দেশলাই বাক্সের ইংরেজি হয় ‘ম্যাচবক্স’, আবার শুধু ‘ম্যাচ’ শব্দের বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘জুটি’। এই সাদৃশ্যকে মাথায় রেখেই হয়তো নিজেদের বিয়ের আমন্ত্রণপত্র বানিয়েছেন বলিউড অভিনেতা আলি ফজল ও রিচা চাড্ডা।
এই তারকা জুটির বিয়ের অভিনব আমন্ত্রণপত্র এখন নেট দুনিয়াই ভাইরাল। অবিকল দেশলাই বাক্সের মতো দেখতে সেই আমন্ত্রণপত্রের একদিকে আলি ও রিচার পোস্টারসুলভ ছবি।
সেখানে দেখা যায়, লাল শাড়িতে রিচা ও ব্লেজার-টাই-প্যান্টে সেজেছেন আলি। তারা দুজনেই বসে আছেন দুই বাইসাইকেলে, সঙ্গে লেখা ‘কাপল ম্যাচেস’৷ অভিনব এই দেশলাই বাক্সসুলভ বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র নজর কেড়েছে নেটিজেনদের৷
এদিকে বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগামী ৪ অক্টোবর বিয়ে করছেন আলি ও রিচা৷
তারকাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, ৪ অক্টোবর মুম্বাইতে বিয়ে করবেন তারা। পরদিন তাদের পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও ইন্ড্রাস্টির সহকর্মীদের জন্য বিবাহোত্তর সংবর্ধনা আয়োজন করবেন। তাদের বিয়ের উত্সব শুরু হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা মুম্বাইয়ে হলেও সেই সূত্র আরও জানিয়েছে, বিয়ের আগে ককটেল, সংগীত এবং মেহেদী মিলে তিনটি অনুষ্ঠান হতে পারে নয়াদিল্লিতে।
এক দশক ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন আলি-রিচা। ২০১২ সালে ফুকরে সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে তাদের বন্ধুত্ব ও প্রেম। এরপর ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ফুকরে রিটার্নস-এও একসঙ্গে কাজ করেছেন তারা।
আরও পড়ুন:ঈদে মুক্তি পায় বাঁধন অভিনীত ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ ছবিটি। মুক্তির ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও ছবিটি নিয়ে আলোচনা থেমে নেই। যতই দিন যাচ্ছে ছবিটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহও বাড়ছে। এদিকে ঈদের আলোচিত আরেক ছবি তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’। নিজের অভিনীত ছবির প্রচারের ফাঁকে দেখলেন ‘উৎসব’ ছবিটি। পরে ছবিটি নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা জানালেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
গত সোমবার ‘উৎসব’ ছবিটি দেখেছেন বলে নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান বাঁধন। দেখার পর নিজের মুগ্ধতার কথা জানালেন এভাবে, ‘উৎসব’ ছবিটি দেখার পর আমার মধ্যে অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করেছে। আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত। ছবি দেখার পর আমি এতটাই উচ্ছ্বসিত ছিলাম যে ছবির পরিচালক তানিমকে ঠিকমতো কৃতজ্ঞতা জানাতে পারিনি।’
‘উৎসব’ আলাদা ধরনের একটা ছবি, যা সাধারণত বাংলাদেশে দেখা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন বাঁধন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে এমন চলচ্চিত্র খুব কমই দেখা যায়, যা সুনির্মিত এবং একই সঙ্গে চিত্রনাট্য নিখুঁত—রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও লিঙ্গ-সংবেদনশীলও। ছবিটি দেখার পর সত্যিই আমি একেবারে বাক্রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করে এসেছি, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আরও প্রগতিশীল নির্মাতা দরকার, তার থেকেও বেশি দরকার এমন প্রযোজক, যাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি ও সাহস থাকবে, যারা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান।’
তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ বাঁধনের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে বলেও জানালেন। বাঁধন লিখেছেন, ‘উৎসব’ আমাকে আশার আলো দেখিয়েছে। গর্বিত করেছে। আর আমাকে যেটা সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে, তা হলো দর্শকের প্রতিক্রিয়া। মনে হয়েছে, দর্শকেরা পুরোপুরি তৈরি। তারা এই ধরনের সিনেমা দেখতে চায়।’
সবশেষে বাঁধন লিখেছেন, ‘এখনই সবচেয়ে সুন্দর সময়, ভাবার সময়, আমাদের প্রতিভাবানদের নিয়ে আসলে কী করছি। আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যে সমাজ আমাদের তৈরি করেছে, সেই সমাজকে আমরা কী দিচ্ছি।’
‘উৎসব’ ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, আফসানা মিমি, জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, তারিক আনাম খান, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান প্রমুখ।
শ্রীলঙ্কার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে হারিয়ে গিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। লাক্স তারকা। সেখানকার প্রতিটি মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে ভক্ত-অনুসারীদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন এই লাক্স তারকা।
শ্রীলঙ্কার কন্দালামা হ্রদের পাশে সবুজেঘেরা এক রিসোর্টে স্বামী সনি পোদ্দারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন মিম। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রিসোর্টের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটছেন তিনি, আর একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে হ্রদ । প্রকৃতির মাঝেই যেন নিজেকে বিলীন করে দিয়েছেন এই জনপ্রিয় নায়িকা।
প্রকাশিত ছবির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে মিম লিখেছেন, ‘যখন প্রকৃতি তোমার হাতের তালুতে পুরোপুরি এসে যায়। যা ছবির সঙ্গে যেন অদ্ভুতভাবে মিলে গেছে।’ ভ্রমণের প্রতি মিমের দুর্বলতা নতুন কিছু নয়। আগের ঈদেও থাইল্যান্ড ভ্রমণের ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এবার তার গন্তব্য শ্রীলঙ্কা, আর সঙ্গী স্বামী, যার ফলে ভক্তদের আগ্রহ যেন দ্বিগুণ।
অভিনেত্রী হিসেবে মিমকে সবশেষ বড় পর্দায় দেখা গেছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া রায়হান রাফী পরিচালিত ‘দামাল’ ছবিতে। তার আগে একই বছর ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরাণ’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। ‘পরাণ’-এর সফলতার পর নতুন নতুন প্রস্তাব পেলেও স্ক্রিপ্ট এবং চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় আপাতত নতুন প্রজেক্টে যুক্ত হননি মিম।
তবে ভ্রমণপ্রেমী এই তারকার ছুটি কাটানোর ছবি দেখে নেটিজেনদের দাবি, পর্দায় যতই অনুপস্থিত থাকুন না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিম যেন পুরোপুরি অনস্ক্রিনেই রয়েছেন।
দীর্ঘ সময় পর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে জয়া আহসান অভিনীত দুটি সিনেমা। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব’। সেই আমেজ না কাটতেই কলকাতার নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া। গত শনিবার মহরতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিং। প্রথম পর্ব ‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো এবারও জয়ার সঙ্গে থাকছেন কৌশিক সেন ও চূর্ণী গাঙ্গুলী। এই তিনজনের সঙ্গে নতুন পর্বে যুক্ত হচ্ছেন ইন্দ্রাশিস রায়।
গল্পের পটভূমি সম্পর্কে জানা যায়, সুমনের (কৌশিক) অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে তার সাবেক স্ত্রী শুভ্রা (চূর্ণী) ও বর্তমান স্ত্রী মেঘনার (জয়া) দেখা হওয়া এবং টানাপড়েনকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল অর্ধাঙ্গিনীর পটভূমি। আগের ঘটনার বছর দুয়েক পর একটা বিয়েকে কেন্দ্র করে আবার মুখোমুখি হয় সুমন, শুভ্রা ও মেঘনা।
‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো এবারের সিনেমাটি নিয়েও আশাবাদী জয়া আহসান। তাঁর ভাষ্য, ‘কৌশিকদার সঙ্গে আমরা খুব এনজয় করে কাজ করি। এবারও তেমনটি হবে। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিদিন আলাদা অভিজ্ঞতা হয়। নিজেকে আরও উন্নত করি অভিনেত্রী হিসেবে। এতে আবারও আমার সহশিল্পী হিসেবে চূর্ণী গাঙ্গুলীকে পাচ্ছি। তার মতো অভিনেত্রী পাওয়া মানে নিজের চরিত্রের আরও উত্তরণ ঘটা।’
‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত জয়া ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন ঈদের দুই সিনেমার প্রচারে। ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহে দারুণ খুশি অভিনেত্রী। এদিকে কলকাতায় ছবির শুটিং শুরুর আগে দুই বাংলার শিল্পীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন। কোনো রকম বিচ্ছিন্নতা দুই বাংলার শিল্পীদের কাম্য নয় বলেও জানান জয়া।
কলকাতার টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়া আহসান বলেন, ‘কোনোভাবেই শিল্পীদের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিল্পীদের কাজ হচ্ছে সবকিছু একসঙ্গে করা। আমরা যে রকম বলি গ্লোবাল, গ্লোবালি আমরা যে বেঁচে আছি—সে অর্থে শিল্পীদের তো কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা থাকা উচিত নয়। তার ভেতর আমাদের সংস্কৃতি এক, মূল্যবোধ এক, আবেগ-অনুভূতি এক, সেখানে আমরা কেন বিচ্ছিন্ন থাকব! সবচেয়ে বড় কথা—আমাদের ভাষা এক। আমরা বাংলায় কথা বলি। আমাদের চেষ্টাটা সব সময় থাকবে, পৃথিবীর যে কোণে যে বাঙালিই থাকুক, যে বাংলাভাষী মানুষই থাকুক, তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা—তা আমাদের শিল্পকর্ম দিয়ে। এটার জন্য আমাদের দুই বাংলাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে’ কথা প্রসঙ্গে জয়া আহসান তার কথায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ব্যাপারও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পটভূমির যে ব্যাপারগুলো, তা যারা দেশের নীতিনির্ধারক আছেন, এসব তাদের সমস্যা। এসব সমস্যা তারাই আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবেন। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে কোনো বিদ্বেষ, কোনো রকম অসহিষ্ণুতা কখনোই কাম্য নয়, সেটা আমরা হতে দিতে চাই না।’
বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম শাবানা। ১৯৫২ সালের ১৫ জুন তিনি পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। সে হিসেবে ৭৩ বছর পূর্ণ করে ৭৪–এ পদার্পণ করলেন শাবানা। শাবানা বাংলার ঘরে ঘরে ছিলেন দেবীতুল্য অভিনেত্রী।
সব শ্রেণির দর্শকদের কাছে এই অভিনেত্রী ছিলেন শ্রদ্ধার পাত্র। জীবন্ত অভিনয় দিয়ে খুব সহজেই দর্শক হৃদয়ে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন বলেই অভিনয় থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও তার কথা ভুলতে পারে না এদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
শাবানা সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য তুলে ধারা হলো পাঠকদের জন্য-
১. শাবানার আসল নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। চলচ্চিত্রে নাম পরিবর্তন করে হন শাবানা।
২. ১৯৬৭ সালে পরিচালক এহতেশামের উর্দু ছবি ‘চকোরি’ দিয়ে পর্দায় আগমন।
৩. শাবানা অভিনীত ছবির সংখ্যা প্রায় ৫০০ এর মতো।
৪. বাংলা ছবিতে দর্শকদের সবচেয়ে বেশি চোখে জল আনা অভিনেত্রীর নাম শাবানা।
৫. নায়ক-নায়িকার বাইরেও ভাবী-মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে সিনেমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারতেন শাবানা।
৬. শাবানার স্বামীর নাম ওয়াহিদ সাদিক। যিনি একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক।
৭. শাবানার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘এস এস প্রোডাকশনস’।
