কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে এক কাপ গরম চায়ের সঙ্গে অজস্র এলোমেলো শব্দ ভিজিয়ে দিয়ে গিয়েছিল কবিকে। কবি খুন হয়েছিলেন। খুনি ছিল কোনো এক জোড়া চোখ।
ক্যাফেটেরিয়া গানে এমন একটি মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছে ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’। ২০০৬ সালে প্রকাশ হওয়া ‘ইচ্ছে ঘুড়ি’ অ্যালবামে ছিল গানটি।
হাজার বা কোটি তরুণের মনের কথাগুলো যেন গানে গানে হাজির করেছিল ব্যান্ডটি। গানটির গীতিকার জিয়াউর রহমান জিয়া, সুর করেছিলেন জিয়া, ফারহান ও তুষার।
গানটি লেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে জিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়া যখন লিখি ও সুর করি, তখন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বুয়েট) পেরিয়ে গেছি, কিন্তু ছাত্রত্ব গায়ে লেগে আছে। এক ছাত্রের, এক তরুণের ক্যাফেটেরিয়ায় একটা মুহূর্তের গল্প এটি।’
জিয়ার ভাষ্যে ব্যান্ডকে সব সময় তরুণ থাকতে হয়। ১৪ বছর পর, অর্থাৎ ২০২০ সালে সেই জিয়ার কলমেই উঠে এলো ‘ক্যাফেটেরিয়া পেরিয়ে’ গানের কথাগুলো।
তাহলে কি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যান্ডটির বয়সও বাড়ছে? অন্তত গানের কথার ধরনে তো তাই মনে হয়।
জিয়া অবশ্য বিষয়টিকে ব্যান্ডের তারুণ্য হারানোর কোনো ইঙ্গিত বলে মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়া পেরিয়ে হলো সেই মোমেন্টটা রিকল করার গল্প। প্রায় সবার ক্ষেত্রেই এমনটা হয় যে তারা তাদের ফেলে আসা ক্যাম্পাসকে ফিরে দেখে। আমার নিজের ক্ষেত্রে যেটা হয়, আমি যেহেতু রাইটার, আমি বহুবার বুয়েটে বারবার ফিরে গেছি, যাচ্ছি। তার পরও একটা মিস করা ব্যাপার থাকে।’
জিয়ার মতে, ‘সময় যতই যাক, সব সময় ব্যান্ডকে তরুণ মনের থাকতে হয়, এটা ব্যান্ডের স্ট্যান্ড। কিন্তু তারা যে সময়কে রি-কল করতে পারবে না, তা তো নয়।’
‘শিরোনামহীন’-এর বয়স এখন ২৫। এপ্রিলে তারা তাদের ২৫ বছর পূর্ণ করেছে। এ সময়ের মধ্যে ব্যান্ডটি শ্রোতাদের উপহার দিয়েছে অনেকগুলো জনপ্রিয় গান। সুর ও গানের কথার চমৎকারিত্বে শ্রোতাদের মধ্যে শিরোনামহীন-এর রয়েছে ভিন্ন একটি আবেদন।
শ্রোতাদের অনেকের মতে, শিরোনামহীন নাগরিক কবিয়াল। প্রথম অ্যালবাম থেকেই ব্যান্ডটির গানের কথা ও সুরে নগরজীবন এবং জীবন-সংগ্রামের কথা উঠে এসেছে রূপক হিসেবে।
যুবক নাবিকের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনচিত্র, জনাকীর্ণ নগরদৃশ্য, ব্যস্ত ট্রাফিকের জীবন, শহুরে সংকট, শহুরে জীবনধারা ও তার কিছু বড় দৃষ্টিকোণ মূলত আধুনিক শহুরে মানুষের জীবনবোধ এবং নিত্য সংগ্রামচিত্রেরই বিবরণ।
শিরোনামহীন কি এমনই হতে চেয়েছিল? জিয়া বলেন, ‘ব্যান্ডটি এমন হতে চেয়েছিল বললে ভুল হবে, আবার হলেও মন্দ হয় না। নাগরিক কথাটিই এসেছে এ জন্য যে আমাদের গানের কথায় নাগরিক ছোঁয়া আছে। যেহেতু আমরা নগরের মানুষ, ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা নগরে। সে জন্য এটা অটোমেটিক্যালি রাইট। তা ছাড়া এই ভোকাবুলারিটা শিরোনামহীন কাব্যিকতার মাধ্যমে যেভাবে প্রকাশ করেছে, সেটা তার নিজস্বতাকে বহন করেছে।’
