যুক্তরাষ্ট্রের চিত্রশিল্পী অ্যান্ডি ওয়ারহলের আঁকা হলিউড বিখ্যাত অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর প্রতিকৃতি ১৯ কোটি ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর, স্থানীয় সময় সোমবার নিউ ইয়র্কে নিলামে মনরোর প্রতিকৃতিটি বিক্রি হয়।
বিংশ শতাব্দীর কোনো চিত্রকর্ম এখন পর্যন্ত এত দামে বিক্রি হয়নি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো শিল্পীর এটিই হচ্ছে সর্বোচ্চ দামে হাঁকানো চিত্রকর্ম।
চিত্রকর্মটি পাবলো পিকাসোর বিশ শতকের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘ওমেন অব আলজিয়ার্স’-এর আগেরকার সব রেকর্ডকে টপকে গেছে। ২০১৫ সালে ১৭ কোটি ৯৪ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল পিকাসোর শিল্পকর্মটি।
১৯৬২ সালে নিজের বাসায় অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ায় মৃত্যু হয় অভিনেত্রী ও মডেল মেরিলিন মনরোর।
মৃত্যুর পর মনরোর কয়েকটি প্রতিকৃতি আঁকেন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী ওয়ারহল। ১৯৬৪ সালে এই সিরিজের একটি শিল্পকর্ম ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’। উজ্জ্বল কমলা রং এবং চিত্তাকর্ষক অভিব্যক্তিসহ প্রতিকৃতিটি ওয়ারহলের সবচেয়ে আইকনিক এবং বিখ্যাত চিত্রগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। সেই সময় ওয়ারহলের শিল্পকর্মটি বেশ সাড়া তোলে।
তারকাদের চিত্রকর্মের জন্য বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ওয়ারহলের মৃত্যু হয় ১৯৮৭ সালে।
শিল্পকর্মটি সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান থমাস অ্যান্ড ডোরিস আম্মানের সংগ্রহশালায় ছিল। এটি নিউ ইয়র্কে আয়োজিত নিলামে বিক্রির জন্য তোলে যুক্তরাজ্যের নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি।
মাত্র চার মিনিটের নিলামে চিত্রকর্মটির দাম ওঠে ১৭ কোটি ডলার। এর সঙ্গে কর যুক্ত হয়ে মোট দাম দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৫ লাখ ডলার।
নিলামে সর্বোচ্চ দামে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চিত্রশিল্পীর চিত্রকর্ম বিক্রির রেকর্ড হয়েছিল ২০১৭ সালে। ১৯৮২ সালে জ্যঁ-মিশেল বাসকিয়াতের আঁকা একটি শিল্পকর্ম ১১ কোটি ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।
ক্রিস্টির চিত্রকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স রটার বলেন, ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ যুক্তরাষ্ট্রের পপ চিত্রশিল্পের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
১৯৫৩ সালে ‘নিয়াগারা’ চলচ্চিত্রের প্রচার-প্রচারণার জন্য মেরিলিন মনরোর একটি স্থিরচিত্রের ওপর ভিত্তি করে ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ আঁকা হয়েছিল।
চিত্রকর্মটির নামকরণ করা হয় একটি ঘটনার ভিত্তিতে। ঘটনাটি হলো, এক নারী পিস্তল নিয়ে ওয়ারহলের স্টুডিওতে ঢুকে মনরোর চারটি ছবিতে গুলি করেন। তবে গুলি থেকে বেঁচে যায় ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ চিত্রকর্মটি।
১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট ৩৬ বছর বয়সে লস অ্যাঞ্জেলসে নিজের বাসায় অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ায় মৃত্যু হয় মেরিলিন মনরোর।
আরও পড়ুন:প্রায় ১০ বছর পরিত্যক্ত থাকার পর অবশেষে পুরোনো রূপে ফিরছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদাস্মৃতি ভবন।
বুধবার বিকেলে সারদা হলের সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেন সিলেটে সিটি করপোরেশন (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এ সময় প্রায় ৮৬ বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে জানান তিনি।
দশ বছর ধরে সারদা হলকে ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল সিসিক। দীর্ঘদিন সিসিকের মালামাল স্তূপ করে রাখায় নষ্ট হয়ে পড়ে এই ভবনের মঞ্চসহ পুরো মিলনায়তন। সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভবনটিকে পুরোনো রূপে ফেরাতে সংস্কারকাজ করছে সিসিক।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে সারদা হল মিলনায়তনের মঞ্চ নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ছাদে নতুন ঢালাই দেয়া হয়েছে। এখন চলছে রঙের কাজ। দুই-এক দিনের মধ্যে দর্শক সারির আসন বসানো হবে।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত জানান, ২০ সেপ্টেম্বর সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট ৪০ বছরে পদার্পণ করবে। এ উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর হবে তিন দিনব্যাপী নাট্য প্রদর্শনী। সারদা হলেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, তার আগেই হলটির সংস্কার সম্পন্ন করার ব্যাপারে মেয়র আশ্বাস দিয়েছেন।
রজত বলেন, ‘এই সংস্কারকাজের পরও সংস্কৃতি চর্চার জন্য আরও কিছু কাজ করতে হবে। মঞ্চে লাইট, সাইন্ড সিস্টেম ও পুরো হলে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসাতে হবে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ে এগুলো সম্পন্ন হবে।’
