কোক স্টুডিও বাংলার নতুন গান ‘বাগিচায় বুলবুলি’ প্রকাশ পেয়েছে ১৪ এপ্রিল রাতে। ১৬ এপ্রিল গানটি নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। নজরুলের পুত্রবধু কল্যাণী কাজীর লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, নজরুল তার পুত্র হারানোর শোকে এ গানটি লিখেছেন, ফলে রোমান্টিক পার্টিমুডে কোক স্টুডিও বাংলার সংগীতায়োজন গানের মূলভাব নষ্ট করেছে।
বুলবুলি গানটির সুর কম্পোজিশন ও সংগীতায়োজন করেছেন শুভেন্দু দাশ শুভ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ঋতু রাজ ও সানজিদা মাহমুদ নন্দিতা। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ফ্ল্যামিঙ্কো ও রুম্বা রিদম, ড্রামে ব্যবহার করা হয়েছে জ্যাজ রিদম।
তবে জাতীয় কবির নাতনি খিলখিল কাজী মনে করছেন, কোক স্টুডিও বাংলায় গানটির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি।
ফেসবুক মেসেঞ্জারে নিউজবাংলার পাঠানো প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বাগিচায় বুলবুলি’ গানটি নিয়ে কাজ করার আগে কোক স্টুডিও বাংলা কর্তৃপক্ষ অনুমতি নেয়াসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন কবির নাতনি খিলখিল কাজীর সঙ্গে।
খিলখিল কাজী নিউজবাংলাকে বলেন, “কাজী নজরুল ইসালামের ‘বাগিচায় বুলবুলি’ গানটির প্রকাশ কাল ১৯২৮। আর তার দ্বিতীয় পুত্র বুলবুল মারা যান ১৯৩০ সালে। তাই বুলবুল মারা যাবার উপলক্ষ্যে গানটি রচনা করা হয়নি। এটা অনেক আগেই বলা হয়েছে।
“আমার মনে হয় না যে ‘বাগিচায় বুলবুলি’ তার ভাবমূর্তি হারিয়েছে। আমার সঙ্গে ওদের (কোক স্টুডিও বাংলা কর্তৃপক্ষের) কথা হয়েছিল। কাজী নজরুল ইসলামের গান সবাই গাইতে পারবে, কিন্তু সেই গানের সুর ও কথা ঠিক রাখতে হবে। সেটাকে ঠিক রেখে নিজের মতো করে গওয়া যাবে। আমার মনে হয় সেটি বজায় আছে।”
কল্যাণী কাজীর লেখা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খিলখিল কাজী জানান, তিনি কল্যাণী কাজীর লেখাটি পড়েননি, তাই সেটা নিয়ে কিছু বলতে পারছেন না।
খিলখিল কাজীর ভাষ্যে, ‘একটু মডিফিকেশন করা হয়েছে বলেই মনে হয় সমালোচনা হচ্ছে। আমি অনেক আগে থেকেই লক্ষ্য করছি, নতুন কিছু হলেই সেটা নিয়ে সমালোচনা হবেই। এটা আমাদের মানতে হবে যে, ভালো কথা হবে, মন্দ কথা হবে, এর মধ্যেই আমাদের চলতে হবে। আমাদের বেছে নিতে হবে কোনটা ভালো।
‘নতুন প্রজন্ম আমাকে অনেক আগে থেকেই বলেছে যে, কাজী নজরুল ইসলামের গান কেন মডিফাই করা হচ্ছে না। এর আগেও কিন্তু বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা মডিফিকেশন করে জ্যাজ স্টাইলে গানটি করেছেন, তখন কিন্তু এত সমালোচনা হয়নি। আমি সমালোচনায় যাচ্ছি না, আমি যা কিছু ভালো তার পক্ষে কথা বলি এবং তার পক্ষে আছি।’
‘বুলবুলি’ শিরোনামের গানটিতে নজরুলের গানের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে নতুন কিছু কথা। যেটি লিখেছেন গাউসুল আলম শাওন। নজরুলের গানটিই শুধু রাখা যেত, কেন নতুন কিছু লাইন ও সুর যুক্ত করতে হলো, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন গাউসুল আলম শাওন।
কোক স্টুডিও বাংলার ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার গাউসুল আলম শাওন বলেন, ‘গান তৈরি করার সময় অর্ণব একদিন হঠাৎ করে বলল যে, এটা তো বুলবুলির প্রতি অভিযোগ। বুলবুলিরও তো একটা কথা থাকতে পারে। আমরা কি কয়েকটা লাইন উত্তর লিখতে পারি। তাহলে বিষয়টা আরও ভালো হতো।’
এ প্রসঙ্গে খিলখিল কাজী বলেন, ‘ডুয়েট যেটা করা হয়েছে, ওটা নাকি ওদের নিয়ম, সেটাই আমাকে বলা হয়েছে।’
একটি উদাহরণ দিয়ে খিলখিল কাজী বলেন, ‘যদি তোর ঢাক শুনে কেউ না আসে- গানটি আমরা অনেকেই শুনেছি, কিন্তু যখন একটি সিনেমায় অমিতাভ বচ্চন জি গানটি গাইলেন নিজের মতো করে নিজের ভয়েসে, তখন আরও অনেক মানুষ গানটি সম্পর্কে জানলেন।’
