পুরোনো সিনেমা হল সংস্কার ও নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য ঋণ নিতে রাজি আছেন হল মালিকরা। কিন্তু সেই ঋণ পরিশোধের জন্য দেশের সিনেমার পাশাপাশি উপমহাদেশের সিনেমা আমদানির দাবি করেছেন হল মালিকরা।
তারা বলছেন, ঋণ পরিশোধের জন্য হল মালিকদের প্রয়োজন আয়। দেশের সিনেমা দিয়ে সেই আয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই হল মালিকদের সীমিত আকারে ভারতীয় বা উপমহাদেশের সিনেমা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমদানি করার সুযোগ দেয়া হোক। সেটা বছরে ১০-১৫টিও হতে পারে।
হল মালিকরা মনে করছেন, এটি করা হলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। এমনকি এতে দেশে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বাড়বে বলে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তথ্য ভবন মিলনায়তনে ‘দেশের বিদ্যমান সিনেমা হল সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল/সিনেপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে অংশীদারদের সঙ্গে ঋণ সুবিধাপ্রাপ্তি ও ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার’বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই হল মালিকরা উপমহাদেশের সিনেমা আমদানিসহ নানা দাবি উপস্থাপন করেন।
সিনেমা আমদানির ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পরিচালক, প্রযোজক ও হল মালিকরা চাইলেও শিল্পী সমিতির নেতারা উপমহাদেশীয় সিনেমা আমদানিতে মত দিচ্ছিলেন না। এখন আবার কথা বলতে হবে। সবাই যদি একমত হন, অবশ্যই কিছু সিনেমা আমদানি করা যেতে পারে।’
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর থেকে ভারতীয় সিনেমার আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পরও এ নিষেধাজ্ঞা আর প্রত্যাহার করা হয়নি। হল মালিকরা বিভিন্ন সময় ভারতীয় সিমেনা আমদানি ও প্রদর্শনের উদ্যোগ নিলে চলচ্চিত্র পরিচালক ও কলাকুশলীদের আন্দোলনের কারণে সেসব পদক্ষেপ বাতিল হয়।
তথ্য ভবনে বৃহস্পতিবারের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ১০৭ জন হল মালিক। এর মধ্যে নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণে আগ্রহী সাতজন ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন রূপালী, অগ্রণী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি। মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোকবুল হোসেন।
প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাশ হল মালিকদের পক্ষে মূল আলোচনা শুরু করেন। আলোচনায় সুদীপ্ত বলেন, ‘১৯৯৯ সালে সারা দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৩৫টি; শুধু রংপুর জেলাতেই ছিল ১০০টি সিমেনা হল। এখন সারা দেশে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০টি।’
সুদীপ্ত জানান, ‘ঋণ নিয়ে পরিশোধ করব কীভাবে?’ প্রশ্নটি তার সবচেয়ে বেশি শুনতে হয় হল মালিকদের কাছ থেকে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সুদীপ্ত দাবি করেন, ‘ঋণ নেয়ার পর শুধু দেশের সিনেমা প্রদর্শন করে হল মালিকরা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন উপমহাদেশের সিনেমা আমদানি। সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে যে পরিমাণ সিনেমা প্রয়োজন, দেশের পরিচালক-প্রযোজক সে পরিমাণ সিনেমা দিতে পারছেন না, আর খারাপ মানের জন্য বাংলা সিনেমার দর্শকও এখন অনেক কম। তাই প্রয়োজন বিদেশি সিনেমা।’
