সাদিয়া খালিদ রীতি প্রথম না দ্বিতীয় সেই আলাপে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বললেন, ‘আমি দ্বিতীয় বলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব।’
হলিউডের প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে হওয়া নামকরা অ্যাওয়ার্ড প্ল্যাটফর্ম গোল্ডেন গ্লোবে ভোটার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশের এ সাংবাদিক ও ফিল্ম ক্রিটিক।
এটি নিঃসন্দেহে উদযাপনের বিষয় এবং রীতি সেটি করছেনও। তার ভাষ্যে, ‘হ্যাঁ, আমি উদযাপন করছি। এটা এমন না যে হঠাৎ করে পেয়ে গেছি। এটার জন্য অনেক হার্ড ওয়ার্ক করেছি। শ্রম করে পাওয়ার যে আনন্দ সেটা পাচ্ছি।’
আর কেন তিনি দ্বিতীয় সেটি ব্যাখ্যা করতে জানান, ১৯৯৩ সালে ভোটার হিসেবে একজন যুক্ত হয়েছিলেন, তিনি বাংলাদেশি তবে আমেরিকান নাগরিক ছিলেন এবং আমেরিকান জার্নালিস্ট হিসেবেই তিনি ভোটার হয়েছিলেন। মূলত ফটো জার্নালিস্ট ছিলেন তিনি।
কীভাবে এ অর্জন? জানতে চাইলে রীতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গোল্ডেন গ্লোব এর আগে শুধু আমেরিকার নাগরিকদের মধ্যে থেকে ভোটার হিসেবে নিত, এবার ওরা অন্য দেশ থেকেও ভোটার নিচ্ছে, যাদের হাইপ্রোফাইল মনে করছে। আগে ভোটার সংখ্যা ছিল ১০০ জনের মধ্যে, এখন সেটা ডাবলের মতো হয়ে যাচ্ছে।
‘আমি এটার খবর রাখতাম না, কারণ এটা শুধু আমেরিকার নাগরিকদের জন্য ছিল। তো হঠাৎ করে একদিন গোল্ডেন গ্লোবের ভোটিং বডির প্রেসিডেন্ট মেইল করল। আমি ভেবেছিলাম এটা হয়তো প্রি-সিলেকশন, আমি বোধহয় সিলেকশন হয়ে গিয়েছি। পরে দেখলাম, না, ওরা অ্যাপ্লিকেশন চেয়েছে এবং সেগুলো থেকে যাচাই-বাছাই করে তারপর চূড়ান্ত করবে। কয়েকটা মাস টেনশনে ছিলাম, হয় কি না।’
শেষমেশ জয়ের হাসি হেসেছেন রীতি। অনেকগুলো সিনেমা দেখতে হবে তার। নেটফ্লিক্স এবং ডিজনি নাকি এরই মধ্যে স্ক্রিনার (প্রমোশনাল) পাঠানো শুরু করেছ। অনেক বড় কাজ।
রীতি বলেন, ‘কাজটা যেন ঠিকমতো করতে পারি। গোল্ডেন গ্লোব কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে একজনকে নিয়েছে, দেশের সম্মানটা যেন রাখতে পারি।’
রীতি সিনেমাপাগল। স্বপ্নের পেছনেই ছুটছেন এখনও। রীতির বাবা ছিলেন এয়ারফোর্সে। যশোরে জন্ম রীতির, বেড়ে উঠেছেন দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ক্লাস ৪-৫-এ চায়নাতেও ছিলেন তিনি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে অনার্স করে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার স্কুল অফ থিয়েটার, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগে লেখাপড়া করেছেন। তার বিষয় ছিল স্ক্রিপ্ট রাইটিং।
রীতি জানান, ২০১৫-১৭তে যখন তিনি লস অ্যাঞ্জেলসে ছিলেন, তখন ওখানে রাইটার হিসেবে কাজ করতে গেলে ওদের গল্পটাই বলতে হতো। কিন্তু রীতি চেয়েছিলেন নিজের দেশের গল্পটা আগে বলতে। হলিউডে রীতি দুটি প্রোডাকশন হাউস ও একটি আর্টিস্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে কাজ করেছেন। সাংবাদিক হিসেবেও সেখানকার সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি।
সিনেমার প্রতি এ ভালোবাসা রীতির টিনএজ বয়স থেকে। তিনি বলেন, ‘মুলান রুজ সিনেমাটা দেখে আমার সিনেমার প্রতি আগ্রহ জন্মে। ইচ্ছা ছিল মিউজিক ভিডিও বানাব।’
পরে রাইটিংয়ে আগ্রহ বাড়ে রীতির। বিদেশে লেখাপড়া ও কাজ শেষে দেশে এসে ফুল টাইম লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
রীতি বলেন, ‘আমাদের এখানে রাইটারদের মূল্যায়ন করা হয় না। মাসের পর মাস একটা প্রজেক্টে কাজ করেছি কিন্তু কোনো টাকা দেয় নাই; কোনো কনট্রাক্ট সাইন করে নাই। খুবই আনপ্রফেশনাল এই রাইটিংয়ের জায়গাটা। টাকা দিলেও খুব সামান্য টাকা দেয়। আমি বুঝলাম লিখে টিকে থাকা সম্ভব না। আসার পর ছয় মাস রাইটিং করেছি, পরে দেখলাম এভাবে হয় না, পরে আবার সাংবাদিক পেশায় যুক্ত হয়েছি ও রাইটিংয়ের কাজ করছি।’
