিলবোর্ডে প্রদর্শিত হয়েছে।”
এ বিষয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অফ মার্কেটিং আবীর রাজবীন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩ লক্ষের বেশি কথোপকথন, হাজারো ফ্যান আর্ট, মিউজিক ও ড্যান্স কাভার এবং যন্ত্রসংগীতের মাধ্যমে কোক স্টুডিও বাংলা একটি প্রাণবন্ত ও সংযুক্ত কমিউনিটি তৈরি করেছে। এই কমিউনিটি প্ল্যাটফর্মটির গানগুলোর প্রতি নিজেদের ভালোবাসা সবসময় তুলে ধরছে।
“প্রথম দুই সিজনে আমরা অভূতপূর্ব সমর্থন ও সাড়া পেয়েছি। এতে আমরা সৃজনশীল ক্ষেত্রে নতুন কিছু করার প্রেরণা পাই।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৮ সালে কোক স্টুডিওর যাত্রা শুরু হওয়ার পর সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে আসে কোক স্টুডিও বাংলা (সিএসবি)। শুরু হওয়ার পর থেকেই বৈচিত্র্যময় ধারার প্রতিভাগুলোকে একত্রিত করে সৃজনশীল ও নতুন ধারার সংগীত সৃষ্টির মাধ্যমে সংগীত জগতে আলোড়ন তৈরি করে প্ল্যাটফর্মটি। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গান প্ল্যাটফর্মটিতে পরিবেশন হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১০০ জন শিল্পী, যার মধ্যে আছেন অনিমেষ রায়, হামিদা বানু, আলেয়া বেগম, মুকুল মজুমদার ঈশানসহ অনেক লুকিয়ে থাকা রত্ন।
সিএসবির ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২৮.৬ লাখের বেশি। ইউটিউবে সিএসবির সেরা গানের তালিকায় রয়েছে প্রথম সিজনের ‘ভবের পাগল’, ‘বুলবুলি’ ও ‘নাসেক নাসেক’ এবং দ্বিতীয় সিজনের ‘দেওরা’ ও ‘কথা কইয়ো না’।
আরও পড়ুন:বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা।
তবে খবরটি হঠাৎ প্রচার হওয়ায় গণমাধ্যমে এই গায়িকা গোপনে বিয়ে করেছেন বলে খবর ছড়িয়েছিল। খবর ইউএনবির
কিন্তু এ নিয়ে এবার নিজেই জানালেন তিনি।
গণমাধ্যমে লিজা বিয়ের খবরটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, গোপনে তিনি বিয়ে করেননি।
লিজা বলেন, ‘আমি গোপনে বিয়ে করার মতো মানুষ নই। বিয়ের খবর আমার কাছের সবার জানা। উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিয়ে করেছি। অপেক্ষা করছিলাম সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’
এক বছর আগে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ব্যস্ততার কারণে এখনও অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করতে পারিনি, তবে শিগগিরই তা করব। এর আগেই খবরটি ছড়িয়ে যায়।’
লিজার স্বামী একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দুই দেশেই তিনি ব্যবসা করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য