সাংবাদিকের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর খেতাব জিতেছেন ইরানের তারকা শিল্পী জার আমির ইব্রাহিমি। হলি স্পাইডার সিনেমায় ৪১ বছরের এ অভিনেত্রী যৌনকর্মীদের সিরিয়াল খুনের সমাধান করার চেষ্টা করেছেন।
ইরানি জার আমির ইব্রাহিমির এই অর্জনের পেছনের গল্পটাও রোমাঞ্চকর। প্রেম নিয়ে একটি প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে পড়লে, ফ্রান্সে পাড়ি জমান ইব্রাহিমি। কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি।
ইব্রাহিমি বলেন, ‘এই মঞ্চে আসতে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। আমার গল্পটা খুব সহজ ছিল না। অনেক অপমানের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তবে সেখানে সিনেমা ছিল।’
ড্যানিশ-ইরানি আলি আব্বাসি পরিচালিত হলি স্পাইডার সিনেমাটি একজন শ্রমজীবী মানুষের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত, যিনি ২০০০ সালের গোড়ার দিকে যৌনকর্মীদের হত্যা করেছিলেন। ওই হত্যাকারী ‘স্পাইডার কিলার’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
ইরানে শুট করার অনুমতি না পাওয়ায় জর্ডানের একটি শহরে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল। ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে ইরানের অন্যতম পবিত্র শহর মাশহাদ, যেখানে খুনগুলো হয়েছিল।
ইব্রাহিমি ২০-এর দশকের গোড়ার দিকে ইরানে তার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি সোপ অপেরা ‘নার্গেস’-এ সহায়ক ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করে তারকা হয়ে ওঠেন।
Zar AMIR EBRAHIMI, lauréate du Prix d'interprétation féminine pour HOLY SPIDER (LES NUITS DE MASHHAD) de Ali ABBASI.
-
Zar AMIR EBRAHIMI, award winner for Best actress in HOLY SPIDER by Ali ABBASI. #Cannes2022 #Palmares #Awards #HOLYSPIDER #Photocall pic.twitter.com/9Jxw42xZRM— Festival de Cannes (@Festival_Cannes) May 28, 2022
‘ইরানে দেখানো অসম্ভব’
সিনেমায় ইব্রাহিমির চরিত্রটিও প্রতারণামূলক গুজব এবং পুরুষ দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছে। সিনেমায় দেখানো হয়, খুনিকে গ্রেপ্তারে সরকারের আগ্রহ কম ছিল, বরং ধর্মবোধকে প্রতিষ্ঠার কারণে তিনি একজন নায়কে পরিণত হয়েছিলেন।
ইব্রাহিমি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই সিনেমাটি নারীদের নিয়ে, তাদের শরীর নিয়ে, মুখ, চুল, হাত, পা, স্তন, যৌনতা নিয়ে। ইরানে দেখানো অসম্ভব সবকিছু দিয়ে পূর্ণ একটি সিনেমা’।
‘সিনেমাটিকে বিতর্কিত চোখে দেখা উচিত নয়’
সাংবাদিকদের ইব্রাহিমি বলেন, ‘এখানে দেখানো সবকিছুই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। ইরানের লোকেরাও যে যৌনতায় অংশ নেয়, তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ইরানের প্রতিটি শহরে যৌনবৃত্তি আছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানে বেড়ে ওঠেন ইব্রাহিমি। সেখানে তিনি নাটকের স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়সে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। জ্ঞানী এবং নৈতিক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য দ্রুত পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি।
নির্বাসিত জীবন
২০০৬ সাল। কালোবাজারে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও নিয়ে তদন্তে নামে ইরানের কর্মকর্তারা। ভিডিওতে উঠতি এক তারকাকে (ইব্রাহিমি) তার বন্ধুর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।
গ্রেপ্তারের ভয়ে ভিডিওর প্রকৃত মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সে সময়ে ইব্রাহিমি দাবি করেছিলেন, ‘অনৈতিক প্রচারণার’ শিকার হয়েছেন তিনি। এরপর মামলাটি এতটাই হাই-প্রোফাইল হয়ে ওঠে যে তেহরানের প্রধান প্রসিকিউটর ব্যক্তিগতভাবে তা পরিচালনা করেন।
ইব্রাহিমি তখন প্যারিসে চলে আসেন। ফরাসি বলতে না পারায় অদ্ভুত সব চাকরি তাকে করতে হয়েছে।
‘আমি ফ্রান্সের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। আমাকে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না। আমি কোথায় নেমেছি তা বের করতে আমার দুই থেকে তিন বছর লেগেছে।’
পুরস্কার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ইব্রাহিমি বলেন, ‘তারা আমাকে সব জায়গা থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। সিনেমা থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। হয়তো আত্মহত্যা করতে, মরতে। তবে শেষ পর্যন্ত আমি এই পুরস্কার নিয়ে এসেছি।’
‘ইরানে দেখানো অসম্ভব’
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার নিউ ইয়র্কের কুইন্সের একটি বাসায় মানসিক অবসাদে ভোগা ওই যুবককে বাধ্য হয়েই গুলি করতে হয় বলে পুলিশ দাবি করেছে।
নিউ ইয়ক টাইমস বলছে, ১৯ বছর বয়সী উইন রোজারিওকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তিনি ওজোন পার্কের ১০৩ নম্বর স্ট্রিটে দ্বিতীয় তলার বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।
পুলিশ জনিয়েছে, ৯১১ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ ওই যুবকের বাসায় গিয়েছিল। এ সময় কাঁচি দিয়ে অফিসারদের হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এরই এক পর্যায়ে তার পায়ে গুলি চালানো হয়।