জিয়া আরও যোগ করেন, ‘কাব্যিকতার বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি, যেমন, গীতিকবিতা। গান কিন্তু একটা সুরের বিষয়, আমরা এখানে স্পেশাল ভোকাবুলারিটা প্রতিষ্ঠিত করলাম, সেটা আমাদের এ ধরনের একটি পরিচয় যদি এনে দেয়, তাহলে সেটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যেরই বিষয়।’
শিরোনামহীন তার ২৫ বছরে নিজস্ব ঢঙের বাইরে যেতে চায়নি বলে জানান এ ব্যান্ডের আরেক সদস্য কাজী আহমেদ সাফিন। তিনি বলেন, ‘শিরোনামহীন সব সময় একটা জনরায় কাজ করার চেষ্টা করে। যেকোনো কাজেই আমরা চেষ্টা করি আমাদের ছাপটা যেন থাকে।’
এই ২৫ বছরে শিরোনামহীনের শ্রোতা কিছু হলেও পরিবর্তন হয়েছে বলে স্বীকার করেন সাফিন। একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় গান স্টুডেন্ট লাইফেই সবাই বেশি শোনে। ব্যান্ডের প্রথম দিকে অনেককেই চিনতাম, যারা আমাদের প্রতি কনসার্টে যেত। তাদের এখন পাই না। তারা এখন আমাদের ফোন করেন, নতুন গানের ব্যাপারে কথা বলেন, কিন্তু কনসার্টে যেতে পারেন না।’
নতুন শ্রোতা আসার ফলে শিরোনামহীন সাউন্ড এবং গানের কথার ধরনে কিছু পরিবর্তনের কথা ভাবছে কি না জানতে চাইলে সাফিন বলেন, ‘ব্যান্ড এসব নিয়ে ভাবছে না। ব্যান্ড যেভাবে গান করে আসছিল, সেভাবেই করার পরিকল্পনা এখনও।’
এ প্রসঙ্গে জিয়া বলেন, ‘দেখুন আমি যখন স্কুলে পড়ি, তখন থেকে মাসুদ রানা পড়ি, জেমস বন্ড দেখি। ওর যে পাঠক বা দর্শক, সেটা ডে টু ডে চেঞ্জ হচ্ছে। পাঠক, দর্শক, শ্রোতা চেঞ্জ হলেও মাসুদ রানাকে তার মতোই থাকতে হবে, জেমস বন্ডকে তার মতো থাকতে হবে, তরুণদের জায়গায় নতুন তরুণ আসবে, কিন্তু শিরোনামহীনকে তার মতোই থাকতে হবে। তার বয়সটা ঠিক একইভাবে বাড়তে পারবে না। অন্তত আমাদের গানের বয়সটা বাড়তে পারবে না। গানটাকে একই স্ট্যান্ডার্ডে ধরে রাখতে হবে। সেটার জন্য আমরা খুব সচেষ্ট থাকি।’
ব্যান্ডের একটা বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভেঙে না যাওয়া, লাইনআপ ঠিক রাখা। ব্যান্ডের সদস্য পরিবর্তন শিরোনামহীন-এর ক্ষেত্রে অনেকবারই হয়েছে। তবে শ্রোতাদের চোখে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটি হয় ২০১৭ সালে, যখন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট তানজীর তুহিন ব্যান্ড ছেড়ে চলে যান।
জিয়া বলেন, ‘যেকোনো পরিবর্তন হলে ব্যান্ডে তার প্রভাব পড়ে। সাউন্ড চেঞ্জ হয়ে যায়। তার চেয়েও বড় বিষয়, ব্যান্ড নিজেকে লো ফিল করে, অফ ফিল করে। সেই জায়গা থেকে ২০১৭ খুবই ক্রুশ্যাল ছিল।’
ব্যান্ডে নতুন ভোকালিস্ট হিসেবে যুক্ত হন শেখ ইশতিয়াক। ২০১৭ সালের পর থেকে তার কণ্ঠেই প্রকাশ পাচ্ছে শিরোনামহীন-এর গান। তিনি কেমন করছেন? তার উত্তর শ্রোতারাই দিয়েছেন ‘জাদুকর’, ‘এই অবেলায়’, ‘কাশফুলের শহর দেখা’ গানগুলো ভালোবাসার মাধ্যমে।
শেখ ইশতিয়াক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন থেকে মিউজিক বোঝা শুরু, তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল আমি রক মিউজিক নিয়ে কাজ করব এবং ব্যান্ডে কাজ করব। এর আগে আমার অনেকগুলো ব্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স আছে। একটা সময় এসে শিরোনামহীন-এর সঙ্গে যখন কাজ করার ব্যাপারটা আসে, তখন আমার মনে হয় এখানে কাজ করা দরকার। এতে করে আমার ইচ্ছেই শুধু পূরণ হবে না, সঙ্গে অনেক কিছু শিখতে পারব।’
ইশতিয়াক মনে করেন, শিরোনামহীন তার মতো করে, একই স্ট্যান্ডার্ডে গান করছে। সেখানে তার কণ্ঠ শ্রোতারা পছন্দ করছে কি না, সেটা শ্রোতারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে তার কণ্ঠে কিছু গান শ্রোতারা পছন্দ করেছেন বলে মনে হচ্ছে তার।
