আসন্ন জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় জোটটি।
আয়োজনে বাজেট বৃদ্ধির গুরুত্ব ও বাজেট ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেন জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য আব্দুস সামাদ।
সংস্কৃতিকে জাতির মনন বিকাশের সোপান বিবেচনা করে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে এক শতাংশ এ খাতে বরাদ্দ করার দাবি জানানো হয়।
এই বরাদ্দের এক বড় অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, সংগঠনের অনুদান, শিল্পীসম্মানী এবং বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে বলে জানান গোলাম কুদ্দুছ।
এ সময় অসচ্ছল শিল্পীদের মাসিক অনুদানের পরিমাণ বাস্তবতার নিরিখে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করা হয়।
কুদ্দুছ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলে আরও অধিক সংখ্যক শিল্পীকে অনুদানের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে।’
আয়োজনে লিখিত দাবি তুলে ধরেন গোলাম কুদ্দুছ।
দাবিগুলো হলো-
১. প্রত্যেক উপজেলায় ৫০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ। এর সাথে থাকবে মহড়া, প্রশিক্ষণের সুবিধা সম্বলিত কয়েকটি কক্ষ। উপজেলা সদরে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ একই সাথে নির্মাণ করতে হবে। একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে প্রতি বছর অন্তত ১০০টি উপজেলায় এ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হলে আগামী ৫ বছর মধ্যে দেশের সবকয়টি উপজেলায় সংস্কৃতি চর্চার নেটওয়ার্ক তৈরি হবে।
২. বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ স্মরণে রেখে প্রত্যেক জেলায় ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ স্মৃতিভবন’ নির্মাণ করা। এই ভবনে ৭০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন, মহড়া ও কর্মশালার কক্ষ, সেমিনার হল, পাঠাগার, ক্যান্টিন ও ৫ থেকে ১০ জন থাকার মতো কক্ষের ব্যবস্থা। ভবনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার পাশাপাশি ওই জেলার শিল্পী-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের মিলনকেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠবে। যত দ্রুত সম্ভব এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. ঢাকা মহানগরীসহ অন্যান্য মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন কোনো মিলনায়তন নেই। মহানগরগুলোতে প্রতি ৫ লাখ নাগরিকের জন্য একটি করে আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ করতে হবে।
৪. স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগে একটি যাত্রা প্যান্ডেল নির্মিত হয়নি। রাজধানীসহ প্রত্যেক জেলায় একটি করে স্থায়ী যাত্রা প্যান্ডেল নির্মিত হলে যাত্রার প্রসারের পাশাপাশি অশ্লীলতার প্রবণতা থেকেও মুক্ত হওয়া যাবে।
৫. প্রত্যেক জেলায় চারুকলা প্রদর্শনীর জন্য আর্ট গ্যালারি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর জন্য মিনি অডিটরিয়াম নির্মাণ করতে হবে।
৬. সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে প্রকৃত শিল্পীরা পুরোটা জীবন সংস্কৃতি চর্চায় নিজেদের নিবেদন করে আসছেন। বয়সকালে এসব শিল্পীদের অসচ্ছল বিবেচনায় যে ভাতা প্রদান করা হয় তা এতই নগণ্য যে, একেবারে নিরুপায় না হলে কেউ আবেদনই করেন না।
২০২১-২২ অর্থবছরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ১১৬ জন শিল্পীকে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬২ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ শিল্পীর অনুদানই মাসিক ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। জাতীয় পর্যায়ের কয়েকজন শিল্পী সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। এটি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৭. ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সারা দেশের ১ হাজার ৪৫০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ৭ কোটি ৪ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। সংগঠনের প্রদত্ত অনুদানের আর্থিক পরিমাণ ৩০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ক্রিয়াশীল প্রতিটি সংগঠনের বার্ষিক ব্যয় প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা। অনুদান প্রদানের সর্বনিম্ন পরিমাণ হওয়া উচিত সংগঠন প্রতি অন্তত এক লাখ টাকা। সারা দেশে আনুমানিক দশ সহস্রাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। যাচাই-বাছাই করে অন্তত পাঁচ হাজার সংগঠনকে অনুদানের আওতায় আনা হোক।
৮. জাতীয় ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে সারা বছরের কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও জাতীয় পর্যায়ে অবাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎসব আয়োজনকারী মূলধারার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা প্রদান। আমাদের প্রত্যাশা উপরোক্ত দুই খাতে অন্তত ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হোক।
