পুরোনো সিনেমা হল সংস্কার ও নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য ঋণ নিতে রাজি আছেন হল মালিকরা। কিন্তু সেই ঋণ পরিশোধের জন্য দেশের সিনেমার পাশাপাশি উপমহাদেশের সিনেমা আমদানির দাবি করেছেন হল মালিকরা।
তারা বলছেন, ঋণ পরিশোধের জন্য হল মালিকদের প্রয়োজন আয়। দেশের সিনেমা দিয়ে সেই আয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই হল মালিকদের সীমিত আকারে ভারতীয় বা উপমহাদেশের সিনেমা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমদানি করার সুযোগ দেয়া হোক। সেটা বছরে ১০-১৫টিও হতে পারে।
হল মালিকরা মনে করছেন, এটি করা হলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। এমনকি এতে দেশে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বাড়বে বলে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তথ্য ভবন মিলনায়তনে ‘দেশের বিদ্যমান সিনেমা হল সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল/সিনেপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে অংশীদারদের সঙ্গে ঋণ সুবিধাপ্রাপ্তি ও ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার’বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই হল মালিকরা উপমহাদেশের সিনেমা আমদানিসহ নানা দাবি উপস্থাপন করেন।
সিনেমা আমদানির ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পরিচালক, প্রযোজক ও হল মালিকরা চাইলেও শিল্পী সমিতির নেতারা উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানিতে মত দিচ্ছিলেন না। এখন আবার কথা বলতে হবে। সবাই যদি একমত হন, অবশ্যই কিছু সিনেমা আমদানি করা যেতে পারে।’
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর থেকে ভারতীয় সিনেমার আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পরও এ নিষেধাজ্ঞা আর প্রত্যাহার করা হয়নি। হল মালিকরা বিভিন্ন সময় ভারতীয় সিমেনা আমদানি ও প্রদর্শনের উদ্যোগ নিলে চলচ্চিত্র পরিচালক ও কলাকুশলীদের আন্দোলনের কারণে সেসব পদক্ষেপ বাতিল হয়।
তথ্য ভবনে বৃহস্পতিবারের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ১০৭ জন হল মালিক। এর মধ্যে নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণে আগ্রহী সাতজন ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন রূপালী, অগ্রণী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি। মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোকবুল হোসেন।
প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাশ হল মালিকদের পক্ষে মূল আলোচনা শুরু করেন। আলোচনায় সুদীপ্ত বলেন, ‘১৯৯৯ সালে সারা দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৩৫টি; শুধু রংপুর জেলাতেই ছিল ১০০টি সিমেনা হল। এখন সারা দেশে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০টি।’
সুদীপ্ত জানান, ‘ঋণ নিয়ে পরিশোধ করব কীভাবে?’ প্রশ্নটি তার সবচেয়ে বেশি শুনতে হয় হল মালিকদের কাছ থেকে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সুদীপ্ত দাবি করেন, ‘ঋণ নেয়ার পর শুধু দেশের সিনেমা প্রদর্শন করে হল মালিকরা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন উপমহাদেশের সিনেমা আমদানি। সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে যে পরিমাণ সিনেমা প্রয়োজন, দেশের পরিচালক-প্রযোজক সে পরিমাণ সিনেমা দিতে পারছেন না, আর খারাপ মানের জন্য বাংলা সিনেমার দর্শকও এখন অনেক কম। তাই প্রয়োজন বিদেশি সিনেমা।’
সুদীপ্ত মনে করেন, রোজার ঈদে যেসব সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, তেমন সিনেমা যখন দেশের পরিচালক-প্রযোজক নিয়মিত দিতে পারবেন, তখন বিদেশি সিনেমা না আনলেও চলবে। দর্শক সিনেমা দেখতে এলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। তখন শত শত সিনেপ্লেক্সও নির্মাণ হবে বলে আশা করেন তিনি।