সুদীপ্ত মনে করেন, রোজার ঈদে যেসব সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, তেমন সিনেমা যখন দেশের পরিচালক-প্রযোজক নিয়মিত দিতে পারবেন, তখন বিদেশি সিনেমা না আনলেও চলবে। দর্শক সিনেমা দেখতে এলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। তখন শত শত সিনেপ্লেক্সও নির্মাণ হবে বলে আশা করেন তিনি।
সুদীপ্তর কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন রাজধানীর অভিসার সিনেমা হলের মালিক স্বপন আলী ভুইয়া এবং প্রদর্শক সমিতির আরেক উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন।
সুদীপ্তর প্রস্তাবের সঙ্গে মিয়া আলাউদ্দিন যোগ করে বলেন, ‘ঋণ দেয়া-নেয়ার পদ্ধতি সহজ হতে হবে এবং ঋণের গ্রেস ইয়ার (ঋণ নেয়ার পর নির্দিষ্ট একটি সময়, যে সময়ের মধ্যে লোনের কিস্তি দিতে হয় না, তবে সুদ যুক্ত হতে থাকে) বৃদ্ধি করতে হবে।’
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী এলাকার পুর্বাশা সিনেমা হলের মালিক খোরশেদ আলম উপমহাদেশের সিনেমা আনার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, ‘আমি পুরোনো হল ভেঙে সেখানে সিনেপ্লেক্স করতে চাই।’ তিনি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড তিন বছর করার দাবি জানান।
প্রযোজক, পরিচালক এবং হল মালিক কামাল মোহাম্মদ কীবরিয়া বলেন, ‘যদি উপমহাদেশের সিনেমা না আসে, তাহলে এ ঋণ নেয়া সম্ভব হবে না। খুব চিন্তা করে এ ঋণ নিতে হবে। তা না হলে আরও অনেক হল মালিক দেউলিয়া হয়ে যাবেন।’
কীবরিয়া যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণের ওপর জোর দেন। তিনি জানান, যৌথ প্রযোজনার সিনেমা হল মালিকদের ভালো ব্যবসা দিয়েছে, কিন্তু কিছু অসাধু পক্ষ যৌথ প্রযোজনার সিনেমার নীতিমালা কঠোর করার মাধ্যমে এ ধরনের সিনেমা নির্মাণে নিরুৎসাহিত করেছে প্রযোজকদের। তাই নিয়মটি শিথিল করারও দাবি জানান তিনি।
বগুড়া থেকে এসেছিলেন মধুবন সিনেমার মালিক আর এস ইউনুস। তিনি তার নিজ উদ্যোগে সিনেমা হলের পরিবেশ উন্নত করেছেন বলে জানান। এখনও একটি স্ক্রিন থাকলেও তিনি স্ক্রিন সংখ্যা বাড়াতে চান।
তিনিও ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে উপমহাদেশের সিনেমার আমদানি সহজ করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার কিন্তু শুধু স্ক্রিন থেকেই টাকা আসে না। আমার ফুড কোর্ট থেকে টাকা আসে, দোকান থেকে টাকা আসে, সেখানে যারা বিজ্ঞাপন দেয়, সেখান থেকে টাকা আসে। এমন করে সবার পরিকল্পনা করতে হবে। মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ ও জেলায় সাড়ে ৪ শতাংশ– ঋণের সুদের হার দুই রকম। আমার মনে হয় এটা তিন রকম করা উচিত, উপজেলায় আরও কম সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত।’
ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ঢাকায় এসে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দেন ইউনুস। কারণ উপজেলা শহরে ঋণের আবেদন করলে তা পেতে অনেক সময় লাগে।
প্রায় একই কথা বলেন গোবিন্দগঞ্জের ‘ইদ্রিস’ হলের মালিক আমির হামজা। সভায় ডি এ তায়েব জানান, তিনি টাঙ্গাইলে সিনেপ্লেক্স তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করেছেন।
ব্লকবাস্টার সিনেমাসের জাহিদ হোসেন চৌধুরী সবাইকে সিনেপ্লেক্স নির্মাণে প্রযুক্তিগত সাহায্যের আশ্বাস দেন।
রূপালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘নতুন প্রকল্পের জন্য গ্রেস ইয়ার বাড়ানো যেতেই পারে। তবে যারা প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার করবেন, তাদের জন্য এর খুব একটা প্রয়োজন হবে না। সুদের হার নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের নির্দেশ দেয়, অবশ্যই আমরা সেভাবে কাজ করব। প্রয়োজনে আমরা একটি অভিযোগ ও পরামর্শ সেল তৈরি করব।’
