ঈদে মুক্তি পাওয়া পরাণ সিনেমা এখনও চলছে মহাসমারোহে। একই সময়ের অন্য সব দেশি-বিদেশি সিনেমাকে টেক্কা দিয়ে দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে টানছে পরাণ সিনেমা।
সিনেমার সাফল্যে খুশি পরাণ সিনেমার প্রযোজক তামজিদ অতুল। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরাণ সিনেমা চলছে, আশা করি আরও চার সপ্তাহ খুব ভালোভাবে চলবে।’
প্রযোজক আশা করছেন সিনেমার ব্যবসা পাঁচ গুণ হবে। প্রত্যাশিত সব সেল হয়ে গেলে পরাণ সিনেমার লাভের টাকা দিয়েই পাঁচটি সিনেমা নির্মাণ করা যাবে।
তিনি বলেন, ‘সিনেমার এখন যে মুনাফা সেটা দিয়েই যে পাঁচটি সিনেমা নির্মাণ করা যাবে এমন না। তবে আমাদের প্রত্যাশিত সেল হয়ে গেলে এটা সম্ভব।’
প্রত্যাশিত সেলের মধ্যে কী কী আছে জানতে চাইলে অতুল জানান, সিনেমাটির প্রেক্ষাগৃহের সেল, বিদেশে সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে, সেখান থেকে সেল পাওয়া যাবে। সিনেমাটি একসময় টিভিতে বিক্রি করা যাবে এবং যখন সিনেমাটি ওটিটিতে যাবে, সেখানেও একটা সেল পাওয়া যাবে।
এই সবকিছু হয়ে গেলে তারপর পাঁচটি সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব বলে জানান অতুল। এগুলো হতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন। তবে সিনেমার এ ব্যবসায় প্রযোজকরা অনেক খুশি।
তামজিদ অতুল বলেন, ‘আশা করছি আগামী সপ্তাহেই আমরা আয়ের হিসাবটি সবাইকে জানাতে পারব।’
পরাণ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রায়হান রাফি। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, বিদ্যা সিনহা মিম ও ইয়াশ রোহান। সিনেমাটি মুক্তির ২০ দিন পরেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না অনেক প্রেক্ষাগৃহে। অনেক শো এখনও হাউসফুল যাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী, প্রযোজক জয়া আহসান এবার তার মতামত জানালেন সিনেমার সেন্সর নিয়ে। তার মতে সেন্সর যেন চলচ্চিত্রের গলায় ফাঁসির মতো।
সম্প্রতি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত সিনেমা শনিবার বিকেল এর মুক্তি নিয়ে সরব ফেসবুক। সেন্সর বোর্ডের আপিল বিভাগে সিনেমাটি আটকে আছে সাড়ে তিন বছর ধরে। কেন সিনেমাটিকে সেন্সর দেয়া হচ্ছে না, তাও জানানো হয়নি আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে।
বিষয়টি নিয়ে বিগত কয়েক দিন দেশের চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা আওয়াজ তুলেছেন ফেসবুকে। শনিবার বিকেল সিনেমার পোস্টার শেয়ার করে সবাই লিখছেন ‘শনিবার বিকেল মুক্তি পাক’।
সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যায় শনিবার বিকেল সিনেমা নিয়ে লিখলেন জয়া আহসান। অভিনেত্রী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ লেখা পোস্ট করেন।
যেখানে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর নানা দেশে যখন সেন্সর বোর্ড নামের বালাইটা উঠে যাচ্ছে, আমাদের দেশে সেটা তখন ফাঁসির রজ্জুর মতো চলচ্চিত্রের গলায় চেপে বসছে। এর সর্বশেষ শিকার এখন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর শনিবার বিকেল।
সিনেমার কাহিনিরও কি প্রেসক্রিপশন লাগবে? এমন প্রশ্ন রেখে জয়া বলেন, ‘কোনো চলচ্চিত্রের কাহিনি কী হবে, তারও কি এখন প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসতে হবে? চলচ্চিত্রের বিষয় আকাশের তলায় মাটির পৃথিবীর যেকোনো কিছু। চূড়ান্ত কল্পনা, নিরেট বাস্তব, বাস্তব থেকে অনুপ্রাণিত কল্পনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শনিবারের বিকেল সিনেমায় হোলি আর্টিজানের শোচনীয় ঘটনাটির ছায়া আছে বলে? আসলেই আছে কি না আমার জানা নেই। যদি থাকেও, তাহলেইবা ছবিটা আটকে দেয়ার যুক্তি কী?’
