নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবি দিয়ে নুহাশ পল্লীতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। মঙ্গলবার সকালে নুহাশ পল্লীতে এ কথা জানান তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
মঙ্গলবার হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। এ দিনে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শাওন। তার সঙ্গে ছিলেন হুমায়ূনের ছোট দুই ছেলে ও ভক্তরা।
সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে শাওন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবিগুলো নিউ ইয়র্কের একজন ব্যক্তির কাছে অনেক দিন আটকে ছিল। আমরা সেসব ছবি হাতে পেয়েছি। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের সন্তানদের কাছে, এমনকি আমার কাছেও কিছু ছবি আছে। এসব ছবিসহ হুমায়ূন আহমেদের হাতে লেখা স্ক্রিপ্টগুলো জাদুঘরে রাখা হবে।’
হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন ছিল ক্যানসার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাওন বলেন, ‘আমি খুব ক্লান্ত হয়ে যাই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে। আমার একার পক্ষে এটা (হাসপাতাল) করা সম্ভব না। তার স্বপ্ন অনুযায়ী ক্যানসার হাসপাতাল করার শক্তি অর্জন করতে পারিনি। সরকার যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে হুমায়ূন আহমেদের সম্পদ দিতে তার পরিবার পিছপা হবে না।’
হুমায়ূনের আরেকটি স্বপ্নের কথা জানিয়ে শাওন বলেন, ‘সুসংবাদ হচ্ছে, হুমায়ূন আহমেদের আরেকটি স্বপ্ন ছিল তার গ্রামের স্কুল নিয়ে। সেটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। এ মাসেই সেটা এমপিওভুক্ত হয়েছে।’
হুমায়ূন আহমেদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আসে বিভিন্ন সংগঠন ও তার ভক্তরা।
নন্দিত এ লেখকের মৃত্যুবার্ষিকীতে সকালে কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। দুপুরে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল ও এতিমদের খাওয়ানো হয়।
আরও পড়ুন:৩১তম নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলা উপলক্ষে স্বদেশ শৈলী থেকে প্রকাশ হয়েছে কবি আহমেদ তসলিমের কাব্যগ্রন্থ ‘মহাসময়।’ এই বইয়ে উঠে এসেছে জীবনদর্শন, দার্শনিক সত্য, ভক্তি, দেশ, রূপক ও কাব্যিক অভিব্যক্তি।
আগামী ৩০ জুলাই নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে মেলা প্রাঙ্গণে বইটি পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
কবি তসলিমের দীর্ঘ এক যুগের সৃষ্টিশীলতার অন্যতম অনুপ্রেরণা তার শিক্ষক এবং দার্শনিক গুরু আমেরিকার বিখ্যাত আলোকচিত্ৰকর এমিরেটাস অধ্যাপক ডন গ্রেগোরিও আন্তোন।
এ ছাড়া পারিবারিক পরিবেশ, বাংলার রূপ ও বাংলার সাহিত্য সম্ভার তাকে কাব্যচর্চায় উৎসাহিত করেছে। তিনি ব্যাপকভাবে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলামের চর্চা করেছেন।
তসলিমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জে। নটর ডেম কলেজে পড়া শেষে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর পড়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির হামবোল্ট স্টেটে এবং নিউ ইয়র্কের রচেস্টার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে।
তিনি একজন গাণিতিক পরিসংখ্যানবিদ ও ডেটা সায়েন্টিস্ট। বিশ্বব্যাংক গ্রুপ বাংলাদেশ এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে কাজ করেছেন। এখন আছেন নিউ ইয়র্কে বেসরকারি খাতে।
পাঠকরা তার মহাসময় বইটি রকমারি ও অ্যামাজন থেকে কিনতে পারবেন।
কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসাদ উদ্দিন বলেন, দেশের আপামর জনগণ এমনকি ছোট্ট শিশুটিও জানে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু বাস্তবে এটির কোনো দালিলিক ভিত্তি নেই। মৌখিকভাবে তিনি জাতীয় কবি হিসেবে পরিচিত হলেও লিখিতভাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই।
তিনি বলেন, বলা হয়ে থাকে ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার আলবার্ট হলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে সর্বভারতীয় বাঙালিদের পক্ষ থেকে কবিকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে মুখে মুখে তিনি জাতীয় কবি হয়ে আছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে কোনো প্রজ্ঞাপন বা গেজেট প্রকাশ করা হয়নি।
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে কবিকে বাংলাদেশে আনা হয়। বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ধানমন্ডিতে তাকে একটি বাড়ি দেয়া হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং কবির মৃত্যুর ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির বিষয়ে কোনো যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যদিও নজরুল ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে দু-একবার চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি কোনো আলোর মুখ দেখেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দুটি আইনে জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি আয়োজনে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখও করা হয়। কিন্তু সবই পরোক্ষ স্বীকৃতি। এমন স্বীকৃতি কালের পরিবর্তনে মুছে যেতে পারে।