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যারা লোন নিতে চান, তারা একটি প্রজেক্ট পেপার জমা দেবেন। সেখানে দর্শক নিয়ে জরিপ থাকতে হবে। সেই জরিপ নিয়ে আমরা ভ্যালুয়েশন করব। সেটা আমাদের ঋণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করতে হবে।’
অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বলেন, ‘মার্কেটে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ, দোকান, ফুড কোর্ট, রেস্টুরেন্ট, বেবি কর্নার রেখে যদি পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে ঋণ পেতে সুবিধা হবে। এটা সময়োপযোগীও। আমরা ঋণ দিতেও আগ্রহী হব।’
ইউসিবি ব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, ‘গ্রেস ইয়ার বাড়ালে হল মালিকদেরই বেশি প্রেসার হবে। তাই এটা না বাড়ানোই ভালো। কেউ ১০ কোটি টাকা নিলে তার মাসে সুদ আসবে ১৫ লাখ টাকা। আপনারা সেই হিসাব করে ঋণ নেবেন। তবে হল সংস্কারের চেয়ে মার্কেট ও সিনেপ্লেক্স বানালে এই টাকা পরিশোধ করা সম্ভব। তবে আপনাদের অবশ্যই প্রফেশনাল কাউকে দিয়ে প্রজেক্ট প্রোফাইল করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোকবুল হোসেন জানান, সিনেমা আমদানি, যৌথ প্রযোজনার সিনেমার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন তারা। সুদের হার বা গ্রেস টাইম নিয়ে আবার কথা বলবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দর্শকদের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, তাই সিনেমার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমা হলেরও পরিবর্তন দরকার। এখন সিঙ্গেল স্ক্রিনের চাহিদা কমেছে। অল্প সিটের তিন-চারটি করে প্রেক্ষাগৃহের চল এখন। আপনারা যাতে মার্কেট করে তাতে সিনেপ্লেক্সের পাশাপাশি অন্য কাজও করতে পারেন, সেভাবেই আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি। আর আপনারা যদি মার্কেটসহ সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করেন, তাহলে প্রজেক্টটি অনেক ভায়াবল হবে, ঋণ পেতে অসুবিধা হবে না। পজেশন বিক্রি, প্রতি মাসে ভাড়াসহ নানা উপায় তৈরি হবে ঋণ পরিশোধ ও আয়ের।’
কেউ সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করতে চাইলে ১০ কোটি ও প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাবেন।
আমদানি ও যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণের নিয়ম যেন শিথিল করা হয়, সেই বিষয়টিও দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক সিনেমা মুজিব- দ্য মেকিং অফ আ ন্যাশন-এর ট্রেলার প্রকাশ পেয়েছে। ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ট্রেলারটি প্রকাশেরর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
বাঙালির ভীষণ আবেগ-ভালোবাসার মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পর্দায় চরিত্রের মাধ্যমে দেখে হতাশ হয়েছেন সিনেমাসংশ্লিষ্ট থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকরা।
বঙ্গবন্ধু চরিত্রে আরিফিন শুভর কণ্ঠ, ভিএফএক্স, ইতিহাসের সঙ্গে ট্রেলারের দৃশ্য না মেলার মতো অনেক অসামঞ্জস্যতা আছে দাবি করে হতাশা প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ।
