টালিউডের আলোচিত প্রথম সারির অভিনেত্রীদের অন্যতম স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তার অন্যতম কারণ কোনো রকম রাখঢাক না রেখে কথা বলাই পছন্দ তার।
এবারও আলোচনায় এসেছেন নিজের আসন্ন সিনেমা শ্রীমতী নিয়ে এক সাক্ষাৎকার দিয়ে। সেখানে অভিনেত্রী বলেছেন, নায়িকা হিসেবে, গ্ল্যামার দুনিয়ার মানুষ হিসেবে চরিত্রের প্রয়োজনে দর্শকদের জন্য আমার বক্ষটাকে যেভাবে তুলে ধরা দরকার সেভাবেই করব।
সিনেমাটির মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেত্রীকে। আর এর গল্প একজন সাধারণ গৃহবধূকে ঘিরে। প্রতি মুহূর্তে সেই গৃহবধূকে কীভাবে বডি শেমিংয়ের মুখোমুখি হতে হয় এই গল্পও বলবে শ্রীমতী।
ভারতীয় গণমাধ্যম জি-২৪ ঘণ্টার সেই সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল- সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যেভাবে বডি শেমিং হয়, সেটা নিয়ে মানুষ ইনসিকিউরিটিতে ভুগছে- বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
সেখানে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে স্বস্তিকা বলেন, ‘সময়টা ঠিক মনে নেই আমার। একটা ছবি পোস্ট করেছিলাম, যেখানে ব্রেস্ট নিয়ে অনেক আলোচনা ও কু-মন্তব্য হয়েছিল। সেখানে আমি বলেছিলাম যে আমি যখন পেশাগতভাবে নায়িকা, আমি যখন একটা সিনেমায় কাজ করছি, তখন যেভাবে দর্শকদের জন্য আমার স্তনটাকে তুলে ধরা দরকার সেটা আমি করব।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি গ্ল্যামার দুনিয়ার একটা পার্ট, যেটা আমার কাজ-আমার রুটিরোজগার, তখন আমার চেহারাটাকে যেভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরা দরকার, চরিত্রের জন্য হোক, এন্টারটেইনমেন্টের জন্য হোক, গ্ল্যামার মাথায় রেখে হোক, সেটা আমি বডি শিমার লাগাই, আমি প্যাডেড ব্রা পড়ি, আমি পুশআপ করি যেভাবেই হোক সেটা আমি করব।’
অভিনেত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমার কাজ যেখানে শেষ হচ্ছে তার বাইরে আমি ব্যক্তিগতভাবে আমি ব্রা না পরে জামা পরে ছবি পোস্ট করি বা আমার চেহারার কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কারও পছন্দ হোক আর না হোক বা আমি একটা প্যাডেড ব্রা পরলাম না- পুশআপ ব্রা পরলাম না সেটা নিয়ে মানুষের অসুবিধা হলে তার দায় আমার না।’
আগামী ৮ জুলাই মুক্তি পাবে শ্রীমতী। অর্জুন দত্তের পরিচালিত এই সিনেমায় অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর স্ত্রীর বেশে দেখা যাবে স্বস্তিকাকে।
আরও পড়ুন:বলিউড অভিনেত্রী কাজল ও দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সুরিয়াকে অস্কার কমিটির সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে দ্য অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স।
‘ক্লাস অফ ২০২২’ সালের জন্য মঙ্গলবার ৩৯৭ জন ‘বিশিষ্ট শিল্পী এবং নির্বাহীদের’ তালিকা প্রকাশ করেছে অ্যাকাডেমি। যেখানে নাম রয়েছে কাজল ও সুরিয়ার।
অ্যাকাডেমির আমন্ত্রণের তালিকায় রয়েছেন অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত ৭১ জন এবং ১৫ জন অস্কারজয়ী।
কাজল-সুরিয়া ছাড়াও আমন্ত্রণ পেয়েছেন লেখক রিমা কাগতি। যিনি গল্লি বয়, দিল ধড়কনে দোর সিনেমার গল্প লিখেছেন।
কাজল কাভি খুশি কাভি গাম, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, মাই নেম ইজ খান ও ফানার মতো সিনেমার তার বিস্ময়কর অভিনয়ের জন্য তুমুল প্রশংসিত। এ ছাড়া ৯০-এর দশকে বলিউডে শাহরুখ, সালমান, আমির খানদের সঙ্গে পর্দায় রাজত্ব করেছেন তিনি।