এর পাশাপাশি রীতি যুক্ত হতে থাকেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে। এরই মধ্যে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জুরির দায়িত্ব পালন করেছেন, ছিলেন বার্লিনালে ট্যালেন্টসে।
ফেস্টিভ্যাল সার্কিটে যুক্ত হওয়ার শুরুর গল্প জানিয়ে রীতি বলেন, ‘আমি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের (ডিআইএফএফ) সঙ্গে যুক্ত হই ২০১২তে। ২০১৮তে ফেস্টিভ্যালের জুরি হিসেবে দায়িত্ব পাই। ঢাকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকে এখানকার মানুষ বোঝে কি না জানি না, কিন্তু এটা অনেক বড় ফেস্টিভ্যাল। ওই বছরেই আমার অনেকগুলো ফেস্টিভ্যাল থেকে ডাক আসে।’
অনেকে বলবেন, এসব ফেস্টিভ্যালে যুক্ত হয়ে দেশের সিনেমার কী হবে? তার ব্যাখ্যা দিয়ে রীতি বলেন, ‘ফায়দা হলো, আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমাদের অংশগ্রহণ বাড়বে। ওরা কিন্তু আমাদের পয়েন্ট অফ ভিউটাই জানে না। ইউরো সেন্ট্রিক পয়েন্ট অফ ভিউ বা ওয়েস্টার্ন পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে ফিল্ম ক্রিটিসিজমটা চলে আসছে। ফেস্টিভ্যালে যখন কোনো ক্রিটিক সিনেমা দেখছে তার অধিকাংশই ওয়েস্টার্ন। ওরা সিনেমা দেখার পর যখন কথা বলে আমাদের সঙ্গে, তখন আমি বুঝি যে আমাদের কালচার সম্পর্কে ওদের কোনো ধারণাই নাই।
‘এতে করে সমস্যা হলো, আমাদের এখান থেকে সিনেমা নির্মাণ হবে ঠিকই, কিন্তু ওরা বুঝবেই না কিছু এবং এ অঞ্চলের সিনেমার যথার্থ মূল্যায়ন হবে না। ফিল্মের ইকোসিস্টেমের মধ্যে এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট, যে ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যাটফর্মে বসার মতো ফিল্ম ক্রিটিকও থাকতে হবে।’
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেমা দেখে রীতির পর্যবেক্ষণ হলো- সেসব সিনেমার সঙ্গে দেশের সিনেমার পার্থক্য অনেক।
কারণ ব্যাখ্যা করে রীতি বলেন, ‘আর্ট হাউস সিনেমাগুলো তো ইউরোপের ফিল্ম মুভমেন্ট থেকে শুরু হয়েছে। আমরা আমাদের আর্ট হাউস করতে গিয়ে ওদের অনেক ক্ষেত্রে কপি করেছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের মানুষ, দর্শক ও দর্শনকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। আমরা কিন্তু এখনও স্ক্যাটার্ড, আমাদের ন্যাশনাল ফিল্ম আসলে কী? কেউ ইউরোপকে ফলো করছে, কেউ বলিউডকে ফলো করছে।’
সম্প্রতি ঘোষণা এসেছে অস্কারের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগে লড়তে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হাওয়া সিনেমাটি। এর সম্ভাবনা কেমন জানতে চাওয়া হয় রীতির কাছে।
তিনি বলেন, ‘অস্কারে লবিং হয়, প্রচুর লবিং হয়। আমি যখন লস অ্যাঞ্জেলেসে কাজ করতাম তখন দেখতাম আমাদের অফিসে এসে কেক দিয়ে যাচ্ছে, গিফট দিয়ে যাচ্ছে। একবার দেখেছিলাম যে টম হ্যাঙ্কসের কোনো একটি সিনেমা, নাম মনে করতে পারছি না, ওরা এক মাস ধরে প্রতি রাতে পার্টি দিয়েছে।
‘তবে ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্মে এই লবিং মনে হয় না প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে ওরা দেখে ফেস্টিভ্যালে কেমন পারফর্ম করেছে সিনেমাটি। হাওয়া তো সেই অর্থে ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করেনি। তার পরও সিনেমাটি যদি কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে, সেটাই আমাদের পাওয়া হবে।’
কাজ তো চলছেই, পাশাপাশি একটি টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছেন রীতি। সেটি কেমন?