দেশের বরেণ্য গীতিকার-সুরকার প্রিন্স মাহমুদ স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘শুভর ভয়েস আবার ডাব করেন’ (সংক্ষিপ্ত)। স্ট্যাটাসটি অবশ্য এখন আর নেই তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে।
নির্মাতা গাজী শুভ্র ‘সহমত’ জানিয়েছেন প্রিন্স মাহমুদের বক্তব্যকে।
‘shame…. বনে গেলাম’ লিখেছেন সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
সাংবাদিক, নাট্যকার পলাশ মাহবুব লিখেছেন, ‘Trailer is not satisfactory. (ট্রেলার সন্তোষজনক নয়)’ (সংক্ষিপ্ত)
সাংবাদিক, নির্মাতা, প্রযোজক জসিম আহমেদ লিখেছেন, ‘১২০ কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করে এই ভিএফএক্স, এই গ্রিন স্ক্রিন লাইটিং? টিচারের কাম দেখে ছাত্রদের লজ্জা লাগতেছে।’
চলচ্চিত্রকার, চলচ্চিত্র সমালোচক বেলায়াত হোসেন মামুন লেখেন, ‘কি দেখলাম এটা! না দেখলেই ভালো হতো…’ (সংক্ষিপ্ত)
পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খান লিখেছেন, ‘আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজ দিনটা শুরু করেছি... (মুজিব দ্যা ম্যাকিং অব এ নেশন)।’
চলচ্চিত্র পরিচালক রাশিদ পলাশ লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা সিনেমা বানাবো আবেগ দিয়ে, কলিজা দিয়ে। আপনারা বানাবেন টাকা দিয়ে, এটায় স্বাভাবিক শ্যাম বেনেগাল শাহেব। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এদেশে সিনেমা হচ্ছে, সামনে আরও হবে, আমরাই বানাবো। সত্যিকারের আবেগ দিয়েই বানাবো। বেঁচে থাকলে দেইখেন।’
সংগীতশিল্পী ফয়সাল রোদ্দী লিখেছেন, ‘মুজিব-দ্যা মেকিং অফ এ নেশন এর ট্রেইলার দেখে হতাশ হয়েছি কিন্তু অবাক হইনি।’ (সংক্ষিপ্ত)
নির্মাতা কৌশিক শংকর দাস লিখেছেন, ‘আচ্ছা পুরো সিনেমাটা রিশুট করা যায় না?? যদিও আমার নিজের কোন প্রত্যাশা ছিল না, তাই হতাশ বা খুশী কোনটাই হইনি। কিন্তু সবার প্রতিক্রিয়া দেখে এটা ছাড়া তো আর কোন উপায় দেখছি না!!’
নির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস লিখেছেন, ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে এই জনতা, এই জনতা।’
সাংবাদিক মাহমুদ মানজুর লিখেছেন, ‘ট্রেলারে আশা পূর্ণ হলো না। তবে মুভিতে হবে- সেই বিশ্বাস রাখি।’ (সংক্ষিপ্ত)
মীর শামসুল আলম ট্রেলারের কিছু দৃশ্য ও ইতিহাসের কথা তুলে ধরে লিখেছেন-
“শত কোটি টাকায় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের বলৎকার। ‘বলৎকার’ শব্দটি ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত নই।
১) প্রথম দৃশ্যটি ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে ছাত্ররা ‘বাংলার স্বপক্ষে প্লাকার্ড নিয়ে মিছিলে বের হচ্ছে- পুলিশ মুখোমুখি গুলি করছে।
বাজী ধরে বলতে চাই- ঘটনা এই ধরনের নয়
ক) ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা প্লাকার্ড বহন করেনি।
খ) প্রথম মিছিল বের হবার অন্তত ৪ ঘণ্টা পর গুলি করা হয়েছে- সেটা মিছিলে নয়- রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে থেকে ছাত্র জনতার সমাবেশে- গুলি চালানোর ঘণ্টা তিনেক আগেই মিছিল বন্ধ ছিল।
২) দ্বিতীয় দৃশ্যটি ঐতিহাসিক ৩২ নাম্বারের দোতালা বাড়িতে প্রবেশ করছে বালক শেখ কামাল, জামাল ও কিশোরী শেখ হাসিনা।
ইতিহাস বলে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার প্লটে দুই কামরার একতালা বাড়িতে শেখ পরিবার প্রবেশ করেন- এরপর বেগম মুজিবের তৎপরতায় তিল তিল করে ধীরে ধীরে বাড়িটি দোতালায় পরিণত হয়।
৩) তৃতীয় ও চতুর্থ দৃশ্যটি ৭ মার্চের ভাষণের।
বঙ্গবন্ধুর সামনে মঞ্চেই ৩৫ এমএম ফিল্ম ক্যামেরা হাতে বয়স্ক চিত্রগ্রাহক?
