আর দুই বছর পরেই বলিউডে যাত্রার চার দশক পূর্ণ করবেন ‘ধকধক গার্ল’ খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত। নব্বইয়ের দশকে ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকা এই অভিনেত্রী উপহার দিয়েছেন একের পর এক হিট সিনেমা।
সেই সময়েই ছক ভেঙে নানা বোল্ড লুক ও চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি, তবে আসন্ন সিনেমার যে চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তা আগে কখনো করেননি। এই প্রথমবার সমকামী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাধুরী।
সিনেমার নাম মাজা মা। এটি পরিচালনা করছেন আনন্দ তিওয়ারি। দুই সপ্তাহ আগে ইনস্টাগ্রামে সিনেমাটির পোস্টারও প্রকাশ করেছেন পরিচালক।
ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিনেমায় মাধুরী সমকামী চরিত্রে অভিনয় করবেন। সিনেমায় একজন প্রেমময় মা যখন তার ছেলের বিয়ের পরিকল্পনা করছেন, তখন তার যৌন প্রবণতা দ্বন্দ্ব, উন্মাদনা ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়।
এখানে মাধুরী দীক্ষিতের চরিত্রটি খুবই সংবেদনশীলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। তাই তার মতো একজন তারকা এই ধরনের আউট অফ দ্য বক্স চরিত্রে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।
সিনেমাটি আসবে অ্যামজন প্রাইম ভিডিওতে। মাধুরী ছাড়াও এতে অভিনয় করছেন গজরাজ রাও, ঋত্বিক ভৌমিক, বরখা সিং, সৃষ্টি শ্রীবাস্তব, মালহার ঠাকর, শীবা চাড্ডা, রাজিত কাপুর এবং সিমোন সিংসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:
দেশের প্রচলিত আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডারেরা। তারা নানামুখী হয়রানির শিকার হচ্ছে। অথচ ন্যায্য নাগরিক অধিকারটুকুও পাচ্ছে না।
লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর আইনি সুরক্ষা ও অধিকার সংরক্ষণে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আলোচকেরা এমন মন্তব্য করেন। এলইজিডি প্রকল্পের সহযোগিতায় এই সভার আয়োজন করে ‘সম্পর্কের নয়া সেতু’।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জয়া সিকদার বলেন, ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ফলে আইনি সুরক্ষা ও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন এই জনগোষ্ঠীর মানুষেরা। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা ঠিকমতো স্বাস্থ্যসেবাও পান না।’
নারী পক্ষের সদস্য আইনজীবী কামরুন নাহার বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গের অনেক মানুষ সমাজের ভয়ে নিজের পরিচয় গোপন রাখে। কারণ পরিচয় প্রকাশ হলে হয়রানির শঙ্কা থাকে। তবে সরকারি-বেসরকারি প্রচেষ্টায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
‘দেশে প্রতিদিন ৩০০ ট্রান্সজেন্ডার শিশু জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে এদের কেউ কেউ হত্যা বা পাচারের শিকার হয়। দেশে সবচেয়ে বেশি পাচারের শিকার হয় সাতক্ষীরায়।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরও অংশ নেন মানবাধিকার কর্মী মুশফিকা লাইজু, নাগরিক উদ্যোগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাদিরা পারভীন, আশার আলোর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সানোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বাবা-মায়ের দেয়া নাম বদলাতে চান ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ও মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের ট্যান্সজেন্ডার মেয়ে।
গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের সুপ্রিম কোর্টে তিনি নাম বদল ও নতুন জন্ম সনদ চেয়ে আবেদন করেন বলে এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সম্প্রতি ১৮ বছরে পা দেয়া জেভিয়ার আলেকজান্ডার মাস্ক তার বাবা বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের মাস্কের সঙ্গে আর কোনোভাবেই সম্পর্কিত থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন।