রীতি বলেন, ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একটা সেগমেন্ট করি আমরা, যেটার নাম ওয়েস্ট মিট ইস্ট। ওখানে আমরা সাউথ এশিয়ান রিজিয়নের স্ক্রিপ্ট নিয়ে একটা কম্পিটিশন করি। আমার একটা স্বপ্ন হচ্ছে যে, সাউথ এশিয়ান ফিল্মের মধ্যে রিজিয়নাল কো-অপারেশনকে আরও শক্তিশালী করা। আমাদের মধ্যে এই কো-অপারেশনটা খুবই উইক এখন পর্যন্ত।
কো-অপারেশন বাড়লে কী হবে জানতে চাইলে রীতি বলেন, ‘গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মটা যে এত ওয়েস্ট ঘ্যাসা সেটা চেঞ্জ হবে। আমার সংঘবদ্ধ হলে আমাদের পয়েন্ট অফ ভিউটা সবার শুনতেই হবে। ওয়েস্ট মিট ইস্ট প্রোগ্রামটা নিয়ে সাউথ এশিয়ানদের মধ্যে বেশ একটা আগ্রহ আছে। আশা করি বিষয়টা নিয়ে এগোনো যাবে।’
হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’। ১৯৯৩ সালে ‘জুরাসিক পার্ক’ মুক্তির মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু। এবার এসেছে নতুন ছবি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’।
এ গল্পের পটভূমিতে ডাইনোসর ক্লান্তি থাকলেও দর্শকদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একদমই প্রযোজ্য হয়নি। বরং বিশ্বজুড়ে বক্স অফিসে দারুণ দাপট দেখিয়েছে ছবিটি। রবিবার (৬ জুলাই) স্টুডিও থেকে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত ৩১৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে ছবিটি। এটি মুক্তি পেয়েছিল গত বুধবার।
জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ পরিচালনা করেছেন গ্যারেথ এডওয়ার্ডস। এটি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ সিরিজের চতুর্থ সিনেমা এবং ১৯৯৩ সালে স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত মাইকেল ক্রাইটনের উপন্যাস অবলম্বনে প্রথম ‘জুরাসিক পার্ক’ মুক্তির পর থেকে সিরিজের মোট সপ্তম সিনেমা এটি।
আন্তর্জাতিক বাজারে চীনসহ ৮২টি দেশে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রথম পাঁচ দিনে আয় ১৭১ মিলিয়ন ডলার। শুধু চীনেই আয় হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। সেখানে ছবিটি ৬৫ হাজার পর্দায় চলেছে, যার ৭৬০টি ছিল আইম্যাক্স স্ক্রিন। এটিই চলতি বছরে চীনে সবচেয়ে বড় ‘মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন’ (এমপিএ) মুক্তির রেকর্ড গড়েছে।
এদিকে, উত্তর আমেরিকার ৪ হাজার ৩০৮টি প্রেক্ষাগৃহে পাঁচ দিনে ছবিটির আয় ১৪৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তিন দিনের ‘সাপ্তাহিক ছুটি’ (শুক্রবারের স্বাধীনতা দিবসের ছুটি, শনিবার ও রবিবারের সম্ভাব্য বিক্রির হিসাব) মিলিয়ে আয় ৯১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার।
১৮০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ইউনিভার্সেল পিকচার্সের এই ছবি এরই মধ্যে দর্শকদের বিশেষ আগ্রহ তৈরি করেছে। ছবির প্রধান চরিত্রে আছেন স্কারলেট জোহানসন। তার সঙ্গে আরও আছেন মাহেরশালা আলী ও জোনাথন বেইলি।
জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থে মূল চরিত্রদের যুক্ত করা হয়েছে। সঙ্গে ফিরেছেন জুরাসিক পার্কের চিত্রনাট্যকার ডেভিড কোয়েপ, যিনি গল্প এগিয়ে নিয়েছেন ডাইনোসরের ডিএনএ নিয়ে এক ভয়ংকর শিকার অভিযানের দিকে—যেখানে এবার ডাইনোসর বানানো নয়, বরং হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য ডিএনএ সংগ্রহই মূল লক্ষ্য।
ইউনিভার্সালের ঘরোয়া পরিবেশনা প্রধান জিম ওর বলেন, ‘এটা সত্যিই দারুণ সাফল্য। গ্রীষ্মকালে দর্শক ঠিক এমনই কিছু চায়—বড়, মজার আর অসাধারণভাবে নির্মিত অ্যাডভেঞ্চার।’
ছবিটি সমালোচকদের কাছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। রটেন টমেটোজে ছবির স্কোর ৫১ শতাংশ, আর প্রথম সপ্তাহের দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছে ‘বি’ গ্রেডের সিনেমাস্কোর।
তবে স্টুডিও বলছে, বয়স ৮ থেকে ৮০—সব বয়সী দর্শক ছবিটি দেখতে এসেছেন। সমালোচনাসত্ত্বেও প্রত্যাশার চেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই আয় বেশি হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকে রাজত্ব করা রাভিনা ট্যান্ডনের মেয়ে রাশা থাডানিরও বলিউডে অভিষেক হয়েছে। শুধু রাশাই নন, উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তালিকায় সুহানা খান, অনন্যা পাণ্ডে থেকে শুরু করে অনেক স্টারকিডই আছেন। সেদিক থেকে যেন ব্যতিক্রম কাজলের মেয়ে।
