অনেক তারকা শিল্পী নিয়ে নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজ কাইজার। যার মূল আকর্ষণ অভিনেতা আফরান নিশো। তিনি নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ৮ জুলাই সিরিজটি মুক্তি পাবে হইচইতে; বুধবার বিকেলে প্রকাশ পায় এর ট্রেইলার।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সিরিজের ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিচালক তানিম নূর বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই একটা গোয়েন্দা চরিত্র তৈরি করার ইচ্ছা ছিল। ছোটবেলায় তিন গোয়েন্দা, ফেলুদা, ব্যোমকেশ পড়েছি। এগুলো তো পশ্চিমবঙ্গের চরিত্র। আমার ইচ্ছা ছিল ঢাকার একটা গোয়েন্দা চরিত্র তৈরি করার।’
তানিম আরও জানান, ২০১৪ সালে প্রথম কাইজার নাম দিয়ে দুই পৃষ্ঠা লিখেছিলেন। সেই ভাবনাটিই এবার আরও বড় পরিসরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন তিনি। জার্মান সম্রাটদের কাইজার বলা হয়, সেখান থেকেই নামটি নিয়েছেন পরিচালক।
কাইজার চৌধুরী পুলিশের এডিসি, তিনি হোমিসাইড ডিটেকটিভ। তিনি ভিডিও গেম অ্যাডিক্ট। হোমিসাইড ডিটেকটিভ হলেও তিনি রক্ত ভয় পান। অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন এবং ভিডিও গেম আসক্তির জন্য তার ব্যক্তিগত জীবন বিপর্যস্ত। ডিপার্টমেন্টেও তার খুব সুনাম নেই। কিন্তু ডিটেকটিভ হিসেবে তিনি প্রথম শ্রেণির। তার বুদ্ধিদীপ্ততার জন্যই তিনি এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন।
পরিচালক তানিম নূরের মতো অনেকেই ফেলুদা, ব্যোমকেশ পড়েছেন। চরিত্র দুটি যেমন বুদ্ধিদীপ্ত, তেমন তারা কথায়, আচারে, স্বভাবে এবং পোশাকে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
কিন্তু কাইজারের এমন কী বৈশিষ্ট আছে, যা দেখলে মনে হবে তিনি ঢাকার গোয়েন্দা, জানতে চাইলে পরিচালক তানিম নূর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের জগৎ কিন্তু যা দেখি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না। আমাদের চিন্তার বাইরেও অনেক মানুষজন আছে। আমার মনে হয়েছে আমার ক্যারেক্টার হোমিসাইড, গেম অ্যাডিক্ট, রক্ত দেখে ভয় পায়- এমন হলে ভালো লাগবে। আমার মনে হয় সিরিজটি রিলিজ হলে আরও কিছু পাওয়া যাবে, আপনারা বুঝতে পারবেন। খুব রেগুলার, সাদামাটা ও সাধারণ একজন হিসেবেই দেখানো হয়েছে কাইজারকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন বাস্তবতা দেখাই, তেমনি বাস্তবতা নতুন করে নির্মাণ করি, সেখানে আমার লিবার্টি আছে। ক্যারেক্টার গিটার বাজাতে পারে, ক্যারেক্টার রান্না ভালো করতে পারে।’
সিরিজে কাইজার একজন গোয়েন্দা বিভাগের চাকরিজীবী। ঢাকার একজন গোয়েন্দা চরিত্র শুধু গোয়েন্দা হিসেবেই প্রতিষ্ঠা পেতে পারত, তার চাকরি করার প্রয়োজন কেন হলো জানতে চাইলে তানিম বলেন, ‘প্রথমে আমি যখন ভেবেছিলাম তখন আমি প্রাইভেট ডিটেকটিভই পেয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশে প্রাইভেপ ডিটেকটিভের কিছু করার সুযোগ খুব কম। ফোর্সের মধ্যে থাকলে চরিত্রটির এক্সেসেবিলিটি অনেক বেড়ে যায়। যদি প্রাইভেট ডিটেকটিভ হয়, তাহলে তো অনেক ক্ষেত্রে সে এক্সেসই পাবে না।’
ওটিটিতে ডার্ক বা থ্রিলার ঘরানার গল্পের নির্মাণ বেড়েছে। সেখানে অনেক টেনশন, ওনেক রহস্য, অনেক ক্রাইসিস। কিন্তু আটপৌরে জীবন বা দেখা জীবন ও যাপনের গল্প অনেকটাই কম। এ সিরিজেও কাইজার চরিত্রটিকে অদেখা বৈশিষ্ট্যের মানুষ হিসেবে দেখানো হলো কি না জানতে চাইলে তানিম বলেন, ‘আমি আসলে এভাবে ভাবি না, গল্প বিভিন্ন রকমের হবে। সেটা রিয়েলিস্টক হবে, ফ্যান্টাসি হবে। আমি নিজে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হই। সেটা আমার নির্মাণে প্রভাব ফেলে।’
