দেশীয় সংগীতের সুপারস্টার, ব্যান্ড সংগীতের লিজেন্ড, ভক্তদের কাছে ‘গুরু’। যার জনপ্রিয়তা রয়েছে দেশের বাইরেও। তিনি আর কেউ নন, মাহফুজ আনাম জেমস।
তার নতুন একটি গান ‘আই লাভ ইউ’ চাঁদরাতে আসার কথা শুনে নড়েচড়ে বসেছে সংগীতাঙ্গন। ভক্তরা তো বটেই, সংগীতসংশ্লিষ্টদের মধ্যেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আগ্রহ। এরই মধ্যে প্রকাশও পেয়েছে গানটির ট্রেলার।
শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে জেমস জানান, ভক্তদের জন্যই তার নতুন গান করা। তিনি বলেন, ‘এক যুগ হয়ে গেছে আরকি। এটা এমনও হতে পারত যে ১৩ বছর বা ১১ বছর পরে হচ্ছে। আমার আশপাশের যারা বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত যারা, তারা বলছিল নতুন গান করা দরকার, কিন্তু তাদের আমি ওভাবে গুরুত্ব দিইনি।
‘তবে বেশ কিছুদিন ধরে মাঠে-ময়দানে যারা আমার দর্শক-শ্রোতা, তারা ঠিক অনুরোধও না দাবি করে বসেছে যে নতুন গান লাগবে। ওদের কারণেই মনে করলাম যে এখন মনে হয় করা উচিত নতুন গান।’
ভক্তের জন্য জেমস বরাবরই উদার। ভক্তরাই তার সব- এমন কথা আগে অনেকবারই বলেছেন জেমস। অথচ সেই ভক্তের জন্য ‘নগর বাউল’ থেকে এতদিন নতুন কোনো গান করেননি তিনি।
১২টি বছর চলে গেল। মঞ্চে নিয়মিত থাকলেও নতুন কিছু করার ক্ষুধা কি ছিল না জেমসের? নাকি জেমসের শিল্পীসত্তার ক্ষয় হয়েছে এবং হচ্ছে প্রতিনিয়ত?
এসব জানতে শনিবার দুপুরে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে লিখিত প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল জেমসের সহকারী রুবাইয়াত রবিন ঠাকুরকে। জেমসের পক্ষে তিনি উত্তর দিয়েছেন নিউজবাংলার ছয়টি প্রশ্নের।
প্রথম প্রশ্ন: ১২ বছর নগর বাউল থেকে কোনো কাজ করলেন না। এ সময়ের মধ্যে নতুন কোনো কাজ করতে চাননি? নাকি নতুন কাজ করার কোনো ক্ষুধা ছিল না। যদি কোনো শিল্পীর কাজ করার ক্ষুধা মরে যায়, তাহলে নাকি শিল্পীরও মৃত্যু হয়। ধারণাটি যদি ভুল হয়, সঠিকটা জানতে চাই।
জেমস: শিল্পীসত্তা তো শুধু নতুন কাজের ওপর নির্ভর করে না। মঞ্চটা হচ্ছে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। মঞ্চে আমি সব সময় সরব ছিলাম, থাকার চেষ্টা করি। আর গানের ব্যাপারটা হচ্ছে, তোমরা তো জানো যে গানের কিছু ট্রান্সফর্ম হয়েছে। অর্থাৎ প্রথমে এটা ছিল এলপি, সেখান থেকে ক্যাসেট, সেখান থেকে সিডি। এরপর কিন্তু দীর্ঘ সময় স্থবির ছিল।
অডিও প্রডাকশন, যারা এগুলো প্রডিউস করত, তারা কোন ফরমেটে যাবে এটা নিয়ে ব্যস্ত ছিল সবাই। ট্রানজিশন পিরিয়ড বলে এটাকে। সেই সময় নতুন কোনো কাজ করা হয়নি।
তুমি যেটা জিজ্ঞেস করলে যে শিল্পীসত্তার মৃত্যু, এটা একদম ইরিলিভেন্ট একটা ব্যাপার। শিল্পীসত্তার সঙ্গে নতুন প্রডাকশনের কোনো সম্পর্ক নেই।
পৃথিবীতে তুমি এমন কোনো শিল্পীর নাম বলতে পারো যে ৪০ বছর ধরে প্রতি বছর নতুন গান দিয়ে আসছে।
এমনও দেখা গেছে যে বছরে ৫০টি গান করেছি। আবার দেখা গেছে দুই বছর গ্যাপ। এটা তো সৃষ্টির ব্যাপার। যখন ফিল কাজ করবে, গান তৈরি হবে, যারা এটা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করবে তাদের সঙ্গেও ব্যাটে-বলে মেলার ব্যাপার আছে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন: ১২ বছরের গ্যাপ বা ভক্তদের অপেক্ষা কী চাঁদরাতের একটি গান এবং পরবর্তী সময়ে প্রকাশিতব্য কয়েকটি গানে মিটবে?