কাজলের মেয়ে নাইসা দেবগনের চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নে ফিল্মিজ্ঞানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেন কাজল।
কাজলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে রাশা যেমন তার মা রাভিনার উত্তরাধিকার বহন করছে, তেমন করেই কি নাইসাও তার উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে? এরপর কাজল বলেন, ‘না, আমার মনে হয় না ও তা করবে। ও সিনেমায় আগ্রহী নয়। আমি আমার পরিবারের সব বাচ্চাকে ভালোবাসি এবং আমি চাই ওরা এমন কিছু করুক যা করতে ওদের ভালো লাগে। আমি মনে করি তাতেই ওরা সফল হবে।’
অভিনেত্রীর সন্তানরা তাঁর অভিনয় দেখে কী বলেন? এমন প্রশ্নে কাজল বলেন, ‘আমার সন্তানরা আমার ছবি পছন্দ করে না, কারণ সেগুলোতে আমাকে কাঁদতে হয়। ওঁরা পর্দায় মাকে কাঁদতে দেখতে পছন্দ করে না। নাসা এবং যুগ আমাকে কাঁদতে দেখে বেশ কষ্ট পায়। আমি ওঁদের বলেছি এটা নকল, কিন্তু ওঁরা তা বুঝতে পারে না।’
প্রসঙ্গত, রাশা অজয় দেবগনের ভাগ্নে আমান দেবগনের সঙ্গে ‘আজাদ’ ছবিতে অভিনয় করে বলিউডে ডেভিউ করেন। এই ছবিতে অজয় নিজেও অভিনয় করেছিলেন। ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সাফল্য না পেলেও, সিনেমায় ‘উই আম্মা’ গানে রাশার নাচ তাকে খ্যাতি এনে দেয়।
এদিকে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে কাজলের নতুন সিনেমা ‘মা’। বিশাল ফুরিয়া পরিচালিত এই পৌরাণিক ভৌতিক নাটকে তিনি ছাড়াও অভিনয় করেছেন রণিত রায়, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত এবং খেরিন শর্মা। ছবিটি ২৭ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী সঞ্জয় কাপুর। ২০০৩ সালে কারিশমা কাপুরের সঙ্গে এ প্রয়াত শিল্পপতির বিয়ে হয়েছিল। কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুরের ঘরে দুই সন্তানের জন্মও জন্মও হয়েছিল। তবে তাদের বিয়ে স্থায়ী হয়নি।
বিবাহবিচ্ছেদের পরে শুধুই সন্তান ও কাজে মন দিয়েছিলেন কারিশমা কাপুর। কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল কিনা তা এ অভিনেত্রীর, সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর আবারও সেই প্রশ্ন উঠেছে।
কারিশমা কাপুর সঞ্জয়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর আর বিয়ে করেননি। এমনকি কখনো কারও সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জনও শোনা যায়নি। সঞ্জয়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে ২০০২ সালে অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন কারিশমা কাপুর। তবে বিয়ের আগেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এর এক বছর যেতে না যেতে সঞ্জয়ের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন কারিশমা। সঞ্জয় ও অভিষেক ছাড়া আর কোনো পুরুষের সঙ্গে কখনো সম্পর্কে জড়াননি এ অভিনেত্রী। শুধু তা-ই নয় ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কখনো তিনি খুব একটা কথাও বলেননি। কারিশমাকে ২০২২ সালে ইনস্টাগ্রামে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক অনুরাগী প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনি কি দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইচ্ছুক?’ তিনি জবাবে কিছুই বলেননি। শুধু একটি ইমোজি দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।’ সেই ইমোজি ও মন্তব্য দেখে তার ভক্তরা ধারণা করেছিলেন, দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে নিশ্চয়ই সিদ্ধান্তহীনতা ভুগছেন কারিশমা। মানে কোথাও গিয়ে তার মনে এখনো বিয়ের ইচ্ছে রয়েছে কিনা। যদিও এরপরে বিয়ে নিয়ে আর কখনো তিনি মুখ খোলেননি।
এক মাসের নীরবতা ভেঙে অবশেষে কাজে ফিরলেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। ফেসবুকে একগুচ্ছ প্রাণবন্ত ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘১ মাস পর…।’ ক্যাপশন ছোট হলেও তার প্রত্যাবর্তন ছিল বড়সড় চমক।