সুদীপ্তর কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন রাজধানীর অভিসার সিনেমা হলের মালিক স্বপন আলী ভুইয়া এবং প্রদর্শক সমিতির আরেক উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন।
সুদীপ্তর প্রস্তাবের সঙ্গে মিয়া আলাউদ্দিন যোগ করে বলেন, ‘ঋণ দেয়া-নেয়ার পদ্ধতি সহজ হতে হবে এবং ঋণের গ্রেস ইয়ার (ঋণ নেয়ার পর নির্দিষ্ট একটি সময়, যে সময়ের মধ্যে লোনের কিস্তি দিতে হয় না, তবে সুদ যুক্ত হতে থাকে) বৃদ্ধি করতে হবে।’
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী এলাকার পুর্বাশা সিনেমা হলের মালিক খোরশেদ আলম উপমহাদেশের সিনেমা আনার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, ‘আমি পুরোনো হল ভেঙে সেখানে সিনেপ্লেক্স করতে চাই।’ তিনি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড তিন বছর করার দাবি জানান।
প্রযোজক, পরিচালক এবং হল মালিক কামাল মোহাম্মদ কীবরিয়া বলেন, ‘যদি উপমহাদেশের সিনেমা না আসে, তাহলে এ ঋণ নেয়া সম্ভব হবে না। খুব চিন্তা করে এ ঋণ নিতে হবে। তা না হলে আরও অনেক হল মালিক দেউলিয়া হয়ে যাবেন।’
কীবরিয়া যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণের ওপর জোর দেন। তিনি জানান, যৌথ প্রযোজনার সিনেমা হল মালিকদের ভালো ব্যবসা দিয়েছে, কিন্তু কিছু অসাধু পক্ষ যৌথ প্রযোজনার সিনেমার নীতিমালা কঠোর করার মাধ্যমে এ ধরনের সিনেমা নির্মাণে নিরুৎসাহিত করেছে প্রযোজকদের। তাই নিয়মটি শিথিল করারও দাবি জানান তিনি।
বগুড়া থেকে এসেছিলেন মধুবন সিনেমার মালিক আর এস ইউনুস। তিনি তার নিজ উদ্যোগে সিনেমা হলের পরিবেশ উন্নত করেছেন বলে জানান। এখনও একটি স্ক্রিন থাকলেও তিনি স্ক্রিন সংখ্যা বাড়াতে চান।
তিনিও ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে উপমহাদেশের সিনেমার আমদানি সহজ করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার কিন্তু শুধু স্ক্রিন থেকেই টাকা আসে না। আমার ফুড কোর্ট থেকে টাকা আসে, দোকান থেকে টাকা আসে, সেখানে যারা বিজ্ঞাপন দেয়, সেখান থেকে টাকা আসে। এমন করে সবার পরিকল্পনা করতে হবে। মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ ও জেলায় সাড়ে ৪ শতাংশ– ঋণের সুদের হার দুই রকম। আমার মনে হয় এটা তিন রকম করা উচিত, উপজেলায় আরও কম সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত।’
ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ঢাকায় এসে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দেন ইউনুস। কারণ উপজেলা শহরে ঋণের আবেদন করলে তা পেতে অনেক সময় লাগে।
প্রায় একই কথা বলেন গোবিন্দগঞ্জের ‘ইদ্রিস’ হলের মালিক আমির হামজা। সভায় ডি এ তায়েব জানান, তিনি টাঙ্গাইলে সিনেপ্লেক্স তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করেছেন।
ব্লকবাস্টার সিনেমাসের জাহিদ হোসেন চৌধুরী সবাইকে সিনেপ্লেক্স নির্মাণে প্রযুক্তিগত সাহায্যের আশ্বাস দেন।
রূপালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘নতুন প্রকল্পের জন্য গ্রেস ইয়ার বাড়ানো যেতেই পারে। তবে যারা প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার করবেন, তাদের জন্য এর খুব একটা প্রয়োজন হবে না। সুদের হার নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের নির্দেশ দেয়, অবশ্যই আমরা সেভাবে কাজ করব। প্রয়োজনে আমরা একটি অভিযোগ ও পরামর্শ সেল তৈরি করব।’
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যারা লোন নিতে চান, তারা একটি প্রজেক্ট পেপার জমা দেবেন। সেখানে দর্শক নিয়ে জরিপ থাকতে হবে। সেই জরিপ নিয়ে আমরা ভ্যালুয়েশন করব। সেটা আমাদের ঋণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করতে হবে।’
অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বলেন, ‘মার্কেটে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ, দোকান, ফুড কোর্ট, রেস্টুরেন্ট, বেবি কর্নার রেখে যদি পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে ঋণ পেতে সুবিধা হবে। এটা সময়োপযোগীও। আমরা ঋণ দিতেও আগ্রহী হব।’
ইউসিবি ব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, ‘গ্রেস ইয়ার বাড়ালে হল মালিকদেরই বেশি প্রেসার হবে। তাই এটা না বাড়ানোই ভালো। কেউ ১০ কোটি টাকা নিলে তার মাসে সুদ আসবে ১৫ লাখ টাকা। আপনারা সেই হিসাব করে ঋণ নেবেন। তবে হল সংস্কারের চেয়ে মার্কেট ও সিনেপ্লেক্স বানালে এই টাকা পরিশোধ করা সম্ভব। তবে আপনাদের অবশ্যই প্রফেশনাল কাউকে দিয়ে প্রজেক্ট প্রোফাইল করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোকবুল হোসেন জানান, সিনেমা আমদানি, যৌথ প্রযোজনার সিনেমার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন তারা। সুদের হার বা গ্রেস টাইম নিয়ে আবার কথা বলবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দর্শকদের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, তাই সিনেমার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমা হলেরও পরিবর্তন দরকার। এখন সিঙ্গেল স্ক্রিনের চাহিদা কমেছে। অল্প সিটের তিন-চারটি করে প্রেক্ষাগৃহের চল এখন। আপনারা যাতে মার্কেট করে তাতে সিনেপ্লেক্সের পাশাপাশি অন্য কাজও করতে পারেন, সেভাবেই আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি। আর আপনারা যদি মার্কেটসহ সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করেন, তাহলে প্রজেক্টটি অনেক ভায়াবল হবে, ঋণ পেতে অসুবিধা হবে না। পজেশন বিক্রি, প্রতি মাসে ভাড়াসহ নানা উপায় তৈরি হবে ঋণ পরিশোধ ও আয়ের।’
কেউ সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করতে চাইলে ১০ কোটি ও প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাবেন।
আমদানি ও যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণের নিয়ম যেন শিথিল করা হয়, সেই বিষয়টিও দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
রুপালি পর্দার তারকাকা ঘন ঘন জনসমক্ষে এলে সেই অর্থে ‘দাম’ থাকে না বলেই মনে করতেন মহানায়ক উত্তম কুমার। তার চলাফেরাতেও ছিল সেই প্রভাব।
সবকিছুর পরও তারকারাও তো মানুষ। এ হিসেবে অনেক কাজেই অংশ নিতে হতো তাদের। মহানায়ক ভোট প্রয়োগ করতেন কীভাবে, এবার প্রকাশ্যে এসেছে সে তথ্য।
সংবাদ প্রতিদিন বলছে, একবার সহকর্মী তথা ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে উত্তম কুমার বকা দিয়েছিলেন কেন তিনি পেট্রল পাম্পে গাড়ি থেকে নেমেছিলেন বলে। আসলে তাকেও খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল কয়েক বার। বাঙালির ম্যাটিনি আইডল বলে কথা। উত্তম কুমার মানেই তো তখন জনঅরণ্য। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে উত্তম কুমারের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন মহানায়কের ভোটাধিকার প্রয়োগের উপায়ের কথা।
গৌরব ঠাকুরদাকে না দেখলেও পরিবারের সদস্যদের মুখেই শুনেছিলেন, মহানায়ক কখনও বুথে গিয়ে ভোট দিতেন না। বরং বাড়ি থেকেই খামে ভরে তার ভোট জমা পড়ত। সরকারি কর্মীরা যেভাবে পোস্টার ব্যালটে ভোট দেন। সেভাবেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতেন উত্তম কুমার।
পোর্ট ট্রাস্টের চাকরিজীবী হিসেবেই মহানায়ক এই বিশেষ সুবিধে পেতেন। তবে পরে অভিনয়ের জন্য সেই চাকরি ছেড়ে দিলেও তৎকালীন সরকার তার জন্য এই বিশেষ ব্য়বস্থা বহাল রেখেছিল। কারণ, বুথে উত্তম কুমারকে দেখলে জনবিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাতে গোলযোগ দেখা দিতে পারে।