তিনি বলেন, ‘ব্যান্ড সদস্য যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে এবং এটি একটি নিয়মিত ঘটনা ব্যান্ডের ক্ষেত্রে। যেটাই হোক, শিরোনামহীন তার ঢঙেই থাকবে। যখন আমরা যে লাইনআপে থাকি, তখন সেটাকেই সবচেয়ে ভালো লাইনআপ মনে হয়।’
ব্যান্ডে নতুন কাউকে যুক্ত করা বা নতুন কাউকে প্রস্তুত করার কোনো প্রক্রিয়া শিরোনামহীনের আপাতত নেই বলেও জানান সাফিন।
২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশের অনেক জায়গায় কনসার্টে অংশ নিয়েছে শিরোনামহীন। সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে ২৬ মে। সেদিন ব্যান্ডটি মঞ্চে উঠবে অর্কেস্ট্রার সঙ্গে। ভারতের মুম্বাইয়ের সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার সঙ্গে বাজাবে ব্যান্ডটি। দেশের নামকরা, খ্যাতিমান মিউজিয়ানরাও সেদিন শিরোনামহীনকে সম্মান জানিয়ে বাজাবে শিরোনামহীন-এর হয়ে।
জিয়া জানান, দেশে এমন ঘটনা নতুন হলেও গ্লোবাল মিউজিকে এ রকম আয়োজনের উদাহরণ রয়েছে। মেটালিকা এবং স্করপিয়নস-এর বিখ্যাত লাইভ অ্যালবাম ‘এস অ্যান্ড এম’ কিংবা বার্লিন ফিলহারমোনিকের সঙ্গে অর্কেস্ট্রার আয়োজন দেখা গেছে।
জিয়া বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের অনেক প্রস্তুতি। আমাদের আলাদা আলাদা ট্র্যাক বানাতে হয়েছে। আমাদের প্রস্তুতিও নিতে হচ্ছে, কারণ আমরা একটা নোটও ভুল করতে চাই না। এ রকম আয়োজন করতে অনেক পরিশ্রম ও খরচ। এ ধরনের আয়োজন ব্যান্ডের লাইমটাইমে একবারই হয়।’
নতুন অ্যালবামও আসবে শিরোনামহীনের। অ্যালবামের নাম ‘পারফিউম’। এতে থাকবে আটটি গান, যার বেশ কিছু গান এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক ‘পারফিউম’ প্রকাশ হবে ২৬ মে।
শিরোনামহীন-এর বর্তমান লাইনআপ: জিয়াউর রহমান জিয়া (গীতিকার, সুরকার, বেস, চেলো, সরোদ), কাজী আহমাদ শাফিন (ড্রাম, সরোদ, বাঁশি), দিয়াত খান (লিড গিটার), শেখ ইশতিয়াক (ভোকাল), সাইমন চৌধুরী (কিবোর্ড)।
আরও পড়ুন:মৌমিতা তাশরিন নদী; এ প্রজন্মের অন্যতম আলোচিত সংগীতশিল্পী। গ্ল্যামারাস ও মিষ্টি গায়কীর এই শিল্পী এরইমধ্যে বেশ কিছু মৌলিক গান উপহার দিয়েছেন, যেগুলো শ্রোতাপ্রিয়তাও পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মুক্তি পেলো নদীর আরও একটি নতুন গান।
‘মন মানে না’ শিরোনামের এই গানটি প্রকাশ হয়েছে আরটিভি মিউজিকের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।
গানটির কথা লিখেছেন আজমল কবির ও সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন হৃদয় হাসিন। আর রিদম প্রোগ্রামিং করেছেন সায়েম রহমান।
নতুন গান নিয়ে নদী বলেন, “মৌলিক গানের ক্ষেত্রে আমি একটু সময় নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। ‘মন মানে না’ গানটি বেশ মিষ্টি একটা রোমান্টিক গান। গানটির কথা যেমন সুন্দর, তেমনি এর মিউজিকটাও দারুণ।
“যারা ফোক ও মেলোডির মেলবন্ধন পছন্দ করেন, তাদের গানটি ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, গানটি পছন্দের তালিকায় রয়ে যাওয়ার মতো।”
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি দর্শক- শ্রোতাদের মিষ্টি একটা গান উপহার দেয়ার। তাদের কাছে গানটি ভালো লাগলে, গ্রহণযোগ্যতা পেলে আমাদের কষ্ট স্বার্থক হবে।’