৯. দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাশীঘ্র সম্ভব ‘সম্প্রীতির জন্য সংস্কৃতি’- মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলতে হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ দেয়া। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এ খাতে চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি।
১০. উপজেলা পর্যায়ে অবিলম্বে একজন করে শিল্পকলা অফিসার নিয়োগ অত্যাবশ্যক। সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিল্পীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ও চারুকলার স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
১১. বেতার-টেলিভিশনসহ সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অনুষ্ঠানে শিল্পী, যন্ত্রী ও কারিগরীকর্মীদের যুগপোযোগী আর্থিক সন্মানী প্রদান করা বাঞ্চনীয়।
১২. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোতে স্থায়ী দপ্তর নির্মাণের জন্য মতিঝিলের ক্রীড়া পল্লির অনুরূপ জায়গা বরাদ্দ করতে হবে।
১৩. বহুমুখি শিক্ষার পরিবর্তে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু অত্যাবশ্যক। মুক্তিযুদ্ধ ও মানবসভ্যতার ইতিহাস, অসাম্প্রদায়িক বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক লেখা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রমে সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতি বছর সাংস্কৃতিক উৎসব ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. সরকারের বড় বড় সাংস্কৃতিক আয়োজনে জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন:প্রথমবারের মত ভিআইপি প্যাক চালু করল দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল এন্টারটেইনমেন্ট প্ল্যাটফর্ম টফি। সম্প্রতি উন্মোচিত হওয়া ভিআইপি প্যাকের মাধ্যমে গ্রাহকরা স্বাচ্ছন্দ্যে টফিতে সিনেমা, সিরিজ, খেলাধুলা এবং এক্সক্লুসিভ শোসহ ১০ হাজারেরও বেশি কনটেন্ট উপভোগ করতে পারবেন।
সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশন হিসেবে টফির ভিআইপি প্যাক সাবস্ক্রাইব করা যাবে। সাশ্রয়ী খরচে যেকোন সময়, যেকোন জায়গা থেকে বিনোদন উপভোগের সুযোগ নিশ্চিতে টফি এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সকলের জন্য ডিজিটাল এন্টারটেইনমেন্ট আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে এই ভিআইপি প্যাক চালু করেছে টফি।
ভিআইপি প্যাকের সাবস্ক্রিপশন ফি: ৭ দিনের জন্য ৭৬ টাকা, ৩০ দিনের জন্য ১২৬ টাকা, ৯০ দিনের জন্য ২৭৬ টাকা এবং ৩৬৫ দিনের জন্য ৬৩৬ টাকা। সমৃদ্ধ কন্টেন্ট লাইব্রেরি সবার হাতের নাগালে নিয়ে আসতে, ৭ দিন এবং ৩০ দিন মেয়াদী বাংলালিংক ডেটা প্যাকেও টফি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সুযোগ আজ থেকে কার্যকর হবে।
এ নিয়ে বাংলালিংকের চিফ ডিজিটাল অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, “টফি শুধু বিনোদনই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সবার ডিজিটাল অভিজ্ঞতাকে আরো সাবলীল ও উপভোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। ভিআইপি প্যাকস চালুর মাধ্যমে সাশ্রয়ী খরচে প্রিমিয়াম কনটেন্টকে আমরা আরও সহজলভ্য করে তুলেছি, যা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। বর্তমান সময়ের দর্শকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা পূরণে এ উদ্যোগ প্রিমিয়াম কনটেন্ট উপভোগের সুযোগকে আরও সাশ্রয়ী, স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে।”
প্রথমবারের মতো টফির ব্যবহারকারীরা সকল ধরনের প্রিমিয়াম কনটেন্ট আনলিমিটেড উপভোগ করার সুযোগ পাবেন, যার মধ্যে রয়েছে: ৪০টির বেশি টিভি চ্যানেল, লাইভ টিভি, বাংলা ডাব করা কোরিয়ান ও তুর্কি নাটক এবং লাইভ স্পোর্টসসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় কনটেন্ট। ঘরে, বাইরে অথবা কাজের ফাঁকে, অনবদ্য বিনোদনের গন্তব্য হয়ে উঠছে টফি।
প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্যের অপার লীলাভূমি চায়ের দেশ খ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা। প্রতিবছরই ঈদের ছুটিতে হাজারো পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে এই পর্যটন নগরী। ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটি থাকায় এবারও পর্যটকদের বরণ করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে কমলগঞ্জ।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে শুক্রবার (২৮ মার্চ)। দীর্ঘ ছুটি উপভোগ করার জন্য পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে অনেকেই ছুটছেন দেশের পর্যটন স্থানগুলোতে।
সবুজে ঘেরা চা বাগান দেখতে প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে কমলগঞ্জে ভিড় জমান পর্যটকরা। এবারের চিত্রও তার ভিন্ন নয়। ঈদের ছুটিতে ঘুরে বেড়াতে অনেকেই বেছে নিয়েছেন কমলগঞ্জকে। মৌলভীবাজার জেলার সর্বাধিক পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে এই উপজেলাতেই।