৮. অভিনয়ের জন্য ১১ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শাবানা। যা বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ইতিহাস।
৯. শাবানার বাবার নাম ফয়েজ চৌধুরী যিনি একজন টাইপিস্ট ছিলেন এবং মা ফজিলাতুন্নেসা ছিলেন গৃহিনী।
১০. শাবানা অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ।
১১. শাবানার জন্ম ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে।
১২. শাবানার বিপরীতে প্রথম নায়ক ছিলেন নাদিম।
১৩ . শাবানা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার তাই ইতি ঘটে মাত্র ৯ বছর বয়সে।
১৪.শাবানা এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থাকেন
১৫. শাবানার ঢাকার বাসা বারিধারায়। দেশে এলে, এখানেই থাকেন পরিবারসহ।
মাত্র আট বছর বয়সে সিনেমায় অভিনয়ে নাম লেখান শাবানা। এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ নামের ছবিতে তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ‘চকোরী’ ছবিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় শুরু। ২৫ বছর ধরে অভিনয় থেকে দূরে সরে আছেন চলচ্চিত্রের গুণী এই অভিনয়শিল্পী।
অভিনয়জীবনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হুট করেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। শুরুর দিকে নিউইয়র্কে থাকলেও এখন স্বামী, সন্তান, নাতি-নাতনি নিয়ে নিউ জার্সিতে থাকছেন।
বয়স নিয়ে সর্বদাই অকপট থাকেন রুনা খান। বয়স চল্লিশের কোটায় থাকলেও তা যেন কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তার কাছে। প্রতিনিয়তই নিজেকে নতুনভাবে মেলে ধরছেন অভিনেত্রী ও মডেল রুনা খান। শুধু অভিনয় শৈলীতেই নয়, সময়ের সঙ্গে নিজের রূপ-লাবণ্যও ধরে রেখেছেন রুনা খান।
অভিনেত্রী মনে করেন, বয়স লুকানো যায় না, লুকানোর বিষয়ও না। বয়স উদযাপন করার বিষয়। তবে বাড়তি বয়স নিয়ে অন্যান্য তারকাদের সঙ্গেও তুলনা করা হয় রুনাকে। বিশেষ করে, পঞ্চাশের অভিনেত্রী জয়া আহসানের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাকে।
আর এ বিষয়টিকে ‘বোকা চর্চা’ বলে মনে করেন রুনা খান।
নিজেকে নানা ভাবে নীরিক্ষণ করছেনে এই অভিনেত্রী। ওজন কমিয়েছেন। নিজের ফ্যাশন ধরনে এনেছেন পরিবর্তন।
এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসছেন বারবার। রুনা খান এখন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গতকাল শুক্রবার তিনি হাডসন নদীর তীরে বেশকিছু ছবি তুলে পোস্ট করেছেন। ছবিগুলো নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
রুনা খানের মন্তব্যবাক্সে সাধারণের মন্তব্য করতে পারছেন না, তা ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে সেভ করে পোস্ট করে অনেকেই মন্তব্য করছেন।
এসব মন্তব্যে ইতিবাচক নেতিবাচক অভিমত রয়েছে।
তবে নির্মাতা নোমান রবিন নিজের অভিমত জুড়ে দিয়েছেন। তিনি নিজের ভাষায় বলছেন, আমার বউডারে এমন বেহেস্তি পোষাকে মুক্ত আকাশের নিচে উড়তে দেখতাম চাই। কোনো টেনশন ছাড়া, জড়তা ছাড়া বউ বাচ্চাগুলারে চলাফেরা করতে দেখতে চাই। আম্রিকা এমন এক দেশ যেখানে চোখের ইবাদত, মুখের ইবাদত, সর্বোপরি চিন্তার ইবাদতকে প্রধান্য দেয়া হয়। খুব শিগ্রই নিউইয়র্কে আসমু। ভালো থাকো।
ঈদুল আজহায় চলচ্চিত্র-সিরিজ—সব মাধ্যমেই রয়েছেন অভিনেত্রী রুনা খান। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ এসেছে তাঁর ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। অন্যদিকে, আইস্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘পাপ কাহিনী’ এবং ওয়েব ফিল্ম ‘নীলপদ্ম’।
এই ঈদে রূপালি পর্দা যেন একটু বেশিই আলোকিত। কারণ, একসঙ্গে দুটি সিনেমা নিয়ে হাজির হয়েছেন গুণী অভিনেত্রী জয়া আহসান। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব’। ঈদের সকাল থেকে শুরু করে আজও, দর্শকের হাত ধরে সিনেমা হলে ছুটে চলেছেন জয়া। ছবির সঙ্গে দর্শকের হৃদয়ের সংযোগটা যেন নিজ চোখেই প্রত্যক্ষ করতে চান তিনি।