কাইজারের ছোটবেলার বন্ধু অম্লান (মোস্তাফিজুর নূর ইমরান) এবং তন্ময় (শঙ্খ জামান)। কাইজারের অনিয়ন্ত্রিত জীবনে অভ্যস্ত হতে না পেরে তার স্ত্রী শিরিন (শিমু) কাইজারকে ডিভোর্স দিয়ে অম্লানকে বিয়ে করে। এ ব্যাপারটি কাইজার মেনে নিতে পারেনি। কাইজারের মেয়ে নিকিতা (ঋদ্ধি) কাইজারকে ‘বাবা’ এবং অম্লানকে ‘আব্বু’ বলে ডাকে যা কাইজারের মেনে নিতে কষ্ট হয়।
গেমিং পার্টনার অনন্ত (সৌম্য জ্যোতি) কাইজারের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। কাইজারের অসংখ্য দোষ রয়েছে কিন্তু জীবনের গভীরে উঁকি দিলে দেখা যায় সেও একজন সংবেদনশীল মানুষ। গুলশানে একটি ফ্ল্যাটে প্রভাবশালী পরিবারের দুই তরুণীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এই জোড়া খুনের রহস্য সমাধানের দায়িত্ব এসে পড়ে এডিসি কাইজারের ওপর। এ রকম একটি গল্প নিয়েই কাইজার সিরিজটি আবর্তিত হয়েছে।
এতে আরও অভিনয় করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, সুমন আনোয়ার, ইমতিয়াজ বর্ষণ, শিশুশিল্পী ঋদ্ধি, দ্বীপান্বিতা মার্টিন, স্বাগতাসহ অনেকে।
ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে নিশো বলেন, ‘কাইজার চরিত্রটি দাবাং না, সুপারহিউম্যান না। সে সাধারণ। আপনারা তাকে সেভাবেই ভাববেন।’
সিরিজটি প্রযোজনা করেছে ফিল্ম সিন্ডিকেট।
আরও পড়ুন:চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের বেধড়ক পিটিয়েছে সংগঠনটির কয়েকজন সদস্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিঠুন আল মামুন জানান, তার ক্যামেরাম্যানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈশাখী টিভির সাংবাদিক লিয়ন মীর জানান, শপথ গ্রহণ শেষে চিত্রনায়িকা ময়ূরীর মেয়ের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন এক রিপোর্টার। এসময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন তিনি।
কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়ে শিবা শানুকে থামাতে চান। এরপর শিল্পী সমিতির আরেক নেতা চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রক্তাক্ত আহত হন কয়েকজন সাংবাদিক। মারামারিতে যোগ দেন আলেকজান্ডার বোসহ কয়েকজন জুনিয়রও।
মিঠুন আল মামুন ঘটনার বিষয়ে বলেন, ‘আমি একজন শিল্পীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। এ সময় খল অভিনেতা শিবা শানু আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে কেন সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। এরপরই তিনি আমার ওপর হামলা চালান।
‘এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক এগিয়ে এলে জয় চৌধুরী অশ্লীল গালি দিয়ে জুনিয়র শিল্পীদের নির্দেশ দেন সাংবাদিকদের ওপর চালানোর। জয় ও শিবা শানুর নেতৃত্বেই আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ ঘটনার পরপরই এফডিসিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএফডিসির খোলা প্রাঙ্গণে এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় সভাপতি মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু মিশাকে শপথ পাঠ করান।
তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা আবু তাওহীদ হিরণ মারা গেছেন। গত বছরের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ‘আদম’ সিনেমা নির্মাণ করে পরিচিতি পান তিনি।