জেমস: আমি এ পর্যন্ত যা করেছি গান এটাই এনাফ (যথেষ্ট)। যদি আমি কোনো নতুন গান নাও করি, তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। আমি তো মঞ্চে সব সময় আছি। আমার গান শুনতে পাচ্ছে, আমাকে কাছাকাছি দেখতে পাচ্ছে। ওটা নতুন গানের সঙ্গে কোনো রিলেশন নেই। তার পরও ভক্তদের জন্যই আমার নতুন গানটি আমি করেছি। যেটা চাঁদরাতে প্রকাশ পাবে। আর মঞ্চে আমি সব সময় আমি গেয়ে যাব, যতক্ষণ আছি। মঞ্চেই আসল জায়গা।
তৃতীয় প্রশ্ন: সব ধরনের সুযোগ ও সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নতুন গান করা থেকে বিরত থাকলেন কেন। আগের ইমেজ, জনপ্রিয়তা ধরে রাখতেই কি আপনার বিরতি?
জেমস: অতীতের কী ইমেজ, জনপ্রিয়তা কোনটা কী ধরে রাখতে হবে, এগুলো নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না। যখন যেটা আমার টেম্পারমেন্টের সঙ্গে স্যুট করে আমি সে কাজটাই করি। গানও যখন আমি করি, নিজের ইচ্ছামতোই করি।
এরপর গানটা বাজারে যায়, শ্রোতাদের ভালো লাগলে গ্রহণ করে, ভালো না লাগলে গ্রহণ করে না। এভাবেই চলে আসছে।
চতুর্থ প্রশ্ন: ১২ বছর ধরে নতুন কোনো কাজ না করেও আপনি স্টার অফ দ্য স্টারস, লিজেন্ড। এটা কি কোনোভাবে আপনাকে বিব্রত করে? মানে কাজ না করেও এ খ্যাতি কি আপনি নিতে চান?
জেমস: কাজ না করে কখনও খ্যাতি কি পাওয়া যায়, এটা কখনই হয় না। ক্যারিয়ারে তো আমি প্রচুর কাজ দিয়েছি। সেগুলো তো শ্রোতাপ্রিয়তাও পেয়েছে।
কাজ না করে কি খ্যাতি পাওয়া যায়, আমার প্রশ্ন হলো এখানে।
পঞ্চম প্রশ্ন: বিশ্বের অনেক রকস্টারকেই দেখা গেছে তুমুল জনপ্রিয় থাকার সময় তারা হতাশ বা ডিপ্রেশনের মতো রোগে ভুগেছেন। আপনি কি কোনো কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছেন কখনও?
জেমস: না।
ষষ্ঠ প্রশ্ন: আপনাকে নিয়ে কেউ যদি বয়োগ্রাফি বা সিনেমা করতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনি অনুমতি দেবেন কি না?
