তরুণরাই কেবল তার হাসির প্রেমে পড়েছে, এমন বললে কমই বলা হবে। ৮ থেকে ৮০- সবাই পছন্দ করছেন তাকে। যিনি দেখছেন, যেন তাকিয়ে থাকছেন কিছুক্ষণ। ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে তার হাসির চর্চা আর মুগ্ধতার কথা; শেয়ার হচ্ছে তার ছবি।
সব মিলিয়ে তরুণ তুর্কি হয়ে যেন মিডিয়া দখল করতে এসেছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। তার অবশ্য ‘দখল’ শব্দে আপত্তি।
‘আমি তো মাত্র শুরু করলাম। কোথায় যাব, কেমন হবে, কী করতে চাই, তার কিছুই এখনও জানি না বা ঠিক করা হয়নি।’ বললেন তটিনী।
এ অভিনেত্রীর সঙ্গে দেখা শনিবার সন্ধ্যায়, রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমা হলে। সেখানে ছিল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির অ্যান্থলজি সিনেমা এই মুহূর্ত-এর প্রিমিয়ার। সিনেমার কল্পনা নামের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তটিনী।
আয়োজন শুরুর কিছুক্ষণ পর তটিনী ঢোকেন অনুষ্ঠানস্থলে। এসেই যে সবার নজর কেড়ে নিলেন এমন না, তবে তার ডাক পড়ল মূল স্টেজে। সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী।
আলাদা করে কথা বলার সুযোগ চাইলে, সুযোগ দিলেন আন্তরিকতার সঙ্গেই। তখন পর্যন্ত নামের অর্থের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন তিনি। ‘তটিনী’ শব্দের অর্থ নদী। কখনও শান্ত, কখনও খরস্রোতা। কথা বলার শেষ অবধি শুধু শান্ত ভাবটাই পাওয়া গেছে। তার ক্ষুরধার স্বভাবের কথা এখনও অপ্রকাশিত!
নদীপারের মানুষ জন্যই কি মেয়ের নাম তটিনী রেখেছিলেন বাবা-মা? না, সে গল্প শোনা হয়নি। তবে অভিনেত্রী যা জানালেন, সেটি এমন, ‘আমি বরিশালের মেয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমি বরিশালেই ছিলাম। ওখানেই আমার পড়ালেখা। আমার পরিবারের সবাই ওখানেই থাকেন। আমাদের যৌথ পরিবার না, তবে সবাই কাছাকাছি থাকেন। আমার ফ্যামিলির মধ্যে ভালোবাসা অনেক।’
একটি বিশেষ ব্যাপার বললেন তটিনী, সেটি হলো, ‘আমরা প্রায় সবাই পশুপাখির প্রতি সহানুভূতিশীল। আমার নানিভাই খুবই বিড়াল পালতে পছন্দ করতেন। আমিও দেখা গেছে, ছোট থেকে এখন পর্যন্ত আমার সঙ্গে একটা না একটা বিড়াল আছেই।’
‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ এই মন্ত্রের কথা মনে হতে পারে অনেকের। তবে তটিনী ঈশ্বর পর্যন্ত যাচ্ছেন না, তটিনীর কাছে জীবের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া মানে জীবনের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, সর্বোপরি মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া।
আবার বরিশালে ফিরে যাওয়া যাক। সেখানেই বড় হয়ে উঠছিলেন তটিনী। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পার হলেন। বিষয় ছিল বিজ্ঞান। লেখাপড়া করতে করতে তার ইচ্ছে হলো চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়ার এবং সেই কারণেই তার প্রথম ঢাকায় আসা।
ঢাকায় আসার গল্পটা পরে, আগে জেনে নিই মেডিক্যালে পড়ার ব্যাপারে কী হলো-
‘যারা মেডিক্যালে পড়তে চান, তাদের প্রায় সবারই ইচ্ছে থাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পড়ার, কিন্তু আমার ইচ্ছে ছিল বরিশাল মেডিক্যালে পড়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা আর হয়নি।’
নিজের ইচ্ছের মৃত্যুতে ব্যথিত নন তটিনী বরং, বলা যায় খুশি। কারণ নিজের বর্তমান অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট এ অভিনেত্রী। বলেই ফেললেন, ‘আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন’।
এখন আসি ঢাকায় আসার গল্পে। ঢাকায় তটিনী এসেছিলেন মেডিক্যালের পরীক্ষা দেয়ার জন্য। পড়ুয়া সেই মেয়ের রোগীর সেবা করার স্বপ্ন কোন সময় অভিনয়ে ঠেকেছে বুঝতেই পারেননি তিনি!