নিহতের ভাই উশতো রোজারিও বলেন, মা উইনকে ফেরাতে চেষ্টা করছিলেন। তবে এর মধ্যেই পুলিশ গুলি ছুড়েছে। এই গুলি ছোড়ার কোনো দরকার ছিল না।
পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টহল প্রধান জন চেল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুজন অফিসার মানসিক যন্ত্রণায় থাকা ব্যক্তি সম্পর্কে ৯১১ নম্বরে একটি কল পেয়ে সেখানে যায়। বাধ্য হয়েই গুলি চালাতে হয়েছে। বেশ উত্তেজনাপূর্ণ, বিশৃঙ্খল এবং বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়েছিল। রোজারিও ৯১১ নম্বরে কল করেছিলেন।
উইনের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও জানান, তার পরিবার ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে যান। উইনের স্বপ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া। পরিবারের গ্রিন কার্ড পেতে দেরি হওয়ায় সেটি আর হয়নি।
নিহতের ভাই উশতো রোজারিও জানান, তার ভাই দুই বছর আগে ওজোন পার্কের জন অ্যাডামস হাই স্কুল থেকে স্নাতক করেছে। সম্প্রতি বিষণ্ণ ছিলেন তিনি। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং অ্যামাজন ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের বরাত দিয়ে বুধবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক ২০১৬ সালে ‘ঘোস্টবাস্টারস’ নামে একটি গোপন প্রজেক্ট চালু করেছিল যাতে স্ন্যাপচ্যাট ও এর সার্ভার ব্যবহারকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা যায়।
স্ন্যাপচ্যাটের ভূতের (ঘোস্ট) মতো লোগোর সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এটির নাম দিয়েছে ‘প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারস’।
আদালতের নথি অনুসারে, ঘোস্টবাস্টারস প্রজেক্টটি স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নথিতে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা সে সময়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক ইমেইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে মার্ক এমন একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই।
তাই তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন মার্ক। এর জন্য একটি কাস্টম সফটওয়্যার তৈরির কথা জানান তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রকৌশলীরা ঘোস্টবাস্টারস তৈরি করেন। পরে অ্যামাজন এবং ইউটিউবকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্পটি প্রসারিত করা হয়ে।
ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের একটি দল এবং প্রায় ৪১ জন আইনজীবী প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারে কাজ করেছেন, তবে ফেসবুকের কিছু কর্মী এ প্রকল্পের বিপক্ষে ছিলেন। তারা এটি নিয়ে তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হওয়ার পরও গাজায় আক্রমণ থেমে নেই। ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় ৮১ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৩ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েল গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে আসছে। এসব হামলায় এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৩২ হাজার ৪১৪ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৭৮৭ জনেরও বেশি।
গাজায় এসব হামলার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল।
প্যালেস্টাইনের অবরুদ্ধ গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে একটি আবাসিক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গাজায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার একটি পরিবারের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে প্যালেস্টাইনের বার্তা সংস্থা ‘ওয়াফা’।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজার বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্র আল-শিফা ও এর আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনী ব্যাপক আকারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে রাফাহ শহরের একটি আবাসিক বাড়িতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় নয় শিশুসহ ১৮ জন নিহত হন।
এ ছাড়া রাফাহ শহরের উত্তর-পূর্বে নাসর এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র গোলাবর্ষণেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
প্রায় ছয় মাসের টানা ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্ত্যুচ্যুত ১৪ লাখ গাজাবাসী বর্তমানে শরণার্থী হিসেবে রাফাহতে অবস্থান করছেন।
সোমবার (২৫ মার্চ) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির শর্ত রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়।
প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাব অবশ্যই বাস্তবায়ন হতে হবে। কোনো পক্ষ এই যুদ্ধবিরতি ও এর শর্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা নেতানিয়াহুর
এদিকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটি, রাফাহসহ পুরো উপত্যকাজুড়ে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