এই ভবনকে সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবিতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা। ওই সমাবেশে হাজির হয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আশ্বাস দিয়েছিলেন, নভেম্বরের মধ্যে মিলনায়তনটি চালু করা হবে, তবে মেয়রের আশ্বাস সত্ত্বেও নভেম্বরে চালু হয়নি মিলনায়তনটি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সারদা হল থেকে নিজেদের মালামাল সরিয়ে এটির সংস্কারকাজ শুরু করে সিটি করপোরেশন।
এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, সারদা হল এই অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী মিলনায়তন, যেটি কেবল সংস্কৃতি চর্চার জন্য একটি পরিবারের পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ এই ভবনটি দখল করে সিটি করপোরেশন তাদের পরিত্যক্ত মালামালের ভাগাড়ে পরিণত করেছিল। এ ছাড়া সারদা হল কমপ্লেক্স দখল করে বিভিন্ন সময়ে সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন নির্মাণ করেছে।
রজত বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সারদা হল সংস্কার করে এটি সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছি। একই সঙ্গে এই এলাকায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে একটি কালচালার কমপ্লেক্স নির্মাণেরও দাবি আমাদের।’
১৯৩৬ সালে সিলেট শহরের সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাট এলাকায় নির্মাণ করা হয় ‘সারদাস্মৃতি ভবন’। সংস্কৃতি চর্চার বিকাশে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী পরিবার ৩৯ শতক জমিতে কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলের আদলে এই মিলনায়তনটি নির্মাণ করে। এরপর থেকে সিলেটের প্রথম এই মিলনায়তনে গান, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরবর্তী সময়ে সিলেট পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়ে আসছে ভবনটি।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার পুরোনো নগর ভবন ভেঙে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। এ সময় সুরমা নদীর তীরের তোপখানা এলাকায় সিটি করপোরেশন পরিচালিত ‘পীর হাবিবুর রহমান’ পাঠাগারে সিসিকের অফিস অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। আর পাঠাগার বই এনে স্তূপ আকারে রাখা হয় সারদা হলের। এ ছাড়া হলের মূল ভবনের পাশের ছোট ভবনগুলোতে সিসিকের কয়েকটি দপ্তরের কার্যক্রম চালু করা হয়।
সে সময় সিসিকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নগর ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর পুনরায় পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার চালু হবে এবং সারদা হল সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
এরপর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সিসিকের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর স্থায়ী ভবনে নিয়ে আসা হয় সিসিকের কার্যক্রম, তবে স্থায়ী ভবনে আসার প্রায় সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চালু হয়নি পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার। সারদা হলও সংস্কৃতিচর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়নি।
সারদা হলের সংস্কারকাজের দায়িত্বে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী সামসুল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবহৃত থাকায় এই মিলনায়তনের অনেক কিছুই ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। মঞ্চের সব কাঠ নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বাকি কাজও শেষের পথে।’
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মূল স্থাপনা অবিকৃত রেখেই সারদা হলের সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। দ্রুত এসব কাজ শেষ হলে এটি পুরোনো রূপে ফিরবে বলে আশা করছি।’
আরও পড়ুন:জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) ইউরিয়া উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে যমুনা সার কারখানার গ্যাস সরবরাহ কমানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দৈনিক এক হাজার ৭০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছিল৷ কয়েক বছর ধরে গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও মেশিনারিজ ত্রুটির জন্য উৎপাদন কমে এসেছে।
বর্তমান সময়ে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টন পর্যন্ত উৎপাদন হচ্ছিল। এর মধ্যে প্রতিবছর দুই-একবার কর্তৃপক্ষ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করায় এ কারখানায় সার উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে।
এদিকে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটা থেকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহে চাপ হঠাৎ কমে যায়। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানার ইউরিয়া সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিআইসি। এজন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘যমুনা সার কারখানায় উৎপাদিত সারের গুণগত মান অন্য যেকোনো কারখানার চেয়ে ভালো। এই কারখানায় উৎপাদিত সার বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্জলের ২০টি জেলার চাহিদা পূরণ করে আসছে। বর্তমানে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কিত। দ্রুত এখানে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে উৎপাদন চালুর দাবি জানাচ্ছি আমরা।’