ফেসবুকে প্রকাশিত ছবিগুলোতে খোলা চুল, ঠোঁটে মিষ্টি হাসি- যেন ঝলমলে আলোয় ফিরে এসেছেন ফারিয়া। অনেক ভক্ত-অনুরাগী যেন খুঁজে পেয়েছেন সেই পুরোনো নায়িকাকে নতুন রূপে।
বলা দরকার, গত মাসে থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফারিয়া কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মে ঢাকার ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন নুসরাত ফারিয়া। অভিযোগ ছিল- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতা ও হত্যাচেষ্টার মতো গুরুতর বিষয়। ঘটনার পর মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। তবে ২০ মে জামিনে মুক্তি পেয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হন এই চিত্রনায়িকা।
ভারতের হিন্দি সিনেমার দুই তারকা শাহরুখ খান ও সালমান খানকে একসঙ্গে নিয়ে ‘টাইগার ভার্সেস পাঠান’ নামের যে সিনেমাটি নির্মাণের কথা শোনা গিয়েছিল বছর খানেক আগে, সেই সিনেমার কাজ আগাচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় সিনেমা বন্ধের যে গুঞ্জন উঠেছে সেটি ‘সঠিক নয়’ বলে জানিয়েছে সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। এনডিটিভি লিখেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘টাইগার ভার্সেস পাঠান’ সিনেমার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে, তবে সময় লাগবে।
চলতি বছরের শুরুতে সালমান এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘এই সিনেমাটি হয়ত হচ্ছে না’। এরপর থেকেই নানা গুঞ্জন ছড়াতে থাকে যে সিনেমাটি আর আলোর মুখ দেখবে না।
‘পিপিং মুন’ নামের যে অনলাইন পত্রিকাটি ‘টাইগার ভার্সেস পাঠান’ বন্ধ হওয়ার খবর প্রকাশ করেছিল, তারাও পরে সেই প্রতিবেদন সরিয়ে নেয়। ‘টাইগার বনাম পাঠান’ সিনেমাটি যশরাজ চলচ্চিত্রের স্পাই ইউনিভার্সের অংশ।
এই ফ্রাঞ্জাইজির শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত ‘এক থা টাইগার’ সিনেমা দিয়ে। সেখানে সালমানের চরিত্র ছিল রাষ্ট্রীয় গুপ্তচর সংস্থার কর্মকর্তা।
তারপর ২০১৭ সালে এর সিক্যুয়েল ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ মুক্তি পায়। এরপর ২০২৩ সালে আসে ‘টাইগার থ্রি’।
এই ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে শাহরুখ খান যুক্ত হন ২০২৩ সালে, তার অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমার মাধ্যমে। ওই সিনেমায় সালমান খান হাজির হন ক্যামিও চরিত্রে।
এই ধারাবাহিকের আরও সিনেমার মধ্যে আছে হৃতিক রোশন ও টাইগার শ্রফ অভিনীত ‘ওয়ার’। যেটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৯ সালে। এর সিক্যুয়েল ‘ওয়ার ২’ সিনেমার কাজ চলছে। যেখানে দেখা মিলবে হৃতিক রোশান ও দক্ষিণের তারকা জুনিয়র এনটিআরের। যা পরিচালনা করছেন অয়ন মুখোপাধ্যায়।
এছাড়া ‘আলফা’ নামের নতুন সিনেমারও পরিকল্পনা রয়েছে , যেখানে অভিনয় করবেন আলিয়া ভাট ও শরভারি ওয়াঘ।
শাহরুখ খান ও সালমান খানের আগেও একাধিক সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘করন অর্জুন’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘হাম তুমহারে হ্যায় সানাম’সহ আরো কয়েকটি।
সালমান খানকে সর্বশেষ দেখা গেছে এ আর মুরুগাদোস পরিচালিত ‘সিকান্দার’ সিনেমায়। চলতি বছরের রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
অন্যদিকে শাহরুখ খান অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ছিল রাজকুমার হিরানির ‘ডাঙ্কি’। সামনে তাকে দেখা যাবে ‘কিং’ সিনেমায়।
প্রায় এক যুগ পর একসঙ্গে পর্দায় পাওয়া যাবে জয়া আহসান ও শাকিব খানকে। ঈদুল আজহায় মুক্তির প্রস্তুতি চলছে নতুন সেই সিনেমা ‘তাণ্ডব’। এরই মধ্যে সিনেমাটি নিয়ে আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে সত্যিই এটি ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে কি না তা এখনো নিশ্চিত করেননি নির্মাতা রায়হান রাফী। তবে দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া জানান, এই ছবিতে এক বদলে যাওয়া শাকিবকে পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’ নামে একটি সিনেমায় একত্রে দেখা গিয়েছিল শাকিব খান ও জয়া আহসানকে। এরপর আর একসঙ্গে কাজ করেননি তারা। দীর্ঘ এক যুগ পর আবারও পর্দা ভাগাভাগি করছেন এ দুই তারকা। এতদিন পর শাকিবের সঙ্গে অভিনয় করে কেমন লাগছে? কতটা পরিবর্তন এসেছে অভিনেতার? জানতে চাইলে জয়া আহসান বলেন, ‘তার ডেডিকেশন লেভেলটা অনেক বেড়েছে। খুব মন দিয়ে কাজ করেন। নিজের চরিত্রের জন্য সর্বোচ্চটা তিনি দেন, যেটা অ্যাপ্রিশিয়েট করার মতো।’