এদিকে জয় ভীম, কাপ্পান এবং রক্ত চরিত্র টু-এর মতো অনেক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তুমুল প্রশংসিত সুরিয়া।
এ ছাড়া আগামীতে তামিল অ্যাকশন-ড্রামা সোরারাই পোত্রু-এর হিন্দি রিমেকে বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারের সঙ্গে দেখা যাবে সুরিয়াকে।
আরও পড়ুন:বলিউডের জনপ্রিয় দুই তারকা জুটি আলিয়া ভাট ও রণবীর কাপুর। দাম্পত্যের আড়াই মাসের মধ্যেই গত সোমবার মা হওয়ার সুখবর জানিয়ে ভক্তদের চমকে দেন আলিয়া।
এই মুহূর্তে লন্ডনে রয়েছেন অভিনেত্রী। নিজের ডেবিউ হলিউড সিনেমা হার্ট অফ স্টোন-এর শুটিং সারছেন সেখানে। হাতে রয়েছে একাধিক বলিউড সিনেমার কাজ।
অভিনেত্রী মা হওয়ার খবর জানানোর পর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, আলিয়া সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ায় পিছিয়ে যেতে পারে তার একাধিক সিনেমার কাজ। তাকে লন্ডনে নিতে যাবেন রণবীর।
এমন সংবাদ চোখ এড়ায়নি আলিয়ার। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
ইনস্টাগ্রামে যে প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন আলিয়া, সেখানে দাবি করা হয়েছে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে মুম্বাইয়ে ফিরবেন তিনি। স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে লন্ডন উড়ে যেতে পারেন রণবীর।
সেখানে আরও বলা হয়, অন্তঃসত্ত্বাকাল নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করেছেন আলিয়া। জুলাই মাস শেষ হওয়ার আগেই হার্ট অফ স্টোন এবং রকি অওর রানি কি প্রেম কাহানির শুটিংয়ের সব কাজ শেষ করে ফেলবেন তিনি। এরপর মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাবেন অভিনেত্রী।
সেই প্রতিবেদনসহ ইনস্টাগ্রামে এক স্টোরি পোস্ট করেন আলিয়া। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমাদের চারপাশের এখনও কিছু লোকের মাথায় এ রকম চিন্তাভাবনা রয়েছে যে, আমরা এখনও পিতৃতান্ত্রিক বিশ্বেই বাস করছি। কোনো কিছুই পিছিয়ে যায়নি। কেউ কাউকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসছে না। আমি একজন নারী, পার্সেল নই।’
সেখানেই শেষ নয়, আলিয়া প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় আরও লেখেন, ‘আমার বিশ্রামের প্রয়োজন নেই, কিন্তু জেনে ভালো লাগল যে, আপনাদের কাছে চিকিৎসকের সার্টিফিকেটও আছে।
‘এটা ২০২২ সাল। দয়া করে সেই প্রাচীন ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। এখন যদি দয়া করে আপনারা আমাকে ক্ষমা করেন…আমার শট প্রস্তুত।’
আপাতত লন্ডনে হার্ট অফ স্টোন-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত আলিয়া। রণবীর ব্যস্ত তার আসন্ন সিনেমা শামশেরার প্রচারে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে এই জুটির প্রথম সিনেমা ব্রহ্মাস্ত্র।
আরও পড়ুন:বহুল আলোচিত ২০০ কোটি রুপি অর্থ পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখরের মামলার তদন্তের জন্য বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্থের অনুসন্ধান ও এই মামলার তদন্তের জন্য সোমবার অভিনেত্রীর বক্তব্য রেকর্ড করতে তাকে সমন পাঠানো হয়েছিল।
এই মামলায় গত এপ্রিলে প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের অধীনে জ্যাকলিনের ৭ কোটি ২৭ লাখ রুপির সম্পদ বাজেয়াপ্ত ইডি।
সেসময় ইডির বিবৃতিতে জানানো হয়, তদন্তের সময় জানা গেছে যে সুকেশ চন্দ্রশেখর চাঁদাবাজিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আয় থেকে জ্যাকলিনকে ৫ কোটি ৭১ লাখ রুপির বিভিন্ন উপহার দিয়েছেন।