বিশৃঙ্খলা রুখতেই উত্তম কুমারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বহাল রেখেছিল সেই সময়ে ক্ষমতাসীন সরকার।
চলতি লোকসভা ভোটের আবহে আমজনতার পাশপাশি সেলেবরাও গণতন্ত্রের উৎসবে মেতে ওঠেন বরাবর। বুথে লাইন দিয়ে তারাও ভোট দেন। কিন্তু উত্তম কুমার কখনও কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতেন না। তার জন্য ছিল বিশেষ ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন:টলিউডে নাকি এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সোহিনী সরকারের বিয়ের গুঞ্জন! টলিগঞ্জের অন্যতম কাঙ্খিত নায়িকা নাকি অবশেষে বাঁধা পড়ছেন শোভন-সুরে।
এতদিন সোহিনীর জীবনে প্রেমের আনাগোনা কম ছিল না, তবে থিতু হননি নায়িকা। তবে আর দেরি নয়। এই বছরই নাকি সাতপাক ঘুরবেন দুজনে।কেউ বলছেন, জুলাইতে শুভকাজটা সারবেন শোভন-সোহিনী, আরেক সূত্র বলছে, জুলাই নয় নভেম্বরে বিয়ে।
মাস যা-ই হোক না কেন, ২০২৪-এ ছয় বছরের ছোট শোভনের সঙ্গে সোহিনীর বিয়ে টলিপাড়ার হট টপিক। একটা সময় অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্তের সঙ্গে শোভনের মাখোমাখো প্রেম নিয়ে কম আলোচনা হয়নি টেলিপাড়ায়। ইমনের সঙ্গে ব্রেকআপের পর শোভন খুল্লমখুল্লা প্রেম করেছেন স্বস্তিকার সঙ্গে। কিন্তু ২০২৩-এ আচমকা ছন্দপতন। আলাদা হন তারা। স্বস্তিকা জানিয়েছিলেন, ‘হ্যাপি নোটে’ শেষ হয়েছে সম্পর্ক।
ব্রেকআপের পর আজও ইমনের সঙ্গে শোভনের সখ্যতা অটুট। তবে সেই পথে হাঁটেননি স্বস্তিকা। সাবেকের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই, কিন্তু সাবেকের বিয়ের জল্পনা কি তার কানে পৌঁছেছে?
হিন্দুস্তান টাইমসকে স্বস্তিকা বলেন, ‘একজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল, একজন আমার সাবেক। অন্যজনকে আমি সিনিয়র অভিনেত্রী হিসাবে সম্মান করি। তার কাজও দেখি। তারা দুজনে যখন একে অপরের সঙ্গে থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, (কয়েক মুহূর্তের স্তব্ধতা) যদিও আমি জানি না প্রকাশ্যে এটা নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেছে কি না।
‘আমি একজন সাংবাদিকদের থেকে এই সুখবরটা শুনছি, তারা যদি নিজেদের কমপ্যাটিবল ভেবে থাকেন এবং তারা সাত পাকে বাঁধা পড়তে চান আমি দুজনেই শুভকামনা জানাব। এটা আমার শিক্ষা।’
জানা যায়, অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তের এক অনুষ্ঠানের সূত্রেই কাছাকাছি আসেন শোভন-সোহিনী। গত বছর পুজোর আগেই শোভন-সোহিনীর সম্পর্ক নিয়ে ঢি ঢি পড়ে যায় টলিপাড়ায়। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার সম্পর্ক একটু একটু করে প্রকাশ্যে এসেছে।
সোহিনী নিজের মুখে জানিয়েছেন, ‘শোভনের সঙ্গে আমি ভালো আছি’। তবে বিয়ে নিয়ে এখনও মুখে কুলুপ দুজনের। শোভনের আগে রণজয় বিষ্ণুর সঙ্গে প্রেম সম্পর্কে ছিলেন সোহিনী।
শোভন জীবনপথে এগিয়ে গেলেও স্বস্তিকা কিন্তু এখনও সিঙ্গল। বিয়ে নিয়ে কী পরিকল্পনা তার? অভিনেত্রীর জবাব, ‘আমি কখনই চাইব না ৪০ বছরে গিয়ে বিয়ে করব আর ৪৫ বছরে গিয়ে মা হব। বাবা-মা রয়েছেন, কিছু দায়িত্ব তাদেরও নেয়া উচিত। যখন সময় আসবে তখন ঠিক ঠিক ভালো একজন মানুষকে আমি বিয়ে করতে চাই, আর একটা হেলথি বাচ্চার জন্ম দিতে চাই।’
স্বস্তিকা আরও যোগ করেন, ‘এর মাঝে যদি কোনো মানুষের সঙ্গে প্রেম হয়…। আমি এমন একটা ম্যাচুয়ারেটির জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি যে কাউকে খুঁজে পেলে বলব, ছোটবেলায় ভালো লাগত রাত জেগে ভোর পাঁচটা অবধি ফোনে মেসেজ চালাচালি করা কিংবা ফোনে কথা বলার।
‘এখন সেই ইচ্ছেটা নেই। যা প্রেম করার সেটা বিয়ের পরে, যদি তোমার আমার সঙ্গে থাকতে হয় তো। তবে পুরোটাই হচ্ছে যদি আমি কাউকে খুঁজে পাই তো! এখন আর সেই বয়সে নেই যে ঢাকুরিয়া লেকে বসে হাত ধরে প্রেম করব’। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