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে নদীর গাওয়া ‘জলছায়া’, আসিফ আকবরের সঙ্গে ‘আজ হারাই’, একক কণ্ঠে ‘ডুবসাতার’, ‘দেশি গার্ল’সহ আরও বেশ কিছু গান বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।
যুগ যুগ ধরে অনেক প্রতিভাবান শিল্পীর অবদানে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন। মূলধারার গণমাধ্যম ও দর্শকদের কাছে এ শিল্পীদের অনেকেই অচেনা, তবে নিজস্ব পরিসরে তাদের রয়েছে বেশ পরিচিতি।
কয়েক বছর ধরে কিছু জনপ্রিয় সংগীত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন এমন অনেক শিল্পী। গত বছরও এমন দুজন শিল্পীকে পেয়েছে দেশ, যারা আলো ছড়িয়েছেন সংগীতাঙ্গনে।
এ দুজন হলেন আলেয়া বেগম এবং হামিদা বানু। তাদের মধ্যে ‘বাউল মাতা’ হিসেবে পরিচিত লোকসংগীত শিল্পী আলেয়া বেগমের রয়েছে দীর্ঘ ৫০ বছরের ক্যারিয়ার। বিচ্ছেদ, পালাগান, জারিগান ও আধ্যাত্মিক গানের জন্য বিখ্যাত এ শিল্পী লিখেছেন হাজারের বেশি গান। ‘গুণিন’-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রেও তিনি গেয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি মূলত তার আশেপাশের মানুষজন ও এলাকাবাসীর মধ্যেই পরিচিত ছিলেন।
গত বছর কোক স্টুডিও বাংলার ‘কথা কইয়ো না’ গানে আলেয়ার হৃদয়স্পর্শী পারফরম্যান্স তাকে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের নজরে নিয়ে আসে। হঠাৎই সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয় এ শিল্পী রাতারাতি হয়ে ওঠেন দেশের সবার প্রিয়।
গানটির সাফল্য শুধু আলেয়া বেগমকেই নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করিয়ে দেয়নি, বরং বাংলাদেশি লোকসংগীতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকেও তুলে ধরেছে।
একই ঘটনা ঘটেছে সিলেটের লোকসংগীত শিল্পী হামিদা বানুর ক্ষেত্রে। দীর্ঘদিন ধরে হাসন রাজার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হামিদা বানুর পেশাদার হিসেবে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না।
কোক স্টুডিও বাংলার দ্বিতীয় সিজনে ‘দিলারাম’ গান দিয়ে তিনি মঞ্চে ওঠেন। তার শ্রুতিমধুর কণ্ঠের গান সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আলেয়া বেগমের মতোই হামিদা বানুও তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
আলেয়া বেগম ও হামিদা বানুর মতোই দর্শক-শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন আরেক গ্রামীণ প্রতিভা জহুরা বাউল। ‘বনবিবি’ গানে তার শক্তিশালী ও সুরেলা কণ্ঠে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। তিনি এখন নারী শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা। গ্রামের নারীদের ওপর তার প্রভাবের বিষয়টি ‘বনবিবি’ গানে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।
এ গানে তার নেতৃত্বে বাউল নারীদের দল মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। ‘মেঘদল’-এর মতো জনপ্রিয় ব্যান্ডের সঙ্গে একই মঞ্চে গান করলেও তার শক্তিশালী পরিবেশনা বিশেষভাবে দর্শক-শ্রোতার মন জয় করে নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এ বছরের থিম ‘ইনস্পায়ার ইনক্লুশন’, যার লক্ষ্য হচ্ছে নারীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সমাজে নিজের জায়গা সম্পর্কে জানতে পারে। এর সঙ্গে এ গল্পগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কোক স্টুডিও বাংলা আলেয়া, হামিদা ও জহুরার মতো নারীদের প্রতিভা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এর লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অনুপ্রেরণা সৃষ্টি।
বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক ও র্যাপার বাদশা বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়। ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত এই গায়ক বাংলাদেশে এসে নাচে-গানে মাতিয়েছেন ঢাকাবাসীকে।
শুক্রবার রাতে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেকনোর নামে ‘টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্ট’-এ পারফর্ম করেন তিনি।
ঢাকার বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির (আইসিসিবি) এক্সপো জোনে ছিল দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। জনপ্রিয় সব গান গেয়ে দর্শকদের বুদ করে রাখেন বাদশাহ।
বিপণন প্রতিষ্ঠান ওয়েবএবলের আয়োজনে এই কনসার্ট শুধু ঢাকাই নয় বরং অনলাইনে সরাসারি লাইভ হওয়ায় দেশের সীমনা পেরিয়ে সারা বিশ্বের সঙ্গীতপ্রেমীদের উপহার দিয়েছে জমজমাট একটি আনন্দময় সন্ধ্যা।
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতাও পালন করা হয় কনসার্টে। মিউজিক ফেস্ট-টি উপভোগ করতে নেপাল, ভারত এবং শ্রীলঙ্কা থেকেও অনেকে টিকিট কেটে এসেছেন।
ওয়েবএবলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্টে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক ও র্যাপার ‘বাদশাহ’। আনুষ্ঠানিভাবে বাংলাদেশে বাদশাহ'র এটি প্রথম পারফরমেন্স। প্রথম আয়োজনেই দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি। ঢাকায় তিনি, ‘জুগ্নু’, ‘পানি পানি’, ‘গরমি’, ‘ডিজে ওয়ালা বাবু’, ‘লেটস নাচো’, ‘কালা চশমা’, ‘কর গাই চুল’, ‘গেন্দা ফুল’, ‘আভি তো পার্টি শুরু হুই হ্যায়’ এবং পাগাল’ সহ তার জনপ্রিয় গানগুলো দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন ।
বাদশাহ তার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে বলেন, পরম ভালোবাসা ও অভ্যর্থনার জন্য বাংলাদেশের দর্শকদের ধন্যবাদ। বাংলাদেশ পারফর্ম করে খুবই ভালো লেগেছে এবং আমি আবার এই দেশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। অসাধারণ এই আয়োজনের জন্য আয়োজকদের কাছেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্টে বাদশাহ ছাড়াও দেশি ও বিদেশি শিল্পীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই ফেস্টে ‘ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস’, ‘প্রিতম হাসান’, ‘জেফার’, ‘সঞ্জয়’ এবং ‘ব্ল্যাক জ্যাং’ সহ প্রশংসিত আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশি শিল্পীরা পারফর্ম করেন।
সঙ্গীত প্রযোজক এবং কম্পোজার ফুয়াদ বলেন, অসাধারণ আয়োজন ছিল। ঠিক সময়ে শুরু হয়েছে এবং সময়সূচি অনুযায়ী ঠিক সময়েই শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা এবং শিল্পীদের আতিথেয়তা সবকিছুই গোছানো ছিল।