এই উপহার ছাড়াও জ্যাকলিনকে প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৯১৩ মার্কিন ডলার ও ২৬ হাজার ৭৪০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়েছিল সুকেশ।
সেই সঙ্গে ইডি জানিয়েছিল, সুকেশ তার ওয়েব-সিরিজ প্রকল্পের একটি স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য অগ্রিম হিসাবে জ্যাকলিনের পক্ষে একজন স্ক্রিপ্টরাইটারকে নগদ ১৫ লাখ রুপি দিয়েছিলেন। বাজেয়াপ্ত সম্পদের মধ্যে এই নগদ অর্থও সংযুক্ত রয়েছে।
এর আগে জ্যাকলিনকে একাধিকবার জেরা করেছে ইডি। অভিনেত্রী ইডিকে জানিয়েছেন ২০১৭ সাল থেকে সুকেশকে চেনেন তিনি।
গত বছরের নভেম্বরে সুকেশের সঙ্গে জ্যাকলিনের কয়েকটি ঘনিষ্ঠ ছবি ভাইরাল হয়েছিল। এরপর তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে শুরু হয়েছিল তুমুল আলোচনা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলশান থানার মানব পাচারের মামলায় সংগীতশিল্পী ইভা রহমানকে ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেয়।
জামিনের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আদালত ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে। সম্প্রতি গুলশান থানায় মানব পাচারের একটি মামলা হলে আগাম জামিনের এ আবেদন করা হয়।’
বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলায় সংবাদ পাঠক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করা ইভা একপর্যায়ে প্রেমে জড়িয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে। সেই সম্পর্ককে পূর্ণতা দিয়ে তারা বিয়ে করেন। চ্যানেলটির মাধ্যমে তিনি গায়িকা হিসেবেও পরিচিতি পান।
প্রায় এক দশক আলোচনায় থাকা এ দম্পতির বিচ্ছেদ হয় গত বছর। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমানকে ডিভোর্স দিয়ে নতুন সংসার পাতেন ইভা। ব্যবসায়ী সোহেল আরমানকে বিয়ে করে নাম বদলে ইভা আরমান রাখেন।
শিল্পী ইভার ইতোমধ্যে ৩০টির বেশি গানের অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে। সে মাত্রায় জনপ্রিয়তা না পেলেও গত দশকে তার নিয়মিত উপস্থিতি ছিল এটিএন বাংলার পর্দায়।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের আসাম রাজ্য। দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। বন্যায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রামের ভয়ংকর অবস্থা।
বন্যাকবলিত অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। আসামের মানুষের এমন দুরবস্থায় পাশে দাঁড়ালেন বলিউড তারকা আমির খান।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে মোট ২৫ লাখ রুপি দান করেছেন আমির।
এক টুইট বার্তায় অভিনেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে এ তথ্য নিজেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা।
তিনি লেখেন, ‘প্রখ্যাত বলিউড অভিনেতা আমির খান মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২৫ লাখ রুপি দিয়ে আমাদের রাজ্যের বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। তার উদ্বেগ এবং উদারতার জন্য আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’
Eminent Bollywood actor Amir Khan extended a helping hand to the flood-affected people of our State by making a generous contribution of ₹25 lakh towards CM Relief Fund.
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) June 27, 2022
My sincere gratitude for his concern and act of generosity.