পর্যটনক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় ২০টিরও বেশি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাহক ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ সিপাহি হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, পদ্মছড়া লেক, বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষ্মীনারায়ণ দিঘি, ২০০ বছরের প্রচীন ছয়চিরি দিঘি, শমশেরনগর বাঘীছড়া লেক, সুইচভ্যালি, আলীনগর পদ্মলেক, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, শমশেরনগর গলফ মাঠ, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, অপরূপ শোভামণ্ডিত উঁচু-নিচু পাহাড়বেষ্টিত সারিবদ্ধ চা বাগানসহ বাংলাদেশের বৃহত্তম নৃ-গোষ্ঠী মণিপুরী সম্প্রদায়ের নিরাপদ আবাসস্থল এ উপজেলা।
এছাড়া প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া নৃ-গোষ্ঠীসহ গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মণিপুরী, টিপরা ও গারোদেরও আবাস রয়েছে এই উপজেলায়। লেক আর পাহাড়ের মিতালি, সঙ্গে ঝর্ণা—কমলগঞ্জের এসব প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতি বছর বিভিন্ন ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার পর্যটক। শিল্পকলা-সমৃদ্ধ মণিপুরীসহ ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার জীবনধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা এই জনপদ যেকোনো পর্যটকের মন কেড়ে নেবে। তাই ঈদুল ফিতরের ছুটি সামনে রেখেই সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছে পর্যটন স্পটগুলো।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমণ নিবিঘ্ন করতে আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে আমরা ডিউটি ও তদারকি করব। ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটন পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশেরও বিশেষ নজরদারি থাকবে।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সন্তান, প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপার আগমন উপলক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ, পথসভা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কাজিপুর সোনামুখি বাজার সংলগ্ন মাঠে শুক্রবার সকালে পথসভা, মাইজবাড়ী ঢেকুরিয়া বাজারে শিল্পীর নিজ গ্রামে ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন কনকচাঁপা।
ওই সময় তিনি নিজ এলাকার বিভিন্ন বয়সী লোকজনের ভালোবাসায় সিক্ত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে পেয়ে আনন্দিত হয়।
কনকচাঁপা কাজিপুরবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘একজন সংগীতশিল্পী হয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করেছি। আমি বাকি জীবন এলাকাবাসীর সেবা করার মাধ্যমে তাদের মন জয় করতে এবং তাদের ভালোবাসায় বেঁচে থাকতে চাই।’
এদিকে জন্মস্থানের লোকজন গুণী এ শিল্পীকে কাছে পেয়ে আগামীতে তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান, সহসভাপতি ও কাজিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক তরফদার, কাজিপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ইমরুল কায়েস সবুর, ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ তরফদার, কামরুন্নাহার ত্বনীসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সংগীত নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খান।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
রোববার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, রাহাত ফাতেহ আলী খান একজন গুণী ব্যক্তি। তিনি শুধু পাকিস্তানের নন, তিনি উপমহাদেশ তথা সারাবিশ্বের সংগীত জগতের সম্পদ। বাংলাদেশে তার অনেক ভক্ত রয়েছে।
এ সময় রাহাত ফাতেহ আলী খান বাংলাদেশের সংগীত নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়নেও কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে আমন্ত্রণের জন্য তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
শনিবার ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে কনসার্টের জন্য রাহাত ফাতেহ আলীকে ধন্যবাদ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এ ধরনের একটি কনসার্ট আয়োজনের প্রয়োজন ছিল।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ ওয়াসিফ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দেশীয় সংস্কৃতির প্রচারের লক্ষ্যে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সূচনা করেছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশান-১ এ উদয় টাওয়ারে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন।
‘সবার আগে বাংলাদেশ’-এর আহ্বায়ক এ্যানী বলেন, এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নতুন পরিবেশে নতুনভাবে বিজয়ের মাস উদযাপনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, “গত ১৬-১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা নিজেদের মতো করে বিজয় দিবস পালন ও উদযাপন করতে পারিনি। এবার বিজয় দিবসে আমরা নতুন প্রত্যাশা নিয়ে, নতুনভাবে বাংলাদেশের জনগণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে হাজির হব। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।