ভাষণের চারজন চিত্রগ্রাহককেই আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম- একজন আমার আত্মীয়ও- কেউই বয়স্ক ছিলেন না- স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা মঞ্চেও ছিল না।
১৯৭১ সালে কর্ডলেস মাইক্রোফোন? পুরো ছবিতে যে কি দেখবো?”
ট্রেলারটি দেখে ফেসবুকে হতাশা প্রকাশ করেননি এমন দর্শকও আছেন, তবে সংখ্যায় খুবই কম।
অ্যাকটিভিস্ট ওমি রহমান পিয়াল তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যেই দেশে বঙ্গবন্ধুর নাম পর্যন্ত উচ্চারণ নিষিদ্ধ ছিল, রাবার দিয়ে ঘইষা ঘইষা মুছার চেষ্টা হইছে তারে, সেই দেশে তারে নিয়া একটা বায়োপিক হইছে। ট্রেলার দেইখ্যা আমরা কইয়া দিলাম এইডা কিছু হয় নাই। মাত্র একটাকা পারিশ্রমিকে সিনেমার মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করলো যে, কইলাম তার মেকাপ খারাপ। সোজা বাংলায় শ্যাম বেনেগাল টাকা মাইরা একটা **প্রসব করছেন। রাতারাতি সিনেমাবোদ্ধা বইনা যাওয়া বাঙালী বলতেছে আমারে টেকা দিলে আরো ভালো জিনিস বানায়া দেখাইতাম, খালেদার দুই পদ্মাসেতুর মতো! বাঙালীর এই কনফিডেন্ট প্রলাপ বরাবরই আমারে মুগ্ধ করে। নিজে না পারি অন্যে করলে সেটা খারাপ বলায় আমাদের কখনও সমস্যা হয় নাই…’
(** এর জায়গায় অন্য শব্দ ছিল। যা সম্পাদকীয় মণ্ডলীর নীতিমালা অনুযায়ী প্রকাশযোগ্য নয়)
সাংবাদিক, লেখক অপূর্ণ রুবেল লিখেছেন, ‘যাদের ট্রেলার ভালো লাগে নাই, তারা দয়া করে জ্ঞান না দিয়ে নিজেরা নিজেরা ট্রেলার বানায়া দেখেন। স্বাবলম্বী হোন।’
সাংবাদিক উদিসা ইসলাম লিখেছেন, ‘ট্রেইলার ঠিকাছে। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু অভিনয় করলেও আপ্নেরা এসবই বলতেন। ভাই, শুভ কীভাবে বঙ্গবন্ধু হবে? শুভ বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করেছে। গল্পটা দেখেন, একটা সিনেমা হয়েছে কিনা আলোচনা করেন। হুবহু বঙ্গবন্ধুকে খুঁইজেন না।’
লেখক, সাংবাদিক মুনমুন শারমিন শামস লিখেছেন, ‘ট্রেলার আমার মন্দ লাগে নাই। আরেফিন শুভও যথাসাধ্য ভাল করেছেন বলেই মনে হচ্ছে।’
ফ্রান্সে বিশ্বখ্যাত কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৭৫তম আসরের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ভারতীয় প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং যুববিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর।
আরও পড়ুন:৭৫ তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি হিসেবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাডুকোন।
সেই সঙ্গে ভারতীয় চলচ্চিত্র কীভাবে এগিয়ে চলেছে তা উল্লেখ করে দীপিকা মন্তব্য করেছেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি এমন এক দিন আসবে যখন ভারত কানে থাকবে না, কান ভারতে থাকবে।’
কান চলচ্চিত্র উৎসবে বুধবার ইন্ডিয়া প্যাভেলিয়নের উদ্বোধনে সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দীপিকা বলেন, ‘আমার মনে হয় রাষ্ট্র হিসাবে আমাদের এখনও অনেকটা পথ পাড়ি দেয়ার বাকি। একজন ভারতীয় হিসাবে এখানে আসতে পেরে এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।
‘তবে আমি আগেও বলেছি যে, কানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে হাতে গোনা কয়েকটি ভারতীয় সিনেমা ও ভারতীয় প্রতিভা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে। আমার মতে এখন সম্মিলিতভাবে আমাদের সে সক্ষমতা রয়েছে।’
দীপিকা আস্থা প্রকাশ করেছেন যে শিগগিরই এমন একটি দিন আসবে যখন ভারতে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে।
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিভা ও সামর্থ্য আছে এবং আমি মনে করি আমাদের নিজেদের প্রতি বিশ্বাসটাও আছে। আমি সত্যই বিশ্বাস করি এমন এক দিন আসবে যখন ভারত কানে থাকবে না, কান ভারতে আসবে।’