এর আগে আসামের বন্যাকবলিতদের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন অর্জুন কাপুর, রোহিত শেট্টি, সোনু নিগম।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের ছেলে শুভ দাশ। আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করলেও আছেন গান নিয়ে। ভারতের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো সা রে গা মা পা’র মূল পর্বে সুযোগ পেয়েছেন শুভ। এবারের আসরে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন শুভ একাই। সা রে গা মা পায় যাত্রা নিয়ে শুভর সঙ্গে কথা হয়েছে নিউজবাংলার।
আপনি কি ছুটিতে এসেছেন? কয়দিনের ছুটি? ভারতে আপনার সঙ্গে কি কেউ থাকছেন, বা পরিচিত জন কেউ আছেন?
সা রে গা মা পা’র গ্র্যান্ড অডিশনে আমি সিলেক্টেড হয়ে মূল পর্বে আছি এখন। এর জন্য আমি একাই গিয়েছি ওখানে। আত্মীয়স্বজন অনেকেই আছেন, কিন্তু সা রে গা মা পাতেই থাকতে হচ্ছে আমার। মূল পর্বে ওঠার পর কিছুদিন দেশে ছুটিতে এসেছি।
মূল পর্বে আপনার সঙ্গে কয়জন আছেন? কেমন লাগছে তাদের সঙ্গে?
২১ জনকে নিয়েই শুরু হবে মূল পর্ব। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তো আছেই, অনেকে ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন। বাংলাদেশ থেকে আমি একাই। ওরা আমাকে খুব ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। ওদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে, আমার বেশ কয়েকজন ভালো বন্ধুও হয়েছে ওখানে। সবার সঙ্গে আড্ডা, গান চলেছে। যেহেতু এটা একটা গানের রিয়্যালিটি শো, গান তো সবার আগেই। এর পাশাপাশি বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা হয় নিজেদের মধ্যে। আমার দেশকে নিয়ে আলোচনা হয়, যেহেতু আমি চট্টগ্রামের ছেলে, চট্টগ্রাম নিয়ে আলোচনা হয়। ওরা খুব আগ্রহী আমার দেশের বিষয়ে জানতে। আমি যে এবার যাব, ওদের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে যাব। ওরা অপেক্ষায় আছে, কখন ফিরব, কখন দেখা হবে। সবার সঙ্গে সুন্দর একটা রসায়ন হয়েছে।
বিচারকেরা কী পরামর্শ দিচ্ছেন আপনাকে। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী আপনাকে একটা পরামর্শ দিয়েছিলেন, বলেছিলেন অলংকরণগুলো পরিষ্কার করে নিতে। সেগুলো করছেন নিশ্চয়ই।
এবারের সা রে গা মা পাতে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ পদ্মভূষণ পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। তিনি মহাগুরু হিসেবে আছেন। এটা আমাদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। বিচারক হিসেবে তো অনেকেই আছেন, শান্তনু মৈত্র, রিচা শর্মা ও শ্রীকান্ত আচার্য্য। ওনারা খুব সম্মানিত এবং পূজনীয় ব্যক্তিত্ব।
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী থাকার কারণে অনুষ্ঠানের রংটাই বদলে গেছে। উনি আমার গান আর হারমোনিয়াম শুনে খুব খুশি হয়েছেন এবং আমাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। আমি যেন আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গাইতে পারি, অলংকরণগুলো যাতে আরও পরিষ্কার হয়, উনি সেই পরামর্শটুকু আমাকে দিয়েছেন।
বিচারকরা তো সবাইকে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেনই। ওখানে যারা আছেন, ভালো গায় বলেই সুযোগ পেয়েছেন, সবাই স্ট্রেস নিয়ে কতটা কনফিডেন্টলি গাইতে পারে সেই জিনিসটা বিচারকরা নিশ্চিত করছেন।
আপনাকে মান্না দে ও অখিল বন্ধু ঘোষের গান গাইতে শোনা গেছে। আগামী পর্বগুলোতে আপনাকে আরও অন্য ধরনের গান গাইতে শোনা যাবে কি না। যেমন সিনেমার গান, ব্যান্ডের গান।
আমি আপাতত আমার জনরার গানই গাইছি। বেশ কিছুদিন এটা গাইব। যদি ওনারা আমাকে ভেঙে অন্য কিছু করাতে চান, যেমন আমার দেশের লোকসংগীত, বিভিন্ন কিংবদন্তি শিল্পীদের গাওয়া বিখ্যাত কিছু গান আছে, ওই গানগুলো যদি আমাকে দেয়া হয়, অবশ্যই আমি প্রস্তুত থাকব। এটা আমি খুব সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করব।
সা রে গা মা পায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত কবে নিলেন এবং যেতে চাইলেন কেন?