এই আইনজীবী আরও বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইতিহাস ও জাতীয় স্বীকৃতি কখনো অলিখিত থাকতে পারে না। অলিখিত ইতিহাস ও তথ্য সময়ের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যায়। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই দেশের সচেতন নাগরিক এবং উচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে এই রিট।
আসাদ উদ্দিন ছাড়াও রিটকারী বাকি ৯ আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, মো. রেজাউল করিম ও মো. আলাউদ্দিন।
আরও পড়ুন:জন্মজেলা নেত্রকোণায় নানা আয়োজনে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১০ম প্রয়াণবার্ষিকী পালিত হয়েছে। জেলা সদরের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘হিমু পাঠক আড্ডা’ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জেলা প্রেসক্লাবে কালোব্যাজ ধারণ, প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজনে সঞ্চালনা করেন ‘হিমু পাঠক আড্ডা’র সম্বয়কারী আলপনা বেগম। আয়োজনে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক অনুপ সাদী, সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক একেএম আব্দুল্লাহ ও ছড়াকার এবং সাংবাদিক সঞ্জয় সরকার।
কেন্দুয়া উপজেলা রিপোর্টাস ক্লাব সকাল ১১টায় স্থানীয় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘অবাক জোছনা’ নামে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম।
রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি আসাদুল করিম মামুনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লাইমুন হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা বেগম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া, ডা. লিজা, সাংবাদিক লিয়াকত আলী চৌধুরী কাজল, সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, মামুনুর রশিদ, কবি নেহাল হাফিজ, আয়েশ উদ্দিন ভূঁইয়া ও ভূঁইয়া বুলবুল।
এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের নিজগ্রাম কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠেও নানা আয়োজনে দিনটি পালন করা হয়। সেখানে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল কালো পতাকা উত্তোলন ও কালোব্যাজ ধারণ, প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোক র্যালি এবং দোয়া মাহফিল।
বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান, সহকারী প্রধান শিক্ষক শরীফ আনিস আহমেদ ও হুমায়ূন আহমেদের চাচাত ভাই বখতিয়ার আহমেদ আজমসহ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে একুশে পদক প্রদানের জন্য ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলাসহ সকল ক্ষেত্র), মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি (জীবিত/মৃত), গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে একুশে পদক প্রদান করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ জন্য সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সব জেলা প্রশাসক এবং স্বাধীনতা পদক/একুশে পদকে ভূষিত সুধীবৃন্দকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়ন/প্রস্তাব সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ক যাবতীয় তথ্যা ও একুশে পদক নীতিমালা এবং মনোনয়ন প্রস্তাবের ফরম সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার ১০ বছর আজ। ১০ বছর ধরে তিনি নেই, কিন্তু কে বলবে তিনি নেই। তার লেখাতেই এখনও মাতোয়ারা পাঠক-দর্শক।
গল্প, উপন্যাস, কবিতা ছাড়াও হুমায়ূনের পদচারণা ছিল নাটক-গান ও সিনেমায়। তাই শিল্প-সাহিত্যের সব অংশেই তিনি বেঁচে আছেন না থেকেও।
আজও অমর একুশে বইমেলার একাধিক প্যাভিলিয়ন সাজে হুমায়ূনকে ঘিরে। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো যেন বারবার ফিরে আসে পাঠকের মনে। হিমু, রুপা, মিসির আলী, শুভ্ররা যেন পাঠকের অনেক কাছের।
হুমায়ূনের গল্প, উপন্যাসের বিভিন্ন ছোট ছোট উক্তি পাঠকের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
যেমন বাদশাহ নামদারে লিখেছেন, ‘রাজা যায়, রাজা আসে। প্রজাও যায়, নতুন প্রজা আসে। কিছুই টিকে থাকে না। ক্ষুধার্ত সময় সবকিছু গিলে ফেলে, তবে গল্প গিলতে পারে না। গল্প থেকে যায়।’
‘এই পৃথিবীতে চোখের জলের মতো পবিত্র তো আর কিছু নেই। এই পবিত্র জলের স্পর্শে সব গ্লানি- সব মালিন্য কেটে যায়।’- কুহক
