‘কোক স্টুডিও বাংলা’ প্রথম সিজনের প্রথম গান প্রকাশ করেছে বুধবার রাতে। গানটির শুরু হাজং সম্প্রদায়ের ভাষার কলি দিয়ে, এরপর রয়েছে সুপরিচিত বাংলা লোকসংগীত ‘দোল দোল দুলুনি’র কলি। মূলত ফিউশন করা হয়েছে দুটি গান মিলিয়ে।
সংগীতের ফিউশনমূলক জনপ্রিয় একটি ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম কোক স্টুডিও। বাংলাদেশে ও বাংলা ভাষাভাষীর জন্য চালু করা হয়েছে বলে এর নাম রাখা হয়েছে ‘কোক স্টুডিও বাংলা’।
কোক স্টুডিও বাংলা নামে ব্র্যান্ডিং করা প্ল্যাটফর্মটির শুরুটাই হাজং ভাষার গানের কলি দিয়ে কেন- সেই প্রশ্ন করেছে নিউজবাংলা।
কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম সিজনের সংগীত প্রযোজক অর্ণব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম সিজনের ১০টি গান আসবে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। যেমন ধরেন, বর্ষা ঋতুতে আমরা যদি একটা গান আনি, তাহলে গানটাতে ওই ঋতু-ওই সময়ের যেন একটা প্রতিচ্ছবি থাকে, সে চেষ্টা থাকবে আমাদের।
‘যেহেতু আমাদের পরিকল্পনা ছিল ফেব্রুয়ারিতে কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম গান প্রকাশ করার, তাই আমরা এমন গান নির্বাচন করতে চেয়েছি যেখানে ভাষার বৈচিত্র্য আছে, সুরের বৈচিত্র্য আছে এবং এটার মাধ্যমে আমরা যেন ভাষার মাসে বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষাকেও সম্মান দেখাতে পারি।’
অর্ণব বলেন, “এখানে অনিমেষের কথা না বললেই নয়। সে মেজাজে নরম, ইউকিলেলে বাজিয়ে গান করে, কিন্তু যখন কোক স্টুডিও মঞ্চে উঠল তখন পুরো রকস্টারের মতো পারফর্ম করল। ওর এই স্পিরিটটা দিয়ে শুরু করতে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। তাই আরও অনেক জনপ্রিয় শিল্পীর গানে শুরু না করে আমরা ‘নাসেক নাসেক’ গান দিয়ে শুরু করেছি।’’
কোক স্টুডিও বাংলা নামকরণের ক্ষেত্রে দেশের আদিবাসী ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি বলে অনেকের অভিযোগ। সে জন্যই হাজং ভাষার গান দিয়ে শুরু করা হলো কি না- জানতে চাইলে অর্ণব বলেন, ‘‘একদমই না। আমাদের কাছে অপশন ছিল, সেখান থেকে আমরা অনেক আগেই এটা ঠিক করেছি ‘নাসেক নাসেক’ গানটি দিয়েই শুরু করব। আর আমি তো মনে করি হাজং ভাষা, সংস্কৃতি বাংলার বাইরে নয়।’’
একই ধরনের কথা নিউজবাংলাকে বলেছেন বাপ্পা মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত, কোক স্টুডিও বাংলা নামকরণে আমি খুশি। আমার কাছে শুধু বাংলার মানে অনেক বড় কিছু। আর সেই বিশালত্বের মধ্যে শুধু হাজং কেন, দেশের সব আদিবাসীর ভাষা-সংস্কৃতিও পরে।’
‘নাসেক নাসেক’ শিরোনামের গানটির হাজং ভাষার অংশটি গেয়েছেন অনিমেষ রয় এবং ‘দোল দোল দুলুনি গানটি গেয়েছেন পান্থ কানাই।
‘নাসেক’ হাজং সম্প্রদায়ের ভাষার শব্দ। বাংলায় এর অর্থ ‘নাচো’। অনিমেষ রয় তার মাতৃভাষা অর্থাৎ হাজং ভাষায় লিখেছেন গানটি। আর আব্দুল লতিফের লেখা ‘দোল দোল দুলুনি’ গানটির মূল শিল্পী আব্দুল আলীম। কোক স্টুডিও বাংলাতে ‘নাসেক নাসেক’ গানের কম্পোজিশন এবং অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন অদিত রহমান।
ইউটিউবে গানটির বিবরণীতে লেখা হয়েছে, ‘বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বণ’ (বাংলা-অনেক উৎসবের দেশ) এর চেতনাকে তুলে ধরা হয়েছে গানটির মাধ্যমে।
আরও পড়ুন:
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টি নুনিয়া (২০) নামে এক তরুণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার উপজেলার পৌর এলাকার সিন্দুরখান রোডের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। বৃষ্টি ওই এলাকার হীরালাল নুনিয়ার মেয়ে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান বৃষ্টি। রাতের কোনো একসময় পরিবারের অজান্তে তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাসার ছাদের মন্দিরের পিলারের সাথে ফাঁস দেন। রাত আড়াইটার দিকে তার মা ডাকতে গেলে কক্ষে তাকে না পেয়ে ছাদে গিয়ে ওই অবস্থায় দেখতে পান এবং পরে পুলিশকে খবর দেন।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সাতক্ষীরায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুস সামাদ (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক মাসের সাজা দেওয়া হয়। তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল পদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার পর আব্দুস সামাদ বেশ কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আব্দুস সামাদকে শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়।