রাজধানীর রমনার নিজ বাসা থেকে সোমবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
৩৭ বছর বয়সী হিরণ ‘ইএইচআর মিডিয়া হাউজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদুরী শিবপুর গ্রামের সোহরাব হোসেন এর ছেলে। বর্তমানে রমনার ৩০ নম্বর নিউ ইস্কাটন রোডের একটি চতুর্থ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্লাটে একাই বসবাস করতেন তিনি। ওই ভবনেই তার মিডিয়া প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান।
ওই ভবনের বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ সকাল ৬টার দিকে হিরণ বাড়ির দারোয়ানকে ফোন করে বলেন, তিনি স্ট্রোক করেছেন। দারোয়ানকে রুমে আসতে বলেন তিনি। দারোয়ান গিয়ে দরজায় নক করলেও ভেতর থেকে দরজা না খোলায় তিনি ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দাদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় তারা দেখতে পান, প্রায় উলঙ্গ অবস্থায় তিনি উপুড় হয়ে মেঝেতে পড়ে আছেন।’
তিনি বলেন, ‘পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ইএইচআর মিডিয়া হাউজের ক্রিয়েটিভ পরিচালক ওমর ফারুক নয়ন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খবর শুনে আমরা বাসায় গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, “তাওহিদ ভাই ভালো মানুষ ছিলেন। আদম-এর পর ‘রং রোড’ নামে তার আরেকটি ছবির কাজ শেষে হয়েছে। ছবিটি বর্তমানে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।’
শেষ মুহূর্তে এসে ঈদে মুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো আহমেদ হুমায়ুন নির্মিত ‘পটু’ ও মোহাম্মদ ইকবাল পরিচালিত ‘ডেডবডি’ সিনেমা দুটি। দুই সিনেমার পক্ষ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে দুটি ভিন্ন কারণ দেখানো হয়েছে।
‘পটু’ প্রযোজনা করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, তাদের ছবিটির পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তাই ঘোষণা দিয়েও সরে দাঁড়িয়েছেন তারা।
তবে এই ঈদে প্রতিষ্ঠানটির ‘মোনা: জ্বীন ২’ প্রেক্ষাগৃহে চলবে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে ‘ডেডবডি’ নিয়ে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে অনন্ত জলিলের পরামর্শ শুনেছেন পরিচালক-প্রযোজক ইকবাল।
জলিলকে উদ্দেশ করে ইকবাল বলেছেন, ‘ব্রাদার (অনন্ত জলিল) আপনাকে আমি ভালোবাসি। আপনি বলার সঙ্গে সঙ্গে (সিনেমাটি) আমি ঈদে রিলিজ না করে দুই সপ্তাহ পিছিয়েছি এবং হল মালিকদের চিঠি দিয়ে দুই সপ্তাহ পর প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করেছি।’
ইকবাল জানান, ঈদের পরিবর্তে ৩ মে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে তার ছবিটি। ভৌতিক ধাঁচের গল্পে নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ওমর সানী, রোশান, শ্যামল মাওলা, অন্বেষা রায় প্রমুখ।
স্বল্প পরিসরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পাবনায় পালন করা হয়েছে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পাবনা শহরের হেমসাগর লেনে মহানায়িকার পৈতৃক বাড়িতে অবস্থিত সুচিত্রা সেনের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পার্ঘ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করে জেলা প্রশাসন ও সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরীফ আহমেদ, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ মধু, সাংবাদিক আখতারুজ্জামান আখতারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মহানায়িকার মেয়ে মুনমুন সেন ও কলকাতার জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেন গুপ্ত মোবাইল ফোনে যুক্ত হয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেন।