আরও পড়ুন:চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের বেধড়ক পিটিয়েছে সংগঠনটির কয়েকজন সদস্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিঠুন আল মামুন জানান, তার ক্যামেরাম্যানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈশাখী টিভির সাংবাদিক লিয়ন মীর জানান, শপথ গ্রহণ শেষে চিত্রনায়িকা ময়ূরীর মেয়ের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন এক রিপোর্টার। এসময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন তিনি।
কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়ে শিবা শানুকে থামাতে চান। এরপর শিল্পী সমিতির আরেক নেতা চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রক্তাক্ত আহত হন কয়েকজন সাংবাদিক। মারামারিতে যোগ দেন আলেকজান্ডার বোসহ কয়েকজন জুনিয়রও।
মিঠুন আল মামুন ঘটনার বিষয়ে বলেন, ‘আমি একজন শিল্পীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। এ সময় খল অভিনেতা শিবা শানু আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে কেন সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। এরপরই তিনি আমার ওপর হামলা চালান।
‘এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক এগিয়ে এলে জয় চৌধুরী অশ্লীল গালি দিয়ে জুনিয়র শিল্পীদের নির্দেশ দেন সাংবাদিকদের ওপর চালানোর। জয় ও শিবা শানুর নেতৃত্বেই আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ ঘটনার পরপরই এফডিসিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএফডিসির খোলা প্রাঙ্গণে এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় সভাপতি মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু মিশাকে শপথ পাঠ করান।
ফারহান আহমেদ জোভান অভিনীত ‘রূপান্তর’ নাটকের তিনিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতে নাটকের অভিনেতা-অভিনেত্রী ও পরিচালকসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাউসার উল জিহাদ এ মামলাটি করেছেন।
ইউটিউব চ্যানেল একান্ন মিডিয়া থেকে নাটকটি সরিয়ে ফেলার পর এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তার মতে, দর্শকরা নাটকটির কনসেপ্ট হয়ত বোঝেননি।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কিছুই দেখছি, আসলে বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় দর্শকরা নানান স্ট্যাটাস ও মন্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিচালক রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত এ নাটকটিতে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যুকে প্রমোট করা হয়েছে। এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা জোভানকে অনলাইনে তুলোধুনা করছে নেটিজেনরা।
‘এছাড়া জোভান ও সামিরা খান মাহি দুজনের ফেসবুক পেজ গায়েব করে দেয়া হয়েছে। জোভানের ১৯ লাখের পেজ ও মাহির ২৪ লাখের লাইক-ফলো করা পেজটি আর ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
‘রূপান্তর’ নাটকটি ইউটিউবে প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। অসংখ্য পোস্ট ও লক্ষাধিক প্রতিক্রিয়া আসে নাটকটির বিরুদ্ধে। তীব্র সমালোচনায় পড়ে নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
জোভান বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, নাটকটি নিয়ে কেন এমন সমালোচনা করা হচ্ছে! নাটকটির ভিউ হয়েছিল নব্বই হাজার। তাহলে বাকি মানুষ তো দেখেনি! আমার মনে হয়, তারা না দেখেই সমালোচনা করছে। বিষয়টি নিয়ে আমি ঘোরের মধ্যে আছি। বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে!’