“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ব্যাপক কর্মসূচি ও কার্যক্রম প্রণয়ন করেছে।”
এই কনসার্টে বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও ব্যান্ডদলের মধ্যে- সৈয়দ আব্দুল হাদী, খুরশীদ আলম, বেবী নাজনীন, মনির খান, কনক চাঁপা, দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল, প্রীতম, জেফার, মৌসুমী, নগর বাউল (জেমস), ডিফারেন্ট টাচ, অর্ক, সোলস, শিরোনামহীন, আর্টসেল, এভয়েডরাফা এবং সোনার বাংলা সার্কাস অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানি ও যুবদল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।
‘এই পদ্মা এই মেঘনা’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’- এক সময়ের ব্যাপক জনপ্রিয় এসব গানের গীতিকার ও সুরকার আবু জাফর মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
কন্যা জিহান ফারিয়া তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক আবু জাফর বেশকিছু দিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, কবি ও সংগীতশিল্পী ছিলেন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০০০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
আবু জাফর ১৯৪৩ সালের ১৫ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গড়ের বাড়ি কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম খোন্দকার মো. জমির উদ্দিন। কুষ্টিয়া শহরের আডুয়াপাড়ায় তিনি বসবাস করতেন।
আবু জাফর রাজশাহী ও ঢাকা বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন। তার রচিত দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান এক সময় তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। একাধিক কালজয়ী গানের স্রষ্টা তিনি। এর মধ্যে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’ উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও বেশকিছু বই লিখেছেন আবু জাফর। এর মধ্যে ‘নতুন রাত্রি পুরোনো দিন’ (কাব্য), ‘বাজারে দুর্নাম তবু তুমিই সর্বস্ব’ (কাব্য), ‘বিপ্লবোত্তর সোভিয়েত কবিতা’ (অনুবাদ কাব্য), ‘তুমি রাত আমি রাতজাগা পাখি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
আবু জাফরের বিখ্যাত গানের মধ্যে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের তালিকায় স্থান দখল করে। তার রচিত সব গানের বাণীতে অসামান্য সুর সংযোজনও করেন তিনি। এছাড়াও নিজের রচিত ও সুর সংযোজিত বেশিরভাগ গানে তিনি নিজেই কণ্ঠ দিয়েছেন। কোনো কোনো গানে তার সঙ্গে যুগলে কণ্ঠ দিয়েছেন তার সাবেক স্ত্রী লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন।
গুণী এই ব্যক্তিত্বের নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদ আসর কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা শেষে তাকে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্তানে সমাহিত করা হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খানের কসমেটিকস, স্কিনকেয়ার, পার্সোনাল কেয়ার ও হোম কেয়ার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিমার্ক-হারল্যানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান।
গুলশানের দ্য ওয়েস্টিন হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে সোমবার এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তাহসানের সঙ্গে চুক্তিতে সই করেন রিমার্ক-হারল্যানের ডিরেক্টর শাকিব খান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হারল্যান জোনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ রিমার্ক-হারল্যানের অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
রিমার্ক-হারল্যানের ডিরেক্টর শাকিব খান অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তাহসানের মতো মাল্টি ট্যালেন্টেড একজন শিল্পীকে আমাদের সাথে পেয়ে আমরা আনন্দিত। তরুণ প্রজন্মের কাছে তাহসানের যে ক্রেজ, তা সত্যিই বিস্ময়কর।
‘সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি আন্তর্জাতিক মানের অথেনটিক হোম অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ার, স্কিন কেয়ার ও কালার কসমেটিকস পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রিমার্ক-হারল্যান ভোক্তাদের কাছে সর্বোচ্চ মান ও সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই উদ্দেশ্য পূরণে তাহসানের মতো একজন গুণী এবং জনপ্রিয় সেলেব্রিটির সাথে সংযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে তাহসান বলেন, ‘অথেনটিক কসমেটিকসের জন্য রিমার্ক-হারল্যানের সুনাম শুনেছিলাম বহু আগেই। আজ অফিশিয়ালি যুক্ত হলাম দেশের মানুষকে নকল ও ভেজাল পণ্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি দিতে রিমার্ক-হারল্যানের এই প্রচেষ্টার সাথে।
‘আমি খুবই উচ্ছ্বসিত রিমার্ক-হারল্যানের সাথে যোগ দিয়ে। খুব শিগগিরই রিমার্ক-হারল্যানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচার-প্রচারণায় আমাকে দেখতে পাবেন ভক্তরা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য