৪৬তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদশি সিনেমা ‘নির্বাণ’। গত মঙ্গলবার উৎসবের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে সিনেমাটির অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
নির্বাণের নির্মাতা আসিফ ইসলাম। সিনেমাটির গল্প নিয়ে তিনি জানান, মানবিক আবেগের একটি কাব্যিক অন্বেষণ ‘নির্বাণ’। শান্তির খোঁজে বের হওয়া তিন ব্যক্তির একটি অসাধারণ যাত্রা। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ফাতেমা তুজ জোহরা ইভা, প্রিয়ম অর্চি, ইমরান মাহাথিসহ অনেকে।
বড় বড় একাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রধান মুখ হিসেবে কাজ করলেও নিজের অভিনীত প্রথম সিনেমা আন্তর্জাতিক উৎসবে জায়গা করে নেয়ায় ভীষণ উচ্ছ্বসিত ইভা।
সিনেমাটিতে নিজের যাত্রা নিয়ে উদীয়মান এ অভিনেত্রী বলেন, ‘নির্বাণে আমার চরিত্রের নাম মায়া। এই মায়া আর ব্যক্তি ইভা একদমই আলাদা দুই চরিত্র।’
‘“নির্বাণ’-এর মায়ার বয়স আমার চেয়েও বেশি। বয়সের ভারিক্কি আনতে বেগ পেতে হয়েছে আমাকে। কারণ মায়া আর আমি ব্যক্তি ইভা একেবারেই আলাদা”, বলেন ইভা।
‘আমরা এক মাস গাজীপুরে ট্রান্সফর্মার ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছি। আমি বেসিক্যালি ট্রান্সফর্মারের কোর জিনিসপত্র বানানো শিখছি, বানিয়েছি। টাইম মেইনটেইন করেই অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করেছি, যাতে আমাদের আলাদা না লাগে। এই দীর্ঘ সময়ে আমার কো অ্যাক্টরদের সঙ্গে ভীষণ ভালো বন্ডিং হয়েছে, যা কাজেও হেল্প করেছে’, যোগ করেন অভিনেত্রী।
সিনেমার শুটিংয়ের সময়ের কিছু ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নবীন এ অভিনেত্রী বলেন, ‘নির্বাণের একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে এ সিনেমায় আমাদের কোনো স্ক্রিপ্ট ছিল না। আমাদের সিচুয়েশচন বলে দেয়া হতো। সেই অনুযায়ী আমরা অভিনয় করতাম, তবে ক্যারেকটারের বায়োগ্রাফি ছিল প্রত্যেকেরই শক্তপোক্ত।
‘আসিফ ভাই (নির্মাতা) অধিকাংশ দৃশ্যই এক টেকে (একবারে) ওকে করেছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। কেননা আমরা যখন বারবার একই সিন করতে থাকি, একটা সময়ে গিয়ে সেটা মেকি হয়ে যায়।’
এরই মধ্যে আরও তিনটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন ইভা, তবে সেসব নিয়ে এখনই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা বারণ নির্মাতাদের। যেমনটি ছিল তার প্রথম সিনেমা নির্বাণের ক্ষেত্রেও।
সিনেমা নিয়ে আলাদা আবেগের কথা জানিয়ে ইভা বলেন, “আমার ক্যারিয়ারে ‘নির্বাণ’ একটা আলাদা জায়গায় থাকবে সবসময়। আসলে প্রত্যেকটা চরিত্রেরই আলাদা আলাদা জায়গা থেকে যায় আমাদের মধ্যে, তবে মায়া, তার মায়া আমি কাটাতে পারব না।
“মায়ার যন্ত্রণা, মায়ার কষ্ট এসবই আমার কাছে গচ্ছিত থেকে যাবে। আশা করি এই সিনেমা মস্কো অভিযানের পরও নানান দেশ জয় করবে। আমি অধীর আগ্রহে আছি কবে আমাদের দেশে সবাই মিলে সিনেমাটা দেখব।”