এই মিউজিক ফেস্টটি শুধুমাত্র নাচ-গানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। অনুষ্ঠানে আগত দর্শক তাহসিন মাহমুদ বলেন, আমি শো'তে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছি। লাইনআপ এবং ভিজ্যুয়াল ছিল ভিন্ন মাত্রার। এছাড়া আতশবাজির ঝলক ছিল অসাধারণ। এমন বড় মাপের আন্তর্জাতিক শিল্পীর উপস্থিতিতে পুরো আয়োজনটি জাকজমক পার্টির মতো মনে হয়েছিল। এত বড় আয়োজনের সব কিছুই টাইম-শিডিউল মেনে সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে।
টেকনো মোবাইলের প্রধান নির্বাহী রেজওয়ানুল হক বলেন, এই আয়োজনটি প্রতিটি অর্থেই ছিল একটি গেম চেঞ্জার। আমরা এতো বড় অনুষ্ঠানের বাস্তবায়ন এবং দর্শকদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় জমজমাট সঙ্গীত আয়োজন উপহার দিতে পেরে গর্বিত।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান ওয়েবএবলের কর্নধার আনিস হান্নান চৌধুরী বলেন, দর্শকদের অগণিত সাড়া পেয়ে আমরা অভিভূত। আমরা এমন একটি কনসার্টের আয়োজন করতে চেয়েছিলাম যা বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে। আশা করি আমরা তেমনি একটি আয়োজন উপহার দিতে পেরেছে। এই আয়োজন দর্শকরা অনেকদিন মনে রাখবে। বাংলাদেশের মঞ্চে আরও বড়মাপের আন্তর্জাতিক শিল্পীদের উপস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশীয় প্রতিভা উপস্থাপনের জন্য আমরা সামনে আরও কাজ করবো।
ওয়েবএবল-এর চেয়ারম্যান সৈয়দ শাদাব মাহাবুব বলেন, আমাদের টিমের সবার অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় টেকনো স্পার্ক ২০ সিরিজ মিউজিক ফেস্ট দারুণ সফলতা পেয়েছে। দর্শকদের মনে দাগ কেটে যাওয়ার মতো এমন আয়োজন আরও করতে চাই। আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে দেশে এবং বিদেশে আরও অনেক লাইভ অনুষ্ঠান করা এবং বিশ্বমঞ্চে আমাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করা।
লাইভ শো-এর মাঝে তাল কাটল। দর্শকের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ নচিকেতা মেজাজ হারালেন মঞ্চে। পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে যায়, প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন গায়ক, মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে গালিও।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চব্বিশ পরগনা খড়দার একটি ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শীতের সন্ধ্যায় জমে উঠেছিল নচিকেতার গানের আসর। মঞ্চে উঠে জনপ্রিয় ‘বৃদ্ধাশ্রম’ গানটি গাইছিলেন তিনি। কিন্তু দর্শক আসনে প্রথম সারিতে বসা এক তরুণের কীর্তিতে রেগে যান গায়ক।
প্রথম সারিতে বসা ওই তরুণ ক্রমাগত নচিকেতার ভিডিও রেকর্ড করছিলেন। সেই কারণেই বিগড়ে যায় শিল্পীর মেজাজ। সামনে উপস্থিত কয়েক শো মানুষের সামনে মোবাইল ফোনকে একটি অশ্লীল শব্দের ডেকে বসেন! গায়ককে বলতে শোনা গেল, ‘ছবি-টবি তুলো না। গান শুনতে এসেছ, গান শোনো, ফটোগ্রাফার তুমি? এখন কার বাচ্চাদের কোনো কাজ নেই। সারাক্ষণ হাতে…নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। না করে পড়াশোনা, না শোনে কথা, কিছুই করে না।’
নচিকেতার সাফ কথা, তিনি এখানে গান গাইতে এসেছেন। কাউকে ছবি তোলার অনুমতি দেননি। নচিকেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি পার্সোনাল কিসের ছবি তুলছো? আমি কি অনুমতি দিয়েছি? ….আমার অসুবিধা হচ্ছে। বসো না। উঠে দাঁড়িয়ে সবার সামনে কেন ছবি তুলছো? এটা গানকে অবমাননা করা হচ্ছে, কেন বোঝেন না?’