আরও প্রশ্ন তুলে জয় লেখেন, ‘হোলি আর্টিজান ঘটেনি? আমাদের মন থেকে ধুয়েমুছে গেছে? সত্যি বলতে কি, এই ঘটনা কখনই আমাদের মন থেকে মুছে যেতে পারে না। মুছে যেতে দেয়া যায়ও না।
চলচ্চিত্রের মুক্তি দাবি করে জয়া বলেন, ‘যে ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা মোটেও চাই না, আমাদের ছেলেমেয়েদের সামনে থেকে যে পথ চিরকালের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখতে চাই, হোলি আর্টিজানের ঘটনা তার জোরালো সতর্কঘণ্টা হিসেবে মন থেকে মনে বাজিয়ে যেতে হবে। ঘণ্টা বাজিয়ে ঘুম থেকে আমাদের মনটাকে জাগিয়ে তোলা তো চলচ্চিত্রেরই একটা কাজ। আমরা চলচ্চিত্রের মুক্তি চাই, সব শিল্পের মুক্তি চাই। কারণ আমরা মানুষের মুক্তি চাই।’
জানা যায়, গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটা ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। দেশে সিনেমাটি এখনও প্রদর্শিত না হলেও মিউনিখ, মস্কো, সিডনি, বুসান, প্যারিসের ভেসুল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শনিবার বিকেল প্রদর্শিত হয়েছে এবং পুরস্কৃতও হয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারত ও জার্মানির যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত শনিবার বিকেল। প্রযোজনায় আরও আছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ছবিয়াল এবং ভারতের শ্যাম সুন্দর দে।
এতে অভিনয় করেছেন অস্কার মনোনীত ওমর সিনেমার অভিনেতা ইয়াদ হুরানি, নুসরাত ইমরোজ তিশা, জাহিদ হাসান, ইরেশ জাকের, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
আরও পড়ুন:১ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে ভিউয়ের হিসাবে সেরা ৫ ইংরেজি সিরিজে প্রথমে উঠে এসেছে দ্য স্যান্ডম্যান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনোদন সাইট ভ্যারাইটি জানিয়েছে, সিরিজটি প্রথম তিন দিনেই দেখা হয়েছে ৬৯.৫ মিলিয়ন ঘণ্টা।
দ্বিতীয় অবস্থানে আছে কিপ ব্রিথিং; এটি দেখা হয়েছে ৫৪.৭ মিলিয়ন ঘণ্টা। পরের অবস্থানগুলোতে আছে ভার্জিন রিভার (৩য়), স্ট্রেঞ্জার থিংস ৪ (চতুর্থ) এবং মেনিভেস্ট সিজন ১।
ইংরেজি ভাষার সিরিজ নয়, এমন সিরিজগুলোর মধ্যে প্রথমে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ান সিরিজ এক্সট্রাঅর্ডিনারি অ্যাটোর্নি উ। ৫ সপ্তাহ ধরে নেটফ্লিক্সে থাকা সিরিজটি দেখা হয়েছে ৬৭ মিলিয়ন ঘণ্টা।
দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম অবস্থানে আছে তুর্কির অ্যানাদার সেলফ: সিজন ১, কলাম্বিয়ান হিডেন প্যাশন: সিজন টু, দক্ষিণ কোরিয়ান অ্যালকেমি অফ সউলস: সিজন ১ এবং স্প্যানিশ সিরিজ অ্যালবা।
ইংরেজি সিনেমাগুলোর মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে নেটফ্লিক্সে থাকা পার্পেল হার্টস রয়েছে ভিউয়ের দিক থেকে শীর্ষে। সিনেমাটি দেখা হয়েছে ১০২.৫৯ মিলিয়ন ঘণ্টা। ৩ সপ্তাহ ধরে নেটফ্লিক্সে থাকা দ্য গ্রে ম্যান রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। প্রথম স্থানের চেয়ে সিনেমাটির ভিউ টাইম অনেক কম। এটি দেখা হয়েছে ৩৮.৯ মিলিয়ন ঘণ্টা।
তৃতীয় থেকে পঞ্চম অবস্থানে আছে আনচার্টেড, উইডিং সিজন এবং দ্য সি বিস্ট।
ইংরেজি নয় এমন সিনেমার মধ্যে প্রথম স্থানে আছে দক্ষিণ কোরিয়ান সিনেমা কার্টার। এট দেখা হয়েছে ২৭.৩ মিলিয়ন ঘণ্টা। ডোন্ট ব্লেম কার্মা!, রিকারেন্স, ডার্লিং এবং দ্য এনটাইটেল্ড আছে দ্বিতীয় থেকে পঞ্চমে।
আরও পড়ুন:একই ইউনিভার্সিটি থেকে পরপর তিনজন মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। কেউ একজন টার্গেট করছে তরুণীদের। মঞ্জুর ধারণা, তার পছন্দের মানুষ লাবণীও হতে পারে অপহরণের শিকার। কিন্তু শুধু ধারণার ওপর ভর করে মঞ্জু কি বাঁচাতে পারবে লাবণীকে?