‘তাণ্ডব’-এর প্রচারে গিয়ে জয়া বললেন, ‘ঈদে যখন কোনো সিনেমা মুক্তি পায়, তখন ঈদের আবহটাই যেন সেই সিনেমাকে ঘিরে তৈরি হয়। ঈদের সকাল থেকেই সবাই খবর নেয়, সিনেমাটি কেমন চলছে। জানলাম, ‘তাণ্ডব’ দেখতে সকাল থেকেই হলে দর্শকের ভিড় লেগে আছে। সিনেমাটি নিয়ে মানুষ রীতিমতো উন্মাদ হয়ে উঠেছে। এটাই তো আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’
শাকিব খানের সঙ্গে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর স্ক্রিন শেয়ার করেছেন জয়া। অ্যাকশন ঘরানার ‘তাণ্ডব’-এ তিনি অভিনয় করেছেন এক সাংবাদিকের চরিত্রে। ছবিতে আরও রয়েছেন আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, এজাজুল ইসলাম, সুমন আনোয়ার ও মুকিত জাকারিয়ার মতো দক্ষ অভিনয়শিল্পীরা।
দর্শকের সঙ্গে একত্রে বসে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে জয়া বলেন, ‘আমি নিজেই দর্শকের সঙ্গে সিনেমাটি উপভোগ করেছি। একজন দর্শক হিসেবে বলতে পারি, পুরো টাকাটা উসুল! সিনেমা হলে যখন চারদিক থেকে শিস ও হাততালির শব্দ উঠছিল, তখনই বুঝে গেছি, ‘তাণ্ডব’ মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তাণ্ডব’-এর মূল শক্তি তার গল্প। আমাদের টিম ছিল অসাধারণ। পর্দার সামনেও যেমন, তেমনি পেছনেও সবাই একদম হৃদয় দিয়ে কাজ করেছে। আমরা নিজেরাও ভীষণ আনন্দ নিয়ে ছবিটি করেছি। এরইমধ্যে দর্শকদের যে সাড়া পাচ্ছি, তাতে মন ভরে গেছে।”
অন্যদিকে, ‘উৎসব’ সিনেমার প্রচারেও পিছিয়ে নেই জয়া আহসান। গতকাল তিনি নিজে গিয়েছিলেন একটি প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের সঙ্গে সিনেমা দেখতে। বিনিময় করেছেন কুশল, শুনেছেন মতামত।
জয়া বলেন, ‘উৎসব’ দেখার পর দর্শকরা নিজেরাই বলছেন-এই সিনেমাটি অনেক দিন মানুষের মনে থাকবে। ছবিটিতে যে শিল্পীরা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। আমি নিজে দেশের বাইরে ও দেশের ভেতরে ছুটে চলা একজন শিল্পী; চঞ্চল ব্যস্ত একজন মানুষ, আর অপি তো যেকোনো কাজ করেন না-যতক্ষণ না সেটা তার পছন্দ হয়। এতগুলো ভিন্নধর্মী শিল্পীকে এক ফ্রেমে আনা গেছে কেবল পরিচালকের মুন্সিয়ানায়। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটির যাত্রা হবে দীর্ঘ।’
একটু হেসে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই সিনেমা দেখতে গিয়ে টিকিট পাইনি। সেটা মনে হলে লজ্জাও লাগে। আশা করি, নির্মাতারা দর্শকদের জন্য টিকিট পাওয়ার সুযোগ আরও সহজ করে তুলবেন।’
ঈদের দুই ভিন্নস্বাদের ছবি ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ দুটোতেই জয়াকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে, ভিন্ন ভিন্ন আবহে। অথচ, প্রতিটি চরিত্রেই যেন তার এক নিজস্ব ছাপ, এক অনবদ্য সত্তা।
এ ঈদে, সিনেমা হলে ঢুকলেই দেখা যাচ্ছে-‘তাণ্ডব’ চলছে, ‘উৎসব’ জমছে। আর তার কেন্দ্রে আছেন জয়া আহসান। অভিনয়ের তাণ্ডব আর শিল্পের উৎসবে যিনি একসঙ্গে মাতাচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে সবুজ ছায়া, অচেনা পাখির কলতান আর পাহাড়ি ঝরনার স্রোতধারায় মিলেছে মানুষের প্রাণের উচ্ছ্বাস। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশকেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই ভিড় করছেন এই পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্রে। ভ্যাপসা গরম কিংবা তপ্ত রোদও যেন থামাতে পারেনি এই আনন্দযাত্রা।