একটা সময় হাল ছেড়ে গায়ক বলেন, ‘কত অ্যারোগেন্ট! আমাকে এখন ওর সামনে দাঁড়িয়ে গান গাইতে হবে। ও ছবি তুলেই যাবে’।
এরপর প্রতিবাদের সুর ভেসে আসে দর্শক আসন থেকে। বিস্ফোরক নচিকেতা এরপর যোগ করেন, ‘সবাই বলবে আজকাল এটাই স্টাইল। তা ঘুষ খাওয়াটাও এখন স্টাইল, তাহলে সেটাও বলুন সবাইকে’।
শিল্পী ও দর্শকের এই বাদানুবাদের মাঝেই মঞ্চ ছেড়ে চলেও যান নচিকেতা। পরে এক ক্লাবকর্মকর্তা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বড় শিল্পীদের অনুষ্ঠান করাতে আনলে তাদের মর্জিমতো চলতে হয়’। শ্রোতা-দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। পরে অবশ্য নচিকেতা ফের গান শুরু করেছিলেন।
গায়কের এই ভিডিও ভাইরাল হতেই দ্বিধাবিভক্ত নেটপাড়া। অনেকেই নচিকেতাকে সমর্থন জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘সত্যি শিল্পীদের সমস্যা হয় চোখের সামনে অজস্র মোবাইল ক্যামেরা ঘুরতে দেখলে’। অনেকেই আবার নচিকেতার আচরণকে অশোভনীয় বলে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন:সবাই মিলে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যারা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তারা সবাই পেশায় পুলিশ। আচমকা থানায় বসে গান ধরলেন কেন পৌষালী? তার কণ্ঠে শোনা গেল ‘আমার হাত বান্ধিবি পা বান্ধিবি’ গানটি।
এ ঘটনার একটি ভিডিও শনিবার পৌষালী পোস্ট করেছেন নিজেই। পোস্টে তিনি লিখেছেন,থানায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল। গান শোনার পর ছেড়ে দিল।” আসলে ঘটেছেটা কী?
আনন্দবাজার পত্রিকাকে পৌষালী জানিয়েছেন, এটি হল তার জীবনে ঘটে যাওয়া মিষ্টি ঘটনা। কী হয়েছিল আসলে?
পৌষালী বলেন, মালদহের এসআই মেনক আমার গানের অন্ধ ভক্ত। মালদহ শহরের যেখানেই অনুষ্ঠান করতে যাই না কেন, কাজের ফাঁকে ঠিক দেখা করতে আসেন মেনকা। এবারও সেখানকার গাজোল অঞ্চলে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠানটি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মেনকা। তিনিই তখন এসে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। থানার অনেকেই নাকি আমার গান পছন্দ করেন। সেই অপরাধেই আমায় থানায় যেতে হয়। সেখানেই মন খুলে গান গাইছিলাম আমি। সবাই চুপচাপ বসে শুনছিল। এটা একটা অন্য রকমের অভিজ্ঞতা।
পৌষালী এই মুহূর্তে নিজের অ্যালবাম নিয়ে ব্যস্ত। আগামী বছর মুক্তি পাবে তার নতুন গান। পৌষালীর নতুন অ্যালবামের অপেক্ষায় তার অনুরাগীরা।
সংগীত ছাড়াও বাংলাদেশের শিল্প ও সৃজনশীল জগতে প্রভাব রাখার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে কোক স্টুডিও বাংলা (সিএসবি)।
প্ল্যাটফর্মটির ‘কোক স্টুডিও বাংলা বিলবোর্ড ফ্যান আর্ট কনটেস্ট’ নামের প্রতিযোগিতায় দুই মাসেরও কম সময়ে ৬০টির বেশি শিল্পকর্ম জমা পড়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সিএসবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্ল্যাটফর্মটি যাত্রা শুরু করার পর থেকে এই চমৎকার গান ও শিল্পীদের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে হাজারো ভক্ত ও শিল্পীরা তাদের সৃজনশীল চিত্রকর্ম প্রকাশ করেছেন। পেইন্টিং, স্কেচ, ডিজিটাল আর্ট, অ্যানিমেশন, ক্যালিগ্রাফি, এআই-জেনারেটেড ইমেজেস ইত্যাদিসহ হাজারো চিত্রকর্ম ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