জেমস: অনেকেই চেয়েছেন বা অনেকেই চান। আমরা দেখছি যে কার সঙ্গে করা যায়। এটা ভাবছি। ভবিষ্যতে বলতে পারব, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে অনেক প্রোপোজাল আছে।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে গান ছাড়াও ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে কথা বলেছেন জেমস। জানান, বলিউডে গানের ক্যারিয়ার গড়েননি দেশ ছাড়তে হবে বলে। দেশে থাকার জন্য বলিউডে গানের ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
জেমসের ফটোগ্রাফির সুনাম রয়েছে। শখেই করেন কাজটি। পোর্ট্রেট ও ল্যান্ডস্কেপ ছবি তুলতে পছন্দ করেন তিনি। বলেন, ‘নির্মলেন্দু গুণের ছবি তোলার ইচ্ছা আছে। তার ছবি এখনও তোলা হয়নি।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ স্মরণে বর্ণাঢ্য এক লাইভ কনসার্টের আয়োজন করা হচ্ছে।
দেশীয় ব্যান্ডগুলো গানে গানে শ্রদ্ধা জানাবে সংগীতশিল্পীকে।
‘শাফিন আহমেদ: ইকোস অব আ লিজেন্ড’ শিরোনামের কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও লিঙ্ক রোডের আলোকিতে। সেখানে শাফিনের গাওয়া কালজয়ী গানগুলো শোনাবে তার সাবেক ব্যান্ড মাইলসের সদস্যরা।
এ ছাড়াও কনসার্টে পারফর্ম করবে দেশের প্রথম সারির ব্যান্ড ফিডব্যাক, দলছুট, আর্টসেল ও অ্যাভয়েড রাফা ও শাফিন আহমেদের ছেলে য়াজরাফ অজি।
গানের পাশাপাশি এ আয়োজনে আরও থাকছে শাফিন আহমেদের ঘটনাবহুল জীবন ও সংগীত ক্যারিয়ার নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী। এ ট্রিবিউট কনসার্টের আয়োজন করেছে ভেলভেট ইভেন্টস।
আয়োজকরা জানান, শুরুতে শাফিন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি কনসার্টের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পবিত্র শবে বরাতের কারণে তা এক দিন এগিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাত ৯টায় শুরু হবে কনসার্ট। সন্ধ্যা ছয়টায় দর্শকের জন্য খুলে দেওয়া হবে ভেন্যুর দরজা।
এ কনসার্ট আয়োজন চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত। দর্শক টিকিট কেটে আয়োজনটি উপভোগ করতে পারবেন।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বেশ কয়েকটি কনসার্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে দ্বিতীয় কনসার্টের দিন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর সেখান থেকে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ২৪ জুলাই মারা যান শিল্পী কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে শুক্রবার ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন: আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে মঞ্চে অুসুস্থ হয়ে পড়েন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানটির এক বছরের বিরতির পরে মঞ্চ পবিরেবশনায় ফিরে এসেছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সংগীতশিল্পী দিঠি আনোয়ার বলেন,‘কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী তার পরিবেশনা চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন এবং মঞ্চেই পড়ে যান। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ইউনাইটেড হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এই মুহূর্তে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।’
দিঠি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে দুই-এক দিনের মধ্যেই বাসায় ফিরবেন জনপ্রিয় এ গায়িকা।
গতকালের অনুষ্ঠানটিতে কিংবদন্তি গায়িকা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঞ্চে ফিরে এসেছিলেন। কারণ তিনি সিঙ্গাপুরে তার নিয়মিত চিকিৎসার কারণে এক বছর ধরে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি।
দৈনিক প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ শিল্পী জানান, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর চার মাসে ৩০ সেশন রেডিওথেরাপি দিতে হয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে বেশ কয়েকটি স্টেজ শো করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর তাকে আর মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য পাওয়া যায়নি।
আয়োজকরা জানান, শনিবারও একই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল সাবিনার। এরপর চট্টগ্রামে আরেকটি শোতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মধ্যে শনিবার প্রায় দুই হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে চালিতাডাংগা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে উপস্থিত হয়ে শীতার্তদের হাতে কম্বল তুলে দেন এলাকার সন্তান বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা বলেন, ‘একজন মানুষের জন্য একটি কম্বল সাধারণ ব্যাপার। তাদের জন্য এ শীতে কষ্ট লাগবের জন্য আরও কিছু করতে পারলে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। সারা দেশের মতো সিরাজগঞ্জে শীতের শুরুতে যমুনা নদীর পাড়ের অবস্থিত গ্রামগুলো শীতে কাঁপছে। এ কারণে বেড়েছে গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ।