অনুষ্ঠানে ভারতীয় সিনেমাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য সংগীতশিল্পী এ আর রহমান এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখর কাপুরেরও প্রশংসা করেন দীপিকা।
তিনি বলেন, ‘ভারতকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য ও আমাদের এখানে আসার পথ তৈরি করার জন্য আমি রেহমান স্যার ও শেখর স্যারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই ।’
এবার সম্মানজনক চলচ্চিত্র উৎসবে মেতেছে ভারতীয় সিনেমা। মার্চে ডু সিনেমায় ভারতকে প্রথম ‘কান্ট্রি অফ অনার’ হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে।
দীপিকা ছাড়াও এবার কান উৎসবে অংশ নিয়েছেন- এ আর রহমান, ঐশ্বরিয়া রায়, তামান্না ভাটিয়া, আর মাধবন, পূজা হেগড়ের মতো বহু নামজাদা ভারতীয় শিল্পী।
আরও পড়ুন:নেটফ্লিক্সের লিটল থিংস সিরিজের অভিনেত্রী ভারতের মিথিলা পালকার সূর্যবংশীয় সিনেমায় অভিনেতা জাভেদ জাফরির সঙ্গে অভিনয় করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সিয়াম আহমেদ।
হিন্দি ভাষার সিনেমাটির নাম ইন দ্য রিং। এটি পরিচালনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাতা অলকা রাঘুরাম। খবরটি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ভ্যারাইটি।
ভারতের কলকাতার খিদ্দারপুরের নারী মুসলিম বক্সিং সম্প্রদায়ের ১৭ বছর বয়সী বক্সার শামাকে নিয়ে গড়ে উঠেছে গল্প। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার।
শামা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে লড়াই করার জন্য তার ডাবলের সঙ্গে জায়গা বিনিময় করেন, যখন তাকে তার আন্টিকে হত্যার অভিযোগে আটক করা হয়।
সিনেমার কাস্টিংয়ে রয়েছেন রাজিয়া শবনম। তিনি প্রথম ভারতীয় নারীদের একজন, যিনি আন্তর্জাতিক বক্সিং রেফারি এবং কোচ হয়েছেন।
পরিচালক অলকা রঘুরাম এর আগে কলকাতার মুসলিম নারী বক্সারদের নিয়ে ডকুমেন্টারি বোরকা বক্সার্স পরিচালনা করেছেন।
প্রকল্পটি সিঙ্গাপুরভিত্তিক দর্পণ গ্লোবালের জন্য শ্রেয়শি সেনগুপ্ত এবং ভারতের ওরিজন গ্লোবালের জন্য সৌভিক দাশগুপ্ত প্রযোজনা করছেন, লস অ্যাঙ্গেলভিত্তিক রিক অ্যামব্রোস নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন।
রঘুরাম ভ্যারাইটিকে বলেছেন, ‘আমি এই স্ক্রিপ্টটি লিখতে শুরু করি যখন আমি ডকুমেন্টারি বোরকা বক্সার্স এর চিত্রগ্রহণ করছিলাম। গল্পের শেষ সংস্করণটি তৈরিতে এক দশকেরও বেশি সময় লেগেছে।’
২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতে শুরু হবে সিনেমার শুটিং। সেলস, ডিস্ট্রিবিউশন এবং কো-প্রোডাকশনে এই প্রোজেক্টের জন্য সহযোগী খুঁজতে সেনগুপ্ত বর্তমানে কান ফিল্ম মার্কেটে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল হলিউড সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। এই খবরের সত্যতা পাওয়া যায় চলতি বছরের মার্চে।
৮ মার্চ নেটফ্লিক্সের টুইটারে ঘোষণা করা হয়, তাদের আসন্ন থ্রিলার সিনেমা হার্ট অফ স্টোন-এ গ্যাল গ্যাডট এবং জেমি ডরনানের সঙ্গে অভিনয় করবেন আলিয়া।
সেই ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার জানা গেল, আলিয়া তার প্রথম হলিউড সিনেমা হার্ট অফ স্টোন-এর শুটিং করতে যাচ্ছেন।
এদিন আলিয়া ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘আমি আমার প্রথম হলিউড সিনেমার শুটিং করতে যাচ্ছি। আবার নতুনদের মতো মনে হচ্ছে- একই রকম নার্ভাস। আমাকে শুভকামনা জানাও।’
আলিয়ার সেই পোস্টে শুভকামনা জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, রণবীর সিং, অর্জুন কাপুরসহ বলিউডের সতীর্থরা।