‘২০১৯ সালের মার্চের কথা। আমার এক পরিচিতর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের অডিশনে যাই। একদম কৌতূহল থেকেই গিয়েছিলাম এবং কাজটি হয়ে গেল। কখনও ভাবিইনি অভিনয় করব। কাজে আসার পর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’ বলেন তটিনী।
শুরুর দিকে অনেক জড়তা কাজ করত অভিনেত্রীর। এক বছর হয়েছে নাটকে অভিনয় করছেন এবং ধীরে ধীর কাজের চাপ বাড়ছে বলে জানান তটিনী। কাজ আসাটা সমস্যা না, কিন্তু সেখান থেকে পছন্দের কাজটি নির্বাচন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে অভিনেত্রীর জন্য। বিবেচনা বা নির্বাচন করার মতো এতটা অভিজ্ঞতা অভিনেত্রীর না হলেও নিজের কাছে সেটি ভালো লাগছে, সেই কাজে যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
কাজ করতে ভালোই লাগছে তটিনীর। আগামীতে আরও ভালো কাজ করার ইচ্ছা অভিনেত্রীর। ধীরে ধীরেই এগোতে চান। আর যাই হোক ঝরে যেতে চান না তিনি।
বললেন, ‘সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সে জন্য অনেকবার ভাবছি। নেতিবাচক জিনিসটা আগে ভাবছি। চেষ্টা করব যেন সব ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া যায়।’
অভিনয় জগতে এমন একজন অভিনেত্রী এসেছেন, যাকে নিয়ে অনেকেই তাদের মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন, সেই তরুণ কেমন কর্মপরিবেশ পাচ্ছেন জানতে চাইলে তটিনী বলেন, ‘আর্থিকভাবে পরিবেশটা কেমন সেটা নিয়ে এখনই মন্তব্য করার মতো অবস্থায় নেই আমি। আমার ভালোই মনে হয়েছে। তবে যেটা বেশি জরুরি নতুনদের জন্য, সেই সমর্থন আমি পেয়েছি, পাচ্ছি। দুজন মানুষের কথা আমি বিশেষ করে উল্লেখ করতে চাই, সাবরিনা আইরিন আপু ও আশফাকুজ্জামান বিপুল ভাইয়া। এদের হাত ধরেই আমার আসা। আমি অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।’
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছেন, মেজর সাবজেক্ট মার্কেটিং। তৃতীয় বর্ষ শেষ করেছেন মাত্রই। বিদ্যাপীঠ থেকে পাওয়া জ্ঞানও কাজে লাগাতে চান তিনি। চাকরি করতে চান, তবে বিষয়গুলো নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা এখনই নেই তটিনীর।
বাড়ির ছোট মেয়ে তানজিম সাইয়ারা তটিনী। স্বভাবতই আদরের। মা-বাবা, বড় ভাই আর ভাবিকে নিয়ে তার পরিবার। সেই আদর আর দর্শকের ভালোবাসা নিয়ে আপাতত শুধু এগিয়ে যাবার পালা।
ঈদে তটিনীকে দেখা যাবে আফরান নিশোর সঙ্গে বাঁচিবার হলো তার সাধ ও জোভানের বিপরীতে সুহাসিনী নাটকে।
ফারহান আহমেদ জোভান অভিনীত ‘রূপান্তর’ নাটকের তিনিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতে নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রী ও পরিচালকসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাউসার উল জিহাদ এ মামলাটি করেছেন।
ইউটিউব চ্যানেল একান্ন মিডিয়া থেকে নাটকটি সরিয়ে ফেলার পর এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তার মতে, দর্শকরা নাটকটির কনসেপ্ট হয়ত বোঝেননি।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কিছুই দেখছি, আসলে বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় দর্শকরা নানান স্ট্যাটাস ও মন্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিচালক রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত এ নাটকটিতে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যুকে প্রমোট করা হয়েছে। এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা জোভানকে অনলাইনে তুলোধুনা করছে নেটিজেনরা।
‘এছাড়া জোভান ও সামিরা খান মাহি দুজনের ফেসবুক পেজ গায়েব করে দেয়া হয়েছে। জোভানের ১৯ লাখের পেজ ও মাহির ২৪ লাখের লাইক-ফলো করা পেজটি আর ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
‘রূপান্তর’ নাটকটি ইউটিউবে প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। অসংখ্য পোস্ট ও লক্ষাধিক প্রতিক্রিয়া আসে নাটকটির বিরুদ্ধে। তীব্র সমালোচনায় পড়ে নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
জোভান বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, নাটকটি নিয়ে কেন এমন সমালোচনা করা হচ্ছে! নাটকটির ভিউ হয়েছিল নব্বই হাজার। তাহলে বাকি মানুষ তো দেখেনি! আমার মনে হয়, তারা না দেখেই সমালোচনা করছে। বিষয়টি নিয়ে আমি ঘোরের মধ্যে আছি। বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে!’