সা রে গা মা পা আমি অনেক দিন ধরে দেখি, আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয়। সবাই অনুষ্ঠানটি দেখে এবং দেখার কারণে এই অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ভক্ত তৈরি হয়েছে। আমারও ইচ্ছে ছিল অনেক দিন থেকে, সা রে গা মা পা-তে কখনও যদি নিজেকে উপস্থাপন করতে পারি। সেই ইচ্ছাটা থেকেই সেখানে যাওয়া। মাঝে একটি সুযোগ আসে। আমাকে প্রাথমিক অডিশনে ওনারা সিলেক্ট করেন বাংলাদেশ থেকে। শুরুতে অনলাইনে একটি অডিশন দিই। ওখানে গিয়ে আরেকটি অডিশন দিই। পরে গ্র্যান্ড অডিশনের জন্য সিলেক্ট হই। এভাবেই সা রে গা মা পা-তে আসা।
প্রত্যেক শিল্পীর ইচ্ছে থাকে, বড় কোনো মঞ্চে নিজেকে দাঁড় করাতে পারলে একটু বেশি মানুষের কাছে যাওয়া যায়, পরিচিতি পাওয়া যায়। এটা সা রে গা মা পা-তে যাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ।
আপনাকে ইউটিউবে পাওয়া যায়। আমরা ধারণা করি, আপনি স্টেজ শো বা প্রাইভেট শো করে থাকেন। ভিডিও দেখে তাই মনে হয়। সংগীতই কি আপনার পেশা?
আমার পড়াশোনা আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর। এখন পর্যন্ত নিজেকে আইন পেশায় জড়াইনি। গানটাই আমার পেশা হিসেবে আছে। অনেক দিন থেকে পেশাদারভাবে গানটাই করে যাচ্ছি এবং এটার কারণে প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, আগেও পেয়েছি, আশা করছি ভবিষ্যতেও পাব। কারণ আমি একটা কথাই বিশ্বাস করি, সংগীতের মতো আর কিছু নেই, যার মাধ্যমে এত সহজে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়৷ সে জন্য আমি গানটাকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই৷ এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।
আপনাকে কাভার করতেই দেখা যায় বেশি। আপনার কি কোনো মৌলিক গান আছে বা করার চেষ্টা করছেন?
একজন শিল্পীর কাছে সবচেয়ে বড় হলো তার মৌলিক সৃষ্টি। শিল্পী বেঁচে থাকে তার নিজের গান দিয়ে। আমারও সে রকম একটা ইচ্ছে আছে। এতদিন পর্যন্ত আমি বিভিন্ন শিল্পীর গান করে আসছি। আমার মৌলিক গানও আছে ইউটিউবে। আমি বেশ কয়েকটা গানের কাজ হাতে নিয়েছি। যে গানগুলো নিয়ে সা রে গা মা পা’র পরে দর্শকদের সামনে হাজির হব।
কোনো চাকরির পাশাপাশি গানবাজনা করতে পারতেন, তেমনটা করলেন না কেন?
আসলে গানটা ছোটবেলা থেকেই আমার রক্তে মিশে আছে। এটা নিয়ে আমার একটা পরিকল্পনা ছিল যে আমি এটা নিয়ে এগিয়ে যাব। যতদিন বেঁচে থাকব গানটা করেই যাব।
পেশার বিষয়টা বলতে গেলে আমি কিছুদিন চেষ্টা করেছিলাম অন্য পেশায় নিজেকে জড়াতে৷ কিন্তু দেখলাম যে অন্য কোনো পেশায়, চাকরি বলেন বা আইন পেশা বলেন, যা-ই বলেন না কেন, এসব পেশায় থেকে গানটা করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিল আমার জন্য। এ জন্য আমি গানটাতেই আছি। পড়াশোনা করেছি আইনে, তাই আইন পেশায় আমি চাইলে আজও যেতে পারি, কালও যেতে পারি, সেটা কোনো বিষয় না। কিন্তু আমি গানটাকে নিয়েই থাকতে চাই সারা জীবন।
আপনি গান শিখেছেন কার কাছে?