আদালতের কাছে ছেলে থেকে মেয়ে পরিচয়ের স্বীকৃতি এবং বর্তমান নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম নিবন্ধন করতে আবেদন করেন তিনি।
আলেকজান্ডার মাস্ক বলেন, 'আমি আর কোনোভাবেই আমার জন্মদাতা বাবার সঙ্গে থাকতে বা তার নাম-পরিচয় বহনের সম্পর্ক রাখতে চাই না।'
ইলন মাস্ক-জাস্টিন উইলসনের ঘরে জন্ম নেন আলেকজান্ডার মাস্ক। ২০০৮ সালে তার বাবা-মায়ের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাস্টিনের সঙ্গে ঘর করার পর আরও দুই নারীকে বিয়ে করেছিলেন ইলন মাস্ক। অবশ্য এই দুই স্ত্রীর সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয় তার।
মেয়ের নাম পরিবর্তনের আবেদনের ব্যাপারে মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলা বা তার নিজের কোনো আইনজীবীর মন্তব্য জানা যায়নি।
তবে এই আবেদনের মাসখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির প্রতি সমর্থনের কথা জানান ইলন মাস্ক; যে পার্টির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবস্থান দেশজুড়ে ট্রান্সজেন্ডার অধিকারকে সীমিত করার আইনের পক্ষে।
এর আগে ২০২০ সালে এক টুইট বার্তায় ইলন মাস্ক বলেছিলেন, 'আমি পুরোপুরি ট্রান্সজেন্ডারদের সমর্থন করি। কিন্তু নারী বা পুরুষ পরিচয় বেছে নেওয়া একটি দুঃস্বপ্ন।'
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক নারী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না ট্রান্সজেন্ডার। এ প্রশ্নে হওয়া ভোটের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাঁতারের বিশ্ব পরিচালন সংস্থা- ফিনা। তারা বলেছে, যেসব নারী পুরুষালি আচরণের যেকোনো শারীরিক অভিজ্ঞতা অনুভব করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে ১৫২টি দেশের ফেডারেশন ভোটে অংশ নেয়। ৭১ শতাংশ ভোট পড়ে ট্রান্সজেন্ডারদের বাদ দেয়ার পক্ষে।
ফিনা বৈজ্ঞানিক প্যানেলের একটি প্রতিবেদন বলছে, ট্রান্স নারীরা ওষুধের মাধ্যমে তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমানোর পরও সিসজেন্ডার নারী সাঁতারুদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য সুবিধা পেয়ে থাকে।
ফিনার নতুন ৩৪ পৃষ্ঠার নীতিতে বলা হয়েছে, পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তর ক্রীড়াবিদরা কেবল তখনই নারী বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে, যখন তারা এটা প্রমাণ করতে পারবে যে ট্যানার স্টেজ-টুর বাইরে পুরুষ বয়ঃসন্ধির কোনো কিছু অনুভব করেনি।
নতুন নীতি সম্পর্কে ফিনার প্রেসিডেন্ট হুসেন আল-মুসাল্লাম বলেন, ‘ক্রীড়াবিদদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রক্ষা করতে হবে। আমাদের ইভেন্টগুলোতে, বিশেষ করে ফিনা প্রতিযোগিতায় নারী বিভাগে প্রতিযোগিতামূলক ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।’
এই জটিলতায় যারা পড়বেন তাদের আশাহত হওয়ার কারণ নেই। ফিনার নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, কিছু ইভেন্টে ট্রান্স নারীদের জন্য একটি ‘উন্মুক্ত’ বিভাগ খোলা হবে।
ফিনার সভাপতি মুসাল্লাম বলেন, ‘আমরা সব সময় ক্রীড়াবিদকে স্বাগত জানাই। একটি উন্মুক্ত বিভাগ তৈরির অর্থ হলো, প্রত্যেকেরই অভিজাত স্তরে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। এটি আগে করা হয়নি। তাই ফিনাকে পথ দেখাতে হবে।’
এর আগে ২০২০ সালে বিশ্ব রাগবি প্রতিযোগিতায় এমন সিদ্ধান্ত এসেছিল। তবে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দিয়ে বাছাই করাকে অনেকেই করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ। আরও অনেক প্রতিযোগিতায় এই পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয় ট্রান্স নারীদের।
যুক্তরাষ্ট্রে লিয়া টমাস এক ট্রান্স নারী সাঁতারু, যিনি কলেজভিত্তিক একটি সাঁতার প্রতিযোগিতায় (পুরুষ বিভাগে) গেল মার্চে শিরোপা জেতেন। বিষয়টি তখন বেশ আলোচিত হয়। অনেকেই দাবি তুলেছিলেন, এ ধরনের সাফল্য অবশ্যই উদযাপন করা উচিত। ফিনার নতুন সিদ্ধান্তে প্যারিস অলিম্পিকে থমাস আর নারী বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