রজনীতে লিখেছেন, ‘মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে বড় কষ্ট হচ্ছে মাঝে মাঝে তার সবকিছু পেছনে ফেলে চলে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সে যেতে পারে না। তাকে অপেক্ষা করতে হয়। কিসের অপেক্ষা তাও সে ভালমতো জানে না।’
প্রেম-বিরহ-রাজনীতি নিয়ে এমন আরও অসংখ্য উক্তি আছে যা পাঠকমুখে বেশ জনপ্রিয়।
সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান হুমায়ূন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন তিনি।
আর চলচ্চিত্রে ১৯৯২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে তিনি মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার পেয়েছেন।
২০১১ সালে সেপ্টেম্বরে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে মৃত্যু হয় হুমায়ূন আহমেদের।
আরও পড়ুন:জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দাতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতির ১০০ বিলিয়ন ডলারের এক পয়সাও এখন পর্যন্ত পায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সোমবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ‘বাংলাদেশের ৫০: সাফল্য ও সম্ভাবনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে আমরাও এ নিয়ে কথা বলেছি। জি-২০ দেশগুলো তারাই সবচেয়ে বেশি পরিবেশন দূষিত করে থাকেন। এসব দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছে না। জলবায়ুর প্রভাবের ফলে বিশ্বজুড়ে মিলিয়ন লোক বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
‘বাংলাদেশের ৫০: সাফল্য ও সম্ভাবনা’ বইয়ের লেখক হিসেবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক বড় বড় অর্জন রয়েছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে আমাদের বড় ইভেন্ট হয়েছে। বাংলাদেশের ৫০ বছর ও মুজিব শতবর্ষ আমরা পালন করেছি। এগুলো নিবন্ধন আকারে যখন পত্রিকায় লিখেছি, তখন সেগুলো সংরক্ষণে বই আকারে সন্নিবেশিত করেছি।
‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্য ও তার ধারাবাহিকতা নিয়ে পোপ ফ্রান্সিসসহ বিশ্ব নেতারা যে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সাফল্য ও জলবায়ু পরিবর্তনে যে শক্তিশালী ভূমিকা সেটি নিয়েও তারা বিস্মিত হয়েছেন। আমি এগুলোকে স্থান দেয়ার চেষ্টা করেছি।’
আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের অর্থনীতিকে যেভাবে রেখে গিয়েছিলেন, আজ তার অবর্তমানে সেই ধারাবাহিকতার সাফল্য উল্লেখ করার মতো।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়নে বেশ কয়েকটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সফলভাবেই সম্পন্ন করা গেছে। বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমরা যাদের দাতা বলি, তারা কেউ কিন্তু আমাদের এমনি এমনি লোন দেয় না। লোন দেয়ার মধ্য দিয়ে তারা লাভবান হবে না।
‘করোনা ম্যানেজমেন্টে আমরা সারা বিশ্বে পাঁচ নম্বর এবং দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বর। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই কেবল সেটি সম্ভব হয়েছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে লোন দেয়া নিয়ে বিশ্বব্যাংক সরে গেল, কিন্তু সেতু করতে এর থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল টেকনিক্যাল ও টেকনোলজির বিষয়গুলো। বিশ্বব্যাংক একটা শিক্ষা পেয়েছে।’
বইটিতে বাংলাদেশের সব বিষয় লেখক স্থান দিয়েছেন, এ জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
পাবলিক সার্ভিস কমিশশের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘৫০ বছরে এসে বাংলাদেশের অর্জনগুলো বইটিতে স্থান পেয়েছে। আগামী তারুণ্যর জন্য বইটি অনুপ্রেরণা।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বইতে তার আন্তর্জাতিক ভাবনা ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও লিখেছেন। সরকারের দায়িত্বশীল হয়েও তিনি যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন এটার জন্য বেশ সাহসের। কারণ এত ব্যক্তি চিন্তার প্রতিফলন ও মতামত ঘটে।’
ভিশন ২০৪১ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তন আমাদের অনুধাবন করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বড় অর্জন। আমরা আমাদের সাফল্যকে স্বীকার করাসহ আত্মবিশ্বাসের জায়গায় আরও বেশি নজর দিতে হবে।’
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালসহ অন্যরা।
‘বাংলাদেশের ৫০: সাফল্য ও সম্ভাবনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের শুরুতেই মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
এরপর আলোচক-অতিথি বক্তাদের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। মূল আলোচনা পর্ব শুরুর আগে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন আলোচকরা।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও এবি ব্যাংকের কর্মকর্তারা এবং প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ঝুমঝুমি’-এর প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য