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের চাপ প্রয়োজন। এই চাপ ৯ পিএসআইয়ে নেমে এলে তখন তো আর উৎপাদন সম্ভব হয় না।’
তিনি জানান, কারখানায়র গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস স্বল্পতার কথা জানায়। গ্যাস স্বল্পতায় সোমবার দুপুর থেকেই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও ইউটিলিটি উৎপাদন চালু থাকলেও সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
পুনরায় উৎপাদন চালুর ব্যাপারে নিশ্চিত বলতে না পারলেও কমান্ড এরিয়ায় সারের ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি।
পেরুর উত্তরাঞ্চলে খননকাজের সময় তিন হাজার বছর ধরে অক্ষত অবস্থায় থাকা একটি সমাধির সন্ধান পাওয়া গেছে।
সেই সমাধিতে পাওয়া গেছে তিন হাজার বছরের পুরোনো মৃৎপাত্রের টুকরা ও সিল।
বিবিসির বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্নতাত্ত্বিকরা ধারণা করছেন, সমাধিটি প্যাকোপাম্পার (প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান) কোনো এক পুরোহিতের।
কালো মাটির সঙ্গে মিশ্রিত ছাইয়ের ছয়টি স্তর খনন করে গবেষকরা পুরোহিতের কঙ্কালের সন্ধান পান।
পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা জানা যায়, সিলগুলো দিয়ে ওই সময়ের অভিজাত মর্যাদার লোকদের শরীরে ছাপ দেয়া হতো।
খননকাজে নেতৃত্ব দেয়া ইউজি সেকি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “প্রায় দুই মিটার (২ দশমিক ২ গজ) ব্যাস ও এক মিটার গভীরে পাওয়া সমাধিটির আকার ‘খুবই অদ্ভুত’ ছিল। দেখে মনে হয়েছে শরীরের অর্ধেক অংশ নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। পা দুটো ছিল একটি আরেকটির ওপরে।”
সেকি আবিষ্কারটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
প্যাকোপাম্পা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার ৫০০ মিটার ওপরে, যেখানে খোদাই করা ও পালিশ করা পাথরের নয়টি প্রত্নতাত্ত্বিক ভবন আছে। ধারণা করা হয়, এগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ থেকে ৬০০ বছর আগের।
জাপানের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ এথনোলজি ও পেরুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সান মার্কোসের প্রত্নতাত্ত্বিকরা সম্মিলিতভাবে খননকাজটি পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন:ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে পরিচালিত পুষ্টিশাসন প্রকল্পের সুফলভোগীদের বদলে যাওয়ার চিত্র নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীতে উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটের বাসিন্দাদের পরিবর্তনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
জাপানের টোকিওতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ‘নিউট্রিশন ফর গ্রোথ (এন৪জি)’ নামের শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশন সব ধরনের অপুষ্টি কমাতে ২০২১-২০২৪ সালের জন্য আড়াই বিলিয়ন (২৫০ কোটি) ইউরো সহায়তার ঘোষণা দেয়।
এ অর্থ জরুরি প্রয়োজন মোকাবিলায় মানবিক সহায়তার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদার দেশগুলোতে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ব্যয় হবে।
ইইউর অর্থায়নে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প ‘কালেকটিভ রেসপনসিবিলিটি, অ্যাকশন অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন’ (সিআরএএন) বাস্তবায়ন করছে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং তাদের অংশীদার ওয়াটারএইড, জেজেএস ও রূপান্তর।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বাংলা পাঠশালার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের তিন সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের সমাপ্তি ঘটেছে ২৬ ফেব্রুয়ারির মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।
ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে শিশুদের চিত্রাংকন কর্মশালা ও ছবি আঁকার আয়োজনের পর ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ছিল ছবির প্রদর্শনী, অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে প্রশংসাপত্র বিতরণ ও আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা সুইস কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক।
ছবি আঁকার কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিশুদের প্রশংসাপত্র দেন জেনেভা বাংলা পাঠশালার পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিয়াজুল হয় ফরহাদ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন রিয়াজুল হক ফরহাদ, এহতেশামুল হক, রিসালাত রহমান, সেগুফতা মোহাম্মদ, তাইফুর রাহান, প্রান্তি, সুনিষ্কা, মাদিহা, নিতু, রেইন, দিলারা, আফসারা, বিভোর ও রোদেলা।