গান শেখাটা শুরু হয় আমার ৬ থেকে ৭ বছর বয়সে। ঘরেই মায়ের হাতে আমার গানের হাতেখড়ি। পরবর্তী সময়ে আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, তখন থেকে আমার ভেতর শিল্পী হওয়ার একটা বাসনা জাগে। এর পর থেকেই আমি গানটা সিরিয়াসলি শুরু করি। শহরে আসি উচ্চ মাধ্যমিকের পর। গুরুজি স্বর্ণময়ী চক্রবর্তীর কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে দীর্ঘদিন তালিম নিয়েছি৷ এরপর আমি কলকাতায় যাই এবং বিখ্যাত সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী গৌতম ঘোষালের কাছে এখন তালিম নিচ্ছি।
এর মধ্যে আমি দেশের অনেক নামকরা অনুষ্ঠানে, টেলিভিশন শো, বিভিন্ন করপোরেট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছি। প্রচুর প্রশংসিত হয়েছি, আমার একটা শ্রোতামহল তৈরি হয়েছে৷
গানের ক্ষেত্রে পরিবারের পূর্ণ সমর্থন ছিল আমার ওপর। আমার বাবা, কাকা, মা সবাই আমাকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন।
পরিবারে কে কে আছে আপনার?
আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাবারা দুই ভাই৷ আমার কাকা-কাকিমা আছেন। তাদের দুজন মেয়ে আছে। আমরা তিন ভাইবোন। আমি সবার বড়, ছোট দুজন বোন, তারা পড়াশোনা করছে। আর বাবা-মা তো আছেনই৷ আমাদের পরিবারের সবাই খুব সংগীত অনুরাগী। গানের ভেতর দিয়েই আমার বেড়ে ওঠা। আমার পরিবারে সংগীত চর্চাটা হয়৷ আমার বোনেরাও গানের চর্চা করে। আমার ছোটটা গান করে। অন্যজন নৃত্য শেখে।
সা রে গা মা পা আপনাকে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে একটা ভালো অবস্থান দিতে পারবে বলে মনে হয়?
আমি মনে করি যারা সা রে গা মা পার মঞ্চে গান করছেন, প্রত্যেক শিল্পীকেই তারা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেবে। যাতে করে আর পেছনে তাকাতে হবে না।
সেরাটা যদি আমি দিতে পারি, সর্বোচ্চটা দিয়ে যদি ওখানে টিকে থাকতে পারি, অবশ্যই আমি একটা অবস্থান পাব।
সা রে গা মা পা-তে এখন পর্যন্ত কোন জিনিসটাকে মনে হচ্ছে যে অভিজ্ঞতাতে যুক্ত হলো বা কোন জিনিসটা অভিজ্ঞতা বাড়াল?
সত্যি কথা বলতে গানটা আমি একরকম করে আসছি, সা রে গা মা পা-তে যাওয়ার পর একটা বিষয় বুঝতে পারলাম যে গানটা শেখার আরও অনেক কিছু আছে। যতদিন সেখানে থাকব, ওখানে আমি যা শিখব, তা এমনি এমনি আগামী বিশ বছরেও পাব না। ওখানে শুধু গান নয়, জীবনদর্শনটাও আমরা শিখছি।
সেটের পরিবেশ কেমন? বিদেশ হলে সেখানেও সবাই বাঙালি, মানিয়ে নিতে কোনো অসুবিধে হয়েছে?