“এই উৎসাহ ও সৃজনশীলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্ল্যাটফর্মটি ‘কোক স্টুডিও বাংলা বিলবোর্ড ফ্যান আর্ট কনটেস্ট’ শুরু করে। দুই মাসেরও কম সময়ে তাদের কাছে ৬০টির বেশি শিল্পকর্ম জমা পড়ে, যার মধ্যে নির্বাচিত কিছু শিল্পকর্ম ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের ১১টি বিলবোর্ডে প্রদর্শিত হয়েছে।”
এ বিষয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অফ মার্কেটিং আবীর রাজবীন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩ লক্ষের বেশি কথোপকথন, হাজারো ফ্যান আর্ট, মিউজিক ও ড্যান্স কাভার এবং যন্ত্রসংগীতের মাধ্যমে কোক স্টুডিও বাংলা একটি প্রাণবন্ত ও সংযুক্ত কমিউনিটি তৈরি করেছে। এই কমিউনিটি প্ল্যাটফর্মটির গানগুলোর প্রতি নিজেদের ভালোবাসা সবসময় তুলে ধরছে।
“প্রথম দুই সিজনে আমরা অভূতপূর্ব সমর্থন ও সাড়া পেয়েছি। এতে আমরা সৃজনশীল ক্ষেত্রে নতুন কিছু করার প্রেরণা পাই।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৮ সালে কোক স্টুডিওর যাত্রা শুরু হওয়ার পর সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে আসে কোক স্টুডিও বাংলা (সিএসবি)। শুরু হওয়ার পর থেকেই বৈচিত্র্যময় ধারার প্রতিভাগুলোকে একত্রিত করে সৃজনশীল ও নতুন ধারার সংগীত সৃষ্টির মাধ্যমে সংগীত জগতে আলোড়ন তৈরি করে প্ল্যাটফর্মটি। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গান প্ল্যাটফর্মটিতে পরিবেশন হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১০০ জন শিল্পী, যার মধ্যে আছেন অনিমেষ রায়, হামিদা বানু, আলেয়া বেগম, মুকুল মজুমদার ঈশানসহ অনেক লুকিয়ে থাকা রত্ন।
সিএসবির ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২৮.৬ লাখের বেশি। ইউটিউবে সিএসবির সেরা গানের তালিকায় রয়েছে প্রথম সিজনের ‘ভবের পাগল’, ‘বুলবুলি’ ও ‘নাসেক নাসেক’ এবং দ্বিতীয় সিজনের ‘দেওরা’ ও ‘কথা কইয়ো না’।
আরও পড়ুন:বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা।
তবে খবরটি হঠাৎ প্রচার হওয়ায় গণমাধ্যমে এই গায়িকা গোপনে বিয়ে করেছেন বলে খবর ছড়িয়েছিল। খবর ইউএনবির
কিন্তু এ নিয়ে এবার নিজেই জানালেন তিনি।
গণমাধ্যমে লিজা বিয়ের খবরটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, গোপনে তিনি বিয়ে করেননি।
লিজা বলেন, ‘আমি গোপনে বিয়ে করার মতো মানুষ নই। বিয়ের খবর আমার কাছের সবার জানা। উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিয়ে করেছি। অপেক্ষা করছিলাম সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’
এক বছর আগে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ব্যস্ততার কারণে এখনও অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করতে পারিনি, তবে শিগগিরই তা করব। এর আগেই খবরটি ছড়িয়ে যায়।’
লিজার স্বামী একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দুই দেশেই তিনি ব্যবসা করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য