কাজী নজরুল ইসলামের গান অনেক বৈচিত্রময়, তার গানে বিদেশি সুর আছে, নানা দিক আছে। যা নিয়ে আরও অনেক কাজ করার আছে, যা নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করার আছে বলে মনে করেন খিলখিল কাজী।
তিনি বলেন, ‘শুধু তো গজল গান নয়, তার দেশাত্ববোধক গান ও জাগরণী গানও আছে। সেগুলোও কিন্তু ছড়িয়ে যেতে পারে এভাবে মডিফিকেশনের মাধ্যমে।’
কাজী নজরুল ইসলাম নিজেও বিভিন্ন রকম বাদ্যযন্ত্রের কাজ পছন্দ করতেন বলে জানান খিলখিল।
তিনি বলেন, ‘তার অনেক গানেই দেখবেন অনেক অনেক রকমের ইনস্ট্রুমেন্টের কাজ রয়েছে। তিনি নিজেও এটা পছন্দ করতেন। মাত্র ১১ বছরে তিনি সাড়ে চার হাজার গান রচনা করে গেছেন এবং নানান দিক নিয়ে। এগুলো ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে তো আমাদের একটু কাজ করতেই হবে। যদি নতুন প্রজন্মের কাছে কাজী নজরুল ইসলামের গান পৌঁছে না দিতে পারি, তাহলে তো এটা আমাদেরই ব্যর্থতা।’
সব মিলিয়ে ‘বুলবলি’ গানটি ভালো কাজ হয়েছে বলে দাবি করে খিলখিল কাজী বলেন, ‘এখানে সুরটা ঠিক আছে এবং যে ছেলেটি বা আর্টিস্ট গানটি গেয়েছেন, তার অনেক দক্ষতা আছে ক্ল্যাসিকালে, তাই তিনি এ গানটি বেছে নিয়েছেন। সমালোচনা হতে পারে কিন্তু সমালোচনার উর্ধ্বে গিয়ে আমাদের ভালো কাজকে সাধুবাদ জানাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই কাজী নজরুল ইসলামের গান যেন সবাই গাইতে পারে। সে চেষ্টাতেই আমরা এসব গানকে মডিফিকেশন করার চেষ্টা করছি। মডিফিকেশন বলতে গানের সুরটা না, শুধু ইনস্টুমেন্ট যেগুলো আছে সেগুলো ব্যবহার করে আমরা শুধু গানটাকে একটু বদলাতে চেষ্টা করেছি। গানের সুর, গানের কথা কখনোই বদলানের হবে না, সেটা কোক স্টুডির সঙ্গে আগেই কথা হয়ে গেছে। সেটাই করা হয়েছে। বাকিটা যারা শুনছেন তারা বুছবেন। নতুন প্রজন্ম ভীষণভাবে সাড়া দিয়েছে গানটির পক্ষে এবং তাদের প্রচুর ভালো লেগেছে এবং সেই সঙ্গে, আমার সমবয়সী যারা আছেন, তারাও অভিনন্দন জানিয়েছেন গানটিকে। পাশাপাশি সারা পৃথিবীতে গানটি পৌঁছে যাচ্ছে। দেশের বাইরের মানুষ গানটিকে রিভিউ করে ভালো বলছেন। কাজী নজরুল ইসলামের নামটি পৌঁছে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ স্মরণে বর্ণাঢ্য এক লাইভ কনসার্টের আয়োজন করা হচ্ছে।
দেশীয় ব্যান্ডগুলো গানে গানে শ্রদ্ধা জানাবে সংগীতশিল্পীকে।
‘শাফিন আহমেদ: ইকোস অব আ লিজেন্ড’ শিরোনামের কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও লিঙ্ক রোডের আলোকিতে। সেখানে শাফিনের গাওয়া কালজয়ী গানগুলো শোনাবে তার সাবেক ব্যান্ড মাইলসের সদস্যরা।
এ ছাড়াও কনসার্টে পারফর্ম করবে দেশের প্রথম সারির ব্যান্ড ফিডব্যাক, দলছুট, আর্টসেল ও অ্যাভয়েড রাফা ও শাফিন আহমেদের ছেলে য়াজরাফ অজি।
গানের পাশাপাশি এ আয়োজনে আরও থাকছে শাফিন আহমেদের ঘটনাবহুল জীবন ও সংগীত ক্যারিয়ার নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী। এ ট্রিবিউট কনসার্টের আয়োজন করেছে ভেলভেট ইভেন্টস।
আয়োজকরা জানান, শুরুতে শাফিন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি কনসার্টের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পবিত্র শবে বরাতের কারণে তা এক দিন এগিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাত ৯টায় শুরু হবে কনসার্ট। সন্ধ্যা ছয়টায় দর্শকের জন্য খুলে দেওয়া হবে ভেন্যুর দরজা।