ফটিকছড়ি উপজেলর কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে ধুরুং নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে দুইশত বছরের পুরোনো কবরস্থান ও বসতভিটা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধুরুং নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীপাড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে বসতভিটাসহ শতবর্ষী কবরস্থান বিলীন হতে চলেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঞ্চননগর গ্রামের আবদুল হাকিম কেরানীবাড়ী-সংলগ্ন বিশাল কবরস্থানের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা ভেঙে পার্শ্ববর্তী ধুরুং নদীতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে স্বনামধন্য ধন্য আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হজরত অছিউদ্দিন শাহর মাজারও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান ধুরুং নদীর পাড়ঘেঁষা শতবর্ষী এ কবরস্থানে বছর দুয়েক আগেও শতাধিক কবর ছিল। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা এখানে জিয়ারত করতে আসত।
কিন্তু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে কবরস্থানটি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে।
এ স্থানটিতে খাল এমনভাবে ভেঙেছে, এখানে যে কিছুদিন আগেও কবরস্থান ছিল, তা বোঝার উপায় নেই। বর্তমানে অনেক কবরের স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে ভাঙন মাত্রা আগের চাইতে বেড়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার বলেন, নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এ নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কাঞ্চন নগর ইউপির প্রশাসক মো. নজরুল ইসলম ড্রেজার মেশিন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়ে বলেন ভাঙনকবলিত কবরস্থানটি শীঘ্রই পরিদর্শন করা হবে।
পঞ্চগড় জেলার সর্বত্র এখন দেখা যাচ্ছে কচুরিপানার ফুল ফুটে থাকার অপূর্ব দৃশ্য। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের পুকুরগুলোতে যেন সৌন্দর্যের নতুন আবেশ ছড়িয়ে দিয়েছে এই বেগুনি রঙের ফুল। শহরের তুলনায় গ্রাম-গঞ্জেই কচুরিপানার ফুল বেশি দেখা যায়।
প্রকৃতিপ্রেমী অনেকে শহর থেকে গ্রামে গিয়ে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে কচুরিপানার ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পুকুরে কচুরিপানার সারি ভেসে থেকে জলে ফুটন্ত ফুলগুলো যেন ছোট ছোট বাগানের মতো দৃশ্য তৈরি করছে। নদীতে কচুরিপানা ভেসে গেলেও পুকুরে থেকে যায় বলে সেখানে ফুল ফোটার সৌন্দর্য অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর হয়।
কচুরিপানাকে সাধারণত অনেকে পানি পরিশোধনের কাজে ব্যবহার করেন। তবে বর্ষার এই সময়ে যখন এক সাথে ফুল ফোটে, তখন পুরো পুকুরপাড় রঙিন হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ পরিবেশে এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক বিনোদনের জায়গা তৈরি করে।
স্থানীয়দের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুরাও এখন কচুরিপানার ফুল দেখতে আসছেন। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা যায় অনেক তরুণ-তরুণীকে। কেউ কেউ বলছেন, ‘প্রকৃতির এই সৌন্দর্য আমাদের গ্রামবাংলার আসল পরিচয়।’
প্রকৃতিবিদদের মতে, কচুরিপানার ফুল সাধারণত বর্ষা ও শরৎকালে বেশি ফোটে। সূর্যের আলো ও পানির স্থিরতার কারণে পুকুরেই এরা বেশি ফুটে থাকে। যা স্থানীয় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও এক অনন্য দৃশ্য তৈরি করে।
মন্তব্য