সমালোচনার মুখে জোভান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দর্শক পছন্দ করেন না এমন কোনো চরিত্রে অভিনয় করবেন না। বলেন, ‘যেহেতু মানুষ পছন্দ করছে না সেহেতু এসব আর করা যাবে না। এরপর থেকে এগুলো আর করব না।’
নেটিজেনদের কিংবা নিজের অনুসারীদের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে এটা নিয়ে জোভান দুঃখও প্রকাশ করেছেন।
জোভান ছাড়াও ‘রূপান্তর’ নাটকে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামিরা খান মাহি। এতে আরও অভিনয় করেছেন সাবেরী আলম ও সমাপ্তি মাসুক প্রমূখ।
মারা গেছেন মঞ্চ ও টেলিভিশন জগতের পরিচিত মুখ অভিনেতা অলিউল হক রুমি।
সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রুমির জন্ম বরগুনায়। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
মাসখানে আগে রুমির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। ভারতে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। পরে ফিরে দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
অভিনেতার রুমির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তারা জানিয়েছেন শোক।
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি লিখেছেন, ‘চলে গেলেন রুমি ভাই! মৃত্যুটা কত সহজ, জীবনটাই অনেক বেশি কঠিন। এই প্রথমবার, এমন খবর শুনে, সবাইকে জানাবার জন্য লিখতে যেয়ে, লিখলাম আর মুছলাম অসংখ্যবার! আপনার ছবির সাথে কোন ভাবেই “শেষ বিদায়” এর কিছু লিখতে পারছিলাম না রুমী ভাই! সব সম্ভব⁉’
তিনি লিখেছেন, ‘মাত্র দেড়/ দুই মাস, সব চেষ্টা শেষ হল! কোনভাবেই ঠেকানো গেল না কিছু! আপনার পরিবারকে আল্লাহ এ শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি দিক, এ প্রার্থনা করি। পরপারে চির শান্তিতে থাকবেন।’
তিন দশকের বেশি সময় অভিনয় নিয়ে ছিলেন রুমি। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও। দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদনা সহকারী হিসিবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
১৯৮৮ সালে থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে রুমির অভিনয়ের শুরু। ওই বছরই ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তার।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ২০ ও ২১ এপ্রিল দু দিনব্যাপী হচ্ছে সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে আয়োজন করা এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী সোহানা সাবা।
উৎসবে বাংলাদেশ, ভারত ও এই দুই দেশের প্রবাসীদের নির্মিত ৩৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা। এ ছাড়াও রয়েছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজন ও জমকালো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ ছাড়াও এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে অর্ধশত অতিথি যোগ দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানের প্রতিটি আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত। কোনো প্রবেশ ফি বা টিকেট নেই। শুধু ২১ এপ্রিল বিকেলে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটির জন্য শনি অথবা রোববার সকাল সকাল অনুষ্ঠান স্থলে এসে বিনামূল্যে একটি বিশেষ পাস সংগ্রহ করতে হবে। দুদিনই শনি ও রোববার সকাল ১১টা থেকে বিশেষ পাশটি বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশের দর্শক মাতাতে তৃতীয়বারের মতো ঢাকায় আসলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম।
রাজধানীর বসুন্ধরা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে মঞ্চে উঠেন তিনি। ভক্তদের গেয়ে শোনান ‘তেরা হোনে লাগা হু’, ‘দুরি’ ও ‘আদাতের’ মতো তার জনপ্রিয় কিছু গান।
কনসার্টটি আয়োজন করেছে ব্লুজ কমিউনিকেশন।
এর আগে ২৮ মার্চ আতিফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে ঢাকায় আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এ গায়ক নিজেই।
ওই দিন বিকেলে ফেসবুকে ১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন আতিফ। যেখানে তার ছবি, মিউজিকের সঙ্গে লেখা ছিল- ‘বাংলাদেশ, চলো একসঙ্গে সংগীত উপভোগ করি।’
২০১৩ সালে বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে প্রথম ঢাকায় এসেছিলেন আতিফ আসলাম। পরে ২০১৬ সালে এটিএন এন্টারটেইনমেন্টের আমন্ত্রণে দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসেন।
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে জন্ম নেয়া উপমহাদেশের তুমুল জনপ্রিয় গায়ক আতিফ আসলাম ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৩ সালে, ‘জাল’ ব্যান্ডের মাধ্যমে। মূলত উর্দু ভাষায় গাইলেও তিনি হিন্দি, পাঞ্জাবি, বাংলা, পশতুসহ অনেক ভাষায় নিজের দক্ষতা প্রকাশ করেছেন। ‘জেহের’ সিনেমার ‘ওহ লামহে ওহ বাতে’ গান দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
এরপর একে একে উপহার দিয়েছেন অনেক জনপ্রিয় গান। তারমধ্যে উল্লেখ্য ‘পেহলি নাজার ম্যায়’, ‘বাখুদা তুমহি হো’, ‘তু জানে না’, ‘দুরি’, ‘ম্যায় রং শরবতো কা’, ‘দিল দিয়া গাল্লা’ সহ প্রায় শতাধিক গান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য