সমালোচনার মুখে জোভান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দর্শক পছন্দ করেন না এমন কোনো চরিত্রে অভিনয় করবেন না। বলেন, ‘যেহেতু মানুষ পছন্দ করছে না সেহেতু এসব আর করা যাবে না। এরপর থেকে এগুলো আর করব না।’
নেটিজেনদের কিংবা নিজের অনুসারীদের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে এটা নিয়ে জোভান দুঃখও প্রকাশ করেছেন।
জোভান ছাড়াও ‘রূপান্তর’ নাটকে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামিরা খান মাহি। এতে আরও অভিনয় করেছেন সাবেরী আলম ও সমাপ্তি মাসুক প্রমূখ।
নাট্যজন ইশরাত নিশাতের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার নামে মর্যাদাপূর্ণ নাট্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয় ২০২১ সালে। চলতি বছর থেকে ৯টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এর বাইরে জুড়ি বোর্ডের ‘বিশেষ স্বীকৃতি’ পেয়েছে নতুন নাট্যদল এক্টোম্যানিয়ার প্রথম প্রযোজনা ‘হ্যামলেট মেশিন’।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে শুক্রবার সন্ধ্যায় নাট্যকর্মীদের উপস্থিতিতে জুড়ি বোর্ডের ‘বিশেষ স্বীকৃতি’ দলের সদস্যদের হাতে তুলে দেন নাট্যব্যক্তিত্ব সারা যাকের।
জার্মান নাট্যকার হাইন্যার ম্যুলারের লেখা নাটকটির নির্দেশনা দেন নওরীন সাজ্জাদ।
বিশেষ স্বীকৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই অনুভূতি অতুলনীয়। এই আবেগ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
‘প্রথম প্রযোজনায় এই প্রাপ্তি আমাদের আনন্দিত করছে; উৎসাহিত করছে দারুণভাবে।’
ঢাকার মঞ্চে ২০২৩ সালে এসেছে ৭৫টি নতুন নাটক। এর মধ্যে ৩৩টি নাটক দেখে জুড়ি বোর্ড নির্বাচিতদের পুরস্কৃত করে।
নাট্যদল এক্টোম্যানিয়ার মুখ্য সম্পাদক তালহা জুবায়ের বলেন, ‘এই অর্জন আমাদের পুরো দলের। ঢাকার মঞ্চে নতুন হিসেবে এই অর্জন আমাদের উৎসাহ, সাহসের সঙ্গে দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দিচ্ছে আরও নতুন কিছু সৃজনের।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী থিয়েটারের যে অর্জন, সে বিবেচনায় নাট্যকর্মীদের প্রাপ্তি বা মূল্যায়নে এ রকম পুরস্কার দেয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।
মঞ্চ নাটকের অবদানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পদক দেয়া হলেও সামগ্রিকভাবে কোনো পুরস্কারের প্রচলন ছিল না। বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই দেশের বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব ও গুণিজনদের সম্পৃক্ত করে একটি বাস্তবায়ন কমিটি এ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
কমিটির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নামী নাট্যব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ। এর কো-চেয়ারপারসন হিসেবে রয়েছেন অভিনেত্রী সারা যাকের।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার প্রদর্শনী হবে ঢাকা পদাতিকের ৩৮তম প্রযোজনা ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’।
একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির ২৯তম প্রদর্শনী হবে।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানী মাস্টার দা সূর্যসেনের প্রহসনমূলক বিচার ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে নাটকটি মঞ্চে আনে ঢাকা পদাতিক।
‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’ নাটকের রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দেন নাট্যজন মাসুম আজিজ। তার মৃত্যুর পর নব নির্দেশনার কাজটি করেন অভিনেতা নাদের চৌধুরী।
এ বিষয়ে নাদের চৌধুরী বলেন, “‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ঐতিহাসিক একটি নাটক। এর রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রয়াত মাসুম আজিজ ভাই, তবে পরবর্তী সময়ে এই নাটকের কিছু কিছু জায়গায় প্রয়োজন সাপেক্ষে অলংকরণ করে আমি নব নির্দেশনার কাজটি করেছি।
“মাস্টার দা সূর্যসেন এই নাটকের প্রধান চরিত্র, যেটি আমি রূপায়ন করেছি। ঐতিহাসিক নাটকটি আমাদের এখনকার জেনারেশনের দেখা উচিত।’’