এমন এক ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিনেমা শুক্লপক্ষ। ১১ আগস্ট রাত ৮টায় চরকিতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ভিকি জাহেদ পরিচলিত কনটেন্টটি। বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শুক্লপক্ষর মূল চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম খাইরুল বাসার। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও শুক্লপক্ষ দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। হিংসা, প্রেম, অসহায়ত্ব, ক্ষমতা বা বর্বরতার এক দারুণ দ্বান্দ্বিক উপস্থাপন আছে এই গল্পে। আমার ধারণা, দর্শকরা গল্পের প্রতি পৃষ্ঠায় বিস্মিত হবেন। দর্শক টুইস্টের ঘোরপ্যাঁচে জড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষা করুক। আমি আন্তরিকভাবে আশা করছি, তারা হতাশ হবেন না।’
শুক্লপক্ষ সুনেরাহ বিনতে কামালের প্রথম ওয়েবফিল্ম। কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুক্লপক্ষর স্ক্রিপ্ট পড়েই কাজ করার আগ্রহ জন্মেছিল। ভিকি জাহেদের থ্রিলার মানেই তো অন্যরকম কিছু। ওনার কাজ আমার বরাবরই ভালো লাগে। সেই সঙ্গে আমার কো-আর্টিস্ট যারা ছিলেন তারা সবাই তাদের চরিত্রগুলোর সঙ্গে জাস্টিস করেছেন।’
সিনেমাতে সুনেরাহকে অনেকগুলো লুকে দেখা যাবে। যেটা তার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে জানান সুনেরাহ। জঙ্গলেও সিনেমাটির শুটিং হয়েছে।
সুনেরাহ বলেন, ‘পোকার আক্রমণে পুরো নাজেহাল অবস্থা ছিল আমার। সবকিছু অনেক কষ্টে সামলে নিয়ে কাজটি করেছি। শুধু এটুক বলতে পারি, দর্শকরা ট্রেইলার দেখে যা ধারণা করছেন তা মুহূর্তেই পাল্টে যাবে, এক কথায় কাজটি সবার কাছে ভালো লাগবে।’
চরকিতে এটি জিয়াউল রোশানেরও প্রথম ওয়েবফিল্ম। তিনি বলেন, ‘ভিকির সঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় কাজ। দর্শকরা ভিকির কাজ দেখার জন্য অপেক্ষা করে আছে। আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দুর্দান্ত কাজ করেছি। এখন শুধু মুক্তির অপেক্ষা।’
ভিকি জাহেদ বলেন, 'আমার অন্য কাজগুলা থেকে শুক্লপক্ষ বেশ ভিন্ন। জনরাটা থ্রিলার। শুক্লপক্ষর শেষটা দর্শককে খুব ভালোভাবে চমকে দেবে এই বিশ্বাস আমার আছে। অডিয়েন্সের সাথে আমি সব সময় ক্যাট অ্যান্ড মাউস গেম খেলতে পছন্দ করি। কারণ এই গল্পের শেষটা আগে থেকে ধারণা করা খুব কঠিন।’
ওয়েবফিল্মের অন্যান্য চরিত্রে দেখা যাবে ফারুক আহমেদ, শরীফ সিরাজ, আব্দুল্লাহ সেন্টুসহ অনেককে।
আরও পড়ুন:সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া হাওয়া সিনেমায় একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শন ও হত্যা করে খাওয়ার চিত্র দেখানো হয়েছে। ইউটিউব, ফেসবুকে প্রকাশ পাওয়া একই সিনেমার বিহাইন্ড দ্য সিনে দেখানো হয়েছে সামুদ্রিক প্রাণী শাপলা পাতা মাছ তুলে আনার দৃশ্যও। এ ছাড়া কাছাকাছি সময়ে আরও কয়েকটি নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে দাবি করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশবাদী ৩৩টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট’ (বিএনসিএ)। তাদের মতে, এর ফলে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ বাড়ার পাশাপাশি বন্যপ্রাণীরা হুমকির মুখে পড়ছে।