এ কনসার্ট আয়োজন চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত। দর্শক টিকিট কেটে আয়োজনটি উপভোগ করতে পারবেন।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বেশ কয়েকটি কনসার্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে দ্বিতীয় কনসার্টের দিন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর সেখান থেকে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ২৪ জুলাই মারা যান শিল্পী কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে শুক্রবার ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন: আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে মঞ্চে অুসুস্থ হয়ে পড়েন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানটির এক বছরের বিরতির পরে মঞ্চ পবিরেবশনায় ফিরে এসেছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সংগীতশিল্পী দিঠি আনোয়ার বলেন,‘কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী তার পরিবেশনা চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন এবং মঞ্চেই পড়ে যান। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ইউনাইটেড হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এই মুহূর্তে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।’
দিঠি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে দুই-এক দিনের মধ্যেই বাসায় ফিরবেন জনপ্রিয় এ গায়িকা।
গতকালের অনুষ্ঠানটিতে কিংবদন্তি গায়িকা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঞ্চে ফিরে এসেছিলেন। কারণ তিনি সিঙ্গাপুরে তার নিয়মিত চিকিৎসার কারণে এক বছর ধরে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি।
দৈনিক প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ শিল্পী জানান, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর চার মাসে ৩০ সেশন রেডিওথেরাপি দিতে হয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে বেশ কয়েকটি স্টেজ শো করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর তাকে আর মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য পাওয়া যায়নি।
আয়োজকরা জানান, শনিবারও একই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল সাবিনার। এরপর চট্টগ্রামে আরেকটি শোতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মধ্যে শনিবার প্রায় দুই হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে চালিতাডাংগা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে উপস্থিত হয়ে শীতার্তদের হাতে কম্বল তুলে দেন এলাকার সন্তান বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা বলেন, ‘একজন মানুষের জন্য একটি কম্বল সাধারণ ব্যাপার। তাদের জন্য এ শীতে কষ্ট লাগবের জন্য আরও কিছু করতে পারলে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। সারা দেশের মতো সিরাজগঞ্জে শীতের শুরুতে যমুনা নদীর পাড়ের অবস্থিত গ্রামগুলো শীতে কাঁপছে। এ কারণে বেড়েছে গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ।
‘এলাকার গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষ শীতের তীব্রতায় কষ্ট পাচ্ছেন। তাই তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। একজন মানুষ হয়ে আর একজন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’
ওই সময় সমাজের সব বিত্তবান মানুষকে অসহায় শীতার্ত নারী-পুরুষদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
কম্বল পাওয়া মহেলা বেওয়া বলেন, ‘তীব্র শীত ও কনকনে ঠান্ডায় যখন কাহিল আমরা, এই সময়ে কম্বল আমাগো খুব উপকার করল। এই শীতে কম্বল গায়ে দিয়ে একটু আরামে ঘুমাতে পারব।
‘শীতে কম্বল দিয়ে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করছে আমাগো গ্রামের মেয়ে কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কাজিপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাল মিয়া, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম খোকন, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ইমরুল কায়েস (সবুর), লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী কামরুল হাসান তরু, তার মেয়ে কামরুন্নাহার তনুসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাপিয়া সারোয়ারের স্বামী সারওয়ার আলম।