‘এলাকার গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষ শীতের তীব্রতায় কষ্ট পাচ্ছেন। তাই তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। একজন মানুষ হয়ে আর একজন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’
ওই সময় সমাজের সব বিত্তবান মানুষকে অসহায় শীতার্ত নারী-পুরুষদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
কম্বল পাওয়া মহেলা বেওয়া বলেন, ‘তীব্র শীত ও কনকনে ঠান্ডায় যখন কাহিল আমরা, এই সময়ে কম্বল আমাগো খুব উপকার করল। এই শীতে কম্বল গায়ে দিয়ে একটু আরামে ঘুমাতে পারব।
‘শীতে কম্বল দিয়ে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করছে আমাগো গ্রামের মেয়ে কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কাজিপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাল মিয়া, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম খোকন, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ইমরুল কায়েস (সবুর), লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী কামরুল হাসান তরু, তার মেয়ে কামরুন্নাহার তনুসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাপিয়া সারোয়ারের স্বামী সারওয়ার আলম।
তিনি জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে শিল্পীর দাফন সম্পন্ন হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া। গত মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন গুণী এ শিল্পী, যার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
পাপিয়া সারোয়ার ১৯৫২ সালের ২১ নভেম্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রসংগীত অনুরাগী পাপিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছায়ানটে ভর্তি হন। পরে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন।
বেতার ও টিভিতে ১৯৬৭ সাল থেকে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে গান করেন পাপিয়া। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন পাপিয়া সারোয়ার। তার ব্যতিক্রমী কণ্ঠ ও গায়কীর প্রশংসা ছিল সংগীতাঙ্গনে।
আধুনিক গানেও আছে তার সাফল্য। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
সংগীতবোদ্ধাদের মতে, আধুনিক গান বাছাইয়ে বেশ সচেতন ছিলেন বলে তার অ্যালবামের সংখ্যা কম। তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আকাশপানে হাত বাড়ালাম’ প্রকাশ হয় ২০১৩ সালে।
পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পান একুশে পদক।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে রোববার দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নামী সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন।
বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসনামলে পেশাগত কাজকর্মে বারবার বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয় বেবী নাজীনের সংগীতজীবন।
বাংলাদেশ বেতার-টিভি-মঞ্চ কোনো মাধ্যমেই বেবী নাজনীন স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি। একপর্যায়ে দেশ ছাড়তেই বাধ্য হন তিনি।
দেশের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছেও সমাদৃত হন বেবী নাজনীন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এ শিল্পী।
সাড়ে চার দশকের ক্যারিয়ারে আধুনিক সংগীতের অর্ধশতাধিক একক অডিও অ্যালবামসহ অসংখ্য দ্বৈত অডিও অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি।
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আশা ভোঁসলে, বাপ্পি লাহিড়ী, কুমার শানু, কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গেও একাধিক অডিও অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন দেশের চলচ্চিত্র, অডিও মাধ্যমে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দেন।
আরও পড়ুন:রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’র অনুকূলে ঢাকার লালমাটিয়ায় বন্দোবস্ত দেয়া খাসজমির অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের খাস জমি-১ অধিশাখার উপসচিব মো. আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে।
পত্রে বলা হয়, এ জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তে সুরের ধারার চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার পক্ষে অনুমোদিত হয়েছিল। জমিটি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রামচন্দ্রপুর মৌজায় অবস্থিত।
এতে উল্লেখ করা হয়, বাতিল হওয়া জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত, যার দাগ নম্বর সিএস ও এসএ-৬৯২, আরএস-১৮৯৫, সিটি-১১৬৬৭ এবং ১১৪১২। মোট জমির পরিমাণ শূন্য দশমিক পাঁচ এক দুই শূন্য একর। এ জমির সিএস ও আরএস রেকর্ডে ‘খাল’ হিসেবে শ্রেণিকরণ থাকার কারণে এ বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে।
মন্তব্য