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জোটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'গত ২৯ জুলাই মুক্তি পাওয়া ব্যতিক্রমী চলচ্চিত্র হাওয়া বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা বাংলা চলচ্চিত্রের এই সুদিনকে স্বাগত জানাই। কেননা আমরা বিশ্বাস করি, দায়িত্বশীল সংস্কৃতি বা চলচ্চিত্র মানুষকে সুপথ দেখাতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউ ও হলফেরত দর্শকের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি চলচ্চিত্রটিতে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শন ও একপর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। যার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। একই সঙ্গে সেই চলচ্চিত্রের প্রকাশিত বিহাইন্ড দ্য সিনে সামুদ্রিক প্রাণী শাপলা পাতা মাছও তুলে আনতে দেখা গেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিদিন চলচ্চিত্রটি হাজার হাজার মানুষ দেখছে। আমরা মনে করছি, সমাজের আইডলদের মাধ্যমে এই ধরনের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ চিত্রায়ণের কারণে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে। জেলেরা শাপলা পাতা মাছ শিকারেও উৎসাহিত হবে, যা প্রকৃতি থেকে এই প্রাণীদের বিলুপ্ত করে দিতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে পুরো প্রতিবেশ ব্যবস্থায়। তাই দ্রুত এই চিত্র দেখানো বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।'
বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের নীরব ভূমিকা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনসিএ আহ্বায়ক।
তিনি বলেন, 'দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হলো চলচ্চিত্রটি প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের কাছে পৌঁছালেও এই চলচ্চিত্রে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত সুস্পষ্ট অপরাধের দৃশ্য প্রদর্শন নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে। এর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও আইন বাস্তবায়নে সংস্থাটির আন্তরিকতার ঘাটতি সুস্পষ্ট হচ্ছে, যা দেশের সচেতন নাগরিকদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
বিএনসিএ-এর দাবি, এখনই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন বন্ধ করে আইন লঙ্ঘনের চিত্র সংস্কার করা এবং বন্যপ্রাণী হত্যার দৃশ্য দেখানোর জন্য চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট অভিনেতাকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। শিগগিরই ব্যবস্থা না নিলে বন্যপ্রাণী রক্ষার স্বার্থে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো আন্দোলনে নামবে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন:মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমা ময়মনসিংহে দেখতে এসে দর্শকের উপস্থিতি দেখে উচ্ছ্বসিত সিনেমার অভিনয়শিল্পী নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ার ও ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানের গায়ক এরফান মৃধা শিবলু।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের ‘ছায়াবাণী’ সিনেমা হলে আসেন তারা। এ সময় সিনেমার নায়িকা নাজিফা তুষি বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অনেক লম্বা সময় নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমিসহ সব অভিনয়শিল্পী সেরা কাজটা করার চেষ্টা করেছি। এখনকার অনুভূতিটা আরও অনেক মজার। আমরা ঢাকার বাইরে সিনেমা হলগুলোতে যাচ্ছি। সব জায়গায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছায়াবাণী সিনেমা হলের কক্ষে বসে থাকার সময় একজন আন্টি আমাকে বলেছেন, জীবনের প্রথম তিনি হলে সিনেমা দেখতে এসেছেন। আরেকজন আন্টি বলেছেন, চিকিৎসকের কাছে এসে একফাঁকে আমাদের সিনেমা দেখতে এসেছেন। কথাগুলো শুনে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ আগে যারা সিনেমা দেখতে হলে আসেননি, এখন তারাও আসছেন।’