একই ছবি ইনস্টা স্টোরিতে পোস্ট করে আলিয়া লেখেন, ‘হার্ট অফ স্টোন, এখানে আমি এসেছি।’ এই সিনেমাটি পরিচালনা করছেন টম হার্পার।
এদিকে ব্রহ্মাস্ত্র, রকি অওর রানি কি প্রেমকাহানি, ডার্লিংসসহ বেশ কয়েকটি সিনেমা রয়েছে আলিয়ার হাতে।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক সিনেমা ‘মুজিব- দ্য মেকিং অফ আ ন্যাশন’-এর ট্রেলার প্রকাশ পেয়েছে। সিনেমাটির ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ট্রেলার ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে।
ফ্রান্সে বিশ্বখ্যাত কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৭৫তম আসরের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ভারতীয় প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর।
ট্রেলারে খণ্ড খণ্ড করে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, পরিবার, মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়কাল। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা- সবই এসেছে ট্রেলারে।
পাশাপাশি দেখা গেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের। ট্রেলার শেষ হয়েছে নুসরাত ইমরোজ তিশার কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ ভাষণ দিয়ে।
ট্রেলারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চলচ্চিত্রটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, জাতির জন্য সংগ্রাম থেকে বিজয় ও পরম আত্মত্যাগের চিত্র ফুটে উঠেছে।
‘বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলার মতো মহান মানুষদের জীবনী একটি চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তোলা দুরূহ হলেও বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে যুগে যুগে জাগ্রত রাখবে এবং মানবতার জন্য আত্মনিবেদনে প্রেরণা যোগাবে।’
অনুরাগ সিং ঠাকুর তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনচিত্র নির্মাণের এ কাজকে তাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের বলে বর্ণনা করেন।
ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা, ভারতের রাষ্ট্রদূত জাভেদ আশরাফ, ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্র, বায়োপিকের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, নির্বাহী প্রযোজক এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরেফিন শুভ, বঙ্গমাতার চরিত্রাভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, চিত্রনাট্যকার অতুল তিওয়ারি ও শামা জায়েদি, বাংলাদেশ অংশের কাস্টিং পরিচালক বাহার উদ্দিন খেলনসহ দুই দেশের অভিনয় শিল্পীরা ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
চলতি বছরের ‘ওয়ার্ল্ড ইনফ্লুয়েন্সার্স অ্যান্ড ব্লগার্স অ্যাওয়ার্ডস’ নামের আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে ইউক্রেনের আলোচিত সেই বিড়াল স্টেপান। ইউক্রেনের পশু-পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিতে তহবিল সংগ্রহের জন্য এই খেতাব জিতে নেয় খারকিভের বিড়ালটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে স্টেপানের পুরস্কার জেতার ভিডিও।
গত এপ্রিলে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল ইউক্রেনের খারকিভ শহরের তারকা বিড়াল স্টেপান। ব্লগারদের জন্য বিশ্বে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের কান শহরে এই আয়োজন করা হয়।
শহরের পাঁচ তারকা হোটেল মার্টিনেজে অনাড়ম্বর আয়োজনে উপস্থিত ছিল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সংস্থা ও প্রভাবক (ইনফ্লুয়েন্সার)। আয়োজনের গড় প্রবেশ মূল্য ছিল এক হাজার ইউরো (প্রায় ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা)!