সাবেক ব্রিটিশ সাঁতারু শ্যারন ডেভিস অবশ্য এই খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারব না যে আমি আমার খেলাধুলার জন্য কতটা গর্বিত। ফিনা এবং ফিনা প্রেসিডেন্ট বিজ্ঞানের ভিত্তিতে এমন করছেন। সাঁতার সব সময় সবাইকে স্বাগত জানাবে, তবে ন্যায্যতা হলো খেলার ভিত্তি।’
I can’t tell you how proud I am of my sport @fina & @fina_president for doing the science, asking the athletes/coaches and standing up for fair sport for females. Swimming will always welcome everyone no matter how you identify but fairness is the cornerstone of sport https://t.co/1IaMkIFOkX
— Sharron Davies MBE (@sharrond62) June 19, 2022
আরেক সাবেক ব্রিটিশ সাঁতারু ক্যারেন পিকারিং বলেন, ‘উপস্থাপনা, আলোচনা এবং ভোটের জন্য ফিনা কংগ্রেসে ছিলাম। যেকোনো ক্রীড়াবিদ যারা এখন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না তাদের জন্য সহানুভূতি জানাতে পারি। নারীদের বিভাগে প্রতিযোগিতামূলক ন্যায্যতা অবশ্যই রক্ষা করা উচিত।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই প্রথম দুজন ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন।
আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই প্রথম দুজন ট্রান্সজেন্ডার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।’
এই দুই ট্রান্সজেন্ডার হলেন নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার প্রীতি ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হাসু।
২০১৪ সালে পুরুষ ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হন প্রীতি। গত বছর তিনি ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হন।
প্রীতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে। এবার নিজের পরিচয়ে ভোট দিতে পারব৷ কাকে ভোট দেব তা এখন বলব না। কেন্দ্রে গিয়ে যাকে ভালো লাগবে তাকে ভোট দিব।’
হাসু বলেন, ‘আমি ও প্রীতি ছাড়া এখানে পৌনে ৪০০ হিজড়া আছেন। তাদের কেউ পুরুষ ভোটার, কেউ নারী ভোটার। আমরাই প্রথম ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে ভোট দেব।’
২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভোটার তালিকা বিধিমালায় পরিবর্তন এনে ট্রান্সজেন্ডার ক্যাটাগরি যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে সারা দেশে ৪৫৪ জন ট্রান্সজেন্ডার ভোটার আছেন। এর আগে ট্রান্সজেন্ডাররা নারী অথবা পুরুষ পরিচয়ে ভোটার হতেন।
১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আছেন পাঁচজন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার, কামরুল আহসান বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৭ ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন ও ট্রান্সজেন্ডার ভোটার দুজন।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ট্রান্সজেন্ডার এক শিক্ষার্থী।
ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এই তথ্য জানিয়েছেন।
ভর্তিচ্ছু এ শিক্ষার্থী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার জানা মতে, এবারই প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় কোনো ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন।’
ভর্তির ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের জেন্ডার নির্ণয়ের অপশন নিয়ে তিনি বলেন, “আবেদনের সময় ছাত্র বা ছাত্রী এ রকম একটু অপশন আছে। এটির উত্তর আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিই না। এটা আমরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড থেকে নিই।
“বোর্ডে যেটা থাকে, সেটাই নিই। সেখানে আমরা এখন পর্যন্ত ‘আদার্স’ নামে কোনো অপশন পাইনি। এই শিক্ষার্থী হয়তো ছাত্র বা ছাত্রী কোনো অপশনে পরীক্ষা দিয়েছে।”
ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এই শিক্ষার্থী যদি চান্স পায়, তাহলে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা বড় অগ্রগতি। আশা করি সে ভালো করবে।