শুটিংয়ে কোনো মজার স্মৃতি আছে কি না জানতে চাইলে তুষি বলেন, ‘শুটিংয়ে অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। আমি শুটিংয়ের সময় ১০টা করে ডিম খেতাম৷ তখন সবাই হাসাহাসি করত।’
সুমন আনোয়ার বলেন, ‘সিনেমা রিলিজের পর থেকে আমরা যেসব হলে ভিজিট করেছি তার মধ্যে সিনেপ্লেক্স ছাড়া অন্যগুলোর অবস্থা খুবই করুন। সেখানে এক দর্শকের জন্য দুই ঘণ্টাব্যাপী সিনেমা উপভোগ করা খুবই কষ্টকর। স্পেশালি ‘হাওয়া’ সিনেমাটি লাইট, সাউন্ড সব কিছু মিলিয়ে এটার কালার, টোন, গল্প, আবহ সংগীত উপভোগ করার জন্য সিনেপ্লেক্স এপ্রোপ্রিয়েট জায়গা। তার পরও আমাদের বাংলাদেশের সব জায়গায় সিনেপ্লেক্স নেই। তবুও যদি এ রকম সিনেমা নির্মাণ হয়, তাহলে হলে দর্শক আসবেই।’
হলে এসেই ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গান গেয়ে দর্শক মাতান কণ্ঠশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী এরফান মৃধা শিবলু। এ সময় তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে সুর ধরেন নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ারসহ হলভর্তি দর্শক।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানেই যাই সেখানেই মানুষের মুখে মুখে এ গান শুনতে পাই। এ গানটা খুব ভালো করে কম্পোজ করেছে মিঠুন চাকড়া ও ইমন চৌধুরী। আরেকটি সিনেমার কাজ আমরা শুরু করব৷ ওইটারও ইতিমধ্যে প্রি-প্রোডাকশন শুরু হয়েছে। আশা করছি, হাওয়া চলচ্চিত্র যেমন মানুষের ভালো লেগেছে, পরবর্তী সিনেমাও ভালো লাগবে।’
‘হাওয়া’ সিনেমা দেখার পর সাদেক মিয়া নামের এক দর্শক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবার অভিনয়ই ভালো লেগেছে। তবে চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষির অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। সাদা সাদা কালা কালা গানে আকৃষ্ট হয়েই সিনেমা হলে এসেছিলাম।’
লাইলি আক্তার নামের আরেক দর্শক বলেন, ‘আমি এই প্রথম হলে সিনেমা দেখতে এসেছি। সিনেমা ভালো হয়েছে। এ রকম মানসম্মত সিনেমা নির্মাণ হলে আমাদের মতো অন্য দর্শকও হলে ফিরবে।’
হলের ম্যানেজার মো. শহর উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ২৯ তারিখ থেকে প্রতিদিন পাঁচটি করে শো চলছে। ভেবেছিলাম, ধীরে ধীরে হয়তো দর্শক কমে আসবে, কিন্তু না, এখন দর্শক আরও বাড়ছে। প্রতিদিন হাউসফুল যাচ্ছে সিনেমাটি।’
গত ২৯ জুলাই দেশের ২৩টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় ‘হাওয়া’। দ্বিতীয় সপ্তাহে সিনেমাটি প্রদর্শিত হচ্ছে ৪১ প্রেক্ষাগৃহে।
আরও পড়ুন:মঙ্গলবার সরকারি ছুটির দিনে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ স্টার সিনেপ্লেক্স। প্রেক্ষাগৃহটির পান্থপথ শাখায় সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যায় দর্শকদের দীর্ঘ লাইন। পরাণ ও হাওয়া সিনেমা দেখতেই দর্শকদের এ ভিড়।
রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে একজন এসেছেন হাওয়া দেখতে। তিনি বলেন, ‘নিয়মিত সিনেমা দেখি না, তবে সিনেমাটি নিয়ে সবার আগ্রহ দেখে এসেছি।
ধানমন্ডি থেকে পরিবার নিয়ে পরাণ দেখতে এসেছেন এক চাকুরিজীবী। সরকারি ছুটির দিন বলে মঙ্গলবার সিনেমা দেখতে এসেছেন তিনি।
পরাণ দেখতে এসেছিলেন আরও এক পরিবার। ছোট বাচ্চাকে নিয়ে তারা এসেছিলেন সেগুনবাগিচা থেকে। টিকিট কেটে রেখেছিলেন আগে থেকেই।
আজমপুর থেকে ভাই এবং চাচাকে নিয়ে এসেছেন একজন। জানান, অনিয়মিত দর্শক হলেও হাওয়া সিনেমার গান ভাইরাল হওয়ায় এটি দেখতে আগ্রহী তিনি।