‘তাণ্ডব’ ছবিতে জয়া আহসান অভিনয় করলেও শাকিবের নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে না এই তারকাকে। বরং শাকিবের নায়িকা হিসেবে ছবিতে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর। সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে হামলাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাবে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার গল্প। সিনেমাটির বিশেষ একটি চরিত্রে কাজ করছেন জয়া আহসান। এরই মধ্যে ‘তাণ্ডব’-এর শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন ছবির অভিনয়শিল্পীরা। এই ছবিতে কাজ করছে একঝাঁক তারকা।
একসঙ্গে কাজ না করলেও জয়া আহসান ও শাকিব খান দুজনেই এককভাবে ব্যস্ত ছিলেন কাজ নিয়ে। একই সঙ্গে ঢাকা ও কলকাতায় কাজ করেছেন দুই তারকাই। বিশেষ করে কলকাতার সিনেমায় জয়ার সম্পৃক্ততা ছিল উৎসাহব্যঞ্জক। অন্যদিকে শাকিব খানও আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে সময় পার করেছেন। গত বছর শাকিব অভিনীত তিনটি সিনেমা মুক্তি পায়।
সিনেমাগুলো নিয়ে প্রশংসার পাশাপাশি প্রচুর সমালোচনাও সইতে হয়েছে অভিনেতাকে। গত বছর উৎসবের বাইরে শাকিবের ‘দরদ’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেলেও সেটি সাফল্য পায়নি। সম্প্রতি ঈদুল ফিতরে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় শাকিব অভিনীত দুটি সিনেমা ‘অন্তরাত্মা’ ও ‘বরবাদ’। সিনেমা দুটি নিয়ে নিজের সঙ্গেই নিজেকে লড়াই করতে হয়েছে অভিনেতাকে। দুটি সিনেমাতেই তিনি সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিদেশি নায়িকা, যা গত কয়েক বছর ধরেই তার সিনেমায় দেখা যাচ্ছে।
বাণিজ্যিক ঘরানার পাশাপাশি অভিনব গল্প ও আধুনিক চিত্রনাট্যে সমৃদ্ধ সিনেমা সাদরে গ্রহণ করেছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রপ্রেমিরা। বিশেষ করে ঈদ উৎসবে এখনও সিনেমা হলগুলোতে থাকে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরেও নানান উদ্দীপনার খোরাক যোগাচ্ছে নতুন কিছু ছবি। চলুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আসন্ন ঈদে ২০২৫ ঈদুল ফিতরে ঢালিউডে মুক্তি পাচ্ছে যে সকল চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় থাকা চলচ্চিত্রগুলো।
২০২৫ ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাচ্ছে যে সকল বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
বরবাদ
ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান ও কলকাতার ইধিকা পল জুটির এই দ্বিতীয় কাজটি নিয়ে ইতোমধ্যে চলচ্চিত্র পাড়ায় বেশ হৈচৈ চলছে। এর আগে প্রিয়তমা (২০২৩)-তে বেশ সাড়া ফেলেছিলো এই জুটি। একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ভারতের যীশু সেনগুপ্তের যুক্ত হওয়া ছবিটির প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি আইটেম গানে ক্যামিও চরিত্রে থাকবেন কলকাতার আরেক তারকা নুসরাত জাহান-কে।
রোমান্টিক অ্যাকশন থ্রিলারটি পরিচালনার মধ্য সিনেমা নির্মাণে পদার্পণ করেন মেহেদী হাসান হৃদয়। প্রযোজনায় রয়েছেন শাহরিন আক্তার সুমি (রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন) এবং আজিম হারুন (রিধি সিধি এন্টারটেইনমেন্ট)।
অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, মামুনুর রশীদ, এবং ইন্তেখাব দিনার।
সংগীত আয়োজনে আছেন প্রীতম হাসান। ২০২৪ সালের তুফান চলচ্চিত্রে তার ‘লাগে উড়া ধুরা’ গানটি বিভিন্ন মহলে বেশ সমাদৃত হয়। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বার কাজ করছেন শাকিব খানের সঙ্গে। প্রীতমসহ ছবির বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বলিউডের কয়েকজন গায়ক।