‘সে চান্স পেলে আমরা খুশি হব। সে যদি চান্স পায়, তাকে কোন হলে দেব, সেটা নিয়ে আমাদের এখন ভাবতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পয়সা চাইবে কেন? সে কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে না? এটা একটা মুভমেন্ট। এই মুভমেন্টকে এগিয়ে নিতে হবে।’
‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, ‘সে (ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী) যদি সুযোগ পায়, তবে আমরা বেশি খুশি হব। তার সামনে এখন দুইটা চ্যালেঞ্জ আছে। একটি হলো এমসিকিউ, আরেকটি রিটেন। সে সব চ্যালেঞ্জ পার করে যদি ভর্তি হতে পারে, তাহলে এটি বিরাট অগ্রগতি।’
মেডিক্যাল সেন্টারে পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মোহাম্মদ মর্তুজা মেডিক্যাল সেন্টারে জলবসন্তে আক্রান্ত এক নারী শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, ‘এই শিক্ষার্থী গতকাল (শুক্রবার) রাতে তার সমস্যার কথা জানিয়ে আমাদের কাছে আবেদন করেছে। আমরা অনুমোদন দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তার কাগজপত্র দেখে আমাদের মনে হয়েছে, যে রুমে তার সিট পড়েছে, সেখানে সে গেলে একটা প্যানিক তৈরি হতে পারে। তাই আমরা তাকে আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারে পরীক্ষা দেয়ার ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছি।
‘আমাদের একজন শিক্ষক সেখানে সার্বক্ষণিক ছিলেন। আর মেডিক্যাল সেন্টারের একজন অ্যাটেন্ডেন্ট ছিলেন। ফলে কোনো অসুবিধা হয়নি।’
আরও পড়ুন:নেচে-গেয়ে উল্লাস করে ভোট চাচ্ছেন একদল ট্রান্সজেন্ডার। নিজেরাই গান পরিবেশন করছেন। পাশাপাশি ভোটও চাচ্ছেন। নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে শুরু করে অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন তারা।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে তাদের এই প্রচার।
বুধবার সারা দিন এ ধরনের প্রচার দেখা যায়। তাদের নাচ দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
নাগি ও ববিতা নামে দুজন ট্রান্সজেন্ডার বলেন, ‘আমরা মানুষের কাছে হাত পেতে খাই। সাক্কু ভাই আমাদের ভালোবাসেন। তিনি বলেছেন, এবার নির্বাচিত হলে আমাদের চাকরি দেবেন।
‘আমরাও আর মানুষের কাছে হাত পাততে চাই না। তাই সাক্কু ভাইয়ের জন্য ভোট চাচ্ছি।’
মেয়রপ্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার মানুষগুলো আমাকে ভালোবাসে। আমিও তাদের আশ্বস্ত করেছি, তাদের যেন আর কখনও হাত পেতে খেতে না হয়। তাদের চাকরির ব্যবস্থা করব।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পাঁচ মেয়র প্রার্থীসহ ১৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। আগামী ১৫ জুন ১০৫টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হবে।
আরও পড়ুন:বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়নের বারোপুর তালুকদার পাড়ার হোচিমিন একজন সফল মানুষ। তবে ট্রান্সজেন্ডার নারীর পরিচয়ের কারণে গত মার্চ মাসের শেষদিকে এলাকায় তার পরিবারকে একঘরে করে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এই প্রক্রিয়াটি শুরুর পেছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ উঠেছে হোচিমিনেরই চাচা সম্পর্কীয় প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে।
পরিবারে কোনো পুরুষ নেই এমন অযুহাত দেখিয়ে হোচিমিনদের সম্পদ দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তারই চাচার বিরুদ্ধে!
হোচিমিন ইসলাম কাজের সূত্রে ঢাকায় থাকেন। আর গ্রামের বাড়িতে থাকেন তার মা রেহেনা খাতুন ও বোন নিলুফা ইয়াসমিন। হোচিমিনের বাবা বাবুল মিয়া নৈশ প্রহরী ছিলেন। প্রায় ৯ বছর আগে তিনি মারা যান। এরপর থেকে নিলুফা ও হোচিমিনকে নিয়ে বসবাস করছিলেন তাদের মা রেহেনা খাতুন।
স্থানীয় নুনগোলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বেসরকারি টিএমএসএস নার্সিং কলেজ স্নাতক ডিগ্রি নেন হোচিমিন। পরে ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত হন।
হোচিমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০ সালে আমি মা ও বোনকে বলে ট্রান্সজেন্ডার নারীতে নিজেকে রূপান্তরিত করি। গত বছর আমাকে নিয়ে টিভি৯বাংলা নামে একটি চ্যানেলে ডকুমেন্টারি প্রচার হয়। এ থেকে এলাকার মানুষ বিষয়টি জানতে পারে। এরপর থেকে এলাকায় আমাকে নিয়ে কটূ কথা শুরু হয়। আমার মা-বোনকে অনেকে খোঁটা দেয়া শুরু করেন।’
হোচিমিন জানান, ট্রান্সজেন্ডার নারীর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গত মার্চে তার মায়ের কাছে এসে সম্পত্তির ভাগ দাবি করেন চাচা রেজাউল করিম। বলেন, ‘তোমার তো এখন দুটোই মেয়ে। তাহলে নিয়ম অনুসারে ভাইয়ের অবর্তমানে আমি সম্পত্তির ভাগ পাবো।’
পরিবারটিকে একের পর এক হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগও উঠেছে রেজাউলের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে থানায় জিডি করতে বাধ্য হন হোচিমিন। গত ১৩ মার্চ দুই পক্ষকেই থানায় ডেকে মীমাংসা করে দেয় পুলিশ।
হোচিমিনের অভিযোগ, সম্পদ দখলের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় ওই মীমাংসা মেনে নেননি তার চাচা ও প্রতিবেশীরা।
হোচিমিনের মা বলেন, ‘রেজাউলকে থানায় ডাকার জন্য সেখানে তারা আমাদের দায়ী করেন। সিদ্ধান্ত হয়, পাড়ার কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। সবাইকে বলে দেয়া হয়, হিজড়ার পরিবারের সঙ্গে যেন কোনো রকম সম্পর্ক না থাকে।’
রেজাউল করিমকে সমর্থনের অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আহসান হাবীব হারুন, স্থানীয় রাহিজুল ইসলাম তালুকদার, খায়রুল, শাহিনসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে।
হোচিমিনের বোন নিলুফা ইয়াসমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত শবেবরাতের দিন একঘরে করার ঘোষণা দেয়ার পর আমাদের পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। যারা আমাদের একঘরে করেছেন, তাদের বাড়ির মেয়েরা সকাল-বিকাল গালাগাল করতে শুরু করে। সব সময় তারা হোচিমিনকে নিয়ে আমাদের দোষারোপ করতে থাকে। আমার সন্তানদের সঙ্গেও অন্য বাচ্চাদের খেলাধুলো করতে দেয় না।’
নিলুফা জানান, তাদের পাড়ার দুটি দোকান থাকলেও তাদের কাছে কোনো পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে না।
হোচিমিনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও আপসে সাক্ষি দেয়ার কারণে স্থানীয় আতাউর রহমান, শাজাহান আলী তালুকদার, লুৎফর রহমান দুদু ও ইমরুল হোসেনও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইমরুল হোসেনের স্ত্রী নাদিরা জানান, আপস থেকে ফেরার পরের দিন তাদের বাড়ির বর্জ্য পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আতাউরের বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল, পরে সেটি ঠিক করা হয়।
শাহাজান আলী তালুকদার বলেন, ‘বাপ মরা দুজনের হয়ে কথা বলায় আর থানায় আপসে সাক্ষি হওয়ায় আমাকেও একঘরে করা হয়েছে।’
তবে যাদের বিরুদ্ধে একঘরে করার অভিযোগ তারা বিষয়টি স্বীকার করছেন না। এদের মধ্যে অভিযুক্ত রাহিজুল তালুকদারও সম্পর্কে হোচিমিনের চাচা হন। তিনি বলেন, ‘একঘরে করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। হোচিমিন তো মেয়েও না, ছেলেও না। ওদের বুঝানো কষ্টকর।’
সম্পত্তিতে ভাগ দাবি করার বিষয়টি স্বীকার করে হোচিমিনের চাচা রেজাউল করিম তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কাউকে একঘরে করতে বলিনি। তবে মার্চ মাসে গ্রামে কথা উঠল আমাকে কেন থানায় নিয়ে যাওয়া হল। গ্রামে কেন বিচার চাইল না হোচিমিন। এ জন্য হয়তো তাদের একঘরে করতে পারে, তবে আমি এর সঙ্গে জড়িত না।’
অভিযুক্ত হারুন বলেন, ‘একঘরে তো আমি করিনি। ওরাই তো কোনো কিছু হলে থানায় জিডি, অভিযোগ করে। এসব কারণেই মহল্লাবাসী তাদের একঘরে করেছে। আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘হোচিমিনের বিষয়টি আমি জানি। এর আগেও তিনি আইনের সহায়তা চেয়েছিলেন। আমরা তাকে সহযোগিতা করেছিলাম। ওই সমস্যা এখনও সমাধান না হলে আমরা আবার তাকে সহযোগিতা করব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য