ঈদের তৃতীয় দিন, সোমবার, গজনী অবকাশকেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা যায় ভ্রমণপিপাসুদের মিলনমেলা। দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। অনেকেই এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে। বিশেষ করে তরুণদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে গজনী অবকাশকেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। শেরপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে কাংশা ইউনিয়নের প্রায় ৯০ একর পাহাড়ি এলাকায় বিস্তৃত এই পর্যটনকেন্দ্র। এখানে রয়েছে লাল মাটির উঁচু-নিচু পাহাড়, ঝরনা, গহিন বন, লেক, রংধনু ব্রিজ, পদ্ম সিঁড়ি, স্মৃতিসৌধ, গারো মা ভিলেজ, জলপরি, ডাইনোসর ও ড্রাগন টানেলের মতো কৃত্রিম ভাস্কর্য। শিশুদের জন্য রয়েছে চুকুলুপি পার্ক, নাগরদোলা, এক্সপ্রেস ট্রেন, সুপার চেয়ারসহ নানা রাইড। আধুনিক বিনোদনের অংশ হিসেবে রয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ, কেবল কার, ওয়াকওয়ে, জিপ লাইনিংয়ের মতো ব্যবস্থাও।
দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে অবকাশকেন্দ্রের ঝুলন্ত ব্রিজ। ২০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে পাহাড়ি লেকের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দর্শনার্থীরা পান ভিন্নধর্মী অনুভূতি, এক ধরণের রোমাঞ্চ।
দায়িত্বে থাকা লুৎফর রহমান লাজু জানান, "ঈদের ছুটিতে গজনীতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। অনেকেই ঝুলন্ত ব্রিজে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন, প্রকৃতি উপভোগ করেন। তাই আমরা প্রতিদিনই ব্রিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করি। কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে দ্রুত মেরামত করি। দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে এই অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য আমি ও আমার সহকর্মীরা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দর্শনার্থীদেরও নিয়ম মেনে চলার জন্য অনুরোধ করি।”
কেন্দ্রটির অন্যতম আকর্ষণ, ৮০ বর্গফুট উচ্চ ওয়াচ ভিউ টাওয়ার। যেখান থেকে পুরো গজনী অবকাশ এলাকা এক নজরে দেখা যায়।
আরও রয়েছে পাতালপুরী। সিমেন্টের তৈরী একটি বিশাল বাঘের মুখ দিয়ে প্রবেশ করে পাহাড়ের ভেতর মাটির নিচ দিয়ে অন্য আরেক প্রান্ত দিয়ে বের হতে হয়। ভেতরে অন্ধকার এবং অন্য রকম এক অনুভূতি পাওয়া যায়।
এছাড়াও শেরপুর জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নারে তুলে ধরা হয়েছে জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য ও ইতিহাস, বিশেষ করে বিখ্যাত তুলসীমালা চাল।
গজনী অবকাশকেন্দ্রে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা, ওয়াচ টাওয়ারে উঠতে ১০ টাকা ও ঝুলন্ত ব্রীজের প্রবেশ ফি ২০ টাকা। যানবাহনের পার্কিংয়ের জন্যও নির্ধারিত হারে ফি নেওয়া হয়।
শেরপুরের শ্রীবরদি উপজেলার গৃহিণী সানজিদা জেরিন বলেন, ‘আমরা মা-ছেলে ঘুরতে এসেছি। তবে রোদ ও গরম থাকলেও আমার ছেলে ইব্রাহীমের আনন্দের কোনো কমতি নেই।’
পাশের জামালপুর জেলা থেকে সন্তানদের নিয়ে গজনীতে ঘুরতে এসেছেন ওমর ফারুক নামের এক চাকুরীজীবি। তিনি জানান, প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে ছুটি পেলেই সেখানে সপরিবার ঘুরতে যান।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমীন জানান, ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় হওয়ায় সাদাপোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
গজনী অবকাশকেন্দ্র পরিদর্শনকালে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, "গজনী অবকাশকেন্দ্র ঝিনাইগাতীর গর্ব। ঈদের ছুটিতে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিনোদনের নানা উপকরণ উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের স্বাগত জানাই। পর্যটকদের নিরাপত্তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট। ভবিষ্যতে কেন্দ্রটির আরও উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।"
মন্তব্য