উপস্থিত ছিলেন টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে ২০ কোটিরও বেশি ফলোয়ারের খাবি লেমও। যেসব ভিডিও দিয়ে তিনি এত জনপ্রিয় হয়েছেন, সেসব ভিডিওতে কোনো কথা বলেন না খাবি।
তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ সবাইকে! আমি অনেক খুশী, অনেক খুশী!’
ইউক্রেন যুদ্ধ পুরোদমে শুরু হলে, দুই সপ্তাহের জন্য নেট দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল ১৩ বছরের স্টেপান। সে সময়ে অনেকেই নানা আশঙ্কা করেছিল। পরে অবশ্য তার মালিক ভক্তদের আশ্বস্ত করেন। জানান, খারকিভে ক্রমাগত চলা গোলা হামলার কারণে ইন্টারনেট থেকে দূরে ছিল সে। পরে সুযোগ বুঝে এক সময়ে স্টেপানকে নিয়ে ফ্রান্সে চলে যান তার মালিক আন্না।
‘লাভইউস্টেপান’ নামের ইন্সটাগ্রাম পেজ চালান স্টেপান। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার ১১ লাখের কাছাকাছি। অ্যাকাউন্টটি অবশ্য চালান স্টেপানের মালিক আন্না।
ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্টেপানকে এক মাস বয়সে রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছিলেন আন্না। ২০১৯ সালে খ্যাতি অর্জন করেছিল, যখন টিকটকে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। স্টেভি ওয়ান্ডারের ‘আই জাস্ট কলড টু সে আই লাভ ইউ’ গানটিতে এক গ্লাস ওয়াইন নিয়ে নানা কারসাজি করেছিল স্টেপান, যা ২৭ মিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়েছিল।
স্টেপানের মালিক আন্না জানিয়েছেন, ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় অর্থ ইউক্রেনের পশু-পাখির সহায়তায় ব্যবহার করা হয়। এরই মধ্যে ১০ হাজার ডলার এ কাজে ব্যয় করেছে তারা।
আরও পড়ুন:রোমান্টিক থ্রিলার গল্পের সিনেমা তালাশ মুক্তি পেতে যাচ্ছে জুনের ১৭ তারিখে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনলাইনে প্রকাশ পেয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার। সেখানেই জানা যায় সিনেমার মুক্তির তারিখ।
সিনেমা প্রথমবারের মতো জুটি হয়ে দেখা যাবে বুবলী ও নবাগত চিত্রনায়ক আদর আজাদকে। সিনেমাটি পরিটালনা করেছেন সৈকত নাসির।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আদর আজাদ বলেন, ‘দুটি গান ও ফার্স্টলুক প্রকাশের পর এবার প্রকাশ পেল সিনেমাটির ট্রেলার। অনেক আগেই সিনেমাটি মুক্তির কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আশা করি পর্দায় আমাদের দেখে দর্শক নিরাশ হবেন না।’
বুবলী বলেন, ‘সিনেমাটির গল্প এক কথায় চমৎকার। দর্শক ভালো গল্পের একটি সিনেমা দেখতে চান। আমি বলব তালাশ একটি ভালো গল্পের সিনেমা। আপনারা দেখলে নিশ্চয়ই তা বুঝতে পারবেন।’
ক্লিওপেট্রা ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত সিনেমাটির কাহিনি পরিচালকের সঙ্গে যৌথভাবে লিখেছেন আসাদ জামান। সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন আসিফ আহসান খান, মাসুম বাশার, মিলি বাশার, যোজন মাহমুদ।
প্রথম সিনেমা মুক্তির আগেই আদর আজাদ-বুবলী জুটি সাইফ চন্দন পরিচালিত লোকাল সিনেমায় দ্বিতীয়বারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন। বর্তমানে সিনেমাটি নির্মাণাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য