জেনেভা বাংলা পাঠশালার পরিচালকের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন আরিনুল হক ও ফারানা হক।
অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে জেনেভায় বসবাসরত বাঙালিদের পাশাপাশি অন্য ভাষাভাষীসহ প্রায় ৭০ জন দর্শক-শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে সবার জন্য ছিল নৈশভোজের আয়োজন।
নগরসভ্যতার বিকাশে থাকে পরম্পরা, যা বলে যায় পুর্বপুরুষের অবদানের কথা। একই সঙ্গে তা মনে করিয়ে দেয় সমকালের মানুষের দায়।
ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে এমন চিন্তা করতে পারেন শিল্পী আরিফ শাহীন। তা থেকেই হয়তো ক্যানভাসের বুকে অ্যাক্রিলিকে তুলে ধরেছেন প্রাচীন স্থাপনার নিজস্ব বয়ান।
তার এ চিত্রে নীলের তল থেকে উঁকি দেয় অতীত গৌরব। একই সঙ্গে কালো আর লালে মিলে জ্বলজ্বল করতে থাকে সমকালের জীর্ণতা।
‘হেরিটেজ অ্যান্ড লিগেসি’ শীর্ষক শিল্পকর্ম দেখে আমাদের চেতনা এভাবিই ধাবিত হতে পারে।
আরিফ শাহীন বর্তমানের শিল্পী হলেও সোনালী অতীত আর আগুয়ান ভবিষ্যৎ নিয়েই তার শিল্পকর্ম। সেই চেতনা উৎসারিত বেশ কিছু শিল্পকর্ম নিয়ে তার সপ্তম একক প্রদর্শনী চলছে রাজধানীর ধানমন্ডির সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে (বাড়ি ২১/এ, সড়ক ৪)।
শুরুতে যে শিল্পকর্ম বিবৃত হয়েছে, তা দেখা যাচ্ছে এই আয়োজনে।
‘দ্রোহ ও দহনে’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত চিত্রকর্মগুলোতে সমকালের মানুষের প্রেম, দ্রোহ, হাহাকার যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
আরিফ শাহীনের শিল্প চেতনায় রয়েছে দ্রোহ, প্রেম ও প্রকৃতি। ছবিতে তিনি অ্যাক্রেলিকের তীব্র বর্ণালি ছড়িয়ে দেন।
সেখানে কি তবে স্বস্তির কোনো আভাস নেই? দুদণ্ড শান্তি দেবে না কোনো ছবি?
‘আমার ভেতরে বিদ্রোহ আছে, তবে শান্তিও ভালোবাসি। মাঝেমাঝে বিক্ষুব্ধ হই। মাঝেমাঝে আবার প্রশান্তও হই’, উত্তরে বলেন এ চিত্রশিল্পী।
প্রদর্শনীটি উদ্বোধন হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পী শহীদ কবীর। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব খুরশীদুজ্জামান উৎপল, শিল্পী মো. ইউনুস এবং শিশু সাহিত্যিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আমীরুল ইসলাম।
প্রদর্শনীর সমাপনী একুশে ফ্রেব্রুয়ারির রাত আটটায়।
আরও পড়ুন:অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ১৯ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের হাতে ‘একুশে পদক-২০২৩’ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার পর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হস্তান্তর শুরু করেন সরকারপ্রধান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।
একুশে পদক প্রদান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন।
১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে জাতি ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করে।
বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে একুশে পদকপ্রাপ্তদের দেয়া অর্থের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে তা বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা হয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সরকার নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদকের জন্য ১৯ বিশিষ্ট নাগরিক ও দুটি সংস্থার নাম ঘোষণা করে।
এ বছর ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে তিনজন, মুক্তিযুদ্ধে একজন, শিল্পকলায় আটজন (অভিনয়, সংগীত, আবৃত্তি, চারু ও চিত্রকলা), রাজনীতিতে দুজন, শিক্ষায় এক ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান, সমাজসেবায় এক ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকতা, গবেষণা এবং ভাষা ও সাহিত্যে একজন করে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন।
ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
শিল্পকলা বিভাগে অভিনয় ক্যাটাগরিতে মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ এবং সংগীত বিভাগে মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা (মরণোত্তর), আবৃত্তি বিভাগে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শিল্পকলায় নওয়াজিশ আলী খান এবং চিত্রকলা বিভাগে কনক চাঁপা চাকমা পুরস্কার পাচ্ছেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে পুরস্কার পাচ্ছেন মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আবদুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর), রাজনীতিতে আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান পুরস্কার পাচ্ছেন।
শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার পাচ্ছে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ‘একুশে পদক’ প্রবর্তন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ ও নগদ অর্থ দিয়ে পুরস্কার দেয়।
গত বছর ২৪ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে মর্যাদাপূর্ণ এ পদক দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য