তিনি জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে শিল্পীর দাফন সম্পন্ন হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া। গত মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন গুণী এ শিল্পী, যার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্বামী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
পাপিয়া সারোয়ার ১৯৫২ সালের ২১ নভেম্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রসংগীত অনুরাগী পাপিয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছায়ানটে ভর্তি হন। পরে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন।
বেতার ও টিভিতে ১৯৬৭ সাল থেকে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে গান করেন পাপিয়া। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছেন পাপিয়া সারোয়ার। তার ব্যতিক্রমী কণ্ঠ ও গায়কীর প্রশংসা ছিল সংগীতাঙ্গনে।
আধুনিক গানেও আছে তার সাফল্য। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
সংগীতবোদ্ধাদের মতে, আধুনিক গান বাছাইয়ে বেশ সচেতন ছিলেন বলে তার অ্যালবামের সংখ্যা কম। তার সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আকাশপানে হাত বাড়ালাম’ প্রকাশ হয় ২০১৩ সালে।
পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পান একুশে পদক।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে রোববার দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নামী সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন।
বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসনামলে পেশাগত কাজকর্মে বারবার বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয় বেবী নাজীনের সংগীতজীবন।
বাংলাদেশ বেতার-টিভি-মঞ্চ কোনো মাধ্যমেই বেবী নাজনীন স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি। একপর্যায়ে দেশ ছাড়তেই বাধ্য হন তিনি।
দেশের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছেও সমাদৃত হন বেবী নাজনীন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এ শিল্পী।
সাড়ে চার দশকের ক্যারিয়ারে আধুনিক সংগীতের অর্ধশতাধিক একক অডিও অ্যালবামসহ অসংখ্য দ্বৈত অডিও অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি।
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আশা ভোঁসলে, বাপ্পি লাহিড়ী, কুমার শানু, কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গেও একাধিক অডিও অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন দেশের চলচ্চিত্র, অডিও মাধ্যমে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দেন।
আরও পড়ুন:রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’র অনুকূলে ঢাকার লালমাটিয়ায় বন্দোবস্ত দেয়া খাসজমির অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের খাস জমি-১ অধিশাখার উপসচিব মো. আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে।
পত্রে বলা হয়, এ জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তে সুরের ধারার চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার পক্ষে অনুমোদিত হয়েছিল। জমিটি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রামচন্দ্রপুর মৌজায় অবস্থিত।
এতে উল্লেখ করা হয়, বাতিল হওয়া জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত, যার দাগ নম্বর সিএস ও এসএ-৬৯২, আরএস-১৮৯৫, সিটি-১১৬৬৭ এবং ১১৪১২। মোট জমির পরিমাণ শূন্য দশমিক পাঁচ এক দুই শূন্য একর। এ জমির সিএস ও আরএস রেকর্ডে ‘খাল’ হিসেবে শ্রেণিকরণ থাকার কারণে এ বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে।
মন্তব্য