ঐতিহাসিক ব্যক্তিরা নাটকটির চরিত্র। এতে মোট ৪০টি চরিত্র রয়েছে।
চরিত্রগুলো হলো সূর্য সেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, অম্বিকা রায়, নির্মল সেন, ব্রিটিশ উকিল ও বাঙালি উকিল প্রভৃতি।
এসব চরিত্র রূপায়ন করছেন নাদের চৌধুরী, মাহবুবা হক কুমকুম, মিলটন আহমেদ, হাসনা হেনা শিল্পী, মাহাবুবুর রহমান টনি, সাবিহা জামান, শ্যামল হাসান, কাজী আমিনুর, আক্তার হোসেনসহ অনেকে।
২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়।
আরও পড়ুন:নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার লোক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির উদ্যোগে দেশব্যাপী চিরায়ত বাংলা নাটক মঞ্চায়ন কর্মসূচি উদযাপন করছে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) থিয়েটার ক্লাব।
এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) আইইউবি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো মনসুর বয়াতি রচিত পালা নাটক ‘দেওয়ানা মদিনা’।
নাটকটির নির্দেশনায় মো. শামীম সাগর এবং সহ-নির্দেশনায় ছিলেন মো. সাইফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনায় ৬৪টি জেলা ও ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। দেওয়ানা মদিনা এই কর্মসুচির তৃতীয় এবং আইইউবি থিয়েটারের ২১তম প্রযোজনা।
দর্শক সারিতে উপস্থিত থেকে নাটকটি উপভোগ করেন আইইউবির উপাচার্য তানভীর হাসান, বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের উপ-পরিচালক আলী আহমেদ মুকুল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল জাবির, আইইউবি থিয়েটারের সমন্বয়ক মমতাজ পারভীন এবং আইইউবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
মনসুর বয়াতি রচিত ‘দেওয়ানা মদিনা’ পালাটি মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গীতিকা হিসেবে সমাদৃত। বানিয়াচঙ্গের দেওয়ান সোনাফরের পুত্র আলাল ও দুলালের বিচিত্র জীবনকাহিনী এবং দুলাল ও গৃহস্থ মদিনার প্রেমকাহিনী এই পালার বিষয়বস্তু।
নাটকটিতে অভিনয় করেন আইইউবির নাট্যকর্মী শিক্ষার্থী আনিকা বুশরা শশী, মো. বাসিতুল্লাহ খান, মো. তৌহিদুল ইসলাম অঙ্কুর, সানজিদা আক্তার মীম, আশরাফুল করিম চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল মাহিন সিয়াম, মুবাল্লিক হোক মৃধা (আবিদ), সৌহার্দ্য পাল, সামিয়া রেজা মাইশা, আনিকা ফাইরোজ, মো. সৌমিক উদ্দিন মাহি, মোছা. সাদিয়া আফরিন অর্না, মুবাশশির আল জামী সিয়াম প্রমুখ।
সংগীত সহযোগিতায় ছিল ভিনস ব্যান্ড, জাহিদ হাসান, স্লাঘা অধিকারী, শরীফ মোহাম্মদ শাহজালাল পরান, এস এম শাকিল আমিন এবং আইইউবি মিউজিক ক্লাব।
ছোটপর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য পুরোপুরি খোলাসা হয়নি। অভিনেত্রীর স্বজনদের বরাতে পুলিশ যদিও জানিয়েছে যে আত্মহত্যা করেছেন হিমু। তবে কয়েকটি অমীমাংসিত প্রশ্নের কারণে ঘটনাটি নিয়ে ‘কিন্তু’ থেকে যাচ্ছে।
হিমুর মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যান তার কথিত প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রাফি ও অভিনেত্রীর মেকআপ আর্টিস্ট মিহির। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করার পর হিমুর মোবাইল ফোনটি নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন প্রেমিক রাফি।
পুলিশ তাকে খুঁজছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) উত্তরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা।
এদিকে জিয়াউদ্দিন রাফির সঙ্গে সম্প্রতি হিমুর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল বলে পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানিয়েছেন ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম।
তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে হুমায়রা হিমুর সঙ্গে রাফির ঝগড়া চলছিল৷ হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও মৃত্যুর খবর শুনে তিনি পালিয়ে গেছেন।
আরেকটি সংবাদমাধ্যমের খবর, হিমুর ওই প্রেমিক নিজেও বিবাহিত। আলাদা সংসার রয়েছে তার।
উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মির্জা সালাউদ্দিনের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, অভিনেত্রী হিমু ছিলেন ব্রোকেন ফ্যামিলির। তিনি তার এক পালিত ভাইকে (মিহির) নিয়ে উত্তরার ফ্ল্যাটে থাকতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য, ‘বিবাহিত ওই যুবকের (রাফি) সঙ্গে অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছেলেটি তার ফ্ল্যাটে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন। মাঝে মাঝে তিনি হিমুর সঙ্গে থাকতেনও।’
তিনি বলেন, ‘আজ বিকেল ৩টার দিকে হিমুর বাসায় এসেছিলেন রাফি। পরে তাদের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। হিমুর পালিত ভাই মিহির তখন ওয়াশরুমে ছিলেন। হিমু রুমে একাই ছিলেন। এরপর মিহির বের হয়ে দেখেন হিমু ফ্যানের হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ঝুলছেন। রাফি ও মিহির তখন হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।’
যদিও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে হিমু আত্মহত্যা করেছেন বলেই উঠে এসেছে। আর তা সত্যি হয়ে থাকলেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে- এই আত্মহননের নেপথ্যে কে বা কারা দায়ী? কারণটাই বা কী? রাফি বিবাহিত এবং তার সংসার থাকার পরও হিমুর পরিবারের সঙ্গে তার বিয়ের কথা চলে কীভাবে? বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই কি নিভে গেল আরেকটি সুন্দর জীবনের প্রদীপ?
উত্তর মেলেনি এসব প্রশ্নের। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে একটি প্রশ্ন উঠতেই পারে- আত্মহত্যা কি সত্যিই জীবনের জটিল হিসাবের জট মেলাতে পারে?
আরও পড়ুন:অভিনেত্রী হুমায়র হিমু ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। অভিনেত্রীর পরিবারের বরাতে পুলিশ প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে নিজ বাসায় ফ্যানের হ্যাঙ্গারে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। সেখান থেকে হিমুকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে উত্তরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুরতহাল ও পরিবারের বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, হুমায়রা হিমু আত্মহত্যা করেছেন। সুরতহাল শেষে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
পরিবারের বরাতে তিনি বলেন, ‘পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে লাশ পেয়েছে। অভিনেত্রীর পরিবার জানিয়েছে, ফ্যান লাগানোর হ্যাঙ্গারে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় হিমুকে পাওয়া যায়। পরে মেকআপ আর্টিস্ট মিহির (যাকে হিমু ভাই ডাকতেন) ও প্রেমিক রাফি উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় হুমায়রা হিমুর কথিত বয়ফ্রেন্ড রাফিকে খুঁজছে পুলিশ। হিমুকে রেখে হাসপাতালে রেখে তিনি পালিয়েছেন।’
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু মারা গেছেন।
অভিনয়শিল্লী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিউজবাংলাকে জানান।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় থাকতেন হুমায়রা হিমু। সেখান থেকে তাকে আজ বিকেলে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হলে ৪টা ৪৬ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
কেন ও কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি রওনক হাসান। তবে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
২০০৬ সালে ‘ছায়াবীথি’ নামের একটি নাটকের মাধ্যমে ছোটপর্দায় নাম লেখান হিমু। অল্পদিনেই লাভ করেন জনপ্রিয়তা। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘বাড়ি বাড়ি সারি সারি’, ‘হাউজফুল’, ‘গুলশান এভিনিউ’ উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন হিমু। ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। এ ছবি তে অরু চরিত্রে দেখা যায় তাকে। হিমুর মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে তার সহকর্মীদের মাঝে। সামাজিক মাধ্যমে সেই শোক প্রকাশ করছেন তারা।
মন্তব্য