যেহেতু পার্শ্ববর্তী দেশ, কলকাতায় এর আগেও আমি বহুবার গিয়েছি বিভিন্ন কারণে এবং আমি ওখানে তালিম নিয়েছি সংগীতের। আমার গুরুজি গৌতম ঘোষের কলকাতায়। আমার খুব বেশি বাইরে আছি বলে মনে হচ্ছে না। ভালো আছি, ওয়েদারটা সেম, আমাদের চেয়ে খুব বেশি ব্যবধান কিছু নেই ৷ খাবার-দাবার, সবকিছু একই। খুব বেশি আমার মনে হচ্ছে না যে আমি দেশের বাইরে আছি।
আপনি শুরুর দিকে বলেছিলেন প্রতিযোগীদের কেউ কেউ আপনাকে চিনত, আপনার গান শুনত ইউটিউবে। বিষয়টা কেমন লেগেছে?
আমি সা রে গা মা পা-তে যখন প্রথম যাই, অডিশনে যখন প্রথম ঢুকি, সবার সঙ্গে যখন দেখা হয়, আমি একটু অবাক হয়েছি। আমার একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকার কারণে আমার গান অনেকেই শুনেছে আগে। তারা আমাকে চিনতে পেরেছে, আমাকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখে একটু অবাক হয়েছে। ওরা যে আমাকে চিনতে পেরেছে- এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। ওদের সাথে বন্ধুত্বটা আরও সহজে হয়ে গেছে আমার।
সংগীতে আপনি কাকে অনুসরণ করেন?
শ্রদ্ধেয় মান্না দের গানই আমি বেশি করে থাকি। উনি আমার গানের ঈশ্বর। ওনাকে আমি অনেক ছোটবেলা থেকে ফলো করে আসছি। পাশাপাশি ভারতে যিনি আমাদের মহাগুরু হিসেবে আছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওনার গানও মাঝে মাঝে আমি করে থাকি৷
আমাদের বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী শ্রদ্ধেয় নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, সুবীর নন্দী, তপন চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিৎসহ অনেকেই আছেন যাদের গান আমি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। বলতে গেলে সবাই আমার গুরুস্থানীয়।
আরও পড়ুন:দেশের অভিনয়শিল্পী দম্পতি নাঈম-শাবনাজ। যখন সিনেমায় অভিনয় করতেন, তখনও ছিলেন জুটি। বাস্তব জীবনেও তারা জুটি হয়ে আছেন।
তাদের দুই মেয়ে; বড় মেয়ে নামিরা নাঈম এবং ছোট মেয়ে মাহদিয়া নাঈম। সম্প্রতি নামিরা ও মাহদিয়া মডেল হয়েছেন জুতা প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের।
ফটোশুটের সেই ছবি দেখে স্মৃতিকাতর হয়েছেন নাঈম। রোববার শাবনাজ নাইম নামের ফেসবুক পেজে সেই স্মৃতি শেয়ার করেছেন অভিনেতা।
লিখেছেন, ‘১৯৮৭ সালে আমি বাটা সাউন্ডড্রপস (বাটার এক ধরনের জুতার নাম) এর জন্য একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন করেছিলাম। বিজ্ঞাপনটি বানিয়েছিল ইনটারস্পিড। সহশিল্পী ছিলেন তানজিম চৌধুরী কংকন এবং কলকাতা রোয়িং ক্লাবে চিত্রায়িত হয়েছিল।
‘৩৫ বছর পর, আমার বড় মেয়ে নামিরা নাঈম এবং ছোট মেয়ে মাহদিয়া নাঈম বাটার ঈদুল আজহা ক্যাম্পেইনের জন্য তাদের প্রথম ফটোশুট করল। তাদের ছবি দেখে আমার পুরান স্মৃতি মনে পড়ে গেল।’
ফটোশুটের ছবি শেয়ার করে মাহদিয়া নাঈমও কিছু কথা লিখেছেন মাহদিয়া নাঈম নামের ফেসবুক পেজে। তিনি লিখেছেন, ‘দী (নামিরা নাঈম) এবং আমি সুন্দর ভারসাম্য রেখে চলি। যখন আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তখন আমরা দুবার ভাবি না, সেটা হোক অসম্ভব কিছু বা একে অপরকে ধরে রাখার মতো কিছু। বাবা-মা আমাদের সব সময় শিখিয়েছেন যে পরিবারের সমর্থনের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভেতরের শক্তি। (সংক্ষিপ্ত)’
মন্তব্য