হামাসের যুদ্ধবিরতির দাবিকে ‘ভ্রান্তিমূলক’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মঙ্গলবার এক এক্স বার্তায় বলেছে, ‘ইসরায়েল তার যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন, বন্দিদের মুক্তি ও হামাসকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা পর্যন্ত গাজায় সামরিক আক্রমণ চালিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে কনসার্টে হামলায় ‘উগ্র ইসলামপন্থিদের’ হাত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই নৃশংসতার পেছনে ইউক্রেনের হাত থাকতে পারে।
শুক্রবার ওই হামলার ঘটনার পর এই প্রথমবারের মতো তিনি এমনটা বলেছেন। তবে এই হামলার দায় স্বীকার করা আইএস-এর কথা উল্লেখ করেননি পুতিন।
শুক্রবারের ওই ভয়াবহ হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।
ছদ্মবেশী বন্দুকধারীরা ক্রোকাস সিটি হলে ঢুকে কনসার্টে অংশগ্রহণকারীদের ওপর গুলি চালায় এবং ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অন্তত ১৩৭ জন নিহত হয়। হামলায় ১৮০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মোট ৯৭ জন এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
টেলিভিশনে সোমবার সম্প্রচারিত এক বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘আমরা জানি এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে উগ্র ইসলামপন্থিদের হাতে, যাদের আদর্শের বিরুদ্ধে শত শত বছর ধরে লড়াই করছে মুসলিম বিশ্ব।’
পুতিন বলেন, ‘তবে অবশ্যই এই প্রশ্নের জবাব দরকার- অপরাধ করার পর সন্ত্রাসীরা কেন ইউক্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল? ওখানে তাদের জন্য কে অপেক্ষা করছিল?’
ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রভিন্স শুক্রবার থেকে বেশ কয়েকবার বলেছে যে, তারা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে এবং আইএসআইএল-অনুমোদিত মিডিয়া চ্যানেলগুলো হামলার সময় বন্দুকধারীদের গ্রাফিক ভিডিও প্রকাশ করেছে।
আইএস হামলার দায় স্বীকার করার পর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা তাদের দাবির পক্ষে সাফাই গায়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ফ্রান্সের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, এর জন্য আইএসআইএল নামে একটি সংগঠনকে দায়ী করা হচ্ছে।’
এর আগে সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের রাশিয়ায় তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানান।
এই হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৭ মার্চ মস্কোকে সতর্ক করেছিল বলে যে খবর বেরিয়েছে, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের গোয়েন্দা তথ্য গোপনীয়।’
আরও পড়ুন:২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে মিখাইল মিশুস্টিন বলেন, ‘রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের পক্ষ থেকে এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনায় বিকশিত হচ্ছে, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এগিয়ে যাচ্ছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী এবং উভয়ের স্বার্থরক্ষা হবে।’
রুশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও তার দায়িত্বশীল কাজে নতুন সাফল্য এবং বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশি জনগণের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরের প্যাটাপস্কো নদীর ওপর নির্মিত ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতু। এ ঘটনায় বহু হতাহতের শঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় সময় সোমবার রাত দেড়টার দিকে সেতুটিতে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী একটি পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কা লাগে। এতে সেতুর ওপর থাকা অনেকগুলো গাড়ি নিয়ে এর একাংশ পানিতে ধসে পড়ে।
এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জন নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাল্টিমোর সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট।
প্রাথমিক বিবৃতিতে মেরিল্যান্ড পরিবহন কর্তৃপক্ষ (এমটিএ) জানিয়েছে, ‘আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের ওপর নির্মিত আই-৬৯৫ কি ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। তাই প্যাটাপস্কো নদীর সংযোগ সড়ক এড়িয়ে চলতে চালকদের অনুরোধ করা হচ্ছে।’
শুরুতে তারা জানায়, ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুতে একটি দুর্ঘটনার কারণে আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাল্টিমোর মেয়র জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং তারা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
বাল্টিমোর ফায়ার বিভাগের কমিউনিকেশন পরিচালক কেভিন কার্টরাইট রাত ৩টার দিকে বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা পানিতে নেমে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে সাতজন পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে জরুরি নম্বরে কল আসে। এতে বলা হয় বাল্টিমোর সেতুতে বাণিজ্যিক জাহাজ ধাক্কা দেয়ায় এক কলাম ভেঙে সেতুটি ধসে পড়েছে। ওই সময় সেতুটিতে একাধিক যানবাহন ছিল।
কার্টরাইট বলেন, ‘আমরা এখন ডুবে যাওয়াদের উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে কতজন মানুষ পানিতে পড়ে গেছে সে সম্পর্কে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।’
মন্তব্য