শাহজাহানপুর থেকে দুজন নারী এসেছিলেন পরাণ সিনেমা দেখতে। তারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভালো সিনেমার কথা শুনলে আমরা দেখতে আসি। পরাণ ভালো হয়েছে শুনে দেখতে এসেছি।’
সিনেপ্লেক্স প্রাঙ্গণে থাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু সন্ধ্যা না, মঙ্গলবার সারা দিনই দর্শকদের ভিড় ছিল সিনেপ্লেক্সে।
সিনেপ্লেক্সের ৫টি শাখায় দ্বিতীয় সপ্তাহে হাওয়া সিনেমার ২৬টি শো, আর ৫ম সপ্তাহে পরাণের চলছে ১৪টি শো।
১০ জুলাই মুক্তি পেয়ে পরাণ চলছে ৪৮ প্রেক্ষাগৃহে, ২৯ জুলাই মুক্তি পাওয়া হাওয়া চলছে ৪১ প্রেক্ষাগৃহে।
সেন্সর বোর্ডে জমা দিয়ে সেন্সর না পাওয়ায় আপিল করেন শনিবার বিকেল সিনেমার প্রযোজক। সাড়ে তিন বছর হয়ে গেলেও সেন্সর বোর্ডের আপিল বিভাগ সিনেমাটিকে ছাড়পত্র দেয়নি এবং কেন আটকে আছে সিনেমাটি, তাও জানায়নি।
এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে নিয়মিত ফেসবুকে লিখছেন সিনেমাটির পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সিনেমাটি মুক্তি না পাওয়া এবং কী কারণে সিনেমাটি আটকে আছে তাও জানতে না পারায় মঙ্গলবার এক স্ট্যাটাসে ফারুকী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানান কষ্ট ও হাতাশার কথা।
তিনি লেখেন, ‘আমার কত রাত গেছে অনিদ্রায়। কত দিন গেছে ক্ষমতাবানদের দুয়ারে হাত মুছতে মুছতে। কত দুপুর গেছে রাগে অন্ধ হয়ে। কত বছর গেছে নিজের চিৎকার নিজেই গিলে ফেলে। ধন্যবাদ, হে রাষ্ট্র! ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে।’
এমন ঘটনা ফারুকীর জন্য প্রথম নয়। তার আগের সিনেমাগুলোতেও এমন সমস্যা হয়েছে বলে জানান ফারুকী।
লেখেন, ‘তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে ঠিকঠাক সাইজ করার জন্য। ব্যাচেলরের সময় তুমি ভাবছো আমার ছবি সমাজ নষ্ট করে ফেলবে! মেড ইন বাংলাদেশে ভাবছো এই ছবি দেশ ধ্বংস করবে! সুতরাং দেড় বছর সেন্সর জেলে রাখছো! ঠিকই আছে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলারের জন্য সেন্সরের জেলটা একটু বোধ হয় কম হয়ে গেছিলো। অপরাধ বিবেচনায় ওই ছবি আটকে রাখা উচিত ছিল তিন বছর। যাই হোক শনিবার বিকেলে সেটা পুষিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। উঠতে বসতে এইভাবে পিটিয়ে ছাল তোলার জন্য কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও লেখেন, ‘কিন্তু এইভাবে বোধ হয় পুরোপুরি হবে না। কারণ একটা ছবি ভাবা হয়ে গেলে তো সেটা দুনিয়াতে এগজিস্ট করে গেলো। বানানো হলে তো আরো শক্ত ভাবে এগজিস্ট করলো। আজ হোক কাল হোক সেটা তো দেখে ফেলবে মানুষ।’
সিনেমা আটকে রাখায় সিনেমা অঙ্গনে একরকম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষোভ যেন ঘৃণায় রূপ না নেয়, সেই সাবধানতার কথা বলেছেন ফারুকী।
তিনি লেখেন, ‘তাই বলি কী এমন কিছু একটা করো যাতে ভাবনাটাও বন্ধ করে দেয়া যায়। এমন ওষুধ আবিষ্কার করো, হে রাষ্ট্র, যাতে কারো মনে ক্ষোভ জন্ম না নেয়! কারণ সম্মিলিত ক্ষোভের চেয়ে বিধ্বংসী কোনো অস্ত্র নাই! আরও খেয়াল রাখতে হবে ক্রমাগত চাপে এই ক্ষোভ যেন ঘৃণায় রূপ না নেয়। কারণ কে না জানে ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারণাস্ত্র নাই।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে ফেসবুকে ‘শনিবার বিকেল মুক্তি পাক’ লাইন লিখে সরব হয়েছেন দেশের নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। নানা বাক্যে সিনেমাটির মুক্তির আবেদন করেছেন তারা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য