মস্কো উৎসবের ৪৬তম আয়োজন শুরু হবে ১৯ এপ্রিল, যা চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। উৎসবে যোগ দিতে ১৮ এপ্রিল মস্কোর উদ্দেশে রওনা দেবেন নির্মাতা আসিফ ইসলাম। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পাশাপাশি পুরো আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন তিনি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে বসেছে ৯৬তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের আসর। এই আয়োজনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চলতি বছরে অস্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে।
সেরা ছবি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছে ‘ওপেনহাইমার’। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার পেয়েছেন ‘পুওর থিংস’ সিনেমার এমা স্টোন।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে সম্মানজনক অস্কার জয় করেছেন ‘ওপেনহাইমার’ ছবির কিলিয়ান মার্ফি।
একই ছবিতে অভিনয় করে সহ-অভিনেতা হিসেবে অস্কার পেয়েছেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। এছাড়া সহ-অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কার জিতেছেন ‘দ্য হোল্ডওভারস’ ছবির দা’ভাইন জয় র্যান্ডল্ফ।
সেরা পরিচালক হিসেবে এ বছরের অস্কার পেয়েছেন ক্রিস্টোফার নোলান (ওপেনহাইমার)।
লাইভ অ্যাকশন শর্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছে ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল স্টোরি অব হেনরি সুগারে’।
ধ্বনি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছে ‘দ্য জোন অফ ইন্টারেস্ট’-এর টার্ন উইলার্স ও জনি বার্ন।
অরিজিনাল স্কোর ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছেন ‘ওপেনহাইমার,’-এর লুডভিগ গোরানসন।
এছাড়া মৌলিক সংগীত ক্যাটাগরিতে ‘হোয়াট ওয়াজ আই মেড ফর?’-এর ‘বার্বি’; ভিজ্যুয়াল এফেক্টস ক্যাটাগরিতে ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’; চলচ্চিত্র সম্পাদনা ক্যাটাগরিতে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার জেনিফার ল্যাম; প্রামাণ্যচিত্র স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে ‘দ্য লাস্ট রিপেয়ার শপ’; ডকুমেন্টারি ফিচার ক্যাটাগরিতে ‘২০ ডে ইন মারিউপোল’; সিনেমাটোগ্রাফি ক্যাটাগরিতে ‘ওপেনহাইমার’-এর হোয়েট ভ্যান হোয়েতেমা পুরস্কার জিতেছেন।
অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে ‘ওয়ার ইজ ওভার! ইনসপায়ারড বাই দ্য মিউজিক অব জন ও ইয়োকো’; অ্যানিমেটেড ফিল্ম ক্যাটাগরিতে ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’; মূল চিত্রনাট্য ক্যাটাগরিতে ‘অ্যানাটমি অব আ ফল’-এর জন্য জাস্টিন ট্রিয়েট ও আর্থার হারারি; অভিযোজিত চিত্রনাট্য ক্যাটাগরিতে ‘আমেরিকান ফিকশন’-এর জন্য কর্ড জেফারসন এবার অস্কার জয় করেছেন।
অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে মেকআপ ও হেয়ারস্টাইলিং-এ ‘পুওর থিংস’-এর নাদিয়া স্টেসি, মার্ক কুলিয়ার ও জশ ওয়েস্টন; প্রোডাকশন ডিজাইন ক্যাটাগরিতে ‘পুওর থিংস’-এর জেমস প্রাইস, শোনা হিথ ও জুসা মিহালেক; কস্টিউম ডিজাইন ক্যাটাগরিতে ‘পুওর থিংকস’-এর হলি ওয়াডিংটন পুরস্কার পেয়েছেন।
আর আন্তর্জাতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে ‘দ্য জোন অব ইন্টারেস্ট’ (যুক্তরাজ্য) অস্কার পুরস্কার জিতে নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য