অ্যাকশন দৃশ্য পরিচালনা করেছেন বলিউড ও তেলুগু ইন্ডাস্ট্রির অ্যাকশন ডিরেক্টর রবি বর্মা। নাচের কোরিওগ্রাফি করেছেন বলিউডের আদিল শেখ।
জংলি
বেশ কয়েকবার মুক্তির তারিখ পিছিয়ে অবশেষে প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র জংলি। এম রাহিম পরিচালিত রোমাঞ্চকর নাট্য চলচ্চিত্রটির প্রধান ভূমিকায় আছেন এ সময়কার দর্শকনন্দিত তারকা সিয়াম আহমেদ। তার প্রধান সহশিল্পীরা হলেন শবনম বুবলী ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘি।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমার গল্প লিখেছেন আজাদ খান। মেহেদী হাসান ও সুকৃতি সাহা যৌথভাবে গল্পটিকে চিত্রনাট্যে রূপ দিয়েছেন।
অন্যান্য অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, দিলারা জামান, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল খান, এবং এরফান মৃধা শিবলু।
প্রিন্স মাহমুদের সংগীত পরিচালনায় একটি বিশেষ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসান খান। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে এমআইবি স্টুডিও এবং টাইগার মিডিয়া।
দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ২৫ এপ্রিল চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত হবে।
দাগি
২০২৩ সালে শাকিব অভিনীত প্রিয়তমার সাথে প্রতিযোগিতা করেছিলো আফরান নিশোর সুড়ঙ্গ। এবার তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে আসন্ন ঈদে। প্রথম ছবি সুড়ঙ্গ-এর পর প্রায় দেড় বছরের বিরতিতে ছিলেন ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় অভিনেতা। তারপর ভক্তদের হতবাক করে দিয়ে দিলেন দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দাগি’র সংবাদ। তার বিপরীতে নায়িকার অবস্থানও থাকছে অপরিবর্তিত। দেড় বছর সিনেমা থেকে দূরে থাকার পর দ্বিতীয়বারের মতো নিশোর সাথে জুটি বদ্ধ হয়েছেন তমা মির্জা।
একটি বিশেষ ভূমিকায় দেখা যাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার জয়ী অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালকে। সিনেমায় আরও রয়েছেন মনোজ কুমার প্রামানিক, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, রাশেদ মামুন অপু, মনিরা আক্তার মিঠু, এবং মিলি বাশার।
পরিচালনার পাশাপাশি ছবির কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য গড়েছেন শিহাব শাহীন। এখানে বলা হয়েছে একজন সাধারণ মানুষের অপরাধজগতে জড়ানোর গল্প। এই পটভূমিকে উপজীব্য করেই কাহিনী এগিয়ে গেছে মূল চরিত্রের প্রায়শ্চিত্য ও মুক্তির দিকে।
২০১৫ সালে ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর পর ‘দাগি’ নির্মাতার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। এটি এসভিএফ আলফা-আই এবং দেশীয় ওটিটি (ওভার দ্যা টপ) চরকির একটি যৌথ প্রযোজনা।
চক্কর ৩০২
মোশাররফ করিম ভক্তদের জন্য এবারের ঈদে রয়েছে দারুণ চমক। শরাফ আহমেদ জীবনের গল্প, পরিচালনা এবং সহ-প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে ‘চক্কর ৩০২’। সহ-প্রযোজনায় আরও ছিলেন আবুল ফজল মোহাম্মদ রিতু, সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন, সরদার সানিয়াত হোসেন, এবং আদনান আল রাজীব।
সিনেমাতে মোশাররফ করিম একটি মার্ডার কেসের তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু।
সংলাপ লিখেছেন নাহিদ হাসনাত, যিনি সৈয়দ গাউসুল আলম শাওনের সাথে যৌথভাবে ভূমিকা রেখেছেন চিত্রনাট্যে।
বিভিন্ন চরিত্রের অভিনয়ে ছিলেন তারিন জাহান, ইন্তেখাব দিনার, মৌসুমী নাগ, রওনক হাসান, শাশ্বত দত্ত্ব, সুমন আনোয়ার, সারা আলম, ফারজানা বুশরা, আহমেদ গোলাম দস্তগীর শান, এবং ডিকন নূর।
সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেছেন ইমন চৌধুরী, জাহিদ নিরব, অমিত চ্যাটার্জি।
বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্রের অনুদানে নির্মিত ছবিটি মুক্তি পাবে কারখানা প্রোডাকশন এবং গামাফ্লিক্স-এর ব্যানারে।
জ্বীন ৩
জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় আরও এক কিস্তি নিয়ে হাজির হচ্ছে ভৌতিক চলচ্চিত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি জ্বীন। এর পূর্বে ২০২৩ থেকে প্রতি বছর জ্বীন-এর একটি করে সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।
দ্বিতীয় কিস্তিতে অনুপস্থিত থেকে এবার প্রধান চরিত্রে ফিরেছেন সজল নূর। তার বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে পুরো মুভি সিরিজে প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছেন নুসরাত ফারিয়া। এটি বড় পর্দায় সজলের সাথে তার প্রথম কাজ।
জাজের অধীনে প্রযোজনার পাশাপাশি ছবির গল্প, সংলাপ, ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আব্দুল আজিজ। কামরুজ্জামান রোমান পরিচালিত সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ময়মনসিংহের একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
অন্যান্য অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন তানিয়া আহমেদ এবং আহসানুল হক মিনু। এছাড়াও দেখা যাবে অভিনেতা নাদের চৌধুরীকে, যিনি জ্বীন ১-এর পরিচালক ছিলেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত ছবির কন্যা শিরোনামের গানটি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান মাহমুদুল ও দিলশাদ নাহার কনা।
পিনিক
শবনম বুবলী ও আদর আজাদ জুটির এই চলচ্চিত্রটিকে ঘিরে অনেক দিন ধরে শোরগোল চলছে দর্শকদের মাঝে। জাহিদ জুয়েল পরিচালিত থ্রিলার, অ্যাকশন, ও সাসপেন্সের সংমিশ্রণে গড়া ছবিটি অবশেষে এই ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ‘তালাশ’ (২০২২) এবং ‘লোকাল’ (২০২৩)-এর পর তৃতীয়বারের মত বড় পর্দায় আসছেন বুবলী-আদর জুটি।
সিনেমাটিতে প্রথমবারের মতো খলনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বুবলী। প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধের গল্প নির্ভর মুভির চিত্রনাট্য লিখেছেন আখিউজ্জামান মেনন।
চলচ্চিত্রে আরও অভিনয় করছেন ফজলুর রহমান বাবু, আলী রাজ, আজাদ আবুল কালাম, জয়িতা মহলানবীশ, মাসুম বাশার, মোমেনা চৌধুরী, সমু চৌধুরী, এ কে আজাদ সেতু, নাফিস আহমেদ বিন্দু, এবং শরীফ সিরাজ।
ইউরো বাংলা এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত সিনেমাটির সহ-প্রযোজনায় আছেন অভিনেতা শিমুল খান।
হাউ সুইট
বিয়ে থেকে পালানোর জন্য আঁটঘাট বেধে নেমেছে সুইটি। অপরদিকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে নাছোড়বান্দা আদনান। এমনি দুটো চরিত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে রম্য নাট্য-চলচ্চিত্র ‘হাউ সুইট’। ওয়েব ফিল্মটির গল্প, চিত্রনাট্য, ও পরিচালনায় রয়েছেন এ সময়ের দর্শকনন্দিত নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি।
আদনান চরিত্রে রয়েছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আর সুইটি চরিত্রে দেখা যাবে তাসনিয়া ফারিণকে।
তাদের সহশিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন সাইদুর রহমান পাভেল, সুষমা সরকার, আবদুল্লাহ রানা, আরফান ম্রিধা শিবলু, এবং নাইমা আলম মাহাসহ আরও অনেকে।
নাচে, গানে ভরপুর বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমাটির সুর ও সঙ্গীতে দায়িত্ব পালন করেছেন আকাশ সেন।
গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন বালাম ও ন্যান্সি।
প্রযোজক হিসেবে ছিলেন মুশফিকুর রহমান মঞ্জু। বুম ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত ছবিটি সম্প্রচারিত হবে ওটিটি বঙ্গতে।
শেষাংশ
২০২৫-এর ঈদুল ফিতরকে ঘিরে বাংলাদেশি সিনেমাপ্রেমিদের উদ্দীপনার কেন্দ্রে রয়েছে বরবাদ, দাগি, ও জংলি। ঈদের আনন্দকে নতুন মাত্রা দিতে এবার থাকছে মোশাররফ করিমের ‘চক্কর ৩০২’ আর অমি ভক্তদের জন্য ‘হাউ সুইট’। বুবলিকে খলনায়িকা রূপে দেখার আগ্রহ আলাদা ভাবে দর্শক টানবে ‘পিনিক’। জ্বীন ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে নুসরাত ফারিয়ার সম্পৃক্ততা কতটা চমকপ্রদ হবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ‘জ্বীন ৩’ মুক্তি পর্যন্ত। সব মিলিয়ে, দারুণ এক প্রতিযোগিতামুখর হতে যাচ্ছে ঢালিউডের এবারের ঈদ আয়োজন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য